চলারপথে রিপোর্ট :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃতীয় লিঙ্গের একমাত্র প্রার্থী আনোয়ারা ইসলাম রানী জয়লাভ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর-বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
আজ ২৪ ডিসেম্বর রবিবার সকালে বঙ্গবন্ধু স্কয়ারের জাতীয় বীর আব্দুল কুদ্দুস মাখন মুক্তমঞ্চের সামনে প্রতিবন্ধীদের নিয়ে নির্বাচনী সভায় এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
মোকতাদির চৌধুরী ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী। তার সমর্থনে প্রতিবন্ধী ঐক্য ফোরাম নির্বাচনী জনসভার আয়োজন করে। সভায় হাজারও প্রতিবন্ধী অংশ নেন। সকাল ৯টা থেকেই কাউকে হুইলচেয়ারে করে কেউবা সাদা ছড়ি হাতে আসতে দেখা যায়।
এ সময় উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, তৃতীয় লিঙ্গের যে প্রার্থী আছেন তিনি জয়ী হবেন বলে আশা করি। ভবিষ্যতে শারীরিক প্রতিবন্ধীরাও সংসদে যাবেন বলে মনে করি।
রংপুর-৩ আসনে ঈগল প্রতীক নিয়ে লড়ছেন তৃতীয় লিঙ্গের আনোয়ারা ইসলাম রানী। এ ছাড়া এই আসনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের (লাঙ্গল), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির আব্দুর রহমান রেজু (একতারা), বাংলাদেশ কংগ্রেসের একরামুল হক (ডাব), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সহিদুল ইসলাম (মশাল) এবং ন্যাশনাল পিপলস পার্টির শফিউল আলম (আম) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বক্তব্য দিতে গিয়ে খেলু নামের একজন হিজড়া বর্তমান সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি বলেন, বর্তমান সরকার আমাদেরকে ভোটের অধিকার দিয়েছে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। মোকতাদির চৌধুরীর এমন আয়োজন বাংলাদেশে প্রথম বলে উল্লেখ করেন তিন। এ জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ নেতা মো. হেলাল উদ্দিন, হাজি হেলাল উদ্দিন, মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, মাহবুব আলম খোকন, মো. লোকমান হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। আয়োজনের সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন ডা. সাইফুদ্দিন খান শুভ্র। সঞ্চালনায় ছিলেন মো. হেদায়েতুল আজিজ মুন্না।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিম্ন আয়ের কার্ডধারী মানুষের মধ্যে টিসিবির নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রয় শুরু হয়েছে।
আজ ২২ জানুয়ারি সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে পন্য বিক্রয় কার্যক্রম উদ্বোধন করেন সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ মোশারফ হোসাইন।
প্রত্যেক কার্ডধারীকে ৬০টাকা কেজি দরে ২ কেজি মশুর ডাল, ১০০ টাকা লিটার দরে ২ লিটার সয়াবিন তেল ও ৩০ টাকা কেজি দরে ৫ কেজি চাল দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ মোশারফ হোসাইন বলেন, জানুয়ারি মাসে সদর উপজেলার নিম্ন আয় ও সুবিধাবঞ্চিত কার্ডধারী মানুষের মধ্যে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে।
পৌর এলাকার ৪৯৫২ জনসহ সদর উপজেলায় ১৬ হাজার ৬শত ১৮ জন কার্ডধারী মানুষের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে এই পণ্য বিক্রি করা হবে।
পৌর এলাকার মেড্ডা উপজেলা পরিষদ চত্বর, কালভৈরব, কারখানাঘাট, আনন্দবাজার ও শেরপুর ঈদগাহ মাঠে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এই কার্যক্রমটি খুবই জনবান্ধব। নিম্ন আয়ের লোকজন যাতে সঠিকভাবে এই পণ্য পায় সেজন্য তদারকি করা হচ্ছে। কোন ডিলার দুর্নীতি করলে তার বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটি গঠন নিয়ে দুই-গ্রুপের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল বিকেলে সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাকিবুল হাসান ও সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা দুটি দায়ের করেন। দুই মামলায় ৮২জন নেতা-কর্মীকে আসামী করা হয়।
এস.আই রাকিবুল হাসানের দায়েরকৃত মামলায় জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মাহমুদ, জেলা কৃষকদলের আহবায়ক আবু শামীম মোহাম্মদ আরিফ ওরফে ভিপি শামীম, জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক রুবেল চৌধুরী ফুজায়েল, সাবেক সদস্য সচিব মহসীন মিয়া, যুবদল কুমিল্লা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক তাজুল ইসলাম (ভিপি তাজু), জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক শাহীনুর রহমান শাহীন, সদস্য সচিব সমীর চক্রবর্তী, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি জহিরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহবায়ক ও পৌর কাউন্সিলর কাউছার মিয়া, যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক রুমেল উদ্দিন, আশুগঞ্জ উপজেলা যুবদলের আহবায়ক আলমগীর খাঁ, সদস্য সচিব সেলিম পারভেজ, সরাইল উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক শেখ জামাল হোসেন লস্কর ও যুগ্ম আহবায়ক শেখ জুনায়েদ আহমেদ উল্লেখযোগ্য। এই মামলায় অজ্ঞাতনামা আরো ১৩০ থেকে ১৫০জনকে আসামী করা হয়েছে।
এস.আই সাইফুল ইসলামের দায়েরকৃত মামলায় জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক রুবেল চৌধুরী ফুজায়েল, সাবেক সদস্য সচিব মহসীন মিয়া, বর্তমান আহবায়ক শাহীনুর রহমান শাহীন, সদস্য সচিব সমীর চক্রবর্তী, যুবদল নেতা তাজুল ইসলাম, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মাহমুদ, পৌর বিএনপির সভাপতি নজির আহাম্মেদ ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, জেলা কৃষকদলের আহবায়ক আবু শামীম মোহাম্মদ আরিফ, আশুগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক মারুফ আহম্মেদ ও যুগ্ম আহবায়ক মোঃ নাঈম, আশুগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব আল আরাফাত উল্লেখযোগ্য। এই মামলায় অজ্ঞাতনামা আরো ৫০-৬০জন নেতা-কর্মীকে আসামী করা হয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক (সহ-সভাপতি পদ মর্যাদা) মোঃ জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রদলের ৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে শাহীনুর রহমান শাহীনকে আহবায়ক ও সমীর চক্রবর্তীকে সদস্য সচিব করা হয়। ৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে ৫জনকে যুগ্ম আহবায়ক করা হয়েছে। এরা হলেন এলভিন লস্কর, সাজিদ আহমেদ, রেজাউল হক শীষ, আবদুল গাফফার রিমন ও সাইফুল ইসলাম ফাহিম।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবন ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল ৭ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি অনুমোদন দেন। কমিটিকে আগামী ১ মাসের মধ্যে আহবায়ক কমিটিকে পূর্নাঙ্গ কমিটি করে কেন্দ্রীয় দপ্তরে জমা দেয়া নির্দেশ দেয়া হয়।
আহবায়ক কমিটিতে পদ পাওয়া ছাত্রদলের নেতারা সবাই লন্ডনে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ব্যক্তিগত সহকারী আবদুর রহমান ওরফে সানির বড় ভাই কবির আহমেদ ভূঁইয়ার অনুসারী। কবির আহমেদ ভূইয়া সদর উপজেলার বরিশল গ্রামের বাসিন্দা।
গত রবিবার রাতে প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সোমবার সকাল ১০টা শহরের লোকনাথ উদ্যানের সামনে (টেংকেরপাড়) সদ্য ঘোষিত জেলা ছাত্রদলের কমিটি আনন্দ মিছিল ও সদ্য বিদায়ী কমিটি সীমাহীন লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
পাল্টা-পাল্টি কমিটির ঘোষনা হওয়ায় সোমবার সকালে বিপুল সংখ্যক পুলিশ লোকনাথ উদ্যান (টেংকেরপাড়) মোতায়েন থাকায় সদ্য ঘোষিত কমিটির নেতৃবৃন্দ ও তাদের অনুসারীরা সোমবার সকাল ১০টার দিকে বিরাসার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জড়ো হয়। জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে ছাত্রদলের নেতা কর্মীরাও সেখানে এসে জড়ো হয়।
পরে সেখান থেকে একটি আনন্দ মিছিল বের করার প্রস্তুতি নেয়ার সময় বেলা ১১ টার দিকে জেলা ছাত্রদলের সদ্য বিদায়ী কমিটির আহবায়ক রুবেল চৌধুরী ফুজায়েলের নেতৃত্বে ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা সেখানে গিয়ে ককটেল বিস্ফোরণ শুরু করে। তখন সদ্য ঘোষিত কমিটির নেতৃবৃন্দ ও তাদের অনুসারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ সময় প্রায় ২০ মিনিট কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে সদ্য ঘোষিত কমিটির অনুসারীরা পুনরায় জড়ো হয়ে বিক্ষুব্ধদের ধাওয়া করে। সেখান থেকে দুই গ্রুপের নেতা-কর্মীরা পুনরায় খৈয়াসার-বিরাসার সড়কে আসার পর আবার ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এ সময় উভয় গ্রুপের নেতা-কর্মীরা পুনরায় ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটাতে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।
পরে জেলা ছাত্রদলের সদ্য ঘোষিত কমিটি, জেলা কৃষক দল ও যুবদলের নেতা-কর্মীরা শহরের মধ্যপাড়ার শান্তিবাগ এলাকায় একটি আনন্দ মিছিল বের করে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটি নিয়ে সোমবার নতুন কমিটি ও আগের কমিটির নেতাকর্মীদের মধ্যে হামলা, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, ককটেল বিস্ফোরণ, গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। সোমবারের ঘটনায় নতুন করে আরো দুটি মামলা হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট তিনটি মামলা হয়েছে। এ পর্যন্ত মামলার ৭ আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
চলমান বন্যায় ৪ উপজেলার ৮৬০টি পুকুরের অন্তত ৭৫৬ টন মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এতে সাড়ে ১৮ থেকে ১৯ কোটি টাকার বেশি লোকসান হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন আখাউড়া উপজেলার খামারিসহ মাছ ব্যবসায়ীরা। তবে ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় পুকুর, দিঘি ও খামারের সংখ্যা ২ হাজার ৩৪৮। এগুলোর মোট আয়তন ৬২১ হেক্টর। এসব জলাশয়ে প্রায় ৫০০ ব্যবসায়ী মাছ চাষ করেন। আর চাষির সংখ্যা ২ হাজার ১০৭। বন্যায় ১২১ দশমিক ৮৬ হেক্টর আয়তনের ৪৩০টি দিঘি, খামার ও পুকুরের সব মাছ পানিতে ভেসে গেছে। ৯ কোটি ১৩ লাখ টাকা মূল্যের মোট ৪৫৬ টন মাছ পানিতে ভেসে গেছে। আর ১ কোটি ১৫ লাখ পোনা পানিতে ভেসে গেছে, যার বাজারমূল্য ৩ কোটি টাকা। এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যবসায়ীর ১০ লাখ টাকার অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আখাউড়ার মোগড়া ইউনিয়নের নিলাখাদ গ্রামের খামারি বলেন, ‘বন্যায় যে ক্ষতি হয়েছে, তা সামলে ওঠা অনেক কঠিন হয়ে পড়বে। বন্যার পানিতে পাঁচ কোটি টাকার মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এই ক্ষতি কীভাবে পূরণ করব, বুঝতে পারছি না।’
বন্যার পানিতে প্রায় দেড় কোটি টাকার মাছ ভেসে যাওয়ার দাবি করেছেন কর্ণেল বাজারের বাসিন্দা বাছির মিয়া। তিনি বলেন, পুকুরে মাছ মাত্র বড় হয়েছিল। কয়েক দিনের মধ্যেই বাজারে বিক্রি করতেন। কিন্তু বন্যার পানিতে সব মাছ ভেসে দেড় কোটি টাকার লোকসান হয়েছে।
মোগড়া গ্রামের বাসিন্দা দুলাল মিয়া বলেন, ‘পানি কমলেও আমার পুকুরে আর মাছ নেই। যা মাছ ছিল সব পানিতে ভেসে গেছে। প্রায় এক কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে।’
এ বিষয়ে ক্ষয়ক্ষতি-সংক্রান্ত প্রাথমিক একটি তালিকা করেছে আখাউড়া উপজেলার মৎস্য কার্যালয়।
আখাউড়া উপজেলার মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, বড় ব্যবসায়ীরা অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ইউনিয়ন পর্যায়ে খামারিদের ক্ষতির তালিকা করা হচ্ছে। তবে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে।
এদিকে কসবা উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় বন্যার পানিতে ২০০ পুকুর, দিঘি ও খামারের মাছ ভেসে গেছে। এগুলোর আয়তন ৩৮ হেক্টর। ১ কোটি ৪০ লাখ টাকার বড় মাছ ও ১০ লাখ টাকার পোনা পানিতে ভেসে গেছে। বন্যার পানিতে মাছ ভেসে যাওয়ার পাশাপাশি অবকাঠামো ভেঙে মোট ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও আখাউড়া উপজেলা মৎস্য কার্যালয় জানিয়েছে, সদর উপজেলায় ৬০ হেক্টর আয়তনের ১৪৫টি পুকুর, দিঘি ও খামারের মাছ ভেসে গেছে। ১৫ লাখ টাকা মূল্যের ১২ লাখ পোনা ও ৩ কোটি ২৫ লাখ টাকার বড় মাছ পানিতে ভেসে গেছে। অবকাঠামো ভেঙে যাওয়াসহ বন্যার পানিতে মাছ ভেসে যাওয়ায় মোট ৩ কোটি ৭০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
বিজয়নগর উপজেলায় ১১ হেক্টর আয়তনের ৮৫টি পুকুর, দিঘি ও খামারের মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। ১৩ লাখ টাকা মূল্যের ১ লাখ পোনা ও ৪০ লাখ টাকার বড় মাছ পানিতে ভেসে গেছে। বন্যার পানিতে মাছ ভেসে যাওয়ার পাশাপাশি অবকাঠামো ভেঙে যাওয়ায় মোট ৫৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলার মৎস্য কর্মকর্তা মো. আলমগীর কবির বলেন, বন্যার পানিতে ৮৬০টি পুকুর প্লাবিত হয়ে সাড়ে ১৮ থেকে ১৯ কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। খামারি ও ব্যবসায়ী মিলিয়ে ৮৬০ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
২০ আগস্ট রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া ইমিগ্রেশন-সংলগ্ন খাল দিয়ে ভারতে থেকে পাহাড়ি ঢলের পানি আসতে শুরু করে। এরপর আখাউড়া উপজেলাসহ পর্যায়ক্রমে কসবা উপজেলায় বন্যা দেখা দেয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে রেলপথে ট্রেন চলাচলের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। সোমবার দুপুর থেকে বিকেল নাগাদ পূর্বাঞ্চলীয় রেলপথের বিভিন্নস্থানে নির্দেশিত গতি অনুযায়ী নিয়ন্ত্রিতভাবে ট্রেন চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়। যে কারণে ওই সময়টাতে নির্ধারিত সূচি মেনে ট্রেন চলাচল করতে পারেনি। এতে ট্রেনের নির্ধারিত সময় সূচির বিপর্যয় ঘটে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।
সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রেললাইনের উপর সাধারণত ৪৫ থেকে ৪৬ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা থাকলে সহনীয় ধরা হয়। তাপমাত্রা এর বেশি হলে রেললাইন বেঁকে গিয়ে দুর্ঘটনার শঙ্কা থাকে। যে কারণে গতি কমিয়ে ট্রেন চলাচলের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সোমবার পূর্বাঞ্চল রেলপথের বিভিন্নস্থানে ৪৮ থেকে ৫০ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। যে কারণে দুপুর থেকে বিকেল নাগাদ ওই পথের আন্তঃনগরসহ সব ধরণের ট্রেন চলাচলে গতি কমিয়ে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
লোকো রানিং স্টাফ সমিতি, আখাউড়ার সভাপতি মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, গরমের দিনে যখন তাপ বেশি থাকে তখন গতি কমিয়ে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সকালে তিতাস কমিউটার ট্রেন নিয়ে আখাউড়া থেকে ঢাকা আসতে কয়েকটি জায়গায় বিভিন্ন কারণে গতি কমিয়ে চলার নির্দেশনা ছিলো। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে তালশহর স্টেশনের মাঝে একটি জায়গায় যেখানে সম্প্রতি দুর্ঘটনা ঘটে সেখানে ১০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলার নির্দেশনা ছিলো।
আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনের সহকারি নির্বাহী প্রকৌশলী (এইএন) মোঃ মেহেদি হাসান তারেক সোমবার সন্ধ্যায় জানান, তার আওতাধীন ঢাকা-চট্টগ্রাম পথের আখাউড়া থেকে আশুগঞ্জ ও আখাউড়া- সিলেট পথের শায়েস্তাগঞ্জ স্টেশন নাগাদ গতি কমিয়ে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়। দুপুর একটা থেকে ৫টা নাগাদ যাত্রীবাহী ট্রেন সর্বোচ্চ ৪০ কিলোমিটার ও মালবাহী ট্রেন সর্বোচ্চ ৩০ কিলোমিটার গতিতে চলার নির্দেশনা ছিলো।
উল্লেখ্য, গরম পড়ার আগেই পূর্বাঞ্চল রেলপথের সিলেট-আখাউড়া সেকশনের আজমপুর রেলওয়ে স্টেশন পার হয়ে রেললাইন বাঁকা হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। গত ৩ মার্চের এ ঘটনায় অন্তত ১৫ ফুটের মতো রেললাইন বেঁকে যায়। এর আড়ে গত বছরের ২৯ এপ্রিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দারিয়াপুর এলাকায় গরমে রেললাইন বাঁকা হয়ে কন্টেইনার ট্রেন লাইনচ্যুত হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ১৮ ফেব্রুয়ারি রবিবার। এদিন বিকেল ৪টা পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র দাখিল করা যাবে।
ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম সম্প্রতি জানান, ৫০টি সংরক্ষিত আসনের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ৪৮টি আসন পাবে। আর জাতীয় পার্টি পাবে দুটি আসন।
ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার কর্মকর্তারা জানান, এরই মধ্যে ভোটার তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকলে ভোটে প্রয়োজন হবে না। তবে এরই মধ্যে দলগুলো তাদের প্রার্থীদের তালিকা ঘোষণা করেছে। এতে ভোট হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র ১৯ ও ২০ ফেব্রুয়ারি বাছাই হবে। প্রত্যাহার করা যাবে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। আর ভোটের তারিখ ১৪ মার্চ। কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে এ সময়ের পরই ঘোষণা হবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতদের নাম।