অনলাইন ডেস্ক :
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আগামী ৭ জানুয়ারি সাধারণ ছুটি ঘোষণা করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
আজ ২৪ ডিসেম্বর রবিবার ইসির উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে এ নির্দেশনা পাঠিয়েছেন।
নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে, ৭ জানুয়ারি (রোববার) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন উপলক্ষে ভোটগ্রহণের দিন অর্থাৎ ৭ জানুয়ারি রবিবার সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা প্রয়োজন।
নির্বাচন কমিশন ওইদিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
গাজীপুরে মাইক্রোবাসে ডাকাতির ঘটনায় আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে মেট্রোপলিটন পুলিশ। এসময় লুণ্ঠিত ৪৭ হাজার টাকা ও ৫টি মোবাইল ফোনসহ ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত ছোরা ও কাঁচি এবং অস্ত্র বহনের ব্যাগ তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়।
আজ ২৪ আগস্ট বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ, দক্ষিণ) মো: মাহবুব উজজামান জিএমপির কনফারেন্স রুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলো-গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কুনিয়া তারগাছ এলাকার শহিদুল শেখের ছেলে সাগর শেখ (২৪), একই এলাকার মৃত শাহজাহানের ছেলে রতন (২০) ও সজল দাসের ছেলে শান্ত দাস (১৯), চান্দুরা এলাকার মৃত মিজানের ছেলে মো. হাশেম (২৩), একই এলাকার নুর মোহাম্মদের ছেলে শ্যামল আহমদ (২১) এবং হামিদুর রহমানের ছেলে শাহীন (২০)।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ, দক্ষিণ) মো: মাহবুব উজজামান জানান, গত ২২ আগস্ট রাত সোয়া দুইটার দিকে সিটি করপোরেশনের টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন গাজীপুরা এলাকার সেটার্ন গার্মেন্টসের সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে একটি মাইক্রোবাসের গতিরোধ করে ৭/৮জন সশস্ত্র ডাকাত। এসময় তারা ওই মাইক্রোবাসের সামনের ও সাইডের গ্লাস ভেঙ্গে ফেলে এবং দুই আরোহীকে মারপিট ও আতংক সৃষ্টি করে। ডাকাতেরা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মাইক্রোবাস আরোহীদের কাছ থেকে নগদ ৯৫ হাজার টাকা ও ৫টি মোবাইল লুণ্ঠন করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় বুধবার টঙ্গী পশ্চিম থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশের একাধিক টিম এ ঘটনায় কুনিয়া, তারগাছ ও চান্দুরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ওই ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে। এসময় তাদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত ৪৭ হাজার টাকা ও ৫টি মোবাইল ফোনসহ ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত ছোরা ও কাঁচি এবং অস্ত্র বহনের ব্যাগ উদ্ধার করে।
তিনি আরো জানান, গ্রেফতারকৃতরা আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তারা দীর্ঘদিন ধরে মহাসড়কে যাত্রীবেশে, পথচারী সেজে সঙ্গবদ্ধ ভাবে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করে ডাকাতি করে আসছিল। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
দেশের আকাশে ১৪৪৫ হিজরি সনের পবিত্র শাবান মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ায় আগামীকাল ১২ ফেব্রুয়ারি সোমবার থেকে শাবান মাস গণনা শুরু হবে। সেই হিসেবে ২৫ ফেব্রুয়ারি দিনগত রাতে শবে বরাত পালিত হবে।
আজ ১১ ফেব্রুয়ারি রবিবার সন্ধ্যায় বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা শেষে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান সভায় সভাপতিত্ব করেন।
শবে বরাতের পরদিন বাংলাদেশে নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি পালন করা হয়। তাই এবার ২৬ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) এ ছুটি পড়ছে।
শবে বরাত বা লাইলাতুল বরাত হচ্ছে হিজরি শাবান মাসের ১৪ ও ১৫ তারিখের মধ্যবর্তী রাতে পালিত মুসলমানদের গুরুত্বপূর্ণ রাত। এই রাতকে ভাগ্যরজনী বলা হয়ে থাকে। আল্লাহ তার বান্দাদের বিশেষভাবে এই রাতে ক্ষমা করেন। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে মুসলমানরা শবে বরাতে মহান আল্লাহ ও তার প্রিয় হাবিবের সন্তুষ্টি অর্জন করার জন্য নফল রোজা, দান সদকা ও এবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকেন।
মহিমান্বিত এই রাতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা পরম করুণাময়ের অনুগ্রহ লাভের আশায় বেশি বেশি নফল নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, জিকিরে মগ্ন থাকেন। অনেকে রোজা রাখেন, দান-খয়রাত করেন। অতীতের গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা এবং ভবিষ্যৎ জীবনের কল্যাণ কামনা করে মোনাজাত করেন।
অনলাইন ডেস্ক :
‘অগ্নিদুর্ঘটনা, বর্তমান পরিস্থিতির গভীরতা এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স-এর করণীয়’ বিষয়ক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ৬ মার্চ বুধবার সকাল ১১টায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদর দপ্তরের কনফারেন্স রুমে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবু নাঈম মো. শাহিদউল্লাহ (সাবেক মহাপরিচালক), ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আলী আহম্মেদ খান (সাবেক মহাপরিচালক), অধ্যাপক ড. জিল্লুর রহমান (ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলেন্স, ঢাবি), অধ্যাপক ইশতিয়াক আহমেদ (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, বুয়েট), স্থপতি মো. ইকবাল হাবিব (সহসভাপতি, বাপা), মো. নিয়াজ আলী চিশতি, সভাপতি, ইসাব প্রমুখ।
স্থপতি মো. ইকবাল হাবিব বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন অংশীদারি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে টাস্কফোর্স গঠন করে ঢাকাসহ সারা দেশে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করতে হবে এবং চিহ্নিত ভবনের তালিকা অনলাইনে প্রকাশ করার সাথে সাথে নির্দিষ্ট ভবনের সামনে তা প্রকাশ্যে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে।’
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবু নাঈম মো. শাহিদউল্লাহ বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স যেন নিয়মিত মোবাইল কোর্ট করতে পারে এ জন্য স্থায়ী ব্যবস্থা করা উচিত। এ ছাড়া ফায়ার সার্ভিসের সাথে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আইনগত অসামঞ্জস্য/বিরোধ দ্রুত সমন্বয় করা প্রয়োজন।’
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আলী আহম্মেদ খান বলেন, ‘শহরকেন্দ্রিক স্যাটেলাইট ফায়ার স্টেশন নির্মাণসহ ফায়ার সার্ভিসকে দুর্ঘটনার ধরনভেদে স্পেশাল টিম তৈরি করতে হবে। এ ছাড়া রাজউক, সিটি করপোরেশন বা ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তথ্যের আদান-প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।’
অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধে ফায়ার কোড তৈরির পরামর্শ দেন তিনি।
অধ্যাপক ড. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোতে হাইড্রেন্ট লাইন বসানোর ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। ফায়ার সার্ভিসের স্থগিত বিধিমালা দ্রুত কার্যকর করতে হবে। ভবনের অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধ করতে বাংলাদেশ বিল্ডিং রেগুলেটরি অথরিটিতে ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’
অধ্যাপক ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘রাজউক থেকে অকুপেন্সি সার্টিফিকেট নিয়ে যদি অকুপেন্সি পরিবর্তন করে তাহলে তা ফায়ার সার্ভিসকে জানাতে হবে, এমন বিধান তৈরি করতে হবে। এ ছাড়া বিএনবিসির কিছু ধারা যুগোপযোগী করা উচিত।’ অগ্নিনির্বাপণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে শহরের জলাশয় ও পুকুর সংরক্ষণ করতে হবে বলে তিনি পরামর্শ দেন।
নিয়াজ উদ্দিন চিশতী বলেন, ‘শুধু অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জাম কিনে প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার করলে অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধ করা যাবে না। অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জাম মানসম্মত কি না, তা যাচাই করতে হবে, যেন তা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।’
গোলটেবিল বৈঠকে অতিথিরা বর্তমান পরিস্থিতিতে ফায়ার সার্ভিসের করণীয় বিষয়ে বিভিন্ন মতামত ও পরামর্শ প্রদান করেন। গোলটেবিল বৈঠকে কি নোট পেপার প্রেজেন্ট করেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক মো. ছালেহ উদ্দিন।
অনলাইন ডেস্ক :
দেশের সব সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং মহানগর ও জেলা সদর উপজেলায় অবস্থিত বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আগামী শিক্ষাবর্ষের (২০২৫) জন্যও প্রথম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশির) অধীন বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
আজ ২৬ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এ সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সূত্র গণমাধ্যমেক এই তথ্য জানিয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে আগামী সপ্তাহে আদেশ জারি হতে পারে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক অনুবিভাগ-১) খ ম কবিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিবারই বছরের শেষ সময়ে এসে পরবর্তী বছরের ভর্তির প্রক্রিয়া চলে। ভর্তি শেষে জানুয়ারিতে ক্লাস শুরু হয়। আগে কেবল প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির কাজটি হতো লটারির মাধ্যমে। কিন্তু করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে ২০২১ শিক্ষাবর্ষে বিদ্যালয়গুলোতে সব শ্রেণিতেই লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে একই প্রক্রিয়ায় ভর্তির জন্য শিক্ষার্থী বাছাই করা হচ্ছে।
অনলাইন ডেস্ক :
আজ ৪ ডিসেম্বর সোমবার ঝিনাইগাতী মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে মিত্র বাহিনীর সহযোগীতায় মুক্তিযোদ্ধারা ঝিনাইগাতী অঞ্চলকে শত্রু মুক্ত করে।
দিনটি উপলক্ষে আজ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমিটি ও ঝিনাইগাতী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড শ্রদ্ধাভারে শস্মরণ করবে বলে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি সাইফুল ইসলাম জানায়।
পাক-হানাদার বাহিনী ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ কালো রাতে যখন ঢাকার বুকে হত্যাযজ্ঞে ঝাঁপিয়ে পড়ে সেই রাতেই ৩-৪৫ মিনিটে প্রেরীত স্বাধীনতার ঘোষনার টেলিগ্রাম ম্যাসেজ ঝিনাইগাতী ভি এইচ এফ ওয়্যারলেস অফিসে এসে পৌঁছে।
ম্যাসেজ পেয়েই ওয়্যারলেস মাস্টার জামান সাহেব তার অফিসের পিয়ন পাঠিয়ে শেষ রাতের দিকে আওয়ামী লীগ নেতা ফকির আ: মান্নানের বাসায় সংবাদ দেন।স্বাধীনতার ঘোষনার সংবাদ পেয়ে পরদিন ভোরেই অর্থাৎ ২৬ শে মার্চ সকালে ছাত্র নেতা ফকির আ: মান্নান, হারুনুর রশিদ মাষ্টার, বাবু অনন্ত কুমার রায়, সেকান্দর আলী ফকির সহ অনেকেই ওয়্যারলেস অফিসে এসে পৌছান।
ইংরেজীতে লেখা টেলিগ্রাম ম্যাসেজটি পেয়েই নেতৃবৃন্দ তৎক্ষনাৎ তা শেরপুর সংগ্রাম পরিষদ নেতৃবৃন্দের কাছে প্রেরন করেন। ২৬ মার্চ সকাল থেকেই বাঁধভাঙ্গা জোয়ারের মতো ঢাকার সর্বশেষ সংবাদ কি তা জানার জন্যে শেরপুর শহরে মানুষ সমবেত হতে থাকে।
ঝিনাইগাতী ওয়্যারলেসে পাঠানো স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রটি শেরপুর সংগ্রাম পরিষদ নেতৃবৃন্দ হাতে পেয়েই তা বাংলায় অনুবাদ করে শেরপুর নিউ মার্কেট মোড়ে জনতার স্বতঃস্ফুর্ত সমাবেশে পাঠ করে শুনানো হয়।
বঙ্গবন্ধুর পাঠানো স্বাধীনতার ঘোষনার শ্রবণ করে সমবেত জনতা মুর্হুমুর্হু শ্লোগানে মুখরিত করে তোলে শেরপুরের আকাশ বাতাস। ২৭ মার্চ সকালে শেরপুর সংগ্রাম পরিষদ নেতৃবৃন্দ সর্বজনাব এডভোকেট আব্দুল হালিম সাবেক এমপি, মুহসিন আলী মাস্টার ও ছাত্র নেতা আমজাদ আলী ঝিনাইগাতী এসে পৌছেন।
ঝিনাইগাতীর নেতৃবৃন্দ তাদের অভ্যর্থনা জানান। ছাত্রনেতা ফকির আব্দুল মান্নানকে সঙ্গে নিয়ে তারা নকশি ইপিআর ক্যাম্পে যান। নকশি ক্যাম্পের সুবেদার হাকিম নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকে বসেই বিদ্রোহ ঘোষণা করেন।
দেশকে শত্রু মুক্ত করা সহ পাক হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করে শুরু হলো প্রতিরোধ সংগ্রাম। যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসাবে রাংটিয়া পাতার ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ শিবির খোলা হয়। ট্রেনিং শেষে এসব স্বেচ্ছাসেবক সহ মুজিব বাহিনী ও ইপিআর সৈনিকদের নিয়ে সুবেদার হাকিম মধুপুরে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।
পরে তা পিছু হটে পুরাতন ব্র্হ্মপুত্র নদের চরে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ২৬ এপ্রিল সুবেদার হাকিম এর খোলা জীপ এসে দাঁড়ায় ঝিনাইগাতী আমতলায়। সুবেদার হাকিম জনতাকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে অনুরোধ জানিয়ে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত ঝিনাইগাতী শত্রু মুক্ত ছিল। ২৭ এপ্রিল পাক বাহিনীরা বহর নিয়ে গোলা বর্ষন করতে করতে পৌছায় ঝিনাইগাতী বাজারে।
ঝিনাইগাতী প্রবেশ করেই আওয়ামী লীগ অফিস আগুন ধরিয়ে দেয়। গাড়ী বহর নিয়ে রাংটিয়া পাহাড় পর্যন্ত গিয়ে আবার পিছনে ফিরে এসে ঐদিন বিকালেই কোয়ারীরোডে পাক বাহিনী ক্যাম্প স্থাপন করে। পরে ঝিনাইগাতীর এক মাইল দক্ষিণে আহম্মদ নগর হাই স্কুলে তাদের সেক্টর হেড কোর্য়াটার স্থাপন করে। যা মুক্তিযোদ্ধাদের ১১নং সেক্টরের বিপরীতে পাক বাহিনীর ব্রহ্মপুত্র নদের উত্তরে একমাত্র সেক্টর হেড কোর্য়াটার যার দায়িত্বে ছিলেন মেজর রিয়াজ।
এছাড়া পাক বাহিনী শালচূড়া, নকশি, হলদীগ্রাম, তাওয়াকোচা, মোল্লাপাড়ায় ক্যাম্প স্থাপন করে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৬ বৈশাখ জগৎপুর গ্রামে হানা দিয়ে গ্রামটি পুড়িয়ে দেয় এবং পাক বাহিনী ৪১ জন গ্রাম বাসীকে গুলি করে হত্যা করে। ৫ জুলাই কাটাখালি ব্রীজ ধ্বংস করে মুক্তিযোদ্ধারা রাংঙ্গামাটি গ্রামে আশ্রয় নেয়। দালালদের খবরে পাক বাহিনী রাংঙ্গামাটি গ্রামে তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলে। শুধু রাংঙ্গামাটি বিলের দিক খোলা ছিল।
সম্মুখ যুদ্ধে কমান্ডার নাজমুল আহসান শহীদ হন। তাঁর লাশ আনতে গিয়ে আলী হুসেন ও মোফাজ্জল শহীদ হন। পরদিন রাঙ্গামাটি গ্রামে হানা দিয়ে পাক বাহিনী ৯জন গ্রাম বাসীকে এক লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। ২৩ আগষ্ট বীর মুক্তিযোদ্ধারা তাওয়াকুচা ক্যাম্প দখল করে এবং মুক্ত তাওয়াকুচায় বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলণ করে। তাওয়াকুচা যুদ্ধে ৪ জন পাক সৈন্য ও ৭ জন রাজাকার নিহত হলে পাক বাহিনী ক্যাম্প ছেড়ে দিয়ে পিছু হটে আসে। ৩ আগষ্ট নকশি ক্যাম্প আক্রমন করে মুক্তিযোদ্ধারা।
আগের দিন ২ আগষ্ট বিকেলে মেজর জিয়া নকশি ক্যাম্প আক্রমনের জন্যে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতিয়ারের অবস্থান গুলো পরিদর্শন করেন। ওই দিনের যুদ্ধে ২৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ও নিখোজ হন। যুদ্ধে পাক বাহিনীর ৩৫ জন সৈন্য নিহত হয়।
২৭ নভেম্বর কমান্ডার জাফর ইকবালের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা ঝিনাইগাতী বাজারের রাজাকার ক্যাম্প দখল করে ৮টি রাইফেল সহ ৮ জন রাজাকারকে ধরে নিয়ে যায়।
২৮ নভেম্বর পাক বাহিনী ঝিনাইগাতী হানা দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা এবিএম সিদ্দিকের ছোট ভাই ওমর (১১) ও মুক্তিযোদ্ধা মকবুলের পুত্র খালেক (১০), পাক বাহিনীর দালালদের খবরে ৮ জনকে আহম্মদ নগর ক্যাম্পের বধ্যভূমিতে ধরে নিয়ে এক লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। পরে তাদের এক গর্তে মাটি চাপা দিয়ে পুতে রাখে।
৩ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক দেড়টায় শালচূড়া ক্যাম্পের পাক বাহিনী কামালপুর দুর্গের পতনের আগাম সংবাদ পেয়ে পিছু হটে এবং আহম্মদ নগর হেড কোর্য়ারটারের সৈনিকদের সাথে নিয়ে রাতেই মোল্লাপাড়া ক্যাম্প গুটিয়ে শেরপুরে আশ্রয় নেয়।
এভাবে রাতের আঁধারে বিনা যুদ্ধে ঝিনাইগাতী শত্রু মুক্ত হয়। ৪ ডিসেম্বর বীর মুক্তিযোদ্ধারা ঝিনাইগাতীতে স্বাধীন বাংলার অহংকারের পতাকা উড়ায় এবং মুক্তদিবস ঘোষণা করা হয়।