চলারপথে রিপোর্ট :
বিএনপি চেয়ারপার্সনের বহিষ্কৃত উপদেষ্টা ও আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১-(নাসিরনগর) থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী (কলার ছড়ি প্রতীক) সৈয়দ একে একরামুজ্জামান বলেছেন, নাসিরনগরে এখন নির্বাচনী পরিবেশ বিরাজ করছে।
আজ ২৭ ডিসেম্বর বুধবার বেলা ১১টায় নাসিরনগরে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আশ্বস্ত করেছেন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া নির্বাচনী এলাকার ভোটারদের একটা চাপ ছিলো তাই নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছি।
তিনি বলেন, নির্বাচনী মাঠে জনগণের বিরাট সাড়া পাচ্ছি। জনগণ পরিবর্তন চায়। জনগণ এক ব্যক্তির কারাগার থেকে মুক্তি চায়। তিনি বলেন, উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নেই নির্বাচনী পরিবেশ ভালো। আশাকরি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে। তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই জাতীয় পার্টির প্রার্থী শাহানুল করিম (গরিবউল্লাহ সেলিম) আমাকে সমর্থন করে নির্বাচন থেকে সড়ে দাড়িয়েছেন। বর্তমান পরিবেশ যদি ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত বজায় থাকে তাহলে আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদি।
তিনি বলেন, আগে দলীয় প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছি। বর্তমানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছি। তাই আমার সাথে আওয়ামীলীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা আছে। আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন বঞ্চিত তিন প্রার্থী মাঠে আমার জন্য কাজ করছেন। সাধারন মানুষের কাছ থেকেও বিপুল সাড়া পাচ্ছি।
স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ একে একরামুজ্জামান অভিযোগ করে বলেন, আমি নির্বাচিত হলে নিরাপদ নাসিরনগর বির্নিমান করবো। নাসিরনগর সরকারি কলেজে অনার্স, মাস্টার্স কোর্স চালু করে শিক্ষার ক্ষেত্রে উন্নয়ন করবো।
তিনি বলেন, নাসিরনগরের জেলেরা উপেক্ষিত। তাদের যে দাবি-দাওয়া গুলো আছে, প্রয়োজনে আমি নিজে জেলে হয়ে জেলেদের দাবি-দাওয়া আদায় করবো। তিনি বলেন, জাল যার জলা তার নীতির ভিত্তিতে জেলেদেরকে সুযোগ-সুবিধা করে দিবো।
তিনি বলেন, সব জায়গায় বিশেষ শিল্প কারখানা গড়ে তোলা যায়না। তিনি বলেন, ঢাকায় নাসিরনগরের প্রায় ২ হাজার কুটির শিল্পের উদ্যোক্তা আছে। আমি নির্বাচিত হলে ওই শিল্পটা নাসিরনগরে এনে শিল্পটা প্রসারিত করবো।
নির্বাচনী মাঠ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচনের মাঠে প্রতিপক্ষের অনবরত হুমকি পাচ্ছি। এর মধ্যে যে গুলো জরুরি মনে করছি সে গুলোর বিষয়ে অভিযোগ করছি। কিছু কিছু বিষয় আমলে নিচ্ছি না। কারণ কিছু বিষয় থাকে সব বিষয় আমলে নেয়া যায় না।
তিনি বলেন সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে আমাদের ভোটারদেরকে ভয় দেখানো হচ্ছে। তারা বলছে তোমরা যেখানেই ভোট দাও রেজাল্ট আমার পক্ষেই আসবে। এটা ভোটারদের জন্য বড় হুমকি। যার কারণে ভোটাররা মনে করছে ভোট দিয়ে তাহলে কি হবে। ভোট যদি ওরা পাল্টে ফেলে। তখন তাদেরকে আমি বলি আপনারা এ গুলোতে কান দেবেন না। তিনি বলেন, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিশ্চয়তা দিয়েছেন,সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, নাসিরনগরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা সন্তোষজনক। তবে শেষের কথা এই মূহুর্তে বলতে পারছিনা।
মতবিনিময় সভায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের কার্যকরি কমিটির নেতৃবৃন্দ ও সিনিয়র সাংবাদিকগণসহ বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ফান্দাউক দরবার শরীফের পীরে কামেলে মোকাম্মল হযরত শাহসূফী আলহাজ্ব সৈয়দ আবদুস ছাত্তার নকশে বন্দী(রঃ) ও পীরে কামেলে মোকাম্মেল হযরত শাহসূফী সৈয়দ নাছিরুল হক (মাসুম) নকশে বন্দী মোজাদ্দেদী ফান্দাউকী (রঃ) দ্বয়ের বার্ষিক ইছালে ছওয়াব উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী ফান্দাউকের সভা আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে।
আজ ১৮ ফেব্রুয়ারি রবিবার বাদ ফজর নামাজের পর আখেরী মোনাজাত পরিচালনা করেন ফান্দাউক দরবার শরীফের গদ্দীনিশীন মাওলানা সৈয়দ ছালেহ আহ্মাদ (মামুন)। আখেরী মোনাজাতে লাখো মুসল্লির অংশগ্রহনে মুখরিত প্রায় ৩২ মিনিট মোনাজাতে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, ইমান-ইসলাম রক্ষায় এবং মুসলিম উম্মার ঐক্য কামনাসহ ফিলিস্তিনের জন্য রহমত কামনার করে আল্লাহর দরবারে দোয়া করা হয়।
গত শুক্রবার বাদ জুমা পবিত্র ফাতেহা শরীফ পাঠ করার মাধ্যমে মাহফিলের কার্যক্রম শুরু হয়।
মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন ফান্দাউক দরবার শরীফের গদ্দীনিশীন মাওলানা মুফতি সৈয়দ ছালেহ আহ্মাদ মামুন আল হোসাইনী।
দুই দিনব্যাপী মাহফিলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন দরবার শরীফের পীরজাদা মাওলানা মুফতি সৈয়দ মঈনুদ্দিন আহমাদ আল-হোসাইনী, পীরজাদা মাওলানা সৈয়দ আবুবক্কর সিদ্দিকী আল-হোসাইনী, পীরজাদা মাওলানা সৈয়দ বাকের মোস্তুফা আল-হোসাইনী।
মাওলানা সৈয়দ আশরাফ শামীম আল-হোসাইনীর সঞ্চালনায় দুইদিন ব্যাপী মাহফিলে মহান রাব্বুল আলামিনের গুণগান, কুরআন ও হাদিস থেকে শান্তির ধর্ম ইসলাম সর্ম্পকে গুরুত্বপূর্ণ এবং সঠিক জীবন বিধান নিয়ে মূল্যবান আলোচনা পেশ করেন ড. মাওলানা সাইফুল আজম বাবর আল-আজহারী, মৌকারা দরবার শরীফের পীর মাওলানা নেছার উদ্দিন ওয়ালী উল্লাহ, মাওলানা উসমান গণি ছালেহী, মাওলানা নেছার আহমেদ চাঁদপুরী, আল্লামা ড. কাফিল উদ্দিন সরকার, আল্লামা আবি আবদুল্লাহ আইনুল হুদা, হাফেজ মাওলানা নেছার উদ্দিন ফেনী, পীরজাদা মাওলানা মীর হাবিবুর রহমান যুক্তিবাদী, মাওলানা আনোয়ার হোসাইন সাইফী, মাওলানা মুফতি আলাউদ্দিন জিহাদী, মাওলানা মুফতি মোতালেব হোসাইন ছালেহী, মাওলানা হাফিজ আবু হানিফ আনোয়ারীসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম ও ওলামাগণ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রত্যন্ত জনপথ নাসিরনগরের ফান্দাউক। এ গ্রামে দ্ইু দিনব্যাপী মাহফিলের কাজ আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হয় শুক্রবার জু‘মার নামাজ বাদ। মাহফিল উপলক্ষে প্রায় ১৫ দিন ধরে সামিয়ানা টানানো হয়। বিশাল প্যান্ডেল টানানো হয় আশেকানদের জন্য। বন(খড়)বিছিয়ে হাজার হাজার ভক্ত মুরিদান বসে বয়ান শুনেন। তাদের সুবিধার জন্য প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, ভৈরব, আশুগঞ্জ, নাসিরনগরসহ বিভিন্ন স্থ্ান থেকে লাখো মানুষের সমাগম ঘটেছে। ৫ হাজার লোক এক সাথে বসে খিচুরী খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। বিশাল এলাকা জুড়ে প্যান্ডেল নির্মান করা হয়। আর এর পুরোটাই করা হয় স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে। সভাকে ঘিরে অস্থায়ী ভিত্তিতে ছোট বড় কয়েক‘শ দোকান-পাট গড়ে উঠে। দূরের আশেকানদের থাকার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়। এ সভাকে ঘিরে এলাকার লোকজনের মধ্যে উৎসবের আমেজ দেখা দেয়। প্রতিবারের ন্যায় এবারও লাখো মুসল্লির অংশগ্রহনে মূখরিত ফান্দাউক দরবার শরীফ।
উল্লেখ্য, মাহফিলে দরবার শরীফের আওতায় পরিচালিত প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ফান্দাউক মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসার ৭ জন ছাত্রকে পাগড়ি প্রদান করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে নিরাপত্তাসহ ১১ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করছেন পুলিশ সদস্যরা। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ ৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার সকালে নাসিরনগর থানা প্রাঙ্গণে দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করেন পুলিশ সদস্যরা।
থানা ভবনের সামনে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ নুরে আলম ও চাতলপাড় তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ রঞ্জন কুমার ঘোষের উপস্থিতিতে পুলিশের এসআই, এএআই ও কনস্টেবলরা কর্মবিরতিতে অংশ নেন। সেখানে রাজনৈতিক ফায়দা নেয়া এবং আত্মগোপনে থাকা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকে পুলিশ সদস্যরা।
পুলিশ সদস্যরা জানান, তারা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে। তারা কোন সরকারের পক্ষ হয়ে কাজ করবে না। পুলিশ জনগণের শত্রু না, বন্ধু। এসময় বিভিন্ন শ্লোগান দিতে দেখা গেছে পুলিশ সদস্যদের।
এ সময় তারা এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে পুলিশ সদস্য হত্যার বিচার, যেসব পুলিশ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে তাদের ক্ষতিপূরণ দেয়াসহ বিচার, পুলিশের ইউনিফর্ম পরিবর্তন, কনষ্টেবল থেকে আইজি পর্যন্ত একেই ড্রেসকোড, পুলিশকে রাজনীতিমুক্ত রেখে নিরপেক্ষতার সাথে কাজ করার সুযোগ নিশ্চিত করা, ৮ ঘন্টার বেশি ডিউটি না করা, পদোন্নতির ক্ষেত্রে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যেভাবে দ্রুত পদোন্নতি পায়, ঠিক সেইভাবে নিম্ন পদে যারা আছেন তাদেরকেও পদোন্নতির ব্যবস্থা করা, ২০ দিনের ছুটি বৃদ্ধি করে ৬০ দিন করা, অফিসারদের মত কনস্টেবলদেরকেও সোর্স মানি দেয়া, প্রত্যেক মাসের ১০ তারিখের মধ্যে টিএ-ডিএ বিল নিশ্চিত করা, পুলিশের ঝুঁকিভাতা বৃদ্ধি করা, প্রত্যেক পুলিশ সদস্যদেরকে নিজ রেঞ্জে বদলি করাসহ ১১ দফা দাবি তুলে ধরেন।
এ সময় কনস্টেবল লুৎফর রহমান মীর, মোঃ রিয়াজ উদ্দিন, সাদ্দাম হোসেনসহ অন্য পুলিশ সদস্য বক্তব্য রাখেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে উপজেলা পরিষদ নিবার্চন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য করার লক্ষ্যে ভোট গ্রহনকারী কর্মকর্তাদের তিনদিন ব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু হয়েছে।
আজ ২ মে বৃহস্পতিবার সকালে নাসিরনগর উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে ও স্থানীয় আশুতোষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা নির্বাচন অফিস প্রিজাউডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও পুলিং কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের আয়োজন করেন।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী কর্মশালায় ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও জেলা রির্টানিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাদেকুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নিবার্চন সমন্বয়কারী মোঃ ইমরানুল হক ভূইয়া, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রির্টানিং কর্মকর্তা মোঃ শহীদুল ইসলাম ও নবীনগর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ আজগর আলী।
প্রথমদিন প্রশিক্ষণে ১০৩ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, ২৪০ জন সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা এবং ৪৪৩ জন পোলিং কর্মকর্তা অংশগ্রহন করেন।
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান ভোট গ্রহন কর্মকর্তাদের অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নিজ নিজ দায়িত্ব, কর্তব্য সততা এবং নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি করণীয় সর্ম্পকে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রির্টানিং কর্মকর্তা মোঃ শহীদুল ইসলাম জানান, আগামী ৮ মে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ লক্ষ্যে ১০৩ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা,৭১২ জন সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা এবং ১৪২৬ জন পোলিং কর্মকর্তাদের দুই শিফটে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, নাসিরনগর উপজেলায় ৯৩টি কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ভোটার ২ লাখ ৫৬ হাজার ২৬৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৩৫ হাজার ৫শ ১৯ জন ও মহিলা ভোটার ১ লাখ ২০ হাজার ৭শ ৪৫ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গ ২ জন।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগর উপজেলার ভলাকুট ইউনিয়নের খাগালিয়া গ্রামে সংঘর্ষের ঘটনায় বাড়িছাড়া প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার। প্রতিপক্ষরা তাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে গরু, হাঁস, পাকা ধান, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে। অবশ্য লুট হওয়া ২২টি গরু উদ্ধার করে ভুক্তভোগীদের কাছে ফেরত দিয়েছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ প্রশাসন। কিন্তু তারা বিপাকে পড়েছে ধানি জমি নিয়ে।
বছরের এ সময়টায় পাকা ধান ঘরে তোলায় ব্যস্ত সময় পার করেন পরিবারের সবাই। পুলিশের গ্রেফতার আতঙ্ক আর প্রতিপক্ষের ভয়ে বাড়িছাড়া হওয়ায় সময় মতো কাটতে না পারায় ৬০টি পরিবারের ৪০০ বিঘা জমির পাকা ধান নষ্ট হচ্ছে জমিতেই। সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নিয়েছে নাসিরনগর উপজেলা প্রশাসন। আজ ২৯ এপ্রিল শনিবার গ্রামবাসীকে নিয়ে ধান কাটার জন্য গঠন করা হয়েছে ১১ সদস্যের সম্প্রীতি কমিটি।
এর আগে পাকা ফসল জমিতে নষ্ট হওয়ায় প্রতিকার চেয়ে উপজেলা সমন্বয় সভায় স্থানীয় সংসদ সদস্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ভলাকুট ইউনিয়নের বীর মুক্তিযুদ্ধা কার্তিক চন্দ্র দাস। পরে সংসদ সদস্য, পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বিবাদ এড়িয়ে দ্রুত আসামি পক্ষের ধান কেটে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার বিষয়ে পরামর্শ দেন।
সরেজমিন খাগালিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, বিশাল এলাকাজুড়ে পাকা ধান পড়ে আছে। আর কয়েকদিন গেলেই সেগুলো আর কাটা যাবে না। ফলে পাকা ধান ক্ষেতেই নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জরিফা বেগম জানান, কৃষিই আমাদের আয়ের একমাত্র ভরসা। সারা বছরের মধ্যে শুধু ধান চাষ করেই আমাদের পেট চলে। কিন্তু এবার যদি ধান না কাটতে পারি আমরা আগামী এক বছর কিভাবে চলবো।ইউএনও স্যার এসে কমিটি গঠন করে দিয়ে গেছে। আশা করছি, দ্রুতই পাকা ধান কাটতে পারবো।
সম্প্রীতি কমিটির প্রধান ও ভলাকুট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রুবেল মিয়া বলেন, আমি এ পর্যন্ত ২২টি লুট হওয়া গরু উদ্ধার করে প্রকৃত মালিকের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছি। পাকা ধান কাটার জন্য একটি সম্প্রীতি গঠন করা হয়েছে।
নাসিরনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন বলেন, মাসিক সমন্বয় সভায় আলোচনা হয় কৃষক ধান কাটতে না পারার বিষয়টি তুলে ধরা হয়। বিষয়টি সমাধানে উপজেলা প্রশাসন উদ্যোগ নিয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা ফখরুল ইসলাম বলেন, মাসিক আইনশৃঙ্খলা ও সমন্বয় সভায় কৃষকের পাকা ধান কাটার অনিশ্চিয়তার বিষয়ে আলোচনা হয়। শনিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পক্ষকে নিয়ে বসে ধান কাটার বিষয়ে একটি সম্প্রীতি কমিটি গঠন করে দিয়েছি। আশা করছি, পাকা ধান কাটতে সমস্যা হবে না।
গত ২২ এপ্রিল ঈদের দিন বিকালে খাগালিয়া ৩নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য রব মিয়া ও সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল হামিদের পক্ষের লোকজন খাগালিয়া নতুন বাজার এলাকায় সরকারি খাস জায়গায় ধান মাড়াইয়ের ‘খলা’ স্থাপনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়ালে জামাল মিয়া নামে এক কৃষক নিহত হন। এরপরই শুরু হয় প্রতিপক্ষের বাড়িতে লুটপাট।
চলারপথে রিপোর্ট :
জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহত ও শহীদদের স্মরণে নাসিরনগরে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ২৭ নভেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহীনা নাছরিনের সভাপতিত্বে ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) রবিউস সারোয়ারের সঞ্চালনায় আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে বক্তব্য রাখেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অভিজিৎ রায়, থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ হাসান জামিল খান, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রাখেশ পাল, উপজেলা ইমাম সমিতির সভাপতি মুফতি মুখলেছুর রহমান, উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক আকতার হোসেন ভূইয়া, ছাত্র প্রতিনিধি মোঃ সাইফুজ্জামান জনি, খালেদ সাইফুল্লাহ সোহাগ, মোহাম্মদ ওয়াসিম উদ্দিন, মোবাস্বির রহমান।
এছাড়াও আলোচনা সভায় বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে আহত ও শহীদদের স্মরণে স্মৃতিচারণ করেন তাদের পরিবারের সদস্যরা।
আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে সরকারি কর্মকর্তা, বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিনিধি, ছাত্র-জনতা ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত ও শহীদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভা শেষে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় এবং আহতদের দ্রæত সুস্থতা কামনা করে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন উপজেলা কমপ্লেক্স জামে মসজিদের খতিব মুফতি মুখলেছুর রহমান।