অনলাইন ডেস্ক :
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের মনোনয়নপত্র বাতিল করে দিয়েছে দেশটির নির্বাচন কমিশন।
২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য তার দাখিল করা মনোনয়নপত্র শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) বাতিল করা হয়েছে বলে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে।
৭১ বছর বয়সী সাবেক এই ক্রিকেট তারকা ২০২২ সালের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে রাজনৈতিক ও আইনি লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েছেন। বেআইনিভাবে রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রির দায়ে আগস্টে তিন বছরের সাজায় জেলে যাওয়ার পর থেকে তাকে আর জনসমক্ষে দেখা যায়নি।
আসন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী জাতীয় আইনপরিষদের দুটি আসন এনএ-১২২ (লাহোর) ও এনএ-৮৯ (মিয়ানওয়ালি) থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। শনিবার নির্বাচন কমিশন তার মনোনয়নপত্র বাতিল করে দিয়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে পাকিস্তানের গণমাধ্যমগুলো।
লাহোরের আসনটি থেকে ইমরান খানের প্রার্থিতা প্রত্যাখ্যানের বিষয়ে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন বলেছে, ইমরান খান ওই নির্বাচনী এলাকার নিবন্ধিত ভোটার নন এবং তিনি আইন-আদালতের দ্বারা দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন এবং অযোগ্য হয়েছেন।
পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) নেতা মিয়ান নাসির ইমরান খানের মনোনয়নের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সমর্থনকারী এবং প্রস্তাবক এনএ-১২২ আসনের অন্তর্ভুক্ত নন; যা আইনত এই আসনের হওয়া বাধ্যতামূলক।
তিনি আরও বলেন, এনএ-১২২ আসন থেকে কাগজপত্র জমা দিয়েছেন ইমরান খান। কিন্তু তিনি একজন দণ্ডিত ব্যক্তি। তাই নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
পাকিস্তানে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি সাধারণ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য প্রার্থীদের দাখিল করা মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের সময়সীমা ৩০ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত আপিল করা যাবে এবং ১০ জানুয়ারির মধ্যে এসব আপিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে দেশটির নির্বাচন কমিশন।
চলারপথে ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্র সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের ক্ষমতায় স্বাধীনতা বিরোধী, খুনী ও অগ্নি সন্ত্রাসীরা কখনই যেন ফিরতে না পারে সে বিষয়ে দেশবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে। এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
গতকাল মঙ্গলবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে রিজ কার্লটন হোটেলের হলরুমে আমেরিকায় বাংলাদেশী প্রবাসীদের দেয়া এক নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘খুনী, স্বাধীনতা বিরোধী, যুদ্ধাপরাধীরা যাতে আর কখনই ক্ষমতায় ফিরতে না পারে তা নিশ্চিত করুন। এই বিএনপি-জামাত জোট বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ২০১৩ থেকে ১৫ সাল পর্যন্ত তথাকথিত আন্দোলনের নামে বহু মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে এবং রাস্তার পাশের হাজার হাজার গাছ উজাড় করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দেন যে, ‘এই চক্র দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল যেখানে আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৪ বছরে দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে একে আবারো উন্নয়নের মহাসড়কে তুলেছে।বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে। আমরা এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধাগুলোকে সর্বোচ্চ কাজে লাগিয়ে দেশে বিদেশে রাষ্ট্র বিরোধী অপপ্রচার চালানোর জন্যে বিএনপি জামাত জোটের কঠোর সমালোচনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আরও বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছি। বিএনপি-জামাত জোট ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা ব্যবহার করে আমাদেরই বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এসব অপপ্রচারে কান না দেয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, লাখো মানুষের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পেয়েছে। তিনি বলেন, সবাইকে মাথা উঁচু করে ও যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে বিশ্বে চলতে হবে।
বাংলাদেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে তার সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, সরকার অবকাঠামো, স্বাস্থ্যসেবা, বাসস্থান, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ প্রতিটি খাতের উন্নয়ন নিশ্চিত করেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই আমরা এটা করতে পেরেছি।
দেশের উন্নয়নে প্রবাসীদের অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের উন্নয়নে প্রবাসীরা অনেক অবদান রেখেছে।’
প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে হুন্ডির পরিবর্তে বৈধ মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোর আহ্বান জানান কারণ, সরকার যথাযথ প্রক্রিয়ায় রেম্যিটান্স প্রেরণকে উৎসাহিত করতে ২.৫ শতাংশ প্রণোদনা ঘোষণা করেছে।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারনে বিশ^ব্যাপী অর্থনৈতিক সংকটের পরও সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারনে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখা সম্ভব হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, চলমান যুদ্ধের কারণে উন্নতসহ অনেক দেশ সংকটে পড়লেও বহু দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থা এখনও ভালো।
প্রধানমন্ত্রী খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন যেন বাংলাদেশ কোন সংকটে না পড়ে।
দেশের দারিদ্র্যের হার ১৮.৭ শতাংশ এবং অতি দারিদ্রের হার ৫.৬ শতাংশে নামিয়ে আনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে কোন চরম দারিদ্র্য থাকবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাংক অনুসরণ করে সারাদেশে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় বিনামূল্যে বাড়ি দিয়ে আসছে।
তিনি আরো বলেন, তাঁরা ইতোমধ্যে আবাসন প্রকল্পের আওতায় ৩৫ লাখ লোককে বাড়ি দিয়েছেন এবং তাদের জীবিকা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘দেশে কেউ গৃহহীন থাকবে না, কারণ সরকার প্রতিটি গৃহহীন লোককে বিনামূল্যে আবাসন প্রকল্পের আওতায় আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
এ লক্ষে আরো ৬০ হাজার ঘর তৈরি হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
এ সময় মঞ্চে অন্যান্যের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন উপস্থিত ছিলেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান অন্ষ্ঠুান পরিচালনা করেন।
অনলাইন ডেস্ক :
ভূমিধসে ১৯ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া এ ঘটনায় অনেকেই আটকে পড়েছেন। ভারতের কেরালায় ভূমিধসের পর বেশ কিছু এলাকা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ।
চার ঘণ্টার বৃষ্টিতে আজ ৩০ জুলাই মঙ্গলবার ভোরে রাজ্যটির ওয়েনাড জেলার পাহাড়ি মেপ্পেদি এলাকায় ভূমিধস হয়েছে। রাজ্যের দুর্যোগ মোকাবিলা সংস্থা কেরালা স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (কেসিডিএমএ) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্র : এনডিটিভি
কেসিডিএমএ জানিয়েছে, ভূমিধস এলাকায় উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন কেসিডিএমএ ও কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন দুর্যোগ মোকাবিলা সংস্থা এনডিআরএফের কর্মীরা। কেরালা পুলিশের এলিট ফোর্স কান্নুর ডিফেন্স সিকিউরিটি কর্পসের দু’টি ইউনিটও কাজ করছে। বিমান বাহিনীর সহায়তাও চাওয়া হয়েছে।
সেখানে বহু মানুষ আটকা পড়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। কেসিডিএমএ বলছে, মেপ্পেদি এলাকায় ব্যাপক বৃষ্টি হচ্ছে। ভারী বর্ষণে উদ্ধার কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
টানা কয়েকদিন সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের পর মিয়ানমারের কাওলিন শহরের দখল নিয়েছে জান্তাবিরোধী বিদ্রোহীরা। গত সোমবার কাওলিনের নিয়ন্ত্রণ বিদ্রোহীদের হাতে ছেড়ে দিয়ে সেনা বাহিনী পিছু হটেছে বলে রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছে দেশটির জান্তাবিরোধী রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠীগুলোর জোট ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (নাগ)।
মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ সাগাইংয়ে অবস্থিত কাওলিন কৌশলগত দিক থেকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি শহর। কারণ কাওলিন জেলার সামরিক প্রশাসনিক কার্যালয়ের সদর দপ্তরের অবস্থান এই শহরে। প্রায় ২৫ হাজার মানুষ বসবাস করেন কাওলিনে।
যেহেতু জেলার সামরিক প্রশানিক কার্যালয়ের শহর কাওলিনে, তাই এই শহরটির দখল করা মানে এক অর্থে পুরো কাওলিন জেলার নিয়ন্ত্রণ নেওয়া।
মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী রাজনৈতিক জোট ‘নাগ’ একই সঙ্গে নিজেকে দেশটির ছায়া সরকার বলেও দাবি করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক বার্তায় নাগের প্রধানমন্ত্রী মান উইন খাইং থান বলেন, ‘জেলা শহর কাওলিন এখন আমাদের দখলে। কী যুগান্তকারী একটি বিজয়!’
এক্সে একটি ভিডিওচিত্রও পোস্ট করেছেন খাইং থান। সেখানে দেখা গেছে— কাওলিন সামরিক প্রশাসনিক কার্যালয়ের সেনা সদস্যরা কার্যালয়ের সামনে বিদ্রোহী জোট নাগের পতাকা উত্তোলন করছেন।
এ ব্যাপারে আরো বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে জান্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। তবে কোনো কর্মকর্তা মুখ খুলতে রাজি হননি।
কাওলিন শহরের ২৮ বছর বয়সী এক বাসিন্দা নিরাপত্তাজনিত কারণে নিজের নাম প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকে জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে এবং এই সংঘর্ষের আঁচ থেকে আত্মরক্ষা করতে কাওলিনের অধিকাংশ মানুষ শহর ছেড়ে পালিয়েছেন।
‘শহরে আর কোনো নিরাপদ স্থান নেই। প্রায় সবাই নিজের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে’, বলেছেন সেই বাসিন্দা।
২০২০ সালের জাতীয় নির্বাচনে ভূমিধস বিজয় পেয়ে সরকার গঠন করেছিল মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। কিন্তু সেই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেই সরকারকে হটিয়ে জাতীয় ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। দেশটির তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং সেই অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
ক্ষমতা দখলের পর বন্দি করা হয় এনএলডির শীর্ষ নেত্রী অং সান সু চিসহ দলটির অধিকাংশ উচ্চ ও ও মাঝারি পর্যায়ের নেতা ও আইনপ্রণেতাদের। এখনও তারা কারাগারে রয়েছেন।
মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী জনগণ অবশ্য সামরিক বাহিনীর এ পদক্ষেপ একেবারেই মেনে নেয়নি। বাহিনী ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই রাজধানী নেইপিদো, প্রধান শহর ও বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনসহ দেশটির ছোট-বড় বিভিন্ন শহরে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভের শুরুর দিকে শান্তিপূর্ণভাবে তা দমনের চেষ্টা করলেও একসময় বিক্ষোভ দমন করতে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেয় জান্তা।
নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে হাজারেরও অধিক মানুষের মৃত্যু হয়। এক পর্যায়ে গণতন্ত্রপন্থীরা জান্তাবিরোধী রাজনৈতিক দল ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোতে যোগ দিতে থাকেন, গঠিত হয় ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট বা নাগ।
বেলজিয়ামভিত্তিক থিংকট্যাংক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের মিয়ানমার বিষয়ক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা রিচার্ড হোরসি অবশ্য মনে করছেন নাগ বেশিদিন এই শহর দখলে রাখতে পারবে না।
‘মিয়ানমারের যে বাস্তবতা, তাতে কোনো বিদ্রোহী গোষ্ঠীর পক্ষে পার্বত্য অঞ্চলের কোনো প্রাদেশিক শহর দখল করে নেওয়া তেমন কঠিন নয়; তবে দীর্ঘসময় ধরে তা দখলে রাখা খুব কঠিন।’ সূত্র : রয়টার্স
অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন করার লক্ষ্য ৩২ সদস্যের মিয়ানমারের একটি প্রতিনিধি দল কক্সবাজারের টেকনাফে পৌঁছেছেন। এরপর তারা ১৮০ পরিবারের সাথে মতবিনিময় করেন।
আজ ৩১ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নৌপথে আরকান রাজ্যের সাউ নাইং এর নেতৃত্বে ৩২ সদস্যের প্রতিনিধি দলটি টেকনাফের জেটিঘাটে এসে পৌঁছায়। পরে গাড়িযোগে টেকনাফ সড়ক ও জনপথ বিভাগের রেস্ট হাউসে নদী নিবাসে পৌঁছার পর সাক্ষাৎকার নেওয়া শুরু করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে ক্যাম্প থেকে ১৮০ পরিবারের সদস্যদেরকে সিআইসি অফিসের পক্ষ থেকে ডাকা হয়েছে। তারা টেকনাফ সড়ক ও জনপদের রেস্ট হাউসে নদী নিবাসে যায়।সেখানে তাদের সাথে মিয়ানমারের একটি প্রতিনিধি দল প্রত্যাবাসনের বিষয়ে সাক্ষাৎকার নেয়।
কক্সবাজারের ত্রাণ ও প্রত্যাবাসনের অতিরিক্ত কমিশনার মো. শামসুদ্দোজা বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের লক্ষ্য ৩২ সদস্যের একটি মিয়ানমারে প্রতিনিধি দল সকালে টেকনাফে পৌঁছেন। এখনো তাদের সাথে মতবিনিময় চলছে।
উল্লেখ্য, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিপীড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশে মানবিক আশ্রয় পাওয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে প্রথম তালিকার ১৬৮ পরিবারের ৪৮০ জনের তথ্য যাচাই-বাছাই ও সাক্ষাৎকার শেষে মিয়ানমারের ১৭ সদস্যের টেকনিক্যাল টিম ২২ মার্চ (বুধবার) সকাল ১০টার দিকে নাফ নদ থেকে টেকনাফ চৌধুরী পাড়ার ট্রানজিট জেটিঘাট দিয়ে মিয়ানমারের উদ্দেশ্য রওনা দেয়।
প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ থেকে দেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রথম তালিকার যাচাই-বাছাই করতে মিয়ানমারের ১৭ সদস্যের একটি টেকনিক্যাল টিম ১৫ মার্চ সকালে টেকনাফ ট্রানজিট জেটিঘাট হয়ে বাংলাদেশে আসে।
মিয়ানমারের কাছে পাঠানো প্রথম তালিকাটি থেকে গত সাতদিনে ১৬৮ পরিবারের ৪৮০ জনের তথ্য যাচাই-বাছাই ও সাক্ষাৎকার প্রক্রিয়া শেষ করেন। যাদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়েছে তাদের থেকে বাংলাদেশের আশ্রয় শিবিরে জন্ম নেওয়া ওই পরিবারের শিশুদেরও নথিভুক্ত করেছে টেকনিক্যাল টিম।
অনলাইন ডেস্ক :
কানাডা থেকে আসা অ্যালুমিনিয়াম এবং স্টিলের ওপর শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করার হুমকি দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো বিদ্যুতের উপর শুল্কের পরিকল্পনা বাতিল করে কানাডার অন্টারিও’র প্রধান। এর ফলে কানাডার উপর দ্বিগুণ শুল্কের হুমকি থেকে সরে এসেছে ট্রাম্প প্রশাসন। ১১ মার্চ মঙ্গলবার অ্যালুমিনিয়াম এবং স্টিলের উপর কর দ্বিগুণ করার প্রস্তাব আপাতত স্থগিত রাখার ঘোষণা করে ট্রাম্প প্রশাসন।
হোয়াইট হাউসের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো এই পরিপ্রেক্ষিতে জানান, কানাডার উপর দ্বিগুণ শুল্কের হুমকি থেকে আপাতত সরে এসেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
তবে, আজ ১২ মার্চ বুধবার থেকেই অ্যালুমিনিয়াম এবং স্টিল আমদানির উপর ২৫ শতাংশ নতুন শুল্ক ধার্য হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকার আপাতত সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করেনি। এর আগে ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন যে কানাডা থেকে আনা অ্যালুমিনিয়াম এবং স্টিলের উপর তিনি দ্বিগুণ শুল্ক ধার্য করবেন। সেক্ষত্রে ৫০ শতাংশ কর দিতে হতো।
এর অনেক আগেই ট্রাম্পের কানাডার উপর কর আরোপ করার ঘোষণার পর গত সোমবার ওটাওয়ার প্রধান ডগ ফোর্ড প্রস্তাব করেন সেক্ষেত্রে তারাও আমেরিকাকে বিদ্যুৎ রপ্তানির উপর শুল্প বসাবে। এর পরেই ট্রাম্প কর দ্বিগুণ করার হুমকি দিয়েছিলেন।
তার ট্রুথ সমাজমাধ্যমে ট্রাম্প ঘোষণা করেন, বাণিজ্য সচিবকে তিনি জানিয়েছেন যেন কানাডা থেকে আসা অ্যালুমিনিয়াম এবং স্টিলের দ্রব্যের উপর আরো ২৫ শতাংশ শুল্ক ধার্য করা হয়। বুধবার থেকেই তা শুরু হওয়ার কথা ছিল। তার এই ঘোষণার পরেই স্টক মার্কেটে ধস নামে।
কানাডা যদি কর না কমায় তাহলে আমদানি করা গাড়ির উপরে কর বসানো হবে বলে হুমকি দেন ট্রাম্প।
কানাডার আগামী প্রধানমন্ত্রী ট্রাম্পের এই ঘোষণা প্রসঙ্গে বলেন, এটা কানাডার ‘প্রতিটি শ্রমিক, পরিবার এবং ব্যবসার উপর আঘাত।’
এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, সরকার নিশ্চিত করতে চায় যে আমাদের প্রতিক্রিয়ায় যেন যুক্তরাষ্ট্রের উপর সর্বাধিক এবং কানাডার উপর সব থেকে কম প্রভাব পরে। তাদের নির্ধারিত কর ততদিন পর্যন্ত বহাল থাকবে, যতদিন না পর্যন্ত আমেরিকা কানাডার প্রতি সম্মান দেখাবে এবং মুক্ত বাণিজ্যের নির্ভরযোগ্য এবং বিশ্বাসযোগ্য প্রতিশ্রুতি দিতে পারবে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির গোড়ার দিকে কানাডার দ্রব্য সামগ্রীর উপর ২৫ শতাংশ কর বসানোর কথা ঘোষণা করে হোয়াইট হাউস। তাদের তরফ থেকে বলা হয় মাদক ব্যবসা এবং অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি কানাডা। মার্চ থেকে নতুন শুল্ক চালু হওয়ার কথা থাকলেও কানাডা তাদের সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা পাঠাতে সম্মত হয়।
এই শুল্ক পরিস্থিতি আরো জটিল হয় যখন সোমবার অন্টারিও’র প্রধান ঘোষণা করেন, যুক্তরাষ্ট্রের উপভোক্তাদের জন্যও তিনি ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত কর বসাবেন। কানাডা-আমেরিকার সীমান্ত প্রদেশ অন্টারিও থেকে নিউ ইয়র্ক, মিশিগান এবং মিনেসোটায় বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়। তিনি অন্যান্য প্রদেশকেও আমেরিকার উপর শুল্ক বাড়াতে বলেন। সূত্র : এপি ও ডয়চে ভেলে।