অনলাইন ডেস্ক :
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য দেশে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
আজ ২ জানুয়ারি মঙ্গলবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে ইন এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ারের আওতায় সশস্ত্র বাহিনী নিয়োজিত হয়েছে।
সশস্ত্র বাহিনী ভোটগ্রহণের আগে, ভোটগ্রহণের দিন ও ভোটগ্রহণের পর শান্তি-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দেশব্যাপী ৩-১০ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন বা স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা প্রদান করবে।
সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা প্রতিটি জেলা, উপজেলা, মেট্রোপলিটন এলাকার নোডাল পয়েন্ট ও অন্যান্য সুবিধাজনক স্থানে অবস্থান করবে। সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের অনুরোধক্রমে ও সমন্বয়ের মাধ্যমে বাহিনীগুলোর এলাকাভিত্তিক মোতায়েন সম্পন্ন করছে। সেনাবাহিনী ৬২টি জেলায় নিয়োজিত হয়েছে।
সমতলে সীমান্তবর্তী ৪৫টি উপজেলায় বিজিবি এককভাবে দায়িত্ব পালন করবে; এ ছাড়া সীমান্তবর্তী ৪৭ উপজেলায় সেনাবাহিনী বিজিবির সঙ্গে এবং উপকূলীয় চার উপজেলায় কোস্ট গার্ডের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে যৌথভাবে দায়িত্ব পালন করবে। উপকূলীয় দুটি জেলাসহ (ভোলা ও বরগুনা) সর্বমোট ১৯ উপজেলায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী দায়িত্ব পালন করবে।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলের ভোটকেন্দ্রগুলোতে প্রয়োজনীয় হেলিকপ্টার সহায়তা দেবে। এ ছাড়া জরুরি প্রয়োজনে নির্বাচনী সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রয়োজনীয় সংখ্যক হেলিকপ্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বা বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে যৌথ সমন্বয় সেল স্থাপন করা হয়েছে, যা ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে সশস্ত্র বাহিনী সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
‘পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত জ্বলন্ত/ ঘোষণার ধ্বনি-প্রতিধ্বনি তুলে/ নতুন নিশানা উড়িয়ে, দামামা বাজিয়ে দিগি¦দিক/ এই বাংলায়/ তোমাকে আসতেই হবে, হে স্বাধীনতা।’ কবি শামসুর রাহমানের এই কবিতা সত্যিই বাঙালির জীবনে সত্যি হয়ে এসেছে। কবি নির্মলেন্দু গুণের ভাষায় : ‘আমার ছিল না মুক্ত মাতৃভূমি/ শৃঙ্খলহীন স্বাধীন দেশ;/ শতবর্ষের শত সাধনায়/ পেয়েছি তোমায় বাংলাদেশ।’
বাঙালির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অর্জন স্বাধীনতা প্রাপ্তির দিন আজ ১৬ ডিসেম্বর। একাত্তরের এই দিনটিতে বাংলার আকাশে-বাতাসে ধ্বনিত হয় ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান। সেই দিনটির ন্যায় আজ সেই শ্লোগান তুলবে পুরো জাতি। সর্বত্র উড়বে বিজয়ের লাল-সবুজ পতাকা।
বিজয়ের এইদিনে শপথ নেয়া হবে দেশ থেকে মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করার। শপথ নেয়া হবে স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অসম্মানকারীদের রুখে দেয়ার। শপথ নেয়া হবে দেশের উন্নয়ন ও প্রগতির পথে বাধাদানকারীদের সমূলে উচ্ছেদ করার।
নয় মাস সশস্ত্র সংগ্রামের পর উনিশ শ’ একাত্তরের এই দিনে ৯২ হাজার পাকিস্তানি সৈন্যবাহিনী ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) আত্মসমর্পণ করে। জন্ম নেয় স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। সেই বিজয়ের আনন্দে আজ বাংলার মানুষ ভাসবে।
সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের শুভ সূচনা হবে। হাজার হাজার মানুষের মিলনমেলা হবে ফারুকী পার্ক স্মৃতিসৌধ। সেখানে শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাবে সবাই। দিনভর বাংলার পথে-প্রান্তরে বাজবে বিজয়ের গান।
জাতি আজ স্মরণ করবে স্বাধীনতা সংগ্রামের মহান নায়ক বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে আরও দৃঢ়প্রত্যয়ী হবে নতুন প্রজন্ম। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় সমাধিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানাবে সর্বস্তরের মানুষ। কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করা হবে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে সহায়তাকারী বন্ধুরাষ্ট্র ভারতকে; যে দেশ এক কোটি মানুষকে আশ্রয় দিয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং আর সাহস জুগিয়েছিল।
আজ সরকারি ছুটি। যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি উদযাপনের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সারা দেশে সরকারি-বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উড়বে। ঘরের সামনে, ভবনের ছাদে কিংবা গাড়িতেও উড়বে লাল-সবুজের এই পতাকা।
অনলাইন ডেস্ক :
আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য দেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণের আগে-পরে পর্যবেক্ষণ করার জন্য ১৮৬ জন বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিককে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পক্ষ থেকে অনুমতি পাওয়া বিদেশিদের মধ্যে ১২৭ জন পর্যবেক্ষক আর ৫৯ জন বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদকর্মী।
আজ ৩ জানুয়ারি বুধবার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে। তবে নির্বাচনের আগে এ সংখ্যা কিছুটা কম বেশি হতে পারে বলেও উল্লেখ করেছেন তারা।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, বিদেশি পর্যবেক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৪ জন, যুক্তরাষ্ট্রের আইআরআই এবং এনডিআই’র ১২ জন, সাউথ এশিয়া ডেমোক্রেটিক ফোরামের (এসএডিএফ) ৬ জন, দক্ষিণ কোরিয়ার এইচএল গ্রæপের একজন, এসএনএএস আফ্রিকার ২ জন, মুসলিম কমিশন নেপালের ২ জন, যুক্তরাষ্ট্রের বিরনি ল পিএলএলসি-এর একজন, আফ্রিকা হাউজ লন্ডনের ২ জন, বি স্ট্রাটেজিক পার্টনার’র (ব্রিটিশ) একজন, ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন অরগানাইজেশ’র (জাপান) একজন, মুতাশ ক্রিয়েট রিসার্চ’র (জাপান) একজন, ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের (ভারত) একজন, শ্রীলঙ্কার মেম্বার অব পার্লামেন্ট একজন, অস্ট্রেলিয়ান এক রিসার্চার ও ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম এর যুক্তরাষ্ট্রের একজন নাগরিক।
এছাড়াও জাপানের এক নাগরিক, মালদ্বীপের অ্যাসোসিয়েশন অব ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ইলেকটোরাল লিং-এর ৩ জন, ব্রিটিশ হাইকমিশন-ঢাকার ১০ জন, ইন্টারন্যাশনাল ডিপ্লোমেটিক কো-অপারেটিভ অরগানাইজেশনের (থাইল্যান্ড) একজন, ভিটেম ফাউন্ডেশন পোল্যান্ড’র একজন, রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন, ইন্টারন্যাশনাল পার্লামেন্টারিয়ানস কংগ্রেসে’র দুই জন, আমেনিকান গেøাবাল স্ট্র্যাটিজিস’র একজন, আমেরিকার এক জন ব্যবসায়ী, অ্যাম্বাসি অব জাপানের ১৭ জন, আফ্রিকান ইলেকটোরাল অ্যালাইয়েন্সের ১২ জন, ব্রিটেনের পার্লামেন্টের ২ জন, ভারতের এক নাগরিক, এসএনএএস আফ্রিকা’র একজন, নেপাল সরকার ও বিভিন্ন দলের ৫ জন, নেপালের দীপেন্দ্র কন্ডেল ইনিশিয়েটিভ’র ৩ জন, মালয়েশিয়ার ৩ বিশিষ্ট জন, দি গোল্ড ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজি’র ৩ আমেরিকান, ইআরপি ট্রেডি লিমিটেড’র নরওয়ের একজন, অ্যালায়েন্স ফর হিউম্যানিটি’র একজন ইরাকি, একজন কানাডিয়ান নাগরিক ও জিবিপি ইন্টারন্যাশনাল জার্মানির একজনও সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন।
৫৯ সাংবাদিকের মধ্যে রয়েছেন, আমেরিকার একজন, ইইউ রিপোর্টার, একজন বিট্রিশ, জার্মানির জুঙ্গে ফ্রেইহেট’র একজন, দি দিল্লি টেলিভিশন লিমিটেড’র ২ জন, জাপানের দি ইয়োমিরি সিমবান’র একজন, ভারতের আজকাল’র একজন, জাপানের কিওডু নিউজ’র একজন, ভারতের দি অ্যাসোসিয়েট প্রেস’র ৩ জন, ভারতের দি প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া’র ২ জন, জার্মানির এআরডি জার্মান রেডিও’র ২ জন ও ভারতের আনন্দ বাজার পত্রিকা’র একজন।
জাপানের নাইকিই আইএনসি, জিজি প্রেস ও এনএইচকে (জাপান ব্রডকাস্টিং করপোরেশন) এর ৫ জন; নেপালের কেন্দ্রবিন্দু অনলাইন পিটিবি লিমিটেড’র একজন; ভারতের ডিএসটিভি দার্জিলিং-এর একজন, উত্তরবঙ্গ সংবাদ-এর একজন, দি টেলিগ্রাফ’র একজন, এএনআই’র একজন, এবিপি নিউজ’র ২ জন, আজকাল পাবলিশার্স লিমিটেডে’র একজন, এবিপি নেটওয়ার্ক’র ২ জন, এএনএম নিউজ প্রাইভেট লিমিটেড’র একজন ও জি মিডিয়া’র ২ জন; বিবিসি নিউজ (ভারতীয় ও আমেরিকান) ৪ জন; এরাইজ নিউজ’র এক বিট্রিশ; ফ্রান্সের প্যারিস লা মন্ডে’র একজন; সুইডিশ রেডিও-এর একজন; অ্যাজেন্সি ফ্রান্স প্রেস’র (এএফপি) ৭ জন; রয়টার্সের দুই ভারতীয়; আল জাজিরার এক ব্রিটিশ; অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের একজন; চায়না গ্লোবাল টেলিভিশন নেটওয়ার্কে দুই ভারতীয়; এআরডি জার্মান টিভি’র এক ভারতীয়; কলকাতার সংবাদ প্রতিদিন’র একজন; দি ওয়াল কলকাতা’র একজন; ব্রিটিশ এক ফ্রিল্যান্সার ও বিলজিয়ান একজন সাংবাদিককে ভোট দেখার অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য সরকার ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য উপহার হিসেবে রংপুরের বিখ্যাত হাড়িভঙ্গা আম পাঠিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুস। আজ ১০ জুলাই বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ৩০০ কেজি আম পাঠানো হয়। ৬০টি কার্টনে করে ৩০০ কেজি হাড়িভাঙ্গা আম পাঠানো হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কার্গোওয়ার্ল্ড লজিস্টিকস নামে একটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার উপহার হস্তান্তর করা হয় আগরতলাস্থ বাংলাদেশ সহকারি হাইকমিশনের প্রতিনিধির কাছে। আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় সকল প্রকার ফি ও আদায়যোগ্য কর মওকুফ করে আমগুলো ছাড়করণ করা হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
জাপানের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ ২৫ এপ্রিল মঙ্গলবার সকাল ৭টা ৫৬ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ভিভিআইপি চার্টার্ড ফ্লাইট টোকিওর উদ্দেশে রওনা দেয়।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী তিন দিন টোকিওতে থাকবেন। ২৮ এপ্রিল টোকিও থেকে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা দেবেন। পরে যুক্তরাজ্যে যাবেন। সফর শেষে আগামী ৯ মে সকালে তিনি দেশে ফিরবেন।
ঢাকা ছাড়ার আগে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতারা বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান।
জাপন সফরকালে টোকিওর সঙ্গে আটটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে বলে আশা করছে ঢাকা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন, ‘দুই প্রধানমন্ত্রীর (বাংলাদেশ ও জাপান) উপস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে আটটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, জাপান সফরকালে কৃষি, মেট্রোরেল, শিল্প উন্নয়ন, জাহাজ রিসাইক্লিং, শুল্ক সংক্রান্ত বিষয়, মেধা স্বত্ব, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, আইসিটি ও সাইবার নিরাপত্তা সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এই সফর দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে ‘কৌশলগত অংশীদারিত্বে’ উন্নীত করার বিষয়ে আলোচনার সুযোগ তৈরি করবে।
জাপান সফরের কর্মসূচি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় (স্থানীয় সময়) টোকিও পৌঁছাবেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৬ এপ্রিল জাপানের সম্রাট নারুহিতোর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। একই দিনে তিনি চুক্তি স্বাক্ষরের পর তার জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। জাপানের প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে নৈশভোজের মাধ্যমে বৈঠকটি শেষ হবে।
২৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টোকিওতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা) এবং জেট্রোর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত বাংলাদেশ বিজনেস সামিটে প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দেবেন।
একই দিনে প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য চার জাপানি নাগরিককে ‘ফ্রেন্ড অব লিবারেশন ওয়ার অনার’ তুলে দেবেন।
সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী জাপানে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসী ও কমিউনিটি আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। টোকিও সফরকালে প্রধানমন্ত্রী জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োশিমাসা হায়াশির সঙ্গে বৈঠক করবেন। এছাড়াও তিনি জাইকা, জেইটিআরও, জেইইআইসি, জেবিপিএফএল, জেবিসিসিইসি-এর নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকসহ আরও কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে যোগ দেবেন।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জাপানের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সহধর্মিণী আকি আবে ও একজন জাপানি স্থপতি তাদাও আন্দোর সঙ্গেও দেখা করবেন।
এছাড়া, জাপানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল এনএইচকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি সাক্ষাৎকার সম্প্রচার করবে।
জাপান সফরে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ সংশ্লিষ্ট উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তারা তাঁর সঙ্গে রয়েছেন।
এটি হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ষষ্ঠ জাপান সফর। এর আগে প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৭, ২০১০, ২০১৪, ২০১৬ ও ২০১৯ সালে জাপান সফর করেন।
যুক্তরাষ্ট্র সফর
ওয়াশিংটন ডিসিতে পৌঁছে আগামী ১ মে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাংকের সদর দপ্তরে বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে ৫০ বছরের অংশীদারিত্ব উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন বিষয়ক সেমিনারে এক অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা “বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের ৫০ বছরের অংশীদারিত্বের প্রতিফলন” শীর্ষক একটি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করবেন। ওই অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টও বক্তৃতা করবেন।
একই দিন শেখ হাসিনা বিশ্বব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে এক একান্ত বৈঠকে যোগ দেবেন। সেমিনারে বাংলাদেশের উন্নয়নের জয় যাত্রা ও বিগত পাঁচ দশকে দেশে বিশ্বব্যাংকের কার্যক্রম তুলে ধরা হবে। এছাড়া, বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও শিল্পকর্ম তুলে ধরতে “বাংলাদেশ-বিশ্বব্যাংকের ৫০ বছরের অংশীদারিত্ব” শীর্ষক মাল্টিমিডিয়া প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে।
এর আগে ২৯ এপ্রিল বিকেলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে। আগামী ২ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ‘ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল’-এর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা একান্ত বৈঠকে যোগ দেবেন। পরে ইউএস চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সুজান পি ক্লার্ক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
একই দিনে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট নিশা বিসওয়ালের আমন্ত্রণে মার্কিন ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সাথে একটি ‘উচ্চ পর্যায়ের নির্বাহী’ রাউন্ড টেবিলে মূল বক্তা হিসেবে যোগ দেবেন। এছাড়া বিশ্বব্যাংকের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট অজয় বঙ্গের সঙ্গেও বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী।
যুক্তরাজ্য সফর
৪ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য কমনওয়েলথ দেশের রাজা ও রাণী হিসাবে তৃতীয় চার্লস এবং তার পত্নী ক্যামিলার রাজ্যাভিষেকে যোগদানের জন্য লন্ডনের উদ্দেশ্যে ওয়াশিংটন ত্যাগ করবেন। প্রায় ১৩০ জন রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধান ব্রিটিশ রাজার আসন্ন রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন, যা ৭০ বছর পর হতে চলেছে। সফরকালে কমনওয়েলথ মহাসচিব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং বেশ কয়েকজন ব্রিটিশ মন্ত্রীও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাজ্যে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়োজনে এক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া দেশের হাসপাতালেই যথাযথ চিকিৎসা পাচ্ছেন বলে মনে করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। যথাযথ চিকিৎসা পাচ্ছেন বলেই তিনি এখন অনেকটা সুস্থ দাবি করে মন্ত্রী বলেছেন, খালেদা জিয়ার কিছু অসুখ সারার মতো না। সেগুলো চিকিৎসা করে কমিয়ে রাখতে হবে।
আজ ২৪ জুন সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সনকে গত শুক্রবার গভীর রাতে জরুরি ভিত্তিতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে গতকাল ২৩ জুন রবিবার তার হৃদযন্ত্রে পেসমেকার লাগানো হয়েছে। এখনো ২৪ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রয়েছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। বিএনপির পক্ষ থেকে বারবার বিদেশে নিয়ে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার দাবি উঠলেও আইনি বাধার কথা বলে তাতে সাড়া দেয়নি সরকার।
সচিবালয়ে সাংবাদিকরা খালেদা জিয়ার চিকিৎসা বিষয়ে আইনমন্ত্রীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেত্রীর যে চিকিৎসা প্রয়োজন তিনি যে হাসপাতালে আছেন, সেই হাসপাতাল থেকে সেটি পাচ্ছেন বলেই এখন পর্যন্ত সুস্থ আছেন। তবে তার যেসব অসুখ আছে তারমধ্যে কিছু সারার মতো না, সেগুলোকে ট্রিটমেন্ট করে কমিয়ে রাখতে হবে।’
‘খালেদা জিয়া সুচিকিৎসা পাচ্ছেন না’ বিএনপির পক্ষ থেকে এমন অভিযোগ করা হলেও তা উড়িয়ে দেন মন্ত্রী। বলেন, ‘যখন দেশের চিকিৎসকরা মনে করেছিলেন বাইরে থেকে চিকিৎসক এনে তার কিছু চিকিৎসা করতে হবে, তখন সরকার কিন্তু এর অনুমতি দিতে কার্পণ্য করেনি। সে সময়ও আমি সঙ্গে সঙ্গে অনুমতি দিয়েছি। আমার জন্য খালেদা জিয়া চিকিৎসা পাচ্ছেন না, যারা এই কথা বলছেন তারা নিজেকেই হাস্যরসে পরিণত করছেন।’
বিএনপি নেতাদের সমালোচনা করে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘ভারসাম্য ঠিক নেই বলেই তারা এসব বলছেন। সংবাদ সম্মেলন করে যদি তারা আমার প্রতি রাগ, উষ্মা প্রকাশ করতে চান সেটা তাদের ব্যাপার। বাংলাদেশে সবকিছুর স্বাধীনতা আছে। তারা সেটা করতে পারে, কিন্তু আমি আশা করব তারা সত্য কথা বলবেন এবং ব্যক্তিগত আক্রমণ করবেন না।’
সরকারের মানবিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপি নেতারা। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার আন্তরিক বলেই বিদেশ থেকে চিকিৎসক আনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এখানকার চিকিৎসকরা বিদেশ থেকে চিকিৎসক আনার পরামর্শ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সরকার অনুমতি দিতে একটুও কার্পণ্য করেনি।’