চলারপথে রিপোর্ট :
সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে প্রার্থীদের মধ্যে স্বচ্ছতা থাকতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের বিএনএম প্রার্থী শাহ জামাল রানা। তার আসনে সুষ্ঠু ভোটের সম্ভাবনা ৫০ ভাগ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
আজ ৫ জানুয়ারি শুক্রবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনএম প্রার্থী শাহ জামাল রানা বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনে সুষ্ঠু ভোটের সম্ভাবনা রয়েছে ৫০ ভাগ। তাই সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রার্থীদের নিজেদের মধ্যে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। সুষ্ঠু পরিবেশে নির্বাচন সকলেরই কাম্য। পরে তিনি স্মার্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া গড়তে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন।
এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ভিপি জামশেদুর রহমান জামশেদ, জহিরুল ইসলাম ও অনিক আহমেদসহ কর্মী সমর্থকরা।
চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জ-আখাউড়া নির্মাণাধীন মহাসড়কের ফোরলের প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। গত ৫ আগষ্ট পদত্যাগ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর প্রকল্পের নির্মাণ কাজ ফেলে চলে যায় প্রকল্পে কর্মরত ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকেরা। এতে করে বন্ধ হয়ে গেছে ফোরলেন প্রকল্পের কাজ। এই অবস্থায় খানাখন্দে ভরপুর চট্টগ্রাম-সিলেট ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে যানবাহন চলাচলে বেড়েছে ভোগান্তি। বর্তমানে তা চরম আকার ধারণ করেছে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, এই প্রকল্পের কাজ আবার কবে নাগাদ শুরু হবে তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২০১৭ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদন হওয়ার পর ভারতীয় নমনীয় ঋন এলওসির অধীনে ২০১৮ সালে তিনটি প্যাকেজে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ থেকে আখাউড়া পর্যন্ত দুইলেন থেকে মহাসড়কটি চারলেনে উন্নয়ন কাজ শুরু করে ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। প্রকল্পটির কাজ শুরুর পর গত ২০১৯ এবং ২০২০ সালে করোনা মহামারির কারণে প্রকল্পটির কাজ অনেকটাই থমকে যায়। পরবর্তীতে বালু সংকটের কারণে আরো ৬মাস বিলম্ব হয় প্রকল্পের নির্মান কাজের। এরই মধ্যে গত ২০২২ সালে প্রকল্পটির কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছিল। এর মধ্যে প্যাকেজ-১ এর অধীনে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জের গোল চত্বর থেকে বিশ্বরোড মোড় পর্যন্ত একপাশের দুই লেনের কাজ পুরোপুরি শেষ হয়েছে।
প্যাকেজ-২ এর অধীনে বিশ্বরোড থেকে ধরখার পর্যন্ত এক পাশের কাজ অনেকাংশেই শেষ হয়েছে। তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর বাইপাস, ঘাটুরা বিরাসার, পৈরতলা, রাধিকা ও উজানিসার এলাকায় মহাসড়কের একপাশে খানাখন্দ থাকায় অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। এতে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। এতে করে সড়কটি দিয়ে চলাচলরত যানবাহন, চালক এবং যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ নেই।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের বটতলী গ্রামের বাসিন্দা মোঃ আল আমিন জানান, আখাউড়া-আশুগঞ্জ সড়কটির ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশের কাজ বন্ধ থাকায় যানবাহনের চালক, যাত্রী এবং স্থানীয়রা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। খানাখন্দ সড়কের কারণে প্রতিনিই ঘাটুরা, বিরাসার, পৈরতলা, পুনিয়াউট, রাধিকা এলাকায় যানজট লেগে থাকে। এতে করে যাত্রীরা ঘন্টার পর ঘন্টা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
অন্যদিকে সড়কের তীব্র ধুলার কারণে আশপাশের বাসা বাড়ি সহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ক্রেতা সংকটে অনেকটাই লাটে উঠেছে। তিনি দ্রুত এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার জন্যে সরকারের প্রতি দাবি জানান।
পরিবহন চালক আলমগীর মিয়া বলেন, নির্মাণাধীন সড়কটি দিয়ে যানবাহন চালাতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে পড়ে থাকার পাশাপাশি যানবাহনের নাট-বল্টু, চাকা, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সড়কটি যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে। তিনি সড়কটির কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জানান।
এ ব্যাপারে আখাউড়া-আশুগঞ্জ ফোরলেন প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মোঃ শামীম আহমেদ জানান, আশুগঞ্জ থেকে আখাউড়া পর্যন্ত চারলেন প্রকল্পটি তিনটি প্যাকেজে বাস্তবায়ন হচ্ছিল। তিনটি প্যাকেজেই ঠিকাদার ছিলেন ভারতের এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। দেশের চলমান পরিস্থিতিতে ভারতীয়রা তাদের হাইকমিশনে নিরাপত্তার কথা বলে সবাই দেশে চলে গেছেন। তারা কবে ফিরে আসবে এ ব্যাপারে কিছুই জানায়নি তারা। শ্রমিকরা চলে যাবার পর থেকে আমাদের প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি বন্ধ আছে। কবে চালু হবে আমরা তা এখন বলতে পারছি না। চলমান দুইটি প্যাকেজের মধ্যে প্রায় সাড়ে তিনশত ভারতীয় লোক কাজ করতো। বর্তমানে তাদের মধ্যে একজনও বাংলাদেশে নেই।
তিনি আরো জানান, আমাদের প্যাকেজ-১ এর আশুগঞ্জ থেকে বিশ্বরোড পর্যন্ত মহাসড়কের ৬২ শতাংশ এবং বিশ্বরোড থেকে ধরখার বাজার পর্যন্ত ৫২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। পুরো কাজ যেহেতু ভারতীয় ঠিকাদারের অধীনে ছিল, তাই রাস্তার বর্তমানে মেরামতের দায়িত্বও তাদের ছিল। যেহেতু তারা নেই, তাই রাস্তা মেরামত করার মত জনবল বা যন্ত্রপাতি আমাদের হাতে নেই। আমরা রাজস্ব খাত থেকে টাকা দিয়ে মানুষের ভোগান্তি কমানোর জন্য চেষ্টা করছি। আশা করছি দ্রুতই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে উপর থেকে।
প্রকল্প ব্যবস্থাপক মোঃ শামীম আহমেদ আরো বলেন, গত ৫ আগষ্ট পদত্যাগ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর নির্মানাধীন প্রকল্পটির ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ৩৬০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিক চলে যাওয়ার পর প্রকল্পের মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি হচ্ছে। আমরা চুরি ঠেকানোর জন্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নিয়েও চুরি ঠেকাতে পারছিনা। তিনি এই প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে শংঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
উল্লেখ্য, আখাউড়া থেকে আশুগঞ্জ পর্যন্ত ৫১ কিলোমিটার ফোরলেন প্রকল্পটিতে একটি উড়াল সেতুসহ ১৬টি ব্রীজ-কালভার্ট রয়েছে। প্রকল্পের নির্মান ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৮৯১ কোটি টাকা।
চলারপথে রিপোর্ট :
ধর্মীয় ও জাতিগত সহিংসতা পরিহার করে শান্তি-সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার আহ্বানে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ১৮ আগস্ট রোববার বেলা ১১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাব চত্বরে মাল্টিপার্টি অ্যাডভোকেসি ফোরামের উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দরা ছাড়াও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
মাল্টিপার্টি অ্যাডভোকেসি ফোরামের সহ-সভাপতি আবু কাউসার খানের সভাপতিত্বে ও সাঈদ হাসান সানীর পরিচালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন মাল্টিপার্টি অ্যাডভোকেসি ফোরামের সাধারণ সম্পাদক এ.বি.এম. মোমিনুল হক।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি জাবেদ রহিম বিজন ও সাধারণ সম্পাদক মো: বাহারুল ইসলাম মোল্লা, এবং সাবেক সভাপতি দীপক চৌধুরী বাপ্পী ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ, অধ্যাপক জিয়াউল হক লাভলু, অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন, সমীর চক্রবর্তী প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও জাতিগত সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে- যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এদেশে চমৎকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রয়েছে। এটিকে কোনোভাবেই নষ্ট করা যাবে না। তাই দল-মত ও ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এ ধরনের সহিংসতা পরিহার করে শান্তি-সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান বক্তারা।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা. মো. আবু সাঈদের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা. মো. আবু সাঈদের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ ২৮ অক্টোবর সোমবার বেলা ১১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আফরিন আহমেদ হ্যাপি এই আদেশ দেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) হাবিবুল্লাহ সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, রোববার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে প্রভাবশালী এই চিকিৎসক নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে সন্ধ্যা ৬টায় তাকে আদালতে নেওয়া হয়। সে সময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামি আবু সাঈদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। গতকাল তার শুনানি হয়নি। এরই প্রেক্ষিতে আজ ২৮ অক্টোবর সোমবার আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ডা. আবু সাঈদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিএমএ’র সভাপতি ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সাধারণ সম্পাদক। এ ছাড়া তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান।
প্রসঙ্গত, তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা রয়েছে। তাকে ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ৬০ নম্বর আসামি হিসেবে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। অন্য মামলায় তিনি উচ্চ আদালত থেকে অস্থায়ী জামিনে রয়েছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
রেলক্রসিং অতিক্রম করার সময় ট্রেনের ধাক্কায় রায়হান মিয়া (৩৫) নামে রিকশার এক যাত্রী নিহত হয়েছেন। গতকাল ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন পুনিয়াউট রেলক্রসিংয়ে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। নিহত রায়হান কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার দিলালপুর গ্রামের মৃত বাহার মিয়ার ছেলে। তিনি তার পরিবার নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পুনিয়াউট এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।
এ ঘটনায় রায়হানের ৮ বছর বয়সি শিশুকন্যা ইকরা জাহান ইফতি আহত হয়েছে। তাকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম জানান, ঈদের ছুটি শেষে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে গ্রামের বাড়ি থেকে বৃহস্পতিবার রাতে তিতাস কমিউটার ট্রেনে করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফেরেন রায়হান। পরে স্টেশন থেকে রিকশায় করে বাসায় যাওয়ার পথে পুনিয়াউট রেলক্রসিং অতিক্রমের সময় ঢাকা থেকে আসা নোয়াখালীগামী নোয়াখালী মেইল ট্রেনটি তাদের রিকশাটিকে ধাক্কা দেয়। এতে রায়হান ও তার শিশুকন্যা ইফতি গুরুতর আহত হন।
তিনি আরো জানান, আহতদের উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নেওয়ার পর চিকিৎসক রায়হানকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।