চলারপথে রিপোর্ট :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে যারা জয়লাভ করেছেন- তাদের জোট বাধা না বাধার বিষয়টি পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত বিরোধী দল কাকে বলা হবে, সেটি জানতে অপেক্ষা করতে হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
৮ জানুয়ারি সোমবার বিকেলে আখাউড়া উপজেলা সদরের মোটরস্ট্যান্ড এলাকায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা জানান। আনিসুল হক ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা ও আখাউড়া) আসনে টানা তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন।
৭ জানুয়ারি রবিবার অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৮টি আসনের মধ্যে ২২২টিতে জয়লাভ করেছে বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আর জাতীয় পার্টি জয়লাভ করেছে ১১টি আসনে। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পেয়েছেন ৬২টি আসন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি ১টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ১টি এবং বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ১টি আসনে জয়লাভ করেছে।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘স্বতন্ত্র যারা জয়লাভ করেছেন, তাদের অবস্থান কী হবে সেটি এখনও নিশ্চিত নয়। তারা নিজেরা জোট করবেন নাকি আলাদা থাকবেন- সেটি যতক্ষণ পর্যন্ত পরিস্কার না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত বিরোধী দল কে, কাকে বলা হবে সেটার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।’
এ সময় আইনমন্ত্রীর সঙ্গে আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক তাকজিল খলিফাসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেলিভারির পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে এক প্রসূতি মা নব জাতকের মৃত্যু হয়েছে। আজ ৫ মে শুক্রবার দুপুরে দুপুরে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। নিহত প্রসূতি সাহিদা আক্তার খুকি উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের ছয়গড়িয়া গ্রামের মৃত আনোয়ার হোসেনের মেয়ে এবং কসবা উপজেলার ধ্বজনগর গ্রামের কুয়েত প্রবাসী শাহীন মিয়ার স্ত্রী। স্বজনদের অভিযোগ, রক্তক্ষরণ বন্ধে এবং শিশুটির তাৎক্ষনিক সঠিক চিকিৎসা না দেওয়ায় তাদের মৃত্যু হয়েছে।
নিহতের স্বজন ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৮টার দিকে প্রসব ব্যথা উঠলে সাহিদাকে তার স্বজনরা হাসপাতালে নিয়ে আসে। হাসপাতালের মিড ওয়াইফ আমেনা আক্তার সুমনার তত্ত্বাবধানে বেলা সোয়া ১১টার দিকে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেয় সাহিদা আক্তার। সন্তান প্রসবের পর সাহিদার প্রচুর রক্ষক্ষরণ শুরু হয় এবং নবজাতকের শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ গোলাম মোস্তাফা এবং মিড ওয়াইফ আমেনা আক্তার তখন প্রসূতি সাহিদা আক্তার এবং নবজাতককে উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। বেলা ১২টার পরে নিহতের স্বজনরা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তখন সাহিদা ও নবজাতককে মৃত বলে ঘোষণা করে। পরে তাদেরকে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেও তাদেরকে মৃত ঘোষণা করা হয়। বেলা ৩টার দিকে স্বজনরা সাহিদার মরদেহ আখাউড়া হাসপাতালে নিয়ে আসে।
সাহিদার বড় বোন মাহমুদা বেগম অভিযোগ করেন, চিকিৎসার অভাবে সাহিদা ও তার শিশু সন্তানের মৃত্যু হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ হিমেল খান বলেন, হাসপাতালে স্বাভাবিক ডেলিভারির পর রক্তক্ষরণ শুরু হলে চিকিৎসকরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়েছেন। শিশুটির শ্বাস কষ্ট হচ্ছিল। উন্নত চিকিৎসার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাপাতালে পাঠানো হয়। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখব। কোন চিকিৎসক এবং নার্সের কর্তব্যের অবহেলার জন্য যদি প্রসূতি ও তার সন্তানের মৃত্যু হয়ে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধ বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আসাদুল ইসলাম ইসলাম বলেন এ ব্যপারে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ার হরিজন সম্প্রদায়ের এক নারী তার মেয়েকে ফিরে পেতে সাংবাদিকদের কাছে এ আকুতি জানিয়েছেন। আজ ২১ মে রবিবার দুপুরে হরিজন কলোনীর নিজ বাড়িতে করা সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আকুতি জানান।
ভুক্তভোগী মেয়েকে ফেরত পেতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে এক পর্যায়ে বলে ফেলেন, ‘এই পুলার ভয়ে আমি কম বয়সে মায়ারে বিয়া দিছি। বিয়ার পরে এই পুলা আমার মাইয়ারে অপহরণ কইরা নিয়া গেছে। অহন থানাত গিয়া বিচার দিলে ভাগায় দেয়। অহন আমি আফনেরার কাছে বিচার চাই। আমার মায়ারে জামাইয়ের কাছে ফিরাই দেন।’
সংবাদ সম্মেলনে ওই নারীর ভাতিজা লিখিত বক্তব্য পাঠ করার সময় তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে মেয়েকে ফেরত পেতে সহযোগিতা চান।
লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়, আল্পনা (ছদ্মনাম) নামে হরিজন কলোনীর এক মেয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ে। কলেনীর রানা হরিজন নামে এক ছেলে তাকে উত্যক্ত করতো। এ অবস্থায় স্থানীয়ভাবে সালিশও হয়। এতেও রানা দমে না যাওয়ায় মেয়েটিকে গত ৩ মে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ে পরবর্তী আনুষ্ঠানিকতা সারতে মেয়েটি বাবার বাড়িতে এলে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায় রানা। এ বিষয়ে থানায় মামলা দিতে গেলে সেটা নেওয়া হয়নি।
রানা হরিজনের ভাই নয়ন হরিজন বলেন, ‘নানা কারণে আমার ভাই রানাকে ত্যাজ্য পুত্র করেছে বাবা। তবে এটা ঠিক যে আমার ভাই ওই মেয়েকে অপহরণ করেনি। বরং ওই মেয়ে আমার ভাই নানাভাবে বকায়দায় ফেলে তাকে নিয়ে পালিয়ে গেছে। বিষয়টি সামাজিকভাবে মীমাংসার চেষ্টা চলছে। তবে মেয়েটির এক কাকাতো ভাই বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করছে।’
এ বিষয়ে আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসাদুল ইসলাম জানান, বিষয়টি আমরা জেনেছি। উভয় পক্ষকে সোমবার বিকেলে থানায় ডাকা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হকের ফুফাতো ভাই ছাইদুর রহমান (স্বপন) এবং আখাউড়া উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে উপজেলার মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের তিনবারের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ মনির হোসেন নির্বাচিত হয়েছেন। আজ ২১ মে মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কসবা ও আখাউড়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
কসবা উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ছাইদুর রহমান স্বপন (কাপ-পিরিচ প্রতীক) ৮৬ হাজার ৬৯৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রাশেদুল কাওসার ভূইয়া জীবন ( আনারস প্রতীক) পেয়েছেন ৩৯ হাজার ৯৫৯ ভোট।
বিজয়ী চেয়ারম্যান ছাইদুর রহমান স্বপন (কাপ-পিরিচ প্রতীক) আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হকের ফুফাতো ভাই। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও উপজেলার কুটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিতেই তিনি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি অ্যাডভোকেট রাশেদুল কাউসার ভূইয়া জীবন (আনারস প্রতীক) আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হকের সাবেক সহকারী একান্ত সচিব। তিনি কসবা উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক।
অপরদিকে আখাউড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোঃ মনির হোসেন (ঘোড়া প্রতীক) ২৮ হাজার ৩০৯ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি, উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান (আনারস প্রতীক) মোঃ মুরাদ হোসেন ভ‚ইয়া পেয়েছেন ১৪ হাজার ৫৬৩ ভোট।
বিজয়ী চেয়ারম্যান মোঃ মনির হোসেন (ঘোড়া প্রতীক) আখাউড়া উপজেলা উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহবায়ক ও মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের তিনবারের সাবেক চেয়ারম্যান। অপরদিকে তার নিকটতম প্রতিদ্ব›িদ্ব মোঃ মুরাদ হোসেন ভূইয়া (আনারস প্রতীক) উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক ও উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান।
ভোট গননা শেষে জেলা পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেন।