চলারপথে রিপোর্ট :
সরকারের নতুন মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দুই এমপি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী (গৃহায়ণ ও গণপূর্ত) এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (আখাউড়া-কসবা) আসনের আনিসুল হক তৃতীয়বারের মতো (আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়) এর মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। জেলায় দুই জন পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী পেয়ে উচ্ছ্বসিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষ। সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা, এ দুই মন্ত্রীর হাত ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা উন্নয়নে এগিয়ে যাবে।
১৯৮৪ সালে মহকুমা থেকে জেলায় রূপান্তরিত হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া। প্রায় ৩৫ লাখ জনসংখ্যার এ জেলায় অন্যান্য জেলার তুলনায় উন্নয়ন তেমন হয়নি। এবার দু’জন মন্ত্রী পাওয়ায় জেলাবাসীর প্রত্যাশা অনেক বেড়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা নাগরিক ফোরামের সভাপতি পীযূষ কান্তি আচার্য বলেন, দুই মন্ত্রী পেয়ে আমরা খুবই উচ্ছ্বসিত। আশা করি আমাদের জেলা তাদের হাত ধরে স্মার্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া হিসেবে গড়ে উঠবে।
প্রত্যাশার কথা জানিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া খেলাঘরের সাধারণ সম্পাদক নিহার রঞ্জন সরকার বলেন, আমাদের প্রত্যাশা দীর্ঘদিনের। প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির যে ফারাক ছিল তা এবার পূরণ হবে বলে আশা করি।
সামাজিক সংগঠন তরী বাংলাদেশের আহ্বায়ক শামীম আহমেদ বলেন, একজন পরিবেশকর্মী হিসেবে আমার অনুরোধ থাকবে, নদী-প্রকৃতি সুরক্ষা করেই যেন সব উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
একটি ওয়ার্কশপে কাজ করার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মহসিন মিয়া (৪৫) নামে ওই ওয়ার্কশপ মালিকের মৃত্যু হয়েছে। আজ ১৪ অক্টোবর শনিবার বিকেল ৪টার দিকে শহরতলীর বিরাসার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মহসিন মিয়া উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের বিলকেন্দাই গ্রামের আব্দুল কাদিরের ছেলে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম হোসাইন মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বিরাসার বাসস্ট্যান্ডের দক্ষিণ-পূর্ব পাশের ঢাকা ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের মালিক মহসিন মিয়া কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে অচেতন হয়ে পড়েন। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত্যু ঘোষণা করেন।
তিনি আরো জানান, এই ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় নিয়ম মেনে মরদেহ বিনা ময়নাতদন্তে হস্তান্তর করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
জিওগ্রাফিক্যাল আইডেন্টিফিকেশন (জিআই) বা ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছানামুখী মিষ্টি।
গত মঙ্গলবার পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছানামুখী মিষ্টিকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। একই দিনে এর সঙ্গে আরো দুটি পণ্য জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। অন্য দুটি পণ্য হলো মধুপুরের আনারস ও ভোলার মহিষের দুধের কাঁচা দই।
বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মুনিম হাসান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছানামুখী মিষ্টিকে গত ৮ এপ্রিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরে আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২৯ ও ৩০ নম্বর শ্রেণিতে পণ্যটি জিআই-৭৫ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছানামুখী মিষ্টি জিআই সনদপ্রাপ্তির মধ্য দিয়ে পণ্যটির স্বীকৃতি মিলেছে।
এই স্বীকৃতির ফলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছানামুখী মিষ্টি আন্তর্জাতিকভাবে ভাবমূর্তি বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। এতে গুণগত পরিবর্তন ও বিদেশে রপ্তানির ক্ষেত্রও তৈরি হতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে।
ভোলার দুই শ বছরের ঐতিহ্যবাহী মহিষের দুধের কাঁচা দইকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির জন্য গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর ভোলার জেলা প্রশাসক পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরে আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২৯ নম্বর শ্রেণিতে পণ্যটি জিআই-৫৫ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। মহিষের দুধের কাঁচা দই জিআই সনদপ্রাপ্তির মধ্য দিয়ে পণ্যটির স্বীকৃতি মিলেছে।
সাগর আর নদীবেষ্টিত দ্বীপ জেলা ভোলার মানুষের জীবনমানে রয়েছে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। খাবারেও রয়েছে নিজস্বতা। এরই অংশ হিসেবে এ জেলা দীর্ঘকাল ধরে পরিচিতি পেয়েছে মহিষের দুধের কাঁচা টক দই, যা স্থানীয়ভাবে ‘মইষা দই’ নামে পরিচিত। ভোলা জেলা সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সভাপতি মোবাশ্বির উল্লাহ চৌধুরী জানান, বিষয়টি ভোলাবাসীর জন্য আনন্দের।
এ স্বীকৃতির মধ্য দিয়ে ভোলায় মহিষ পালনকারী ও দই উৎপাদনকারীদের জন্য সুযোগ তৈরি হয়েছে।
ভোলার জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান বলেন, ‘ভোলার মহিষের দুধের কাঁচা দইয়ের যে স্বীকৃতি সেটি অন্য জেলায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। ভোলার মহিষের দুধের কাঁচা দই ভোলার ঐতিহ্য। এটি অন্য জেলার হতে পারে না। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসন ও স্থানীয়রা অনেক চেষ্টা করে এটি ফিরে পেয়েছে।
জিআই-৫৫ নম্বরে এটি তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ। ভোলাবাসী এটি নিয়ে গর্বিত। এর মাধ্যমে এটির বৈশ্বিক স্বীকৃতি মিলেছে। জিআই হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় প্রথমত এই পণ্যটি ভোলার বলে চিহ্নিত হলো। দ্বিতীয়ত, এই স্বীকৃতির মাধ্যমে পণ্যটির বাণিজ্যিকীকরণের সুবিধা বাড়ল। এই দধি এখন দেশের বাইরেও রপ্তানি করা যাবে। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে দধি উৎপাদনে মানের উন্নতি হবে। কেননা জিআই স্বীকৃতি পণ্যের মান নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখে।’
পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মুনিম হাসান বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ভোলার মহিষের দুধের কাঁচা দধিসহ তিনটি পণ্যকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। ২৪ সেপ্টেম্বর অধিদপ্তর থেকে এসংক্রান্ত তিনটি সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে। একটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছানামুখী মিষ্টি, বাকি দুটি পণ্য হলো মধুপুরের আনারস ও ভোলার মহিষের দুধের কাঁচা দই। আরো বেশ কয়েকটি পণ্যকে স্বীকৃতি দেওয়া হলেও তারা এখনো সার্টিফিকের ফি জমা না দেওয়ায় তাদের সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়নি। সেগুলো খুব দ্রুত হয়ে যাবে।’
চলারপথে রিপোর্ট :
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে বিএনপি-সমর্থিত ছাত্রদলের প্রার্থীদের পক্ষে প্রকাশ্যে শুভকামনা জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোজাফফর হোসেনকে ৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার রাতে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। তার জায়গায় পদায়ন করা হয়েছে নাসিরনগর থানার ওসি আজহারুল ইসলামকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, ৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে ওসি মোজাফফর হোসেন তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্ট দেন। সেখানে তিনি ‘২১, ১৭, ০৮’ লেখা একটি ডিজিটাল কার্ড পোস্ট করেন। এই তিনটি সংখ্যা হলো ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পদে মনোনীত প্রার্থীদের ব্যালট নম্বর।
কার্ডের ক্যাপশনে ওসি লিখেন: মেধাবীদের জন্য শুভ কামনা রইল।
নির্বাচনে ব্যালট নম্বর ২১-এ ভিপি (সহ-সভাপতি) পদে প্রার্থী হয়েছেন আবিদুল ইসলাম আবিদ, ১৭ নম্বরে জিএস (সাধারণ সম্পাদক) প্রার্থী তানভীর বারী হামিম এবং ৮ নম্বরে এজিএস (সহ-সাধারণ সম্পাদক) পদে আছেন তানভির আল হাদী মায়েদ। এ তিনজনই ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থী।
ওসির এই পোস্ট প্রকাশ্যে আসার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ পর্যন্ত ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান।
এদিকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোজাফফর হোসেনের ফেসবুক আইডি হ্যাক করে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে পোস্ট দেওয়ার ঘটনায় থানায় একটি (সাধারণ ডায়েরি) জিডি করা হয়েছে। ৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে থানায় ওই জিডি করেন ওসি নিজেই।
জিডি নোটে ওসি মোজাফফর হোসেন উল্লেখ করেন, আমার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি কে বা কারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হ্যাক করত একটি রাজনৈতিক পোস্ট করেছে। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে পাওয়া স্ক্রিন শর্টে দেখা যায় যে, বেগুনি রংয়ের ব্যাক গ্রাউন্ডে শুভ কামনা ২১, ১৭, ০৮, লেখা পোস্ট প্রচার হচ্ছে। বিষয়টি আমি তাৎক্ষনিক পুলিশ সুপার এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) কে অবগত করি। কে বা কারা এই পোস্ট করেছে আমার জানা নেই। পরবর্তীতে আমি আমার আইডিতে ডুকে উক্তরূপ দেখিতে পায়নি। আমি আমার সরকারী আইডি Sadar Thana Brahmanbaria তে হ্যাক হওয়ার বিষয়টি অবগত করে পোস্টটি দিয়েছি। এই ব্যাপারে সকলকে সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
‘প্রকৃতির সান্নিধ্যে শিশুরা’ এই শ্লোগানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিশু নাট্যমের উদ্যোগে তিনদিনব্যাপী বসন্তকালীন আর্ট ক্যাম্পের সমাপনী ৪ মার্চ শনিবার বিকেলে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের তালুকদার বাড়ি খলাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট শিল্পপতি কবি দেওয়ান মারুফ।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার সকালে প্রধান অতিথি হিসেবে তিনদিনব্যাপী আর্ট ক্যাম্পের উদ্বোধন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে এক ঝাঁক শিশু, কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণীর কেউ কেউ বাড়ির বারান্দা ও আঙ্গিণায়, কেউ কেউ গাছ-গাছালির নিচে, কেউ পুকুরপাড়ে আবার কেউ তিতাস নদীর পাড়ে দূরত্ব বজায় রেখে বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে সারিবদ্ধ ভাবে আসন পেতে বসেছে। সবার হাতেই বোর্ড, সাদা কাগজ ও নানা রঙের পেন্সিল। প্রকৃতির সান্নিধ্যে তারা সবাই নিজেদের চিন্তাকে রঙ তুলিতে রাঙিয়েছেন। গত তিনদিন ধরেই তারা এঁকেছে নানা ছবি। আর্ট ক্যাম্পে অংশ নেওয়া ২৬৫জন শিক্ষার্থী তিনদিনে প্রকৃতির সান্নিধ্যে দেড় হাজারের বেশি ছবি এঁকেছে।
তিনদিন ব্যাপী আর্ট ক্যাম্পে সংগঠনের চারুকলা বিভাগের প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেনীর ২৬৫ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। প্রতিদিন সকালে শিক্ষার্থীরা একটি ও বিকেলে একটি করে ছবি এঁকেছেন। তিনদিনের এই ক্যাম্পে একজন শিক্ষার্থীকে ৬টি করে ছবি আঁকতে হয়েছে। ২৬৫জন শিক্ষার্থী ১ হাজার ৫৯০টি ছবি এঁকেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীরা সাদা কাগজের নানা রঙের পেন্সিলের আঁচড় দিয়ে ঘর, নদী, সেতু, পুকুর, গাছ, নদীর তীরে খড়ের গাদা কিংবা প্রাকৃতিক দৃশ্য আাঁকছে।
শিক্ষার্থী ত্রিদিবা দেবনাথ ও সোহান আহমেদ বলেন, গত বছরও তারা এই আর্ট ক্যাম্পে অংশ নিয়েছিলো। খোলা জায়গায় বসে গ্রামের পরিবেশে চোখের সামনে প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখে ছবি আঁকাটা অনেক দারুণ।
অভিজিত রায় ও রাখি আক্তার বলেন, চোখের সামনে থাকা দৃশ্য দেখে আঁকতে পেরে ভালো লেগেছে। সবাই যার যার মতো করে প্রকৃতির সান্নিধ্যে বসে ছবি আাঁকছে।
অভিভাবক শ্যামল চন্দ্র সরকার, হামজা ইসলাম ও চয়ন বিশ্বাস বলেন, প্রকৃতির কাছাকাছি নিয়ে শিশুদের দিয়ে ছবি আঁকানোর উদ্যোগটা প্রশংসনীয় ও ব্যতিক্রম। এ থেকে শিশুরা অনেক কিছু শিখতে ও জানতে পারবে। পাঠ্য বইয়ের বাইরে যে আরো অনেক কিছু শিখা ও জানা যায় তা তারা এখান থেকে জানতে পারবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শিশু নাট্যমের প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মোহাম্মদ খান বলেন, শিশু নাট্যম প্রতি বছরই শিশুদের নিয়ে তিন দিনব্যাপী কর্মশালা আয়োজন করে থাকে। যাতে করে শিশুরা তাদের মাঝে প্রকৃতিকে খুঁজে পায়, প্রকৃতির পায়, প্রকৃতির সাথে তাদের একটা যোগাযোগ স্থাপিত হয়।
এই পাথরে গড়া দালান-কোঠায় থেকে তাদের মন-মানসিকতা শক্ত হয়ে যাচ্ছে। সেই মন মানসিকতার পরিবর্তন জরুরি। আমরা প্রতি বছর শিশুদের গ্রামের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেই। এটি আমাদের প্রধান কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গ্রামের সাথে শিশুদের মানসিক সম্পর্ক গড়ে তুলে ও মানসিক পরিবর্তন ঘটাতেই এই আয়োজন।
চলারপথে রিপোর্ট :
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী এমপিদের পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের প্রার্থী না হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দলীয় সভানেত্রীর বরাত দিয়ে আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের পত্রিকায় বিবৃতি দিচ্ছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনার আমলে না নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সায়েদুর রহমান স্বপন।
তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের সংসদ সদস্য আইনমন্ত্রী অ্যাড. আনিসুল হকের আপন ফুফাতো ভাই। গতকাল রবিবার মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। স্বপন ছাড়াও কসবা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আরও দুইজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
তারা হলেন, কসবা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক, বর্তমান চেয়ারম্যান ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সাবেক এপিএস এড. রাশেদুল কাওসার ভূঁইয়া জীবন ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রুহুল আমিন ভূইয়া। নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী ২১ এপ্রিল রবিবার অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। ভোটগ্রহণ হবে ২১ মে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সায়েদুর রহমান স্বপন কসবা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়ে অনেকদিন ধরেই প্রচার-প্রচারণা করে আসছেন। তিনি কুটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের সভাপতি ছিলেন। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. রাশেদুল কাওসার ভূঁইয়া জীবন। তিনি মন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব।
এড. রাশেদুল কাওসার ভূইয়া জীবন সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, সায়েদুর রহমান স্বপন আইনমন্ত্রীর আপন ফুফাতো ভাই। তিনি মন্ত্রীর ভাই পরিচয় দিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করছেন। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী এমপিদের আত্মীয়দের প্রার্থী না হতে দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু তিনি তা মানছেন না।
এ বিষয়ে সায়েদুর রহমান স্বপন সাংবাদিকদের বলেন, আমি মন্ত্রীর ফুফাতো ভাই। মন্ত্রীর পরিবারের আত্মীয় নই। আমি দলীয় প্রতীক নিয়েও নির্বাচন করছি না। আমি ৩০ বছর ধরে কুটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। কুটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলাম। আমি আমার অবস্থান থেকেই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি। তাছাড়া নির্বাচন না করার ব্যপারে দলীয় কোন লিখিত নির্দেশনা পাইনি। তাই নির্বাচন করতে আমার কোন বাঁধা নেই।
এ ব্যাপারে কসবা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা অমিত কুমার দাস বলেন, চেয়ারম্যান পদে তিন জন, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে ২ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।