অনলাইন ডেস্ক :
তাইওয়ানে নতুন প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন দেশটির ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টির (ডিপিপি) নেতা উইলিয়াম লাই। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাইওয়ানের স্থানীয় গণমাধ্যমের মতে, প্রায় ৫০ লাখ ভোট পেয়েছেন উইলিয়াম লাই। যা দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
এর মাধ্যমে তাইওয়ানের ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাটিক প্রোগ্রেসিভ পার্টি (ডিপিপি) থেকে টানা তৃতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলো। তাইওয়ানের বর্তমান প্রেসিডেন্ট সাই ইং ওয়েন পরপর দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থাকায় সংবিধান অনুযায়ী তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেননি।
শনিবারের এ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মোট তিনটি দল থেকে তিনজন লড়ছিলেন। তারা হলেন, ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টির উইলিয়াম লাই, তাইওয়ান পিপলস পার্টির কো ওয়েন-জে এবং কুওমিনতাং (কেএমটি) দলের হাউ ইউ-ইহ। ইতোমধ্যেই বাকী দুই প্রতিদ্বন্দ্বী উইলিয়াম লাইয়ের জয় স্বীকার করে নিয়ে তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
নির্বাচনটি শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় (বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টা) শুরু হয়ে শেষ হয় বিকাল ৪টায় (বাংলাদেশ সময় ২টা)। এরপর শুরু হয় ভোট গণনা। এতে শুরু থেকেই এগিয়ে ছিলেন উইলিয়াম লাই।
দেশটির নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, উইলিয়াম লাই পেয়েছেন মোট ভোটের ৪২ শতাংশ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হাউ ইউ-ইহ পেয়েছেন ৩৩ শতাংশ ভোট। আর কো ওয়েন-জে পেয়েছেন ২৫ শতাংশ ভোট।
প্রসঙ্গত, ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি প্রচণ্ডভাবে তাইওয়ানের সার্বভৌমত্ব এবং স্বাতন্ত্রে বিশ্বাসী। অর্থাৎ তারা কখনোই তাইওয়ানকে চীনের অংশ বলে মনে করে না। এক কথায় স্বায়ত্তশাসন।
অন্যদিকে পিপলস পার্টি পুরোপুরি চীনপন্থি দল। তাদের মতে, চীনের ছায়া তাইওয়ানের জন্য মঙ্গল। আর সবচেয়ে ছোট দল কুওমিনটাংয়ের নীতি ‘ভারসাম্যে’। নিজের স্বাধীনতা অটুট রেখে চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখায় বিশ্বাসী।
অনলাইন ডেস্ক :
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলি ভয়াবহ গণহত্যার শিকার গাজা উপত্যকা ‘খালি’ করার ব্যাপারে যে প্রস্তাব দিয়েছেন, আরব বিশ্বজুড়ে সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের জন্য নির্ধারিত বিশেষ বিমান এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে দাবি করেন, গাজা সম্পূর্ণ ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে এবং এটি পরিষ্কার করার জন্য সেখানকার অধিবাসীদের সরিয়ে দেয়া উচিৎ। তিনি গাজাবাসী ফিলিস্তিনিদের প্রতিবেশী দেশ মিশর ও জর্দানে স্থানান্তর করার প্রস্তাব দেন।
পার্স টুডের খবরে বলা হয়েছে, গাজাবাসী গত ১৫ মাসের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞের শিকার হওয়া সত্ত্বেও তাদের ভূমি ত্যাগ করতে রাজি হয়নি এখন সেই গাজাবাসীকে তাদের উপত্যকা পরিষ্কার করার অজুহাতে গাজা থেকে বিতাড়ন করতে চান ডোনাল্ড ট্রাম্প যা ভালোভাবে নেয়নি ফিলিস্তিনি জনগণ।
টাইমস অব ইসরায়েলের খবরে বলা হয়েছে, পশ্চিম তীরে অবস্থিত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ট্রাম্পের নাম উল্লেখ না করে ‘গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনি জনগণকে বাস্তুচ্যুত করার লক্ষ্যে যেকোনো প্রকল্পের’ তীব্র প্রত্যাখ্যান ও নিন্দা প্রকাশ করেছেন। তার কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনি জনগণ ‘তাদের ভূমি এবং পবিত্র স্থান ত্যাগ করবে না।’
দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, তিনি চান জর্ডান এবং মিশর গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের নিয়ে যাক। যুক্তরাষ্ট্র ‘পুরো এলাকাটি পরিষ্কার করবে।’
জর্ডান এবং মিশর ট্রাম্পের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।
মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, “আমরা ১৯৪৮ এবং ১৯৬৭ সালে আমাদের জনগণের ওপর যে বিপর্যয় নেমেছিল তার পুনরাবৃত্তি হতে দেব না।”
গাজার বাসিন্দারা বলছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বক্তব্য ‘নাকবা’ নামক ফিলিস্তিনের আধুনিক ইতিহাসের কালো অধ্যায়ের কথা স্মরণ করিয়ে দেয় যখন ইসরায়েল রাষ্ট্র সৃষ্টি করার লক্ষ্যে কয়েক মিলিয়ন ফিলিস্তিনিকে জোরপূর্বক তাদের পিতৃপুরুষের ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছিল।
মাহমুদ আব্বাস ‘পূর্ব জেরুজালেমসহ গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি ভূমির ঐক্যকে ক্ষুণ্ন করে এমন যেকোনো নীতি’ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
তিনি ট্রাম্পকে ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়া গাজা জিম্মি-যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে সমর্থন করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়াও বলেছেন, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলের শাসনভার গ্রহণের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
৭ অক্টোবর, ২০২৩ সালে দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের হামলার ফলে ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা গাজা যুদ্ধে এখন যুদ্ধবিরতি চলছে। এসময়ে গাজার বাসিন্দাদের অন্যত্র স্থানান্তরে ট্রাম্পের প্রস্তাবের প্রতি গাজার সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোও তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে।
হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য বাসেম নাইম এএফপিকে বলেছেন, ফিলিস্তিনিরা গত কয়েক দশক ধরে যেভাবে তাদের জন্য কথিত বিকল্প ভূমিতে যেতে অস্বীকৃতি জানিয়ে এসেছে তেমনি তাদেরকে বলপূর্বক গাজা ত্যাগ করতে বাধ্য করার চেষ্টা করা হলেও তারা তা প্রতিহত করবে।
গাজার আরেকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদ এক বিবৃতিতে গাজাবাসীকে সরিয়ে নেয়ার মার্কিন প্রেসিডেন্টের পরিকল্পনাকে ‘ভয়ঙ্কর’ আখ্যা দিয়ে বলেছে, এ ধরনের পরিকল্পনার ফলে গাজাবাসীর ওপর গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ চালাতে ইসরায়েল দ্বিগুণ উৎসাহিত হবে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ১৫ মাস যুদ্ধের পর গাজা একটি ‘ধ্বংসস্তুপ’ হয়ে উঠেছে। তিনি আরো যোগ করেছেন যে, তিনি জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহর সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের এই অঞ্চল থেকে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে কথা বলেছেন।
জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুতির প্রতি আমাদের প্রত্যাখ্যান দৃঢ় এবং পরিবর্তন হবে না। জর্ডান জর্ডানবাসীর পক্ষে এবং ফিলিস্তিন ফিলিস্তিনিদের জন্য।
মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এক বিবৃতিতে ‘ফিলিস্তিনি ভূমিতে ফিলিস্তিনি জনগণের দৃঢ়তার প্রতি অব্যাহত সমর্থন’ প্রকাশ করেছে। দেশটি বলেছে, ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূমি থেকে স্থানচ্যুতিকে স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করে মিসর। সেটা স্বল্পমেয়াদে হোক, কিংবা দীর্ঘমেয়াদে।
মিশর এর আগে গাজা থেকে সিনাই মরুভূমিতে ফিলিস্তিনিদের ‘জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির’ ইসরায়েলি পরিকল্পনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিল। মিশরের প্রেসিডেন্ট সতর্ক করে বলেছিলেন, এ ধরনের পদক্ষেপ ১৯৭৯ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে দেশটির স্বাক্ষরিত শান্তি চুক্তিকে ভেস্তে দিতে পারে।
জাতিসংঘের মতে, জর্ডান ইতিমধ্যেই প্রায় ২৩ লাখ নিবন্ধিত ফিলিস্তিনি শরণার্থীর আবাসস্থল। এই পরিবারগুলোকে ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল সৃষ্টির পর বহিষ্কার করা হয়েছিলো।
অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশের পাসপোর্টে ‘একসেপ্ট ইসরায়েল’ বা ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ শর্ত পুনরায় বহাল করা হয়েছে। গত ৭ এপ্রিল তারিখে উপসচিব নীলিমা আফরোজের সই করা একটি প্রজ্ঞাপন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
আজ ১৩ এপ্রিল রোববার গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নীলিমা আফরোজ।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘উপর্যুক্ত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ প্রক্রিয়া অবলম্বন করে পূর্বের ন্যায় বাংলাদেশি পাসপোর্টে “ইসরায়েল ব্যতীত” শর্ত পুনর্বহালের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’
বাংলাদেশের পাসপোর্টে আগে লেখা থাকতো- ‘দিস পাসপোর্ট ইজ ভ্যালিড ফর অল কান্ট্রিজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড এক্সেপ্ট ইসরায়েল।’ অর্থাৎ এই পাসপোর্ট ইসরায়েল ব্যতীত পৃথিবীর সব দেশের জন্য বৈধ বা এই পাসপোর্ট নিয়ে ইসরায়েল ছাড়া পৃথিবীর যেকোনও দেশে যাওয়া যাবে।
কিন্তু ২০২০ সালে দেশে নতুন ই-পাসপোর্টে এই বাক্যটি পরিবর্তন করে লেখা হয়: ‘দিস পাসপোর্ট ইজ ভ্যালিড ফর অল কান্ট্রিস অব দ্য ওয়ার্ল্ড।’ অর্থাৎ ‘এক্সেপ্ট ইসরায়েল’ শব্দ দুটি বাদ দেওয়া হয়।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ২০২০ সালে দেশে নতুন ই-পাসপোর্ট চালু করলে সেই পাসপোর্টগুলো থেকে এই লেখা বাদ দেয়। এমনকি এ বিষয়ে কোনো ঘোষণাও দেওয়া হয়নি।
অনলাইন ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগে কর্মরত একডজন কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। সিবিএস নিউজের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এসব কর্মকর্তারা ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে চলমান তদন্তের অংশ ছিলেন। এছাড়া, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএইডের কয়েক ডজন সিনিয়র কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে ছুটিতে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তারা প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশ প্রতিপালন করতে চেয়েছিলেন না। এই ছুটির সময় তাদের পূর্ণ বেতন ও অন্যান্য সুবিধা দেওয়া হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই সংস্থা বিশ্বের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সংস্থা এবং ২০২৩ সালে এটি ৬৮ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে।
এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসন আরো তিনটি নির্বাহী আদেশে সই করার পরিকল্পনা করছে, যার মধ্যে একটি হচ্ছে সামরিক বাহিনীতে থাকা ট্রান্সজেন্ডারদের বিষয়ে নতুন সিদ্ধান্ত। এছাড়া, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন না নেওয়ার কারণে যেসব সেনা সদস্য বাদ পড়েছিল, তাদের পুনর্বহালের বিষয়ে একটি আদেশ আসতে পারে। ট্রাম্প অবৈধ অভিবাসীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করতে শুরু করেছেন এবং রোববার অন্তত এক হাজার অভিবাসীকে আটক করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ফোনালাপ
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামির সাথে ফোনে বৈঠক করেছেন। তারা বৈশ্বিক নানা ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছেন। এ সময় তারা দুই দেশের বিশেষ সম্পর্কের গভীরতার প্রতি প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। মধ্যপ্রাচ্য, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন এবং চীনের অশুভ প্রভাব নিয়ে একযোগে কাজ করার বিষয়ে তারা আলোচনা করেন।
ট্রেজারি সেক্রেটারির মনোনয়ন নিশ্চিত
যুক্তরাষ্ট্রের সেনেট স্কট বেসেন্টকে অর্থমন্ত্রী বা ট্রেজারি সেক্রেটারি হিসেবে মনোনীত করেছে। তাকে গুরুত্বপূর্ণ এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, যা কর নীতি, আন্তর্জাতিক অর্থায়ন, শুল্ক আরোপ এবং নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত। তার মনোনয়ন পক্ষে ৬৮ ভোট ও বিপক্ষে ২৯ ভোট পড়ে। এছাড়া, ২০২৪ সালের নির্বাচনের প্রচারণার প্রথম দিকেই ট্রাম্পের সমর্থক হিসেবে তার নাম উঠে আসে।
গুগল ম্যাপে ‘মেক্সিকো উপসাগর’ নাম পাল্টানোর সিদ্ধান্ত
যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি জায়েন্ট গুগল জানিয়ে দিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রে অফিসিয়াল সিস্টেমে মেক্সিকো উপসাগরের নাম পরিবর্তন করে ‘আমেরিকা উপসাগর’ রাখবে। তবে, এই পরিবর্তন শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবহারকারীদের জন্য প্রযোজ্য হবে। মেক্সিকোতে ‘মেক্সিকো উপসাগর’ নামই বজায় থাকবে। আর অন্যান্য দেশের ব্যবহারকারীরা দুটি নামই দেখতে পারবেন। এর আগে, ট্রাম্প প্রশাসন থেকে এই নাম পরিবর্তনের পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়েছিল।
জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের ঘোষণা ট্রাম্পের
ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও যুক্তরাষ্ট্রে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের সুযোগ বাতিল করার কথা বলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীর মাধ্যমে দাস প্রথা বাতিল করার সময় জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের বিষয়টি যুক্ত করা হয়েছিল, কিন্তু বর্তমানে এই প্রথা যুক্তরাষ্ট্রের পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খায় না।
ফ্লোরিডায় রিপাবলিকানদের এক অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেন, এই সংশোধনী ছিল শুধুমাত্র দাসদের জন্য, কিন্তু বর্তমানে এটি আর প্রযোজ্য নয়।তার নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ‘সবচেয়ে মহান চার বছর’ আসবে এবং এর জন্য তারা একযোগে কাজ করবে। এছাড়া, ট্রাম্প তার সামরিক বাহিনীতেও বড় ধরনের পরিবর্তন আনার কথা বলেছেন।
কলম্বিয়ার বিষয়ে যা বললেন ট্রাম্প
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছেন, কারণ কলম্বিয়া যুক্তরাষ্ট্রের ফেরত পাঠানো অভিবাসীদের বহনকারী দুটি সামরিক বিমানকে অবতরণ করতে দেয়নি। ট্রাম্প নির্দেশ দিয়েছেন, কলম্বিয়া থেকে আসা সব পণ্যের ওপর অবিলম্বে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে এবং এক সপ্তাহের মধ্যে শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশে বাড়িয়ে দেওয়া হবে।
কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন, এবং তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন।
ট্রাম্প বলেছেন, আমরা পরিষ্কার বার্তা দিয়েছি বিশ্বের প্রতিটি দেশের কাছে, তাদের অভিবাসীদের ফেরত নিতে হবে, নাহলে তাদের বড় অর্থনৈতিক মূল্য দিতে হবে। সূত্র: বিবিসি
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট দিয়ে যাওয়া এক ভারতীয় নাগরিককে ২ কেজি হেরোইনসহ আটক করেছে আগরতলা কাষ্টমস্। জব্ধকৃত হেরোইনের বাজার মূল্য ১৪ কোটির টাকার বেশি। আটক ব্যক্তির নাম থমাস।
তিনি ভারতের মিজোরাম রাজ্যের সারচিপ জেলার বাসিন্দা। তিনি গত শুক্রবার আখাউড়া চেকপোষ্ট দিয়ে ত্রিপুরার আগরতলায় প্রবেশ করেন। আগরতলা ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশনের সহকারি কমিশনার অভ্যুদয় গুহ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সেখানকার গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। এদিকে আখাউড়া কাষ্টম্স এবং চেকপোষ্ট বিজিবির পৃথক দু’টি স্ক্যানার থাকা সত্বেও কীভাবে ওই ব্যক্তি এত বিপুল পরিমাণ হেরোইন নিয়ে চলে গেল তা বোধগম্য হচ্ছে না সংশ্লিষ্টদের।
ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তির বরাত দিয়ে আগরতলা থেকে প্রকাশিত দৈনিক স্যান্দনসহ কয়েকটি পত্রিকায় রবিবার সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। প্রকাশিত সংবাদে উল্লেখ করা হয়, থমাসের সঙ্গে থাকা কালো রংয়ের স্যুটকেসের ভেতরে এক্সরে-রোধক কাগজের বোর্ড দিয়ে মুড়ানো দু’টি প্যাকেটে হেরোইন ছিল। যা এক্সরে মেশিনেও ধরা পড়েনি।
তবে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে তল্লাশি চালিয়ে সাদা হেরোইন পাউডার উদ্ধার করা হয়।
আটক থমাস কাতারের দোহা থেকে বিমানে ঢাকা হয়ে সড়ক পথে আখাউড়ায় এসে আগরতলায় প্রবেশ করে সংবাদে উল্লেখ করা হয়।
উল্লেখ্য, আখাউড়া কাস্টমস-এ অত্যাধুনিক ব্যাগেজ স্ক্যানার মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। এক মাস আগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান সেটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন। কিন্তু উদ্বোধনের পর থেকে যাত্রীদের ব্যাগেজ স্ক্যান করা হচ্ছে না। কক্ষটি সব সময় তালাবদ্ধ থাকে।
এদিকে রবিবার বেলা ২টার দিকে আখাউড়া কাষ্টম্স রাজস্ব কর্মকর্তা হাবিবুল্লাহ খানের কাছে এ বিষয়ে জানার জন্য মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেন নি।
আইসিপি বিজিবির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, তিন দিন ধরে আমাদের স্ক্যানার মেশিনটি নষ্ট হয়ে আছে।
হাকিকুল ইসলাম খোকন
কয়েক বছর ধরেই গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দিয়ে আসছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও তিনি সবসময় এই পথে হাঁটেন না। তবে যখন ব্যবস্থা নেন, তখনই ব্যর্থ হন। কিন্তু সম্প্রতি এবিসি নিউজ ১৫ মিলিয়ন ডলারের বদলে ট্রাম্পের সাথে একটি মানহানির মামলা মিটমাট করেছে।
এ ছাড়া আরো অসংখ্য গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তিনি ও তাঁর সহযোগীরা, যা ইঙ্গিত দিচ্ছে– দ্বিতীয়বার ক্ষমতা গ্রহণের পর মুক্ত সাংবাদিকতার স্বাধীনতা খর্ব করবেন তিনি।
এতে শঙ্কা দেখা দিয়েছে, তাঁর নেতৃত্বে গঠিত যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সরকারকে নিয়ে গণমাধ্যমগুলো স্বাধীনভাবে হয়তো কাজ করতে পারবে না। ট্রাম্প ইতোমধ্যে বলেছেন, যারা তাঁর সাথে অন্যায় করেছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেবেন।
গণমাধ্যম সুরক্ষা আইনজীবী ডেভিড কোরজেনিক বলেছেন, এই দেশে আইনের কোনো পরিবর্তন হয়নি। কিন্তু যা পরিবর্তিত হয়েছে, তা হলো সাংবাদিকতার পরিবেশ ও এটির বিরুদ্ধে বিদ্যমান শত্রুতার তীব্রতা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ট্রাম্পের দুই সহযোগী ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছেন, গণমাধ্যমের ওপর ট্রাম্প এবং তাঁর মিত্রদের চাপ বাড়ছে, এটির তীব্রতা বাড়তে থাকবে।
গত নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ট্রাম্প বিভিন্ন সভা-সমাবেশ ও অন্যান্য বক্তৃতায় গণমাধ্যমকে ১০০ বারের বেশি লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে বিষোদ্গার করেছেন। নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে ট্রাম্প নিউইয়র্ক টাইমসের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দেন। তাঁর নির্বাচনী প্রচারণা ক্যাম্প ওয়াশিংটন পোস্টের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দেয়। এ ছাড়া কমলা হ্যারিসকে নিয়ে সিবিএস নিউজের একটি অনুষ্ঠানে প্রতারণার অভিযোগ আনেন ট্রাম্প।
সর্বশেষ গত মঙ্গলবার নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে মামলা অব্যাহত রাখবেন। তিনি বলেন, এটি করতে আমাদের অনেক অর্থ খরচ হবে। কিন্তু আমাদের গণমাধ্যমকে শক্তিশালী করতে হবে। ট্রাম্পের মুখপাত্র স্টেভেন চিয়ুং বলেন, প্রেসিডেন্ট মিথ্যা ও অনৈতিক প্রতিবেদনের ওপর নজর দেবেন। যেগুলোতে সাধারণ মানুষের কোনো উপকার হয় না, যেগুলো শুধু রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য করা হয়।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের প্রতিনিধি সভায় সরকারের অর্থ ব্যয়-সংক্রান্ত একটি বিল আটকে দেন ট্রাম্প। এতে ট্রাম্পের সাথে জড়িত ছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ক। ওই ঘটনার পর প্রশ্ন ওঠে, ট্রাম্পকে সামনে রেখে প্রেসিডেন্টের সব দায়িত্ব মাস্ক পালন করবেন নাকি। তবে এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে এক সমাবেশে ট্রাম্প বলেছেন, না সে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিচ্ছে না। আমি তাঁর কাছে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব অপর্ণ করেছি– এমন তথ্য বিরোধীদের গুজব। আপনারা জানেন কেন মাস্ক প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না? কারণ তিনি এ দেশে জন্মগ্রহণ করেননি।
এদিকে দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেওয়ার আগেই বিতর্কের সৃষ্টি করছেন ট্রাম্প। গত সপ্তাহে তিনি পানামা খাল দখলের হুমকি দেন। এবার তিনি হুমকি দিয়েছেন ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গ্রিনল্যান্ড দখলের। নিজের সামাজিক মাধ্যম ট্রুথে ট্রাম্প বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা এবং পুরো বিশ্বের স্বাধীনতার জন্য, যুক্তরাষ্ট্র মনে করে গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
১৯৭৯ সালে ডেনমার্ক থেকে স্বায়ত্তশাসন পেলেও বৈদেশিক সম্পর্ক, নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক বিষয়ে এখনও তাদের ওপর নির্ভরশীল ডেনমার্ক। ১৯৪৬ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যান গ্রিনল্যান্ডকে কেনার জন্য ডেনমার্ককে ১০০ মিলিয়ন ডলার সমমূল্যের স্বর্ণ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এর পর ২০১৯ সালে ট্রাম্পও এই দ্বীপটি কেনার প্রস্তাব দেন। এতে করে ডেনমার্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছিল। এর জেরে ট্রাম্প ডেনমার্কে তাঁর আনুষ্ঠানিক সফরও বাতিল করেন।