অনলাইন ডেস্ক :
রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নবনিযুক্ত মন্ত্রীদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, পবিত্র রমজান ঘনিয়ে আসছে, মানুষ যাতে স্বস্তিতে থাকতে পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিন। এই মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ানো উচিত নয়।
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় আজ ১৩ জানুয়ারি শনিবার দুপুরে নবনিযুক্ত মন্ত্রীদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ দেন। টুঙ্গিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রীর নিজ বাসভবনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি বলেন, এটি একটি অনানুষ্ঠানিক মন্ত্রিসভার বৈঠক ছিল।
সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী রমজানের সময় বিশেষ করে বড় মজুতদাররা যাতে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির জন্য জরুরি পণ্য মজুত করতে না পারে সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য মন্ত্রীদের নির্দেশ দেন।
মন্ত্রীদের এই বিষয়ে নিয়মিত মজুত বিরোধী অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখুন যাতে সাধারণ মানুষ স্বস্তিতে থাকতে পারে।’
প্রধানমন্ত্রীর সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রথমবারের মতো নবনিযুক্ত মন্ত্রীদের প্রথমে তাদের মন্ত্রণালয়ের সার্বিক বিষয়ে তথ্য জানার জন্য নির্দেশ দেন।
সালাউদ্দিন বলেন, শেখ হাসিনা দেশ ও জনগণের জন্য কল্যাণকর যেকোনো প্রকল্প গ্রহণের সময় মন্ত্রীদের সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে বলেন।
এর আগে সকালে ঢাকা থেকে সড়ক পথে রওনা দিয়ে বেলা ১১টার দিকে দুদিনের সফরে টুঙ্গিপাড়া পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। তার সঙ্গে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা ছিলেন।
টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছানোর পর বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটের দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান তিনি। এরপর সেখানে দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন। পরে মন্ত্রিসভার নতুন সদস্যদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান সরকারপ্রধান।
পঞ্চমবার সরকার গঠনের পর এটা তার প্রথম সফর। সবশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দুই দিনের সফরে নিজের নির্বাচনী এলাকা গোপালগঞ্জে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সূত্র : বাসস
চলারপথে রিপোর্ট :
চলতি মাসের প্রথমদিন থেকে শুরু হয়েছে ট্রেনের টিকিট কাটার নতুন নিয়ম। জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও জন্ম নিবন্ধন দিয়ে নিবন্ধন করে ট্রেনের টিকিট কাটা বাধ্যতামূলক করা হয়। নতুন এ নিয়মে গত দু’দিনে রেলওয়ের আয় কমে গেছে? তাই স্ট্যান্ডিং টিকিট (আসনবিহীন) ক্রয় করতে এনআইডি বা জন্ম নিবন্ধনের বাধ্যবাধকতা উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে?
আজ ৩ মার্চ শুক্রবার সকালে এ তথ্য জানিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের প্রধান বুকিং সহকারী কবির হোসেন তালুকদার। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে স্ট্যান্ডিং টিকিট ক্রয় উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে? অনলাইন ও অফলাইনে সার্ভার উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। স্ট্যান্ডিং টিকিট ক্রয় করতে এনআইডি বা জন্ম নিবন্ধন লাগবে না। এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে আমাদের মৌখিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে?
তিনি আরও জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যাত্রীদের জন্যে ৯৩৯টি আসন রয়েছে। প্রতিদিন এ স্টেশন থেকে গড়ে আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার যাত্রী যাতায়াত করেন। প্রতি মাসে কোটি টাকার বেশি সরকার এ স্টেশন থেকে আয় করছে? নিবন্ধন করে টিকিট ক্রয়ে বাধ্যবাধকতা করায় কিছুটা সমস্যা তৈরি হয়েছে? এতে করে যাত্রী কমে যাওয়ায় গত দুদিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন চার লাখ টাকা রাজস্ব হারিয়েছে।
সূত্র জানায়, অনলাইন বা স্টেশন থেকে নতুন নিয়মে আসনসহ ট্রেনের টিকিট ক্রয় করতে এনআইডি বা জন্ম নিবন্ধনের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হচ্ছে। বিদেশিদের ক্ষেত্রে পাসপোর্ট দিয়ে নিবন্ধন করে টিকিট কাটতে হবে। টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধ, বিনা টিকিটে ভ্রমণে জরিমানা করা ও ভাড়া আদায় সহজ করার জন্য এমন ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।
চলারপথে রিপোর্ট :
আজ মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের রক্তঝরা দিন। একই সঙ্গে তাদের আন্তর্জাতিক সংহতির দিন। প্রতিবছর ১ মে সারা বিশ্বে দিবসটি পালিত হয়। ১২ ঘণ্টার পরিবর্তে ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে ১৮৮৬ সালের এই দিন রাস্তায় নামেন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকরা। আর এই শ্রমিকদের ওপর গুলি চলে। এতে নিহত হন ১১ জন তরতাজা শ্রমিক। তাদের জীবনদানের মধ্য দিয়ে পরবর্তীকালে যুক্তরাষ্ট্রসহ গোটা বিশ্বে ৮ ঘণ্টা শ্রমের দাবি মেনে নেওয়া হয়। সেই থেকে বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের প্রতীক হিসাবে ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালিত হয়ে আসছে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলও বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে।
বাংলাদেশেও প্রতিবছর মে দিবস পালিত হয়। নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে অত্যন্ত জাঁকজমকের সঙ্গে দিনটি পালনের আয়োজন করে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
সমাজ বিকাশের বিভিন্ন পর্যায়ে শোষণের বিরুদ্ধে শ্রমজীবীরা প্রথমে বিচ্ছিন্ন এবং পরে সংঘবদ্ধভাবে সংগ্রাম করে এসেছে। এ সংগ্রামের মাধ্যমে এক সময় দাস প্রথা বিলুপ্ত হলেও শ্রমিকের কাজের কোনো ধরাবাঁধা সময় ও নিয়ম ছিল না। উনিশ শতকের গোড়ায় কলকারখানায় সপ্তাহে ৬ দিন গড়ে প্রায় ১০-১২ ঘণ্টার বেশি অমানুষিক পরিশ্রম করতেন শ্রমিকরা। বিনিময়ে মিলত সামান্য মজুরি। অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা কিংবা সামাজিক নিরাপত্তাও ছিল না তাদের। এর বিরুদ্ধে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লড়াই শুরু হলেও তা বিরাট দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে আমেরিকায়। ১৮৮৬ সালে যা চূড়ান্ত রূপ নেয়। ওই বছরের ১ মে দৈনিক ১২ ঘণ্টার পরিবর্তে ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে শ্রমিকরা ফুঁসে ওঠেন। হে মার্কেটের কাছে তাদের বিক্ষোভে পুলিশ গুলিবর্ষণ করলে ১১ শ্রমিক নিহত হন। উত্তাল সেই আন্দোলনের মুখে কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের দাবি মেনে দিতে বাধ্য হয় এবং বিশ্বব্যাপী দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজের সময় চালু করা হয়। ১৮৮৯ সালের ১৪ জুলাই প্যারিসে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শ্রমিক সমাবেশে ১ মে-কে আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পরের বছর থেকে বিশ্বব্যাপী এ দিনটি পালিত হচ্ছে।
দিনটিতে বরাবরই বাংলাদেশে সরকারি ছুটি থাকে। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো দিনটি উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান ও টকশো সম্প্রচার করবে।
অনলাইন ডেস্ক :
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে রুনা লায়লা নামের এক হাজতিকে নির্যাতনের অভিযোগে যুব মহিলা লীগের সাবেক নেত্রী শামীমা নুর পাপিয়াকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গতকাল সোমবার বিকাল সাড়ে পাঁচ টার দিকে তাকে একটি প্রিজন ভ্যানে করে পাঠানো হয় বলে নিশ্চিত করেন কারাগারের জেল সুপার মো. ওবায়দুর রহমান।
এক কারা কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, পাপিয়া গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে প্রায় ৪০ মাস ধরে বন্দি ছিলেন। ২৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি হিসেবে জেল বিধি অনুযায়ী পাপিয়াকে ‘রাইটার’ হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। তিনি রুনা লায়লা নামে এক হাজতিকে সম্প্রতি নির্যাতন করে তার কাছ থেকে টাকা পয়সা লুট করে নেয়, এমন অভিযোগে রুনার ছোট ভাই জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগও করেছেন। পরে গঠন করা হয়েছে দুটি তদন্ত কমিটি। তার প্রেক্ষিতে সোমবার বিকাল সাড়ে ৫ টার দিকে একটি প্রিজন ভ্যানে করে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানে হয়েছে।
কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের (ভারপ্রাপ্ত) জেল সুপার মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাকে স্থানান্তর করা হয়েছে।
পাপিয়ার হামলায় আহত রুনা কাতরাচ্ছেন হাসপাতালের বেডে।
গাজীপুরে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে কারাবন্দি বহিষ্কৃত মহিলা যুবলীগ নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়ার মারধর ও নির্যাতনের শিকার রুনা লায়লা গুরুতর অবস্থায় এখনো গাজীপুর শহীদ তাজ উদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের ৭০৭ নাম্বার কক্ষে ভর্তি আছেন। হাসপাতালের বিছানায় রুনাকে কাতরাতে দেখা গেছে।
কারাগারের মারধরের শিকার হওয়ার পর থেকে রুনা অসংলগ্নভাবে কথা-বার্তা বলছেন। ২ জুলাই রবিবার বিকেলে রুনার বোন রওশন আরা বিষিয়টি নিশ্চিত করে বলেন, হাসপাতালে তার বোনের অবস্থা এখনো খুব একটা ভালো মনে হচ্ছে না।
রুনা লায়লা গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার কড়িহাতা গ্রামের আব্দুল হাইয়ের মেয়ে। ওই ঘটনায় জেলা প্রশাসক বরাবর তার ভাই আব্দুল করিম অভিযোগ করেন।
ওই হাসপাতালের বেডে শুয়ে রুনা সাংবাদিকদের বলেন, শনিবার (১৭ জুন) ভোর ৫ টায় মাইকিং করে আমাকে কারাগারের বিচার বৈঠকে যেতে বলে। সকাল ৯টায় বিচার বৈঠকে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমি ময়লা পরিষ্কার করতে যাই। বিকেল ৪টায় থালা-বাসন পরিষ্কার করি। বিকেলে আমাকে আমার কক্ষ থেকে বদলি করে পাপিয়ার অধিনে ৪০১ নম্বর কক্ষে দেওয়া হয়।
তিনি আরো জানান, পরদিন রবিবার ভোর ৫টায় সোনালী নামে একজন মাইকিং করে তাকে বিচার বৈঠকে আসতে বলে। তিনি সেখানে যাওয়ার পর আবার ওপরে উঠেন টয়লেটে যাওয়ার জন্য, এরপর তার নামতে দেরি হয়। এটাই ছিল আমার অপরাধ। সকাল ৭টার দিকে ফাতেমা নামে একজন আমাকে ডেকে নেয়। ফাতেমা লাঠি দিয়ে আমাকে আঘাত করে। আমি আত্মরক্ষার্থে হাতের লাঠি ফেরানোর চেষ্টা করি। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। আরও মারধর শুরু করে। কিছুক্ষণ পড়ে একটা হাতুড়ি নিয়ে এসে আমাকে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করলে আমি পড়ে যাই। পড়ে যাওয়ার পর লাথি মারে। এসময় হঠাৎ ছালমা এসে হাজির হয়। ছালমা এসে আমার পরনের কমলা রঙ্গের জামাটা ছিড়ে ফেলে। এমন অবস্থায় আমি পালানোর চেষ্টা করি। পালাতে গিয়ে পড়ে যাই। আমাকে ওরা ধরে নিয়ে আসে। নাজমা ও মিনা নামে দুজন গিয়ে আমাকে হাতকড়া পড়তে বলেন। আমি ভয় পেয়ে হাতকড়া পড়তে চাই না। আমাকে জোর করে হাতকড়া পড়ায়। হাতকড়া পড়িয়ে আমাকে একটা নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করে। আবার আমাকে বিচার বৈঠকে নিয়ে আসে। সেখানে দুদিকে ২ হাত উপরে তুলে লোহাড় শিকল দিয়ে বেঁধে দেয়। পাপিয়া এসে পায়ে লাঠি দিয়ে আঘাত করে। তখন কারাগারের সবাই আমাকে উঁকি দিয়ে দেখে। আমি আমার শরীর ঢাকতে চেষ্টা করি। পাপিয়ার পিটানিতে আমি প্রস্রাব-পায়খানা আটকাতে পারিনি। আমি তখন পানি চাই। বার বার পানি পানি করে কাঁদতে থাকি। আমাকে ময়লা পানি খাওয়ার কথা বলে। আমাকে পানি দেওয়া হয়নি। আমার মাথায় পানি ঢেলে দেওয়া হয়।
রুনা লায়লা বলেন, একটা সময় পাপিয়ার আঘাতে আমি মাটিতে পড়ে যায়। মুনিয়া নামে একজন আমাকে আমার জামা পরিবর্তনের কথা বলে ময়লা স্তুপের কাছে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে এলোপাথাড়ি মারধর করে। ওইখানে ঘণ্টা খানেক মারধর করলে আমি আর কিছু বলতে পারি না। চেতনা ফিরে পেলে আমাকে ওরা গাছে টানায়। ওড়না দিয়ে গাছে টানিয়ে রাখে। আমি খুব অসুস্থ বোধ করি। সন্ধ্যায় জেল সুপার ওবায়দুর আমার হাতকড়া খুলে দেয়।
রুনা লায়লার ভাই আব্দুল করিম বলেন, এ ঘটনায় গাজীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি’র) কাছে নির্যাতনের লিখিত অভিযোগ করেছি। পরে গঠন করা হয়েছে দুটি তদন্ত কমিটি।
গাজীপুর শহীদ তাজ উদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক শামসুল হুদা বলেন, রোগীর শরীরে রক্ত শূন্যতা দেখা গেছে। বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর রিপোর্ট আসেনি। রিপোর্টগুলো আসার পর রোগীর প্রকৃত অবস্থা জানা যাবে।
কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার (ভারপ্রাপ্ত) ওবায়দুর রহমান বলেন, ওই নারী গোপনে ৭ হাজার ৪০০ টাকা নিয়ে কারাগারে আসেন। বিষয়টি পরদিন তদন্ত করে পাওয়া যায়। টাকার বিষয়ে কারাগারের হাবিলদার ফাতেমা বেগম জানতে চাইলে তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন রুনা।
জেল সুপার (ভারপ্রাপ্ত) ওবায়দুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় কারা কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসন দুইটি তদন্ত কমিটি গঠণ করেছে। এছাড়া এ ব্যাপারে ২৬ জুন জেলার ফারহানা আক্তার, ডেপুটি জেলার জান্নাতুল তায়েবা এবং মেট্রোনকে শো’কজ করা হয়েছে। তবে এখনও কারো জবাব পাওয়া যায়নি।
চলারপথে রিপোর্ট :
রাজধানী ঢাকার বেইলি রোডে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় হতাহতের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলের একই পরিবারের পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এরা হলেন ইতালি প্রবাসী সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসার (৪৫), তার স্ত্রী স্বপ্না আক্তার (৩৫), দুই মেয়ে সৈয়দা ফাতেমা তুজ জোহরা কাশফিয়া (১৫) ও সৈয়দা আমেনা আক্তার নূর (১২) এবং ছেলে সৈয়দ আব্দুল্লাহ (৭)।
তাদের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের শাহবাজপুর গ্রামে।
তারা ঢাকার মগবাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। সৈয়দ মোবারক হোসেন ইতালির সাবুনা শহরে ব্যবসা করতেন। সেখানে ৪টি কসমেটিক দোকান পরিচালনা করতেন। তার বড় মেয়ে সৈয়দা ফাতেমা তুজ জোহরা কাশফিয়া মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ, সৈয়দা আমেনা আক্তার নূর ইস্পাহানী স্কুলে এবং সৈয়দ আব্দুল্লাহ মগবাজারের একটি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করতেন।
আজ ১ মার্চ শুক্রবার তাদের গ্রামের বাড়িতে আসার কথা ছিল। কিন্তু বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তারা লাশ হয়ে একে একে এ্যাম্বুলেন্স করে গ্রামের নিজ বাড়ির উঠোনে ফিরলেন।
নিহতদের স্বজনরা জানান, সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসার তার স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে মগবাজারে থাকতেন। গত বৃহষ্পতিবার রাতে বেইলী রোডে অগ্নিকান্ড সংঘঠিত হওয়া ভবনটিতে রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলেন। সেখানেই আগুনে পুড়ে তাদের মৃত্যু হয়। নিহতদের মরদেহ বাড়িতে আসার পর বাদ আসর খন্দকার মসজিদ প্রাঙ্গনে জানাযা শেষে বাড়ির পাশে পারিবারিক গোরস্তানে দাফন করা হবে। তাদের মৃত্যুর খবরে শাহবাজপুর ইউনিয়নে শোকের ছায়া নেমে আসে।
ইতালিতে স্থায়ীভাবে থাকার সুযোগ পেয়েছিলেন বাংলাদেশি সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসার। পরিবারের সবাই ভিসাও হয়েছিল। চলতি মাসে স্ত্রী ও তিন সন্তানকে নিয়ে ইতালিতে যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু পুরো পরিবার আর ইতালিতে পাড়ি জমানো হলো না। সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয় সন্তান।
নিহত মোবারকের খালাতো ভাই আলমগীর হোসেন জানান, মোবারক প্রথমে সিঙ্গাপুর প্রবাসী ছিলেন। প্রায় ২০ বছর আগে তিনি ইতালি পাড়ি দেন। তার দেশে আসা যাওয়া ছিল। গত দেড় মাস আগে প্রায় দুই বছর পর ইতালি থেকে দেশে ফিরেন মোবারক। স্ত্রী-সন্তানদের ইতালি নিয়ে যাওয়ার জন্য ভিসা ও টিকিটও সংগ্রহ করেছিলেন। আগামী ২০ মার্চ ইতালিতে যাওয়ার দিন নির্ধারিত করেছি।
নিহত মোবারের স্বজন মো. ফয়সাল বলেন, ইতালিতে স্থায়ী ভাবে বসবাসের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল পরিবারটি। ভিসাও হয়েছিল। পরিবারের সকলে খেতে যাওয়াটাই কাল হলো তাদের। ইতালি যাওয়ার স্বপ্ন অপূরণীয় রয়ে গেলো। ওই পরিবারে আর কেউ বেঁচে রইল না।
নিহত সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসারের শ্বশুর একই গ্রামের মুন্সী বাহার উদ্দিন জানান, তার মেয়ের জামাই মোবারক ঢাকার মগবাজার এলাকায় থাকতেন। তার মেয়ে স্বপ্না আক্তার, দুই নাতনি সৈয়দা ফাতেমা তুজ জোহরা কাশফিয়া ও সৈয়দা আমেনা আক্তার নূর এবং একমাত্র নাতি সৈয়দ আব্দুল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে রাতের খাবার খেতে ‘কাচ্চি ভাই’ রেস্তোরায় গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় সবাই পুড়ে মারা গেছেন। পুরো পরিবার নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল।
চলারপথে রিপোর্ট :
টাঙ্গাইলে বিয়ের দুই দিনের মাথায় শ্বশুরবাড়ির পুকুরে গোসল করতে নেমে জাহাঙ্গীর হোসেন নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রবিবার দুপুরে মধুপুর উপজেলার ইউনিয়নের ৪ ওয়ার্ডের চাটারবাইদ গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মৃত জাহাঙ্গীর ওই ইউনিয়নের আতেক্কার চালা গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে।
আজ ১১ সেপ্টেম্বর সোমবার মহিষমারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন মহির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, গত শুক্রবার জাহাঙ্গীরের সঙ্গে চাট্টাবাইদ গ্রামের সেলিম উদ্দিনের মেয়ের বিয়ে হয়। গতকাল রবিবার সকালে স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি ‘ফিরানী’ তে আসেন জাহাঙ্গীর। মেজবানি শেষে ওইদিন বিকেলেই আবার বাড়ি ফেরার কথা ছিল জাহাঙ্গীরের। দুপুরে শ্বশুরবাড়ির পাশের পুকুরে শ্যালক-শালিকাদের সঙ্গে গোসলে নেমে হঠাৎ ডুবে যান জাহাঙ্গীর। এ সময় আশেপাশের সবাই এগিয়ে এসে পানিতে নেমে জাহাঙ্গীরকে খুঁজতে শুরু করেন। আধাঘণ্টা চেষ্টার পর জাহাঙ্গীরকে পানি থেকে উদ্ধার করে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এ সময় দায়িত্বরত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক জাহাঙ্গীরকে মৃত ঘোষণা করেন।
মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা আজিজুর রহমান জানান, পুকুরে ডুবে জাহাঙ্গীরের মৃত্যু হয়। সাঁতার না জানায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছে।