চলারপথে রিপোর্ট :
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল সমগ্র জেলায় পৌষের শেষ দিক থেকে শীত জেঁকে বসেছে। শীতের দাপটে যেখানে মানুষ থেকে শুরু করে প্রানীকুল তটস্ত।
সেখানে শীতের পাখায় ভর দিয়ে প্রতি বছরের মতো এবারও মলাদহ বিলে অতিথি পাখির আগমন ঘটেছে। ফলে বিভিন্ন এলাকা থেকে পাখিপ্রেমীরা দল বেঁধে আসছেন পাখি দেখতে ঘাটাইল উপজেলার মলাদহ বিলে। বিলটির অবস্থান উপজেলার আনেহলা ইউনিয়নের সবুজ শ্যামল এক গ্রাম ডাকিয়া পটল। এ গ্রামের বুক চিরে বয়ে গেছে বিশাল এক জলাধার। নাম তার মলাদহ। এ ছাড়া রয়েছে আরো ছোট কয়েকটি বিল।
শীতকাল এলেই এই মলাদহ বিল অতিথি পাখির কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত হয়ে উঠে। বিলটি পাখির কারণে বেশ পরিচিতি লাভ করেছে। পাখির বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি, উড়ে চলা, নীরবে বসে থাকা-মানুষকে আকৃষ্ট করে তোলে মুহুর্তেই। তাই দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন একনজর পাখি দেখার জন্য এখানে আসেন।
এখানে উল্লেখযোগ্য পাখিগুলো হচ্ছে বালিহাঁস, পাতিহাঁস, সারস, পানকৌড়ি, নারিলা ও ডাহুক। চারদিকে সবুজ শ্যামলের সমারোহে বিলগুলো। মাঝখানে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে বিলবেষ্টিত ডাকিয়া পটল গ্রাম। সকালে এ গ্রামের বিলের কচুরিপানার মাঝে জলকেলিতে মাতে অতিথি পাখি। আর বিকেলের সোনালি রোদে গ্রামের গাছের ডালে ডালে পানকৌড়িসহ বিবিভন্ন পাখির পালক জ্বলজ্বল করে। এ গ্রামের পাশ দিয়ে যাওয়ার পথে শত ব্যস্ততার মাঝেও পাখি দেখে অনেক পথচারি একটু দাঁড়িয়ে চোখ জুড়িয়ে নেন।
স্কুলশিক্ষক বাবর হোসেন জানান, ফেব্রুয়ারি মাসে শীতের মৌসুম চলে গেলে পাখি যখন চলে যায় তখন বুকটা ফাঁকা লাগে। আবার যখন শীতে ফিরে আসে তখন বুক ভরে যায়। পাখিদের সংরক্ষণ করা আমাদের দায়িত্ব। এখানে পাখি আসে বলেই প্রতিদিন অনেক পাখিপ্রেমী দেখতে আসেন।
পাখিপ্রেমী আব্দুল মোতাকাব্বির স্বাধীন বলেন, পাখি আমাদের পরিবেশ রক্ষায় ব্যাপক ভূমিকা রাখে। তাই আমাদের দেশে আসা অতিথি পাখি যাতে নিরাপদে থাকতে পারে সেজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।
আনেহলা ইউপি চেয়ারম্যান তালুকদার মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, পাখি আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য ধরে রাখে। তাই পাখিদের প্রতি সকলকে সহনশীল হতে হবে। আমার ইউনিয়নের যেসব স্থানে অতিথি পাখি আসছে, সেখানে যাতে তারা নিরাপদে থাকতে পারে সেজন্য পরিষদের পক্ষ থেকে নজরদারি রয়েছে।
উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ জাফরুল হাসান রিপন বলেন, ‘পাখি প্রকৃতির অলংকার। এ অলংকার ধ্বংস করা মানে পরিবেশ ধ্বংস করা। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার জন্য পাখির বিচরণ ক্ষেত্র মুক্তভাবে রক্ষা করতে হবে। অতিথি পাখিরা যেন ‘মুক্ত আকাশে, খালে, বিলে, হাওর বাঁওড়ে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারে তার ব্যবস্থা অবশ্যই আমাদের করতে হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরতিজা হাসান দৈনিক যায়যায়দিন কে জানান, ‘প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার জন্য পাখির বিচরণ ক্ষেত্র মুক্তভাবে রক্ষা করতে হবে। আমাদের দেশ ক্রমে ক্রমে অতিথি পাখির জন্য ঝুঁকি পূর্ণ হয়ে উঠেছে। শুধু আইন দিয়েই পাখি শিকার বন্ধ করা যাবে না, এ জন্য প্রয়োজন সবার সচেতনতা।’
অনলাইন ডেস্ক :
জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ বলেছেন, সবকিছুর উচ্চমূল্যে সাধারণ মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। এখন মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ বড় চ্যালেঞ্জ। কর্মসংস্থানের পরিবর্তে কর্মহীনতার সংখ্যা বাড়ছে।
আজ ২৫ জুন রবিবার জাতীয় সংসদে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।
তিনি বলেন, এই বাজেট একদিকে সম্প্রসারণমূলক, আরেকদিকে বিশাল ঘাটতির। চলতি অর্থবছরে বাজেট বাস্তবায়নের অবস্থা ভালো নয়। আগামী অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এই জিডিপি অর্জন কঠিন হবে।
রওশন এরশাদ বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে দেশের অর্থনীতির গতি শ্লথ হয়েছে। রিজার্ভে টান পড়েছে। রপ্তানি আয় বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে।
জ্বালানির দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, এই খাতে দাম বাড়ানো হলে সবকিছুর দাম বাড়বে।
তিনি বলেন, এবারের বাজেট এমন এক সময় হয়েছে যখন নানামুখী চ্যালেঞ্জ ও সমস্যায় বিশ্ব অর্থনীতি। সারা বিশ্বে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে যা গত ৪০ বছরেও দেখা যায়নি।
চলারপথে রিপোর্ট :
মাদারীপুরে কলাগাছিয়া এসিনর্থ উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষা চলাকালীন স্কুলের ফ্যান খুলে পড়ে চারজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। আজ ২০ জুন মঙ্গলবার সকালে সদর উপজেলা কেন্দুয়া ইউনিয়নের পশ্চিম কলাগাছিয়া এসিনর্থ উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। পরে আহতদের উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আহত শিক্ষার্থীরা হলো-দশম শ্রেণির হিরামনী, মুনা আক্তার, ইরিনা আক্তার ও সাইমা জাহান। তারা সবাই হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। এদিকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ইরিনা আক্তার, সাইমা জাহান তারা বাসায় ফিরে গেছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, আমাদের স্কুলের ক্লাস অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষা শুরু হওয়ার ১০ মিনিট আগে ঘণ্টা দিলে আমরা পরীক্ষার কক্ষে গিয়ে বসি। তখন হঠাৎ সিলিং ফ্যান খুলে মাথায় পড়ে। এতে আমারা চার থেকে পাঁচজন ছাত্রী আহত হয়েছি। এরপরে কি হয়েছে, তা আমি আর বলতে পারি না। তাৎক্ষণিক আহতদের মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের মধ্যে হীরামনী বেশি অসুস্থ। এতে তার সেলাই লেগেছে। অন্যরা হাতে ও পিঠে আঘাত পেয়েছে। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আহত শিক্ষার্থী হিরামনীর নানা সামচুল হক মোল্লা বলেন, ‘আমার নাতি খুবই অসুস্থ। তার কপালে আঘাত লেগেছে। সে অনেক অসুস্থ ঠিকমতো কথা বলতে পারে না। আমি এটি মানতে পারতেছি না। কী আজব ঘটনা! একটি বেসরকারি স্কুলের ফ্যান খুলে পড়ে শিক্ষার্থী আহত হবে, এটা ভাবা যায়?’
আহত মুনার বাবা ইদ্রিস মাতুব্বর বলেন, আমার মেয়ে খুবই অসুস্থ। তার হাতে ও মাথায় অনেক আঘাত লেগেছে। এ ঘটনা শিক্ষকদের গাফিলতির কারণে ঘটেছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শান্তি রঞ্জন মন্ডল মুঠোফোনে বলেন, পরীক্ষা শুরু হওয়ার ১০ মিনিট আগে ঘণ্টা দেওয়া হয়। তারপরে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে প্রবেশ করেন। এর কিছুক্ষণ পর ফ্যান পড়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়েছে। এখন তাদের কি অবস্থা, সেটা আমি জানি না।
এ ব্যাপারে মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। যদি কোনো অভিযোগ থাকে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে (ব্রি) কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাদের মাসব্যাপী “আধুনিক ধান চাষাবাদ কৌশল এবং সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা” শীর্ষক প্রশিক্ষণ কোর্স সমাপ্ত হয়েছে আজ ১২ জুন সোমবার।
এ উপলক্ষে গাজীপুরে ব্রি সদর দপ্তরের প্রশিক্ষণ ভবনের কনফারেন্স রুমে সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রশিক্ষণ বিভাগ আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ব্রি’র মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর প্রধান অতিথি হিসেবে প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে সনদ বিতরণ করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রশিক্ষণ বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও প্রধান ড. মো. শাহাদাত হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রির উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণা সমন্বয়কারী ড. মুন্নুজান খানম।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কৃষিতত্ত বিভাগের সিএসও এবং প্রধান ড. মো. শহিদুল ইসলাম, ফলিত গবেষণা বিভাগের সিএসও এবং প্রধান ড. মো. হুমায়ুন কবির, খামার ব্যবস্থাপনা বিভাগের সিএসও এবং প্রধান সিরাজুল ইসলাম। প্রশিক্ষণার্থীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন জাকিব হোসেন, নুরনাহার, মো. মনিরুজ্জামান।
প্রশিক্ষণে প্রথম স্থান অধিকার করেন নারায়নগঞ্জের বীজ প্রত্যয়ন কর্মকর্তা মুহাইমিনুল ইসলাম, দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন মানিকগঞ্জের কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের প্রশিক্ষক শামসুন্নাহার এবং তৃতীয় হন জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. রতন মিয়া। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সিনিয়র লিয়াজুঁ অফিসার মোহাম্মদ আব্দুল মোমিন। অনুষ্ঠানে ব্রি’র সকল বিভাগীয় ও শাখা প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশ্যে ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব কৃষি বিজ্ঞানীদের হাত ধরেই বাস্তবায়ন হবে। আপনাদের হাত ধরেই দেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে। সুতরাং, এই প্রশিক্ষণটি ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আধুনিক ধান উৎপাদন প্রযুক্তি সম্পর্কে নতুন অনেক জ্ঞান অর্জন করার সুযোগ পেয়েছেন। প্রশিক্ষণে ৩০ জন কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা অংশ নিয়েছেন। প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে ১৪ মে।
অনলাইন ডেস্ক :
সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দেওয়া সাধুরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু একসময় মুদি দোকান চালাতেন নিজ গ্রাম কামালের বার্তিতে। মুদি দোকান চালিয়েই পরিবার নিয়ে কোনো রকমে দিনাতিপাত করতেন তিনি।
তারপর ঠিকাদারি লাইসেন্স প্রাপ্ত চাচাতো ভাই ইঞ্জিনিয়ার হারুনের সহযোগিতায় বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানির টাওয়ার নির্মাণ করে অর্থ উপার্জন শুরু করলে দিন পাল্টে যায় বাবুর।
ছাত্রজীবনে জাতীয় পার্টির ছাত্রসংগঠন জাতীয় ছাত্র সমাজের রাজনীতি করলেও পরবর্তীতে ভোল পাল্টে রাজনীতি ছেড়ে নিরপেক্ষতার ভান ধরেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৪-৯৫ সালের দিকে জাতীয় ছাত্র সমাজের প্রথম সারির কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন বাবু। ঠিকাদারি করে টাকা-পয়সা কামিয়ে ২০১১ সালে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ভেড়েন। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পরে যেভাবে সারাদেশের অনেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করেন, ঠিক সেভাবেই।
২০১১ সালে আওয়ামী লীগে ভিড়েই ইউপি নির্বাচনে অংশ নেন বাবু। তবে সেবার জয়ী হতে না পারলেও ২০১৪ সালে সাধুরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ বাগিয়ে নিতে সক্ষম হন তিনি।
তারপর থেকে বকশীগঞ্জ উপজেলা তথা জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা করে নেন মাহমুদুল আলম বাবু।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে থাকায় খুব সহজেই ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিট পান। পরে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে দ্রুত নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে সক্ষম হন বাবু।
জানা যায়, নারী লোভী বাবু টাকা আর ক্ষমতার দম্ভ দেখিয়ে চলতেন।
পুলিশের সাবেক এক ডিআইজির চাচাতো ভাই হিসেবে সর্বস্তরে শক্তি প্রদর্শনের দুঃসাহস দেখাতে থাকেন। আরও বেপরোয়া বাবু হয়ে ওঠেন সাধুরপাড়া ইউনিয়নের অঘোষিত সম্রাট!
২০১৬ সালের নির্বাচনে বিজয় তার জীবনে যেন চিরস্থায়ী আশীর্বাদ হয়ে ফিরে আসে। কারণ, ২০১৪ সালে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলনের পর আর কোনো সম্মেলন হয়নি। তাই পদে থেকে ২০২১ সালে ফের নৌকার মাঝি হয়ে
ফিরে আসেন মাহমুদুল আলম বাবু।
একদিকে নৌকা প্রতীকের দুইবারের চেয়ারম্যান, অন্যদিকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৯ বছরের সাধারণ সম্পাদক। কে ঠেকায় বাবুকে? ক্ষমতার দম্ভে বাবার মতোই বেপরোয়া হয়ে ওঠেন ছেলে ফয়সালও।
নারী লোভী বাবুর চরিত্র ফাঁস হয়ে যায়, যখন তার দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিনা আক্তার দৃশ্যপটে আসেন। জানা যায়, সাবিনাকে দুইবার বিয়ে করেন বাবু। দ্বিতীয়বার বিয়ের পর সাবিনার কোলে বাচ্চা আসে। তবে পুনরায় সাবিনাকে অস্বীকার করেন বাবু।
সাবিনা যখন তার অধিকার ফিরে পেতে চান, তখন দুঃসাহসিক সংবাদকর্মী গোলাম রাব্বানী নাদিম একের পর এক সংবাদ প্রকাশ করতে থাকেন। এরপরই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন নারী লোভী দাপুটে ক্ষমতাশালী চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু।
তার বিরুদ্ধে একের পর এক সংবাদ প্রকাশ করায় নাদিম ও অন্যদের নামে সাইবার ট্রাইবুনালে মামলা দায়ের করেন বাবু। কিন্তু মামলার মেরিট না থাকায় তা খারিজ করে দেন ময়মনসিংহের সাইবার ট্রাইবুনালের বিচারক।
আর এই মামলা খারিজের চার ঘণ্টার মধ্যেই হামলার শিকার হন সাংবাদিক নাদিম।
সাংবাদিক ও সচেতন নাগরিকদের ধারণা, বাবু হয়তো জানতেন নাদিমকে কোনোভাবেই আটকানো যাবে না। তাই আগে থেকেই পরিকল্পনা করতে থাকেন, নাদিমকে কীভাবে শায়েস্তা করা যায় তা নিয়ে!
মামলা দিয়েও ব্যর্থ হয়ে পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক নাদিমকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন বাবু ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা।
এরই অংশ হিসেবে বাবু সশরীরে উপস্থিত থেকে হামলার নেতৃত্ব দেন বলে জানিয়েছেন নাদিমের সহকর্মী এবং সহযোগী মুজাহিদ বাবু।
বুধবার (১৪ জুন) রাত ১০টার দিকে অদূরে অন্ধকার গলিতে দাঁড়িয়ে থেকে ছেলে ফয়সাল ও অন্য সহযোগীদের দিয়ে হামলা করান নাদিমের ওপর। হামলার এক পর্যায়ে ইট দিয়ে থেঁতলে নাদিমকে অচেতন করে পালিয়ে যায় তারা।
পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এরপর রাত ১২টায় সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) সকালে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) বিকেল ৩টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাংবাদিক নাদিমের মৃত্যু হয়।
এদিকে সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যাকাণ্ডে ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু মাস্টারমাইন্ড বলে মন্তব্য করেছেন জামালপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) নাসির উদ্দীন আহমেদ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে এসপি নাসির বলেন, এই ঘটনার পেছনে যেসব মাস্টারমাইন্ড রয়েছে, তাদেরও বিচারের আওতায় আনা হবে।
হত্যাকাণ্ডের দীর্ঘসময় পরও মূল হোতা কেনো আটক হয়নি এবং ওসি বলেছেন, সিসিটিভি ফুটেজে তাকে দেখা যায়নি- এ সম্পর্কে এসপি নাসির বলেন, ওসি সত্যিকার অর্থে ভুল বলেছে। এলআইসি টিম আমার আন্ডারে থাকে। টিম এখন মাঠে আছে। লাইভে বলেছি, লোকেশন দেখেছি, কোনদিকে আছে তারা। পেছন পেছন যাচ্ছে। মাহমুদুল আলম বাবু কিলিং মিশনের নায়ক। সেটা প্রথম থেকেই জানি।
পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা চেয়ারম্যান বাবুর পরিবারের আত্মীয়- এমন অভিযোগের বিষয়ে এসপি নাসির উদ্দীন বলেন, প্রথম থেকে বাবুর নাম আমি বলেছি। সে-ই প্ল্যান মেকার। প্রত্যেকটা জায়গায় বলেছি। আমাদের ব্যাকআপ আছে। আরও মাস্টারমাইন্ড আছে, তারাও বের হয়ে আসবে।
হামলার পেছনে শাহীনা বেগম রয়েছেন- পরিবারের এমন দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের অপরাধ বিজ্ঞান বা আইন বলে ঢাকা থেকে হামলার অংশ হতে পারবে না- এটা সত্য না। যদি নাম আসে আটক করবো, আসামির খাতায় নাম আসলে অবশ্যই আটক করবো। জড়িত থাকলে বা মামলা হলে সবাইকে আটক করা হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘নির্বাচনের ট্রেন কারও জন্য অপেক্ষা করবে না, যথাসময়ে নির্বাচন হবে।’
আজ ৪ সেপ্টেম্বর সোমবার বিকালে রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে নতুনভাবে প্রকাশিত দৈনিক বাংলা পত্রিকার প্রথম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তৃতা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
দৈনিক বাংলার প্রকাশক ও কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ’র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত, বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাসোসিয়েশন ও ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট শেখ কবীর হোসেন প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদের ‘তফসিল ঘোষণা হলেই যে নির্বাচন হয়ে যাবে, এতো সহজ নয়’ মন্তব্যের জবাবে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আসলে বিএনপি তো চায় দেশে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ভন্ডুল করতে। ২০১৪ সালে তারা সে চেষ্টা করেছিল, ব্যর্থ হয়েছে। এবার সেই চেষ্টা করলে জনগণ কঠোর হস্তো দমন করবে। বাংলাদেশে বেশিরভাগ মানুষ আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে, সেই মানুষগুলো বসে থাকবে না। আমরা আওয়ামী লীগও বসে থাকব না।’
‘আর নির্বাচনের ট্রেন কারো জন্য দাঁড়াবে না’, উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচনের ট্রেন যেমন কারো জন্য দাঁড়ায়নি, ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি পাদানিতে বসে নির্বাচনের ট্রেনে চড়েছিল। আমরা আশা করব, এবার নির্বাচনের ট্রেনে তারা ভালোভাবে বসবে। আর তারা না চড়লেও নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে।’
বিএনপিকে উদ্দেশ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘উনাদের কোন নেতা কী বললো এতে কিচ্ছু আসে যায় না। নির্বাচনে জনগণ অংশগ্রহণ করল কি না সেটিই মুখ্য। যদি জনগণ ব্যাপকভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাহলেই সেটি একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে।’
‘তাদের বর্জন সত্ত্বেও যেভাবে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জনগণ ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করেছে, আগামী নির্বাচনও যদি তারা বর্জন করে জনগণ ব্যাপকভাবেই অংশগ্রহণ করবে ইনশাআল্লাহ। তবে আশা করব, তারা অংশগ্রহণ করবে।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ‘বিএনপি ক্ষমতায় এলে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান করবে’ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন যে রোহিঙ্গারা এসেছিল তাদেরই তো তারা পরিপূর্ণভাবে ফেরত পাঠাতে পারেনি। ১৯৭৬-৭৭ সালে রোহিঙ্গারা এসেছিল সেই রোহিঙ্গারা এখনো আছে, ওরা এখন বাংলাদেশি হয়ে গেছে। ১৯৯১-৯২ সালে আবার রোহিঙ্গারা এসেছিল যখন বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী। সেই রোহিঙ্গাদের বহুজন চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। আর এখন তারা রোহিঙ্গা ফেরত পাঠাতে সেমিনার করে বেড়াচ্ছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে তারা চায় না যে, রোহিঙ্গা সমস্যার কোনো সমাধান হোক। কারণ, বিএনপির সাথে যে জঙ্গিগোষ্ঠী আছে তাদের জন্য রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো রিক্রুট করার উর্বর ক্ষেত্র হয়েছে, এ জন্য উনারা প্রকৃতপক্ষে চায় না এ সমস্যার সমাধান হোক। আমরা চেষ্টা করছি, কূটনৈতিকভাবে চেষ্টা করছি এবং অনেক অগ্রগতিও আছে। ইনশাআল্লাহ এই সমস্যার সমাধান হবে।’