চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে চুরির অপবাদে জাহিদুল ইসলাম পরশ-(২১) নামে এক যুুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরশ মারা যায়। নিহত পরশ উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের আবেদ মিয়ার ছেলে।
আজ ১৯ জানুয়ারি শুক্রবার দুপুরে তার লাশ ময়না তদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
নিহতের পরিবারের অভিযোগ, গত দুইদিন আগে পাশের বাড়ির আলমগীর মিয়ার বাড়িতে টিউবওয়েলের একটি পাম্প চুরি হয়। সেই চুরির অপবাদেবৃহস্পতিবার সকালে সন্দেহজনকভাবে পরশকে প্রতিবেশী শফিক, মঈনুদ্দিন, বাবুসহ বেশ কয়েকজন মিলে মারধর করে।
আহতবস্থায় পরিবারের লোকজন পরশকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে এনে ভর্তি ভর্তি করে। রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরশ মারা যায়।
এ ব্যাপারে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ এমরানুল ইসলাম জানান, ঘটনার তদন্ত চলছে। আমরা তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
হার্ট অ্যাটাকে সরাইল সার্কেল অফিসে কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল (ড্রাইভার) মো. জাহেদুল আলমের মৃত্যু হয়েছে। ২৮ আগস্ট সোমবার সকালে তার মৃত্যু হয়।
জাহেদুল চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার পূর্ববড়িয়া গ্রামের আলী আহমেদের ছেলে। ৬ বছর আগে তিনি বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন। তার সাড়ে চার বছর ও আড়াই বছরের দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম জানান, সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করেন জাহেদুল আলম। এরপর তাকে দ্রুত ঘাটুরা মেডিকেলে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে বিকেলে জাহেদুলের মরদেহ গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারায় পাঠানো হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে মসজিদের ছাদ থেকে এক শিশুর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ ৭ জুলাই সোমবার নিহতের মা লিপা আক্তার বাদী হয়ে সরাইল থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদুল আলম চৌধুরী। তিনি জানান, সোমবার সকালে নিহতের মা ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। মামলার রহস্য উদঘাটনে পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই ও সিআইডি তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
মসজিদের ইমাম হামিদুর রহমান ও মুয়াজ্জিন সাইদুল ইসলামকে পুলিশি হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তবে তাদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে এখনও কোনো খবর পাওয়া যায়নি। ইতিমধ্যে নিহতের ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।
উল্লেখ্য, গত ৫ জুলাই শনিবার দুপুরে খেলাধুলা করতে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয় উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের ছন্দু মিয়া পাড়ার প্রবাসী আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে। সে স্থানীয় লতিফ মোস্তারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। তাকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করেও পাওয়া যাচ্ছিল না।
৬ জুলাই রবিবার সকালে স্থানীয় মসজিদের মক্তবে শিক্ষার্থীরা আরবি পড়তে আসে। এ সময় মসজিদের ছাদে শিশুর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে। পরে পুলিশ মসজিদের দোতলা থেকে তার বিবস্ত্র ও রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে।
সরাইল প্রতিনিধি :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী উকিল আবদুস সাত্তারের পক্ষে বেশ কদিন ধরে নির্বাচনী প্রচার কাজে অংশ নিচ্ছেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় দুই সংসদ সদস্য। নির্বাচনী প্রচারের শেষ দিনে আজ ২৯ জানুয়ারি রবিবারও জনসভায় অংশ নেন তারা। ওই দুই সংসদ সদস্য হলেন র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ও উম্মে সালমা নাজমা বেগম শিউলী আজাদ।
বিকেলে সরাইল উপজেলার অরুয়াইলে উকিল আবদুস সাত্তারের জনসভায় অংশ নেন তারা। আবদুস সাত্তার সমর্থক গোষ্ঠীর ব্যানারে স্থানীয় কলেজ মাঠে আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায় সভাপতিত্ব করেন অরুয়াইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী আবু তালেব।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমানের পরিচালনায় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন। নির্বাচনী সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদর আসনের সংসদ সদস্য যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র. আ. ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
সদর আসনের সাংসদ মোকতাদির চৌধুরী তার বক্তব্যে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি উপনির্বাচনে উকিল আবদুস সাত্তারকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সাত্তার সাহেব চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন। তাই নির্বাচনে তাকে বিজয়ী করে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে হবে। আমি তাকে ব্যক্তিগতভাবে এবং আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে সমর্থন করি। তাই আপনাদের পাশের উপজেলার বাসিন্দা হিসেবে আপনাদের কাছে দাবি নিয়ে এসেছি, আবদুস সাত্তারকে উপনির্বাচনে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেন, বিএনপি উকিল আবদুস সাত্তারকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। তারেক জিয়া তার সঙ্গে বেয়াদবি করেছে। তার সঙ্গে এখন আর বিএনপি নাই। প্রধানমন্ত্রী তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। আমর তারা পাশে আছি।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে নির্দেশনা পাঠিয়েছেন দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বসিয়ে সাত্তার সাহেবের পক্ষে দলীয় নেতাকর্মীদের নামার জন্য। আমি জননেত্রী শেখ হাসিনার বার্তা নিয়ে এসেছি। তাই ১ ফেব্রুয়ারির উপনির্বাচনে আবদুস সাত্তারকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করে সাত্তার সাহেবের অপমানের এবং তারেক জিয়ার বেয়াদবির জবাব দিতে হবে।
তিনি সভাস্থলের পাশের তিতাস নদীর ওপর নির্মিত ব্রিজ দেখিয়ে বলেন, এ ব্রিজ কে করেছেন? শেখ হাসিনা। আগামী নির্বাচনের আরও এক বছর বাকি। তাই সাত্তার সাহেবকে বিজয়ী করলে এলাকার আরো উন্নয়ন হবে।
এভাবে উপনির্বাচনে জনসভায় অংশ নেওয়ার বিষয়টি আচরণবিধি লঙ্ঘন কিনা- এমন প্রশ্নে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক ও উপনির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহগীর আলম বলেন, এ ব্যাপারে প্রার্থীদের কাছ থেকে কোনো অভিযোগ নাই। তাছাড়া নির্বাচনের সবকিছুই শান্তিপূর্ণভাবেই চলছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়াসহ অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার, স্থানীয় নারী সংসদ সদস্য উম্মে সালমা ফাতেমা বেগম শিউলী আজাদ, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি হেলাল উদ্দিন, উপনির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, সাবেক জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মঈন উদ্দিন মঈন, সাবেক ছাত্রনেতা ও স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু, বাংলাদেশ আইন সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান আনসারী, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি মুজিবুর রহমান বাবুল, সরাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা সাধারণ সম্পাদক রফিক উদ্দিন ঠাকুর, সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজমুল হোসেন প্রমুখ।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলা ও আশুগঞ্জ উপজেলা নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন গঠিত। দুই উপজেলায় রয়েছে ১৭টি ইউনিয়ন। এর মধ্যে সরাইল উপজেলায় রয়েছে ৯টি ইউনিয়ন ও আশুগঞ্জ উপজেলায় রয়েছে ৮টি ইউনিয়ন।
উপনির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৩১৩ জন। এর মধ্যে সরাইল উপজেলায় ২ লাখ ৪১ হাজার ৭৯ এবং আশুগঞ্জ উপজেলার মোট ভোটার ১ লাখ ৩২ হাজার। উপনির্বাচনে মোট কেন্দ্র ১৩২টি। এরমধ্যে সরাইল উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে ৮৪টি ও আশুগঞ্জ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে ৪৮টি ভোট কেন্দ্র করা হয়েছে।
সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উপনির্বাচন করার লক্ষ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে প্রশাসন। নির্বাচনে সংসদীয় আসনে অফিসারসহ এক হাজার ১০০ পুলিশ সদস্য মোতায়েন করার কথা রয়েছে। এছাড়াও থাকবে ৪ প্লাটুন বিজিবির সদস্য, র?্যাবের ৯টি টিম, পুলিশের ৯টি মোবাইল টিম ও ৪টি স্ট্রাইকিং টিম। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে ৩ জন পুলিশ, অস্ত্রধারী ২ জন আনসার, লাঠিধারী ১০ জন আনসার ও ২ জন গ্রাম পুলিশ। উপনির্বাচনে ১৭টি ইউনিয়নে ১৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ২ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের কার্যকরী কমিটির নির্বাচনে বিজয়ী সরাইলের তিন সন্তান কার্যকরী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা ও কোষাধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন বেলালকে সরাইল উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে।
আজ ২৭ মার্চ সোমবার দুপুরে সরাইল উপজেলা পরিষদের কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট লেখক ও সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ রফিক উদ্দিন ঠাকুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু।
বক্তব্য রাখেন সংবর্ধিত অতিথি ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা ও কোষাধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন বেলাল।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসলাম হোসেন, সরাইল ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মৃধা আহমাদুর রহমান কামাল, উপজেলা পরিষদ ভাইস- চেয়ারম্যান আবু হানিফ, মহিলা ভাইস- চেয়ারম্যান রোকেয়া বেগম।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খালিদ জামিলের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক হাজী মাহফুজ আলী।
বক্তব্য রাখেন, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোঃ সুমন মিয়া, ইউপি চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা বাদল, মোঃ আবদুল জব্বার, উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ শফিকুর রহমান, সাংবাদিক নূরুল হুদা প্রমুখ।
সভায় উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগন, মুক্তিযোদ্ধাগন, বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে কর্মরত সাংবাদিকগন, জনপ্রতিনিধিগন ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
কোরআন থেকে তেলোয়াত করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্ত ডাঃ নোমান মিয়া।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে তিন সাংবাদিককে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, সরাইলের সাংবাদিকতা খুবই সমৃদ্ধ। সংবর্ধিত তিন সাংবাদিক সরাইলের মুখ উজ্জ্বল করেছেন।
তিনি সাংবাদিকতায় সরাইলের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে বলেন চুন্টা প্রকাশ নামে পত্রিকা ভারতবর্ষে অভিবক্ত বাংলার প্রথম পত্রিকা। কালিকচ্ছ থেকে জিত দাসের সম্পাদনায় ১৮৭০ সালে বঙ্গবন্ধু পত্রিকা ও কালিকচ্ছ থেকে রায়ত বন্ধু পত্রিকা প্রকাশিত হয়েছে। তিনি সংবর্ধিত তিন সাংবাদিকের সফলতা কামনা করেন। পরে প্রধান অতিথি সংবর্ধিত তিন সাংবাদিকের হাতে সম্মাননা ক্রেষ্ট তুলে দেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
গত ৫ নভেম্বর রবিবার অনুষ্ঠিত হওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচনের ফলাফল গেজেট স্থগিত করে নির্বাচনের অনিয়ম খতিয়ে দেখতে জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের গঠন করা দুটি তদন্ত কমিটির উপর অনাস্থা দিয়েছেন নির্বাচনে কলার ছড়ি প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা স্বতন্ত্র প্রার্থী ও এই আসনের দুইবারের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাড: জিয়াউল হক মৃধা।
গতকাল বুধবার তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর লিখিতভাবে অভিযোগ দিয়ে তদন্ত কমিটির উপর অনাস্থা জ্ঞাপন করেন। অ্যাড: জিয়াউল হক মৃধা নির্বাচন নিয়ে অনিয়মের বিচার বিভাগীয় কিংবা নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের বাদ দিয়ে তদন্ত করার দাবি জানান।
এদিকে কয়েকটি ভোট কেন্দ্রের বিষয়ে অনিয়ম নিয়ে উঠা অভিযোগের তদন্ত দ্বিতীয় দিনের মতো আজ ৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবারও অব্যাহত ছিলো।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। গত দুইদিনে তদন্ত কমিটি কমপক্ষে সংশ্লিষ্ট দুইশত জনের সাথে কথা বলেছেন।
জেলা প্রশাসনের তদন্তকারি কর্মকর্তা হলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ রুহুল আমিন আর জেলা পুলিশের কর্মকর্তা হলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) মোঃ জয়নাল আবেদীন। গতকাল বুধবার তদন্ত কমিটি আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদে সংশ্লিষ্টদেরকে ডেকে কথা বলেন।
আজ বৃহস্পতিবার তদন্ত কমিটি অভিযোগ উঠা কয়েকটি কেন্দ্রে গিয়ে ভোটারসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলেন। তদন্ত কমিটির লোকজন ওইসব জায়গায় যাওয়ার আগেই ওইসব কেন্দ্রের সামনে আওয়ামীলীগের স্থানীয় নেতারা উপস্থিত হন। এ সময় কাউকেই অনিয়মের কথা বলতে শুনা যায়নি।
এদিকে, আশুগঞ্জের একটি ভোট কেন্দ্রের অনিয়ম নিয়ে দুই মিনিট ২৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায় একাধিক সহকারি প্রিসাইডিং অফিসার (নারী) ব্যালট পেপারে স্বাক্ষর করে তুলে দিচ্ছেন তাদের সামনে জটলা বেঁধে থাকা যুবকদের হাতে। যুবকরাও ওই কর্মকর্তার সামনেই সিল মারছেন।
এদিকে জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুহুল আমিন তদন্ত কার্যক্রম বিষয়ে বুধবার বিকেলে একজন সাংবাদিকের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, পত্রিকায় প্রকাশিত ভেতরের ক্লোজ ছবিতে কারা রয়েছেন তা স্পষ্ট না হওয়ায় এবং অন্য তিনটি কেন্দ্রের অনিয়মের কোনো ছবি না থাকায় পত্রিকার বক্তব্য পড়ে নির্বাচনের অনিয়মের পূর্ণাঙ্গ চিত্র সম্পর্কে ধারণা করা যাচ্ছেনা। চিঠিতে তিনি আশুগঞ্জ উপজেলার যাত্রাপুর হাফেজিয়া নূরানীয়া মাদ্রাসা ভোট কেন্দ্রের সম্পূর্ণ চিত্র ও অন্য তিনটি কেন্দ্রের কোনো ডকুমেন্টরি ভিডিওচিত্র অথবা স্থিরচিত্র থাকলে তা সঙ্গে নিয়ে বৃহস্পতিবার আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানান। চিঠির প্রেক্ষিতে ওই গণমাধ্যমকর্মী মোবাইল ফোনের মাধ্যমে একাধিক ভিডিও ও স্থিরচিত্র সরবরাহ করেন।
গত ৫ নভেম্বর উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শাহজাহান আলম ৬৬ হাজার ৩১৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি স্বতন্ত্র প্রার্থী জাতীয় পার্টির সাবেক এম.পি জিয়াউল হক মৃধা কলারছড়ি প্রতীকে পান ৩৭ হাজার ৫৫৭ ভোট। তবে আশুগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে অনিয়মের অভিযোগ উঠে। এরই প্রেক্ষিতে নির্বাচনের ফলাফলের গেজেট স্থগিত করে অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেয় নির্বাচন কমিশন।
তবে, কমিশনের তদন্তে নিজের আস্থা নেই বলে জানিয়েছেন জিয়াউল হক মৃধা।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর দেওয়া অভিযোগ ও সাংবাদিকদের কাছে তিনি উল্লেখ করেন, বেশ কিছু কেন্দ্রে ভোট ছাপা হয়েছে। আশুগঞ্জের শরীফপুর কেন্দ্রের ভোট ছাপার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তাৎক্ষণিক ভাবে নানা অনিয়ম বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে অভিযোগ করলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি। তাই যারা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে ব্যর্থ হয়েছে তাদেরকে দিয়ে তদন্ত করলে কোনো লাভ হবেনা। শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করা হলে প্রয়োজনে তিনি উচ্চ আদালতের শরনাপন্ন হবেন বলে সংবাদিকদেরকে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে তদন্তকারি কর্মকর্তা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ রুহুল আমিন মুখ খুলতে রাজি নন। তবে তিনি জানান, তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ি তদন্ত কার্যক্রম শেষ করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই রিপোর্ট জমা দিবেন।