বিশ্ব ইজতেমায় এক মঞ্চ থেকে বয়ান হবে দুই ময়দানে

জাতীয়, 21 January 2024, 423 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
বিশ্ব ইজতেমায় এবার টঙ্গীর তুরাগ তীরের পাশাপাশি নদীর পশ্চিম পার ও উত্তরার দিয়াবাড়িতে মূল প্যান্ডেল হচ্ছে। টঙ্গীর মূল মঞ্চের পাশাপাশি দিয়াবাড়িতে আরেকটি মঞ্চ তৈরি করা হচ্ছে। তবে টঙ্গীতে অবস্থিত মূল মঞ্চ থেকে দিয়াবাড়ি মঞ্চে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে বয়ান প্রচারিত হবে। কিন্তু ইজতেমা ময়দানের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ হবে পৃথকভাবে।

অতিরিক্ত মুসল্লির ভিড় সামলাতে ও দুর্ভোগ কমাতে এই আয়োজন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
আজ ২১ জানুয়ারি রবিবার বিশ্ব ইজতেমা ময়দান ঘুরে দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য জানা গেছে।

টঙ্গী ইজতেমা ময়দানের বয়ান মঞ্চের জিম্মাদার হাজী মোহাম্মদ রেজাউল করিম রেজা বলেন, ‘এবার টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানের মূল বয়ান মঞ্চের পাশাপাশি উত্তরার দিয়াবাড়িতে আরেকটি মঞ্চ প্রস্তুত করা হচ্ছে। টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানের মূল মঞ্চের বয়ান আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে দিয়াবাড়ি মঞ্চে সরবরাহ করা হবে।

সেখান থেকে দিয়াবাড়ি মাঠে মুসল্লিরা বয়ান ও আখেরি মোনাজাতে শরিক হবেন। তবে প্রতিবছরের মতো এবার টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া হবে এবং দিয়াবাড়িতে আলাদাভাবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া হবে।’

টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার প্রধান সমন্বয়কারী প্রকৌশলী মাহফুজ হান্নান বলেন, ‘আগামীকাল বিকেলে টঙ্গীতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসবেন। তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেস ব্রিফিং করে বিশ্ব ইজতেমার বিষয়ে বিস্তারিত বলবেন।’

তিনি বলেন, ‘এবার বিশ্ব ইজতেমায় ১০৫টি খিত্তা থাকবে। টঙ্গীর মূল মঞ্চে ৭২টি, টঙ্গীর তুরাগ তীরের পশ্চিম পারে ১০টি ও উত্তরার ১৮ নম্বর সেক্টরে দিয়াবাড়ি মাঠে ২৩টি খিত্তা থাকবে। দিয়াবাড়িতে এবার নতুনভাবে মাঠ প্রস্তুত করায় বেশ কিছু কাজ করা হচ্ছে। দিয়াবাড়িতে ৬০ একর জায়গার মাঠ হবে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় মাঠ। দিয়াবাড়ি ময়দানে আটটি গভীর নলকূপ, ১৪টি বড় চৌবাচ্চা ও দুই হাজার ৫০০ টয়লেট নির্মাণ করা হচ্ছে।’

দিয়াবাড়ি ইজতেমা ময়দানের জিম্মাদার মাওলানা ফরিদ আহমদ বলেন, ‘বিশ্ব ইজতেমার প্রধান সমন্বয়কারী প্রকৌশলী মাহফুজ হান্নান সাহেব। আমি দিয়াবাড়ি ময়দানের জিম্মাদার।’

দিয়াবাড়ি ময়দানের প্রস্তুতি কাজ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে ময়দান প্রস্তুত করার কাজ চলছে। টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় সর্বসম্মতিক্রমে দুটি ময়দান করা হয়েছে। তবে টঙ্গীর ময়দানের মূল মঞ্চ থেকে বয়ান সরবরাহ করে দিয়াবাড়িতে শোনানো হবে। আখেরি মোনাজাতও বয়ানের মতো সরবরাহ করা হবে। তবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ দুই ময়দানে পৃথকভাবে অনুষ্ঠিত হবে।’

আয়োজকরা বলছেন, টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে ১০ লাখ, তুরাগ নদীর পশ্চিম পারে এক লাখ ও দিয়াবাড়িতে দুই লাখ মুসল্লি অংশগ্রহণ করবেন। আখেরি মোনাজাতে প্রায় ৪০ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

২০১১ সালে বিশ্ব ইজতেমা দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হয়। সেই থেকে প্রতিবছর দুই পর্বে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। আর এবারই প্রথম দুটি ময়দানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমা। প্রথম পর্ব ২ থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ও ৯ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হবে।

Leave a Reply

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বচ্ছতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ৮৩…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা ও সঠিক প্রক্রিয়ায় ৮৩জন Read more

জননিরাপত্তার নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক ঐক্যমত…

চলারপথে রিপোর্ট : জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক ঐক্যমত একান্ত Read more

বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ গ্রেফতার ১

চলারপথে রিপোর্ট : বিজয়নগর উপজেলা থেকে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ ১ Read more

সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বাঞ্ছারামপুরে ১৪৪ ধারা…

চলারপথে রিপোর্ট : বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে উপজেলা ও Read more

বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশীজন ও…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় “বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশীজন ও Read more
ফাইল ছবি

আশুগঞ্জে ট্রেনের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জে ট্রেনের ধাক্কায় মাথায় আঘাত পেয়ে অজ্ঞাতনামা Read more

আখাউড়ায় বিনামূল্যে ধান বীজ বিতরণ চলারপথে রিপোর্ট : আখাউড়া উপজেলায় Read more

কুয়েতে সড়ক দুর্ঘটনায় আবু বাক্কার নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : কুয়েতে প্রাইভেটকার দুর্ঘটনায় শেখ আবু বাক্কার (৩৪) Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাস উল্টে যাত্রী নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : সরাইল উপজেলায় বাস উল্টে গোপী কান্ত ঘোষ Read more

ট্রাক-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ একজন নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে অটোরিকশার Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিশু নাট্যমের বিতর্ক প্রতিযোগিতা

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিশু নাট্যমের ৩৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে Read more

ইয়াবা ট্যাবলেটসহ দুই পাচারকারী গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জে ১হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ গোপাল রায় Read more

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে আরেক হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হলো

জাতীয়, 3 October 2024, 78 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় আল আমিন হোসেনকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেফতার দেখিয়েছেন আদালত। এ মামলায় আনিসুল হক এজাহারনামীয় ৪ নাম্বার আসামি।

আজ ৩ অক্টোবর বৃহস্পতিবার কারাগার থেকে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাড্ডা থানার সাব ইন্সপেক্টর মো. আহসান হাবীব তাকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুল ইসলাম তাকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

মামলার অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ফলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলে ৫ আগস্ট রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় আনন্দ মিছিল বের করেন ছাত্র-জনতা। এসময় বাড্ডা থানার পাশে ফুলকলি মিষ্টির দোকানের সামনে আওয়ামী লীগের এলোপাতাড়ি হামলা ও গুলির মুখে পড়ে তাৎক্ষণিক মৃত্যুবরণ করেন আল আমিন হোসেন। এ ঘটনায় বাড্ডা থানায় মামলা করেন আল আমিনের মা।

উল্লেখ্য, গত ১৩ আগস্ট গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নৌপথে পলায়নরত অবস্থায় রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেফতার করা হয়। নিউমার্কেট এলাকায় দোকান কর্মচারী শাহজাহান আলীকে (২৪) হত্যার অভিযোগে করা মামলায় পরদিন ১৪ আগস্ট তার ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদ।

উন্নত জীবন নিশ্চিতে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, 17 August 2023, 682 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সকলের আরও ভালো ও উন্নত জীবন নিশ্চিত করতে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার উদ্বোধন করা হলো।’

আজ ১৭ আগস্ট বৃহস্পতিবার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা পেনশন স্কিম চালু করেছি যাতে দেশের প্রতিটি মানুষ একটি উন্নত জীবনযাপন করতে পারে। প্রাথমিকভাবে ছয়টির মধ্যে চারটি স্কিম প্রগতি, সুরক্ষা, সমতা ও প্রবাসী উদ্বোধন করা হয়েছে। অন্য দু’টি পরে চালু করা হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগামী দিনেও আমার প্রতি আস্থা, বিশ্বাস ও ভালোবাসা অব্যাহত রাখার জন্য আমি বাংলাদেশের জনগণকে অনুরোধ করছি।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একমাত্র লক্ষ্য ছিল দেশবাসীকে একটি উন্নত জীবন উপহার দেওয়া, যার জন্য তিনি তাঁর সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছেন।’

সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা শোকের মাসে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করেছি। জনগণকে একটি সুন্দর ও উন্নত জীবন দেওয়ার আমাদের প্রচেষ্টা দেখে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বঙ্গমাতার আত্মা শান্তি পাবে।’

প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেক দেশবাসীর জীবনকে অর্থবহ করার লক্ষ্যে তাঁর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত কাজগুলো সম্পন্ন করতে জনগণের কাছে দোয়া চান। দেশের প্রতিটি মানুষকে আরও ভালো ও উন্নত জীবন দিতে ব্যর্থ হলে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া দেশের স্বাধীনতা বৃথা যাবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা দেশের স্বাধীনতাকে ব্যর্থ হতে দেব না, এটি ব্যর্থ হবে না এবং এটি ব্যর্থ হয়নি। তাঁর (বঙ্গবন্ধুর) আদর্শ অনুসরণ করে আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি।’ সূত্র : বাসস

বাসচাপায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নিহত

জাতীয়, 5 September 2023, 604 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় বাসচাপায়কালা মিয়া (৫০) নামে এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।

আজ ৫ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের চৌরাস্তা-সোনাপুর ফোরলেন সড়কের শেয়ার বাড়ির সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত কালা মিয়া উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব একলাশপুর গ্রামের বেচু মিয়ার ছেলে।

স্থানীয়রা জানায়, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কালা মিয়া ভ্যানে করে স্থানীয় বাজারগুলোতে পেঁয়াজ, রসুন বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। মঙ্গলবার বিকেলে তিনি উপজেলার চৌমুহনী বাজার থেকে ভ্যানে করে পেঁয়াজ, রসুন নিয়ে নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীর দিকে যাচ্ছিলেন। পথে একলাশপুর ইউনিয়নের চৌরাস্তা-সোনাপুর ফোরলেন সড়কের শেয়ার বাড়ির সামনে পৌঁছালে ফেনীগামী সুগন্ধা পরিবহনের একটি বাস তাকে চাপা দেয়। এতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। খবর পেয়ে বেগমগঞ্জ থানা পুলিশ এবং হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক (তদন্ত) ফরিদুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বাসটি এখনো আটক করা যায়নি। তবে চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানার পুলিশ মরদেহের সুরতহাল করেছে। বিষয়টি চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশের আওতাভুক্ত। এ বিষয়ে তারা আইনগত ব্যবস্থা নেবে।

জাপানি অর্থায়নে পদ্মাপারে নির্মিত হবে শেখ হাসিনা আর্ন্তজাতিক স্টেডিয়াম

জাতীয়, 19 October 2023, 546 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
অবশেষে জাপানের অর্থ সহায়তায় নির্মিত হতে যাচ্ছে মানিকগঞ্জের শিবালয়ের পাটুরিয়ায় পদ্মাপারের প্রস্তাবিত শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম।

সেই সঙ্গে উপজেলায় প্রায় ৪৬২ একর জমিতে প্রস্তাবিত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন শেষে দুই হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন জাপানের ৩০ বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্র ও প্রতিনিধি দলের প্রধান সুতোমো সাসাগাওয়া।

গতকাল বুধবার বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জাপানের বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা শিবালয় উপজেলার বোয়াল ও পদ্মাপার পাটুরিয়া এলাকা পরিদর্শন করেন।

বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান জাপানের ফুটস্টুল কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালক হায়াসি বলেন, জাপান ও বাংলাদেশ সুন্দর সম্পর্কের এক বন্ধন। আমরা এখানে বিনিয়োগ করতে চাই।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে জানা গেছে, প্রায় এক হাজার কোটি টাকা দিয়ে স্টেডিয়ামটি তৈরি করে বাংলাদেশকে উপহার দিতে চায় প্রতিনিধি দল।

এ সময় বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাপানি প্রবাসী নেওয়াজ শরীফ জানান, শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামটি নির্মাণ করে বাংলাদেশকে উপহার দিতে চায় তারা। শুধু স্টেডিয়ামের জন্য প্রায় এক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। আমরা চাই, মানিকগঞ্জে অর্থনৈতিক উন্নয়ন জোনে বিনিয়োগ করতে। পাশাপাশি টুরিজম সেক্টরে বিনিয়োগ করতে। এর আগেও তারা দুইবার এসে ঘুরে দেখেছেন স্থান দুটি।

পরিদর্শন শেষে জাপানের বাংলাদেশি প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের অন্যতম শরিফ নেওয়াজ সাংবাদিকদের জানান, আগামী অর্থবছরে শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জাপান সরকারের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকারের সঙ্গে জাপানি বিনিয়োগকারীরা সংহতি প্রকাশ করেছে। প্রস্তাবিত এ স্টেডিয়ামের নির্মাণ কাজে শরিক হওয়ায় জাপানিরা গর্ববোধ করবেন।

শিবালয় উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী অফিসার মো. জাহিদুর রহমান বলেন, ৪৬২ একর জমিতে অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে তাদের। তাতে তারা আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

স্থানীয় এমপি নাঈমুর রহমান দুর্জয় বলেন, জাপানের ৩০টি প্রতিষ্ঠান এখানে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তারা স্টেডিয়াম ও অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য বিনিয়োগ করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন জাপান সফর করেন, তখন তারা শিবালয়ের এই দুইটি স্থানে বিনিয়োগের কথা জানান। সেই অনুসারে তারা জায়গা পরিদর্শন করেছেন। বর্তমান সরকার মানিকগঞ্জের শিবালয়ের বোয়ালীতে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও পদ্মাপারে আন্তর্জাতিকমানের স্টেডিয়াম করার ঘোষণা দিয়েছে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- সংসদ সদস্য নাঈমুর রহমান দুর্জয়, প্রতিনিধি দলের প্রধান সুতোমো সাসাগাওয়া, হায়শি নবুয়া, জাপানের বাংলাদেশি প্রবাসী শরিফ নেওয়াজ, শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আনিসুর রহমান প্রমুখ।

‘আমার লাশটা আপনারা বাড়িতে স্বজনদের কাছে পৌঁছে দেবেন’

জাতীয়, 22 July 2023, 687 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
২১ জুলাই শুক্রবার একাদশ দিনের মতো আপনারা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। শিক্ষকদের ন্যায়সঙ্গত দাবি আদায় করতে যেয়ে জীবন দিতে প্রস্তুত রয়েছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে আমি আপনাদের পাশে রয়েছি। প্রয়োজনে দাবি আদায় করতে গিয়ে রক্ত দেব, জীবন দেব।

আন্দোলন করতে যেয়ে মারা গেলে আপনারা আমার লাশটা বাড়ির স্বজনদের কাছে পৌঁছে দেবেন। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) এর সভাপতি অধ্যক্ষ মো. বজলুর রহমান মিয়া এসব কথা বলেন।
সাড়ে পাঁচ লক্ষাধিক শিক্ষক-কর্মচারীর দাবি আদায়ে টানা ১১ দিন ধরে জাতীয় প্রেস ক্লাব এলাকা ‘শিক্ষা জাতীয়করণ চাই’ মিছিলে স্লোগানে মুখরিত। এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের এক দফা দাবিতে তাদের এই আন্দোলন।

সারা দেশ থেকে আসা হাজার হাজার শিক্ষক-কর্মচারী অনেকটা মানবেতরভাবে এখানে রাতদিন অবস্থান করছেন। রোদে পুড়ে ও বৃষ্টিতে ভিজে খেয়ে না খেয়ে জাতির ভবিষ্যৎ গড়ার কারিগররা দাবি আদায়ের জন্য রাজপথকে বেছে নিয়েছেন।

আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ বলেন, গত ১১ জুলাই থেকে তাদের এই কর্মসূচি চলছে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তালা ঝোলানোর কর্মসূচি চলছে ১৬ জুলাই থেকে।

আন্দোলনের সপ্তম ও নবম দিনে তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে আলোচনার ডাক পেয়েছেন। এর মধ্যে ১৭ জুলাই মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এবং ১৯ জুলাই শিক্ষামন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু এসব বৈঠক থেকে তারা দাবি পূরণে কার্যকর কোনো আশ্বাস পাননি। তাই তারা এখন প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চান। তারা মনে করেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পাঁচ মিনিট কথা বললেই তাদের দাবি আদায় হয়ে যাবে।

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. বজলুর রহমান মিয়া বলেন, আমরা আন্দোলনে অব্যাহত রয়েছি। শেষ পর্যন্ত যদি আমাদের হতাশ করা হয় তাহলে আমরণ অনশনে যাওয়া ছাড়া আর কোনো পথ খোলা থাকবে না।’

শুক্রবার বিকেলে সমাবেশে বক্তৃতা শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের এক প্রশ্নের জবাবে বিটিএ’র সভাপতি অধ্যক্ষ মো. বজলুর রহমান মিয়া বলেন, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির ওপর শিক্ষক সমাজের কোনোদিনই আস্থা ছিল না। তিনি শিক্ষকদের মন্ত্রী নন। এ কারণেই এমন কথা বলতে পেরেছেন। শিক্ষকরা সাড়ে চার বছরে এই প্রথম শিক্ষামন্ত্রীর দেখা পেয়েছেন। তিনি শিক্ষকদের নিয়ে তাদের দাবির বিষয়ে বৈঠক করেছেন। কমিটি গঠনের কথাও বলেছেন। অথচ কমিটিতে শিক্ষক প্রতিনিধি রাখার আগ্রহ নেই। আসলে তিনি শিক্ষকদের কষ্ট বোঝেন না। তাই শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে শিক্ষকরাও সন্তুষ্ট হতে পারেনি। কোনো বাছবিচার ছাড়াই বলে দিলেন, নির্বাচনের আগে জাতীয়করণ সম্ভব নয়। এমনকি এও বলেছেন, কিসের ভিত্তিতে জাতীয়করণ করা হবে, সেটা পর্যালোচনা করতে হবে। আমাদের সাফ কথা, ৬ শ স্কুল-কলেজ এই সরকার যার ভিত্তিতে জাতীয়করণ করেছে, সেটিই হবে এমপিওভুক্ত সাড়ে ৯ হাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের মানদণ্ড।

সমাবেশস্থলে বক্তৃতা শেষে শুক্রবার বিকেলে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ বলেন, চাকরিতে যোগদান থেকে শুরু করে অবসর জীবন পর্যন্ত পদে পদে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন তারা। একজন এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক শিক্ষক চাকরির শুরুতে ১২ হাজার ৫০০ টাকা বেতন পান। কিন্তু সরকারি স্কুলে দেওয়া হয় ১৬ হাজার। তারা মূল বেতনের শতভাগ উৎসব-ভাতা (ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহায়) বা বোনাস পেলেও বেসরকারিতে দেওয়া হয় মাত্র ২৫ শতাংশ। অথচ বর্তমানে বাংলাদেশে সব চাকরিজীবী এমনকি এনজিও কর্মীদেরও শতভাগ উৎসব-ভাতা দেওয়া হয়। চিকিৎসা ভাতা এক মাসে ৫০০ টাকা পান তারা। যেখানে একজন ডাক্তারের ভিজিট সর্বনিম্ন ৬০০, ৮০০ বা ১০০০ টাকা, সেখানে একটি পরিবারকে ৫০০ টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু সরকারি শিক্ষকদের দেওয়া হয় দেড় হাজার। আবার বাড়িভাড়া বাবদ এক মাসে এক হাজার টাকা পান। কিন্তু সরকারি শিক্ষকদের মূল বেতনের ৪৫-৫০ শতাংশ দেওয়া হয়।

সমাবেশে শিক্ষক নেতারা বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা আরো অনেক ধরনের বৈষম্যের মধ্যে আছেন। তাদের কোনো বদলি নেই। অনেকে পরিবার এবং বাবা-মা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বহু দূরে চাকরি করছেন বছরের পর বছর। কিন্তু বদলি হয়ে নিজ এলাকায় যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এককালীন অবসর-ভাতা দেওয়ার জন্য শিক্ষকদের কাছ থেকে চাকরি জীবনে অবসর খাতে ৬ শতাংশ ও কল্যাণ খাতে ৪ শতাংশ মিলিয়ে মোট ১০ শতাংশ বেতন থেকে কেটে রাখা হয়। অথচ অবসরে গেলে এককালীন কিছু টাকা পেতে ৪-৫ বছর লেগে যায়। এই টাকা দেওয়া ছাড়া আর কোনো বেতন-ভাতা দেওয়া হয় না। অনেক শিক্ষক অবসরে যাওয়ার পর সময়মতো অবসরের টাকা না পেয়ে টাকার অভাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করাতে পারেন না।

অবসরে গিয়ে এসব শিক্ষকরা মানবেতর জীবনযাপন করেন। অনেকে পেনশনের টাকা ভোগ না করেই মারা যান।

শিক্ষকরা আরো জানান, এসব সমস্যা সমাধানের জন্য ডিসিদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন সময় আন্দোলন করা হয়েছে। কিন্তু সরকার বা ঊর্ধ্বতন কোনো কর্তৃপক্ষ শিক্ষকদের এসব কষ্ট বা দুর্দশার কথা আমলে নেয়নি। তাই এখন লাখ লাখ শিক্ষক বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে প্রেস ক্লাবে জাতীয়করণের দাবিতে অবস্থান করছে। এখন একটাই দাবি জাতীয়করণ। জাতীয়করণ করলে শিক্ষাব্যবস্থায় সরকারি-বেসরকারি কোনো বৈষম্য আর থাকবে না।