চলারপথে রিপোর্ট:
বিস্তির্ণ ফসলের মাঠ চারপাশে। জমিতে যাওয়ার মেঠো পথ মাঝখান দিয়ে। পথের এক প্রান্তে গড়ে উঠেছে ছোট্ট বসতি। কৃষক ও কৃষি শ্রমিকরা এ পথ ধরে জমিতে যায়। বসতির লোকজনও এ পথ দিয়ে যাতায়াত করে।
পথের এক পাশে বড় একটি একটি পুকুর। পুকরের চারপাড়ে রয়েছে সহস্রাধিক কলা গাছের বাগান। গাছে গাছে ঝুলছে কলার ছড়া। কলাপাতার ফাঁক গলে উঁকি দিচ্ছে কলার মোচা। হাওয়ায় দুলছে কচি সবুজ কলাপাতা। এক অপরূপ দৃশ্য নজর কাড়ছে কৃষক, শ্রমিক, পথচারিদের। চলার পথে একটু দাঁড়িয়ে চোখ বুলায় কলাবাগানের দিকে। মাঝে মধ্যে স্থানীয় তরুন-যুবারাও আসে কলাবাগান দেখতে।
আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের ছোট কুড়িপাইকা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবেদার (অব.) জাবেদ ইকবাল খন্দকার ছোট কুড়িপাইকা ফসলি মাঠে বাগানটি করেছেন। ইতোমধ্যে শতাধিক গাছে কলার ছড়া এসেছে। কয়েক ছড়া কলা নিজেরা খেয়েছেন। পাইকাররা এসে বাগান দেখে দরদাম করছেন। ফলন ভালো হওয়ায় তিনি উদ্যোক্তা খুশি। দুই লক্ষাধিক টাকার কলা বিক্রি হবে বলে আশা করছেন তিনি। বীর মুক্তিযোদ্ধা জাবেদ ইকবাল খন্দকারের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ১ বছর আগে সাড়ে তিন বিঘা অনাবাদি জমিতে পুকুর খনন করেন। পুকুরের চারপাড়ে সবরি জাতের ৪’শ কলা রোপন করেন। সাথে কিছু সাগর ও আনাজি কলা। একটি চারা থেকে ৩/৪টি গাছ হয়েছে। বর্তমানে বাগানে প্রায় ১ হাজার ৩’শ কলা গাছ আছে। প্রায় দেড়শ গাছে কলা এসেছে। আরও আসছে।
কলা গাছের বাগান করার পরিকল্পনার বিষয়ে প্রবীন বীর মুক্তিযোদ্ধা জাবেদ ইকবাল খন্দকার আরও বলেন, আমি জমিতে এসে দেখি কৃষক-শ্রমিকরা রোদের মধ্যে জমিতে কাজ করে। রোদে বসে খাবার খায়। শ্রমিকরা প্রায়ই বলতো এখানে যদি গাছ থাকতো তাহলে তাদের সুবিধা হতো।
এজন্য আমি পুকুর খনন করে পুকুরের চার পাড়ে কলা গাছ রোপন করেছি। ১২টি কাঁঠাল গাছ লাগিয়েছি। শ্রমিকদের বলেছি বাগানে বসে খাবার খাওয়া এবং বিশ্রাম করার জন্য। অনেক সময় ছেলে মেয়েরা এখানে ঘুরতে আসে। বাগান দেখে আনন্দ পায়।
তিনি আরও বলেন, প্রায় ১৩ হাজার টাকার কলার চারা রোপন করেছেন। সবকিছু মিলিয়ে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। পুকুরে কাতল, রুইসহ বিভিন্ন জাতের মাছ চাষ করছেন। আশা করছেন দুই লক্ষাধিক টাকার কলা বিক্রি করতে পারবেন। শ্রমিক নিয়ে তিনি নিজেই বাগানোর দেখাশুনা করেন।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কলা গাছে ছোট বড় কলার ছড়া ঝুলছে। পাতার ফাঁক গলে বেরিয়ে আসছে কলার মোচা। পুকুরে মাঝে মাঝে টুপ-টাপ শব্দ করে করে জানান দিচ্ছে মাছেরা আছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা জাবেদ ইকবাল খন্দকারের সৌদি আরব প্রবাসী পুত্র সুমন খন্দকার বলেন। বাবা সব সময় কৃষি কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। এতে তিনি আনন্দ পান। আমরা বিদেশ থেকে খোঁজ খবর রাখি। যখন যা প্রয়োজন হয় সহযোগিতা করি। বাগানটি দেখে খুব ভালো লাগছে।
আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানিয়া তাবাস্সুম বলেন, ভালোভাবে পরিচর্যা করলে সবগুলো গাছেই কলা আসবে। সবরি কলার ফলন ভালো। রোগ-পোকার আক্রমন কম হয়। অন্যান্য কলার তুলনায় সবরি কলার পুষ্টিগুণ বেশি। আইরনের চাহিদা পূরণ করে।
সবরি কলার বাজার চাহিদাও বেশি। কৃষক আসাদের সাথে যোগাযোগ করতে আমরা তাকে পরামর্শ দিব। আমাদের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাকে বলবো বাগানটি দেখে আসতে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এলো। আজ ১৫ এপ্রিল সোমবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের দুটি অংশ পৃথক স্থানে পরামর্শ সভা করেছে। আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে প্রথম সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী।
সভায় সম্ভাব্য কয়েকজন প্রার্থীসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। অপরটি সভাটি হয় উপজেলা কমপ্লেক্সের ভেতরে জেলা পরিষদের ডাক বাংলোতে। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন আখাউড়া পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ সভাপতি মো. নুরুল হক ভূইয়া। সভায় আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন প্রবীণ নেতাসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মূলত জেলা পরিষদের সদস্য মো. সাইফুল ইসলামের আহবানে সভাটি হয়। দুটি সভাতেই আগামী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়। সন্ধ্যার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পৃথক দুটি সভার ছবি ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষের মাঝে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
আগামী ২১ মে ২য় ধাপে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ২১ এপ্রিল অনলাইনে মনোনয়ন দাখিলের শেষ তারিখ। ২১ মে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের আর মাত্র ৩৫ দিন বাকী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে এক ডজনের অধিক নেতাকর্মী সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। এসব প্রার্থী থেকে প্রতিটি পদে একজন করে প্রার্থী দেওয়ার লক্ষ্যে পরামর্শ সভা করে উপজেলা আওয়ামী লীগ। সভায় সকল প্রার্থীকে ডাকা হয়। তবে কয়েকজন প্রার্থী ছাড়া বেশির ভাগ প্রার্থী সভায় উপস্থিত ছিলেন। প্রার্থী ও দলীয় নেতারা প্রতিটি পদে একজন করে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে একমত হয়। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সাথে পরামর্শ করার সিদ্ধান্ত হয়। মন্ত্রীর দিক নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্তর হবে। এসময় দলীয় কার্যালয়ের সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল, উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও চেয়ার প্রার্থী আবুল কাশেম ভূইয়া, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যান প্রার্থী এড. আব্দুল্লাহ ভূইয়া বাদল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ বোরহান উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগ যুগ্ম আহবায়ক মনির হোসেন বাবুল, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন সফিক আলেয়া, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাব উদ্দিন বেগ শাপলু, পৌর যুবলীগের সভাপতি মনির খান। সভায় উপস্থিত একাধিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অপরদিকে জেলা পরিষদের ডাক বাংলোতে অনুষ্ঠিত আরেকটি অংশের সভায় উপস্থিত ছিলেন- জেলা পরিষদ সদস্য ও যুবলীগ নেতা মো. সাইফুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ বোরহান উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ মো. জয়নাল আবেদীন, মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাচনের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. মনির হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিম হেলাল, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি মো. নূরুজ্জামান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ কামাল। সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে একজন প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
আওয়ামী লীগের দলীয় সভায় উপস্থিত থাকা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. আব্দুল্লাহ ভূইয়া বাদল বলেন, সভায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিটি পদে একক প্রার্থী দেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। আমরা আওয়ামী লীগ করি, আওয়ামী লীগের প্রার্থী। যেহেতু আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আমাদের অভিভাবক। তিনি যে সিদ্ধান্ত দেবেন আমরা তাই করবো।
জেলা পরিষদ সদস্য ও যুবলীগ নেতা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, যেহেতু উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক দেয়নি। সবার জন্য উন্মুক্ত। তাই আমরা একজন চেয়ারম্যান প্রার্থী দেওয়ার জন্য পরামর্শ সভা করেছি। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী বলেন, উপজেলা নির্বাচন নিয়ে প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় করেছি। প্রার্থীরা আমাদের আমাদের উপর দায়িত্ব দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রী (আইনমন্ত্রী) মহোদয়ের সাথে কথা বলবো। তিনি যে দিক নির্দেশনা দিবেন সে অনুযায়ী কাজ করবো।
উল্লেখ্য, প্রায় ২ বছর যাবত উপজেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই। এছাড়াও বেশ কয়েকটি অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে আহবায়ক কমিটি দিয়ে চলছে কয়েকটি কমিটি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার তরুণেরা দিন দিন ইউটিউব ও ফেসবুক ভিডিও ব্লগিংয়ে আগ্রহী হয়ে উঠছে। আখাউড়ার বেশ কয়েকজন ছাত্র, যুবক ইউটিউব ও ফেসবুক পেইজ খুলে কৃষি, মৎস্য, গরুর খামার, ফুল-ফল সবজি, দর্শনীয় স্থান, সাফল্য-সম্ভাবনা, দূর্ভোগ, বিনোদনসহ বিভিন্ন বিষয়ে ব্লগিং করছে।
সাবলিল উপস্থাপনা, ব্যতিক্রম কনটেন্টের কারণে ভিডিওগুলো প্রশংসা পাচ্ছে সবার। এদের মধ্যে কয়েকজন হলো আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের রহিমপুর গ্রামের মোঃ ইব্রাহীম ভূঁইয়া লিটন, আব্দুল্লাহপুর গ্রামের পারভেজ, হীরাপুর গ্রামের শরীফুল ইসলাম আবির, পৌরশহরের নারায়ণপুরের মোঃ কাইয়ুম, খড়মপুরের মেহেদী রহমান মোল্লা ও দূর্গাপুরের মোঃ ফরহাদ আহমেদ। তাদের প্রত্যেকের শুরুটা শখের বশে। কয়েকজন ইউটিউব ও ফেসবুক থেকে অর্থ উপার্জন করছে। স্বপ্ন দেখছে আরো ভালো কিছু করার।
‘কৃষকের কথা’র নামক ইউটিউব চ্যানেল থেকে ব্লগিং করেন মোঃ ইব্রাহীম ভূঁইয়া লিটন। তিনি বলেন, গ্যাস সিলিন্ডার ও গরুর খাদ্যের ব্যবসা করতাম। নিজেদের মাছের চাষ থাকায় দোকানে রাখতাম মাছের খাদ্যও। শখের ফেসবুকে বশে পুকুরের মাছ চাষ, হাঁস-মুরগি পালন, জমির চাষাবাদের ছোট ছোট ভিডিও করে ফেসবুকে পোষ্ট করতাম। বন্ধু-বান্ধবের উৎসাহে ২০১৯ সালে কৃষকের কথা ইউটিউব চ্যানেল এবং ফেসবুক পেইজ খুলে ভিডিও দেওয়া শুরু করি। প্রায় ৩ বছর পর মনিটাইজেশন পেয়ে ইনকাম পাচ্ছি। এখন ভালো ইনকাম পাচ্ছি। বর্তমানে ইউটিউবে ‘কৃষকের কথা’র ফলোয়ার প্রায় ৯ হাজার। ফেসবুক পেইজের ফলোয়ারের সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে জানালেন মোঃ ইব্রাহীম ভূঁইয়া লিটন।
লিটনের সরল স্বীকারোক্তি শুধু টাকা ইনকামের উদ্দেশ্য নয়। আমাদের দেশ কৃষি নির্ভর দেশ। কৃষি ও কৃষককে উৎসাহিত করে আনন্দ পাই। চেষ্টা করি বিষয় ভিত্তিক তথ্য এবং পরামর্শ তুলে ধরার জন্য।এ পর্যন্ত প্রায় ৩০০ ভিডিও প্রতিবেদন করেছি। একটি ভিডিও সর্বোচ্চ ৪ লাখ ভিউ হয়েছে বলে জানান তিনি।
শুরুতে তাকে কেউ কেউ নিরুৎসাহিত করেছে। তবে সাব্বির ভূঁইয়া নামে এক প্রবাসী বড় ভাই এবং এক আন্টি (খালাম্মা) তাকে উৎসাহ জুগিয়েছেন বলে জানান লিটন।
প্রাণের আখাউড়া টিভি নামে ফেসবুক পেইজে শিক্ষামূলক তথ্যসহ বিভিন্ন সরজমিনে প্রতিবেদন করেন কলেজ ছাত্র মেহেদী রহমান মোল্লা। তার পেইজের ভিডিও ভালো ভিউ হয় বলে জানান তিনি। শিক্ষামূলক ও দুর্ভোগ-সমস্যা তুলে ধরেন মোঃ ফরহাদ আহমেদ। তিনি বলেন, দুই বছর ধরে ফেসবুক পেইজ খুলে ভিডিও দিচ্ছি। ভালো সাড়া পাচ্ছি। তিনিও মোটামুটি ইনকাম পাচ্ছেন বলে জানান।
পারভেজ ব্লগে ঢুকে দেখা যায়, কৃষির বিভিন্ন রকম ভিডিও। এছাড়াও রয়েছে দর্শনীয় স্থান ও হাট বাজারে ভিডিও। তার ফেসবুক পেইজের ফলোয়ার প্রায় ২০ হাজার।
ইউটিউবার মোঃ কাইয়ুম নামে বলেন, ব্যবসার পাশাপাশি ব্লগিং করি। আমার ফেসবুক পেইজে ফলোয়ার ৭ হাজার। ব্লগ দেখে সবাই যখন ভালো বলে তখন খুব আনন্দ লাগে।
ধারাভাষ্যকার সিকান্দার নামে একটি ফেসবুক পেইজ থেকে স্থানীয় ক্রিকেট খেলার সরাসরি প্রচার এবং ধারাভাষ্য দেন আল আনিম সেকান্দার।
এ ব্যাপারে আখাউড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহাদাত হোসেন লিটন বলেন, তথ্য প্রযুক্তিকে সঠিক ব্যবহার করে ছাত্র-যুবারা ভালো কিছু করার চেষ্টা করছে এটা খুবই ইতিবাচক। তাদের প্রতিবেদনে মানুষ অনেক কিছু দেখতে ও জানতে পারছে। সঠিকভাবে ডিজিটাল প্লাট ফরম ব্যবহার করে অর্থ উপার্জনের সুযোগ রয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
দুই বছরের হাবিবকে বিছানায় রেখে মা ঘরের বাইরে যান। এ সময় জানালা ধরে খেলা করছিল সে। এরই মাঝে জানালার ছিটকিনি খুলে আসে তার হাতে। অবুঝ শিশু হাবিব সেই ছিটকিনি মুখে ঢুকিয়ে গিলে ফেলে। এরপরই শুরু হয় পেটব্যথা ও যন্ত্রণা। পরিবারও কিছু বুঝে উঠতে পারছিল না। অবশেষে দুইদিন অবজারভেশনে রেখে শিশু হাবিবের খাদ্যনালী থেকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বের করা হলো জানালার সেই ছিটকিনি। বর্তমানে শঙ্কামুক্ত হাবিব।
হাবিব ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার শান্তিনগর গ্রামের জুয়েল মিয়ার ছেলে। জুয়েল মিয়ার ৩ ছেলে সন্তানের মধ্যে হাবিব কনিষ্ঠ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর বর্তমানে হাবিব সেখানেই চিকিৎসাধীন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হাবিবের মা পাখি বেগম বলেন, আমার ছেলেটি অনেক চঞ্চল। ২ আগস্ট বুধবার সকালে তাকে আমি নাস্তা করিয়ে বসিয়ে রেখে একটু ঘরের বাইরে যাই। এসে দেখি তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। তার মুখ খুলে প্রথমে কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। পরে গলায় সাদা ধরনের কিছু একটা দেখা যায় এবং মুখ দিয়ে রক্ত ঝরছিল। এই অবস্থায় তাকে দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে হাবিবের এক্স-রে করে দেখে গলায় কিছু একটা আছে। সেখান থেকে দ্রুত বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসি। আসার পর এক্স-রে করে চিকিৎসকরা দেখেন পেটের ভেতর একটা ছিটকিনি। চিকিৎসকরা তাকে দুইদিন অবজারভেশনে রাখেন। এর দুইদিন পর শুক্রবার রাতে আমার ছেলেকে অপারেশন করে খাদ্যনালী থেকে একটি ছিটকিনি বের করেন ডা. আবু সাঈদ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও হাবিবের অস্ত্রোপচারকারী চিকিৎসক ডা. আবু সাঈদ জানান, এক্স-রে রিপোর্টে শিশুটির পেটের খাদ্যনালীতে ছিটকিনি দেখা যায়। পেটের ভেতরে খাদ্যনালী প্রায় ২০ ফুট লম্বা থাকে। অস্ত্রোপচারের সময় খাদ্যনালীর ভেতর থেকে খুঁজে বের করা হয়েছে ছিটকিনিটি।
তিনি জানান, শিশুটির খাদ্যনালী কেটে ছিটকিনিটি বের করা হয়েছে। তা কিছুদিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে। তাকে আরও দুইদিন হাসপাতালে থাকতে হবে। তবে সে এখন সম্পূর্ণ ঝুঁকিমুক্ত।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যেই আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেললাইন প্রকল্প উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর।
গতকাল শুক্রবার সকালে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ এবং আখাউড়া-লাকসাম ডুয়েলগেজ রেললাইন প্রকল্পের সর্বশেষ পরিস্থিতি পরিদর্শন করে তিনি এ কথা বলেন।
হুমায়ুন কবীর বলেন, এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মাঝে কিছু সময় বিলম্বিত হলেও এখন কিন্তু খুব দ্রুতগতিতে কাজ এগিয়ে চলছে। এরই মধ্যে প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৯০ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সব কিছু ঠিক থাকলে বাংলাদেশ-ভারতের প্রধানমন্ত্রী সেপ্টেম্বরে এ প্রকল্প উদ্বোধন করবেন।
এ সময় সচিব আখাউড়া-লাকসাম ডাবল রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের শেষ সময়ের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে জানিয়ে বলেন, চলতি বছরের জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে আখাউড়া-লাকসাম ডাবল লাইন প্রকল্পের উদ্বোধন করা হবে।
পরে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব গ্যাংকারযোগে লাকসাম রেলওয়ে জংশন স্টেশনের উদ্দেশে আখাউড়া ছেড়ে যান।
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো) শহীদুল হক, আখাউড়া-লাকসাম রেলপথ প্রকল্প পরিচালক সুবক্তগীনসহ রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
চলারপথে রিপোর্ট :
সৌদি আরবে এক সড়ক দুর্ঘটনায় জুনায়েদ মিয়া নামে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। ৬ আগস্ট রবিবার দুপুরে সৌদি আরবের দাম্মাম শহরে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি। আজ ৭ আগস্ট সোমবার সকালে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন নিহতের মামা শামীম সরকার।
নিহত জুনায়েদের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের রুটি গ্রামে। তার বাবার নাম হামিদুল ইসলাম।
নিহতের স্বজনরা জানান, বছর খানিক আগে জীবিকার তাগিদে জুনায়েদ পাড়ি জমান সৌদি আরবে। সেখানে তিনি বলদিয়া কোম্পানির গাড়ির হেলপার ছিলেন। রবিবার দুপুরে দাম্মাম শহরে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তিনি সড়কের পাশে ছিটকে পড়েন। এ সময় ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় চালক আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। জুনায়েদের মরদেহ দাম্মাম শহরের একটি হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে। জুনায়েদের আকস্মিক মৃত্যুতে তার পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এ ব্যাপারে আখাউড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি শুনেছি। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ আমাদের বিষয়টি জানায়নি। খোঁজ নিয়ে প্রবাসীর মরদেহ দেশে আনতে আমরা প্রয়োজনীয় আইনগত সহায়তা করব।