অনলাইন ডেস্ক :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে নতুন সরকার গঠন করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। নতুন সরকারসহ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী সব এমপিদের নিয়ে প্রথম সংসদ অধিবেশন বসতে যাচ্ছে ৩০ জানুয়ারি মঙ্গলবার। দ্বাদশ সংসদে নতুন এমপিদের প্রথম অধিবেশনের আগে রেওয়াজ অনুযায়ী ভাষণ দেবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
এই সংসদের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া আওয়ামী লীগ সরকারি দল ও মাত্র ১১টি আসন নিয়ে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করতে চায় জাতীয় পার্টি। তবে আসন সংখ্যা কম হলেও জাতীয় পার্টির সদস্যরা সংসদে কার্যকর বিরোধী দলের ভূমিকা পালনের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। অবশ্য পাশে থাকছে তাদের থেকে প্রায় ৬গুণ বেশি ৬২টি আসনে বিজয়ী স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা।
সংসদ সচিবালয় জানায়, ২৯ জানুয়ারি সোমবার একাদশ সংসদের মেয়াদ শেষ হয়েছে। আজ মঙ্গলবার থেকে অধিবেশনের মাধ্যমে দ্বাদশ সংসদের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ২২৩টি আসন পেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। অন্যদিকে, মাত্র ১১টি আসন নিয়ে সংসদে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করবে জাতীয় পার্টি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ৬২ জন আওয়ামী লীগের পাশেই থাকবে বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার বেলা ৩টায় ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে এই সংসদের প্রথম অধিবেশন বসবে। অধিবেশনের শুরুতে স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এরপর শোক প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে। পরে সংসদে ভাষণ দেবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। তিনি সরকারের সফলতা ও আগামীতে করণীয় বিষয়ে দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখবেন। পরে ওই ভাষণের উপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাব নিয়ে পুরো অধিবেশনে সরকার ও বিরোধী দলের সদস্যরা আলোচনা করবেন। এই অধিবেশনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পাস হতে পারে।
সংসদ সচিবালয় আরও জানায়, অধিবেশনকে সামনে রেখে সংসদ ভবন এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। প্রথম দিনে দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। সংসদ ভবন এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অধিবেশনকে কেন্দ্র করে সংসদ ভবনজুড়ে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। অধিবেশনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে সংসদ সচিবালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে চিফ হুইপ নুর-ই-আলম চৌধুরী জানান, ৩০ জানুয়ারি থেকে দ্বাদশ সংসদের মেয়াদ শুরু হচ্ছে। এই সংসদের সরকার ও বিরোধী দলের সব সদস্যকে অধিবেশনে উপস্থিত থাকতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। গত সংসদের থেকে এবার বেশি সময় অধিবেশন চলবে। প্রথমদিন ডেপুটি স্পিকারের সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হবে। সংসদে রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানাতে ইতোমধ্যে বিশেষ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এছাড়া আসন বিন্যাসের কাজ চূড়ান্ত করা হয়েছে।
একাদশ সংসদের মতো দ্বাদশ সংসদে বিরোধী দলের দায়িত্ব পালন করবেন মাত্র ১১টি আসনে বিজয়ী জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা। ইতোমধ্যে জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদের বিরোধী দলীয় নেতা, জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বিরোধী দলীয় উপনেতা ও জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্ন বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন জানান, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় দ্বাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। রাষ্ট্রপতির ভাষণ ইতোমধ্যে মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডসহ সাফল্য ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তার বক্তব্যে প্রাধান্য পাবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটের নেতা শেখ হাসিনা পঞ্চমবারের মতো সংসদ নেতার দায়িত্ব পালন করবেন। গত ১০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা। এই সংসদে আওয়ামী লীগ ২২৩টি, জাতীয় পার্টি ১১টি, ওয়ার্কার্স পার্টি একটি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) একটি, কল্যাণ পার্টি একটি এবং স্বতন্ত্র সদস্যরা ৬২টি আসন পেয়েছে। এবারই ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিরোধী দলের থেকে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যের সংখ্যা প্রায় ছয়গুণ বেশি। গত রোববার স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের সরকারি বাসভবন গণভবনে আমন্ত্রণ জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে প্রধানমন্ত্রী সংসদকে কার্যকর করতে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন। অন্যদিকে স্বতন্ত্ররা সংরক্ষিত নারী আসনের সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রীর ওপর ছেড়ে দেন।
সংসদ সচিবালয় জানায়, অধিবেশনকে সামনে রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এজন্য সংসদের টানেল ও ড্রাইভওয়েতে যেকোনো ধরনের গাড়ি রাখা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে দর্শনার্থীদের মোবাইল বাইরে রেখে প্রবেশ করতে বলা হয়েছে। এছাড়া প্রত্যেকটি মোবাইল বিশেষভাবে পরীক্ষার জন্যও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অধিবেশন কক্ষে সংসদ সদস্যদের বসার চেয়ার ঠিক আছে কি না তাও পরীক্ষা করা হয়েছে। অধিবেশন কক্ষের সব মাইক্রোফোন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। অধিবেশন চলাকালে সব লিফট ত্রুটিমুক্ত রাখতে বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে সংসদ ভবন ফুলসহ বিভিন্ন গাছ দিয়ে সাজানো হয়েছে। অধিবেশন চলাকালে অক্সিজেন সুবিধাসহ সার্বক্ষণিক একটি অ্যাম্বুলেন্স রাখতে বলা হয়েছে। সংসদ লবিতে একজন ডাক্তারসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী থাকবে। এছাড়া সংসদ অধিবেশন ও সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক সম্পর্কে অবহিত করতে সংসদ সদস্যদের জন্য ‘শর্ট ম্যাসেজ সার্ভিস’ নামে একটি সার্ভিস চালু করা হয়েছে।
সচিবালয় কর্মকর্তারা জানান, নতুন সংসদের প্রথম দিনের অধিবেশনে প্রধান বিচারপতি, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টারা, দেশ-বিদেশি কূটনীতিক, রাজনৈতিক নেতা, সরকারি কর্মকর্তা এবং ভিআইপিদের আত্মীয় স্বজনসহ পাঁচ শতাধিক অতিথি উপস্থিত থাকবেন। ইতোমধ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে সংগৃহীত তালিকা চূড়ান্ত করে আমন্ত্রণপত্র বিতরণ করা হয়েছে। আমন্ত্রণপত্র ছাড়া কোনো অতিথি ওই দিন সংসদ ভবনে প্রবেশ করতে পারবেন না।
সংসদ নেতার নির্দেশ ও স্পিকারের পরামর্শ অনুযায়ী চিফ হুইপ নুর-ই-আলম চৌধুরী আসনবিন্যাস চূড়ান্ত করেছেন। আসন বিন্যাসে একাধিকবার নির্বাচিত, রাজনৈতিক দলে অবস্থান, ভোটের ব্যবধান, জনপ্রিয়তাসহ কয়েকটি বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বারবার নির্বাচিতদের তুলনামূলক সামনের দিকে আসন দেওয়া হলেও প্রথমবার নির্বাচিত হয়েও সামনের সারিতে আসন পেয়েছেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম।
সর্বোচ্চ নয় বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার রেকর্ড
সবচেয়ে বেশি নবমবার সংসদ সদস্য হওয়ার রেকর্ড গড়েছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। আর ৮ বার সংসদ সদস্য হয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান খান, সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান। এছাড়া বর্তমান কৃষিমন্ত্রী উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ, মো. দবিরুল ইসলাম, মির্জা আজম ও বীর বাহাদুর উশৈসিং সাতবার নির্বাচিত হয়েছেন। তারা সকলেই সামনের সারিতে আসন পেয়েছেন।
অনলাইন ডেস্ক :
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার দিনাজপুরে দিনব্যাপী অবৈধ মজুদ বিরোধী অভিযান পরিচালনা করেছেন।
আজ ৯ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর পর্যন্ত দিনাজপুর সদর ও চিরিরবন্দর উপজেলায় একাধিক অটোরাইস মিলে অভিযান পরিচালনা করেন।
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সবাই মিলে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে হবে। চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে।
চাল রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। প্রয়োজনে বাজার নিয়ন্ত্রণে চাল আমদানীর নির্দেশনা রয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘অযৌক্তিকভাবে দাম বাড়ানো কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। মিলগেটে চালের দাম কমেছে, যদি খুচরা বাজারেও দাম বাড়ানো হয় তাহলে অভিযান আরো জোরদার করা হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংশোধন হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। আজ ১৩ জুলাই বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়ার সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান।
বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে কথা হয়েছে। এই আইন নিয়ে তিনি আগেও যা বলেছেন, ঠিক সেই কথাগুলো যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলকে বলেছেন।’
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আরো বলেন, তারা বলেছেন, তারা সব দেশেই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চান। গতকাল বুধবার আইন ও বিচার বিভাগের সচিব ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলকেও বলেছেন, নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ করার জন্য কাঠামো (আইনি কাঠামো) দেশে আছে। সেসব সহায়ক আইনের কথা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের কাছেও উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানান আইনমন্ত্রী।
গাজীপুরে হত্যাকান্ডের শিকার শ্রমিকনেতা শহীদুলের বিষয়টিও আজকের বৈঠকে আলোচনা করা হয়েছে। আইনমন্ত্রী বলেন, আগের সংস্কৃতি নেই যে বিচার হবে না। যে কোনো অপরাধের সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচার হয়।
তত্ত্বাবধায়ক বিষয়ে কোনো কথা হয়নি বলে দাবি করেন আইনমন্ত্রী।
এ বৈঠকে সময় দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ও ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস উপস্থিত ছিলেন।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বাজেট বাস্তবায়নের সক্ষমতা নিয়ে শঙ্কা দূরে সরিয়ে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে এগিয়ে যাওয়ার জন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট যথোপপযুক্ত হয়েছে বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘(বাজেট সম্পর্কে) কে কি বলছে তা নিয়ে আমাদের মাথা ঘামানোর দরকার নেই। আমরা একটি উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করার জন্য আমরা একটি উপযুক্ত বাজেট ঘোষণা করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী আজ ৩ জুন শনিবার বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্প এলাকায় ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবন (ঢাকা জেলা ও ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের কার্যালয়) উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
ঢাকা জেলা ও ঢাকা মহানগরের হাজার হাজার উৎসাহী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী তাদের দলীয় প্রধানকে দেখতে সমবেত হওয়ায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি একটি মহাসমাবেশে পরিণত হয়।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের মানুষ আমাদের পক্ষে আছে। তাই, আমরা বাজেট বাস্তবায়ন করতে পারব, ইনশাআল্লাহ।
প্রায় ৭.৬২ লাখ কোটি টাকার এত বিশাল বাজেটের বাস্তবায়নে যারা শঙ্কিত, তাদের কড়া সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর বাজেট পাশের আগে কেউ কেউ বলেন, আমরা বাজেট বাস্তবায়ন করতে পারব না। কিন্তু, আমরা প্রতিটি মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন অনুযায়ী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান এমপি, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, এমপি, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু এমপি এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ড. মো. এনামুর রহমান, এমপি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমেদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম। সূত্র : বাসস
চলারপথে রিপোর্ট :
প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবাইকে কাজ করে যেতে হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
আজ ২৪ নভেম্বর শুক্রবার রাজধানীর মিরপুরের নিজস্ব ক্যাম্পাসে মিরপুর অ্যাগ্রিকালচারাল ওয়ার্কশপ অ্যান্ড ট্রেনিং স্কুলের (মটস) সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
এসময় স্পিকার মটসের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে প্রকাশিত স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করেন।
শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা কাজ করছি। বাংলাদেশ আজ শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যাপক অগ্রসর হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তিকে আলিঙ্গন করে দেশের মানুষ এগিয়ে যাচ্ছে। প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার করতে হবে। বর্তমান ও আগামী প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তরুণ ও যুব সমাজের পেছনে তাকানোর আর সময় নেই।
তিনি বলেন, মিরপুর অ্যাগ্রিকালচারাল ওয়ার্কশপ অ্যান্ড ট্রেনিং স্কুলের ৫০ বছরের পথচলায় প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রে পুষ্পিত, পল্লবিত ও বিকশিত হয়ে প্রায় ৪৮ হাজার শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে দেশে-বিদেশে প্রতিষ্ঠিত করেছে, যা অত্যন্ত গৌরবের বিষয়। মহান মুক্তিযুদ্ধের পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে কারিতাস বাংলাদেশ অবদান রেখেছে। যার অন্যতম প্রমাণ হচ্ছে মটস, যা ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। যারা এখান থেকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স সম্পন্ন করছে তাদের শতকরা ৯৫ শতাংশই সুপ্রতিষ্ঠিত। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দেশে দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে মটস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।
স্পিকার বলেন, বিশ্বায়নের যুগে বিভিন্ন সুযোগকে তরুণ সমাজের কাজে লাগাতে হবে। বর্তমান সরকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে তৃণমূল পর্যায়ে তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। শিক্ষা ব্যবস্থায় কারিগরি শিক্ষাকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। গ্রামে-উপজেলায় আজ ফ্রিল্যান্সার তৈরি হয়েছে, যারা বাড়িতে বসে কম্পিউটারে কাজ করে উপার্জন করছে। এভাবেই সবাইকে সঙ্গে নিয়ে একসঙ্গে স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে কাজ করে যেতে হবে।
সেবাস্টিয়ান রোজারিওর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার এমপি, জুয়েল আরেং এমপি, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আলী আকবর খান, পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. নমিতা হালদার, কারিতাস বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ও খুলনা ডায়োসিসের বিশপ জেমস রমেন বৈরাগী, ঢাকা আর্চ ডায়োসিসের অবসরপ্রাপ্ত আর্চবিশপ কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডিরোজারিও, আখিলা ডিরোজারিও, আর্চবিশপ বিজয় এন ডিক্রুজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কারিতাস বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ও মটসের পরিচালক জেমস গোমেজ ।
চলারপথে রিপোর্ট :
বিদ্যুৎ খাতকে অস্থিতিশীল করার অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) এস কে সাকিল আহমেদকে (৩১) গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ঘাটুরা এলাকার ভাড়া বাসা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে সেনাবাহিনীর একটি দল।
গ্রেফতার এস কে সাকিল আহমেদ (৩১) খুলনা সদর উপজেলার আরাজী ভবানীপুরের পাইকগাছা গ্রামের শায়েক তফিল উদ্দিনের ছেলে। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পল্লী বিদ্যুতের এজিএম (আইটি) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ১৭ বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোজাফফর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বিদ্যুৎ খাতকে অস্থিতিশীল করার অভিযোগে রাজধানীর খিলক্ষেত থানার এক মামলায় ওই কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছেন সেনাসদস্যরা। তাঁরা বিষয়টি খিলক্ষেত থানা-পুলিশকে জানিয়েছেন। তাঁকে ওই থানায় হস্তান্তর করা হবে।
পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর আরইবিতে যোগদান করেন সাকিল আহমেদ। ২০২১ সালের ৭ নভেম্বর তাঁকে ভোলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যালয়ে পদায়ন করা হয়। চলতি বছরের গত ১৫ জুলাই বদলি হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কার্যালয়ে আসেন তিনি।
সাকিলের স্ত্রী মেহজাবিন রহমান বলেন, চলমান দাবি আদায়ের জন্য ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি থেকে চেয়ারম্যানের কাছে ই-মেইলে একটি স্মারকলিপি পাঠানোর কারণে তাঁর স্বামীকে গত ২৯ এপ্রিল সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ১৪ জুলাই সেই আদেশ বাতিল করা হয়। এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর স্বামীকে চাকরিচ্যুত করা হয়। আজ শুক্রবার সকালে সেনাসদস্যরা এসে তাঁকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যান। এটা কী ন্যায়বিচার হলো, প্রশ্ন তোলেন তিনি।
আরইবির আইন শাখার পরিচালক (প্রশাসন) মো. আরশাদ হোসেন বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে বৃহস্পতিবার রাতে খিলক্ষেত থানায় একটি মামলায় করেন। মামলায় সাকিলসহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চার কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়। অন্য আসামিরা হলেন লক্ষ্মীপুরের ভবানীগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক আলী হাসান মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম (8৮), নারায়ণগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর এজিএম প্রকৌশলী মো. জাফর সাদিক খান (৩২) ও নরসিংদীর বেলাব উপ-আঞ্চলিক কার্যালয়ের লাইন টেকনিশিয়ান মো. মইনুল হাসান (৪৪)।
মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহারে উল্লেখ করা হয়, আরইবির অধীন ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সারা দেশের গ্রামাঞ্চলে ১৪ কোটি মানুষকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। গত ২৮ জানুয়ারি বিভিন্ন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারী কেন্দ্রীয় কমিটি পরিচয়ে পরস্পর যোগসাজশে জরুরি সেবা বিদ্যুৎ খাতকে অস্থিতিশীল করার জন্য দেশি ও আন্তর্জাতিক চক্রের সঙ্গে জড়িত হয়ে এবং বিগত সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও প্রভাবশালীদের মদদে অযৌক্তিক দাবিদাওয়ার যড়যন্ত্র করে বিদ্যুতায়ন কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করছে। সমিতির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে জোর করে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। গত ৮ আগস্ট বেলা ১১টায় মামলার চার আসামির নেতৃত্বে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্ররোচনায় সমিতির প্রায় চার হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী আরইবি সদর দপ্তর ঘেরাও করেন। তাঁরা আগের জারি করা বদলি আদেশ স্থগিতসহ নানা দাবিতে হুমকি, আন্দোলন ও প্রাণনাশের ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। গত ২১ সেপ্টেম্বর আবার ঘেরাও কর্মসূচির হুমকির দেওয়া হয়। ১ অক্টোবর আরইবি ব্লকেড কর্মসূচি ঘোষণা করেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার তাঁরা নতুন করে আন্দোলন শুরু করেন এবং বেলা ১১টার দিকে তাঁদের কর্মস্থলগুলোতে বিদ্যুৎ সংযোগ শাটডাউন করে গ্রাহকদের হয়রানি করেন। এতে জনমনে ক্ষোভ ও অস্বস্তি দেখা দেয়। এর মাধ্যমে তাঁরা বিদ্যুৎ খাতে অচল অবস্থা তৈরি করে জনমনে ঘৃণা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করেছেন। তাঁরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে চরমভাবে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলার চেষ্টা চলাচ্ছেন, যা রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল।