ইউনূসকে অহেতুক গ্রেফতার কিংবা হয়রানি করার ইচ্ছা সরকারের নেই: আইনমন্ত্রী

জাতীয়, 4 February 2024, 834 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
ড. ইউনূসকে অহেতুক গ্রেপ্তার কিংবা হয়রানি করার ইচ্ছে সরকারের নেই বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।

banner

আজ ৪ ফেব্রুয়ারি রবিবার সহকারী জজ ও সমপর্যায়ের বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তাদের বুনিয়াদি ও প্রশিক্ষণ কোর্স অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

আইনমন্ত্রী বলেন, ড. ইউনূসকে গ্রেফতারের কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই। তার বিরুদ্ধে এনবিআরের মামলা, শ্রম আদালতের মামলা রয়েছে। সেসব মামলার মেরিটের ওপরে বিচার হবে। তাকে অহেতুক গ্রেপ্তার কিংবা হয়রানি করার ইচ্ছে সরকারের নেই।

ড. ইউনূস ভুক্তভোগীদের সঙ্গে আপোষ করতে চাচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আপোষের প্রস্তাব দিলে সরকারের শ্রম বিভাগ বিষয়টি দেখবে। আপোষের প্রস্তাব আসেনি। আমি যেহেতু জানি না, আজকে মন্তব্য করতে চাই না।

ড. ইউনূসের আইনজীবী বিচারকার্যের আগে বিচারপতির সঙ্গে দেখা করেছেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার বিষয়টি জানা নেই।

প্রসঙ্গত, রাজধানীর বিচার, প্রশাসন ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত সহকারী জজ/সমপর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের ৪৯তম বুনিয়াদি ও প্রশিক্ষণ কোর্স ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ১ জুন পর্যন্ত চলবে।

Leave a Reply

প্রতিপক্ষের হামলায় নারী নিহত, দুইজন আটক

চলারপথে রিপোর্ট : তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় খাইরুন Read more

গাজীপুরে মামা হত্যার আসামি ভাগিনা গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : গাজীপুরে আনিসুর রহমান হত্যার মামলার আসামি ভাগিনা Read more

সদর মডেল থানায় যোগদান করেই কঠোর…

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য : আজহারুল ইসলাম সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

চলারপথে রিপোর্ট : ফ্ল্যাট বাসা থেকে শরীর মীর (৪০) নামের Read more

নাসিরনগরে বাবাকে হত্যার ঘটনায় ছেলে আটক

চলারপথে রিপোর্ট : নাসিরনগরে আলম মিয়া (৬০) নামের এক ব্যবসায়ী Read more

আখাউড়ায় খেলাফত মজলিসের প্রার্থীর মতবিনিময়

মোঃ ইসমাইল: ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের খেলাফত মজলিস মনোনীত প্রার্থী Read more

৫০ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ৫০ কেজি গাঁজা ও ১টি সিএনজি উদ্ধারসহ Read more

কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপদসীমায়, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের…

অনলাইন ডেস্ক : বর্ষার শেষপ্রহরে নেমে আসা অবিরাম বৃষ্টি ও Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার নতুন ওসি আজহারুল…

চলারপথে রিপোর্ট : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে Read more

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে…

অনলাইন ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ঐতিহাসিক Read more

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : কুমিল্লার দাউদকান্দি বারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) Read more

মেক্সিকোতে যাত্রীবাহী বাসে ট্রেনের ধাক্কায় ১০জন…

অনলাইন ডেস্ক : মেক্সিকোর আটলাকোমুলকো শহরে একটি পণ্যবাহী ট্রেন ও Read more

৬৭৫ আসামির নাম বাদ দিতে বাদীর আবেদন

জাতীয়, 27 April 2025, 250 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনায় চট্টগ্রামে মামলা হয়েছে ১৪৮টি। এসব মামলায় ঢালাও আসামি করার অভিযোগ ওঠে শুরু থেকেই। তখন তদন্ত চলা অবস্থায় একের পর এক আসামির নাম বাদ দিতে বাদীরা আদালতে আবেদন করছেন বা হলফনামা দিয়ে বলছেন ‘ভুলবশত’ আসামি করা হয়েছে।

banner

আদালত ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত ৪০ মামলা থেকে ৬৭৫ জন আসামির নাম বাদ দিতে আদালতে গেছেন বাদীরা। এ জন্য তাঁরা ৩৫৪টি আবেদন ও হলফনামা দিয়েছেন। কোনো আবেদনে একজন, কোনোটিতে দুজন আবার কোনো আবেদনে চার-পাঁচজন করে ব্যক্তির নাম মামলা থেকে বাদ দিতে বলেছেন বাদীরা।

আইনজীবীরা বলছেন, এ রকম আবেদন এখনো জমা পড়ছে। হলফনামা দিয়ে ও আবেদন করে বাদীরা বলছেন, এজাহারে ভুলে আসামিদের নাম কে বা কারা লিখে দিয়েছেন। তাই তাঁদের জামিন কিংবা মামলা থেকে নাম বাদ দিতে আপত্তি নেই। বেশির ভাগ আবেদনের ভাষা প্রায় একই রকম।

পুলিশ ও আদালত সূত্র জানায়, জুলাই আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় চট্টগ্রাম ও মহানগরে এ পর্যন্ত ১৪৮ মামলা হয়েছে। এসব এজাহারনামীয় আসামির সংখ্যা ১৩ হাজার ২৭ জন। এর বাইরে অজ্ঞাতনামা আসামির সংখ্যা অন্তত ৩০ হাজার। এসব মামলায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী, সন্ত্রাসী যেমন আসামি আছেন; আবার রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন এমন ব্যক্তি, ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন পেশার মানুষকেও আসামি করা হয়েছে। এখন মামলা থেকে এ ধরনের ব্যক্তিদের নাম বাদ দেওয়ার জন্য যেমন আবেদন করছেন অনেক বাদী, পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীর জন্যও আবেদন করা হয়েছে। এর মধ্যে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনও রয়েছেন। মামলা থেকে বাদ দিতে আবেদন করা হয়েছে এমন অন্তত ২০ জনের নাম পাওয়া গেছে যাঁরা আগে থেকে অস্ত্র, মাদক ও চাঁদাবাজি মামলার আসামি।

ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা বলছেন, এসব বাদীর পেছনে কিছু আইনজীবী ও বিএনপির নেতা-কর্মী রয়েছেন। তবে মামলা থেকে রেহাই পেতে টাকা লেনদেনের বিষয়ে ভুক্তভোগীরা কেউ পরিচয় প্রকাশ করে কিছু বলতে রাজি হননি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, কিছু কিছু মামলার ক্ষেত্রে শুরুতেই এক দফা ‘বাণিজ্য’ করেছে একটি চক্র। খসড়া এজাহার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে পরে টাকার বিনিময়ে বাদ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ আছে। গত ২ জানুয়ারি গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ‘মামলা-বাণিজ্যের’ ব্যাপারে নগরবাসীকে সতর্ক থাকতে বলেন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ।

তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, চট্টগ্রামে দায়ের হওয়া অনেক মামলা সাজানো। অনেক বাদী আসামিদের চেনেন না। মামলার নেপথ্যে বিভিন্ন চক্র কাজ করেছে। এ ধরনের মামলার তদন্ত নিয়ে বেকায়দায় আছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।

এক মামলারই ৪৫ জনকে বাদ দেওয়ার আবেদন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত বছরের ১৬ জুলাই চট্টগ্রামের মুরাদপুরে গুলিতে নিহত হন দোকান কর্মচারী মো. ফারুক। এ ঘটনায় তাঁর বাবা ভ্যানচালক মো. দুলাল ২৮ আগস্ট পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। এতে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছিরসহ ২৬৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৫০ জনকে আসামি করা হয়।

এর মধ্যে মামলা থেকে আ জ ম নাছিরের নাম বাদ দিতে ৪ নভেম্বর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করেন বাদী। তাতে বলা হয়, বাদীর অজ্ঞাতসারে অন্য কেউ ব্যক্তিগত শত্রুতাবশত মামলায় আ জ ম নাছিরের নাম দিয়েছে। নাছির ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন।

বাদীর পক্ষে আদালতে আবেদন পেশ করেন আইনজীবী আখেলুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, কাকে মামলার আসামি রাখবে না রাখবে, সেটি বাদীর বিষয়। আদালত বাদীর আবেদন নথিভুক্ত করে তদন্ত কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়েছেন।

এর মাসখানেক পর ৫ ডিসেম্বর একই মামলার আরও সাত আসামির নাম বাদ দিতে আদালতে আবেদন করেন বাদী। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক কাউন্সিলর হাসান মুরাদ, গিয়াস উদ্দিন ও মোহাম্মদ হোসেন, বায়েজিদ বোস্তামী থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুল নবী ও খুলশী ১৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কায়সার মল্লিক এবং আওয়ামী লীগ কর্মী আজগর আলী ও মো. মানিক।

এর আগে ৭ অক্টোবর সাবেক মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির ছেলে মজিবুর রহমানের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন করেছিলেন বাদী। এভাবে গত চার মাসে এ মামলা থেকে ৪৫ জনের নাম বাদ দিতে আদালতে আবেদন করা হয়েছে।

তবে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ তদন্তে যা পাবে তা-ই প্রতিবেদন দেবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ভুক্তভোগী প্রথম আলোকে বলেন, নাম বাদ দিতে তাঁদের কারও ৩০ হাজার, কারও এক লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়েছে। মামলা চক্রের সদস্যদের মাধ্যমে এসব লেনদেন হয়েছে।

তবে বাদী মো. দুলাল প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, ‘তাড়াহুড়া করে মামলা করেছি, এতে অনেকের নাম এসে গেছে। তাই বাদ দেওয়ার আবেদন করেছি।’ টাকার বিনিময়ে আসামিদের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন করেছেন, এমন অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।

৪০ আসামিকে বাদ দিতে চান আহত সিরাজ

গত বছরের ৪ আগস্ট চট্টগ্রামের তিনপুলের মাথায় আহত হয়েছেন উল্লেখ করে ২৫৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন বিএনপির কর্মী সিরাজ খান। পরে গত নভেম্বর ও ডিসেম্বরে ৪০ জনের নাম বাদ দিতে আদালতে আবেদন করেন তিনি। তাঁদের মধ্যে চাকরিজীবী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ রয়েছেন।

এ বিষয়ে বাদী সিরাজ খান প্রথম আলোর কাছে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, তদন্তে যেসব আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।
বাদীর অজান্তে অন্য কেউ আসামি দিয়েছে!

৫ আগস্ট মনসুরাবাদ এলাকায় গুলিতে আহত হন মো. মানিক। ওই ঘটনায় তিনি ২০ নভেম্বর ডবলমুরিং থানায় মামলা করেন। আসামি করেন ১০৮ জনকে। পরে ৩০ ডিসেম্বর তিনি আওয়ামী লীগ নেতা আ জ ম নাছিরসহ ২৬ জনের নাম বাদ দিতে আদালতে আবেদন করেন।

আবেদনে বাদী লেখেন, আ জ ম নাছিরের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ নেই। ফায়দা লোটার জন্য সুকৌশলে কেউ নাছিরের নাম ঢুকিয়ে দিয়েছে। বাকি ২৫ জনের নাম বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রেও একই কথা বলেন তিনি। এ বিষয়ে প্রথম আলোকে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি মানিক।

৪ আগস্ট আহত হওয়ার ঘটনা উল্লেখ করে বিএনপির কর্মী এনায়েতুল গণি হাটহাজারী থানায় মামলা করেন ৩০১ জনের বিরুদ্ধে। পরে ২৪ আসামির নাম প্রত্যাহারের আবেদন করেন তিনি।

মো. সেলিম নামে সিএনজিচালিত অটোরিকশার এক চালক গুলিতে আহত হওয়ার ঘটনায় চান্দগাঁও থানায় মামলা করেন। পরে ৫১ আসামির মধ্যে ১৮ জনের নাম বাদ দিতে আদালতে আবেদন করেন তিনি।

এভাবে অন্তত ৪০ মামলার বাদীরা ৬৭৫ আসামির নাম বাদ দেওয়ার জন্য হলফনামা ও আবেদন দিয়েছেন আদালতে।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, আদালতে প্রায়ই আসামির নাম বাদ দেওয়ার আবেদন করছেন বিভিন্ন মামলার বাদী। আদালত তা নথিভুক্ত করে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছেন।
প্রকৃত অপরাধীদের বিচার দাবি

গণ-অভ্যুত্থানের ঘটনায় করা মামলায় হয়রানিমূলক আসামি যাচাই-বাছাই করতে চট্টগ্রাম নগর ও জেলায় দুটি কমিটি করা হয়েছে। দুটিরই সদস্য নগর পুলিশ কমিশনার ও জেলা পুলিশ সুপার।

নগর পুলিশের উপকমিশনার (গণমাধ্যম) রইছ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার হয়েছেন দাবি করে এরই মধ্যে অনেক আসামি আবেদন করেছেন। এগুলো যাচাই-বাছাই করছে কমিটি।

প্রায় অভিন্ন কথা বলেন অতিরিক্ত চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) মো. রাসেল। তিনি বলেন, পুলিশ যা তদন্তে পাবে, তা-ই অভিযোগপত্রে দেবে।

জুলাই আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় করা মামলা নিয়ে এমন আচরণ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) রাসেল আহমেদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অনেকে বাণিজ্য করার উদ্দেশ্যে মামলা দিয়েছেন। অনেক নিরপরাধ লোককে আসামি করা হয়েছে, কিন্তু সরাসরি হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়নি। হলেও কিছু বাদী এখন নাম বাদ দিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় এনে নিরপরাধ ব্যক্তিদের বাদ দেওয়া হোক।’
সূত্র : প্রথম আলো, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

‘ইটভাটায় কৃষিজমির মাটির ব্যবহার বন্ধ করতে হবে’

জাতীয়, 3 January 2023, 1666 Views,

পরিবেশ দূষণকারী অবৈধ ইটভাটা বন্ধে জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে সভা

স্টাফ রিপোর্টার:
ইটভাটার দূষণ নিয়ন্ত্রণ, অবৈধ ইটভাটা বন্ধকরণ এবং প্লাস্টিক ও পলিথিন ব্যবহার রোধে জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে বৈঠক করেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হন ৬৪ জেলার জেলা প্রশাসকরা। সভায় পরিবেশ সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ বলেন, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে ইটভাটায় কৃষিজমির মাটির ব্যবহার, কৃষি জমি বিনষ্টকরণ বন্ধ করতে হবে। ইটভাটার জ্বালানি হিসেবে গাছপালা কেটে কাঠ পোড়ানো বন্ধসহ অবৈধ ও পরিবেশ দূষণকারী ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ সময় তিনি সরকার ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০২৫ সাল নাগাদ সকল সরকারি কাজে ১০০ ভাগ পরিবেশ বান্ধব ব্লক ইট ব্যবহার নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা প্রদান করেন।
সভায় সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন শপিং ব্যাগ উৎপাদন ও ব্যবহার এবং মোড়ক বাজারজাতকরণ বন্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর এবং জেলা প্রশাসন পরিচালিত নিয়মিত এনফোর্সমেন্ট ও মোবাইল কোর্ট কার্যক্রম জোরদারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কঠিন বর্জ্য সুব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা, ২০২১ বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়াও উপকূলীয় অঞ্চলের ১২ জেলার ৪০টি উপজেলায় সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধে প্রণীত তিন বছর মেয়াদী কর্মপরিকল্পনা জরুরী ভিত্তিতে বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেয়া হয়। এছাড়াও সভায় অবৈধ ইটভাটা ও প্লাস্টিক, পলিথিন বন্ধে কার্যকর উপায় গ্রহণ বিষয়ে নিজ নিজ মতামত ব্যক্ত করেন উপস্থিত মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকগণ।
এ সময় সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধিমালা যুগোপযোগী করাসহ বিদ্যমান কিছু সমস্যা সমাধানের অনুরোধ জানান তারা। ইটভাটার বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে সংশ্লিষ্ট বিধিবিধান প্রতিপালনের অঙ্গীকার করে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি খলিলুর রহমান। সচিব ড. ফারহিনা আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরও যুক্ত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ) সঞ্জয় কুমার ভৌমিক, অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ) মিজানুর রহমান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদ প্রমুখ।

কমনওয়েলথের প্রাক নির্বাচনী দলের সঙ্গে ইসির বৈঠক

জাতীয়, 19 November 2023, 981 Views,

অনলাইন ডেস্ক :

banner

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানো নিয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে বৈঠকে বসেছে ঢাকায় সফররত কমনওয়েলথের চার সদস্যের প্রাক নির্বাচনী প্রতিনিধি দল।

আজ ১৯ নভেম্বর রবিবার নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের উপস্থিতিতে বৈঠক শুরু হয়।

বৈঠকে কমনওয়েলথের রাজনৈতিক বিভাগের নির্বাহী কর্মকর্তা জিপ্পি ওজাগো, রাজনৈতিক উপদেষ্টা লিন্ডিউই মালেলেখা, সহ-গবেষণা বিষয়ক কর্মকর্তা সারর্থাক রয় ও রাজনৈতিক উপদেষ্টা এবং প্রধান লিনফর্ড অ্যানড্রিউস উপস্থিত আছেন।

এ ছাড়া নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছাড়াও অন্য নির্বাচন কমিশনার ও ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত রয়েছেন।

কমনওয়েলথের প্রতিনিধি দলটি ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকায় অবস্থান করবেন। সফরকালে তারা পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, নির্বাচন কমিশনসহ বিভিন্ন মহলের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

এর আগেও বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে ভোট পর্যবেক্ষণ নিয়ে বৈঠক করেছে ইসি।

উল্লেখ্য, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল গত ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। তফসিল অনুযায়ী, ২০২৪ সালের সাত জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে।

এ ছাড়া মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, মনোনয়ন বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৭ ডিসেম্বর, প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর এবং নির্বাচনী প্রচারণা ১৮ ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির ৫ তারিখ পর্যন্ত চলবে বলে জানায় ইসি।

গাজীপুরে শফিক, তারিক, পাপনের ১০ তলা বাড়ি : অনুসন্ধানে দুদক

জাতীয়, 29 June 2025, 229 Views,

জায়েদুল কবির ভাঙ্গি, আঞ্চলিক প্রতিনিধি, গাজীপুর :
গাজীপুর সদরের চান্দনা মৌজায় শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার সাথে সম্পর্ক যুক্ত একটি ১০তলা আবাসিক ভবনের খোঁজ পাওয়া গেছে। নথিপত্রে শেখ রেহানার নাম নেই। ভবনটির মালিকানায় তাঁর স্বামী শফিক আহমেদ সিদ্দিক, দেবর তারিক আহমেদ সিদ্দিক ও সাবেক এমপি নাজমুল হাসান পাপনের নাম রয়েছে। এলাকাবাসীর কাছে উক্ত ভবনটি রেহানার ভবন হিসেবে পরিচিত। ৬৭ শতাংশ জমির ওপর বিশাল আকৃতির ভবনটির দাম দলিলে দেখানো হয়েছে ৩০ লাখ টাকা। গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর আস্তে আস্তে ভাড়াটিয়ারা ভবন ছেড়ে চলে যান। ভবনটি এখন একেবারে ফাঁকা।

banner

সম্প্রতি চান্দনা মৌজার ৪৪ নম্বর প্লটে গিয়ে দেখা যায়, ভবনটির কলাপসিবল গেটে এখন তালা ঝুলছে। পুরো ভবনের কোথাও আলো নেই। সামনে বসে আছেন নিরাপত্তাকর্মী। নিরাপত্তাকর্মী জানালেন, ভবনটিতে কাউকে ঢুকতে দিতে মানা আছে। অনুরোধের পরও তাই ভবনে প্রবেশ করা সম্ভব হয়নি।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে। দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, ভবনটির পাশে এ এস টি নিটওয়্যার নামের একটি পোশাক কারখানা রয়েছে। ওই কারখানার মালিক ভবনটি কেনার জন্য বায়না দলিল করেছিলেন। কিন্তু দুদকের অনুসন্ধানের খবর পেয়ে কেনার প্রক্রিয়া থেকে তিনি সরে আসেন। এ বিষয়ে জানার জন্য চেষ্টা করা হলেও কারখানার মালিকপক্ষের সাথে যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব হয়নি।

গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে রাজবাড়ী যাওয়ার রাস্তা ধরে কিছুদূর এগোনোর পর দেখা মেলে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের। গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিপরীতে উত্তর পাশে ওই ১০তলা ভবনের অবস্থান। ওই এলাকার মানুষের সাথে কথা হলে তারা জানান, বাড়িটির মালিক শেখ রেহানা বলে জানেন তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, বাড়িটির প্রকৃত মালিক শেখ রেহানার স্বামী শফিক আহমেদ সিদ্দিক। তাঁর সাথে শেখ হাসিনার সাবেক সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের মালিকানাও আছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শফিক আহমেদ সিদ্দিক গাজীপুরের সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের ২০০১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ১৮ শতাংশ জমির দলিল করেন, দলিল নম্বর ৩৫৫৯। একই তারিখে তিনি আরও ১৫.৫ শতাংশ জমির দলিল করেন, যার দলিল নম্বর ৩৫৬০। শফিক আহমেদ সিদ্দিকের ছোট ভাই তারিক আহমেদ সিদ্দিক একই চৌহদ্দিতে ২০০৪ সালের ২১ মার্চ ১৬.৫০ শতাংশ জমি কেনেন। গাজীপুরের সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল নম্বর ৫৭৮৪।

দুদক সূত্রের ভাষ্য, শফিক আহমেদ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে। এই অবস্থায় ১০তলা ভবনের ওই স্থাবর সম্পদটি অন্যত্র হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার চেষ্টা করছেন বলে গোপন সূত্রে জানতে পেরেছেন অনুসন্ধান কর্মকর্তারা। অনুসন্ধান নিষ্পত্তির আগে ওই সম্পদ হস্তান্তর বা স্থানান্তর হয়ে গেলে অনুসন্ধানে ক্ষতির শঙ্কা রয়েছে। এ কারণে ওই সম্পদ জব্দের আদেশ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে দুদক ইতোমধ্যে ঢাকা মহানগর স্পেশাল জজের কাছে আবেদন করেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুদকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, সাত সদস্যের বিশেষ টিম ওই ১০তলা ভবনটির সব বিষয় অনুসন্ধান করছে। ভবনটির দলিলসহ অন্যান্য নথিপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। জমি কেনা ও ভবনটি নির্মাণে অর্থের উৎস কী– সেটা জানার চেষ্টা চলছে।

আইনজীবীদের ফান্ডে ৩০ কোটি টাকা দেওয়ার ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর

জাতীয়, 21 October 2023, 951 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
বার কাউন্সিলের বেনেভোলেন্ট ফান্ডে প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণ ফান্ড থেকে ৩০ কোটি টাকা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

banner

আজ ২১ অক্টোবর শনিবার দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘আইনজীবী মহাসমাবেশে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ ঘোষণা দেন।

বিগত বছরগুলোতে প্রধানমন্ত্রী আইনজীবীদের কল্যাণ ও বিচার বিভাগ সংশ্লিষ্টদের কল্যাণে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন করেন।

আইনজীবী মহাসমাবেশে সভাপতিত্বে করেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সদস্য সচিব শেখ ফজলে নূর তাপস, অ্যাটর্নি জেনারেল ও বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন প্রমুখ।

বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতারাসহ সারাদেশ থেকে আগত বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুসারী আইনজীবীরা এই মহাসমাবেশে অংশ নেন।