ভবনের পাইপে আটকে থাকা মাদ্রাসা ছাত্রকে উদ্ধার করলো ফায়ার সার্ভিস

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 6 February 2024, 845 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৌর শহরের খৈয়াসার এলাকায় অবস্থিত ৭তলা বিশিষ্ট সালমা-সাঈদ তাহফিজুল কোরআন মাদ্রাসা ভবন থেকে পালাতে গিয়ে ছয়তলার পাইপে আটকে থাকা মোঃ জহিরুল ইসলাম (১০) নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রকে উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের লোকেরা।

banner

স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে আজ ৬ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টায় ফায়ার সার্ভিসের ফায়ার ফাইটার আলমগীর হোসাইন জহিরুলকে উদ্ধার করেন।

উদ্ধারকৃত জহিরুল ইসলাম সরাইল উপজেলার আবদুল করিমের ছেলে। শিশু জহিরুল ইসলাম সালমা-সাঈদ তাহফিজুল কোরআন মাদ্রাসার নাজেরা শাখার ছাত্র।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের ফায়ার ফাইটার আলমগীর হোসাইন জানান, মঙ্গলবার দুপুরে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে আমরা ওই বহুতল বিশিষ্ট মাদ্রাসা ভবনে গিয়ে ছয়তলার পাইপে আটকে থাকে জহিরুল ইসলামকে উদ্ধার করি। দীর্ঘ ১ ঘন্টা উদ্ধার অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে সালমা-সাঈদ তাহফিজুল কোরআন মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ বায়েজিদ আহমেদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, গত ১ জানুয়ারি এই মাদ্রাসা থেকে পালাতে গিয়ে সবুজ নামে নাজেরা শাখার এক ছাত্র ছয়তলার পাইপে আটকে গিয়েছিলো। পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকেরা সবুজকে উদ্ধার করে তার মায়ের কাছে হস্তান্তর করেছিলো।

Leave a Reply

প্রতিপক্ষের হামলায় নারী নিহত, দুইজন আটক

চলারপথে রিপোর্ট : তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় খাইরুন Read more

গাজীপুরে মামা হত্যার আসামি ভাগিনা গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : গাজীপুরে আনিসুর রহমান হত্যার মামলার আসামি ভাগিনা Read more

সদর মডেল থানায় যোগদান করেই কঠোর…

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য : আজহারুল ইসলাম সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

চলারপথে রিপোর্ট : ফ্ল্যাট বাসা থেকে শরীর মীর (৪০) নামের Read more

নাসিরনগরে বাবাকে হত্যার ঘটনায় ছেলে আটক

চলারপথে রিপোর্ট : নাসিরনগরে আলম মিয়া (৬০) নামের এক ব্যবসায়ী Read more

আখাউড়ায় খেলাফত মজলিসের প্রার্থীর মতবিনিময়

মোঃ ইসমাইল: ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের খেলাফত মজলিস মনোনীত প্রার্থী Read more

৫০ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ৫০ কেজি গাঁজা ও ১টি সিএনজি উদ্ধারসহ Read more

কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপদসীমায়, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের…

অনলাইন ডেস্ক : বর্ষার শেষপ্রহরে নেমে আসা অবিরাম বৃষ্টি ও Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার নতুন ওসি আজহারুল…

চলারপথে রিপোর্ট : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে Read more

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে…

অনলাইন ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ঐতিহাসিক Read more

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : কুমিল্লার দাউদকান্দি বারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) Read more

মেক্সিকোতে যাত্রীবাহী বাসে ট্রেনের ধাক্কায় ১০জন…

অনলাইন ডেস্ক : মেক্সিকোর আটলাকোমুলকো শহরে একটি পণ্যবাহী ট্রেন ও Read more

পাটের ভালো ফলন, জাক দেয়া নিয়ে বিপাকে চাষিরা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 18 August 2023, 1138 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
এ সময়ের সোনালী আঁশ হিসেবে পরিচিত পাটের জৌলুস আগের মতো আর নেই। পাটের ভালো ফলন হলেও চাষিরা আশানুরূপ লাভবান হতে পারছেন না। এছাড়াও পাট জাক (পঁচানো) দেয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি ও জায়গা না থাকায় চাষীরা বিপাকে পড়েন। তবু ঐতিহ্যকে ধরে রাখার জন্য বংশ পরস্পরায় অনেক চাষি এখনো পাটের চাষ করছেন।

banner

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয়ের তথ্য মতে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চলতি মৌসুমে পাটের ভালো ফলন হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রাও অর্জিত হয়েছে। এ বছর জেলায় উৎপাদিত পাট প্রায় ৬০ কোটি বিক্রির আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তারা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয়ের তথ্য মতে চলতি বছর পাটের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিলো ৪ হাজার ১শ ৮৯ হেক্টর জমি। চাষ হয়েছে ৪ হাজার ১শ ৯১ হেক্টর জমি। ২ হেক্টর জমি বেশী চাষ হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা, সরাইল উপজেলা, বিজয়নগর উপজেলা, নবীনগর উপজেলা বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় পাটের ভালো ফলন হয়েছে। জেলায় চাষীরা এবার তাদের জমিতে দেশী কেনাফ, মেছতা এবং তোষা জাতের পাটের আবাদ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। তবে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারনে পাটের আকার কিছুটা ছোট হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্রামাঞ্চলে এখন চলছে পাটকাটা, পাট জাক দেয়া ও পাট শুকনোর কাজ। তবে বর্ষা মৌসুমে পর্যাপ্ত পরিমান পানি না হওয়ায় ও পাট জাক দেয়ার (পঁঁচানো) পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় বিপাকে পরেছেন পাট চাষীরা।

পাট চাষিদের অভিযোগ পাটের উৎপাদন খরচ বাড়লেও পাটের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না তারা। এজন্য কৃষকরা পাট চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। তবে কৃষি বিভাগের দাবি ভালো ফলন ও লাভবান হওয়ায় প্রতিবছরই বাড়ছে পাটের আবাদ।

চাষিরা জানান, এক সময় পাটকে বলা হতো সোনালী আঁশ। পাট বিদেশে রপ্তানী হতো অর্জিত হতো বৈদেশিক মুদ্রা। ওই সময়ে সোনালী আঁশ পাট চাষে কৃষকরা লাভবান হওয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন উপজেলায় গড়ে উঠেছিলো বড়-বড় হাট বাজার। এখন পাটের সোনালী দিন আর নেই। ঐতিহ্যকে ধরে রাখার জন্য বংশ পরস্পরায় অনেকে এখনো পাটের চাষ করছেন।

নাসিরনগরের দুলাল মিয়া নামে এক পাট চাষী জানান, আমরা যে আশা করে পাট চাষ করেছিলাম বৃষ্টি না থাকার কারনে আমাদের পাটগুলো আকারে ছোট হয়েছে। আগে পানির মধ্যে পাট কাটতে খরচ কম হতো কিন্তু এবার খরচ বেশি হয়েছে। পানি না থাকার কারণে পাট এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যেতেও খরচ হয়। আর যদি পানি থাকতো তাহলে এখানেই সবকিছু করা যেতো। তিনি বলেন, বর্তমানে ২ হাজার টাকা মন দরে পাট বিক্রি হচ্ছে। এই দামে পাট বিক্রি করলে আমাদের লোকসান গুনতে হবে। সরকার যদি পাটের দামটা ৩ হাজার টাকা করে দিতো তাহলে আমরা লাভবান হতাম।

বিজয়নগর উপজেলার ফরিদ মিয়া নামে আরেক পাট চাষী বলেন, এবার আমরা পাট নিয়ে খুবই চিন্তিত। পানি না থাকায় জমি থেকে পাট কেটে অন্য জায়গায় নিতে শ্রমিক খরচও লাগছে। আমরা পাটের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছি না। তিনি বলেন, পাট জাক দেয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি না পাওয়ায় আমাদেরকে বিপাকে পড়তে হয়েছে।

এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উপ-পরিচালক সুশান্ত সাহা বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এবছর পাটের ভালো ফলন হয়েছে। পাট চাষে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। তিনি বলেন, চলতি বছর আমাদের পাট চাষে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো ৪ হাজার ১শ ৮৯ হেক্টর জমি, চাষ হয়েছে ৪ হাজার ১শ ৯১ হেক্টর জমি। তিনি বলেন, জেলার নাসিরনগর, সরাইল, বিজয়নগর, নবীনগর এবং বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় পাটের আবাদ বেশী হয়েছে। চাষীরা তাদের জমিতে দেশী কেনাফ, মেছতা এবং তোষা জাতের পাটের আবাদ করেছেন। জেলায় কমপক্ষে ৪১ হাজার ১৬১টি বেল পাট উৎপাদন হবে। যার বাজার মূল্য কমপক্ষে ৬০কোটি টাকা।

জাতীয় মানবকল্যাণ পদক পেলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আল-মামুন সরকার

জাতীয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 3 January 2023, 2917 Views,
স্টাফ রিপোর্টার:
বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যান মন্ত্রণালয় প্রদত্ত সমাজসেবায় সর্বোচ্চ পদক “জাতীয় মানবকল্যাণ পদক” পেয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার। গতকাল সোমবার রাজধানী ঢাকায় সমাজসেবা অধিদপ্তরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আল-মামুন সরকারের হাতে পদক তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী নূরুজ্জামান আহমেদ। সমাজকল্যান মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে পদক বিতরনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি। এর আগে আল-মামুন সরকার ২০১৯ সালে প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা এবং অবদানের জন্য জাতীয়ভাবে তিনি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পদক ও সম্মাননা অর্জন করেছিলেন।
প্রতিবন্ধী ও নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কল্যাণ, জীবনমান উন্নয়ন, কর্মসংস্থান, ইনক্লুসিভ শিক্ষা বাস্তবায়ন ও সামাজিক সুরক্ষায় উল্লেখযোগ্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ সারাদেশের ৮ জনকে এই পদক দেওয়া হয়। আল-মামুন সরকার একজন সৎ, নিষ্ঠাবান এবং সাদামনের মানুষ হিসেবে পরিচিত। সমাজসেবায় বিশেষ করে প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা, কল্যাণ ও পূর্নবাসনে তাঁর ভূমিকা ও অবদান সর্বজন স্বীকৃত।

আওয়ামীলীগের রাজনীতি হলো প্রতিহিংসার রাজনীতি : হেফাজত নেতা মাও. মামুনুল হক

জাতীয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 14 August 2024, 1050 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ভারতে বসে বাংলাদেশের স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ করলে বাংলাদেশের মাটিতে ভারতীয় দুতাবাস থাকতে পারবে না বলে জানিয়েছেন হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিক মামুনুল হক। দেশব্যাপী নৈরাজ্য প্রতিরোধ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার উদ্যোগে আজ ১৪ আগস্ট বুধবার বিকেলে স্থানীয় পৌর মুক্ত মঞ্চে আয়োজিত সমাবেশ একথা বলেন।

banner

তিনি আরো বলেন, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস বাতিল করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছেন। তবে ১৫ আগস্টকে কেন্দ্র পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তি নরেন্দ্র মোদীর ঘরে বসে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশে বিশৃংখলা সৃষ্টি করার জন্য শেখ হাসিনা উষ্কানী দিচ্ছে।

তিনি বলেন বিগত ১৫ বছরে হাতুড়ী লীগের পরিচিতি পাওয়া আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা সেই অপতৎপরতা চালানোর চেষ্টা করছে। তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ স্বাধীন। ছাত্র-জনতার এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশে ১৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে কোন নৈরাজ্য সৃষ্টির পায়তারা করা হয় তাহলে প্রতিহত করা হবে।

এ জন্য বৈষম্য ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ও অন্তর্বর্তীকালী দায়িত্বশীলদের পাশাপাশি হেফাজতের নেতাকর্মীদের ১৫ আগস্টসহ গোটা আগস্ট মাসে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি আরো বলেন, আওয়ামীলীগের রাজনীতি হলো প্রতিহিংসার রাজনীতি। ১৯৭৫ সালে সাড়ে ৩ বছরে ৩০ হাজার যুবককে হত্যা করা হয়েছে। এ দেশে বাকশাল কায়েমের মধ্য দিয়ে মানুষের সকল অধিকার হরণ করা হয়েছিল।

অধিকার হারা মানুষ তখন ক্ষুব্ধ হয়ে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে অভ্যুত্থান পরিচালনা করেছিল। তখন শেখ হাসিনা ঘোষনা দিয়েছিল যে জাতি তার বাবাকে হত্যা করেছিল সে জাতির কাছ থেকে প্রতিশোধ গ্রহন করবেন। বিগত ৪৫ বছর ধরে শেখ হাসিনা প্রতিশোধের রাজনীতি করছেন। তিনি এখন খুনের নেশায় মাতাল। তিনি ভারতের নরেন্দ্র মোদীর সাথে আখড়া বেধেছেন। ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন আদালতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। তিনি শেখ হাসিনাকে দেশে এনে বিচারের দাবি জানান এবং সারাদেশে হেফাজত কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত বিভিন্ন মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারেরও দাবি করেন।

হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর মুফতি মুবারকুল্লাহর সভাপতিত্বে ও মাওলানা জুনায়েদ কাসেমীর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব জুনায়েদ আল হাবিব, কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর মাওলানা মুহিউদ্দিন রব্বানী, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামবাদী, মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আয়ুবী, সহকারী মহাসচিব মাওলানা সাখাওয়াত হুসেন রাজী প্রমুখ।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসামী ধরতে গিয়ে নারীর কপালে পিস্তল ঠেকানো ও গুলির ঘটনায় তোলপাড় ॥ তদন্ত কমিটি গঠিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 12 May 2024, 717 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসামী ধরতে গিয়ে প্রকাশ্যে পিস্তল উঁচিয়ে নারীর কপালে ঠেকানোর ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। স্বর্ণ আত্মসাতের অভিযোগে প্রবাসীকে ধরতে গিয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এমন ঘটনা ঘটায় বলে অভিযোগ উঠেছে।

banner

এ ঘটনায় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোঃ জয়নাল আবেদীনকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৩ কার্য দিবসে তদন্ত কমিটিকে তদন্ত করে এর প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের থলিয়ারা গ্রামের সৌদি প্রবাসী নূরুল আলম নূরুর বিরুদ্ধে মাসখানেক আগে সদর থানায় ৪০০ গ্রাম স্বর্ণ আত্মসাতের মামলা হয়। এতে অভিযোগ আনা হয়, নূরুল আলম সৌদি আরব থেকে আব্দুল কুদ্দুস নামের এক ব্যক্তির স্বর্ণ এনে পুরোটা বুঝিয়ে দেননি।

এ ঘটনায় আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে এনামুল হক বাদী হয়ে মামলা করেন। গত শুক্রবার বিকেল ৫টার প্রবাসী নূরুল আলমকে গ্রেপ্তারের জন্য সাদা পোশাকে তার বাড়িতে যায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এস.আই রেজাউল করিমসহ আরো কয়েকজন। এ সময় নূরুল আলমের বাড়িতে তার ভাতিজার সুন্নতে খৎনার অনুষ্ঠান চলছিল।

ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশের পরিচয়ে একদল লোক নূরুল আলমকে খুঁজতে আসে। তারা তাকে না পেয়ে আক্রমানাত্মক হয়ে উঠে। এসময় অনুষ্ঠানে আসা বাড়িতে উপস্থিত নারীসহ অন্যদের সাথে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়। তারা নূরুল আলমের স্ত্রী, সন্তান, পিতাসহ পরিবারের লোকজনকে শারিরীকভাবে লাঞ্চিত করে। এক পর্যায়ে এস.আই রেজাউল প্রবাসীর স্ত্রী বন্যার কপালে দিকে প্রকাশ্যে পিস্তল তাক করে। পাশাপাশি পুলিশের অন্যান্য সদস্যরা ঘরে থানা নগদ টাকাসহ স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয়। ভুক্তভোগীরা তখন তারা গোয়েন্দা পুলিশ নাকি ডাকাত বুঝে উঠতে পারিনি।

ঘটনার সময় উপস্থিত নুরুল আলমের ভাই সারোয়ার আলম অভিযোগ করেন, সাদা পোশাকে যাওয়া লোকজন বাড়িতে প্রবেশ করেই তার ভাইকে খোঁজ শুরু করে। ভাই বাড়িতে নেই বলা হলেও তারা মানতে নারাজ। এ সময় সাদা পোশাকে আসা লোকজন নুরুল আলমের স্ত্রী বন্যা বেগমসহ কয়েকজনকে মারধর করে।

তিনি বলেন, আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে স্বর্ণ নিয়ে মামলা হয়েছে। স্বর্ণ আমার ভাই আনেনি। আমার ভাইকে ধরতে হলে কেন আমাদের বাড়িতে এভাবে হামলা হবে। বিষয়টি আমরা থানা পুলিশকে জানিয়েছি। এ বিষয়ে আদালতে মামলা করব। তিনি বলেন, সাদা পোশাকে আসা লোকজন পিস্তল তাক করার পাশাপাশি গুলিও করেছে। গুলির খোসাও আমাদের কাছে আছে। তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে খোসা কার।

এ ব্যাপারে নূরুল আলমের স্ত্রী বন্যা বলেন, প্রবাসে আব্দুল কুদ্দুসকে ব্যবসায়ীক অংশীদার না করায় তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে। ঘটনার দিন আমাদের বাড়িতে সুন্নতে খাৎনার অনুষ্ঠান চলছিল। এমন সময় ৫/৬ জন সাদা পোশাকে এসে ডিবি পরিচয় দিয়ে আমাদের কাছ থেকে আলমারির চাবি নেয়। এ সময় তারা তল্লাশি করে কিছু পায়নি। কিন্তু আমাদের ঘরে থাকা প্রায় ৫ লাখ টাকাসহ গলায় থাকা স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয়। বিষয়টি দেখে চিৎকার করায় শিশু নিশাতের মাথায় বন্দুক দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত করা হয়। প্রতিবাদ করায় তারা আমার কপালে পিস্তল ঠেকায় এবং ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

এ ব্যাপারে ডিবি পুলিশের এস. আই রেজাউল করিম বলেন, বাদী পক্ষ বিষয়টি আমাদেরকে জানালে প্রথমে পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) মোফাজ্জল আলী একজন কনস্টেবলকে নিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর আমি যাই। দূর থেকেই ওই বাড়ি চিল্লাফাল্লা শুনছিলাম। আমি যাওয়ার পর তারা খারাপ আচরণ করে। আসামীকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করে। এ নিয়ে ধস্তাধস্তি হয়। আমার হাতে পিস্তল ছিলো। তবে কারো দিকে তাক করিনি। কাউকে মারধর করা হয়নি। আমাদের টার্গেট যেহেতু আসামী ধরা সেহেতু সেই লক্ষ্যেই আমরা এগোচ্ছি। যে কারণে তখন আমরা অ্যাকশানে যাইনি। সদর উপজেলা বিশ্বরোড এলাকার বাদী এসে বাড়িতে আসামীর অবস্থানের কথা জানালে সেখানে যাওয়া হয়।

এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোঃ জয়নাল আবেদীন বলেন, ইতিমধ্যেই আমরা তদন্ত কাজ শুরু করেছি। যারা প্রবাসীর বাড়িতে গিয়েছিলেন তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তদন্ত কাজ শেষ হলে প্রতিবেদন জমা দিব।

এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার মোঃ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, কোনো অফিসার যদি আসামী ধরতে গিয়ে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে তাহলে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব। আমরা বিষয়টির গভীরভাবে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করব। ইতিমধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোঃ জয়নাল আবেদীনকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৩ কার্য দিবসে তদন্ত কমিটিকে তদন্ত করে এর প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, তিন শতক খাস জায়গা উদ্ধার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 23 June 2023, 1277 Views,

চলারপথে রিপোর্ট  :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে অবৈধ সীমানা প্রাচীর, টিনের ঘর ও চার চালা টিনের ঘর উচ্ছেদ করে প্রায় তিন শতক খাস জায়গা উদ্ধার করা হয়েছে।

banner

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ মোশারফ হোসাইন সদর উপজেলার রামরাইল ইউনিয়নের সেন্দ গ্রামে এই ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সদর উপজেলার সুলতানপুর ও রামরাইল ইউনিয়নের অধীনে সেন্দ মৌজায় রামরাইল ইউনিয়নের শিলাউর গ্রামের সৈয়দ জাকির হোসেন বাহারের ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গা রয়েছে। জাকির হোসেনের জায়গার উত্তর পাশে রয়েছে সরকারি রাস্তা। সরকারি সার্ভেয়ার নিয়োগ করে সরকারি রাস্তার সীমানা নির্ধারণের জন্য ২০১৫ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি জাকির হোসেন বাহার জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেন। ২০১৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসক এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশ দেন। ওই বছরের ৮ মার্চ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সার্ভেয়ারকে নিয়ে মাপঝোঁক করে সরকারি রাস্তার সীমানা নির্ধারণ করেন।

সে সময় ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গা ও রাস্তার সীমানার উপর ছয়টি পিলার স্থাপন করে জাকিরকে বুঝিয়ে দেন। কিন্তু সেন্দ গ্রামের চার ভাই সেলিম মিয়া, মনির মিয়া, খোকন মিয়া ও মামুন মিয়া নিষ্পত্তিকৃত সীমানা নির্ধারণ লঙ্ঘণ করে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান থেকে বরাদ্দ নিয়ে সরকারি রাস্তাটি বিভাজন করেন। পরে তারা জাকিরের জায়গা দখলের পায়তাঁরা শুরু করেন। এক পর্যায়ের তারা সরকারী রাস্তা দখল করে সীমানা প্রাচীর দিয়ে বাড়িঘর নির্মাণ করে বসবাস করা শুরু করেন। ২০২০ সালের ১২ জুলাই জাকির হোসেন বাহার নকশা অনুযায়ি সরকারি রাস্তাসহ তার ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গা উদ্ধারের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে কাছে লিখিত আবেদন করেন।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার রামরাইল ইউনিয়নের সেন্দ গ্রামের চার ভাই সেলিম মিয়া, মনির মিয়া, খোকন মিয়া ও মামুন মিয়া সেন্দ মৌজার ১ নং বিএস খাস খতিয়ানভুক্ত ৫৬৩২ দাগে ২ দশমিক ৯৬ শতক খাস জায়গা অবৈধভাবে দীর্ঘদিন ধরে দখল করে রেখেছেন। সেখানে তারা অবৈধভাবে দুটি সীমানা প্রাচীর, একটি ভিটি পাকা টিনের ঘর ও একটি চার চালা টিনের ঘর নির্মাণ করে বসবসা করে আসছিলেন।

২০২০ সালে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের ( রাজস্ব) আদালতের এক উচ্ছেদ মামলার রায়ের নির্দেশনা এবং জেলা প্রশাসসক কার্যালয়ের এক চিঠি অনুযায়ী সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোশারফ হোসাইন অবৈধভাবে দখলদার চার ভাই সেলিম, মনির, খোকন ও মামুনকে প্রথমে গত ১০ এপ্রিল পরে গত ৫ জুনের মধ্যে ২ দশমিক ৯৬ শতক খাস জায়গা থেকে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হলেও তারা কর্ণপাত না করায় বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোশারফ হোসাইন সেখানে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে তাদের চার ভাইয়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেন। এসময় দুটি সীমানা প্রাচীর, একটি ভিটি পাকা টিনের ঘর ও একটি চার চালা টিনের ঘর উচ্ছেদ করে ২ দশমিক ৯৬ শতক খাস জায়গা উদ্ধার করেন।

এ ব্যাপারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সদর উপজেলা সহকারী কমিমশনার (ভূমি) মোশারফ হোসাইন জানান, অবৈধ স্থাপনাসহ দখল সরিয়ে নিতে তাদের দুই দফা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কিন্তু দখলকারীরা কোনো কর্ণপাত করেননি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান চালিয়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ২ দশমিক ৯৬ শতক খাস জায়গা উদ্ধার করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) আদালতের উচ্ছেদ মামলা মূলে খাস জমি থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। উক্ত অবৈধ স্থাপনা সমূহের কারণে সেখানে সরকারি রাস্তা নির্মান করা যাচ্ছিল না।