জেলা পরিষদের উপ-নিবার্চনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন হেলাল উদ্দিন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, রাজনীতি, 11 February 2024, 1031 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
আগামী ৯ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের উপ-নিবার্চন উপলক্ষে ‘চেয়ারম্যান পদে’ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে নিজের মনোনয়নপত্র জমা দিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার দুইবার নির্বাচিত সাবেক মেয়র মোঃ হেলাল উদ্দিন।

banner

আজ ১১ ফেব্রুয়ারি রবিবার দুপর ১২টায় জেলা নির্বাচন কর্মকতার নিকট তিনি তার মনোনয়নপত্র জমা দেন। এ সময় তার সাথে ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র মিসেস নায়ার কবির, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বাড়ি চৌধুরী মন্টু, সহ-সভাপতি হাজী হেলাল উদ্দিন, জেলা জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিডিউটর অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম খোকন প্রমুখ।

এর পূর্বে আজ সকাল ১১ টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের হালদারপাড়াস্থ কার্যালয়ে মোঃ হেলাল উদ্দিনের সফলতা কামনায় এক মোনাজাতের আয়োজন করা হয়। উক্ত মোনাজাতে জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন অঞ্চলের জনপ্রতিনিধি, ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীগণ অংশগ্রহণ করেন।

এ সময় এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মোঃ হেলাল উদ্দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সকল জনপ্রতিনিধি, দলীয় নেতাকর্মী ও সর্বস্তরের জেলাবাসীর দোয়া ও সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন। বক্তব্যে তিনি বলেন- আমি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে সকলের সহযোগিতা নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদকে একটি জবাবদিহিতামূলক ও উন্নয়নমুখী জেলা পরিষদ গঠন করাসহ জেলাবাসীর সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখব।

Leave a Reply

ইটালি প্রবাসী দিদারের মা আনোয়ারা বেগমের…

শফিকুল ইসলাম বাদল : ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের বিরামপুর Read more

কসবায় মায়ের অভিযোগে ছেলের কারাদণ্ড

চলারপথে রিপোর্ট : মাদকাসক্ত ছেলের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে Read more
ফাইল ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

চলারপথে রিপোর্ট : পুকুরের পানিতে ডুবে ইসরাত জাহান নোভা (৯) Read more

ইরান কখনও আপোস করবে না: আয়াতুল্লাহ…

অনলাইন ডেস্ক : জায়নবাদীদের সাথে ইরান কখনও আপোস করবে না Read more
ফাইল ছবি

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক পাঁচ দিনের…

অনলাইন ডেস্ক : রাজধানীর শাহবাগ ও পল্টন মডেল থানার পৃথক Read more
ফাইল ছবি

প্রতারণা করে জুলাই অভ্যুত্থানের সুবিধা নিলে…

অনলাইন ডেস্ক : জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদের পরিবার এবং আহতদের কল্যাণ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩৮ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় নাগরিক…

দুলাল মিয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর Read more

কারাগারে হাজতির মৃত্যু

দুলাল মিয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে জুনায়েদ মিয়া (৩২) নামে Read more

আখাউড়ায় কৃষকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা

চলারপথে রিপোর্ট : কৃষকদের সেচ দক্ষতা বাড়াতে পানি ব্যবহারকারী গ্রুপের Read more

ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের ১১তম ব্যাচের ওরিয়েন্টেশন

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য: রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের Read more

স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে…

অনলাইন ডেস্ক : স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে অনশন Read more

ইরানে ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানালো ২১…

অনলাইন ডেস্ক : ইরানে ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানিয়েছে মিশরসহ ২১টি Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 12 February 2024, 780 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
অন্যতম বিদ্যাপীঠ ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়েছে।

banner

আজ ১২ ফেব্রুয়ারি সোমবার সকালে শহরের নিয়াজ মুহম্মদ স্টেডিয়াম মাঠে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যদিয়ে এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় প্রধান অতিথি থেকে জাতীয় পতাকা উত্তোলণ ও পায়রা উড়িয়ে প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এস,এম শান্তনু চৌধুরী।

এতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ শরীফুল ইসলামের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা কামরুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন সদর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এডঃ মোঃ লোকমান হোসেন, বাংলাদেশ শিক্ষক পরিষদ কেন্দ্রিয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ সাহিদুল ইসলাম, জাতীয় স্বর্ণপদক প্রাপ্ত ক্রীড়াবিদ সায়েদুর রহমান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মোঃ শাহ আলম, স্বনির্ভর বাংলাদেশ এর নির্বাহী পরিচালক এস.এম শাহীন, স্বপ্নতরী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান তাহের উদ্দিন ভুইয়া। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এস,এম শান্তনু চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক গঠনে ক্রীড়া ও সংস্কৃতি চর্চা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান সরকারের উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীরা আনন্দের সাথে পড়াশোনা করে জ্ঞান অর্জন করবে। যাতে তাদের সম্পূর্ণরুপে মানসিক বিকাশ ঘটে। সরকারের সেই নীতির সাথে মিল রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ অত্যন্ত আনন্দঘন পরিবেশে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতার আয়োজন করেছে যা প্রশংসনীয়। তিনি বিদ্যালয়টির উত্তরোত্তর সফলতা ও সমৃদ্ধি কামনা করেন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, বর্তমান সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্কুল এন্ড কলেজেও স্মার্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া গঠনে নিজেদের অবস্থান থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

পরে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহনে একটি মনোমুগ্ধকর ডিসপ্লে প্রদর্শন করা হয়। প্রতিযোগীতায় বিদ্যালয়ের প্লে গ্রুপ থেকে ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা দৌড়, দড়িলাফ, বস্তা বন্দি দৌড়, মোরগ দৌড়সহ প্রায় ৫৩ টি ইভেন্টের প্রতিযোগীতার অংশগ্রন করেন। পরে অতিথিবৃন্দ বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন।

চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে যাওয়া সেই শিশুটি অবশেষে মারা গেছে

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 22 July 2023, 1026 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
বিজয়নগরে চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে যাওয়া আনুমানিক ১০ বছর বয়সী অজ্ঞাতনামা শিশুটি অবশেষে মারা গেছে।

banner

আজ ২২ জুলাই শনিবার বেলা ১১টার দিকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটি মারা যায়। শিশুটি দুইদিন জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অচেতন অবস্থায় ছিলো।

আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ জসিম উদ্দিন খন্দকার বলেন, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি বিজয়নগর উপজেলার মেরাশানি রেলওয়ে স্টেশনে অতিক্রমকালে চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে যায় ১০ বছর বয়সী ছেলে শিশুটি। স্থানীয়রা শিশুটিকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে গ্রাম্য চিকিৎসক ও পরে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে আসে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার দুপুরে শিশুটি মারা গেছে।

তিনি আরো বলেন, শিশুটির নাম-পরিচয় সনাক্ত করার চেষ্টা করছি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাতিঘর নামক একটি সংগঠনের কাছে তার লাশ দাফনের জন্য হস্তান্তর করেছি।

স্টাফ রিপোর্টার :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে দু’পক্ষের মারামারির দুই মাস পর আহত হারুন মিয়া (৬০) নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন। তিনি তার নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শনিবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে হারুন মিয়া হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে সে মারা যায়। গত অক্টোবর মাসে প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুত্বর ভাবে আহত হয়েছিলেন হারুন মিয়া। হারুন মিয়ার মৃত্যুর পর উপজেলার পত্তন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক দুধ মিয়ার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। হারুন মিয়া উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের লক্ষীমুড়া গ্রামে মৃত কিতাব আলীর ছেলে। হাসপাতাল ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত লক্ষীমুড়া গ্রামের মৃত কিতাব আলীর ছেলে হারুন মিয়ার পরিবার ও মৃত সোবহান মিয়ার ছেলে করিম মিয়ার পরিবারের জমিতে গরুর ঘাস খাওয়াকে কেন্দ্র করে বিরোধ চলে আসছিল। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে করিম মিয়ার পক্ষের লোকেরা হারুন মিয়াসহ তার পরিবারের ৪-৫ জনকে পিটিয়ে জখম করে। তারপর বিজয়নগর থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার পর করিম মিয়ার লোকজন হারুন মিয়াকে হত্যা করার হুমকি দেন? পরবর্তীতে স্থানীয় চেয়ারম্যান দু’পক্ষের লোকদেরকে ডেকে তা আপস করার চেষ্টা করেন। পরে হারুন মিয়া তার ছেলে-ভাতিজাকে নিয়ে বাড়িতে যাওয়ার পথিমধ্যে শেখ হাসিনা সড়কের উত্তর পাশে করিম মিয়ার লোকজন অতর্কিতভাবে তাদের উপর হামলা করেন। তাতে হারুন মিয়ার একটি হাত ও একটি পা ভেঙ্গে যায়। পরে তাদেরকে জেলা সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। হারুন মিয়ার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে এক মাস হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়। পরবর্তীতে বাড়িতে তার চিকিৎসা চলে।
এলাকাবাসী সূত্রে আরও জানা যায়- এই হামলার ইন্দনদাতা পত্তন ইউনিয়ন আওয়ামিলীগ সাধারণ সম্পাদক দুধ মিয়া।
নিহত হারুন মিয়ার ভাতিজা সোহেল বলেন, দুধ মিয়া সরাসরি করিম মিয়ার পক্ষে নিয়েছে। যার কারণে আমার চাচা হারুন মিয়ার উপর হামলা হয়েছে। আমার চাচার হত্যা সাথে দুধ মিয়া জড়িত। দুধ মিয়াসহ যারা আমার চাচাকে হত্যা করেছে তাদের ফাঁসির দাবি জানায়।
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, একজন মারা গেছেন বলে শুনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লাশ জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে আছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যু রহস্য উন্মোচন হবে।

banner

জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ হয়ে গেছে

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 22 June 2024, 532 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চালু থাকা বৈকালিক স্বাস্থ্য সেবা হঠাৎ করে বন্ধ করে দিয়েছেন চিকিৎসকরা। গত ৩ জুন থেকে চিকিৎসকরা বৈকালিক স্বাস্থ্য সেবা বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে একদিকে দুর্ভোগে পড়েছে জেলার সুবিধাবঞ্চিত ও অসহায় রোগীরা, অন্যদিকে রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

banner

জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৩ জুন থেকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা চালু করেন হাসপাতালের তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক প্রয়াত ডাঃ মোহাম্মদ ওয়াহীদুজ্জামান। বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা নির্ধারিত ফির মাধ্যমে অসহায় রোগীদের সেবাদান শুরু করেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার রোগীদের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী জেলার হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা থেকেও অনেক রোগী এই হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিতেন।

বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবায় মেডিকেল কর্মকর্তার সরকারি ফি ২০০ টাকা, জুনিয়ার কনসালটেন্ট ও আবাসিক সার্জনের ফি ৩০০ টাকা এবং সিনিয়র কনসালটেন্টের ফি ৪০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিলো। জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বৈকালিক স্বাস্থ্য সেবা চালু করায় সাধারণ রোগীরা অনেক খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে গত ৩ জুন থেকে এই স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রোগীরা এখন অনেক অসন্তুষ্ট। বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা না পাওয়ায় জেলার দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীদের বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে।

হাসপাতালের হিসাব শাখা সূত্রে জানা গেছে, বৈকালিক স্বাস্থ্য সেবায় বেলা দুইটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত চালু থাকা প্যাথলজি বিভাগের বিভিন্ন পরীক্ষা-নীরিক্ষা থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রতি মাসে সরকারি কোষাগারে অনেক টাকা জমা দিতে পেরেছেন। গত বছরের জুন মাসে শুধু পরীক্ষা-নীরিক্ষা থেকে প্রাপ্ত ২১ হাজার ৫৩৫ টাকা, জুলাই মাসে ৮৬ হাজার ৭০ টাকা, আগস্ট মাসে ১ লাখ ১২ হাজার ৯৬০ টাকা, সেপ্টেম্বর মাসে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৪৫ টাকা, অক্টোবর মাসে ১ লাখ ৪ হাজার ৯৩০ টাকা, নভেম্বর মাসে ১ লাখ ৮ হাজার ৪০০ টাকা ও ডিসেম্বর মাসে ৯০ হাজার ৮১৫ টাকার রাজস্ব সরকারি কোষাগারে জমা দেন।
আর চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৯১ হাজার ৩৫৫ টাকা, ফেব্রুয়ারি মাসে ৮৬ হাজার ৯৩০ টাকা, মার্চ মাসে ৬৪ হাজার ৭৮০ টাকা এবং এপ্রিল মাসে ৫৪ হাজার ৩৫০ টাকার রাজস্ব সরকারি কোষাগারে জমা দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

বিকেল তিনটা থেকে ছয়টা পর্যন্ত বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা চালুর প্রথম মাসে গত বছরের জুন মাসে চিকিৎসকরা ২৫১ জন রোগী, দ্বিতীয় মাস জুলাই মাসে ১ হাজার ২২৬ জন, আগস্ট মাসে ১ হাজার ৪৫৭ জন, সেপ্টেম্বর মাসে ১ হাজার ৫২৩ জন, অক্টোবর মাসে ১ হাজার ২১১ জন, নভেম্বর মাসে ১ হাজার ১৪০ জন ও ডিসেম্বর মাসে ৮৯২ জন রোগী দেখেছেন চিকিৎসকরা। চলতি বছরের গত জানুয়ারি মাসে ৯০৫ জন, ফেব্রুয়ারি মাসে ১ হাজার ১১৮ জন, মার্চ মাসে ৬৩১ জন ও এপ্রিল মাসে ৮৫৭ জন রোগী দেখেন চিকিৎসকরা।

জানা গেছে, গত বছরের জুলাই মাস থেকে চলতি বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসকরা ১১ হাজার ৩৬০ জন রোগী দেখেছেন, যেখান থেকে আয় হয়েছে ৩৫ লাখ ৩ হাজার ৯০০ টাকা।

গত বছরের জুন মাস থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত আট মাস এসব রোগী দেখার টাকা থেকে নিজেদের প্রাপ্ত সম্মানী ভাগাভাগি করে নিয়েছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু গত ফেব্রুয়ারি মাসে হাসপাতালে স্বাস্থ্য বিভাগের এক সভায় বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবায় রোগী দেখা থেকে প্রাপ্ত টাকা চিকিৎসকদের না দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম স্বাস্থ্য বিভাগের এক পরিচালক। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবায় নিযুক্ত চিকিৎসকদের সম্মানী বন্ধ রয়েছে। এরপর থেকেই হাসপাতালে বিকেলে রোগী দেখায় আগ্রহ হারাতে শুরু করেন চিকিৎসকরা।

চলতি বছরের ৩ জুন থেকে কোনো রকম পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবায় রোগী দেখা বন্ধ করেন চিকিৎসকরা। তবে প্যাথলজি বিভাগ চালু রয়েছে।

হাসপাতালে কর্মরত কয়েকজন জানান, বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবায় হাসপাতালে রোগী দেখার চেয়ে নিজেদের ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখায় স্বাচ্ছন্দবোধ করেন চিকিৎসকরা। কারণ এতে চিকিৎসকদের আয়-রোজগার বেশি হয়। হাসপাতালের এক সভায় চট্টগ্রাম স্বাস্থ্য বিভাগের এক পরিচালক জানান, বাংলাদেশে যেসব সরকারি হাসপাতালে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা চালু হয়েছে, সেখানকার কোনো হাসপাতাল থেকে চিকিৎসকদের সম্মানি দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। সেখানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা সম্মানি উত্তোলন করে নিয়ে গেছেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৩ জুন ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে যোগদান করেন মোহাম্মদ ওয়াহীদুজ্জামান। তাঁর যোগদানের পর থেকেই হাসপাতালে যথাসময়ে চিকিৎসকের উপস্থিত হওয়াসহ সকল বিভাগেই স্বাস্থ্যসেবার বিরাট পরিবর্তন হয়েছিল। পাশাপাশি তার সময়ে হাসপাতাল থেকে সরকারি কোষাগারে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব জমা হয়েছে। তার একান্ত প্রচেষ্টায় চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে একমাত্র হাসপাতাল হিসেবে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সকালের পর দুপুর দুইটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত প্যাথলজি বিভাগ চালু হয়। ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে চট্টগ্রাম বিভাগের সকল হাসপাতালের মধ্যে স্বাস্থ্য সেবার বিবেচনায় প্রথম হয়েছিল জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া। চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে কর্মস্থলেই অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। চলতি বছরের ৩ জুন থেকে হাসপাতালের বৈকালিক সেবা বন্ধ হয়ে যায়।

এ ব্যাপারে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, একটু প্রশাসনিক জটিলতা চলছে। বৈকালিক সেবায় নিযুক্ত চিকিৎসকদের সম্মানী বন্ধ রয়েছে। তাই বৈকালিক সেবার বিষয়ে আলোচনা চলছে। আগে বৈকালিক সেবার সবগুলো বিভাগ খোলা থাকত। কিন্তু এখন বিষয়টি রিশিডিউলিং করা হচ্ছে। এখন প্রতিটা বিভাগ হয়তো চালু থাকবেনা । কাস্টমাইজড করা করে কিছু বিভাগ কমিয়ে আবার চালু করা হবে। আগামী দুই-একদিনের মধ্যে বৈকালিক সেবা চালু হবে।

এ ব্যাপারে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ রতন কুমার ঢালী বলেন, কিছু জটিলতার কারণে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ আছে। আমরা সীমিত পরিসরে সেবাটা আবার চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, সারাদেশ, 25 February 2025, 310 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
সারাদেশে চলমান ধর্ষণ, ছিনতাই ও ডাকাতিসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ২৫ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সকালে জেলার সাবেরা সোবহান সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজ, ইউনাইটেড কলেজ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজসহ সর্বস্তরের সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়।

banner

সকাল ১১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে দুপুর ১টা পর্যন্ত মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে তারা। সারা দেশব্যাপী ধর্ষণকারী, ডাকাত ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকার ও প্রশাসনের নিকট দাবির পাশাপাশি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে শিক্ষার্থীদের শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে শহর।

মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখেন শিক্ষার্থী ফাহিম মুনতাসির, মুনিয়া মাহিন অতিথি, জয়ন্তী বিশ্বাস, ফাইজান হাসনাত, তাসিন আরাফাত, নিশাত তাসনিম চৌধুরী, ওমর ফারুক প্রমূখ। বক্তারা বলেন, আবু সাইদ ও মুগ্ধদের রক্তের বিনিময়ে এই নতুন স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জিত হয়েছে। অথচ সরকার ও প্রশাসন দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। যে কারণে সারাদেশে ধর্ষণ, ডাকাতি, ছিনতাই ও হত্যার মতো ঘটনা অতিতের চেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ায় আমরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবী করছি। এ অবস্থায় ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড নিশ্চিত করাসহ এসব অপরাধের সাথে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা। অন্যথায় আগামীদিনে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন।