চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় মোবাইল দেখা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মনোমালিন্যের জেড়ে প্রাণ দিতে হলো নববধূ তাছলিমা আক্তারকে। নববধূকে হত্যাকারী ঘাতক স্বামী আব্দুল হামিদ (২৮) কে আটক করা হয়েছে।
আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি বুধবার বেলা ১১টার দিকে আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের হীরাপুর বড় মুড়া সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে বিজিবি ও আখাউড়া থানা পুলিশ সদস্যরা তাকে আটক করে। আব্দুল হামিদ উজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের হীরাপুর গ্রামের মধ্যপাড়ার মৃত আব্দুল লতিফের পুত্র।
এর আগে বিয়ের ৫ দিনের মাথায় গলা কেটে মঙ্গলবার দুপুরে আব্দুল হামিদ তার স্ত্রী তাছলিমা আক্তারকে ছুড়ি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। এ ঘটনায় ওই রাতেই নিহতের বড় ভাই আব্দুল কুদ্দুছ বাদী হয়ে আব্দুল হামিদকে আসামী করে থানায় মামলা করেন। মামলায় কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা দেখানো হয়েছে।
আব্দুল হামিদকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে আখাউড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আব্দুল হামিদ স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। আব্দুল হামিদ জানিয়েছে তার স্ত্রী মোবাইলে টিকটক দেখতো ও ছেলে সাথে চ্যাটিং করতো বলে সন্দেহ ছিল। আব্দুল হামিদ তার স্ত্রীর মোবাইল দেখতে চাইলে তাকে তার স্ত্রী মোবাইল ধরতে বারণ করে। এনিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। ঘটনার দিন সকালে তাছলিমা বাবার বাড়িতে যেতে চাইলে হামিদ যেতে দেয়নি। এরপর স্বামী আব্দুল হামিদ বাজার থেকে ৩০০ টাকা দিয়ে ছুঁড়ি কিনে বাড়ি ফিরে স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা করে।
থানা পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ৭/৮ মাস আগে হীরাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফ মিয়ার প্রবাসী পুত্র আব্দুল হামিদের সাথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার বাসুদেব ইউনিয়নের বাসুদেব গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জামের মেয়ে তাছলিমা আক্তারের বিয়ে হয় মোবাইল ফোনে। সম্প্রতি হামিদ দেশে ফিরে এসে গত শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠান করে স্ত্রী তাছলিমাকে বাড়িতে নিয়ে আসে। মঙ্গলবার দুপুরে হামিদের বাড়িতে শোর চিৎকার শুনে প্রতিবেশিরা এসে দেখেন বিছানায় গলাকাটা রক্তাক্ত অবস্থায় নববধু তাছলিমার নিথর দেহ পড়ে আছে। পরে তারা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
২৫ বিজিবি (সরাইল) ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক ল্যাঃ কর্ণেল আরমান আরিফ, পিএসসি বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সীমান্ত এলাকা অতিক্রম করার সময় টহলরত বিজিবি সদস্যরা আসামীকে আটক করেছে। পরে থানায় সোপর্দ করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশ থেকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় দ্বিতীয় দফায় গেল ২ হাজার ৩২০ কেজি ইলিশ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে সোমবার বিকালে দুটি পিকআপে করে এসব ইলিশ ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় পাঠানো হয়।
খুলনার এসএস করপোরেশন রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান আখাউড়া স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট মেসার্স সাকিয়াত কনস্ট্রাকশন ও প্রীতম এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে মাছগুলো ত্রিপুরার আগরতলায় রপ্তানি করে। চলতি মাসে আখাউড়া দিয়ে আরো একাধিক ইলিশের চালান রাজ্যের আগরতলায় যাওয়ার কথা রয়েছে।
সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট সাকিয়াত কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী মো. ইদন মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ত্রিপুরায় ইলিশের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সোমবার বিকালে ১০০টি কার্টনে মাছগুলো ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় পাঠানো হয়। প্রতি কেজি ইলিশ মাছের রফতানি মূল্য ১০ মার্কিন ডলার; যা বাংলাদেশের মুদ্রায় প্রায় এক হাজার ১১৩ টাকা।
এদিকে গত শুক্রবার প্রথম চালানে ১৪৩টি কার্টনে করে ৩ হাজার ২২৫ কেজি ইলিশ ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা রফতানি করা হয়েছে।
আখাউড়া স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ রপ্তানির সুযোগ রয়েছে। এ সময়ের মধ্যেই ব্যবসায়ীরা নিয়ম মেনে ভারতে ইলিশ রপ্তানি করতে পারবেন।
দুর্গোৎসব উপলক্ষে ভারতে ৩ হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। দেশের ৭৯টি প্রতিষ্ঠান এই অনুমতি পেয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো ৫০ মেট্রিক টন করে ইলিশ রপ্তানি করতে পারবে। আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত এ অনুমতি কার্যকর থাকবে।
স্টাফ রিপোর্টার:
গৌরব ও অহংকারের ১৬ ডিসেম্বর বাঙ্গালী জাতির মহান বিজয় দিবস। বিজয় দিবসে জাতি সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করবে স্বাধীনতার স্বপ্নপুরুষ, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধা, জীবন উৎসর্গকারী ও যুদ্ধাহত বীর সন্তানদের, যাঁদের ত্যাগে অর্জিত হয়েছে আমাদের কাঙ্খিত বিজয়; জাতি অর্জন করেছে লাল সবুজ পতাকা এবং স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষে মহান বিজয় দিবস-২০২২ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। আজ প্রত্যুষে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের ফারুকী পার্কে ৫০ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে- ফারুকী পার্কস্থ স্মৃতিসৌধে সরকারি-বেসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত বিভাগ/সংস্থা সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনতা কর্তৃক স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পন, সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সরকারি, বেসরকারি স্বায়ত্ব শাসিত এবং বেসরকারি ভবনে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৮টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিয়াজ মুহম্মদ স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবে জেলা প্রশাসন। এ সময় কুচকাওয়াজ ও অভিবাদন গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে সকাল সাড়ে ১০টায় একই মাঠে মোরগ লড়াই ও বেলা ১১টায় কারাতে প্রতিযোগিতা, একই মাঠে বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদেরকে সংবর্ধনা প্রদান এবং জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে বেলা ১১টায়। বেলা সাড়ে ১১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া মূক ও বধির নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় ও সরকারি শিশু পরিবারের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর জেলার সকল মসজিদে বাদ জোহর জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা এবং মুক্তিযুদ্ধে শহিদ ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিশেষ মোনাজাত এবং অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়সমূহে সুবিধাজনক সময়ে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি এদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সকল সরকারি হাসপাতাল, শিশু সদন, জেলখানা, এতিমখানা ও শিশু পরিবারে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে। বিকেল আড়াটায় ব্রাহ্মণবড়িয়া নিয়াজ মুহাম্মদ স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসন একাদশ বনাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা ও মুক্তিযোদ্ধা একাদশ দলের মধ্যে প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। বিকাল ৩টায় সরকারি মডেল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরষ্কার বিতরণ করা হবে। বিকেল সাড়ে ৫টায় মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে সাংস্কৃতিক ও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হবে।
মহান এ দিবসের সকল অনুষ্ঠানে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেশপ্রেমি মানুষের স্ববান্ধব উপস্থিতি কামনা করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম।
অনুরূপ কর্মসূচি জেলার সকল উপজেলায় পালিত হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় এক ইট ভাটাকে ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও সিলগালা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আজ ৩ এপ্রিল বুধবার দুপুরে উপজেলার মোগড়া এলাকায় মেসার্স তিতাস ব্রিকস (সুরমা) কে এ জরিমানা ও সিলগালা করেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম। এ সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী প?রিচালক বিসল চক্রবর্ত্তী, আখাউড়া থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা উপস্থিল ছিলেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক বিসল চক্রবর্ত্তী জানান, জেলার আখাউড়া উপজেলায় বিভিন্ন ইট ভাটায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে দুপুরে আখাউড়া উপজেলার মোগড়া এলাকায় মেসার্স তিতাস ব্রিকস (সুরমা) দেখা যায় পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র ও ইট ভাটার জন্য অবৈধ ভাবে মাটি এনে ইট ভাটা পরিচালনা করে আসছিলো। পরে অবৈধভাবে ইট ভাটায় ইট প্রস্তুত করার দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন আইনে মেসার্স তিতাস ব্রিকস (সুরমা) কে দুটি মামলায় ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
পাশাপাশি ইট ভাটাটি অবৈধ হওয়ায় আংশিক গুড়িয়ে দেয়া হয় এবং ইট ভাটার সব কার্যক্রম বন্ধ করে ভাটাটি সিলগালা করা হয়। অভিযানে আরো ২টি ইট ভাটার মালিককে সরকারি আইন মেনে ইট ভাটা পরিচালার বিষয়ে সতর্ক করা হয়। অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে তাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।
চলারপথে রিপোর্ট :
ঈদুল আযহার আর মাত্র দুদিন বাকি। ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে ঈদের ছুটি। টানা ৭ দিনের ছুটি পেয়ে অনেকেই ছুটছেন পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে। সেই জেরে আজ শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে ছিল ভারতগামী যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়।
আখাউড়া চেকপোস্টে ইমিগ্রেশনে আজ ১৪ জুন দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে অপেক্ষা করছেন কয়েকশ মানুষ। তাদের সেই লাইন ডেস্ক থেকে বারান্দা পেরিয়ে পৌঁছেছে ইমিগ্রেশন ভবনের বাইরের প্রধান সড়কে। তীব্র গরম আর রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছেন তারা। অন্যদিকে যাত্রীদের চাপে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের।ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা যায়, ঈদে টানা ৭ দিনের সরকারি ছুটি পাওয়ায় ভারতে ভ্রমণকারী এবং চিকিৎসা সেবা নিতে যাওয়া যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। যশোরের বেনাপোল বন্দরের ভিড় এড়াতে অনেক যাত্রী আখাউড়া চেকপোস্ট ব্যবহার করছেন। তবে এখানে এসেও দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ঈদের ছুটি শুরুর দিন শুধু শুক্রবারই প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষ আখাউড়া চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে গিয়েছেন।
ভারতগামী কয়েকজন জানান, দীর্ঘদিন পর ভিসা পেয়েছেন। তাই ঈদের ছুটিতে ভারতের দর্শনীয় স্থান ঘুরতে যাচ্ছেন। তবে আখাউড়া ইমিগ্রেশন ভবনটি ছোট এবং জরাজীর্ণ হওয়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। যাত্রীদের দুর্ভোগ নিরসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কার্যকরী পদক্ষেপের দাবি জানান তারা।
আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ইনচার্জ খায়রুল আলম জানান, ঈদের ছুটির কারণে চাপ অনেকটা বেশি। সাধ্যমতো যাত্রীদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।
চলারপথে রিপোর্ট :
বুক ভরা আশা নিয়ে বিদেশ পাড়ি দেওয়া ফরিদ মিয়া বাড়ি ফিরেছেন ঠিকই কিন্তু জীবিত নয় কফিনবন্দি হয়ে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে ১৮ দিনের মাথায় ৮ জুলাই সোমবার রাতে তার মরদেহ নিজ জন্মভূমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের তুলাবাড়ি গ্রামে আসলে অশ্রুসিক্ত নয়নে শেষ বিদায় দিলেন আত্মীয়-স্বজনসহ পাড়া প্রতিবেশীরা।
ধার-দেনা করে ভাগ্য বদলের আশায় সৌদি আরবে পাড়ি জমিয়েছিলেন ফরিদ মিয়া। সেখানে রিয়াদ শহরে বড় একটি কোম্পানিতে শ্রমিকের কাজ করতেন। দেশে আসার আনন্দে স্ত্রী, সন্তানসহ মায়ের জন্য কেনাকাটার পর ল্যাগেজ বেঁধে সব প্রস্তুতি শেষ করেন। প্রতিক্ষার পালা যেন তার শেষ হচ্ছে না, কবে দেশে ফিরবেন। এরই মধ্যে দেশে আসার ৩ দিন আগে হঠাৎ গত ২০ জুন সৌদি আরবের রিয়াদে স্ট্রোক করে তিনি ইন্তেকাল করেন।
এদিকে আজ ৯ জুলাই মঙ্গলবার বাদ জোহর তুলাবাড়ি জামে মসজিদ মাঠে জানাযা শেষে ধাতুরপহেলা কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়।
এর আগে, রাতে সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে সেখান থেকে পরিবারের সদস্যরা তার মরদেহ গ্রহণ করেন। এরপর সড়ক পথে মরদেহ লাশবাহী একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছলে শুরু হয় শোকের মাতম। পরিবার পরিজন আর স্বজনদের আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। এক নজর দেখতে পাড়া প্রতিবেশী আত্মীয় স্বজনসহ এলাকার শতশত লোকজন তার বাড়িতে ভিড় করেন।
নিহত ফরিদ মিয়া ওই গ্রামের মৃত ছায়েদ মিয়ার ছেলে। তার পরিবারে মা, স্ত্রী, ১ মেয়ে ও ২ ছেলে রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ থেকে প্রায় ৭ বছর আগে ফরিদ মিয়া সৌদি আরব পাড়ি জমান। সেখানে রিয়াদ শহরে তিনি একটি বড় কোম্পানিতে কাজ করতেন। সর্বশেষ গত প্রায় ২ বছর আগে দেশে আসেন। গত ২৪ জুন দেশে আসার কথা ছিল। বাড়িতে আসার ৩ দিন আগে স্ট্রোক করে মায়াভরা এ পৃথিবী থেকে না ফেরার দেশে চলে যান।
ইউপি সদস্য মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ফরিদ খুবই একজন কর্মঠ লোক ছিলেন। দেশে থাকতে কাজ ছাড়া কিছুই বুঝতেন না। পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফোঁটাতে অনেক কষ্ট করে বিদেশে যান। এরপর পরিবারটা ভালোই চলছিল। হঠাৎ স্ট্রোক করে এভাবে তিনি মারা যাবেন তা কখনো ভাবিনি। বাদ জোহর জানাজার শেষে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।