চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল প্রেসক্লাবের ত্রিবার্ষিক নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।
আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি বুধবার ৫ পদে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সভাপতি পদে ৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদ আলী। সাধারণ সম্পাদক পদে ৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন তৌফিক আহমেদ তফছির। সহ-সভাপতি পদে ৯ টি করে পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন সৈয়দ কামরুজ্জামান ইউসুফ ও সামছুল আরেফিন। সাহিত্য ও পাঠাগার সম্পাদক পদে ৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন জহিরুল ইসলাম রিপন। এর আগে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যুগ্ম সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন শেখ মো. ইব্রাহিম, অর্থ সম্পাদক পদে আবদুল করিম, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মোহাম্মদ মাসুদ, দপ্তর সম্পাদক পদে মো. মুরাদ খান, কার্যনির্বাহী সদস্য পদে এম. এ মুসা ও জেসমিন সুলতানা মুসা।
নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেছেন সরাইল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সহিদ খালিদ জামিল খান। সরাইল প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির সকল সদস্যকে বিভিন্ন ব্যক্তি, দল ও সংগঠন অভিনন্দন জানাচ্ছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে জান্নাতুল ফেরদৌস (১৪) নামে এক কিশোরী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
আজ ২০ নভেম্বর সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের নরসিংহপুর গ্রামে আজবপুর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
জান্নাতুল ফেরদৌস উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের নরসিংহপুর গ্রামের আজবপুর এলাকার মৃত আসিদ মিয়ার মেয়ে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, জান্নাতুল ফেরদৌসের জন্মের আগেই তার বাবা আসিদ মিয়া মারা যায়। তারপর মোর্শেদা বেগম মানুষের বাড়িতে বাড়িতে কাজ করে জান্নাতুল ফেরদৌসকে বড় করেন। সকালে মোর্শেদা বেগম বাজারে গেলে এ সুযোগে জান্নাতুল ফেরদৌস ঘরের তীরের সঙ্গে ওড়না পেছিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। পরে পুলিশকে খবর দিলে তারা দরজা ভেঙ্গে নিহতের লাশ উদ্ধার করে।
এ ব্যাপারে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম জানান, গলায় ফাঁস দিয়ে এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে দুপুরে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে প্রেরণ করেছি। তবে কি কারণে গলায় ফাঁস দিয়ে কিশোরী আত্মহত্যা করেছে তা জানা যায়নি।
চলারপথে রিপোর্ট :
মায়ের স্বপ্ন পূরণে হেলিকপ্টার ও ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে বিয়ে করতে সরাইলে যান বর এনাম। আবার বিয়ে শেষে নববধূকে নিয়ে হেলিকপ্টারে চড়ে নিজ বাড়ি হবিগঞ্জের সদর উপজেলার উলুহার গ্রামে ফিরেন বর।
৩ জুন সোমবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তর কুট্টাপাড়া গ্রামের সানজিদা আক্তারকে (১৮) বিয়ে করেন তিনি। এর আগে আকাশপথে হেলিকপ্টারে চড়ে সরাইল উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্ব কুট্টাপাড়া গ্রামের খেলার মাঠে নামেন বর এনাম।
এ সময় হেলিকপ্টারটি দেখতে ভিড় জমান এলাকাবাসী। সেখান থেকে ফুল দিয়ে সাজানো একটি ঘোড়ার গাড়ি করে কনের বাড়িতে যান তিনি। এছাড়া মাইক্রোবাসে শতাধিক বরযাত্রীও যায় কনের বাড়িতে।
হবিগঞ্জের সদর উপজেলার উলুহার গ্রামের ইসমাইল মিয়ার ছেলে এনাম সিঙ্গাপুর প্রবাসী। আর কনে সরাইল উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তর কুট্টাপাড়া গ্রামের সফর আলী মেয়ে সানজিদা আক্তার (১৮)।
এলাকাবাসী জানান, তাদের গ্রামে এই প্রথম হেলিকপ্টার ও ঘোড়ার গাড়ি করে বিয়ে করতে এসেছেন কোনো বর।
এনাম বলেন, আমার মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করতে আসা। আজ আমার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আমি অনেক খুশি। আমাদের দাম্পত্য জীবনের জন্য সবাই দোয়া করবেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলায় ১৪ কেজি গাঁজাসহ রুবেল মিয়া (৩০) ও বাদশা মিয়া (২৬) নামের দুই মাদক কারবারীকে গ্রেফতার করেছেন সরাইল থানা পুলিশ।
আজ ৬ এপ্রিল শনিবার সকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সরাইলের বাড়িউড়া এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে মাদক পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত সিএনজি চালিত অটোরিকশাটিও।
পুলিশ জানায়, শনিবার গোপন সংবাদের তথ্যের ভিত্তিতে সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে এস আই মো. ফারুক হোসেন ও এএসআই রুবেল আখন একদল পুলিশ নিয়ে মহাসড়কের বাড়িউড়া এলাকায় অভিযান চালায়। অভিযানকালে তারা মহাসড়কের উত্তর পাশে কালু মিয়ার খাজা গরীবে নেওয়াজ ষ্টোর এর দক্ষিণ পাশের রাস্তার উপরে একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা আটক করে তল্লাশি চালায়। সিএনজি থেকে ১৪ কেজি উদ্ধার করেন। সেই সাথে সিএনজি’র যাত্রী ২ মাদক ব্যবসায়ি রুবেল ও বাদশাকে গ্রেফতার করেন। রুবেল হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার ধর্মঘর ইউনিয়নের দেবনগর গ্রামের প্রয়াত তৌহিদ মিয়ার ছেলে। আর বাদশা কিশোরগঞ্জের ভৈরবের রামশংকরপুর গ্রামের মো. শফিকুল ইসলামের ছেলে।
তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে। তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত গাঁজার মূল্য ১ লাখ ১২ হাজার টাকা। মাদক ব্যবসায়ি রুবেল জানায়, গত এক বছরেরও অধিক সময় ধরে এই রোডে মাদক পাচারের ব্যবসা করে আসছে সে। এক চালান পাচার করতে পারলে ৩০-৪০ হাজার টাকা আয় হয়।
সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, গ্রেফতারকৃত ২ ব্যক্তি পেশাদার মাদক ব্যবসায়ি। মাদকের সাথে কোন ধরণের আপোষ নেই। মাদক কারবারী ও সেবনকারীদের বিরূদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে, এবং এ ব্যাপারে আমরা সব সময় কঠোর অবস্থানে আছি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের ঘন্টাব্যপি সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ১৫জন আহত হয়েছে। উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের আখিতারা গ্রামে আজ ২০ আগস্ট রবিবার সকাল ১১টায় সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত রাতে আখিতারা বাজারে চায়ের দোকানে আখিতারা গ্রামের মো, আব্বাস উদ্দিন এর ছেলে মামুন খান ও একই এলাকার মো, আরব আলীর ছেলে মাহমুদের বাক-বিতন্ডা হয়। এর জের ধরে সকালে দু’পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
ঘন্টাব্যাপী চলমান সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন লোক আহত হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে।
এ ব্যাপারে সরাইল থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, সংঘর্ষের স্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই তিতাস নদীতে ড্রেজারে কাটছে মাটি। সেই মাটি যাচ্ছে এক কিলোমিটার দূরে এশিয়া নামক ইটভাটায়। ভাটায় ব্যবহারের পরও ওই মাটি চড়া দামে অন্যত্র বিক্রি করছে একটি সিন্ডিকেট। ওদিকে স্বল্প প্রস্থের নদীর গভীরতা বাড়তে থাকায় দু’পাড়ের শতশত একর ফসলি জমি এখন হুমকির মুখে পড়েছে।
সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের চানপুর এলাকার নদী সংলগ্ন ফসলি মাঠে এমন হরিলুট করছে মাটি খেকোঁ চক্র। নদী ও মাটি খেকোঁ প্রভাশালী সিন্ডিকেটের কাছে অসহায় সেখানকার কৃষকরা। ভয়ে মুখ খোলার সাহসও করছেন না তারা।
সরজমিন অনুসন্ধান ও ভুক্তভোগী কৃষকরা জানায়, ধর্মতীর্থ এলাকার কৃষকরা বারবার নদী, ফসলি জমি ও মাটি খেঁকো একটি চক্রের শিকার হচ্ছেন। ওই চক্রটির কাজ হচ্ছে ইটভাটায় মাটি বিক্রির বাণিজ্য করা। এই লক্ষে তারা ধর্মতীর্থ চানপুর সহ অত্র এলাকার হাওরের ফসলি জমির মালিকদের টার্গেট করে। সহজ সরল কৃষকদের ফুসলিয়ে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ফসলি জমি ও গোচারণ ভূমির মাটি ক্রয় করে আসছে।
একটি জমি ক্রয় করে আশপাশের জমির মালিকদের বেকায়দায় ফেলে মাটি বিক্রি করতে বাধ্য করে ওই চক্রটি। হাওরের শতশত একর ফসলি জমি এখন চাষাবাদের অযোগ্য হয়ে পড়ে আছে। ফসলি জমির পর এখন তারা নদীর দিকে নজর দিয়েছেন। চানপুর মৌজায় তিতাস নদীতে গত ১৫ দিন ধরে ড্রেজার দিয়ে মাটি কেটে এক কিলোমিটার দূরে সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক সড়কের পাশে এশিয়া নামক ইটভাটায় নিচ্ছেন। সেখান থেকে ট্রাকে করে বিভিন্ন ইটভাটায় মাটি বিক্রি করছেন। ওদিকে ড্রেজারে লাগাতার মাটি উত্তোলন করায় নদীর গভীরতা অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এতে করে নদীর দু’পাড়ে শতশত একর ফসলি জমি এখন ভেঙ্গে নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। কৃষকদের আর্তনাদ ও প্রতিবাদ কোন আমলে নিচ্ছেন না প্রভাবশালী মাটি খেঁকোরা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে দেখা যায় নদীর মাঝখানে বিকট শব্দে চলছে ড্রেজার। প্রায় ৮-১২ ইঞ্চি প্রস্থের পাইপ দিয়ে এক কিলোমিটার দূরে মাটি যাচ্ছে। ড্রেজারের পরিদর্শক নুর নবী দাঁড়িয়ে আছেন। গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়েই ড্রেজারের কাছ থেকে দ্রুত সটকে পড়ার চেষ্টা করেন নুরনবী।
ড্রেজার চালক লাখাই থানার মো. ইসমাঈল মিয়া (৪০) নদীর মাটি ইটভাটায় যাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ঠিকাদার মফিজ মিয়া, হযরত আলী ও সাইজ উদ্দিন। আমরা শ্রমিক। ৪ জনের মধ্যে আমিসহ দু’জনের মাসিক বেতন ৪০ হাজার টাকা। অপর দু’জনের মাসিক বেতন ৩০ হাজার টাকা। অনুমতি বা বৈধ কাগজপত্র আছে কিনা আমরা জানি না।
ড্রেজার চালিয়ে নদীতে মাটি কাটাই আমাদের কাজ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সেখানকার একাধিক কৃষক সামনে পেছনে তাকিয়ে বলেন, তারা হাওরের ফসলি জমি খাইছে। এখন মাটি কেটে যেভাবে গভীর করছে নদীর পাড়ের ফসলি জমি গুলো ভেঙ্গে নদীতে পড়ে যাবে। আমরা শেষ। স্যার পারলে জমি গুলো রক্ষা করে আমাদের বাঁচান। আমাদের নাম লিখলে তারা মেরে ফেলবে। ঠিকাদার মফিজ মিয়া নদীর মাটি ইটভাটায় বিক্রির কথা স্বীকার করে বলেন, এশিয়া ইটভাটায় মাটি বিক্রি করছি। অনুমতির কথা দূর্গাচরণ দাদা বলতে পারবে। তিনিই কাজটি করছেন। আমরা শুধু দেখা শুনা করি।
দূর্গাচরণ দাস ও মাটি বিক্রির কথা স্বীকার করে বলেন, ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে নদী খননের অনুমতি এনেছি। সেখানে মাটি কাটার কথা বলা আছে। তবে ইটভাটায় বিক্রির কথা বলা নেই। এটি উন্নয়ন প্রকল্প। মাটি বিক্রি না করলে রাখব কোথায়? ফসলি জমির ক্ষতির জন্য আমি দায়বদ্ধ।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবা উল আলম ভূঁইয়া বলেন, দূর্গাচরণ দাস অনুমতির কোন কাগজ আমাকে দেখাতে পারেননি। অনুমতি ছাড়া উনি যা করছেন, তা করতে পারেন না। আমি উনাকে ড্রেজারে নদীতে মাটি কাটা বন্ধ রাখতে বলেছি। কথা না শুনলে আইনগত ব্যবস্থা নিব।