অনলাইন ডেস্ক :
হবিগঞ্জের রশিদপুর গ্যাস ফিল্ডে নতুন আরও দুটি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়েছে। ফলে এ ক্ষেত্র থেকে জাতীয় গ্রিডে দিনে আরো ১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যুক্ত হয়েছে।
আজ ১৮ ফেব্রুয়ারি রবিবার দুপুরে জেলার বাহুবল উপজেলায় অবস্থিত রশিদপুর গ্যাসফিল্ডে কূপ দুটির উদ্বোধন করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
হবিগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী ও জেলা প্রশাসক (ডিসি) জিলুফা সুলতানাসহ অন্যরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) জানায়, ‘রশিদপুর-১১ নম্বর কূপ খনন’ প্রকল্পে সরকারের ২৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে হয়েছে। গ্যাস উন্নয়ন তহবিল থেকে ৯৫ ভাগ এবং বেসরকারি কোম্পানির তহবিল থেকে বাকি ৫ ভাগ অর্থায়নের কথা। তবে এখন এটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে।
রশিদপুর গ্যাস ক্ষেত্র থেকে আগে দিনে ২৬ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হত। এখন ১৮ মিলিয়ন ঘনফুট বেড়ে তা হয়েছে ৪৪ মিলিয়ন ঘনফুট।
পেট্রোবাংলা সূত্র আরো জানায়, দেশের পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্র থেকে মোট ৬ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকার গ্যাস উৎপাদন করেছে সরকার। ৪৮ বছর ধরে উৎপাদনের পরও এ গ্যাসক্ষেত্রগুলোতে অবশিষ্ট মজুদ রয়েছে আরও ৩ লাখ ১৭ হাজার কোটি টাকার গ্যাস।
বক্তারা বলেন, দেশে উৎপাদিত মোট গ্যাসের অর্ধেকই হবিগঞ্জে। তবে ৪৮ বছরে যদি ৬ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকার গ্যাস উৎপাদন হয়ে থাকে তাহলে, ৩ লাখ কোটি টাকার বেশি গ্যাস উৎপাদন হলো হবিগঞ্জ জেলা থেকেই।
অনলাইন ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার রকেট বিজ্ঞানী ড. জাহিদুল হাসান মুশফিকুর রহমান মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
ড. জাহিদুল রহমান নামেই সর্বাধিক পরিচিত এই খ্যাতনামা প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদ নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরিতে রকেট ডিজাইন ও উন্নয়নে দীর্ঘ তিন দশক ধরে নিয়োজিত ছিলেন। গত ১৬ অক্টোবর লস অ্যাঞ্জেলেসের সিডার সাইনাই হাসপাতালে তিনি মারা যান।
ড. জাহিদুল রহমান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেণিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি নেন এবং টেক্সাস এঅ্যান্ডএম ইউনিভার্সিটিতে পোস্ট ডক্টরাল ফেলো হিসেবে অগ্রসর গবেষণায় নিয়োজিত হন।
নাসার খ্যাতনামা বিজ্ঞানীদের সঙ্গে পৃথিবীর সীমানা ভেদ করে গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে মহাযাত্রা, জানা ও জানানোর প্রচেষ্টায় গবেষণা এবং অগ্রসরে ড. জাহিদুল রহমানের অবদান ছিল উল্লেখযোগ্য। সম্প্রতি নাসার উদ্যোগে মঙ্গল গ্রহ অভিযানে রোভারের ডিজাইন ও নির্মাণে নিয়োজিত দক্ষ দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যও ছিলেন তিনি।
অনলাইন ডেস্ক :
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত চার দফা দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে সরকার। যার ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করার ঘোষণা দিয়েছেন। আজ ১৬ মে শুক্রবার সন্ধ্যায় ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এস এম এ ফায়েজের উপস্থিতিতে এ ঘোষণা দেন জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম।
জবি উপাচার্য বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালন বাজেট বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ বৃদ্ধি করে শিক্ষার্থীদের প্রথম দাবির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। আবাসন সংকট নিরসনে দ্রুত অস্থায়ীভাবে নির্মাণকাজ শুরু করা হবে। এছাড়া দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণের কাজ ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে। পরে অনশনরত শিক্ষার্থীদের পানি পান করানো হয়।
ইউজিসির চেয়ারম্যান বলেছেন, আমরা সারা দিন এটা নিয়ে কাজ করেছি। ইউজিসি একটি পরিবার হিসেবে সবাই মিলে সমাধান করতে পারব। আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি একসঙ্গে বসে সব সমাধান করব। আপনাদের সব দাবি বাস্তবায়নে আমরা কাজ করছি।
জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছউদ্দীন বলেন, আমাদের চতুর্থ দাবি ছিল আমাদের ওপর হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। হামলার ঘটনায় পুলিশ দুঃখ প্রকাশ করেছে। এছাড়া সাত দিনের মধ্যে হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। এছাড়া সরকার আমাদের সব দাবি মেনে নিয়েছে।
জানা যায়, শিক্ষার্থীদের আগের তিন দফা দাবির সাথে পরবর্তীতে নতুন আরও এক দাবি যুক্ত হয়। সেটি হলো ১৪ মে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের অতর্কিত হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।
এর আগে শিক্ষার্থীদের দেওয়া তিন দফা দাবি হলো-বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি চালু করা, জবির প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করে অনুমোদন, দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ একনেক সভায় পাস ও বাস্তবায়ন।
অনলাইন ডেস্ক :
চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষা শুরু হচ্ছে বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি)। এবার সারাদেশে তিন হাজার ৭০০টি কেন্দ্রে ২৯ হাজার ৭৩৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবে।
সূচি অনুযায়ী, প্রথম দিনে বৃহস্পতিবার বাংলা প্রথমপত্র দিয়ে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। লিখিত পরীক্ষা শেষ হবে আগামী ১২ মার্চ। ব্যবহারিক পরীক্ষা ১৩-২০ মার্চের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি সূত্র জানায়, ১১টি বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থী ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৯ লাখ ৯২ হাজার ৮৭৮ এবং ছাত্রী ১০ লাখ ৩১ হাজার ৩১৪ জন। মোট কেন্দ্র ৩ হাজার ৭০০টি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২৯ হাজার ৭৩৫টি।
বোর্ডভিত্তিক হিসাবে সবচেয়ে বেশি ৪ লাখ ৪ হাজার ৬৩৭ পরীক্ষার্থী ঢাকা বোর্ডে। এছাড়া রাজশাহীতে ২ লাখ ২৪৫ জন, কুমিল্লায় ১ লাখ ৮০ হাজার ৫২৭, যশোরে ১ লাখ ৫৯ হাজার ৩৭১, চট্টগ্রামে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৫৯০, বরিশালে ৮৮ হাজার ৫৮৬, সিলেটে ১ লাখ ৯ হাজার ৪১২, দিনাজপুরে ১ লাখ ৯৯ হাজার ৪৩৬ এবং ময়মনসিংহে ১ লাখ ১৯ হাজার ৭৫ জন।
এছাড়া মাদরাসা বোর্ডের অধীনে দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ২ লাখ ৯০ হাজার ৯৪০ জন। তাদের মধ্যে ছাত্র ৯৪ হাজর ৮৪১ জন এবং ছাত্রী ৩১ হাজার ৫৩২ জন। আর কারিগরি বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাাখ ২৬হাজার ৩৭৩ জন। এরমধ্যে ছাত্র ৯৪ হাজার ৮৪১ জন এবং ছাত্রী ৩১ হাজার ৫৩২ জন।
৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড এসএসসি, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড দাখিল ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনাল পরীক্ষা আয়োজনের দায়িত্ব পালন করছে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, এসএসসি পরীক্ষার সব প্রস্তুতি শেষ। প্রশ্নফাঁস হওয়ার কোনো সুযোগই নেই। কেউ এ নিয়ে গুজব ছড়ালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে।
পরিদর্শনে যাবেন না শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ বিবেচনায় নিয়ে এবার এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র পরিদর্শনে যাবেন না শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। কয়েকদিন আগে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে এ তথ্য জানিয়ে দেন তিনি। মন্ত্রী মনে করেন কেন্দ্র পরিদর্শনের কারণে শিক্ষার্থীদের ওপর এক ধরনের হয়রানিমূলক পরিস্থিতি, মানসিক যন্ত্রণা ও জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়।
তিনি বলেছেন, পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীরা এমনিতেই একটা ট্রমার মধ্যে থাকে। কেন্দ্র পরিদর্শনের নামে ব্যাপক জনসমাগম এ মানসিক চাপ আরও বাড়িয়ে দেয়। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রে প্রবেশে বিঘ্ন ঘটে।
মহিবুল হাসান চৌধুরী আরও বলেন, আইন অনুযায়ী কেন্দ্র পরিদর্শক ছাড়া অন্য কারও কেন্দ্রে প্রবেশের অনুমতি নেই। তাই পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ যেন পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ না করেন সে বিষয়ে সবার সচেতন থাকা উচিত।
বন্ধ কোচিং সেন্টার
এদিকে, প্রশ্নফাঁসের গুজব ও নকলমুক্ত পরিবেশে এসএসসি পরীক্ষা আয়োজনে মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) থেকে দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আগামী ১২ মার্চ পর্যন্ত একমাস সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে নানা উদ্যোগ
প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে কোচিং বন্ধ ছাড়াও নানা উদ্যোগ নিয়েছে মন্ত্রণালয়। পরীক্ষার কেন্দ্রে জেলা পর্যায়ের ট্রেজারি ও উপজেলা বা থানা পর্যায়ে থানা হেফাজতে সংরক্ষণ করা হবে। থানা বা ট্রেজারি থেকে পুলিশ প্রহরায় প্রশ্ন কেন্দ্রে কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রশ্নফাঁস বা এ সংক্রান্ত গুজব ঠেকাতে ফেসবুকসহ সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলবে নজরদারি। এ কাজে তৎপর চক্রগুলোর কার্যক্রমের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো নজরদারি চালাবে। প্রশ্নফাঁস বা পরীক্ষার্থীদের কাছে উত্তর সরবরাহে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিক্ষা বোর্ডের যত নির্দেশনা
এসএসসি শিক্ষার্থীদের প্রতি শিক্ষা বোর্ড থেকেও কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে অবশ্যই পরীক্ষার্থীদের কক্ষে আসন গ্রহণ করতে হবে। প্রশ্নপত্রে উল্লিখিত সময় অনুযায়ী পরীক্ষা হবে। প্রথমে বহুনির্বাচনী ও পরে সৃজনশীল বা রচনামূলক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে এবং দুই পরীক্ষার মধ্যে কোনো বিরতি থাকবে না। এছাড়া পরীক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পরীক্ষা শুরুর তিনদিন আগে প্রবেশপত্র সংগ্রহ করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছিল।
এদিকে, পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষায় সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে। কেন্দ্রসচিব ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি বা পরীক্ষার্থী পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল ফোন আনতে এবং ব্যবহার করতে পারবেন না।
থাকবে কুইক রেসপন্স টিম
এসএসসি পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীদের যে কোনো সমস্যা নিরসনে ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে কুইক রেসপন্স টিম (কিউআরটি) প্রস্তুত থাকবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মুনিবুর রহমান।
তিনি জানিয়েছেন, পরীক্ষার্থীদের যে কোনো অসুবিধা মোকাবিলা করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের প্রতিটি জোন কর্তৃক আলাদা আলাদা কুইক রেসপন্স টিম (কিউআরটি) গঠন করা হবে। এছাড়া যে কোনো জরুরি প্রয়োজনে ৯৯৯-এ ফোন করে সহায়তার আহ্বান জানানো যাবে। এক্ষেত্রে ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার চেষ্টা করা হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত পুলিশ সদস্যদের আর যোগদান করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, অপকর্মের সাথে জড়িত থাকায় অনেক পুলিশ সদস্য কর্মস্থলে যোগ দিচ্ছে না। যারা এখনও কর্মস্থলে যোগ দেননি, তাদের আর যোগদান করতে দেওয়া হবে না। পুলিশের যেসব সদস্য অপকর্মের সাথে জড়িত তাদের কিছুতেই মাফ করা হবে না।
আজ ১৮ সেপ্টেম্বর বুধবার সকালে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৪০তম বিসিএস (আনসার) ক্যাডার কর্মকর্তা ও ২৫তম ব্যাচ (পুরুষ) রিক্রুট সিপাহিদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি আনসার ভিডিপি একাডেমিতে সমাপনী অনুষ্ঠানে খোলা জিপে চড়ে প্যারেড গ্রাউন্ড পরিদর্শন করেন।
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ছয়জন বিসিএস কর্মকর্তা ও ৯০৮ জন রিক্রুট সিপাহী সমাপনী কুচকাওয়াজের মাধ্যমে তাদের জন্য নির্ধারিত মৌলিক প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করেন। বিসিএস কর্মকর্তারা দীর্ঘ ১২ মাস মৌলিক প্রশিক্ষণ নেন। একইসঙ্গে মাস্টার্স অব হিউম্যান সিকিউরিটি (এমএইচএস) কোর্স সম্পন্ন করেছেন। অপরদিকে রিক্রুট সিপাহিরা ৬ ছয় মাসের মৌলিক প্রশিক্ষণ নেন।
ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। তার পদত্যাগের পর অনেক পুলিশ সদস্য আত্মগোপনে চলে যান। আবার উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে বেশিরভাগ পুলিশ সদস্য কাজে যোগ দেননি। পরে নোটিশ দিয়ে তাদের কর্মে ফেরায় পুলিশ সদর দফতর। কিন্তু এমন নোটিশ পেয়ে বেশিরভাগ কাজে যোগ দিলেও এখনো ১৮৭ জন সদস্য কর্মস্থলে এখনও অনুপস্থিত রয়েছেন বলে গতকাল পুলিশ সদর দফতর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
রাতে পুলিশ সদর দফতরের মিডিয়া বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পটপরিবর্তনের পর গত ১ আগস্ট থেকে মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত ১৮৭ জন কর্মস্থলে যোগাযোগ না করে অনুপস্থিত রয়েছেন।
আজ বাংলাদেশ আনসার একাডেমিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যেসব পুলিশ সদস্য এখনও কর্মস্থলে যোগদান করেননি, তাদের আর যোগদান করতে দেওয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন নেওয়া হবে। এখনও কাজে যোগ দেয়নি এমন পুলিশের সংখ্যা খুবই নগণ্য। আমরা তাদের ব্যাপারে তথ্য অনুসন্ধান করছি। আপনারাও তাদের সম্পর্কে কোনো তথ্য থাকলে আমাদের জানাতে পারেন।
সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা জনগণের সুবিধার জন্য দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী দীর্ঘদিন ধরে মাঠে আছে। তাদের একটা ক্ষমতার ভেতর কাজ করতে হবে। আমাদের অন্য বাহিনীতে কিছু স্বল্পতা রয়ে গেছে।
আনসার বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ্যে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ৫ আগস্ট স্বৈরাচার সরকার পতনের পর আজ বাংলাদেশ নবজাগরণে উজ্জীবিত। বিগত সরকার ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো জনগণের হতে পারেনি বলেই ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে স্বৈরাচার সরকার দেশত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে। এই গণঅভ্যুত্থানে আত্মাহুতি দিয়েছেন আবু সাঈদ, মীর মুগ্ধ, ইয়ামিন ও ফাইয়াজদের মতো হাজারো ছাত্র-জনতা। আপনাদের কাছে আমার চাওয়া, দেশ ও জনগণের কল্যাণে আপনারা নিজেদের সপে দিয়ে সততা, নিষ্ঠা ও ন্যায্যতার মাপকাঠিতে কাজ করবেন। আপনাদের সকলের সহযোগিতায় বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।
আনসার বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর থানা, ট্রাফিক, বিমানবন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর সুরক্ষায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেছেন। বিশেষ করে আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা ডিএমপির থানাগুলোর অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে এবং হযরত শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে।
আনসার বাহিনীকে ধন্যবাদ দিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ বাহিনীর স্বল্পতার মাঝেও রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনাতে আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা সাহসিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে। জাতির জরুরি প্রয়োজনে সাহসী ভূমিকা রাখার জন্য বাহিনীটির সব সদস্যের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ, বাহিনীর অতিরিক্ত মহাপরিচালক, আনসার ও ভিডিপি একাডেমির ভারপ্রাপ্ত কমান্ড্যান্ট, উপ মহাপরিচালকবৃন্দ, বাহিনীর পরিচালকরাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ব্রিকসকে বহুমুখী বিশ্বের বাতিঘর হিসেবে আবির্ভূত হতে হবে। আমাদের এই বহুমুখী বিশ্বে ব্রিকসকে একটি বাতিঘর হিসাবে প্রয়োজন। আমরা আশা করি আমাদের প্রতি প্রতিক্রিয়ার সময় এটি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে আবির্ভূত হবে। আমাদের শিশু ও যুবকদের কাছে অবশ্যই প্রমাণ করতে হবে আমাদের জাতিগুলো সংকটে পড়তে পারে, কিন্তু কখনই পরাজিত হবে না।
জোহানেসবার্গের স্যান্ডটন কনভেনশন সেন্টারে ৭০টি দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে ফ্রেন্ডস অব ব্রিকস লিডারস ডায়ালগ ‘নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক অব ব্রিকস’-এর সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের পক্ষে ভাষণ প্রদানকালে তিনি একথা বলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাপোসাও এ সংলাপে বক্তব্য রাখেন।
ব্রিকস প্লাস ডায়ালগের ফাঁকে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম রাইসি ও ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রীর সাথে কুশল বিনিময় করেন। জাতিসংঘ মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেস, উগান্ডার ভাইস-প্রেসিডেন্ট, দক্ষিণ আফ্রিকার উপ-প্রধানমন্ত্রী, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুশল বিনিময় করেন।
গ্লোবাল সাউথ-এ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া তথাকথিত পছন্দ ও বিভাজনকে ‘না’ বলা উচিত। সার্বজনীন নিয়ম ও মূল্যবোধকে অস্ত্রে পরিণত করার প্রচেষ্টাকে আমাদের অবশ্যই প্রত্যাখ্যান করতে হবে। আমাদের নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার চক্র বন্ধ করতে হবে। আমাদের সব ধরনের হুমকি, উসকানি ও যুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে।
শেখ হাসিনা আরো বলেন, আমি বিপজ্জনক অস্ত্র প্রতিযোগিতা থেকে পিছিয়ে এসে বিশ্বব্যাপী জনগণের প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর প্রতি মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে শান্তি, ন্যায়বিচার ও স্থিতিশীলতার জন্য আমাদের দায়িত্ব নিতে হবে। সকলকে একসাথে অবশ্যই আন্তর্জাতিক অর্থায়ন ও প্রযুক্তির জন্য প্রত্যেকের প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে এবং জলবায়ু, ন্যায়বিচার, অভিবাসীদের অধিকার, ডিজিটাল ইক্যুইটি এবং ঋণ স্থায়িত্বের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমান ব্রিকস চেয়ারম্যান ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার আমন্ত্রণে ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ২২ আগস্ট জোহানেসবার্গে পৌঁছেছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকা ব্রিকস দেশগুলোর ঐতিহাসিক ১৫তম শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করেছে।
এর সদস্য দেশগুলো হচ্ছে- ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সূত্র : বাসস