অনলাইন ডেস্ক :
শিরায় রক্ত জমাট বাড়াচ্ছে মৃত্যু ঝুঁকি। এক্ষেত্রে একটানা দীর্ঘ সময় শুয়ে বসে থাকা, অস্ত্রোপচার, শিরায় আঘাত, ক্যানসার, স্থূলতা, ধূমপান ও বেশকিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস (ডিভিটি) হয়ে এই ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
আজ ২০ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাজধানীর কল্যাণপুরে ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মাল্টিপারপাস হলে আয়োজিত ‘শিরা ব্লক’ শীর্ষক বৈজ্ঞানিক সেমিনারে চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা এসব তথ্য জানান।
সেমিনারে ইন্টারন্যাশনাল ফ্যাকাল্টি ছিলেন- আমেরিকান ভাসকুলার সার্জন বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. এম. আবিদুর রহমান। প্রধান অতিথি ছিলেন ইবনে সিনা ট্রাস্টের মেম্বার এডমিন অধ্যাপক ড. একেএম সদরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন ডা. ক্যাপ্টেন (অব.) সিতারা বেগম বীর প্রতীক, ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম।
সেমিনারে শিরা ব্লকজনিত পা ফোলা রোগের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কলেজের ভাসকুলার সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. জিএম মকবুল হোসেন। সভাপতিত্ব করেন ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. এম মহিবুল আজিজ। সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন ভাসকুলার সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. একেএম জিয়াউল হক ও সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. নাজমুল হাসান।
এ সময় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেন, নানা কারণে শরীরে এক বা একাধিক গভীর শিরায় রক্ত জমাট বাঁধতে পারে। যেমন- দীর্ঘ ফ্লাইট বা বিছানায় বিশ্রামের সময় এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। জেনেটিক এবং পারিবারিক ইতিহাস থাকলে রোগটিতে আক্রান্তের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
সমস্যা দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসা না করলে ওই জমাট বাঁধা রক্ত ফুসফুসে জমা হয়ে প্রাণঘাতী পালমোনারি এমবোলিজম হতে পারে। পালমোনারি এমবোলিজম হল ফুসফুসে রক্তের জমাট বাঁধা, যা শরীরের অন্য অংশে যেমন- বাহু বা পায়ে জমাট বেঁধে রক্তপ্রবাহের মধ্য দিয়ে যায় এবং ফুসফুসের রক্তনালীতে জমা হয়। যা আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ায়।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, ডিভিটি অথবা শিরা ব্লক প্রতিরোধে প্রাথমিক পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা মেনে চলা, নিয়মিত কিছু সময় হাটাহাটি করা বা সক্রিয় থাকা, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা, দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা বা দাঁড়ানো এড়ানো এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করলে এই রোগের ঝুঁকি কমানো যেতে পারে।
অনলাইন ডেস্ক :
আসন্ন রোজায় বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি মজুদদারি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি নতুন সরকারের নির্বাচনি ইশতেহার বাস্তবায়ন এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ‘দক্ষ ও স্মার্ট প্রশাসন’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
আজ ৩ মার্চ রবিবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সরকার প্রধানের এসব নির্দেশনা আসে।
বাজার নিয়ন্ত্রণে মাঠ প্রশাসনকে উদ্যোগী হওয়ার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের সব থেকে লক্ষ্য রাখতে হবে, আমাদের বাজার পরিস্থিতি কেমন। আর তাছাড়া সামনে রোজা আসছে, এই রমজান মাসে কিছু কিছু ব্যবসায়ী থাকে যারা মজুদদারি করে দাম বাড়িয়ে কিছু মুনাফা লুটতে চায়। সেই দিকে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে।
“কারণ এটা আশু করণীয় একটা কাজ আমাদের। কোথাও যেন ভোক্তাদের কোনো হয়রানি হতে না হয়, সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। আমাদের উৎপাদন বাড়াতে হবে। পরনির্ভরশীলতা আমাদের কমাতে হবে এবং এটা যে আমরা পারি, এটা আমরা অনেক ক্ষেত্রে প্রমাণ করেছি। কাজেই সেদিকে নজর রাখা দরকার।”
শেখ হাসিনা বলেন, “সরবরাহের ক্ষেত্রেও কখনো শোনা যায়, কখনও সেটা নিয়ে নানা সমস্যা সৃষ্টি হয়, একটা কৃত্রিম সমস্যার সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হয়। মজুদদারি করে পচিয়ে ফেলবে, কিন্তু বাজারে দেবে না। এরকম একটা অবস্থার সৃষ্টি হয়। সেই দিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি এবং কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।
“রমজান মাস সামনে রেখেই আমি বললাম, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য যেন সাধারণ মানুষের কাছে যথাযথভাবে পৌঁছাতে পারে। সেই ব্যবস্থার দিকে সকলকে নজর দিতে হবে।”
খাদ্যে ভেজাল বন্ধে নজর রাখার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “রোজা এলে এই সমস্যাগুলো বেশি দেখা যায়। খাদ্যে নানা রকম সমস্যা করে, এগুলোর ওপর নজর দিতে হবে।”
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দিতে গিয়ে জেলা প্রশাসকদের সামনে ‘কিশোর গ্যাং’ নিয়েও কথা বলেন সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, “ইতোমধ্যে কয়েকটি সমস্যা আমরা দেখতে পাচ্ছি। কিশোর গ্যাং, যখন ছেলেমেয়েরা স্কুলে যাবে পড়াশোনা করবে, সেই সময়ে এই কিশের গ্যাং। যখন করোনাভাইরাসের অতিমারী সব থেকে বেশি, সে সময়ে এটা সামনে এসেছে। প্রত্যেকটা এলাকাভিত্তিক যে ছেলেমেয়েরা, যারা শিক্ষাগ্রহণ করবে? তারা কেন এই ধরনের গ্যাং হবে? তারা কেন এই ধরনের অসামাজিক কাজে বা ছিনতাই খুন ডাকাতিতে লিপ্ত হবে? সে সমস্ত বিষয় নজরদারি করা একান্তভাবে অপরিহার্য।
“আমাদের কমিশনারবৃন্দ এবং জেলা প্রশাসকবৃন্দ, একেবারে উপজেলা পর্যন্ত, ইউনিয়ন পর্যন্ত স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছেৃ সেখানে ছেলেমেয়েরা কী কী কাজ করছে, জঙ্গিবাদ, মাদক অথবা এই কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে যুক্ত হচ্ছে কি না, সেদিকে একটু নজরদারি বাড়াতে হবে। আমার মনে হয়, পরিবারকে একটু সচেতন করতে পারলে, এই জিনিসগুলো কমবে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “শুধু গ্রেপ্তার করে, ধরে লাভ নেই। কারণ গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠালে জেলেৃ অপরাধীদের সঙ্গে মিশে এরা আরও খারাপ হয়ে যায়। সে কারণে গোড়া থেকে আমাদের ধরতে হবে। পরিবার থেকেই শুরু করতে হবে। বিশেষ করে স্কুল কলেজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেই শুরু করতে হবে। ছেলেমেয়েরা যেন এই পথে যেতে না পারে।”
পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকা যেন কোনোভাবে অস্থির না হয়, সে দিকেও নজর রাখতে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের তাগিদ দেন সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, “আমরা পার্বত্য চট্রগ্রামে শান্তি চুক্তি করেছি। আমরা কিন্তু অন্য কোনো দেশের সাহায়তা নিইনি। কারণ তারা আমার দেশের নাগরিক। আমি ৮১ সালে দেশে ফিরে আসার পর থেকে এ ব্যপারে যথেষ্ট সচেতন ছিলাম। আমাদের দলের পক্ষ থেকে আমরা একটা বিশেষ কমিটি করে দিয়েছিলাম। যার মাধ্যমে ওই অঞ্চলে কী সমস্যা, কেন এই অবস্থার সৃষ্টি হলে, কী কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল ১৯৭৬ সালের পর থেকেৃ সেগুলো জেনে আমরা দীর্ঘ দিন কাজ করেছি।
“যারা বিক্ষুব্ধ ছিল, তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি এবং যখন ১৯৯৬ এ ক্ষমতায় এসেছি, তখন সংসদে কমিটি করেছি। পাশাপাশি আমি নিজেও এদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে আমরা একটা শান্তি চুক্তি করতে সক্ষম হয়েছি। শুধু শান্তি চুক্তি না, সেখানে যারা অস্ত্রধারী ছিল, ১৮০০ অস্ত্রধারী, প্রকাশ্যে আমার সামনে তারা অস্ত্র সারেন্ডার করেছে। পৃথিবীর বহু দেশে শান্তি চুক্তি হয়েছে, কিন্তু আমাদেরটা ছিল অনন্য ঘটনা।“
শেখ হাসিনা বলেন, “এ ধরনের ঘটনা কমই ঘটে যে অস্ত্র সারেন্ডার করে। পর্বত্য চট্টগ্রামে খুব উন্নয়নের কাজ চলছে। অর্থ সামাজিক উন্নয়ন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন সেগুলো আমরা করে যাচ্ছি। আমাদের এখানে বর্ডার লাইন ছিল না, সেখানে কোনো বর্ডার পোস্ট ছিলো না। আমরা নতুন করে সেখানে বর্ডার পোস্ট তৈরি করা শুরু করে দিয়েছি।
“পার্বত্য চট্টগ্রামে এখনও কিছু কিছু দুর্ঘটনা ঘটে। এই বিষয়েও সকলকে নজর দিতে হবে। সেখানে কোনো রকম যেন অশান্ত পরিবেশ অবার ফিরে না আসে। সেখানে শান্তি সৌহার্দ্যপূর্ণ অবস্থা যেন বিরাজমান হয়। এরা বিশেষ আইনে চলে, সেদিকে লক্ষ্য রেখেও তাদের সার্বিক বিবেচনায় দৃষ্টি দিতে হবে।”
সর্বজনীন পেনশন স্কিমে আসতে মানুষকে সচেতন করার জন্য ডিসিদের তাগিদ দেন সরকারপ্রধান। পাশাপাশি কৃষি উৎপাদন যেন বৃদ্ধি পায়, সে বিষয়ে নজর দিতে বলেন।
তিনি বলেন, “আমাদের এলাকাভিক্তিক কিছু উৎপাদিত পণ্য আছে। সেগুলোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে উৎপাদন বাড়ানো এবং কোয়ালিটিটা দেখা, সেই বিষয়ে নজর দেওয়া দরকার।”
প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে মানুষের কতটুকু কাজে আসবে, সে বিষয়টি আগে বিবেচনায় নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘শুধু প্রকল্প প্রণয়ন এবং প্রকল্প বাস্তবায়নই নয়, সাধারণ মানুষ কতটুকু উপকৃত হবে? আর্থিকভাবে দেশ কতটুকু স্বচ্ছল হবে? সে অঞ্চলের মানুষের কতটুকু আর্থসামাজিক উন্নতি হবে? সেসব বিবেচনা করেই প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। শুধুমাত্র বড়সড় একটা টাকার অংক আর একটা প্রকল্প, সেই প্রকল্প কিন্তু আমি গ্রহণ করি না।”
গ্রামীণ অর্থনীতিকে যত বেশি শক্তিশালী করা যায়, গ্রামের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা যেন বাড়ানো যায়, সেদিকে দৃষ্টি দিতে জেলা প্রশাসকদের প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
শিশু-কিশোর ও যুবকদের খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করার তাগিদ দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, “একবার যখন জঙ্গিবাদ সন্ত্রাস শুরু হল, আমাদের দেশে একটামাত্র ঘটনাই ঘটেছিল, সেটা খুব তাড়াতাড়ি সমাধান করতে পেরেছি। কিন্তু অনেকগুলো মানুষকে আমরা বাঁচাতে পারিনি।”
এরপর যে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত কমিটি করে অভিভাবকদের সচেতন করা শুরু হয়েছিল, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “পাশাপাশি যুব সমাজকে ব্যস্ত রাখার জন্য বা শিশু কিশোরদের ব্যস্ত রাখার জন্য ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার বিভিন্ন কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত রাখতে হবে।”
উন্নয়নশীল দেশের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আগ থেকে প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জাতির পিতা যেখানে স্বল্পোন্নত দেশ রেখে গিয়েছিলেন, সেখান থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা নিয়ে যাত্রা শুরু করব ২০২৬ সালে। এখন থেকে সেই প্রস্তুতিটা নিতে হবে।”
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্য শেষে ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। পরে বক্তব্য দেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, সিনিয়র সচিব ও সচিবরা, বিভাগীয় কমিশনাররা, জেলা প্রশাসকরা উপস্থিত ছিলেন সম্মেলনে।
সম্মেলনের বিভিন্ন কার্য-অধিবেশন হবে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে। সরকারের নীতি-নির্ধারক ও জেলা প্রশাসকদের মধ্যে সামনাসামনি মতবিনিময় এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য প্রতি বছর ডিসি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
লক্ষ্মীপুরে ৬ মাস বয়সী শিশু জুনায়েদ হোসেনকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার অভিযোগে তার মাকে আটক করেছে পুলিশ। আজ ১০ জুলাই সোমবার সকালে সদর উপজেলার হামছাদী ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের মাঝি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। আটককৃতের নাম নার্গিস বেগম। সে ওই এলাকার শাহাদাত হোসেনের স্ত্রী।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সকালে স্বামী-স্ত্রী দুইজনে পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়া করে। এরপর স্বামী শাহাদাত বাড়ী থেকে কাজে চলে যায়। এ সুযোগে নিজের ৬ মাসের শিশু জুনায়েদকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে মরদেহ পুকুরে ফেলে দিয়ে চিৎকার দেয়। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সন্ধ্যায় সদর থানার (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, শিশুকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার অভিযোগে তার মা নার্গিসকে আটক করা হয়েছে। ময়না তদন্তের জন্য শিশুর মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ লালমনিরহাট জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক শ্যামলকে শপথবাক্য পাঠ করান।
প্রধানমন্ত্রী তার কার্যালয়ে (পিএমও) শপথ অনুষ্ঠানে জনপ্রতিনিধিদের জনগণের চাহিদার কথা মাথায় রেখে তাদের প্রত্যাশা পূরণে কাজ করার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সচিব কে এম শাখাওয়াত মুন জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী পরিপূর্ণ দায়িত্ব পালনে স্থানীয় পর্যায়ে সমন্বয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইব্রাহিম শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ৩ এপ্রিল লালমনিরহাট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনে আবু বকর সিদ্দিক শ্যামল বিজয়ী হন।
অনলাইন ডেস্ক :
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগকে ‘ফ্যাসিস্ট’ হিসেবে উল্লেখ করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় তাদের স্থান থাকা উচিত নয় বলে মনে করেন অন্তরবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, দলটিতে ফ্যাসিবাদের সমস্ত বৈশিষ্ট্য থাকায় দেশের রাজনীতিতে এর কোনো স্থান নেই। যুক্তরাজ্যভিত্তিক গণমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ।
আজ ৩০ অক্টোবর বুধবার সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছে। সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, আপাতত বাংলাদেশে তার (শেখ হাসিনা) কোনো জায়গা নেই, আওয়ামী লীগের কোনো জায়গা নেই। তারা জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করেছে, তারা পলিটিক্যাল ম্যাশিনারি নিয়ন্ত্রণ করেছে, তারা তাদের স্বার্থ বাড়ানোর জন্য প্রতিষ্ঠানগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় কোনো ফ্যাসিবাদী দলের অস্তিত্ব থাকা উচিত নয়। শেখ হাসিনা ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় টিকে থাকতে নির্বাচনে কারচুপি, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন অপরাধ করেছেন বলে প্রতিনিয়ত অভিযোগ তুলেছে দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দল এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো। গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে জোর দাবি উঠছে, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। ইতোমধ্যে দলটির ভাতৃপ্রতীম ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
ড. ইউনূস ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেছেন, আওয়ামী লীগ হয়তো ভেঙে যেতে পারে, কিন্তু তার সরকার এমন কিছু করবে না। কারণ, তারা রাজনৈতিক সরকার নয়। হাসিনাসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এই ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণার পর সরকার হাসিনাকে ফেরত চাইবে বলে জানিয়েছেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলার রায় ঘোষণার পর ভারতের সঙ্গে প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় তাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে। আমি মনে করি না যে রায় হওয়ার আগে এটা করার দরকার আছে। আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না, জানতে চাইলে তিনি জানান, এ বিষয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তাদেরকেই আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক স্থান নির্ধারণ করতে হবে। ড. ইউনূস জানিয়েছেন, তার রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার বা রাজনৈতিক দল গঠনের কোনো ইচ্ছা নেই। তার সরকার এখন পর্যন্ত নির্বাচনের রূপরেখাও চূড়ান্ত করেনি। তিনি বলেন, আমাদের কাজ সবকিছু স্বাভাবিক করা এবং সংস্কার সম্পন্ন করা। নির্বাচনের সব প্রস্তুতি শেষ হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করব। ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ড. ইউনূসের সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে প্রায় ৮০০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে, হিন্দুদের ওপর ব্যাপক নৃশংসতা নিয়ে ভারত যে অভিযোগ করছে তার কোনো সত্যতা নিশ্চিত করেনি মানবাধিকার সংস্থাগুলো।
ড. ইউনূস ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেছেন, হিন্দুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার কিছু ঘটনা ঘটেছে এবং খুব অল্প সংখ্যক প্রাণহানি হয়েছে। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, তাদেরকে ধর্মের ভিত্তিতে নয়, আওয়ামী লীগের অনুসারী হিসেবে টার্গেট করা হয়েছে। সূত্র: ইত্তেফাক ডিজিটাল।
অনলাইন ডেস্ক :
আসন্ন ঈদুল আজহার ছুটি এক দিন বাড়ানোর সুপারিশ করেছে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এ সুপারিশ করে।
সভা শেষে আজ ১৩ জুন মঙ্গলবার সাংবাদিকদের এ কথা জানান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে মন্ত্রিসভা।
আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘ঈদের সময় মানুষ যাতে সহজে গ্রামে যেতে পারে সে জন্য আমরা ২৭ জুন থেকে ছুটির সুপারিশ করেছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে মন্ত্রিসভা।’
মোজাম্মেল হক বলেন, ঈদের সময় সড়কে চাপ ও ভোগান্তি কমাতে এই সুপারিশ করা হয়েছে। রোজা ও কোরবানির ঈদে সরকারি ছুটি বরাবরই তিন দিন থাকে।
ছুটি এক দিন বাড়িয়ে দিলে ঈদে চাপ কমবে।
মন্ত্রিসভা কমিটি ২৭ জুন থেকে ঈদের ছুটি দেওয়ার সুপারিশ করেছে। এই সুপারিশ অনুমোদন পেলে ২৭ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত কোরবানির ঈদের ছুটি হবে।