চলারপথে রিপোর্ট :
সড়ক প্রশস্ত হচ্ছে। তবে বিদ্যুতের খুঁটি থাকায় প্রশস্ততা কোনো কাজে লাগছে না। সড়ক নির্মাণ করতে গিয়ে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে পানি নিষ্কাশন। অথচ বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না করায় কৃষি সেচ কাজে ব্যাঘাত ঘটছে, সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা।
বিভিন্ন দপ্তরের সমন্বয়হীনতার কারণে এভাবেই উন্নয়নকাজের ব্যাঘাত ঘটছে বলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের পদস্থ কর্মকর্তারা তাদের আলোচনায় তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি এসব থেকে উত্তরণে বেশ কিছু পরামর্শও দিয়েছেন তারা।
আজ ২২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সার্কিট হাউস সম্মেলনকক্ষে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ‘ফোকাস গ্রুপ ডিসকাশনে’ এসব বিষয় তুলে ধরা হয়। ‘স্ট্রেনথেনিং ইন্টার ডিপার্টমেন্ট ইমপ্লেমেন্টিং ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট : এ ডিস্ট্রিক্ট লেভেল অ্যানালাইসিস’ শীর্ষক গবেষণার এ আয়োজনটির ব্যবস্থাপনায় ছিলো মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
আয়োজন করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন। সভায় জেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথি থেকে সকাল সোয়া ১০টার দিকে এ আয়োজনের উদ্বোধন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান। দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. শামসুন্নাহার।
স্বাগত বক্তব্য দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সাইফুল ইসলাম। গ্রুপ পর্যায়ে আলোচনা করে উন্নয়নকাজ বাস্তবায়নে বিভিন্ন দপ্তরের সমন্বয় বিষয়ে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজাম উদ্দিন, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোনাহর আলী, পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক বিশল চক্রবর্তী, আশুগঞ্জ-কুমিল্লা ছয় লেন মহাসড়ক প্রকল্পের ডেপুটি ম্যানেজার শামীম আহমেদ।
এ সময় জানানো হয়, একটি উন্নয়ন কাজ করতে গেলে একাধিক দপ্তরের সংশ্লিষ্টতা থাকে। কিন্তু সাধারণত যে দপ্তর কাজটি করে এর বাইরে কাউকে এতে সম্পৃক্ত করতে দেখা যায় না। এক দপ্তরের কর্মকর্তা আরেক দপ্তরের কাছে যেতে কুণ্ঠাবোধ করেন।
সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে বেশির ভাগ সময়ই গোঁজামিল দেওয়া হয়। সময়ের কাজ সময়ে করা হয় না। ঠিকমতো অর্থ বরাদ্দ পাওয়া যায় না। আগের কাজ পরে পরের কাজ আগে করা হয়। এমন সব সমন্বয়হীনতার কারণে উন্নয়ন কাজে ব্যাঘাত ঘটে। এমন অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে আরো গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। পাশাপাশি কোনো একটি কাজের জন্য পরামর্শক নিয়োগ করা যারা সবগুলো দপ্তরের সমন্বয় করে কাজটি এগিয়ে নিয়ে যাবে।
অধ্যাপক ড. শামসুন্নাহার বলেন, ‘দপ্তরগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে উন্নয়নকাজে ব্যাঘাত ঘটার অনেক উদাহরণ আছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে কাজ করতে হবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে যে মতামতগুলো উঠে আসবে সেগুলো গবেষণায় কাজে লাগানো হবে।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ওয়ান বাই ওয়ান কথা বলেও কাজের সমন্বয় করা যায়। প্রয়োজনে জেলা প্রশাসন এ কাজে সহযোগিতা করবে। আমরা তো ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেখেও ব্যবস্থা নিই। আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে এমন একটা গবেষণা চাই যেটা সারা দেশে কাজে লাগবে।’
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাহিত্য একাডেমীর আয়োজনে তিনদিনব্যাপী বৈশাখী মেলা শুরু হয়েছে। রবিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরে প্রধান অতিথি হিসেবে তিনদিনব্যাপী মেলার উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী
বৈশাখী উৎসব উদযাপন পরিষদের আহবায়ক উপাধ্যক্ষ এ.কে.এম শিবলীর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোঃ ইকবাল হোসাইন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর সভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবদুল কুদদুস, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা, ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি দীপক চৌধুরি বাপ্পী। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সাহিত্য একাডেমীর সভাপতি, কবি ও মুক্তিযুদ্ধের গবেষক জয়দুল হোসেন।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন বৈশাখী উৎসব উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মানিক রতন শর্মা।
তিন দিনব্যাপী বৈশাখি মেলায় বিভিন্ন ধরনের পন্য নিয়ে ১৫টি ষ্টল অংশ গ্রহন করে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। মেলা আগামী ২ মে পর্যন্ত চলবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিভাটেক (ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা) চালক মোঃ শাহপরান (১৮) কে নেশাজাতীয় পানি খাইয়ে তাকে অজ্ঞান করে তার বিভাটেকটি নিয়ে যাওয়ার সময় অজ্ঞানপার্টির ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গতকাল শনিবার বিকেলে জনগণের সহযোগীতায় সদর উপজেলার সুহিলপুর বাজার এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার ও চুরি করে নেয়া বিভাটেকটি উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন সরাইল উপজেলার কালীকচ্ছ গ্রামের কাশেম মিয়ার ছেলে ইমন মিয়া (১৭), একই এলাকার আবদুল হালিমের ছেলে জাকির খান (১৫) ও একই এলাকার চাঁন বাদশার ছেলে মোঃ হোসেন।
অসুস্থ্য শাহপরানকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, গতকাল শনিবার দুপুরে জেলার বিজয়নগর উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের দত্তখোলা গ্রামের আলী আজমের ছেলে বিভাটেক চালক শাহপরান তার বিভাটেক নিয়ে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের সুহিলপুর কবরস্থানের সামনে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করার সময় উল্লেখিত তিন আসামী যাত্রীবেশে সুহিলপুর বাজারে যাওয়ার জন্য তার বিভাটেকে উঠে।
এক পর্যায়ে আসামীরা সুহিলপুর বাজারের কাছে এসে তাদের কাছে থাকা নেশাজাতীয় পানির বোতল শাহপরানকে খাওয়ার কথা বললে শাহপরান এই পানি খেয়ে কিছুক্ষনের মধ্যে অজ্ঞান হয়ে যায়। পরে তারা শাহপরানকে রাস্তার পাশে ফেলে বিভাটেকটি নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অন্য বিভাটেক চালকরা তা দেখে আশপাশের লোকজনের সহায়তায় তিনজনকে আটক করে পুলিশকে খবর দিয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে তাদেরকে গ্রেফতার ও বিভাটেকটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
এ ঘটনায় শাহপরানের পিতা আলী আজম সদর মডেল থানায় তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ এমরানুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গ্রেফতারকৃতদেরকে আজ রবিবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। অসুস্থ্য শাহপরানকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভর্তি করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
গুজব না ছড়িয়ে বাংলাদেশ থেকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির শিক্ষা নিতে ভারতের প্রতি আহবান জানিয়েছেন হেফাজত ইসলামের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান।
আজ ১৩ আগস্ট মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের বজাবে তিনি একথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় আছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এ ধরণের কোনো হামলা হতে দেওয়া হবে না। আমাদের নেতৃবৃন্দ জেলার সর্বত্র এই নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
এ সময় মাওলানা সাজিদুর রহমান বলেন, সংখ্যালঘু বলতে কিছু নেই। আমরা সবাই দেশের নাগরিক এবং সমঅধিকার ভোগ করি। আল্লাহ রসুল বলেছেন, অমুসলিমের ওপর যারা জুলুম করে, তাদের অধিকারে কেউ কম দেয়, সাধ্যের বাইরে কোন কাজ তাদের ওপর চাপিয়ে দেয়, অন্যায় ভাবে তাদের কাছ থেকে কিছু নিয়ে নেয় কিয়ামতের দিন আমি নবী আল্লাহর কাছে বিচার প্রার্থী হবো। এই হচ্ছে সংখ্যালঘুর বিষয়ে নবীর নির্দেশনা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাটিতে কোন সংখ্যালঘু আক্রান্ত হতে পারবে না, করতে দেওয়া হবে না।
এ সময় মাওলানা সাজিদুর রহমান আরো বলেন, বিগত সময়ে হেফাজত ইসলামসহ আলেমদের উপর অনেক অত্যাচার-জুলুম হয়েছে। ২০১৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসার এক ছাত্রকে মাদরাসার ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০২১ সালে আমাদের ১৬জনকে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের আলেমদের বিরুদ্ধে জেলার বিভিন্ন থানায় ৬৩টি মামলা করে তাদেরকে হয়রানি করা হয়েছে। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করে তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ছাড়াও ২০১৬ সালে আমাদের ৬জন ছাত্রকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ওই সময় আমরা যে মামলাগুলো করেছিলাম বৈরী পরিবেশের কারনে মামলাগুলো সঠিক ভাবে পরিচালনা করতে পারিনি। ইনশাল্লাহ ওই মামলাগুলো আমরা চালাব।
তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগষ্ট স্বৈরাচারি সরকারের পতন হয়েছে। এখন সবাই মিলে দেশটাকে গড়ে তুলতে হবে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হেফাজত ইসলামের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সভাপতি মাওলানা মুফতি মোবার উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক মুফতি বোরহান উদ্দিন কাসেমি, সহ-সভাপতি মাওলানা ক্বারী বোরহান উদ্দিন, মাওলানা বোরহান উদ্দিন আল মতিন, প্রচার সম্পাদক মুফতি জাকারিয়া খান প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন আগামী ১৮ জানুয়ারি শনিবার অনুষ্ঠিত হওয়ার তারিখ নির্ধারিত ছিল। অনুষ্ঠিতব্য দ্বিবার্ষিক সম্মেলন স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির কমিটিসহ নেতৃত্ব নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধের জেরে আজ ১৬ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার রাতে কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতারা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দুই পক্ষের নেতাদের সাথে আলোচনা করে কেন্দ্র থেকে সম্মেলনের নতুন তারিখ ঘোষণা করা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল মান্নান। এর আগে আজ দুপুরে এক সমাবেশ থেকে জেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের একাংশের নেতা-কর্মীরা সম্মেলনে অংশ না নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন। সমাবেশ থেকে নেতা-কর্মীরা বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত জেলা বিএনপির ১৪টি ইউনিটের ভোটার তালিকা পরিচ্ছন্নভাবে প্রকাশ করা না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাঁরা সম্মেলনে যাবেন না।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কমিটি ও নেতৃত্ব নিয়ে বিরোধের জেরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপি দুই ভাগে বিভক্ত। জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হকের নেতৃত্বে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের বড় একটি অংশ এক পক্ষে। তাঁরা দুজনই জেলা বিএনপির ৩২ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। আহ্বায়ক আবদুল মান্নান, সদস্য সচিব সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে আরেক পক্ষ সক্রিয়। প্রায় দুই বছর ধরে উভয় পক্ষ পৃথকভাবে দলীয় কর্মসূচি পালন করছে। সম্মেলন ঘিরে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তাপ ছড়িয়েছে।
আগামী ১৮ জানুয়ারি শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাঠে ওই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। সম্মেলনে সভাপতি পদে চারজন, সাধারণ সম্পাদক পদে তিনজন ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে তিনজন দলীয় মনোনয়ন কিনেছিলেন। কিন্তু আজ দুপুরে শহরের আবদুল কুদ্দুস মাখন পৌর মুক্তমঞ্চে আয়োজিত সমাবেশ থেকে হাফিজুর রহমান ও জহিরুল হকের নেতৃত্বে জেলা বিএনপির একাংশের নেতা-কর্মীরা সম্মেলনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা বিএনপির কয়েকজন নেতা জানান, আজ বিকেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতাদের ভার্চ্যুয়াল সভা হয়। পরে তারেক রহমানের সাথে স্কাইপে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সাবেক সচিব মুশফিকুর রহমানের বৈঠক হয়। সেখানে জেলার কমিটি ও নেতৃত্বের নানা অসংগতি তুলে ধরেন মুশফিকুর রহমান। ওই সভা শেষে ১৮ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সম্মেলন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত দেয় কেন্দ্রীয় বিএনপি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল মান্নান রাতে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু ভাইয়ের সঙ্গে একটু আগে আমার কথা হয়েছে। সম্মেলনের ১৮ জানুয়ারির তারিখ পরিবর্তন হবে। সম্মেলনের নতুন তারিখ পরবর্তী সময়ে জানানো হবে। আপাতত ১৮ জানুয়ারি সম্মেলন হচ্ছে না। কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতারা আগামী ২০ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির দুই পক্ষের নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। সেখানে আলোচনা সাপেক্ষে নতুন তারিখ নির্ধারণ করে জানানো হবে।’
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় উগ্রবাদ প্রতিরোধে কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের আয়োজনে ও জেলা পুলিশের সহায়তায় উগ্রবাদ প্রতিরোধে জনসচেতনতা মূলক কার্যক্রম ও উগ্রবাদ দমনে স্পষ্ট ধারনা বিষয়ক তিনদিনব্যাপী সেমিনারের দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় পর্বে আজ ২০ সেপ্টেম্বর বুধবার দুপুরে “উগ্রবাদ প্রতিরোধে শিক্ষক/ শিক্ষার্থী, গণমাধ্যমকর্মী ও সুশীল সমাজের ভ‚মিকা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন পুলিশ সুপার মোঃ শাখাওয়াত হোসেন।
সেমিনারে বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ এ.এস.এম শফিকুল্লাহ, সাহিত্য একাডেমির সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু হোরায়রাহ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন ও কর্মশালার বিষয় বস্তু উপস্থাপন করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি মো. জাহিদুল ইসলাম সোহাগ।
কর্মশালায় জানানো হয়, এক সময় মানুষের মধ্যে ধারনা ছিলো উগ্রবাদ ও জঙ্গীবাদে মাদরাসার শিক্ষার্থীরা জড়িত। কিন্তু এই ধারনা সঠিক নয়। উগ্রবাদে জড়ানোদের মধ্যে পড়াশুনা জানেন না এমন লোকের সংখ্যা শতকরা এক ভাগ। আর জড়িতদের মধ্যে সাধারণ শিক্ষার শিক্ষার্থী ৭৪ ভাগ ও মাদরাসা শিক্ষার শিক্ষার্থী ২৩ ভাগ। জড়িতদের মধ্যে ১৫ থেকে ৩৪ বছর বয়সিরা হলেন শতকরা ৬৮ ভাগ।
কর্মশালায় সন্তানদের প্রতি খেয়াল রাখার জন্য অভিভাবকদের প্রতি আহবান জানানো হয়। সভায় বাসা ভাড়া দেয়ার ক্ষেত্রে জেনে শুনে ও ভাড়াটিয়ার তথ্যাবলী নিকটস্থ থানায় জমা দেয়ার জন্য আহবান জানানো হয়। এ সময় জানানো হয়, সারাদেশেই এ ধরণের কর্মশালার আয়োজন করা হবে। ইতিমধ্যেই বরগুনায় এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে পুলিশ সুপার মোঃ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, জঙ্গীবাদের প্রতি বর্তমান সরকারের যে জিরো ট্রলারেন্স আমরা আইন-শৃংখলা বাহিনী তা বাস্তবায়ন করবো। জিরো ট্রলারেন্স নীতিতে আমরা কাজ করে এখন আমরা অনেকটা সফল। বাংলাদেশ এখন অনেকটাই ঝুঁকিমুক্ত। আমরা জঙ্গীবাদ দেখতে চাই না। আমরা শান্তিতে থাকতে চাই। আমরা অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী। আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে চাই।
তিনি বলেন, সরকারের কঠোর পদক্ষেপের কারণে জঙ্গিবাদ মাথা নুইয়েছে। তবে সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদ এখনো আছে। উগ্রবাদ দমনে পুলিশের বিশেষ টিম সোয়াট কাজ করছে। তিনি উগ্রবাদ ও জঙ্গীবাদ বিষয়ে সোয়াটেরটিমকে তথ্য দেওয়ার পাশাপাশি পুলিশ ও আইনশৃংখলা বাহিনীকে তথ্য দেয়ার আহবান জানান। সেমিনারে সাংবাদিক, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগন উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার সকালে প্রধান অতিথি হিসেবে তিনদিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম।
সেমিনারের শেষ দিন আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় অনুষ্ঠিতব্য “উগ্রবাদ প্রতিরোধে আইন-শৃংখলা বাহিনীর করনীয় শীর্ষক সেমিনারে জেলায় কর্মরত চৌকিদার ও দফাদার এবং দ্বিতীয় পর্বে বেলা ১২টায় অনুষ্ঠিতব্য “উগ্রবাদ প্রতিরোধে জনপ্রতিনিধিদের ভ‚মিকা শীর্ষক সেমিনারে জেলার সকল ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারগণ উপস্থিত থাকবেন।