চলারপথে রিপোর্ট :
রেলওয়ের ২০০পিস কাঠের পুরাতন স্লিপার চুরির উদ্দেশ্যে নেওয়ার সময় দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ও রেলওয়ে পুলিশ। আটককৃতরা হলো- চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলার দক্ষিণ মাহমুদাবাদ গ্রামের নুরুল আলম সুকানির পুত্র মো. সোহেল (৩৩) ও পিরোজপুর জেলার স্বরুপ কাঠি থানার আরামকাটি গ্রামের সেকান্দার আলীর পুত্র মো. আব্দুর রাজ্জাক।
এ ঘটনায় আখাউড়া রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী চৌকির চীফ ইন্সপেক্টর এসআই মোঃ আবু সুফিয়ান ভূঁইয়া বাদী হয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার রাতে আখাউড়া থানায় মামলা করেছেন। মামলায় আখাউড়া রেলওয়ে জংশনের অবসরপ্রাপ্ত এসএসএই/ওয়ে মনিরুল ইসলামসহ তিনজনকে আসামী করা হয়েছে। এর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে ট্রাকে স্লিপার লোড করার সময় ট্রাকসহ তাদেরকে আটক করা হয়।
আরএনবি ও লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, গোপন সংবাদে জানতে পেরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রেলওয়ে ষ্টেশনের ১নং প্লাটফরমের পূর্ব দিকে ট্রাকে কাঠের স্লিপার লোড করার সময় আরএনবি’র এসআই মোঃ আবু সুফিয়ান ভূঁইয়া সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে দুইজনকে আটক করে। পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে ষ্টেশন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃ সাইফুল ইসলামের সহযোগিতায় ট্রাক ভর্তি স্লিপারসহ দুই পাচারকারীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা জানায় আখাউড়া রেলওয়ে জংশনের সদ্য অবসরে যাওয়া এসএসএই/ওয়ে মনিরুল ইসলাম আসামীদের নিকট স্লিপারগুলো বিক্রি করেন। প্রতি পিস স্লিপারের মূল্য ১৫০ টাকা দরে ৩০ হাজার টাকায় স্লিপারগুলো বিক্রির চুক্তি হয়। এসময় ঢাকা মেট্টো-ট-১৪৬৬৫৩ ট্রাকটি জব্দ করে পুলিশ।
এ ব্যাপারে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী চৌকির চীফ ইন্সপেক্টর এসআই মোঃ আবু সুফিয়ান ভূইয়া বলেন, সন্দেহ হলে ট্রাকে স্লিপার লোড করার কারণ জানতে আটককৃতরা জানায় আখাউড়া রেলওয়ে জংশনের অবসরপ্রাপ্ত এসএসএই/ওয়ে মনিরুল ইসলাম আসামীদের নিকট স্লিপারগুলো বিক্রি করেন।
এদিকে অভিযুক্ত এসএসএই/ওয়ে মনিরুল ইসলামের বক্তব্য জানার জন্য তার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
জানতে চাইলে আখাউড়া রেলওয়ে থানা পুলিশের ইনচার্জ খন্দকার জসীম উদ্দিন বলেন, আটককৃতদেরকে আদালতের মাধ্যতে জেলে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামি পলাতক রয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় নির্মাণাধীন সেতুর পাশের বিকল্প সড়ক ভেঙে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
২৭ মে সোমবার রাত ৩টার দিকে পৌর এলাকার দেবগ্রামের ওই সড়ক ভেঙে ধরখার-আখাউড়া-স্থলবন্দর সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সড়কটি আখাউড়ার প্রধান সড়ক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বিকল্প সড়ক বন্ধ হয়ে যান চলচাল না করতে পারায় সাধারণ মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
আজ ২৮ মে মঙ্গলবার বেলা পাঁচটায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সড়কটি দিয়ে যান চলাচলে বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারত থেকে আসা পানির তোড়ে সোমবার রাত তিনটার দিকে বিকল্প সড়কটি ভেঙে যায়। এ অবস্থায় নির্মাণাধীন সেতুর উপর দিয়ে লোকজন পার হচ্ছে। তবে কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারছে না।
স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেন, মূলত পানি যাওয়ার জন্য মাত্র দু’টি পাইপ দেওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বারবার বলা হচ্ছিল যে অন্তত চারটি পানি দিয়ে পানি চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়। তারা কথা না শোনায় এমনটা হয়েছে।
কথা হয় সেখানে দায়িত্বরত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মোস্তফা কামাল এন্টারপ্রাইজের প্রকৌশলী মো. ওমর ফারুক জানান, তারা প্রয়োজন মতোই পাইপ দিয়েছিলেন। কিন্তু পানির প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। দু’একদিনের মধ্যে ঢালাই কাজ শেষ করলে নতুন সেতু হালকা যানের জন্য খোলে দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
তবে আপাতত কোনো বিকল্প নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন।
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে মাইশা আফরিন সুবর্ণা (১৪) নামের এক কিশোরী বিয়ের তিনমাসের মাথায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। রোববার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে কিশোরীর মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মাইশা আফরিন সুবর্ণা উপজেলার বুধন্তি ইউনিয়নের বীরপাশা গ্রামের নাসির উদ্দিনের মেয়ে। নাসির উদ্দিন বলেন, তার কিশোরী মেয়ে সুবর্ণা অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। পার্শ্ববর্তী বিন্নিঘাট এলাকার ইদ্রিস মিয়ার ছেলে মনির হোসেন (২২) তার মেয়েকে পছন্দ করতেন। পরে পারিবারিক ভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের টাকার জন্য তার মেয়ে সুবর্ণাকে অত্যাচার করতো মনির। বিয়ের সময় মনিরকে ১ লাখ টাকা যৌতুক দেওয়ার পর সে আরও যৌতুককের টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে তার মেয়েকে তালাক দিবে একথা বলেন মনির। সে কথা শুনে সুবর্ণা শনিবার বিকেলে শোবার ঘরের বাশের তীরের সাথে ওড়না পেচিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। তিনি আরও বলেন, মনিরের চাপের কারণে তার মেয়ে সুবর্ণাকে বিয়ে দিতে হয়। মনিরের কারনে তার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে।
এ ব্যাপারে বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এক কিশোরী গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। মরদেহ উদ্ধারের পর জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছি। থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
চীনে দেখা দেওয়া ভাইরাস এইচপিভি ভারতসহ বিভিন্ন দেশে আশংকাজনক হারে বাড়তে থাকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে স্বাস্থ্য পরিক্ষা ডেস্ক চালু করা হয়েছে।
১৩ জানুয়ারি সোমবার সকালে আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ডেস্ক চালু করেন জেলা সিভিল সার্জন (ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ মোঃ শাখাওয়াত হোসেন। এসময় ভারত থেকে আসা যাত্রীদের মাঝে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক বিতরণ করা হয়। স্বাস্থ্য পরীক্ষা ডেস্ক চালু করা সময় আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ হিমেল খান।
জানা যায়, নতুন করে দেখা দেওয়া এইচএমপিভি ভাইরাস রোধ করার জন্য বাংলাদেশ স্থলবন্দরগুলোতে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়। সতর্কতাস্বরূপ প্রাথমিক ভাবে ভারত থেকে আসা যাত্রীদের নামের তালিকাভুক্ত করে শরীরের তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ করা, যাত্রীদের মুখে মাক্স ব্যবহার, সাবান ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সিভিল সার্জন (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, এইচএমপিভি ভাইরাস প্রতিরোধ রোধে আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে বাড়তি সতর্কতা হিসেবে একটি অস্থায়ী মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এখানে সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দুই ধাপে ৪ জন স্বাস্থ্য সহাকরী কাজ করবে। প্রাথমিকভাবে করোনাকালীন যে সতর্কতাগুলো মানুষের কাছে পৌঁছেনো হয়েছিল সেই সতর্কতাগুলোই এই ভাইরাসের ক্ষেত্রেও অবলম্বন করা হচ্ছে। শরীরের তাপমাত্রা নির্ণয়, মাস্ক পরিধান করা, হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ স্বাস্থ্য পরামর্শ দিয়ে আগত যাত্রীদের সতর্ক করা হচ্ছে। এই ভাইরাস নিয়ে জনমনে যেন কোন ধরনরে আতঙ্ক সৃষ্টি না হয় সে বিষয়েও আমরা কাজ করছি।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় আজ ২৮ ডিসেম্বর শনিবার বিকেলে বাসচাপায় এক অটোরিকশা চালক নিহত হয়েছে। নিহত ব্যক্তি হলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার কাশিনগর লিচুবাগান গ্রামের মো. আবদুল হোসেনের ছেলে মো. সাদ্দাম হোসেন (৩২)।
আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ছমিউদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, দিগন্ত পরিবহনের একটি বাস যাত্রী নামাতে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই চালক মারা যান। পরিবারের লোকজনের অভিযোগ না থাকায় লাশ পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বিভিন্ন সময় ভারতে গিয়ে আটকে পড়া ১০ বাংলাদেশী নাগরিক দেশে ফিরছেন। আজ ২ মার্চ শনিবার দুপুরে আখাউড়া-আগরতলা ইমিগ্রেশন সীমান্তের শূন্য রেখায় ত্রিপুরায় নিযুক্ত বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনারের কর্মকর্তারা বাংলাদেশী নাগরিকদেরকে আখাউড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) প্রশান্ত চক্রবর্তীর নিকট হস্তান্তর করেন।
এদের মধ্যে নারী, পুরুষ, শিশুসহ একজন নবজাতক রয়েছে। একই পরিবারের ৫ জন রয়েছে। তারা অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে প্রবেশ করার দায়ে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ভোগ করেছেন।
আগরতলাস্থ বাংলাদেশ সহকারী হাই কমিশনের তথ্য ও স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ফেরত নাগরিকরা হলো নরাইল জেলার কালিয়া উপজেরার পার বিষ্ণুপুর গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে মোঃ আহাদ মিনা, মোঃ আল আমিন মিনার স্ত্রী মোছাঃ কুলছুল বেগম, আল আমিন মিনার ছেলে রিফাত মিয়া, সিফাত মিনা, একই গ্রামের আসাদ মোল্লার ছেলে মোহাম্মদ মোল্লা, মুজিবুর শেখের ছেলে মোঃ রাজু শেখ ও নারায়ণগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জ উপজেলার চানপাড়া গ্রামের মোঃ কদর আলীর মেয়ে মোছাঃ সাজিদা খাতুন, আবুল কাসেমের মেয়ের সুমি আক্তার কাজলী ও কাজলীর নব জাতক পুত্র শিশু সানজিদ মোল্লা।
পাচারের শিকার হওয়া ব্যক্তিরা জানান, ভালো কাজের প্রলোভনে দালালের খপ্পরে পড়ে অবৈধভাবে সীমান্তপথে তারা ভারতে পাড়ি জমায়। পরে দালালরা তাদের সেখানে ফেলে পালিয়ে আসে। এরপর ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন সময়ে তাদের আটক করে জেল হাজতে পাঠায়।
সীমান্তের শূণ্য রেখায় শিরিনা বেগম বলেন, আমার পরিবারের ৫ জন ২ বছর আগে দালালের মাধ্যমে কাজের সন্ধ্যানে ভারতে গিয়ে আটকা করে। এরমধ্যে ২ ছেলে, এক ছেলের বউ, ২ নাতি রয়েছে। দীর্ঘ ২ বছর পর তাদেরকে ফেরত পেয়ে আমার খুব ভালো লাগছে। আমি যেন তাদের সাথে শান্তিতে বসবাস করতে পারি সেই কামনা করি।
এ ব্যপারে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনের কনসুলার অফিসার মোঃ ওমর ফারুক বলেন, বাংলাদেশী এসব নাগরিকরা বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে প্রবেশ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়ে সাজা ভোগ করে। ত্রিপুরার নরসিংগড়ে একটি ডিটেনশন সেন্টারে ছিল। বিষয়টি বাংলাদেশ হাই কমিশন জানতে পেরে আমরা সেখানে গিয়ে খোঁজ খবর নিই। তাদের নাম ঠিকানা বাংলাদেশে পাঠাই। দুই দেশের প্রক্রিয়া শেষে আজ তাদেরকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হলো।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনের কনসুলার অফিসার মোঃ ইলিয়াস উদ্দিন, মোঃ ওমর শরীফ, বিএসএফ ত্রিপুরাস্থ ডেপুটি কমান্ড রাম নরেশ সিং, আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন ওসি হাসান আহমেদ ভূঁইয়া প্রমুখ।