চলারপথে রিপোর্ট :
একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কয়েক মাস আগে স্নাতক শেষ করেছেন আশরাফুল ইসলাম (২৪)। বসে না থেকে তিন মাস আগে রাজধানীর বেইলি রোডে ইল্লিয়িন ব্র্যান্ডের পোশাকের শোরুমে খণ্ডকালীন চাকরি নেন। গত বৃহস্পতিবার ওই ভবনে আগুন লেগে আশরাফুল নিহত হন। গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর জানাযা শেষে কসবায় গ্রামের বাড়িতে তাঁকে দাফন করা হয়।
নিহত আশরাফুল ইসলাম ওরফে আসিফ (২৪) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার কাইমপুর ইউনিয়নের কাইমপুর পূর্ব পাড়ার মৃত জহিরুল ইসলামের ছেলে। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন তিনি। বড় ভাই তরিকুল ইসলাম ঢাকায় ব্যবসা করেন। ভাইয়ের সঙ্গে ঢাকায় থাকতেন।
বৃহস্পতিবার বেইলি রোডের যে ভবনে আগুন লাগে, সেখানে ইল্লিয়িন ব্র্যান্ডের শোরুম ছাড়াও কয়েকটি রেস্তোরাঁ আছে। ভবনে অগ্নিকাণ্ডের সময় আশরাফুল ওই শোরুমে ছিলেন। তিনি ভবন থেকে বের হতে পারেননি। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন তাঁর লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়। বড় ভাই তরিকুল ইসলাম অগ্নিকাণ্ডের পর থেকেই ছোট ভাই আশরাফুলকে খুঁজছিলেন। তিনিসহ আশরাফুলের বন্ধুরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে রাতেই আশরাফুলের লাশ শনাক্ত করেন।
শুক্রবার সকালে নিহত আশরাফুলের লাশ নিয়ে বাড়িতে আসেন বড় ভাই তরিকুল ইসলাম। ছেলের লাশ দেখে বৃদ্ধ মা সামসুন্নাহার বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
নিহত ব্যক্তির ভাই তরিকুল ইসলাম বলেন, বাবা মারা গেলেন দুই বছর আগে। ছোট ভাই আশরাফুল আইইউবি থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেছেন মাত্র। চাকরি খুঁজছিলেন। ঘরে বসে না থেকে ইল্লিয়িনের শোরুমে তিন মাস আগে চাকরি নেন। ওই ভবনে আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁকে খুঁজতে থাকেন। পরে আশরাফুলের বন্ধুরাসহ তিনি ঢাকা মেডিকেলে গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন।
কসবার কাইমপুর পূর্ব সরকারি আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জুমার নামাজের পর জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে আশরাফুলকে দাফন করা হয়।
জানাযায় কসবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রাশেদুল কাউছার ভূঁইয়া, কাইমুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইকতিয়ার আলম, সাবেক চেয়ারম্যান মো. আমজাদ হোসেন সরকারসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
কসবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদুল কাউছার ভূঁইয়া বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডে আশরাফুলের মৃত্যুর খবরে তিনি খুবই মর্মাহত। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশোনা মাত্র শেষ করেছে। অকালেই ঝরে গেল। আমরা তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।’
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবায় ট্রেনের ধাক্কায় তানজিল মিয়া (২৫) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু হয়েছে। ২৮ মে মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে উপজেলার পৌর এলাকার নোয়াপাড়া রেল ক্রসিংয়ে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত তানজিল পার্শ্ববর্তী নবীনগর উপজেলার কাইতলা গ্রামের মৃত আনিসুর রহমান জুয়েল মিয়ার ছেলে। এসময় অপর দুই আরোহীকে গুরুতর অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আহতরা হলেন- জেলা কসবা উপজেলার পৌর এলাকার আড়াইবাড়ী গ্রামের খোরশেদ মিয়ার ছেলে অলি মিয়া (২৫) ও একই গ্রামের বিল্লাল মিয়ার ছেলে খাইরুল ইসলাম ওরফে শাওন (২৫)।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তানজিল মিয়া, অলি মিয়া ও খাইরুল ইসলাম ওরফে শাওন তারা তিন বন্ধু। মঙ্গলবার বিকালে একটি মোটরসাইকেল নিয়ে তিনজনই ঘুরতে বের হয়েছিলেন। তারা গোপীনাথপুর ইউনিয়নের বাগানবাড়ি এলাকায় গিয়েছিলেন। রাত আটটার দিকে ফেরার পথে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের কসবা উপজেলার নোয়াপাড়া রেলক্রসিংয়ে ট্রেন আসছে দেখেও দ্রুত পার হওয়ার সময় চট্টগ্রামগামী চট্টলা ট্রেনের সাথে সজোরে ধাক্কা লাগে। এতে তিনজনই মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হয়।
স্থানীয় লোকজন দেখতে পেয়ে তিনজনকেই উদ্ধার করে কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তানজিল মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত দু’জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে গুরুতর অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
পরিবার জানায়, তানজিল মিয়া দুবাই প্রবাসী। এক মাস আগে ছুটিতে দেশে এসে বিয়ে করেন। আহত অলি মিয়া আগামী ১ জুন সৌদি আরবে যাওয়ার কথা। খাইরুল ইসলাম শাওন ব্যবসা করেন।
কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. আজিজ আল মান্না বলেন, ট্রেনের ধাক্কায় তিনজনই মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তানজিল মিয়া হাসপাতালে আনার আগেই মারা যায়। আহতদের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আখাউড়া রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসিম উদ্দিন খন্দকার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ট্রেনের ধাক্কায় একজন মারা গেছে। দুইজন গুরুতর আহত হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
মরুর দেশ সৌদি আরবে ফুড ডেলিভারি করতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় ইসহাক সায়েদ (২১) নামে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার এক যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ ৯ এপ্রিল বুধবার সৌদি আরবের দাম্মাম শহরে স্থানীয় সময় রাত ৩টার এবং বাংলাদেশ সময় ভোরের দিকে তার মৃত্যু হয়।
নিহত ইসহাক সৌদি আরবে হাংগেরি নামক একটি ফুড ডেলিভারি কোম্পানিতে ডেলিভারি বয় হিসেবে হিসেবে কাজ করত। সে কসবা পৌর এলাকার আড়াইবাড়ি গ্রামের খোরশেদ আলমের ছেলে। নিহতের পিতা খোরশেদ আলম জানায়, সংসারের হাল ধরতে জীবিকার তাগিদে গত বছরের আগস্ট মাসে মধ্য প্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে পাঠানো তাকে। রাতে কোম্পানির ডিউটি পালন করতে মোটরসাইকেল যোগে ফুড ডেলিভারি করতে যায়। এসময় সড়কে ট্রাক চাপায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় এই রেমিটেন্স যোদ্ধা।
সকালে তাঁর মৃত্যুর সংবাদ পেয়েছি। কান্না জড়িত গলায় সন্তান হারানো পিতা সরকারের কাছে আকুল আবেদন করেন, তার সন্তানের লাশ যেন দ্রুত বাংলাদেশে ফেরত আনা হয়। সন্তানের লাশটা যেন নিজ হাতে দাফন করতে পারে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারসহ পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কসবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ছামিউল ইসলাম বলেন, নিহতের লাশ ফেরত আনার বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তর বরাবরে আবেদন করলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবায় ১০০ কেজি গাঁজাসহ ৪ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় গাঁজা বহনকারী একটি নৌকাও জব্দ করা হয়।
গতকাল রবিবার রাত ১টার দিকে উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের ময়দাগঞ্জ বাজারের তিতাস নদীর ঘাট থেকে বিপুল পরিমান গাঁজাসহ তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন জেলার আখাউড়া উপজেলার আহমোদাবাদ গ্রামের জহর লাল চন্দ্র দাস (৫৬), বিজয়নগর উপজেলার কাশীনগর গ্রামের সিরাজ মিয়া (৫৫), একই গ্রামের মোঃ শহীদ মিয়া (৫০) ও একই উপজেলার উথারিয়াপাড়ার তুষার (১৮)।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মহিউদ্দিন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রবিবার রাত ১ টার দিকে উপজেলার ময়দাগঞ্জ বাজারের উত্তর পাশে তিতাস নদীর ঘাটে অভিযান পরিচালনা করে একটি ইঞ্জিন চালিত নৌকা আটক করা হয়।
পরে ওই নৌকায় তল্লাশী চালিয়ে ১০০ কেজি গাঁজাসহ তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় কসবা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার সকালে তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
কসবা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে বাংলাদেশি এক তরুণ মো. সাকিব (১৮) নিহত হয়েছেন। এ সময় ভারতের এক নাগরিকও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের মাদলা এলাকায়। নিহত মো. সাকিব (১৮) বায়েক ইউনিয়নের মাদলার নন্দননগর পুরাতন গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা মো. মোতালেবের ছেলে। আহত ভারতীয় নাগরিক ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলার মঙ্গল বর্মণের ছেলে সুজন বর্মণ (৩৫)। তাকে ঢাকার ধানমন্ডিস্থ পপুলার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ বেলা সাড়ে ১২টার দিকে নিহত সাবিকের লাশ গ্রামের বাড়ি মাদলায় নিয়ে আসেন স্বজনেরা।
এর আগে গতকাল ৪ মে রোববার দিবাগত রাত পৌনে ১২টায় বায়েক ইউনিয়নের মাদলা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে গুরুতর আহত হন সাকিব ও সুজন।
কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামিউল ইসলাম জানান, রবিবার রাতে ভারতীয় যুবক সুজনের মাধ্যমে চোরাই মোটরসাইকেল আনার জন্য মাদলা সীমান্তে যায় সাকিব। এ সময় সীমান্তে টহলরত বিএসএফ সদস্যরা তাদেরকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। এতে গুলিবিদ্ধ হন সুজন ও সাকিব।
পরে সাকিবকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে আজ সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তার মরদেহ নিজ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে।
কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কাদের এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, কসবায় সীমান্তবর্তী এলাকায় গতকাল দিবাগত রাত পৌনে ১২টায় বিএসএফের গুলিতে একজন নিহত হয়েছেন। আর ভারতীয় এক নাগরিক আহত আছেন। গুলিবিদ্ধ সাকিবকে উদ্ধার করে তাঁর স্বজনেরা ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে তিনি পথে মারা যান। ময়নাতদন্তের জন্য তাঁর লাশ জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
চলারপথে রিপোট
কসবায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে গুরুতর আহত একই পরিবারের দুই শিশুর মধ্যে রাহাত মিয়া (১০) নামে এক শিশু মারা গেছেন।
গতকাল ৪ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুরে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
দুই শিশুর চাচা সৈয়দাবাদ আদর্শ সরকারি মহাবিদ্যালয়ের প্রভাষক তাজুল ইসলাম হানিফ বলেন, মৃত রাহাত কসবা উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়নের সৈয়দাবাদ গ্রামের হান্নান মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় এখনও হাসপাতালে থাকা শিশু রাফির হাত কেটে ফেলতে হয়েছে। সম্ভবত তার একটি পা কেটে ফেলার প্রয়োজন হতে পারে বলে চিকিৎসক আমাদের বলেছেন।
উল্লেখ্য, ১৩ আগস্ট তিনতলা ভবনের ছাদে খেলতে গিয়ে বিদ্যুতের লাইনে হাত লেগে শিশু রাহাত ও তার ভাই রাফি আহত হয়। পরিবারের লোকজন দুই শিশুকে প্রথমে কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করেন। সেখানে প্রায় ২৩ দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় শিশু রাহাত।