চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যোগে বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
আজ ৫ মার্চ মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মো: ইমরানুল হক ভূইয়ার নেতৃত্বে উপজেলা সদরের বিভিন্ন বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান পরিচালনা করা হয়।এতে তিনটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে মোট ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযানকালে এক্সরে টেকনিশিয়ান না থাকা, লাইসেন্স নবায়ন না থাকা ও অন্যান্য অব্যবস্থাপনার কারণে নাসিরনগর ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা,বন্ধন ডায়াগনস্টিক সেন্টার এন্ড কনসালটেশন সেন্টারকে ১০ হাজার জরিমানাসহ এক্সরে রুমটি সিলগালা করে বন্ধ ঘোষণা করা হয়। অপরদিকে মেডিকেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এসময় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: মো: সাইফুল ইসলাম,ডা: শাকিল,গাইনী বিশেষঞ্জ ডা: নাফিজা জাফরিন,ডা: ফৌজিয়া,পুলিশ উপ-পরিদর্শক রুপন নাথ, উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার সিএ বিল্লাল হোসেনসহ আইন-শৃংখলা বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: ইমরানুল হক ভূইয়া অভিযানের কথা স্বীকার করে জানান, জনগণের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার স্বার্থে বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে কোন ধরনের অনিয়ম চলতে দেয়া যাবে না। জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগরে ৪টি সীসা কার্তুজসহ একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আজ ৭ জুলাই রবিবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার ভলাকুট ইউনিয়নের কান্দি গ্রাম থেকে কার্তুজসহ তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত মো. সাইজ উদ্দিন কবির (৩৯) জেলার নাসিরনগর উপজেলার ভলাকুট ইউনিয়নের কান্দি গ্রামের এরশাদ উদ্দিনের ছেলে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নাসিরনগর থানার ওসি সোহাগ রানা জানান, রোববার সকালে উপজেলার ভলাকুট ইউনিয়নের কান্দি গ্রামে কবিরের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার বসতঘর তল্লাশি করে ৪টি সীসা কার্তুজ (লিডবল) উদ্ধার করা হয়। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর কোর্টের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে নাসিরনগর থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগরে তাহমিনা আক্তার (২৬) নামে এক মায়ের বিরুদ্ধে দুই মাস বয়সী শিশু সন্তান সাইমকে পানিতে ফেলে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ১২ মার্চ রবিবার রাতে উপজেলার পূর্বভাগ ইউনিয়নের চান্দের পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আজ ১৩ মার্চ সোমবার সকালে তাহমিনাকে আটক করেছে পুলিশ।
শিশু সাইম উপজেলার গোকর্ণ ইউনিয়নের নূরপুর গ্রামের মো. খোকন মিয়ার ছেলে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১১ বছর আগে তাহমিনা ও খোকন মিয়ার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। এরই মধ্যে তাদের ঘরে চারটি সন্তানের জন্ম হয়। সর্বশেষ ছোট ছেলে সাইম জন্ম নেওয়ার পর তার নাম রাখার সময় খাবারের আয়োজন করে খোকন মিয়া। কিন্তু তাহমিনার বাবার বাড়ির কম লোকজনকে দাওয়াত দেন খোকন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য হয়। পর দিন রাগ করে বাবার বাড়ি পূর্বভাগ ইউনিয়নের চান্দের পাড়া গ্রামে চলে যান তাহমিনা। সেখানে গিয়ে খোকনকে ফাঁসানোর ফন্দি করেন তাহমিনা।
এরপর ১২ মার্চ রবিবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে শিশু সাইমকে বাড়ির পাশের পুকুরে ফেলে দেন তাহমিনা। ওই দিন রাতেই তাহমিনা পাড়ার সবাইকে বলতে থাকেন- খোকন এসে তার শিশু সন্তান সাইমকে নিয়ে পালিয়ে গেছেন। তবে ওই দিন রাতে খোকন গোকর্ণ গ্রামের একটি ইটভাটায় কাজ করছিলেন। পরের দিন সকালে স্থানীয়রা পুকুরে গোসল করতে গেলে শিশুর মরদেহ দেখতে পায়। তখন পুলিশ গিয়ে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে। তাহমিনাকে আটক করে পুলিশ।
নাসিরনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুল্লাহ সরকার বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাহমিনা আক্তার তার শিশুকে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় তার স্বামী খোকন মিয়া স্ত্রী তাহমিনা আক্তারের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগরে চিতনা থেকে রসুলপুর পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কে আটটি বৈদ্যুতিক খুঁটি রেখেই চলছে উন্নয়ন কাজ। এতে ওই সড়ক দিয়ে যান চলাচলের সময় ঘটছে দুর্ঘটনা।
এ অবস্থায় বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো দ্রুত সরিয়ে ফেলার দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কাজটি তদারক করছে উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ।
নাসিরনগর উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, প্রায় সাড়ে আট কোটি টাকা ব্যয়ে দুই মাস আগে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকে রাস্তার নির্মাণ কাজ শুরু হয়। গুনিয়াউক ইউনিয়নের চিতনা গ্রাম থেকে ফান্দাউক ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রাম পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। কাজটি পায় হাসান এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এর আগে রাস্তা ছোট ছিল। তখন রাস্তার এক পাশে ছিল বৈদ্যুতিক খুঁটি। এখন যেহেতু রাস্তা প্রশস্ত করা হয়েছে তাই কিছু খুঁটি ভেতরে পড়েছে। নির্মাণ সম্পন্ন করার আগে খুঁটি সরানো হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রকৌশলী।
গত মঙ্গলবার ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, চিতনা থেকে রসুলপুর পর্যন্ত রাস্তার মাটি ভরাটের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এই রাস্তার কাজ শুরু হয়েছে চিতনা ও চাপরতলা গ্রামের সংযোগকারী একটি সেতুর গোড়া থেকে। সেতু থেকে নামতেই রাস্তার মাঝ অংশে দাঁড়িয়ে রয়েছে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটি। কিছু দূর যেতেই রাস্তার মাঝ অংশে আরো কয়েকটি খুঁটি দেখা যায়। বৈদ্যুতিক খুঁটি থাকায় রাস্তার ওই অংশ দিয়ে পথচারী ও যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। স্থানীয় বাসিন্দারা খুঁটিগুলো সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানালেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
চিতনা গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা খায়রুল ইসলাম বলেন, রাস্তার মধ্যে ৭-৮টা খুঁটি রেখেই নির্মাণকাজ চলছে। গত দুই-তিন দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। রাস্তায় মাটির কাজ চলায় কাদা হয়ে গেছে। এই কর্দমাক্ত রাস্তায় বিদ্যুতের খুঁটি থাকায় খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। বারবার বলার পরও খুঁটিগুলো সরানো হচ্ছে না।
অপর বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘রাস্তার মইধ্যে বিদ্যুতের খুডি (খুঁটি) রাইখা কীভাবে রাস্তার কাজ করে আমার বুঝে আসে না।’
গুনিয়াউক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জিতু মিয়া জানান, রাস্তার মাঝ অংশে বেশকিছু পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি রেখে নির্মাণকাজ চলছে। এটা বিদ্যুৎ অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন এবং দ্রুত খুঁটি সরিয়ে জনদুর্ভোগ কমাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করব।
এ বিষয়ে নাসিরনগর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জোনাল ম্যানেজার তৌহিদ উল্লাহ খান বলেন, চিতনা থেকে রসুলপুর পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ হচ্ছে এমন কোনো তথ্য তাঁদের জানা নেই। রাস্তা নির্মাণকারী কোনো সংস্থা তাঁদের এ বিষয়ে কিছু জানায়নি। পল্লী বিদ্যুতের প্রধান কার্যালয়ে কোনো পক্ষ যোগাযোগ করেছে কিনা তাঁর জানা নেই। তবে রাস্তা নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানকে নিজ খরচে বিদ্যুতের খুঁটি সরাতে হবে।
নাসিরনগর উপজেলা প্রকৌশলী রবিউল হোসাইন বলেন, রাস্তার মাটির কাজ শেষ হয়েছে। পুরো কাজ শেষ হতে আরও সময় লাগবে। কাজ শেষ হওয়ার আগেই রাস্তায় যে সব বৈদ্যুতিক খুঁটি পড়বে তা সরিয়ে কার্পেটিংয়ের কাজ করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার সাবেক দুই এমপিসহ ১১৮ জনের নামে মামলা হয়েছে। মামলায় আরও ২০০-৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
আজ ১ সেপ্টেম্বর রোববার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নসিরনগর উপজেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব শাহা আলম পাঠান বাদী হয়ে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মামলার আবেদন করেন।
আদালত মামলাটি নথিভুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট থানাকে নির্দেশে দিয়েছেন।
আসামিরা হলেন, সাবেক এমপি একে একরামুজ্জামান সুখন, বিএম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম, কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক নাজির মিয়া, তার স্ত্রী সদ্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রুমা আক্তার, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এটিএম মনিরুজ্জামান, গোয়ালনগর ইউপি চেয়ারম্যান আজহারুল হক, ভলাকুট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রুবেল মিয়া, গুনিয়াউক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিতু মিয়া, ফান্দাউক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফারুকুজ্জামান, পূর্বভাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন, হরিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফারুক মিয়া, চাতলপাড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, চাপরতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনসুর আলী ভূঁইয়া, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান আখি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অসীম পাল প্রমুখ।
মামলায় আরো ২০০-৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আসামিরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে করে স্প্রিন্টারের কয়েকজন আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মারাত্মক জখম হয়। আসামিরা দোকানপাট, বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর করে ১৫-২০টি মোটরসাইকেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয়।
আদালত পুলিশের পরিদর্শক কাজি দিদারুল আলম জানান, আদালত মামলাটি আমলে নিয়েছেন। মামলা নথিভুক্ত করতে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
বেঙ্গাউতা গ্রামে বাস করেন এক হাজার পরিবারের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ। অবস্থান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার চাপরতলা ইউনিয়নে। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরের এ গ্রামে শিশু রয়েছে অন্তত ৫০০। স্বাধীনতার ৫২ বছর পেরিয়ে গেলেও তাদের জন্য কোনো বিদ্যালয় নির্মিত হয়নি গ্রামটিতে। সবচেয়ে কাছের যে বিদ্যালয়, সেই কালিউতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবস্থানও প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে। রাস্তাঘাট বেহাল হওয়ায় বছরের প্রায় ছয় মাস নৌকা ছাড়া যাতায়াত করতে পারেন না বাসিন্দারা। এ সময় চলাচলে ঝুঁকি থাকায় শিশুরাও দূরের বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দেয়।
এ গ্রামের বাসিন্দা বোরহান উদ্দিন খান পড়েন রাজধানী ঢাকার তিতুমীর কলেজে। সেখানকার অর্থনীতি বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির ছাত্র বোরহান আক্ষেপের সুরে বলছিলেন, ‘আমাদের গ্রামে স্কুল নেই, রাস্তাঘাট নেই। মানুষের চেহারা নিয়ে কেবল বেঁচে আছি। শিক্ষার অভাবে প্রকৃত মনুষ্যত্ব জাগছে না।’ বোরহান আরও বলেন, এখানে শিক্ষিত কোনো মানুষ থাকেন না। যাঁদের অবস্থান একটু ভালো, তাঁরা চলে যান শহরে। ফলে বাসিন্দাদের সবাই নিরক্ষর।
মো. আমির বলেন, রাস্তাঘাট না থাকায় পাশের গ্রামেও যেতে হয় ফসলি জমি মাড়িয়ে। বর্ষায় তা-ও ডুবে যায়। যে কারণে ছয় মাস কোথাও যেতে পারেন না। নৌকার পথ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় শিশুরা পাশের গ্রামের বিদ্যালয়ে যেতে চায় না।
কালিউতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুবনা আক্তার বলেন, বেঙ্গাউতায় আনুমানিক পাঁচ শতাধিক শিশু রয়েছে। নদী পার হয়ে বছরের তিন-চার মাস কিছু শিশু বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করে। সম্প্রতি তাদের আসা কমে গেছে। তিনি শুনেছেন মাদ্রাসায় ভর্তি হয়েছে অনেকে।
এর ইঙ্গিত মেলে বিদ্যালয়টির দুই ছাত্রীর কথায়। চতুর্থ শ্রেণির আফরোজা আক্তার বলল, ‘আমরার গ্রামে একটা ইস্কুল হইলে ভালা হইতো। এতো দূরের ইস্কুলে যাইতে মন চায় না। আব্বায় কইছে মাদ্রাসায় ভর্তি কইরা দিবো।’
পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী বিলকিস আক্তারের আদর্শ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকারা। তাঁদের মতো সে ভবিষ্যতে শিক্ষাদান করতে চায় অন্যদের। তবে এ পথে যে বাধা অনেক। বিলকিস বলে, ‘এতো দূর থেকে ইস্কুলে আইতে পারি না। বৃষ্টি আইলে বইখাতা ভিইজ্জা যায়। বন্যার সময় নৌকা দিয়া আইতে ডর (ভয়) লাগে।’ তাই স্থানীয় খালের ওপর সেতু নির্মাণের দাবিও জানায় সে।
সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে এ গ্রামের মানুষ বঞ্চিত বলে স্বীকার করেন চাপরতলা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মনসুর। তিনি বলেন, এখানে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন ও রাস্তাঘাট তৈরি জরুরি।
জানা গেছে, নাসিরনগর উপজেলার ১৩২টি গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১২৪টি। তবে ১৭টি গ্রাম বিদ্যালয়হীন। এর একটি এই বেঙ্গাউতা। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ইকবাল মিয়া বলেন, বিদ্যালয় স্থাপনে ৩৩ শতক জায়গার প্রয়োজন। জায়গার খোঁজ পেলে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠাবেন।
ইউএনও মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জেনেছেন। ওই গ্রামে বিদ্যালয় নির্মাণে শীঘ্রই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।