আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ

জাতীয়, 7 March 2024, 382 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
৭ মার্চ বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের একটি ঐতিহাসিক দিন। স্বাধীনতা সংগ্রামের চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে ১৯৭১ সালের এদিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হওয়ার নির্দেশ দেন।

মুক্তিযুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী এবং যে কোনো সময় জাতিকে অস্ত্র হাতে শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামতে হবে ৭ মার্চের ভাষণের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু সেটা স্পষ্ট করেছিলেন।

আজ বৃহস্পতিবার সেই ঐতিহাসিক ৭ মার্চ।

পরাধীনতা থেকে বাঙালি জাতির মুক্তি এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণটি এক অনন্য সাধারণ ও তাৎপর্যপূর্ণ। এ ভাষণের মধ্যে বঙ্গবন্ধু স্পষ্টভাবেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা শব্দটি উচ্চারণ করেছিলেন এবং মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে সেই স্বাধীনতা অর্জনে যে গেরিলাযুদ্ধের প্রয়োজন তার প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণটি আজ বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবেও স্বীকৃত। এটি বিশ্বে সর্বাধিকবার প্রচারিত অলিখিত ভাষণ। ২০১৭ সালের অক্টোবরে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণটি বিশ্ব ঐতিহ্যের (ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ) স্বীকৃতি দেয়।

এদিনে তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক উত্তাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম।’ ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের এ ঐতিহাসিক ভাষণের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতিকে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করেন। তার এ ভাষণ ছিল জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার চূড়ান্ত নির্দেশনা।

এদিনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লাখ লাখ জনতার সামনে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু তার এ ভাষণে শতাব্দির পর শতাব্দি ধরে পরাধীন জাতিকে স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করেন। মাত্র ১৮ মিনিটের ভাষণে তিনি কেন মুক্তিযুদ্ধের প্রয়োজন এবং মুক্তিযুদ্ধের জন্য জাতিকে কী করতে হবে সব দিক নির্দেশনায়ই দিয়ে দেন। তার ওই ভাষণের মধ্য দিয়েই স্পষ্ট হয়ে উঠে স্বাধীনতার ঘোষণা। মুক্তিযুদ্ধের জন্য জাতিকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তোলো। আমি যদি হুকুম দিবার নাও পারি…, তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে প্রস্তুত থাক।’ পাকিস্তানের শাসন-শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের চূড়ান্ত পর্বে বঙ্গবন্ধু এ ভাষণ দেন।

স্বাধীনতার জন্য অদম্য স্পৃহা নিয়ে সংগ্রামরত মুক্তিকামী জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধু সেদিন বজ্র কণ্ঠে উচ্চারণ করেছিলেন, ‘প্রত্যেক গ্রামে, প্রত্যেক মহল্লায়, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোলো এবং তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো। মনে রাখবা রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব, এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ।’ বঙ্গবন্ধুর ওই নির্দেশের পর ছাত্র, যুবক, কৃষক, শ্রমিক, পেশাজীবীসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষ মুক্তিযুদ্ধের জন্য সেভাবেই প্রস্তুতি নেয়।

১৯৪৭ সালে ধর্মভিত্তিক ভ্রান্ত দ্বি-জাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে চাপিয়ে দেওয়া অসম পাকিস্তান রাষ্ট্রের শাসন-শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে বাঙালি জাতি দীর্ঘ দিন ধরে লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে যায়। ধাপে ধাপে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এড়িয়ে চলা বাঙালি পাকিস্তান রাষ্ট্র থেকে আলাদা হতে স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু করে। বাঙালির এ স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতৃত্ব দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামে নতুন মাত্রাযুক্ত হয়। এর পরই ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং মুক্তিযুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতির বিজয় অর্জিত হয়।

Leave a Reply

আইসিসির পরোয়ানা : নেতানিয়াহু কানাডায় গেলে…

অনলাইন ডেস্ক : ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ Read more

মামলায় কোনো নিরীহ মানুষ যেন হয়রানির…

অনলাইন ডেস্ক : ৫ আগস্টের পরে দায়ের করা মামলাগুলো যথাযথভাবে Read more

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই পক্ষের সংঘর্ষে…

চলারপথে রিপোর্ট : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কৃষক দলের প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ইউনিয়ন পর্যায়ে কৃষক সমাবেশ সফলের লক্ষ্যে Read more

সাহিত্যের আড্ডায় গুণীদের মিলনমেলা

চলারপথে রিপোর্ট : প্রাণবন্ত এক হঠাৎ আড্ডায় মেতে উঠেছিলো ব্রাহ্মণবাড়িয়া। Read more

নবীনগরে অগ্নিকান্ডে ১২ দোকান ভস্মিভূত

চলারপথে রিপোর্ট : নবীনগরে একটি বিপণীবিতানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে Read more

মদসহ ভারতীয় নাগরিক আটক

চলারপথে রিপোর্ট : আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে অভিযান চালিয়ে বিদেশি Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বচ্ছতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ৮৩…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা ও সঠিক প্রক্রিয়ায় ৮৩জন Read more

জননিরাপত্তার নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক ঐক্যমত…

চলারপথে রিপোর্ট : জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক ঐক্যমত একান্ত Read more

বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ গ্রেফতার ১

চলারপথে রিপোর্ট : বিজয়নগর উপজেলা থেকে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ ১ Read more

সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বাঞ্ছারামপুরে ১৪৪ ধারা…

চলারপথে রিপোর্ট : বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে উপজেলা ও Read more

বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশীজন ও…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় “বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশীজন ও Read more

বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শ্যালক-ভগিনীপতির মৃত্যু

জাতীয়, 13 September 2023, 649 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
লক্ষ্মীপুরে ভগিনীপতিকে বাঁচাতে গিয়ে মারা গেলেন শ্যালকও। অটোরিক্সার ব্যাটারি চার্জ দিতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মো. মঞ্জু (২১) ও বিপ্লব হোসেন (১৭) নামে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা সম্পর্কে শ্যালক ও ভগিনীপতি।

আজ ১৩ সেপ্টেম্বর বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত মঞ্জু তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার নাম জানা যায়নি। অপর নিহত বিপ্লব একই ইউনিয়নের শহর কসবা গ্রামের নেছার আহম্মদের ছেলে।

স্বজনদের বরাত দিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ঘটনার সময় মঞ্জু তার অটোরিক্সার ব্যাটারি চার্জ দিতে যায়। অসাবধানতাবশত ব্যাটারি চার্জ দিতে গিয়ে তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তাকে বাঁচাতে গিয়ে তার শ্যালক বিপ্লবও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জয়নাল আবেদিন বলেন, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুইজন মারা গেছেন। তাদের মৃত অবস্থায় পেয়েছি। মরদেহগুলো স্বজনরা বাড়িতে নিয়ে গেছেন।

স্টাফ রিপোর্টার:
বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) আরো ১০টি পণ্যকে মান সনদের আওতায় এনেছে। বিএসটিআই’র সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী কাউন্সিলের ৩৭তম সভায় বাধ্যতামূলক মান সনদের তালিকায় ১০টি নতুন পণ্যকে মান সনদের অন্তর্ভূক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রোববার রাজধানীর তেজগাঁওস্থ বিএসটিআই’র প্রাধন কার্যালয়ে এই প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী কাউন্সিলের এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। শিল্পমন্ত্রী ও বিএসটিআই কাউন্সিলের চেয়ারম্যান নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এ সভায় সভাপতিত্ব করেন। নতুন যে ১০টি পণ্য মান সনদের আওতায় আনা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে ডিসপোজেবল ডায়াপারস, ফেসওয়াস, পেট্রোলয়িাম জেলি, রুটি (ফ্ল্যাটব্রেড/ টরটিলা), এ্যারোসলস, গিজার, শেভিং ফোম/জেল, আই কেয়ার, হেয়ার ডাইস লিকুইড ও শু-পলিশিং লিকুইড। বর্তমানে বিএসটিআই’র বাধ্যতামূলক মান সনদের আওতাভুক্ত পণ্যের সংখ্যা ২২৯টি। বিএসটিআই কাউন্সিলের প্রথম ভাইস চেয়ারম্যান শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি, দ্বিতীয় ভাইস চেয়ারম্যান শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া, এ সভায় শিল্প, স্বরাষ্ট্র, অর্থ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, বাণিজ্য, বস্ত্র ও পাট, তথ্য, কৃষি, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, আইসিটি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, তথ্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ টেলিভিশন, কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, বিসিএসআইআর, আমদানি ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রক, ইপিবি এবং এমসিসিআই, ক্যাবসহ কাউন্সিলের সদস্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। বিএসটিআই’র মহাপরিচালক ও কাউন্সিলের সদস্য সচিব মোঃ আবদুস সাত্তার এ সভা পরিচালনা করেন।
সভাপতির বক্তৃতায় শিল্পমন্ত্রী বলেন, বিএসটিআই সকলের জন্য একটি আস্থার জায়গা তৈরি করেছে। পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে বিএসটিআইকে আরও সক্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। অভ্যন্তরীণ বাজার এবং রপ্তানির ক্ষেত্রে পণ্যের গুণগত মান নিয়ন্ত্রণ করা এবং মানসম্মত পণ্য উৎপাদনে সহায়ক ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি বলেন, বর্তমান বিশ্বে হালাল পণ্যের সার্টিফিকেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিএসটিআইকে পণ্যের হালাল সার্টিফিকেশনের ক্ষেত্রে গুণগত মান ঠিক রেখে এগিয়ে যেতে হবে।
জনগণের স্বার্থ রক্ষার্থে প্রয়োজনে বিএসটিআইকে আরও কঠোর ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানিয়ে কাউন্সিলের প্রথম ভাইস চেয়ারম্যান ও শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, ব্যবসায়ীরা করোনা মহামারিকে পূঁজি করে অতিরিক্ত মুনাফা করেছে। তারা পণ্যে ভেজাল দিচ্ছে, সিন্ডিকেট করছে। তিনি বলেন, ১৭ কোটি মানুষকে রক্ষায় বিএসটিআইকে দায়িত্ব নিতে হবে। স্বাস্থ্যসম্মত খাবার নিশ্চিত করতে হবে। এ লক্ষ্যে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয় রেখে পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে বিএসটিআইকে কাজ করতে হবে।
কাউন্সিল সভার পরে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বিএসটিআই’র ৯১ জন নবনিযুক্ত কর্মকর্তার নিয়োগ, যোগদান এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, বিএসটিআই’র মহাপরিচালক, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জনেন্দ্র নাথ সরকারসহ শিল্প মন্ত্রণালয় এবং বিএসটিআই’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

তিতাস নদী পরিদর্শনে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন চেয়ারম্যান

জাতীয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 5 April 2023, 1950 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিতাস নদী ও বিসিক শিল্পনগরীর খাল এবং পুকুর পরিদর্শন করেছেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী।

আজ ৫ এপ্রিল বুধবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তিনি সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের নন্দনপুর বিসিক শিল্পনগরীর বিভিন্ন কারখানা, পুকুর ও খাল এবং দুপুরে দুপুরে তিনি তিতাস নদীর মেড্ডা শ্মশান ঘাট এলাকা পরিদর্শন করেন। পরে তিনি ছোট নৌযানে করে তিতাস নদীর বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন।

বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা নদী রক্ষা কমিশনের সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী।

জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী অফিসার মোঃ আমিনুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ রুহুল আমিন, জেলা মৎস্য অফিসার তাজমহল বেগম, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মনজুর রহমান, বিআইডব্লিউটি’র উপ-পরিচালক মোঃ রেজাউল করিম, পৌরসভার প্রধান নির্বাহী অফিসার মোঃ আবদুল কুদদুস, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লায়ন ফিরোজুর রহমান প্রমুখ।

সভায় জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, তিতাস নদী ঐতিহাসিক নদী। এ নদীকে কেন্দ্র করে গল্প-উপন্যাস চলচ্চিত্র রচিত হয়েছে। কিন্তু দখল দুষনের কারণে নদীটির অস্তিত্ব বিলীনের পথে। মানুষ এখানে বর্জ্য ফেলে। প্রশাসন বার বার বলার পরও মানুষ শুনছেনা। এটি খুবই হতাশাজনক।

শুধু প্রশাসন কাজ করলে হবেনা। প্রশাসনের পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষকে সহযোগিতা করতে হবে। কারণ নদী আমাদের প্রাণ। এটিকে রক্ষা করার জন্যই আমরা কাজ করছি। নদী দখল করে মাছ চাষের ব্যাপারে তিনি অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে দখল ও দুষনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য কর্মকর্তাদেরকে নির্দেশ দেন।

তিনি বিসিক শিল্পনগরীর বর্জ্য শোধানাগার (ইটিপি) যথাযথ বাস্তবায়ন না করায় ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এখানে সংগতি করার মতো কিছুই নেই। শিল্প বর্জ্য উৎপাদন হয় এখানে, কিন্তু বর্জ্য শোধানাগারের কোনো ব্যবস্থা নেই। আমরা কমিশন এসে এখানে হতবাক হয়েছি। এখানে শুধু মাত্র কেমিক্যাল নয়, এখানে পয়ঃ বর্জ্য নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। পরিবেশ অধিদপ্তর এখানে কাজ করছে না। এখানে নাকি মাঝে মাঝে জরিমানা করা হয়। কিন্তু জরিমানা করে এখানে কোনো কিছুই করা যাবেনা। আমরা আশা করি জনগণের স্বার্থে শিল্প মালিকদের শুভ বৃদ্ধির উদয় হবে।

সভায় সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগনসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

প্রবাসীদের রেমিট্যান্স অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি : প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, রাজনীতি, 16 January 2024, 641 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বাধীনতা-সংগ্রামে বিশ্ব জনমত সৃষ্টিতে প্রবাসীরা বড় অবদান রাখেন। প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসীদের অবদান রয়েছে। এখন প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি।

১৬ জানুয়ারি মঙ্গলবার দুপুরে গণভবনে প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, প্রবাসীরা আমাদের স্বাধীনতা-সংগ্রামে, যেকোনো আন্দোলনে অবদান রেখেছেন। যখন বাংলাদেশে মার্শাল ল জারি হয়, আমরা যখন কাজ করতে পারি না, তখন প্রবাসীরা প্রতিবাদ জানান। আপনারা আন্দোলন-সংগ্রাম করেন, জনমত সৃষ্টি করেন, এটা আমাদের জন্য বিরাট শক্তি।

তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারি নির্বাচন হয়ে গেছে। আমি জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই, কারণ জনগণই স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে এসেছে। কারণ বিএনপি যখন নির্বাচনে আসবে না, কেউ যাতে নির্বাচনে না আসে, কেউ যেন ভোট না দেয় এর জন্য লিফলেট বিতরণ শুরু করল। এই লিফলেট বিতরণের পরে ঘটনা উল্টো হয়ে গেল, মানুষজন আরও উৎসাহিত হলো, আমাদের ভোট দিতেই হবে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, সেই ক্ষেত্রে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচন স্বচ্ছ, সুষ্ঠু, কোনোরকম দুর্ঘটনা যেন না ঘটে, একটা অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন যাতে হয়– সেই প্রচেষ্টাই আমাদের ছিল। যার কারণে একের পর এক নির্বাচনে সংস্কার আমরা নিয়ে আসি। কারণ সেনা শাসকরা যখন একের পর এক ক্ষমতা দখল করে তখন তারা নির্বাচনে ভোট কারচুপি করা শুরু করেছিল। সেই জায়গা থেকে মানুষের অধিকার মানুষকে ফিরিয়ে দেওয়ার সেই আন্দোলন-সংগ্রামটাই আমরা করেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দেশের মানুষ উপলব্ধি করেছে সরকার জনগণের সেবক। সেই ঘোষণা জাতির পিতা দিয়েছিলেন, আমি জাতির পিতার কন্যা হিসেবে তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে সেই ঘোষণাটাই দিয়েছি– আমি প্রধানমন্ত্রী না, জাতির জনকের কন্যা হিসেবে মানুষের সেবক হিসেবে কাজ করবে, যেন মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারি।

তিনি বলেন, আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি, যেটা ২০২৪ সালে কার্যকর করার কথা ছিল, সেটা আমরা দুই বছর বাড়িয়ে নিয়েছি। করোনাভাইরাসের অতিমারি, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, এরপর ফিলিস্তিনের ওপর হামলা, শিশু-নারী হাসপাতালে আক্রমণ করা। আমরা সবসময় ফিলিস্তিনের পক্ষে আছি। এভাবে একটা জাতিকে ধ্বংস করা, নারীদের ধ্বংস করা, এটা এক ধরনের গণহত্যা। আমরা সাহায্য পাঠিয়েছি, আগামীতে পাঠাব। এরপর আবার ইয়মেনে আক্রমণ। আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। মিয়ানমার যখন অশান্ত হলো, তারা আশ্রয় চাইল, আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছি। মিয়ানমারের সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি, আমরা যুদ্ধে যাইনি। কারণ আমরা শান্তি চেয়েছি।

সরকারপ্রধান বলেন, আজ এই যে অস্ত্র প্রতিযোগিতা, আন্তর্জাতিকভাবে আমি যেখানেই গিয়েছি সেখানেই বলেছি, এই অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করে ওই টাকা শিশুদের খাদ্য, শিশুদের চিকিৎসা, শিশুদের শিক্ষায় ব্যয় হোক। মানবকল্যাণে ব্যয় করা হোক, যে দেশ এই টাকা ব্যয় করছে, সেই টাকা তো ওই দেশের জনগণের ট্যাক্সের টাকা, তাদের টাকা ধ্বংসের জন্য কেন ব্যয় হবে, ধ্বংসাত্মক কাজে কেন ব্যয় হবে, মানবকল্যাণে ব্যয় হোক। আজ শিশুরা কষ্ট পায়, নারীরা কষ্ট পায়, মানবজাতি কষ্ট পায় সে ধরনের কাজ করতে হবে কেন। আমরা এর ঘোর বিরোধিতা করি, আমরা কখনো যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি অফিসে তারাই তালা দেয়, তারাই ভাঙে। তারা বলে চাবি হারিয়েছে, চাবি খোয়া গেছে। চাবিটা গেল কোথায়? তারাই তো তালা দিয়েছে। তাদের চাবি হারাবে, তারাও পথ হারাবে। তারা এখন পথ হারানো পথিক হয়ে গেছে। জানি না তাদের সাংগঠনিক কোনো যোগ্যতা আছে কি না, একটাই আছে আগুন দেওয়া।

কারাগারে টি-টোয়েন্টি টুর্ণামেন্ট, উদ্বোধন করেন মাশরাফি

জাতীয়, 4 October 2023, 612 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে (কেরানীগঞ্জ) বন্দীদের নিয়ে মাসব্যাপী বঙ্গবন্ধু প্রিজন কাপ ক্রিকেট টুর্ণামেন্টের উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ ৪ অক্টোবর বুধবার বিকালে টি-টোয়েন্টি এই টুর্নামেন্ট উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএসএম আনিসুল হক, অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্ণেল শেখ সুজাউর রহমান, ডিআইজি প্রিজন ঢাকা বিভাগ, এস এম ফজলুল হকসহ কারাগারের অন্যান্য কর্মকর্তারা।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সিনিয়র জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ জানান, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার ময়দানে মাসব্যাপী বঙ্গবন্ধু প্রিজন কাপ ক্রিকেট টুর্ণামেন্টের উদ্বোধন করেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। বঙ্গবন্ধু প্রিজন কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে মোট ১০টি দল অংশগ্রহণ করবে।

এদের মধ্যে ৯টি দল কারাগারে থাকা বন্দীদের নিয়ে গঠন করা। এছাড়া আরও একটি দল কারা স্টাফদের নিয়ে গঠন করা। এই মোট ১০টি দল মাসব্যাপী এই টুর্ণামেন্ট খেলবেন। এছাড়া তিনিও এই টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করবেন বলেও জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে প্রধান অতিথি মাশরাফি বিন মর্তুজা সহ আগত অতিথিবৃন্দ ঢাকার উদ্দেশ্যে সড়ক পথে কারাগার ত্যাগ করেন।