চলারপথে রিপোর্ট :
মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাদীপ্ত জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়া। সংস্কৃতির রাজধানীখ্যাত তিতাস বিধৌত জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়া। মুক্তিযুদ্ধে এই জেলার রয়েছে গৌরবোজ্জল ইতিহাস। যুগে যুগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেছেন অনেক জ্ঞানী, গুনী মহাপুরুষ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মানুষ সংস্কৃতিমনা ও অতিথি পরায়ন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া একটি ঐতিহ্যবাহী জেলা। এখানকার ঐতিহ্যের মধ্যে রয়েছে মিষ্টি, ছানামুখী, মেলা/বান্নি, হাঁসলি মোরগ, গরুর দৌড়, নৌকা বাইচ ও পুতুল নাচ।
এক সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুতুল নাচ দেশে ও বিদেশে বিখ্যাত ছিলো। পুতুল নাচের সংস্কৃতি ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে সমৃদ্ধ করেছিলো দেশে-বিদেশে। তবে কালের আর্বতে পুতুল নাচের আগের জৌলুস আর নেই। আধুনিক সংস্কৃতির আগ্রাসনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী পুতুল নাচ এখন বিলুপ্তির পথে।
বাঙ্গালীর অন্যতম উৎসব পহেলা বৈশাখ, বসন্ত উৎসবসহ হাতেগুনা দুই/একটি উৎসবে পুতুল নাচে অনুষ্ঠান ছাড়া তেমন আর চেখে পড়েনা।
শহরের প্রবীন ব্যক্তিদের কাছ থেকে জানা গেছে, ভারতীয় উপমহাদেশে পুতুল নাচের সৃষ্টি করেছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামের বিপিন পাল। বিপিন পালকে ভারতীয় উপমহাদেশে পুতুল নাচের জনক বলা হয়। তিনি প্রথম আধুসিক পুতুল নাচের প্রচলন করেন। তিনি হিন্দু ধর্মের বা পৌরাণিক কাহিনী অবলম্বনে ও তৎকালীন সময়ের সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় পুতুল নাচ করতেন।এ ছাড়াও গ্রামীন জীবনের নানা দৃশ্যপট তুলে ধরতেন তার পুতুল নাচে। তাঁর পুতুল নাচ দেখে শিশু থেকে সব বয়সী মানুষ আনন্দ পেতো। বিশেষ করে শিশুদের আনন্দের সীমা ছিল না, এই ভাবনা থেকেই তিনি প্রথমে মাটির পুতুল, ক্রমান্বয়ে স্টিক পুতুল, স্প্রিং পুতুল ও সূতোর তৈরি পুতুল তৈরী করেন। একই এলাকার কয়েক জন শিষ্যকে সাথে নিয়ে তিনি চমক তৈরি করে ছিলেন পুতুল নাচ সৃষ্টির মাধ্যমে। পুতুল নাচের ব্যাপক জনপ্রিয়তা দেখে তাঁর পরিবার সহ মতি মিয়া, রমনাথ বাবু, তারু মিয়া ও সিদ্দিক মিয়াকে সাথে নিয়ে বৃদ্ধি করেন পুতুল নাচের প্রচার ও প্রসার। তাঁর এ শিষ্যরা দীর্ঘবছর তাঁর সাথে থেকে পরবর্তীতে যার যার এলাকায় পুতুল নাচের দল তৈরি করে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জনপদে পুতুল নাচের সাথে জড়িত আরো কয়েকজনের নাম জানা যায়। এরা হলেন জেলার নবীনগরের কৃষ্ণনগর গ্রামের গিরীশ আচার্য্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার মেড্ডা গ্রামের ধন মিয়া, কালু মিয়া ও মোঃ রাজ হোসেন। এক সময় ধন মিয়ার পুতুল নাচ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন।
ধন মিয়ার পুতুল নাচ দলের নাম ছিলো রয়েল বীনা অপেরা। ধন মিয়া শুধু দেশে নয়, বিদেশে ও খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।
১৯৮০ সালে ধন মিয়া পুতুল নাচ দেখাতে সোভিয়েত ইউনিয়নে গিয়েছিলেন। তৎকালীন সময়ে ধন মিয়া রাশিয়ার মস্কো, তাসখন্দ, সমরখন্দসহ বিভিন্ন শহরে ২০ দিন অবস্থান করে পুতুল নাচ দেখিয়ে বাংলাদেশের নাম বিশ্ব পরিমন্ডলে ছড়িয়ে দেন। ধন মিয়ার পুতুল নাচের মধ্যে ছিলো “বড়শি বাওয়া” “বাঘে কাঠুরিয়াকে ধরে নেওয়া” এবং “বৈরাগী বৈরাগিনীর ঝগড়া” অন্যতম।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুতুল নাচের জৌলুস এখন আর আগের মতো নেই। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্য পুতুল নাচ এখন বিলুপ্তির পথে।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের সূর্যমুখী কিন্ডার গার্টেন এন্ড উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় শিশু শিক্ষার্থীদের দিয়ে পুতুলের আদলে অসাধারণ নৃত্য প্রদর্শন করা হয়। যা এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। অনুষ্ঠানে স্কুলের শিশু শিক্ষার্থীরা পায়ের আঙ্গুলের সাথে হাতে সূতো বেঁধে, মাথায় ঘুমটা দিয়ে ও গায়ে বাঙ্গালীয়ানা পোশাক পরিধান করে নাচ প্রদর্শন করে।
পুতুলের আদলে ২৬ জন শিশু গানের তালে তালে অসাধারণ নৃত্য প্রদর্শন করে। ৫ মিনিটের মনোমুগ্ধকর পুতুলের আদলে নাচের ভিডিও উপস্থিত অতিথি ও অভিভাবকদের মুগ্ধ করে, তাদের হৃদয় জয় করে। সেই নাচের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা দেখে সূধীজনরা প্রশংসা করছেন। পুতুলের আদলে শিশুদের নাচ নতুন প্রজন্মের সাথে পুতুল নাচের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে।
পুতুলের আদলে শিশুদের দিয়ে এই নৃত্যের মূল কারিগর শহরের পশ্চিম মেড্ডা এলাকার তরুন নৃত্য শিল্পী মোহাম্মদ আল সাইফুল আমিন জিয়া। তিনি পশ্চিম মেড্ডা এলাকার মৃত রমজান মিয়ার ছেলে। তিনি সূর্যমূখী কিন্ডার গার্টেন এন্ড উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রায় ১১ বছর ধরে সহকারী শিক্ষক (নৃত্য) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এ ব্যাপারে নৃত্যশিল্পী মোহাম্মদ আল সাইফুল আমিন জিয়া বলেন, ছোট বেলায় পুতুল নাচ দেখতাম। সূতা দিয়ে পুতুল নাচানো হতো। তবে এখন আর পুতুল নাচ সেভাবে হয় না। আমি ভাবলাম একজন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সন্তান ও সংস্কৃতির কর্মী হিসেবে বিলুপ্ত হতে থাকা পুতুল নাচের জৌলুসকে আবারো আনতে। নতুন প্রজন্মকে পুতুল নাচের সাথে পরিচিত করার ভাবনা থেকেই এই পুতুল নাচটি তৈরী করি। তিনি আরো বলেন, আমার প্রদর্শিত পুতুলের আদলে শিশুদের নৃত্যটি দেশ-বিদেশে প্রশংসিত হওয়ায় আমি অনেক খুশি। আমি মনে করি আমার কষ্ট সার্থক হয়েছে। তিনি বলেন, আমি নিজের চেষ্টায় ৬ বছর বয়স থেকে নাচ করি, এবং ১৫ বছর বয়স থেকে নাচ করাই। আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিতে কাজ করছি।
চলারপথে রিপোর্ট :
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী,ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেছেন,যারা স্বাধীন বাংলাদেশকে বিশেষ কোনো সম্প্রদায়ের রাষ্ট্র না ভেবে সকল মানুষের রাষ্ট্র হিসাবে প্রতিষ্ঠা করতে আগ্রহী তাদের কাছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ। বঙ্গবন্ধুর জীবন ও আদর্শ থেকে তাদের অনেক কিছু শিখবার আছে। এ ব্যাপারে বঙ্গবন্ধুর রচিত গ্রন্থগুলো বড়ো সহায়ক হবে। তিনি
আজ ১৭ মার্চ রবিবার বিকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে জাতির পিতার ১০৪ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা ও আবৃত্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। তিনি আরো বলেন,পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরই বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন পাকিস্তানে বাঙালিদের কোনো ভবিষ্যৎ নেই। তাই তিনি তখনই বাঙালিদের জন্য নতুন একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার চিন্তা মাথায় নিয়ে কাজ শুরু করেন। বঙ্গবন্ধু জীবনভর আন্দোলন-সংগ্রাম করতে গিয়ে কখনো অন্যায়-অনিয়মের কাছে মাথানত করে আপোষ করেন নি। আপোষ করেননি বলেই সকল বাঙালিকে তিনি ঐক্যবদ্ধ করতে পেরেছিলেন,প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশ। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন প্রচন্ড মানবিক। সমাজ ও মানুষের কথা ভাবতে ভাবতে তিনি নিজ সংসার-পরিবার নিয়ে ভাববার সময় পাননি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো.হেলাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সাবেক উপদপ্তর সম্পাদক মো.মনির হোসেনের সঞ্চালনায় স্বাগত ভাষণ দেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু। আলোচনা করেন জেলা আওয়ামী লীগ সহসভাপতি হাজি মো.হেলাল উদ্দিন,রবীন্দ্র সঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ সভাপতি অধ্যাপক মানবর্দ্ধন পাল,সুর সম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন সাধারণ সম্পাদক মনজুরুল আলম।
অনুষ্ঠানে মার্চের সন্তান শিরোনামে দলীয় আবৃত্তি প্রযোজন পরিবেশন করে তিতাস আবৃত্তি সংগঠনের মধ্যমদলের সদস্যরা।
এছাড়া জাতির পিতার জন্মদিন উদযাপনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সকাল ৭ টায় দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং সকাল ৯ টায় বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে চোর চক্রের ১০ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ ২৮ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
গ্রেফতাররা হলেন বরিশালের মুলাদী উপজেলার আলীমাবাদের শওকত খানের ছেলে আরাফাত খান (১৯) ও মো. রাব্বি খান (২৩), পটুয়াখালীর মৃত শামসু মোল্লার ছেলে সাগর (২৮), ভোলার চরফ্যাশনের শামসুদ্দিনের ছেলে মো. কাশেম (১৯), কুমিল্লার চান্দিনার মৃত সফর মল্লিকের ছেলে মো. গোলাম হোসেন (৪৯), হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জের মোহাম্মদ হেলালের ছেলে সাইদুল (২৭), ঝালকাঠির নলছিটির মৃত আবুল মিয়ার ছেলে মো. রফিকুল ইসলাম (২৬), বরিশালের গৌরনদীর ইসমাঈল শরীফের ছেলে মো. হাসান (২৫), নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের সিরাজের ছেলে মিরাজ (৩০) ও ময়মনসিংহের মৃত নূর হোসেনের ছেলে রফিকুল ইসলাম (৫৪)।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন জানান, সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের বিভিন্ন স্থানে বাসাবাড়িতে তালা ভেঙে ও গ্রিল কেটে চুরি ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনার জেরে দুই চোরকে হাতেনাতে আটক করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এ চোর চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে রাজধানীর তাঁতি বাজার থেকে চুরি প্রায় সাড়ে ৩ ভরি স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়।
তিনি জানান, তারা শুধু ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নয়, ঢাকায় সংগঠিত হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে চুরি করে। যে এলাকায় চুরি করে, সেখানে আবাসিক হোটেলে গিয়ে থাকেন। তারপর দিনে হোটেল থেকে বের হয় ঘোরাফেরা করে ফ্ল্যাট এবং বাসা রেকি করে। কোনো বাসা তালাবদ্ধ দেখলে তার বাইরে কয়েকজন সদস্য পাহারা দেয়। বাকির বাসার তালা বা গ্রিল ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে চুরি করে। তাদের বিরুদ্ধে মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান, নেত্রকোনা জেলার সদর, যশোর জেলার কোতোয়ালি, জামালপুর জেলার সদর, কিশোরগঞ্জ জেলার কোতোয়ালি, ময়মনসিংহ জেলার কোতোয়ালি, নারায়নগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একাধিক চুরির মামলা রয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আগামী ২৭ নভেম্বর অবিস্মরণীয় ৪১তম ঐতিহাসিক ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আন্দোলন এবং এ আন্দোলনের চূড়ান্ত পূর্বে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের আহুত সর্বাত্মক সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলাকালে অবরুদ্ধ ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে ষ্টেশনে ১৯৮৪ সালের তৎকালীন (এরশাদ) সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে শাহাদাৎ বরণকারী সরকারি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের মেধাবী ছাত্র উবায়দুর রউফ পলু’র শাহাদাৎ বার্ষিকী দিবস।
উল্লেখ্য, মহকুমা থেকে জেলায় উন্নীত করার দাবিতে বিগত ১৯৮৩ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার স্থানীয় সকল রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে কয়েক মাস ব্যাপী পর্যায়ক্রমিক আন্দোলন কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় ২৭ নভেম্বর হরতাল চলাকালে জেলা সদর ছিল ঊর্মিমূখর শ্লোগানে মুখরিত। জনতা রেলওয়ে স্টেশন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া হতে চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া হতে ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে। যার ফলে, রেল ও সড়ক পথে পূর্বাঞ্চল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বন্ধ ছিল সকল সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠান। পলু নিহত হওয়ার খবরে জেলা সদরের সর্বত্র জনজীবনে স্তব্ধতা নেমে আসে। পলুর লাশ নিয়ে জনতার সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। বিভিন্ন এলাকায় ট্রেন এবং যানবাহন আটকা পড়ে। পরে বিষয়টি এরশাদ সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে অবগত হলে সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখায় নথিজাত হয়। এর সিদ্ধান্ত অনুসরণে ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আন্দোলনে উবায়দুর রউফ পলু নামে ১জন ছাত্র শাহাদাৎ বরণের প্রেক্ষিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের ৪৫টি মহকুমাকে জেলায় রূপান্তর করা হলো এবং বিদ্যমান ১৯টি সহ দেশে মোট জেলার সংখ্যা ৬৪টিতে উন্নীত করা হয়।
দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় উদযাপনে ব্যাপক প্রস্তুতির লক্ষ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা উন্নয়ন পরিষদের গঠিত উপ কমিটির প্রস্তুতি সভা ১৯ নভেম্বর রবিবার দিবাগত রাতে আহবায়ক মোহাম্মদ আমির হোসেন ফারুক এর সভাপতিত্বে অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সদস্য সচিব জিয়া কারদার নিয়ন এর উপস্থাপনায় কর্মসূচি প্রণয়নের বিভিন্ন দিক উল্লেখ করে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা উন্নয়ন পরিষদ এর সভাপতি সাবেক পৌর কাউন্সিলর মোঃ আহসান উল্লাহ হাসান, সহ-সভাপতি সাংবাদিক মোঃ আবুল হাসনাত অপু, সাধারণ সম্পাদক আলী মাউন পিয়াস, যুগ্ম সম্পাদক মোঃ বাবুল চৌধুরী, প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক মোঃ আরমান উদ্দিন পলাশ, প্রকাশনা সম্পাদক আলী হায়দার তুষার, মোঃ হারুন আল রশীদ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
সভায় সর্বসম্মতিক্রমে আগামী ২৭ নভেম্বর সকাল ৮টায় কালোব্যাজ ধারণ, শেরপুরস্থ শহীদ উবায়দুর রউফ পলু’র কবর জিয়াত, তাঁর পরিবারের সদস্যদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ, বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনায় সকল মসজিদে দোয়া এবং সন্ধ্যায় বাদ মাগরীব শহরের পূর্ব পাইকপাড়াস্থ অস্থায়ী কার্যালয়ে বিশেষ দোয়া ও আলোচনা সভা আয়োজনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আলোচনা সভায় আহসান উল্লাহ হাসান এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি থাকবেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর বিভূতি ভূষণ দেবনাথ।
বিশেষ অতিথি থাকবেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা। উদ্বোধন করবেন দিবস উদযাপন উপ কমিটির আহবায়ক মোহাম্মদ আমীল হোসেন ফারুক।
সভায় আগামী ২৭ নভেম্বর ঐতিহাসিক জেলা আন্দোলন ও উবায়দুর রউফ পলু’র শাহাদাৎ বার্ষিকী দিবসের সকল কর্মসূচি নির্ধারিত সময়ে সফল করার জন্য জেলা আন্দোলন সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি উদাত্ত আহবান জানানো হয়।
স্টাফ রিপোর্টার :
অটোরিক্সার ধাক্কায় আনুমানিক ৬০ বছর বয়সী অজ্ঞাতনামা এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। ২৪ জানুয়ারি মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে শহরের কুমারশীল মোড়ে অটোরিক্সার ধাক্কায় ওই বৃদ্ধ আহত হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে ওই বৃদ্ধ মারা যান।
এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন ওই ব্যক্তির পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। ময়নাতদন্তের জন্য তার লাশ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।