অনলাইন ডেস্ক :
পৃথিবীর যেকোন দেশের তুলনায় বাংলাদেশের চিকিৎসকদের মান কম নয় বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন।
আজ ৯ মার্চ শনিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এ-ব্লক অডিটোরিয়ামে ‘রেসিডেন্টদের ইনডাকশন প্রোগাম মার্চ-২০২৪’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের চিকিৎসকদের মান পৃথিবীর যেকোন দেশের তুলনায় কম নয়। বাংলাদেশের চিকিৎসকদের যে মেধা আছে, তার অনেক প্রমাণ আছে। আমরা ভুটান থেকে রোগী নিয়ে এসে চিকিৎসা দিচ্ছি। রোগী যে বাইরে যাচ্ছে এমন নয়। ভারত থেকেও রোগী আসছে। হাঙ্গেরি থেকে যে চিকিৎসক দল জোড়া মাথা আলাদা করেছিল, সেই অপারেশন রোগীদের অ্যানেস্থাসিয়া সে দেশের চিকিৎসকরা দিতে পারেননি। তাদের অ্যানেস্থাসিয়া দিয়েছিলেন বাংলাদেশের চিকিৎসকরা।
তিনি বলেন, আজকে যারা ইনডাকশনে রেসিডেন্ট হিসেবে বসে আছেন, তারা আগামীর দিনে চিকিৎসক হিসেবে কাণ্ডারি। ডাক্তার ও রোগীদের ভালো সম্পর্ক অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করছে। শুধু ডাক্তারদের ওপর নির্ভর করে না। একটি হাসপাতালে ভালো কাজ একজন পরিচালক থেকে শুরু করে একজন অধ্যাপক, নার্স, ওয়ার্ডবয়, পরিচ্ছন্ন কর্মীর ওপর নির্ভর করে। এদের সবার ওপর একটি হাসপাতালের সুনাম বৃদ্ধি নির্ভর করে।
নবীন চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, আমি বিশ্বাস করি, আমরা চিকিৎসকদের সম্মান এমন এক জায়গায় নিয়ে যেতে পারব যে কোনো একদিন এই দেশের মানুষ চিকিৎসকদের দেখলে শ্রদ্ধায় মাথা নিচু করবে। এটি করতে হলে আমাদের একটু ধৈর্য ধরে রোগীদের কথা শুনতে হবে, ধৈর্য নিয়ে রোগীদের সেবা দিতে হবে। এজন্য সময় মতো হাসপাতালে যাব, আসব। এদেশের সাধারণ মানুষ বেশি কিছু চায় না। তাদের মাথায় হাত বুলিয়ে কথা বলা, সেবা দেয়া, কেমন আছেন জিজ্ঞেস করা এটুকুই চায়।
তিনি আরও বলেন, সাধারণ মানুষের চিকিৎসাসেবা উন্নতির যে স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু দেখেছিলেন, সেটি আমাদের দিয়েই সম্ভব। আমাদের মনে রাখতে হবে, ঢাকায় সব কিছু না। আমরা চিকিৎসকদের ইনটেনসিভ দেব। আমাদের প্রতিমন্ত্রীকে নিয়ে এ সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করব। আমি বিশ্বাস করি যদি তাকে সঠিক তথ্য দিয়ে বোঝাতে পারি তবে তিনি চিকিৎসকদের সব কিছু করবেন। স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী এই প্রথম একজন চিকিৎসককে দায়িত্ব দিয়েছেন। রমজান মাসে স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন নিয়ে মিটিং করব। এটি যাতে সংসদে পাস হয় সেজন্য আমি চেষ্টা করব।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন।
সঞ্চালনা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. আবু নাসার রিজভী, ডেন্টাল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল, শিশু অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মানিক কুমার তালুকদার, বেসিক সায়েন্স ও প্যারা ক্লিনিক অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. আহমেদ আবু সালেহ প্রমুখ।
এবার ইনডাকশন প্রোগ্রামে ১ হাজার ৪২৩ জন চিকিৎসক অংশ নিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হওয়ার জন্য শপথ গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে রেসিডেন্টদের শপথ বাক্য পাঠ করান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
অনলাইন ডেস্ক :
চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁওয়ে নির্মাণাধীন শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টারে ফ্রিল্যান্সার ও আইটি উদ্যোক্তাদের বিনামুল্যে অফিস দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক। প্রথম ছয় মাস পাঁচ হাজার বর্গফুটের একটি ফ্লোরসহ ইন্টারনেট ও বিদ্যুৎ সেবা ব্যবহারের সুবিধা পাবেন ফ্রিল্যান্সাররা।
আজ ১৭ ফেব্রুয়ারি শনিবার চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে পঞ্চম চট্টগ্রাম আইটি মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই ঘোষণা দেন প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামকে আমরা স্মার্ট, গ্রিন ও ক্লিন শহর হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। চট্টগ্রাম থেকে যদি কোনো তরুণ-তরুণী প্রযুক্তিখাতে উদ্যোক্তা হতে চায় সরকার তাদের সুযোগ-সুবিধা দিবে।
এ ছাড়া আমরা চট্টগ্রামে ১৫টি উপজেলায় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তুলব, যেখানে লক্ষাধিক তরুণ-তরুণী তথ্য ও প্রযুক্তির প্রশিক্ষণ নিতে পারবে।
চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি ওমর হাজ্জাজ বলেন, মেলায় চট্টগ্রামের আইটি প্রতিষ্ঠানগুলো তুলে ধরা হচ্ছে। দেশি-বিদেশি প্রায় ৪০টি প্রতিষ্ঠানের ৬৪টি স্টল রয়েছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি মেলায় অংশ নিচ্ছে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন ও আয়ারল্যান্ডের মালিকানাধীন আইটি ও সলিউশনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান। তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে তথ্য প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ অনেকদুর এগিয়ে গেছে। এক সময় যে সকল মন্ত্রণালয়, দপ্তরে কেবল হাতে কলমে কাজ হত সেখানেও এখন ডিজিটাল পদ্ধতিতে কাজ হচ্ছে।
এদিকে শনিবার সকাল থেকে নানা বয়সের দর্শনার্থীরা ভিড় করছে মেলার বিভিন্ন স্টলে। মেলায় দেশি-বিদেশি ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান, প্রযুক্তি নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান নিজেদের দক্ষতা প্রদর্শন করছে। ফলে নতুন নতুন প্রযুক্তি স¤পর্কে জানতে পারছে মেলায় আসা দর্শনার্থীরা।
সোসাইটি অব চিটাগং আইটি প্রফেশনালসের সভাপতি মো. আবদুল্লাহ ফরিদ বলেন, আমরা চট্টগ্রামের আইটি প্রতিষ্ঠানগুলোকে তুলে ধরতে চাই। নতুন নতুন প্রযুক্তি স¤পর্কে জানতে পারবে মেলায় আসা দর্শনার্থীরা। এ ছাড়াও মেলার পাশাপাশি আমরা তিনদিনে তিনটি বিশেষ সেমিনার করবো। আগামী সোমবার পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য এই মেলা উন্মুক্ত থাকবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
‘পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত/ ঘোষণার ধ্বনি-প্রতিধ্বনি তুলে/ নতুন নিশান উড়িয়ে/ দামামা বাজিয়ে দিগ্বিদিক/ এই বাংলায় তোমাকে আসতেই হবে হে স্বাধীনতা।’ সত্যিই বাংলায় এসেছে সেই মহার্ঘ্য স্বাধীনতা। আর আজ বাঙালির সেই গৌরবদীপ্ত দিন। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। হাজার বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে ১৯৭১ সালের এই দিনে বিশ্বের বুকে স্বাধীন অস্তিত্ব ঘোষণা করেছিল বীর বাঙালি।
বাঙালি জাতির জীবনে ২৬ মার্চ দিনটি একই সঙ্গে গৌরব ও শোকের। বাঙালির ওপর পাকিস্তানি শাসকেরা শোষণ এবং ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর যে আগ্রাসন চালিয়েছিল, এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্বাধিকারের আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বাঙালিরা। তারা ২৫ মার্চ মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে উঠে দাঁড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও দেশ স্বাধীন করার শপথ গ্রহণ করে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে প্রতিটি বাঙালির মনে নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের বীজ রোপিত হয়। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। মৃত্যুপণ লড়াই ও রক্তসমুদ্র পাড়ি দিয়ে বীর বাঙালি জাতি ছিনিয়ে আনে জাতীয় ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মহান স্বাধীনতা।
প্রতিবছর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হৃদয়ে ধারণ করে দিবসটি উদযাপন করে গোটা জাতি। বিনম্র শ্রদ্ধা ও গভীর কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করে স্বাধীনতার জন্য আত্মদানকারী দেশের বীর সন্তানদের। শ্রদ্ধা জানায় মহান স্বাধীনতার রূপকার বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক জাতীয় নেতা, নৃশংস গণহত্যার শিকার লাখো সাধারণ মানুষ এবং সম্ভ্রম হারানো মা-বোনের প্রতি।
এই মহার্ঘ্য স্বাধীনতা অর্জন করতে বাঙালি জাতিকে করতে হয়েছে দীর্ঘ সংগ্রাম, দিতে হয়েছে এক সাগর রক্ত। বঙ্গবন্ধু ধাপে ধাপে পুরো বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ করেন। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের অব্যবহিত পরেই ভাষার প্রশ্নে একাত্ম হয় বাঙালি। ১৯৪৮, বায়ান্ন পেরিয়ে চুয়ান্ন, বাষট্টি, ছেষট্টির পথ বেয়ে আসে ১৯৬৯।
ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে কেঁপে উঠেছিল জেনারেল আইয়ুবের গদি। জনতার সাগরে সৃষ্টি হয়েছিল তাল স্রোতধারা। ‘জাগো জাগো বাঙালি জাগো’, ‘তোমার আমার ঠিকানা- পদ্মা মেঘনা যমুনা’, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ শ্লোগানে শ্লোগানে প্রকম্পিত ছিল গ্রাম-শহর, জনপদ। শত ষড়যন্ত্র ও সামরিক জান্তার রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে সত্তরের জাতীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পায় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ।
কিন্তু বাঙালির হাতে শাসনভার দেয়ার বদলে শুরু হয় ষড়যন্ত্র। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির জুলফিকার আলী ভুট্টো বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনার নামে করতে থাকেন কালক্ষেপণ। পর্দার আড়ালে প্রস্তুত হয় হিংস্র কায়দায় বাঙালি হত্যাযজ্ঞের ‘নীলনকশা’।
কিন্তু ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণেই পাওয়া যায় মুক্তির দিকনির্দেশনা। আক্ষরিক অর্থেই তখন পূর্ব পাকিস্তানের প্রশাসন চলছিল বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে। সেই প্রবল প্রদীপ্ত আন্দোলনের জোয়ারে ধীরে ধীরে বাঙালির হৃদয়ে আঁকা হয় একটি লাল-সবুজ পতাকা, একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের ছবি।
কিন্তু বাঙালির আবেগ, সংগ্রাম ও মুক্তির আকাক্সক্ষাকে নির্মূল করতে অস্ত্র হাতে নামে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী। শোষিত ও নির্যাতিত মানুষের স্বাধীনতার আকাক্সক্ষাকে রক্তের বন্যায় ডুবিয়ে দিতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে শুরু করে নিষ্ঠুর গণহত্যা।
সেই কালরাত্রি থেকেই শুরু হয় মৃত্যু, ধ্বংস, আগুন আর আর্তনাদ, পৈশাচিক বর্বরতা। কিন্তু ওই ঘোরতর অমানিশা ভেদ করেই দেশের আকাশে উদিত হয় স্বাধীনতার চিরভাস্বর সূর্য। ২৬ মার্চের সূচনালগ্নে গ্রেফতার হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ওয়্যারলেসের মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে শত্রুসেনাদের বিতাড়িত করতে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে জীবনপণ সশস্ত্র লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে বীর বাঙালি। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে ছিনিয়ে আনে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠতম অর্জন- মহান স্বাধীনতা।
অনলাইন ডেস্ক :
শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গঠিত নির্বাচন কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও কমিশনার (ইসি) নিয়োগের দায়মুক্তি কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না- জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আইন মন্ত্রণালয় ও নির্বাচন কমিশনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আজ ২৭ আগস্ট মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত এক রিটের প্রাথমিক শুনানির পর বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান এবং বিচারপতি মোহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন নিয়ে ২০২১ সালের ২০ ডিসেম্বর থেকে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করেন তখনকার রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। সংলাপে বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল ইসি গঠনে আইনের পক্ষে প্রস্তাব করে। আওয়ামী লীগও ইসি গঠনে আইনের প্রয়োজন আছে বলে মত দেয়।
সংবিধানে আইনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের নির্দেশনা থাকলেও স্বাধীনতার ৫০ বছরে তা হয়নি।
অবশেষে ২০২২ সালে সেই আইন করে ইসি গঠন করে আওয়ামী লীগ সরকার। এর জন্য ওই বছর ১৭ জানুয়ারি ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন-২০২২’ আইনের খসড়া অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। পরে ২৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংবিধানের ১১৮ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইনটির বিল পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। ২৯ জানুয়ারি এ আইনের গেজেট প্রকাশ করে সরকার।
আইন পাসের পর ইসি গঠনে যোগ্য ব্যক্তি বাছাইয়ে ওই বছর ৫ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে নাম দেওয়ার অনুরোধ করে। ব্যক্তিপর্যায়েও নাম আহ্বান করা হয়। ১৪ ফেব্রুয়ারি ৩২২ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করে কমিটি। অনুসন্ধান কমিটির প্রকাশ করা ৩২২ জনের তালিকা থেকেই নতুন নির্বাচন কমিশনের ৫ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
তাঁদের মধ্যে অবসরপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ সচিব কাজী হাবিবুল আউয়ালকে করা হয় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)। আর নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পান- অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম রাশিদা সুলতানা, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবীব খান এবং সাবেক দুই জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর ও আনিছুর রহমান। এই নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
এই আইনের ৯ ধরায় বলা আছে- ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগদানের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ইতঃপূর্বে গঠিত অনুসন্ধান কমিটি ও তৎকর্তৃক সম্পাদিত কার্যাবলি এবং উক্ত অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারের নিয়োগ বৈধ ছিল বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত বিষয়ে কোনো আদালতে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।’
এই ধারাটি চ্যালেঞ্জ করে গত ১৮ আগস্ট হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবী। তাঁরা হলেন- আব্দুল্লাহ সাদিক, জিএম মোজাহিদুর রহমান, মিসবাহ উদ্দিন, জোবায়দুর রহমান, নোয়াব আলী, আজিম উদ্দিন পাটোয়ারী, সাজ্জাদ সরওয়ার, মোজাহিদুল ইসলাম, মিজানুল হক এবং একেএম নুরুন নবী। রিটে বলা হয়, সরকারের তিনটি বিভাগ রয়েছে। আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগ। আইন বিভাগ কোনো আইন পাশ করে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা খর্ব করতে পারে না। কারণ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সংবিধানের মৌলিক কাঠামো। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার আইন, ২০২২ এর ৯ ধারার মাধ্যমে সংবিধানের মৌলিক কাঠামো ধ্বংস করা হয়েছে।
আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ‘ধারা ৯ এর মাধ্যমে ইতোপূর্বে নিয়োগকৃত নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার অধিকার কেড়ে নেওয়ার পাশাপাশি বিচার বিভাগের ক্ষমতাকেও খর্ব করা হয়েছে। যা সংবিধানের ২৬, ২৭ ও ৩১ অনুচ্ছেদ এবং ক্ষমতার পৃথকীকরণ নীতি ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতার পরিপন্থি। তা ছাড়া এই দায়মুক্তি সম্পূর্ণভাবে অসাংবিধানিক।’
অনলাইন ডেস্ক :
গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এম.পি আজ ২৮ মে জাপানের নাগাসাকি শহরের পিস পার্কে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের পক্ষে বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত একটি শান্তি স্মৃতিস্তম্ভের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মাঝে জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ নবীরুল ইসলাম এবং নাগাসাকির মেয়র শিরো সুজুকি উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক একটি পারমাণবিক বোমামুক্ত, শান্তিপূর্ণ বিশ্বের অন্বেষণে জাপানের জনগণকে ও বিশ্বে ‘শান্তির সংস্কৃতি’র বার্তা পৌঁছে দেওয়ার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকার নাগাসাকি পিস পার্কে শান্তি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের প্রস্তাব দেয়। তৎপ্রেক্ষিতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি স্মৃতিস্তম্ভটি উদ্বোধন করেন।
স্মৃতিস্তম্ভের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণে সার্বিক সহযোগিতার জন্য নাগাসাকির মেয়রসহ এ প্রকল্পের সাথে সম্পৃক্ত বাংলাদেশ ও জাপানের সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।
স্থপতি অনিন্দ্য পন্ডিত কর্তৃক নকশাকৃত ৩ মিটার উচু এ স্মৃতিস্তম্ভটি কালো গ্রানাইট ও সাদা মার্বেল পাথর দিয়ে নির্মিত। বাংলাদেশ দূতাবাস টোকিওর সহযোগিতায় স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মাণ করেছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন গণপূর্ত অধিদপ্তর।
অনুষ্ঠানের আগে ১৯৪৫ সালে নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা হামলার সময়ের সাথে মিলিয়ে বেলা ১১ টা ২ মিনিটে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
স্মৃতিস্তম্ভ উন্মোচন অনুষ্ঠান শেষে গণপূর্তমন্ত্রী উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের কেন্দ্রস্থলে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। তিনি শান্তি-স্মৃতি (পিস মেমোরিয়াল) জাদুঘর পরিদর্শন করেন ও সেখানে দর্শনার্থী বই-এ মন্তব্য লেখেন।
দুপুরে নাগাসাকির মেয়র সুজুকি বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সম্মানে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেন। মধ্যাহ্নভোজের বক্তৃতায় রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমেদ অনুষ্ঠানটি সফলভাবে আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতা ও আন্তরিকতার জন্য মেয়র সুজুকিকে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হামিদুর রহমান খান, বাংলাদেশ দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অফ মিশন শাহ আসিফ রহমান, দূতালয় প্রধান শেখ ফরিদ এবং দ্বিতীয় সচিব (প্রেস) মোঃ ইমরানুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।