চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে একটি প্রভাবশালী মহল রাতের আঁধারে জলাশয় ভরাট করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রশাসনের অভিযানের পরও বন্ধ হয়নি জলাশয় ভরাট। এ ঘটনায় গত ৪ মার্চ জালশুকা গ্রামের মোঃ শওকত, আলি মিয়া, রহিম মিয়া, নান্টু মিয়া ও খবির উদ্দিন জলাশয় ভরাট বন্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।
গ্রামবাসীর লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সিএস, আরএস ও বিএসসহ সকল কাগজপত্রে উপজেলার বড়াইল ইউনিয়নের জালশুকা গ্রামে পানি প্রবাহিত হওয়ার খাল বিদ্যমান রয়েছে। এক সময় এই খাল দিয়ে পুরো ইউনিয়নের লোকজন কৃষি পন্য নৌকা দিয়ে জমি থেকে বাড়িতে আনা-নেওয়া করত। স্থানীয় প্রভাবশালীরা খালটির বিভিন্ন অংশে দখল করেছেন।
উপজেলার জালশুকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের জলাশয় ভরাটের দায়ে গত ১৬ ফেব্রæয়ারি নবীনগর উপজেলার তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা জাহান ভ্রাম্যমান আদালতের পরিচালনা করেন। অভিযানকালে অভিযুক্তদের একজনকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেন তিনি। অভিযানের সময় বালু ভরাট কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম পাইপ নষ্ট করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের ১ সপ্তাহ পর থেকে জলাশয়টি ব্যক্তি মালিকানার জায়গা দাবি করে রাতের আধারে বালু ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। জালশুকা গ্রামের আবেদ হোসেন ও তার ভাই মোঃ রহমান জলাশয়টি ভরাট করছেন।
অভিযোগকারীদের দাবি জলাশয়ের পাশে মানুষের চলাচলের জন্য থাকা ১ নম্বর খাস খতিয়ানের ১৭শতক জায়গাও ভরাট করা হয়েছে। প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইনের (২০০০) ৫ ধারা অনুযায়ী, খেলার মাঠ, উন্মুক্ত স্থান, উদ্যান ও প্রাকৃতিক জলাধার হিসেবে চিহ্নিত জায়গার শ্রেনী পরিবর্তন করা যাবে না।
এ ছাড়া এ ধরনের জায়গা অন্য কোনোভাবে ব্যবহার করা, ভাড়া, ইজারা বা হস্তান্তর করা যাবে না। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন (২০১০ সালে সংশোধিত) অনুযায়ী যেকোনো ধরনের জলাশয় ভরাট করা নিষিদ্ধ।
জলাধার সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, কেউ আইনের বিধান লঙ্ঘন করলে অনধিক ৫ বছরের কারাদন্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা যাবে। শাস্তি প্রদানের পাশাপাশি আইন অমান্যকারীর নিজ খরচে সেটা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার বিধানও রয়েছে।
ভূমি কার্যালয়ের একটি নথিতে দেখা গেছে, ১ নম্বর খাস খতিয়ানের ১২১ দাগে মানুষের চলাচলের জন্য ১৭শতক চলার পথ রয়েছে। ইতোমধ্যে জায়গাটি ভরাট করে ফেলা হয়েছে।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, জালশুকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে একটি জলাশয় রয়েছে। ওই জলাশয়ের নিচের দিকে বেশিরভাগ অংশ বালু ফেলে ভরাট করা হয়েছে। এর দক্ষিণদিকে গোকর্ণ-কৃষ্ণনগর সড়ক সংলগ্ন একটি খাল রয়েছে। তবে ওই খালেরও অনেকটা জায়গা বালু ফেলে ভরাট করে ফেলা হয়েছে। ভরাট করার পরও কিছু অংশে পানি দেখা যায়। ওই জায়গা বেশ কিছু শিশু শিক্ষার্থীকে খেলা করতে দেখা যায়।
এ ব্যাপারে উপজেলার বড়াইল ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের নায়েব মো. রাসেল জানান, অনুমতি না নিয়ে জলাশয় ভরাটের অভিযোগে জরিমানা করা হয়। তবে যতদূর জানি জরিমানা করার পর জায়গাটিতে আর বালু ফেলা হয়নি।
ভরাটের সাথে যুক্ত আবেদ হোসেন বলেন, প্রশাসনের অভিযানের পর আমরা আর বালু ফেলিনি। জায়গাটি আমাদের নিজস্ব। স্কুলের মাঠের জন্য এখান থেকে মাটি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন জলাশয় হয়ে যাওয়ায় অনুমতি না নিয়ে ভরাটের কারণে প্রশাসন অভিযান চালিয়েছে। তারা বলছে ভরাটের অনুমতি লাগবে।
এ ব্যাপারে মোঃ রহমান বলেন, ‘এটি খাল বা জলাশয় নয়। পৈতৃকসূত্রে পাওয়া এখানে আমাদের ৪০শতক জমি রয়েছে। আমাদের জমির মাটি দিয়ে বিদ্যালয়ের মাঠ এবং গোকর্ণঘাট-কৃষ্ণনগর সড়ক নির্মানের জন্য দেয়া হয়েছে। খালের কোনো জায়গা ভরাট করা হয়নি। বরং আমাদের জমির উপর দিয়ে সেচের পানির নালা গিয়েছে। তিনি বলেন, আমরা এলাকায় থাকি না। একটি চক্র আমাদের জমি ভরাটকে জলাশয় ভরাটের নাম দিচ্ছেন।
এ ব্যাপারে বড়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন, আমি শুনেছি ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানের পর থেকে জলাশয় ভরাট বন্ধ রয়েছে। তবে আমি যতদূর জানি এটি তাদের ব্যক্তিগত জায়গা। একসময় জমি ছিল। স্কুলের মাঠ ও রাস্তা নির্মাণের সময় তাদের জমি থেকে মাটি নিয়েছিল। এটাকে এলাকায় মরা ডোবা বলে। বর্তমানে ভরাট বন্ধ আছে। শুনেছি ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে নবীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর ফরহাদের সাথে যোগাযোগগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেনি।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে বাস ও ট্রলির মুখোমুখি সংঘর্ষে রুবেল সরকার (৪০) নামে এক যুবকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো দুজন। আজ ১০ মার্চ সোমবার সকালে উপজেলার রাধিকা সড়কের কনিকাড়া নামক স্থানে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিহত রুবেল ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন গৌরনগর গ্রামের বাসিন্দা রতন সরকারের ছেলে। আহত ২ যুবক হলেন- মো. অলি মিয়া ও এমদাদুল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এই সড়কের প্রতিনিয়তই প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটে।
সোমবার ভোর ৬টায় নবীনগর-রাধিকা সড়কে বাস ও ট্রলির মুখোমুখি সংঘর্ষে তিন জন গুরুতর আহত হন। পরে তাদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রুবেলকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত দুজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নবীনগর থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নবীনগর রাধিকা সড়কে বাস ও ট্রলির মুখোমুখি সংঘর্ষে এক যুবক নিহত হয়েছেন। তার পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি উদ্যোগে ‘দুর্নীতি বিরোধী বিতর্ক ও রচনা প্রতিযোগিতা’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
৩০ মে বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ বিতর্ক ও রচনা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
তিনটি পর্বে বিতর্কের প্রথম রাউন্ডের বিষয় ছিল ‘অভাব নয় সীমাহীন লোভই দুর্নীতির প্রধান কারণ’ এ পর্বে নবীনগর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়কে হারিয়ে সলিমগঞ্জ আব্দুর রউফ মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয় বিজয় অর্জন করে।
দ্বিতীয় রাউন্ডে বিষয়বস্তু ছিল ‘দুর্নীতিই জাতীয় উন্নয়নের প্রধান কারণ’ এ পর্বে নবীনগর ইচ্ছাময়ী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়কে হারিয়ে শিবপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় বিজয় অর্জন করে।
ফাইনাল রাউন্ডের বিষয়বস্তু ছিল ‘দুর্নীতিবিরোধী মনোভাব সৃষ্টিতে পরিবারের ভূমিকায়ই মূর্খ্য’ এ বিতর্কে সলিমগঞ্জ আব্দুর রউফ মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়কে হারিয়ে শিবপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় চ্যাম্পিয়ন হয়। শ্রেষ্ঠ বক্তা নির্বাচিত হয় চ্যাম্পিয়ন দলের দলনেতা জারিন তাসমিন।
দুর্নীতি দমনের ছাত্রসমাজের ভূমিকা ‘বিষয়ের উপরে রচনা প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করে শিবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী মাছুমা খন্দকার।
দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে নবীনগর ইচ্ছাময়ী পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার সারা।
তৃতীয় স্থান অর্জন করে নবীনগর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র নওফেল আহাদ।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কার্মকর্তা তানভীর ফরহাদ শামীম।
বিশেষ অতিথি ছিলেন একাডেমিক সুপার ভাইজার হাসনাত জাহান, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আরজু, প্রেসক্লাবের সভাপতি শ্যামাপ্রসাদ চক্রবর্তী শামল, দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সহ-সভাপতি আমেনা বেগম।
সভাপতিত্ব করেন নবীনগর দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি আবু কামাল খন্দকার। বক্তব্য রাখেন, কমিটির সদস্য মাওলানা আব্দুল মতিন, কমিটির সদস্য আসাদুজ্জামান কল্লোল, শিক্ষক মাদক চক্রবর্তী, শিক্ষক আবু হানিফ।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন, দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো: হোসেন শান্তি।
বিচারক প্যানেলে ছিলেন, প্রভাষক শিউলি পারভীন, আশীষ কুমার গুহ, সাম সাম উদ্দিন।
সঞ্চালনায় ছিলেন দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্য আব্বাস উদ্দিন হেলাল।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে বেশি দামে সিলিন্ডার গ্যাস বিক্রির দায়ে এক ডিলারকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত।
গতকাল শনিবার বিকেলে নবীনগর পৌর শহরের নারায়ণপুর এলাকায় এই জরিমানা করেন নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর ফরহাদ শামীম। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর ফরহাদ শামীম জানান, সরকার নির্ধারিত দাম থেকে বেশি দামে নবীনগরের বিভিন্ন জায়গায় সিলিন্ডার গ্যাস বিক্রি করছে কিছু ব্যবসায়ী। এমন গোপন সংবাদের তথ্যের ভিত্তিতে বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে নবীনগর পৌর শহরের নারায়ণপুর এলাকায় সিলিন্ডার গ্যাস বিক্রির ডিলার মেসার্স আনোয়ার ট্রেডার্সের দোকানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ডিলার খুচরা বিক্রেতা ও ক্রেতাদের বিক্রির রশিদ না দিয়ে বেশি দামে সিলিন্ডার গ্যাস বিক্রি করছে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ডিলার মেসার্স আনোয়ার ট্রেডার্সকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তিনি আরো জানান, পাশাপাশি বসুন্ধরা গ্যাসের ডিলার মেসার্স মাহাদী এন্টারপ্রাইজ বিস্ফোরক পরিদপ্তরের লাইসেন্স দেখাতে না পারায় সাময়িক বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। ন্যায্য মূল্যে সিলিন্ডার গ্যাস বিক্রি করার জন্য দোকানগুলোকে কঠোর নির্দেশ প্রদান করা হয়। পাশাপাশি তাদের সতর্কও করা হয়। জনস্বার্থে তাদের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
সুবিন্যস্থ বেণি জুড়ে গাছে দুলছে আশ্চর্য সুন্দর হিজল ফুল। দেখে মুগ্ধ না হয়ে পারা যায় না। প্রতি বছর বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরের হাওড় বেষ্টিত ভাটির অঞ্চলে এ ফুলের দেখা মিলে, এখন সেই সময়। রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতায় ঘুরে ফিরেই এসেছে হিজলের কথা। কবির ভাষায়- “চোখে তার হিজল কাঠের রক্তিম/চিতা জ্বলে”। একই ভাবে হিজল বনে ঘুঘু দেখে উচ্ছ্বসিত কবি লিখেছেন- “পৃথিবীর সব ঘুঘু ডাকিতেছে হিজলের বনে”। অবশ্য কবিতার বাইরে বাস্তবে হিজল গাছের সংখ্যা অনেক কমে গেছে। গণসংগীত শিল্পী হেমাঙ্গ বিশ্বাস সুরে সুরে বলেছেন- “হাওড়ের পানি নাই রে হেথায়, নাই রে তাজা মাছ/বিলের বুকে ডালা মেলা, নাই রে হিজল গাছ”। অর্থাৎ দিন দিন হিজল গাছের সংখ্যা কমছে। বর্তমানে গাছটি প্রায় দুর্লভ। এ গাছটি সংস্কৃত নাম নিচুল, এ ছাড়াও জলন্ত ও নন্দীক্রান্ত নামেও পরিচিত। হিজল গাছের বৈজ্ঞানিক নাম- Barringtonia acutangula। এটি Lecythidaceae পরিবারের সদস্য। এটি বাংলাদেশের ভাটির অঞ্চলে বহুকাল ধরে টিকে থাকলেও এর আদি নিবাস অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া এবং ভারত। গাছ মাঝারি আকারের, উচ্চতা ৫-১০ মিটার পর্যন্ত, এর ডালপালা থাকে ছড়ানো, বাকল যথেষ্ট পুরো, ঘনছাই রঙের হয়ে থাকে, বীজ থেকে গাছ হয়। খাল, বিল, নদী, ডোবা, হাওর ইত্যাদি জায়গায় দেখতে পাওয়া যায়। এটি পানির নিচে কয়েক মাস জীবিত থাকতে পারে। এ গাছের মূল আকর্ষণ লাল ও গোলাপি রঙের ছোট ছোট ফুল, ফুলের আছে মিষ্টি ঘ্রাণ। উদ্ভিদবিদ দ্বিজেন শর্মার বর্ণনা মতে- “ফুলের মঞ্জুরী ৬-১৫ ইঞ্চি লম্বা। বহুপুষ্পিক ফুলের বৈশিষ্ট্যে হিজল অনন্য”।
হিজল বীজের অনেক ঔষুধি গুনাগুন আছে- মাথা ও কপাল ব্যথা হলে হিজল বীজ শুকিয়ে গুড়া করে দুই চামচ পরিমাণ এক কাপ দুধসহ সকালে এবং বিকেলে খেলে মাথা ব্যাথা কমে যায়। পেটে গ্যাস হলে, ঢেকুর উঠলে, পেট ফাঁপা হলে হিজল বীজ চূর্ণ করে গরম মসলা সহ খেলে কিছুক্ষনের মধ্যে সেই সমস্যা চলে যায়। চোখ উঠলে, চোখ লাল হলে, চুলকায়, পানি পড়ে। সেই সময় বীজ নিয়ে পাথরে ঘসে চন্দনের মত চোখের চারি পাশে লাগিয়ে দিলে কিছুক্ষণ রাখার পর ছোট নেকড়া ভিজিয়ে মুছে দিলে যন্ত্রণা কমে যায়। হিজল ফুল গভীর রাতে ফুটে, সকাল হতে না হতেই ঝড়ে যায়। হিজল সাধারণত জলমগ্ন বা জলসংলগ্ন অঞ্চলে ভাল হয়। তাই নবীনগরের ভাটির অঞ্চলের গ্রামীণ ঐতিহ্যের অংশ হয়ে আছে টিকে আছে হিজল গাছ। নদী সংলগ্ন গ্রাম গুলোতে নৌকা দিয়ে গেলে চোখে পড়ে অপূর্ব হিজল গাছের সারি কারন- হিজলের আবাস নিচু এলাকা/ হাওড় অঞ্চল।
নবীনগরের মত দেশের হাওড় বেষ্টিত সাত জেলার ৪০টি উপজেলায় কম বেশি প্রায় প্রতি গ্রামেই দেখা যায় হিজল। নিচু জলাঅঞ্চলে মাছের অভয়রাণ্য তৈরিতে এই গাছের ডাল ব্যবহৃত হয়। ভরা বর্ষায় নবীনগরের ভাটি অঞ্চলে বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার সময় নৌকা থেকে চারপাশে তাকালে থৈ থৈ জলের মধ্যে দেখা যায় হিজল গাছ। যেন ঘাটে নৌকা লাগতেই স্বাগত জানাচ্ছে হিজলের ফুল। স্থানীয়দের খুব চেনা এ গাছটি শুকনো মৌসুমেও দিব্যি থাকে। এমনকি রাজধানী শহরের একাধিক উদ্যানেও দেখা যায় হিজল গাছ। বর্তমানে কিছু সরকারি বেসরকারি প্র্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে এ গাছ লাগানো হচ্ছে। হিজলের প্রাণশক্তি অনেক বেশি, দীর্ঘজীবী গাছ, বিধ্বংসী বন্যা কিংবা তীব্র খরাও একে কুপোকাত করতে পারে না। জল এবং স্থল দুই জায়গাতেই এরা সাবলীল, এদের এই আলাদা বৈশিষ্ট্য ও অভিযোজনের কারনে হিজল সবার দৃষ্টি কাড়ে।
সফিকুল ইসলাম বাদল, নবীনগর :
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য, কুমিল্লা বিভাগীয় বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুর্যসেন হলের জিএস ও নবীনগর মহিলা কলেজের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি সায়েদুল হক সাঈদ উদ্যোগ নিয়ে নবীনগর বাসীর সেবায় নিয়োজিত থাকছেন। নিজস্ব অর্থায়নে এই মানুষটি নবীনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অসহায় মানুষের চিকিৎসা সেবায় ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও ওষুধ বিতরণের পাশাপাশি এবার তিনি প্রায় তিন শতাধিক অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য কম্বল বিতরণ করছেন।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মদিন উপলক্ষে নবীনগর উপজেলার পূর্ব এলাকার শিবপুর বাজার সংলগ্ন নুরনগর সাংবাদিক ফোরাম কার্যালয়ের সামনে এসব কম্বল তুলে দেয়া হয় সুবিধা বঞ্চিত সাধারণ মানুষের হাতে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে এইসব কম্বল বিএনপি নেতা সাঈদ এর অর্থায়নে বিতরণ করেন স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা। কম্বল বিতরণ সম্পর্কে মুঠোফোনে সায়েদুল হক সাঈদ বলেন, আমি শহিদ জিয়ার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বিগত দিনে রাজনীতি করেছে, ভবিষ্যতেও করবো। নবীনগরের মানুষের জন্য কিছু করতে পারলে মনে আনন্দ পাই,তাই চেষ্টা করি তাদের পাশে থাকার। ভবিষ্যতে ধারাবাহিকতা ধরে রেখে মানুষের জন্য যেন কাজ করতে পারি সেজন্য আমি আমার প্রাণের স্পন্দন নবীনগর বাসীর দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করছি।
এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যাকুট ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলী আহাম্মদ, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, নাটঘর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু হানিফ মোল্লা, বড়াইল উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হক, উপজেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহবায়ক হুমায়ুন কবির, উপজেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহবায়ক মনির হোসেন সরকার, নাটঘর ইউনিয়ন বিএনপির সহ সভাপতি আমিনুল মহাজন, বিদ্যাকুট ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি আমান উল্লা বাচ্ছু, বিটঘর ইউনিয়ন যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি ফোরকান ভূঁইয়া, শেখ ফরিদ আহমেদ, কাজী আল রাজিব, মো. বসির মিয়া, রিয়াদ ইসলাম ফুরকান, আব্দুল আলিম প্রমুখ।