সরকারি সিদ্ধান্ত মানতে অপারগতা : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সকল মাংসের দোকান বন্ধ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 18 March 2024, 241 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকার নির্ধারিত মূল্য ৬৬৪ টাকা ৩৯ পয়সা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রি করতে অপারগতা প্রকাশ করেছে মাংস বিক্রেতারা।

আজ ১৮ মার্চ সোমবার মাংস বিক্রেতারা শহরের সকল মাংসের দোকান বন্ধ রখেছে। মাংসের দাম পুনঃবিবেচনা না করা পর্যন্ত মাংস বিক্রি বন্ধ রাখবেন বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

সকাল থেকে শহরের প্রধান বাজার আনন্দ বাজার, ফারুকি বাজার, মেড্ডা বাজার, মৌড়াইলের বৌ বাজার, কাউতলী বাজারসহ জেলা শহরের অন্তত অর্ধশতাধিক দোকানে গরুর মাংস বিক্রি বন্ধ রেখেছেন মাংস ব্যবসায়ীরা।

এ অবস্থায় বাজারে এসে ক্রেতারা কাঙ্খিত মাংস না পেয়ে বিপাকে পরেছেন। মাংসের দাম পুনঃবিবেচনা না করা পর্যন্ত মাংস বিক্রি বন্ধ থাকবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

সরেজমিনে বাজার ঘুরে খোঁজ নিয়ে ও ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সোমবার সকালে কৃষি বিপনন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে মাংসের দোকানে লিফলেট বিতরণ করা হয়। লিফলেটে গরুর মাংস ব্যবসায়ীদের ৬৬৪ টাকা ৩৯ পয়সা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রি করার জন্যে নির্দেশনা দেয়া হয়।

ব্যবসায়ীরা জানান, খামার বা ব্যাপারিদের কাছ থেকে প্রতি কেজি গরুর মাংস চামড়াসহ ক্রয় করতে হচ্ছে ৭২০টা দরে। খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি মাংস ব্যবসায়ীরা বিক্রয় করে ৭৫০টাকা দরে। কম দামে মাংস বিক্রি করা সম্ভব নয় বিধায়, ব্যবসায়ীরা সকাল থেকে জেলা শহরের মাংসের দোকানগুলো বন্ধ রাখেন।

মাংস ব্যবসায়ী মোঃ জাকির হোসেন ও শামীম জানান, আমরা জনগণের চাহিদা ও ক্রয় ক্ষমতার কথা চিন্তা করেই মাংস বিক্রি করে থাকি। সরকার আমাদের যে বাজার দর দিয়েছে ৬৬৪ টাকা ৩৯ পয়সা দর। এই দরে মাংস বিক্রি করে আমাদের ব্যবসার লোকশান হবে। তাই আমরা গরুর মাংস বিক্রি বন্ধ রেখেছি। পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত আমাদের মাংস বিক্রি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

ব্যবসায়ী শাহিন মিয়া বলেন, আমরা লোকসানে ব্যবসা করতে পারব না। সরকার গরুর মাংসের যে দাম নির্ধারন করে দিয়েছেন, সে দামে মাংস বিক্রি করলে আমাদের লোকসান হবে। লোকসান দিয়েতো আর ব্যবসা সম্ভব না। তাই সকাল থেকে আমরা মাংস বিক্রি বন্ধ রেখেছি।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মাংস ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ব্যবসায়ীরা খামারী এবং ব্যাপারি থেকে গরু কিনে থাকে, তারা চামড়া সহ গরু কিনে বাজারে জবাই করে থাকেন। এতে ৭২০ টাকার মতো প্রতি কেজিতে দাম পড়ে।

এ অবস্থায় সরকার ৬৬৪ টাকা ৩৯ পয়সা নির্ধারণ করেছে। তা আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাজারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। অবশ্যই দাম সমন্বয় করতে হবে। কারণ খামারে গরুর দাম কমাতে হবে। দাম পুনরায় নির্ধারণ করতে হবে। অন্যথায় এই মাংসের বাজার বন্ধ রাখা ছাড়া আমাদের উপায় নেই।

শহরে ফারুকী বাজার আসা ক্রেতা মোঃ রবিউল্লাহ ও মনির মিয়া জানান, তারা বাড়ি থেকে গরুর মাংস কিনোর জন্য বাজারে এসেছেন। এসে দেখেন, সকল মাংসের দোকান বন্ধ। গরুর মাংস কিনতে না পেরে ফার্মের মুরগি নিয়ে বাসায় যাচ্ছি। রোজা- রমজান মাসে এমনটা আমরা প্রত্যাশা করিনি। আশা করি ব্যবসায়ীরা দ্রুত তাদের সমস্যার সমাধান করে দোকান গুলো আবারো চালু করবেন।

এদিকে শহরের ফারুকী বাজারে বাজার দরের লিফলেট বিতরণকালে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মচারী মোঃ পলাশ মন্ডল জানান, মহাপরিচালকের কার্যালয়ের নির্দেশনাক্রমে বাজারে লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। এর বেশি আমার জানা নেই।

আগামীকাল মঙ্গলবার এ ব্যাপারে মাংস ব্যবসায়ীরা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারক লিপি প্রদান করবেন। তারা আশাবাদ ব্যক্ত করছেন ফলপ্রসু আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান হবে।

Leave a Reply

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বচ্ছতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ৮৩…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা ও সঠিক প্রক্রিয়ায় ৮৩জন Read more

জননিরাপত্তার নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক ঐক্যমত…

চলারপথে রিপোর্ট : জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক ঐক্যমত একান্ত Read more

বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ গ্রেফতার ১

চলারপথে রিপোর্ট : বিজয়নগর উপজেলা থেকে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ ১ Read more

সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বাঞ্ছারামপুরে ১৪৪ ধারা…

চলারপথে রিপোর্ট : বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে উপজেলা ও Read more

বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশীজন ও…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় “বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশীজন ও Read more
ফাইল ছবি

আশুগঞ্জে ট্রেনের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জে ট্রেনের ধাক্কায় মাথায় আঘাত পেয়ে অজ্ঞাতনামা Read more

আখাউড়ায় বিনামূল্যে ধান বীজ বিতরণ চলারপথে রিপোর্ট : আখাউড়া উপজেলায় Read more

কুয়েতে সড়ক দুর্ঘটনায় আবু বাক্কার নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : কুয়েতে প্রাইভেটকার দুর্ঘটনায় শেখ আবু বাক্কার (৩৪) Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাস উল্টে যাত্রী নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : সরাইল উপজেলায় বাস উল্টে গোপী কান্ত ঘোষ Read more

ট্রাক-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ একজন নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে অটোরিকশার Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিশু নাট্যমের বিতর্ক প্রতিযোগিতা

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিশু নাট্যমের ৩৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে Read more

ইয়াবা ট্যাবলেটসহ দুই পাচারকারী গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জে ১হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ গোপাল রায় Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গরমে পথচারী ও চালকদের শরবত আপ্যায়ন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 29 April 2024, 169 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
খ্রীষ্টিয় মাস এপ্রিল এবং বাংলা বৈশাখের চলমান প্রায় অসহনীয় তাপপ্রবাহে দিবা রাত যখন সারা দেশেই মানুষ ও অবোধ প্রাণী কূলে হাঁসফাঁস অবস্থা চলছে, তখন আজ ২৯ এপ্রিল সোমবার দিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আবহাওয়ার তাপপ্রবাহ বেড়ে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ছুঁইছুঁই অবস্থা বিরাজ করে।

শহর গ্রামে রাস্তায় চলাচলকারী পথচারী ও ক্ষুদ্র যানবাহন চালকদের মধ্যে প্রায় দিশেহারা অবস্থা দেখা যায়। সবাই যেন একটু ছায়া পেলেই বাঁচে। রোবহার হতেই আবহাওয়ায় বেশি তাপপ্রবাহ অনুভব হয় গত ৩ সপ্তাহের অধিক সময় হতে। মাথা ও শরীরে অত্যাধিক গরমের ছোঁয়া লাগা মাত্রই যেন জ্বলে পুড়ে যাচ্ছিল শরীর। সকাল হতেই বেশি দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতকারী শিশু হতে সকল বয়সী ছাত্র ছাত্রী অভিভাবক এবং ৮০ বছর পর্যন্ত বয়সী বৃদ্ধ বৃদ্ধাদেরকে। সূর্যের দিকে তাকানোর মতো পরিবেশ নেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষ এবং দাপ্তরিক কক্ষগুলোর পাশাপাশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আর বাসা বাড়িতে তীব্র গরমে টেকা দায়। রাতেও আর্দ্রতা বেশি থাকায় ঘুমানো কষ্টকর। এর মধ্যে ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুতের লোডশেডিং কষ্টকে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। এর কারণে, বিভিন্ন অসুস্থতায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসায় এবং ভর্তি রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ক্রেতা কমে গেছে। দিনের বেলায় রাস্তায় জনচলাচল কমে গেছে। মানুষ ও অবোধ প্রাণীকূল একটু ঠান্ডা পানি ও ঠান্ডা পরিবেশ খুঁজছে সর্বত্র।

এই অবস্থায় মানবিক ব্যক্তিদের উদ্যোগে শুরু হয়েছে তৃষ্ণার্ত পথচারী এবং ক্ষুদ্র যানবাহন চালকদের শরবত পান করানোর মহতী উদ্যোগ। সোমবার দুপুর হতে বিকেল পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরের তোফায়েল আজম (টি.এ) রোডস্থ ইউনাইটেড সাইকেল সেনিটারী এন্ড মেশিনারীজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী হাজী মোঃ কামাল উদ্দিনের ব্যবস্থাপনায় ফ্রুটিকা স্যালাইন, লেবু, বরফ, চিনি মেশানো তাৎক্ষনিক তৈরী করা ড্রাম ভর্তি ঠান্ডা স্যালাইন শরবত পানে আপ্যায়ন করানো হয় বিপুল সংখ্যক পথচারী, যানবাহন চালক ও যাত্রীদের। আরেকজন সকালে কালীবাড়ি মোড়ে একই ধরণের শরবত আপ্যায়ন করান। এতে সেবা সহযোগিতা করেন উদ্যোক্তার স্বজনরা। মানব সেবায় এই উদ্যোগ সকলের প্রশংসা অর্জন করেছে। অপর দিকে, ভ্যানগাড়ীতে দিবা রাত লেবু ও ইস্পি পাউডার, বরফ যুক্ত ঠান্ডা পানি বিক্রি জমে উঠেছে।

সরকার নির্ধারিত মূল্যে গরুর মাংস বিক্রি না করলে ব্যবস্থা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 19 March 2024, 242 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
সরকার নির্ধারিত ৬৬৪ টাকা ৩৯ পয়সা মূল্যে অপারগতা প্রকাশ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে দুদিন ধরে গরুর মাংস বিক্রি বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। মূল্য বাড়ানোর দাবিতে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা।

আজ ১৯ মার্চ মঙ্গলবার বিকেলে স্মারকলিপি দেন তারা। তবে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, সরকার নির্ধারিত মূল্যে মাংস বিক্রি করতে হবে। অন্যথায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

বিকেলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমানের কাছে স্মারকলিপি নিয়ে যান মাংস ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন ফারুক আহমেদ। এছাড়া সঙ্গে ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সভাপতি ও এফবিসিসিআই এর পরিচালক আলহাজ্ব আজিজুল হক।

তারা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি তুলে দিয়ে দাবি-দাওয়া পেশ করেন। এসময় জেলা প্রশাসক দেশব্যাপী সরকার নির্ধারিত মূল্যে মাংস বিক্রির যৌক্তিকতা তুলে ধরেন।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, জেলার মাংস ব্যবসায়ীরা তাদের লাভ হচ্ছে না জানিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবো। তবে সারাদেশে যে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হচ্ছে, তারা অবশ্যই তা মেনে চলবেন। কেউ অতিরিক্ত দাম নিলে তা আমরা দেখবো।

তবে, এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মাংস ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সভাপতি আলহাজ্ব আজিজুল হক জানান, জেলা প্রশাসক মাংস ব্যবসায়ীদের বলেছেন, আপনারা আজ যেমন এসেছেন, কিন্তু আসার আগে মাংস বিক্রি কেন বন্ধ করলেন? সুবিধা-অসুবিধার কথা জানাতে পারতেন। তখন ব্যবসায়ীরা বলেন, সরকারি দরে তারা মাংস বিক্রি করতে পারবেন না। আবার অতিরিক্ত দরে বিক্রি করলে ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানা করবেন। তাই তারা দোকান বন্ধ করছেন। সবশেষ জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, সরকার নির্ধারিত মূল্য মেনে মাংস বিক্রি করতে হবে।

সম্পাদকের শুভেচ্ছা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 8 April 2024, 219 Views,

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দৈনিক চলারপথে পত্রিকার সকল পাঠক, গ্রাহক, বিজ্ঞাপনদাতা, শুভাকাক্সক্ষী ও শুভানুধ্যায়ীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন দৈনিক চলারপথে পত্রিকার সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া (ফেরদৌস)। শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতর সবার জীবনে বয়ে আনুক অপার্থিব সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সবকয়টি থানায় যোগ দিয়েছেন পুলিশ সদস্যরা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 12 August 2024, 83 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
৭ দিন পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৯টি থানায় যোগ দিয়েছেন পুলিশ সদস্যরা। আজ ১২ আগস্ট সোমবার সকাল থেকে জেলা সদর থানা, সরাইল, নাসিরনগর, কসবা, আশুগঞ্জ, বিজয়নগর, আখাউড়া, নবীনগর ও বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত হন। এতে করে থানাগুলোতে আবারো ফিরতে শুরু করেছে স্বাভাবিক পরিবেশ। সে সাথে জনমনে স্বস্তি ফিরে আসতে শুরু করছে।

জেলা পুলিশ সুপার মো: শাখাওয়াত হোসেন জানান, জেলার সবগুলো থানাতে পুলিশ সদস্যরা যোগ দিয়েছেন। সেনা সদস্যদের সহযোগিতায় অভিযোগ নথিভুক্ত ও দাপ্তরিক কার্যক্রম চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে জেলা পুলিশের সার্বিক কার্যক্রম শুরু হবে।

উল্লেখ্য, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পদত্যাগ করার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানাসহ আশুগঞ্জ, আখাউড়া, কসবা, বিজয়নগর থানায় হামলার ঘটনা ঘটে। এতে সদর মডেল থানা একেবারে ধ্বংসপ্রাপ্ত হলেও অন্যান্য থানাগুলো তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এর পর থেকে জেলার নয়টি থানার কার্যক্রম পুরোপুরিভাবে বন্ধ ছিল।

গ্রীষ্মকালীন টমেটোর ভালো ফলন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 11 September 2023, 414 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
গ্রীষ্মকালীন টমেটোর ভালো হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় চাষীদের মুখেও তৃপ্তির হাসি। এ বছর জেলায় প্রায় ৫১ কোটি টাকার গ্রীষ্মকালীন টমেটো বিক্রি করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন কৃষি সংশ্লিষ্টরা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলায় ১২৮ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটোর চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৫৫ হেক্টর, সরাইল উপজেলায় ৫ হেক্টর, কসবা উপজেলায় ২ হেক্টর, নবীনগর উপজেলায় ১ হেক্টর, বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় ১ হেক্টর, আখাউড়া উপজেলায় ৩ হেক্টর, আশুগঞ্জ উপজেলায় ১ হেক্টর, বিজয়নগর উপজেলায় ৮ হেক্টর ও নাসিরনগর উপজেলায় ৫২ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটোর চাষ করা হয়েছে।

তবে জেলার হাওর বেষ্টিত উপজেলা নাসিরনগরে ৫২ হেক্টর জমিতে (৭.৫ বিঘায় ১ হেক্টর) এ বছর গ্রীষ্মকালীন টমেটোর চাষ করা হয়েছে। চাষীরা তাদের জমিতে বারি-৮ ও মঙ্গলরাজা জাতের টমেটোর চাষ করেছেন। চলতি বছর শুধু নাসিরনগর উপজেলাতেই প্রায় ২০ কোটি টাকার টমেটো বিক্রি করা হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাওর বেষ্টিত নাসিরনগর উপজেলায় চলতি বছর প্রায় ২২ হেক্টর (৪০০ বিঘা) জমিতে টমেটোর আবাদ করা হয়েছে। টমেটোর বাগানগুলো বেশীর ভাগই করা হয়েছে বাড়ির আঙিনা ও উঁচু জায়গায়। ফলন ভালো হওয়ায় লাভবান হচ্ছেন চাষীরা। বাগান থেকেই আকার ও মান ভেদে প্রতি কেজি টমেটো পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে।
উপজেলার পূর্বভাগ ইউনিয়নের কৃষক হাসিম মিয়া জানান, সারা বছরই তার এই জমি পতিত থাকতো। গত প্রায় তিন মাস আগে কৃষি অফিসের লোকজন তার বাড়িতে এসে বলেন, তিনি যদি তার পতিত জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটোর চাষ করে তাহলে তিনি লাভবান হবেন। তাদের পরামর্শে তিনি তার ৪০ শতাংশ জমিতে টমেটোর চারা রোপন করেছেন। তাতে তার খরচ হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। ইতিমধ্যেই তিনি টমেটো বিক্রি শুরু করেছেন। এখন পর্যন্ত তিনি দুই লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করেছেন।

উপজেলার গোকর্ণ ইউনিয়নের কৃষক আবুল কাশেম বলেন, আমি ৬০ শতাংশ জায়গা বর্গা নিয়ে ৫৫ হাজার টাকা খরচ করে গ্রীষ্মকালীর টমেটোর চাষ করেছি। এ পর্যন্ত আমি তিন লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করেছি। একই ইউনিয়নের কৃষক রফিক মিয়া বলেছেন, উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে তিনি বাড়ির আঙ্গিনার ২৫ শতাংশ পতিত জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটোর চাষ করেছেন। টমেটোর ফলন ও ভালো হয়েছে। তিনি এখন পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করেছেন।

বিভিন্ন চাষীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষে খরচ কম, লাভ বেশী। তাই তারা টমেটোর চাষ করেছেন। আগামীতে উপজেলায় টমেটোর চাষ আরো বাড়বে।

এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উপ-পরিচালক সুশান্ত সাহা বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় চলতি বছর ১২৮ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটোর চাষ করা হয়েছে। আমারা জেলার প্রতিটি উপজেলাতেই গ্রীষ্মকালীন সবজি চাষের উদ্যোক্তা তৈরি করছি। টমেটোর ফলনও এ বছর ভালো হয়েছে। আশা করি এ বছর জেলায় প্রায় ৫১ কোটি টাকার টমেটো বিক্রি করা হবে। ফলন বাড়াতে আমরা চাষীদেরকে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিচ্ছি।