তিতাসের বন্ধ কূপের সংস্কার শুরু, উঠবে দৈনিক দেড় কোটি ঘনফুট গ্যাস

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 19 March 2024, 239 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস গ্যাসক্ষেত্রে প্রায় আড়াই বছর ধরে বন্ধ থাকা ১৪ নম্বর কূপ থেকে আবার গ্যাস উত্তোলন করতে কূপের সংস্কারকাজ (ওয়ার্কওভার) শুরু হয়েছে। সংস্কারকাজ শেষে ওই কূপ থেকে দৈনিক দেড় কোটি (১৫ মিলিয়ন) ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে।

আজ ১৯ মার্চ মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেডের (বিজিএফসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী ফজলুল হক সংস্কারকাজের উদ্বোধন করেন।

আগামী দুই মাসের মধ্যে সংস্কারকাজ শেষ করা হবে বলে জানিয়েছে বিজিএফসিএল কর্তৃপক্ষ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিজিএফসিএলের আওতাধীন তিতাস গ্যাসক্ষেত্রের ২৩টি কূপ থেকে প্রতিদিন ৩৯২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়। কিন্তু পানি ওঠাসহ নানা কারণে সেখানকার চারটি কূপ বন্ধ আছে। এ ছাড়া দেশের আরও কয়েকটি কূপ থেকে দীর্ঘদিন ধরে গ্যাস উত্তোলন বন্ধ আছে।

এমতাবস্থায় গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে তিতাস, হবিগঞ্জ, বাখরাবাদ ও মেঘনা গ্যাসক্ষেত্রের বন্ধ থাকা সাতটি কূপ সংস্কারের (ওয়ার্কওভার) জন্য ৫২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প নেয় বিজিএফসিএল। বিজিএফসিএল সূত্র জানায়, সরাইল বিশ্বরোড মোড়ে অবস্থিত ১৪ নম্বর কূপটি ২০০০ সালে খনন করা হয়। এরপর ২০০৯ সাল পর্যন্ত ওই কূপ থেকে ২৯ দশমিক ৫ মিলিয়ন ঘনফুট হারে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ করা হয়। ২০০৯ সালে গ্যাসের সঙ্গে অতিরিক্ত পানি আসায় কূপটি বন্ধ হয়ে যায়। পরে সংস্কার (ওয়ার্কওভার) করে ওই বছর আবার উৎপাদনে আসে। এরপর ২০২০ সাল পর্যন্ত কূপ থেকে জাতীয় গ্রিডে ২০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস সরবরাহ হয়। ২০২০ সালে আবার পানি এলে গ্যাসের সরবরাহ কমে যায়। একপর্যায়ে ২০২১ সালের ১ নভেম্বর কূপটি বন্ধ হয়ে যায়। সরকার সাতটি কূপ সংস্কারের (ওয়ার্কওভার) প্রকল্প নেওয়ার পর নতুন করে কূপটির সংস্কার শুরু হয়েছে।

প্রকল্প পরিচালক ইসমাইল মোল্লা বলেন, ২০২১ সালের নভেম্বরে ১৪ নম্বর কূপটি বন্ধ হয়ে যায়। এখন কূপটির ওয়ার্কওভার শুরু হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে দুই মাসের মধ্যে ১৪ নম্বর কূপ থেকে জাতীয় গ্রিডে ১৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যুক্ত হবে। ওই কূপসহ এখন তিতাসের তিনটি কূপ বন্ধ আছে। তিনটি কূপের ওয়ার্কওভার শেষে জাতীয় গ্রিডে ২৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যোগ হবে। ইসমাইল মোল্লা আরও বলেন, পর্যায়ক্রমে সাতটি কূপের ওয়ার্কওভারের কাজ করা হবে। তখন জাতীয় গ্রিডে ৬০ থেকে ৭০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হবে। এ ছাড়া বাকি চারটি কূপ এখনো উৎপাদনে আছে। উৎপাদন ধরে রাখতে মেইনটেন্যান্স করতে হবে।

তিনি বলেন, সাতটি কূপের মধ্যে চারটি ওয়ার্কওভারের কাজ করবে বাপেক্স। দ্রুত গ্যাস উত্তোলনের স্বার্থে অন্য কূপগুলোর সংস্কার করবে বিদেশি প্রতিষ্ঠান। বিজিএফসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী ফজলুল হক বলেন, প্রায় ৫৫ বছরে তিতাস গ্যাসক্ষেত্রের কূপগুলো থেকে প্রায় সাড়ে ৫ টিএসএফ গ্যাস উত্তোলন করা হয়েছে। তবে কূপগুলোতে গ্যাসের চাপ কমে যাওয়ায় উৎপাদনও কমছে। গ্যাসের চাপ স্বাভাবিক রাখতে কয়েকটি কূপে ওয়েলহেড কম্প্রেসর বসানো হয়েছে।

এ ছাড়া বন্ধ কূপগুলোর ওয়ার্কওভার শেষ হলে বিজিএফসিএলের গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে গ্যাসের উৎপাদন আরো বাড়বে।

Leave a Reply

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বচ্ছতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ৮৩…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা ও সঠিক প্রক্রিয়ায় ৮৩জন Read more

জননিরাপত্তার নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক ঐক্যমত…

চলারপথে রিপোর্ট : জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক ঐক্যমত একান্ত Read more

বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ গ্রেফতার ১

চলারপথে রিপোর্ট : বিজয়নগর উপজেলা থেকে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ ১ Read more

সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বাঞ্ছারামপুরে ১৪৪ ধারা…

চলারপথে রিপোর্ট : বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে উপজেলা ও Read more

বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশীজন ও…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় “বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশীজন ও Read more
ফাইল ছবি

আশুগঞ্জে ট্রেনের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জে ট্রেনের ধাক্কায় মাথায় আঘাত পেয়ে অজ্ঞাতনামা Read more

আখাউড়ায় বিনামূল্যে ধান বীজ বিতরণ চলারপথে রিপোর্ট : আখাউড়া উপজেলায় Read more

কুয়েতে সড়ক দুর্ঘটনায় আবু বাক্কার নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : কুয়েতে প্রাইভেটকার দুর্ঘটনায় শেখ আবু বাক্কার (৩৪) Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাস উল্টে যাত্রী নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : সরাইল উপজেলায় বাস উল্টে গোপী কান্ত ঘোষ Read more

ট্রাক-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ একজন নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে অটোরিকশার Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিশু নাট্যমের বিতর্ক প্রতিযোগিতা

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিশু নাট্যমের ৩৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে Read more

ইয়াবা ট্যাবলেটসহ দুই পাচারকারী গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জে ১হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ গোপাল রায় Read more

আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি ॥ সংশ্লিষ্টদেরকে নোটিশ

স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ব্রোকেন স্টোন বা চূর্ণ পাথরের ঘোষণা দিয়ে ভারত থেকে আমদানি হয়েছে ২৭০০ টন পাথরের ধুলা (ডাস্ট)। মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানির অভিযোগে ছাড়পত্র মিলছে না কাস্টমসের। যে কারণে প্রায় এক মাস ধরে আখাউড়া স্থলবন্দরে এই ডাস্ট বা ধুলাগুলো পড়ে আছে। কাস্টমসের গঠিত তদন্ত কমিটিও ডাস্ট উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িরা দাবি করেছেন, এতে প্রতিদিন লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদেরকে। এ জন্য তারা কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে দায়ী করছেন। রপ্তানিমুখী আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে প্রথমবারের মতো চূর্ণপাথর আমদানি হয় গত ১৩ নভেম্বর। এরপর কয়েক দফায় মোট ২৭০০ টন আমদানি করে ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। এ প্রতিষ্ঠানটি আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত করার কাজের জন্য পাথর আমদানি করেছে। আমদানিকৃত চূর্ণপাথরগুলো প্রতি টন আমদানি হয়েছে ১৩ মার্কিন ডলারে। এগুলো বন্দর থেকে ছাড়ানোর কাজ পায় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট খলিফা এন্টারপ্রাইজ। তবে কাস্টমস থেকে ছাড়পত্র নিতেই বাঁধে বিপত্তি। প্রথমবারের মতো আমদানি হওয়ায় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ছাড়পত্র দেওয়ার কথা জানায় কাস্টমস। পরবর্তীতে এগুলো পরীক্ষা করে পাথরের বদলে ডাস্ট আনা হয়েছে জানিয়ে আটকে দেয়া হয়। ফলে প্রতিদিনই বন্দর কর্তৃপক্ষকে মাশুল বাবদ প্রায় ৩৬ হাজার টাকা গুনতে হচ্ছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে।

অভিযোগ উঠেছে- আমদারিকারক প্রতিষ্ঠান ভাঙা পাথরের ঘোষণা দিয়ে ডাস্ট এনেছে। এজন্য কাস্টমসের তরফ থেকে চার সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়। তদন্ত শেষে রিপোর্ট দেওয়া হয় ডাস্ট হিসেবে। তবে দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে বলে জানান কাস্টমসের কর্মকর্তারা।
এদিকে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে চূর্ণ পাথর বা ডাস্ট আমদানির অনুমতি না থাকায় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে তাদেরকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট খলিফা এন্টারপ্রাইজকেও কার্যার্থে একই চিঠি দেওয়া হয়। সিএন্ডএফ এর মালিক হলেন আখাউড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মো.তাকজিল খলিফা কাজল।
খলিফা এন্টার প্রাইজের প্রতিদিন নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা প্রথম দফা আনার পর বলা হয় সব আনার পর অনুমতি দেওয়া হবে। এখন বলা হচ্ছে এ ধরণের পাথরের অনুমতি নেই। এখন পাথর আটকে থাকায় আমরা লোকসানের মুখে পড়েছি।’
আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘তদন্ত করে আমদানি করা পণ্য ডাস্ট হিসেবে পাওয়া গেছে। এ ধরণের পণ্য আমদানির অনুমতি নেই। এখন এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জনশুমারি ও গৃহগণনা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 27 June 2024, 134 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জনশুমারি ও গৃহগণনা এর রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ি জেলায় সাক্ষরতার হার গত ১০ বছরে ৪৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭২ শতাংশ হয়েছে। কমেছে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার। সেটা ১.৬৮ থেকে নেমে ১.৩৫ এ এসেছে।

আজ ২৭ জুন বৃহস্পতিবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এই রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ ইকবাল হোসেন। অনুষ্ঠানে রিপোর্ট উপস্থাপন করেন জেলা পরিসংখ্যান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ কামাল হোসেন।

প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ি, ২০২২ সালে হওয়া শুমারি অনুযায়ি জেলার বর্তমান লোকসংখ্যা ৩৩ লাখ ৬৫ হাজার ৬৩ জন। এর মধ্যে ৪৭ ভাগ হারে পুরুষ ১৫ লাখ ৩৮ হাজার ২৬২ জন ও নারী ৫৩ ভাগ হারে ১৭ লাখ ৬৮ হাজার ১৪৫ জন। হিজড়ার সংখ্যা ১৫৬ জন। ২০১২ সালের সর্বশেষ শুমারি অনুযায়ি সাক্ষরতার হার ছিলো ৪৫.২৯, যা ২০২২ সালে গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৭২.১২। সাক্ষরতার দিকে থেকে পুরুষের চেয়ে নারী এগিয়ে। পুরুষের সাক্ষরতার হার ৭১.৭৪, নারীদের সাক্ষরতার হার ৭২.৪৪।

রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দুই লাখ ৭১ হাজার ১৪৫ জন প্রবাসে থাকেন। সবচেয়ে বেশি নবীনগর উপজেলার ৫৭ হাজার ৯৮ জন প্রবাসে থাকেন। শুমারি চলাকালীন ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সি ৪১.৭০ জন কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত ছিলেন না, কাজে নিয়োজিত ছিলেন না কিংবা বৃত্তিমূলক কোনো প্রশিক্ষণ গ্রহন করেননি। এর মধ্যে ৫৭.৩২ ভাগ নারী ও ২০.১৯ ভাগ পুরুষ।

পাঁচ বছরের বেশি বয়সিদের মধ্যে ৮.১৬ ভাগ ধর্মীয় শিক্ষা নিচ্ছেন। সাধারণ শিক্ষায় আছেন ৮৮.২১ ভাগ। কারিগরি শিক্ষায় ০.৩৪ ভাগ। অন্যান্য শিক্ষায় আছেন ২.৪৮ ভাগ। জেলায় মুসলমান ৯৩.২৯ ভাগ। হিন্দুর সংখ্যা ৬.৬৮ ভাগ।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চার থানার ওসি ও পাঁচ ইউএনও বদলি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 8 December 2023, 353 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের নিদের্শক্রমে তাদের সম্মতিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার পাঁচ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও চার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদলি করা হয়েছে।

এর মধ্যে ইউএনওদেরকে অন্য জেলায় ও ওসিদের নিজ জেলার অভ্যন্তরে অন্য থানায় বদলি করা হয়। গত দুইদিনে এসব বদলি বিষয়ে পৃথক আদেশ হয়।

সংশ্লিষ্টরা জানায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এএইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদকে রাঙামাটির রাজস্থালী, সরাইলের সরওয়ার উদ্দীনকে নোয়াখালী জেলার কবিরহাট, আখাউড়ার অগ্যংজাই মারমাকে চট্টগ্রামের রাউজান, নাসিরনগরের ফখরুল ইসলামকে কক্সবাজারের চকরিয়ায়, বাঞ্ছারামপুরের একি মিত্রকে চাঁদপুরের মতলবে বদলি করা হয়।

অন্যদিকে খাগড়াছড়ির ইউএনও রুবাইয়া আফরোজ বিজয়নগরে, নোয়াখালী চাটখিলের মোহাম্মদ ইমরানুল হক নাসিরনগরে, কুমিল্লার মেঘনার রাবেয়া আক্তারকে আখাউড়ায়, নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের মেজবাহ উল আলমকে সরাইলে ও বান্দরবানের থানচির মুহা. আবুল মনসুরকে বাঞ্ছারামপুরে পদায়ন করা হয়।

এদিকে, চারটি থানার ওসি রদবদল হয়েছে। এর মধ্যে আখাউড়া থানার ওসি মো. আসাদুল ইসলামকে বিজয়নগর থানায়, বিজয়নগর থানার রাজু আহমেদকে কসবা থানায়, কসবার থানার ওসি মো. মহিউদ্দিনকে বাঞ্ছারামপুর থানায়, বাঞ্ছারামপুর থানার নূরে আলমকে আখাউড়া থানায় বদলি করা হয়।

প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো দুর্গাপূজা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 13 October 2024, 36 Views,

প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপুজা। আজ ১৩ অক্টােবর রোববার বিকালে পৌরশহরের রাধামাধব আখড়া থেকে বিজিবি ও পুলিশের উপস্থিতিতে প্রতিমা নিয়ে বের হন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। ঢাক ঢোল বাদ্যের তালে দেবী দূর্গাকে নিয়ে বড় বাজার তিতাস নদীর দশমী ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বিসর্জনের জন্য পৌর শহরের আরো কয়েটি মন্ডপের প্রতিমা নিয়ে আসে মন্দির সংশ্লিষ্টরা। পরে একে একে প্রতিমাগুলো তিতাস নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়। এসময় হিন্দু সম্প্রদায়ের নারীরা উলু ধ্বনির মাধ্যমে দেবী দূর্গাকে বিদায় জানায়। উপস্থিত নারী-পুরুষসহ নানা বয়সের সনাতন ধর্মের লোকজন রীতি অনুযায়ী আচার অনুষ্ঠান করেন। এছাড়াও একই সময়ে উপজেলার অন্যান্য মন্দিরের প্রতিমা নিজ নিজ এলাকায় বিসর্জন দেওয়া হয়। এর আগে সরাইল ব্যাটালিয়ন (২৫ বিজিবি) অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল ফারাহ্ মোহাম্মদ ইমতিয়াজ আখাউড়ায় রাধামাধনব আখড়ার পুজা মন্ডপে আসেন এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের পুজা সম্পর্কিত বিষয়ে খোঁজ খবর নেন। প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া পর্যন্ত দশমী ঘাটে উপস্থিত ছিলেন।

রাধামাধব আখড়া মন্দিরের নির্বাহী সভাপতি চন্দন কুমার ঘোষ বলেন, এবছর আমরা অত্যন্ত আনন্দের সাথে দুর্গাপুজা উদযাপন করেছি। স্মরণকালের মধ্যে এবছর সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বোধ করেছি। যা গত ৫৩ বছর আমরা এই নিরাপত্তা আমরা দেখিনি। বিশেষ করে সেনাবাহিনী, বিজিবির ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। আখাউড়া সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটি ঐতিহ্য রয়েছে। মন্দিরের পাশেই মাদরাসা, শ্মশানের সাথেই কবরস্থান। আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সার্বক্ষনিক সহযোগিতা পেয়েছি। এছাড়াও রাজনৈতিক দলের নেতবৃন্দও আমাদেরকে সহযোগিতা করেছে। ছাত্র প্রতিনিধিরা খোঁজ খবর নিয়েছে। আখাউড়া উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব সাংবাদিক বিশ^জিৎ পাল বাবু বলেন, প্রতিটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আন্তরিকভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সকলের সহযোগিতায় আমরা সুন্দরভাবে আনন্দমুখর পরিবেশে পুজা উদযাপন করতে পেরেছি। এজন্য সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।

(২৫ বিজিবি) অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল ফারাহ্ মোহাম্মদ ইমতিয়াজ বলেন, বিজিবির ১০ প্লাটুন সদস্য ৫ অক্টোবর থেকে মোতায়েন ছিল। দিন রাত ২৪ ঘন্টা পুজা মন্ডপে বিজিবির টহল দিয়েছে। বর্তমান সরকারের নির্দেশনায় বিজিবি দেশের স্বার্থে যে কোন দায়িত্ব সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে পালন করে আসছে। পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাবের টহলসহ সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বলয় ছিল। হিন্দু সম্প্রদায় উৎসব মুখর পরিবেশে দুর্গাপুজা পালন করতে পেরেছে। ভবিষ্যতেও দেশের যে কোন প্রয়োজনে বিজিবি অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ২৫ বিজিবির উপ অধিনায়ক মেজর মঈন, সহকারি পরিচালক নুরুল হুদা, উপজেলা পুজা উদযাপন কমিটির আহবায়ক দীপক ঘোষ, রাধামাধব আখড়া মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক অলক চক্রবর্তীসহ অন্যরা।

উদ্দেশ্যমূলক ও দূরভিসন্ধিমূলক কর্মসূচির প্রতি আন্দোলনকারীদের কোন সম্পর্ক ও সমর্থন নেই

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 27 July 2024, 94 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
মহামান্য আপীল বিভাগের রায়ের প্রেক্ষিতে সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে কোটা সংস্কার সংক্রান্ত সমস্যা সমাধান হয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনে হতাহতদের বিচার ও ক্ষতি পূরণের দাবি করেন নেতৃবৃন্দ। এছাড়া কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের ও গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়েছেন তারা। আন্দোলনকারীদের হয়রানি না করার জন্যও সরকারের নিকট জোর দাবি জানান। বর্তমান কোটা সংস্কার আন্দোলনের বিষয়ে উদ্দেশ্যমূলক ও দূরভিসন্ধিমূলক কর্মসূচির প্রতি আন্দোলনকারীদের কোন সম্পর্ক ও সমর্থন নেই। এটি সম্পূর্ণ মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তির ষড়যন্ত্র। বিবৃতিদাতারা হলেন, আইরিন মৃধা, ফাহিম মুনতাসির, সানিউর রহমান, শাহ আলম পালোয়ান।