চলারপথে রিপোর্ট :
ঢাকায় বসবাসরত ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীদের সংগঠন ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সমিতি, ঢাকা’-এর বিশেষ সভা ১৬ মার্চ শনিবার তোপখানা রোডে সমিতির নিজস্ব কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী এবং ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সমিতি, ঢাকা’-এর সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি।
সভায় আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৯টি উপজেলার দরিদ্র পরিবারের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ প্রসঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। আলোচনা শেষে উপস্থিত কার্যনির্বাহী সদস্যের সঙ্গে নিয়ে মোনাজাত ও ইফতার সম্পন্ন করা হয়।
সভায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ খলিলুর রহমান, অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক ও ২৪৪ ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মোঃ মঈন উদ্দিন, জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার শাহজাহান খাদেম, সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার কবির আহমেদ ভূইয়া, সাবেক সচিব গোলাম রাব্বানী, সাবেক সচিব মোশাররফ হোসেনসহ সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
গত ৩০ ফেব্রুয়ারি বসেছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন। আইন অনুযায়ী প্রথম অধিবেশনেই নির্বাচনে বিজয়ী দল বা জোটগুলোর প্রাপ্ত আসনের ভিত্তিতে ৫০টি সংরক্ষিত আসন বন্টন করা হয়। সাধারণত ৬ আসনের বিপরীতে কোন দল বা জোট একটি সংরক্ষিত আসন পেয়ে থাকে।
গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৬টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ৫টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আওয়ামীলীগের প্রার্থীরা। আসন সমঝোতার কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-(সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনটি মহাজোটের শরীকদল জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয়া হয়।
নির্বাচনে ৬টি আসনের মধ্যে ৪টি আসনে বিজয়ী হয় আওয়ামীলীগের প্রার্থীরা এবং ২টি আসনে বিজয়ী হয় স্বতন্ত্র প্রার্থীগণ। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-(সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে আওয়ামীলীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন মঈন (কলার ছড়ি) প্রতীকে বিজয়ী হন।
অপরদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১-(নাসিরনগর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের বহিষ্কৃত উপদেষ্টা, বিশিষ্ট শিল্পপতি সৈয়দ এ.কে এমরামুজ্জামান আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী বি.এম. ফরহাদ হোসেনকে হারিয়ে নির্বাচিত হন। ইতিমধ্যেই নতুন মন্ত্রী সভায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে দু’জন পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী হয়েছেন।
এদিকে নির্বাচনের পর থেকেই শুরু হয়েছে আলোচনা ও গুঞ্জন। কে হচ্ছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য হতে প্রায় ৭/৮ জন মহিলা নেত্রী ঢাকায় দৌড়ঝাপ করছেন।
এরা হলেন, সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংরক্ষিত আসনের সদ্য সাবেক এমপি উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম ওরফে শিউলী আজাদ, সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জোবেদা খাতুন পারুল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভানেত্রী, নব্বই এর রাজপথ কাঁপানো নেত্রী মিসেস মিনারা বেগম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাত, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের সংরক্ষিত আসনের সদস্য ও বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিউটি কানিজ ও এমবি কানিজ, বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সহ-সভাপতি শামীমা চৌধুরী বিথি, নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি রুমা বেগম প্রমুখ।
মিনারা বেগমঃ রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান মিনারা বেগম স্কুল জীবন থেকেই রাজনীতিতে হাতে খড়ি। তার পিতা মরহুম আবু তাহের ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর সভার কমিশনার ছিলেন। ১৯৭৩ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি ছাত্রলীগের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে যোগ দেন।
১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে (মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনা ছাড়া) হত্যাকান্ডের পর তিনি চরম প্রতিকূল পরিবেশে বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদে ও হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হওয়া প্রতিটি মিছিল-সমাবেশে অগ্রভাগে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
১৯৭৮ সালে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা সম্পাদিকা ও ১৯৮৯ সালে জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভানেত্রীর দায়িত্ব লাভ করেন। স্বৈরাচারি এরশাদ সরকারের পতনের দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা শারিরিকভাবে তৎকালীন সরকারের ক্যাডার বাহিনীর দ্বার বিভিন্নভাবে নাজেহাল হন।
তিনি ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন হত্যার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের নিয়ে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলেন। আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা ও জেলা তথ্য অফিস ভাংচুর ও প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছবি ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করলে তাঁকে প্রধান আসামী করে দ্রুত বিচার আইনে দুটি মামলা হয়।
ওয়ান ইলেভেনের সময় জননেত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করা হলে তিনি নেত্রীর মুক্তির আন্দোলনে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন। বড় ছেলে আশিকুল আলম বাবলু (প্রয়াত) ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ ছাত্র-ছাত্রী সংসদের ভিপি ছিলেন। এছাড়াও বাবলু ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগ ও জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন।
মিনারা বেগম ২০২৩ সালে জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ শীর্ষক বিশেষ কার্যক্রমের আওতায় “সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছেন যে নারী” ক্যাটাগরিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার জয়িতা সম্মানে ভ‚ষিত হন। তিনি বর্তমানে জেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যনের দায়িত্ব পালন করছেন।
উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম ওরফে শিউলী আজাদঃ শিউলী আজাদ সরাইল উপজেলা আওয়ামীলীগের জনপ্রিয় নেতা ও সরাইল উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ.কে.এম. ইকবাল আজাদের স্ত্রী। দলীয় গ্রুপিংয়ের কারনে ২০১২ সালের ২১ অক্টোবর সরাইল সদরের অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে ইকবাল আজাদ ঘাতকদের হাতে খুন হন। এর পর থেকে শিউলী আজাদ রাজনীতিতে যোগদান করেন ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এবারো তিনি প্রার্থী হবেন বলে জানা গেছে।
বিউটি কানিজঃ বিউটি কানিজ ঢাকাস্থ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সমিতির সদস্য। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (ঢাকা মহানগর) শাখার সাবেক সহ-সম্পাদক ও বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সাবেক শিক্ষা ও প্রক্ষিশণ ও পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের সংরক্ষিত সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এমবি কানিজ জানান, তিনি জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন চাইবেন।
শামীমা চৌধুরী বিথিঃ শামীমা চৌধুরী বিথি ঢাকাস্থ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সমিতির সদস্য, তিনি ইডেন মহিলা কলেজ শাখার (১৯৯১-১৯৯২) সালে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। শামীমা চৌধুরী বিথি জানান, তিনি জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন চাইবেন।
অ্যাডভোকেট তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাতঃ অ্যাডভোকেট তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি, সাপ্তাহিক গতিপথ’র সম্পাদক। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ শাখার সাবেক মহিলা সম্পাদক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন।
রুমা বেগমঃ-রুমা বেগম নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র- সভাপতি। তিনি বাংলাদেশ কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক নাজির মিয়ার স্ত্রী। তার পিতা লে. গোলাম নূর নাসিরনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রুমা বেগম ও তার স্বামী নাজির মিয়া দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। রুমা বেগম জানিয়েছেন তিনি সংরক্ষিত মহিলা আসনে মনোনয়ন চাইবেন।
বিশেষ প্রতিনিধি :
“স্মার্ট গ্রন্থাগার, স্মার্ট বাংলাদেশ” এই প্রতিপাদ্য নিয়ে সারাদেশে উদ্যাপিত হয়েছে জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস ২০২৩। এ উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন ও জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার এর যৌথ আয়োজনে এক আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ৫ ফেব্রুয়ারি রবিবার বিকেলে জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারের হলরুমে অনুষ্ঠিত এই সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ সাইফুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথিা বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ জয়নাল আবেদিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, বিশিষ্ট কবি ও গীতিকার মো. আ. কুদদূস, সাহিত্য একাডেমির সভাপতি, কবি ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষক জয়দুল হোসেন। বাচিকশিল্পী ও সাংবাদিক মোঃ মনির হোসেন এর সঞ্চালনায় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারের সহকারি পরিচালক সাইফুল ইসলাম লিমন। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, বেসরকারি গণগ্রন্থাগার জেলা কমিটির সভাপতি, কথাসাহিত্যিক আমির হোসেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ১৯৭১ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধারা তাদের জীবনের বিনিময়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছেন। এই বাংলাদেশকে আগামীতে নেতৃত্ব দিবে যে তরুণ প্রজন্ম তাদের সত্যিকারের দেশ্রপ্রেমিক ও আর্দশ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তার জন্য বই পড়া ছাড়া অন্য কোন বিকল্প নেই। তিনি বলেন, শুধুমাত্র চাকরির জন্য নয়, বই পড়তে হবে আলোকিত মানুষ হতে। এইজন্য শুধু পাঠ্যবই পড়লেই হবে না। পাঠ্য বইয়ের বাহিরে অন্যান্য বইও পড়তে হবে। বাংলাদেশকে এবং পৃথিবীকে জানতে হবে। বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য একটি চ্যালেঞ্জ নিয়েছে। সেই চ্যালেঞ্জ আমাদের জিততে হবে। আর এই চ্যালেঞ্জ জিততে হলে একটি সক্ষম জনগোষ্ঠি তথা স্মার্ট সিটিজেন গড়ে তুলতে হবে। তারজন্য শুধু ভালো রেজাল্ট করা ছাত্র-ছাত্রী নয়, আমাদের ভালো মানুষও লাগবে। এই ভালো মানুষ গড়ে তুলতে পারে কেবলমাত্র বই।
প্রধান অতিথি নিজের শিক্ষা জীবনের নানান স্মৃতিচারণ করে বলেন, আমাদের সময়ে পাঠ্যবইয়ের পাশাপশি আমরা প্রচুর আউট বই পড়েছি। জ্ঞান যতটুকু অর্জন করেছি তা এই আউট বই পড়ে। নিজের রুমকে লাইব্রেরি বানিয়ে। তিনি রাষ্টের পাশাপাশি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক উদ্যোগে গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা করে শিশু-কিশোর ও তরুণদের মাঝে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার উপর গুরুত্তারোপ করেন। তিনি পাঠাগার পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাসহ পাঠউপযোগী পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান। এসময় তিনি পাঠাগার এবং বই সংশ্লিষ্ট যে কোন কার্যক্রম পরিচালনায় সব ধরনের সহযোগীতার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সভা শেষে জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার ও জেলা শিশু একাডেমি কর্তৃক বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত কবিতা আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাহিত্য-সংস্কৃতিকর্মী মনিরুল ইসলাম শ্রাবণ। সহযোগিতায় ছিলেন জুনিয়র লাইব্রেরিয়ান মোঃ আনিছুর রহমান। অনুষ্ঠানে লেখক-সাংবাদিক-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ, বিভিন্ন গ্রন্থাগার প্রতিনিধি, বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকগণ উপস্থিত ছিলেন।
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের ০১নং ওয়ার্ড যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় সুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের হলরুমে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন সুহিলপুর ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক মোঃ মাহিন খন্দকার। ওয়ার্ড যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ আলামিন মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ ইয়াছিন। ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ আরাফাত হোসেনের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মোঃ শফিকুল ইসলাম, সদর উপজেলা যুবলীগের সদস্য মোঃ এহসানুল হক রিপন, ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, যুগ্ম আহ্বায়ক এড. মোশাররফ হোসেন সানি, যুগ্ম আহ্বায়ক ইকবাল মোল্লা, ইউপি যুবলীগ নেতা মনির ভূইয়া।
সম্মেলনে আলোচনা শেষে মোঃ আলামিন মিয়াকে সভাপতি ও ইউনুছ মিয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে ০১নং ওয়ার্ড যুবলীগের আংশিক ঘোষণা করা হয়। এছাড়া পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে ইউনিয়ন যুবলীগের দপ্তরে জমাদানের নির্দেশ দেয়া হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুহিলপুর ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক মোঃ মাহিন খন্দকার বলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অভিভাবক ও উন্নয়নের রূপকার র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর হাতকে শক্তিশালী করে দল ও দেশকে এগিয়ে নিতে আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। মাহিন বলেন- তৃণমূলে যুবলীগের নেতাকর্মীরা সুহিলপুরের প্রতিটি ওয়ার্ডে আওয়ামীলীগকে শক্তিশালী করতে নিরলস কাজ করে যাবে। তিনি যুবলীগের কর্মীদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণীত হয়ে দেশ গড়ার কাজে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। জেলা যুবলীগ ও সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশক্রমে আমি এই ওয়ার্ড কমিটি ঘোষণা করিলাম।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার সিংগারবিল এলাকায় জেলা প্রশাসন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সহযোগিতায় আজ ১৬ এপ্রিল মঙ্গলবার অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়।
এ সময় মেসার্স এলআরবি ব্রিকস নামক ইট ভাটাকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
অপরদিকে নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর এলাকায় মেসার্স শিহাব ব্রিকস নামক আরেকটি ইট ভাটাকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
এ সময় ৪টি ইট ভাটাকে প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) ২০১৩ (সংশোধিত ২০১৯) আইন মেনে ভাটা পরিচালনার বিষয়ে সতর্ক করা হয়।
মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় দায়িত্বরত ছিলেন জেলা প্রশাসনের বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ ইকরামুল হক নাহিদ।
উক্ত মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সময় পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক বিসল চক্রবর্ত্তী এবং বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী, আসনার বাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা সহযোগিতা করেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক বিসল চক্রবর্ত্তী জানান, পরিবেশ সুরক্ষায় এই ধরণের কার্যক্রম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কার্যালয় কর্তৃক অব্যাহত থাকবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
মাঠজুড়ে সরিষা ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য। মধু আহরণে ফুলে ফুলে নাচানাচি করছে মৌমাছি। তবে অনেক জমিতেই ফুল শেষ হয়ে বীজ দেখা দিয়েছে। বীজগুলো বেশ তরতাজা, যা ভালো ফলনের সম্ভাবনার জানান দিচ্ছে। চলতি মৌসুমে গত বছরের তুলনায় ১৩৭ হেক্টর বেশি জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। অন্য ফসলের চেয়ে উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় এবং সরিষা চাষ লাভজনক হওয়ায় কৃষকেরা সরিষা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। প্রতিদিন সকাল-বিকেলে আশপাশে এলাকা থেকে সৌন্দর্য পিপাসুরা দল বেঁধে আসেন এই সরিষা ক্ষেতে ফুল দেখতে। অনেকেই সরিষা ক্ষেতে ঢুকে শখ করে ছবি তুলেন। কেউ সেলফিতে ব্যস্ত কেউবা পরিবারের ছবি তুলতে ব্যস্ত।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলায় সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২০ হাজার ৩৯২ হেক্টর জমি। কিন্তু চাষ করা হয়েছে ১৫ হাজার ৬৬৮ হেক্টর জমিতে। তবে গত মৌসুম থেকে চলতি মৌসুমে ১৩৭ হেক্টর জমিতে বেশি সরিষার চাষ করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় ২৮৫ হেক্টর, নবীনগর উপজেলায় ৪০৫০ হেক্টর, সরাইল উপজেলায় ১০৯২ হেক্টর, নাসিরনগর উপজেলায় ৬০৫০ হেক্টর, আশুগঞ্জ উপজেলায় ১১২০ হেক্টর, বাঞ্চারামপুর উপজেলায় ১৮৫০ হেক্টর, বিজয়নগর উপজেলায় ৫১০ হেক্টর, কসবা উপজেলায় ২৩৫ হেক্টর এবং আখাউড়া উপজেলায় ৪৯৫ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে কৃষকরা তাদের জমিতে উচ্চ ফলনশীল বারি-১৪, বারি-১৭, বারি-১৮, টরি-৭ জাতের সরিষার চাষ করেছে।
সরজমিনে সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের সুতিয়ারা, সুহিলপুর ইউনিয়নের সুহিলপুর, মাছিহাতা ইউনিয়নের গাজারিয়া গ্রাম এবং নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের কালিসীমা গ্রামের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হলুদের সমারোহ। দিগন্ত জোড়া ফসলী মাঠ হলুদ ফুলে শোভিত। বাতাসে দোল খাচ্ছে সরিষার ফুল। প্রতিটি সরিষার জমিতে মৌমাছির গুঞ্জন। সরিষার হলুদ ফুলের হাসিতে বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, বারি-১৪, ১৭ ও ১৮ সহ অন্যান্য সরিষা বপনের পর ৮৫ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে এর ফলন পাওয়া যায়। সরিষা উত্তোলন করে ফের একই জমিতে বোরো আবাদ করা যায়। সরিষা গাছের পাতা মাটিতে পড়ে জৈব সারে পরিণত হয়। এতে জমির উর্বরতা বাড়ে। সরিষা চাষে উৎপাদন ব্যয়ও কম। সরিষা চাষের পর একই জমিতে ধান চাষ করলে সারও কম দিতে হয়। তাই এখানকার কৃষকরা বর্তমানে সরিষা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।
সরিষা চাষী হক মিয়া, জাবেদ মিয়া ও আব্দুস সামাস জানান, আগে তারা স্থানীয় টরি সেভেন, টিএস সেভেন্টি টু, এসএস সেভেন্টি ফাইভ জাতের সরিষা চাষ করতেন। চলতি মৌসুমে তারা অধিক ফলনশীল বারি-১৪ জাতের সরিষা চাষ করেছেন। এই জাতের সরিষা ৮৫-৯০ দিনে ঘরে তোলা যায়। ফলন হয় বেশি। সরিষা তোলার পর ওই জমিতে আবার ইরি আবাদ করা যায়।
নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের সাদেকপুর গ্রামের সরিষা ক্ষেতে ছবি তোলতে আসা শতাব্দী চক্রবর্তী তমা জানান, রাস্তার পাশে সরিষা ক্ষেত দেখে খুব ভালো লাগলো। সেই ভালো লাগা থেকে গাড়ি থামিয়ে সরিষা ক্ষেতে ছবি তোলতে নেগে গেলাম।
সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের সুহিলপুর গ্রামের কৃষক রজব মিয়া জানান, তিনি গত ৫ বছর ধরে তার ৩ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করে আসছেন। চলতি বছর তিনি তার জমিতে বারি-১৪ জাতের সরিষার আবাদ করছেন। তিনি জানান, সরিষার চাষ করতে তার বিঘা প্রতি ৪ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। জমিতে সরিষার গাছগুলো বেশ সুন্দর হয়েছে। তিনি বলেন, আশা করি এ বছর সরিষার বাম্পার ফলন হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) মুন্সি তোফায়েল আহমেদ জানান, চলতি মৌসুমে ২০ হাজার ৩৯২ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। কিন্তু চাষ করা হয়েছে ১৫ হাজার ৬৬৮ হেক্টর জমিতে। তবে গত মৌসুম থেকে চলতি মৌসুমে ১৩৭ হেক্টর জমিতে বেশি সরিষার চাষ করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, চলতি মৌসুমে দুটি ঘূর্ণিঝড়ের কারণে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় যদি না হতো তাহলে সরিষা লক্ষ্যমাত্রার থেকে আরও বেশি চাষাবাদ হতো। আমরা কৃষকদের সব ধরনের সহায়তা করে আসছি।