চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২৪। গতকাল মঙ্গলবার সূর্যোদয়ের সাথে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা করা হয়। শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের শ্রদ্ধা জানান স্থানীয় এমপি’র প্রতিনিধিরা, উপজেলা পরিষদ, প্রশাসন, স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, আওয়ামীলীগ, পুলিশ প্রশাসন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সরাইল সরকারি কলেজ, মহিলা কলেজ, সরাইল প্রেসক্লাব, জাতীয় পার্টি, বিএনপি, মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, উপজেলা পূঁজা উদযাপন পরিষদ, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠিসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি সামাজিক সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
সরাইল উপজেলার সকল স্কুল কলেজ, সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান সমূহ ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
সকাল ৮টায় সরাইল অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা প্রশাসন ও ক্রীড়া সংস্থার ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত হয় পুলিশ, আনসার-ভিডিপি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, স্কাউট এন্ড গার্ল ইন স্কাউট, কাবদল সহ বিভিন্ন সংগঠনের সমাবেশ, ডিসপ্লে, কুচকাওয়াজ ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা।
মাঠে উপস্থিত ছিলেন ২৪৪ ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মোঃ মঈন উদ্দিন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর, নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবা উল আলম ভূঁইয়া, অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম, সরাইল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মৃধা আহমাদুল কামাল। বেলা ২টায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারবর্গকে দেয়া হয় সংবর্ধনা।
ইউএনও’র সভাপতিত্বে সংবর্ধনা সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর। সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. পারভেজ আহমেদের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন-সরকারি কমিশনার (ভূমি) নাছরিন সুলতানা, সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (সরাইল সার্কেল) মো. রকিবুল হাসান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রোকেয়া বেগম, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. ইসমত আলী, ডেপুটি কমান্ডার মো. আনোয়ার হোসেন,সরাইল মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ বদর উদ্দিন, আওয়ামীলীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. আব্দুর রাশেদ, মহিলা কলেজের সভাপতি মো. মাহফুজ আলী, প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ আলী ও মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের যুগ্ম আহবায়ক মো. বাবুল হোসেন। একই স্থানে অনুষ্ঠিত হয় “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর ঐতিহাসিক নেতৃত্ব এবং দেশের উন্নয়ন” বিষয়ক আলোচনা সভা। হাসপাতাল ও এতিমখানায় পরিবেশন করা হয় উন্নতমানের খাবার।
মসজিদ মন্দির ও গীর্জায় বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।
এর আগে গত ২৫ মার্চ বীর মুকিযোদ্ধাদের কন্ঠে গণহত্যার স্মৃতিচারণ মূলক আলোচনা ও শহিদদের স্বরণে শহীদ মিনারে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় বাদশা মিয়া নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছে।
আজ ২৯ জুলাই সোমবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কুট্টাপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত বাদশা মিয়া (৭০) উপজেলার শাহজাদাপুর ইউনিয়নের শাহজাদাপুর গ্রামের জোর আলীর ছেলে।
খাটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশীষ কুমার স্যানাল গণমাধ্যমে জানান, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কুট্টাপাড়া এলাকায় রাস্তা পারাপারের সময় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় এক বৃদ্ধ গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। দুর্ঘটনার পর চালক পালিয়ে গেলেও কাভার্ড ভ্যানটিকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল প্রেসক্লাবের ত্রিবার্ষিক নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।
আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি বুধবার ৫ পদে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সভাপতি পদে ৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদ আলী। সাধারণ সম্পাদক পদে ৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন তৌফিক আহমেদ তফছির। সহ-সভাপতি পদে ৯ টি করে পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন সৈয়দ কামরুজ্জামান ইউসুফ ও সামছুল আরেফিন। সাহিত্য ও পাঠাগার সম্পাদক পদে ৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন জহিরুল ইসলাম রিপন। এর আগে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যুগ্ম সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন শেখ মো. ইব্রাহিম, অর্থ সম্পাদক পদে আবদুল করিম, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মোহাম্মদ মাসুদ, দপ্তর সম্পাদক পদে মো. মুরাদ খান, কার্যনির্বাহী সদস্য পদে এম. এ মুসা ও জেসমিন সুলতানা মুসা।
নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেছেন সরাইল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সহিদ খালিদ জামিল খান। সরাইল প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির সকল সদস্যকে বিভিন্ন ব্যক্তি, দল ও সংগঠন অভিনন্দন জানাচ্ছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে কুখ্যাত ডাকাত শফিকুল ইসলাম (৩৫) কে ১টি সুইচ গিয়ার যুক্ত স্টীলের চায়না ধারালো চাকুসহ গ্রেফতার করেছে সরাইল থানার পুলিশ।
আজ ৮ এপ্রিল সোমবার দুপুরে সরাইল থানা থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ এমরানুল ইসলাম। এর আগে রবিবার রাত ১০টার দিকে সরাইল নাসিরনগর লাখাই আঞ্চলিক সড়কের ধরন্তি নামক এলাকায় আজম ২ নং ব্রীকস ফিল্ডের সামনে সড়কে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত শফিকুল ইসলাম উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের ধরন্তী গ্রামের আঃ রশিদ মিয়া ছেলে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সরাইল থানার সুযোগ্য অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ এমরানুল ইসলামের সার্বিক দিকনির্দেশনায় এসআই (নিঃ) নুরুন নবী, এএসআই (নিঃ) দিলিপ কুমার নাথ সঙ্গীয় ফোর্সসহ রবিবার রাত ১০টার দিকে সরাইল নাসিরনগর লাখাই আঞ্জলিক সড়কের ধরন্তী নামক এলাকায় আজম ২ নং ব্রীকস ফিল্ডের সামনে রাস্তার উপর হতে কুখ্যাত ডাকাত শফিকুল ইসলামকে লুঙ্গীর কোমরের ডান পার্শ্বে খোচার মধ্যে ১টি সুইচ গিয়ার যুক্ত স্টীলের চায়না ধারালো চাকু, যাহা খোলা অবস্থায় লম্বা ৯ ইঞ্চিসহ আটক করা হয়।
সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ এমরানুল ইসলাম জানান, চাকুসহ কখ্যাত ডাকাত শফিকুলকে গ্রেফতার করা হয় এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় গত ৫ তারিখ ডাকাতির প্রস্তুতির ঘটনায় সরাসরি জড়িত ছিল। তার বিরুদ্ধে থানায় ডাকাতির প্রস্তুতি, পুলিশ আক্রান্ত মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। সোমবার সকালে গ্রেফতারকৃত আসামীকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নিখোঁজ হওয়ার ৬ ঘণ্টা পর ৬ বছরের শিশু খোদেজা বেগমের লাশ বাড়ির পাশের বিল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের দুবাজাইল এলাকার বিল থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত শিশুটি ওই এলাকার জিল্লু মিয়ার মেয়ে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানায়, বুধবার বিকাল ৪টার পর থেকে খোদেজাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে মসজিদের মাইকে নিখোঁজ সংবাদের ঘোষণা দেওয়া হয়। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে লাইটের আলোতে একটি লাশ ভাসতে দেখেন স্থানীয়রা। পরে তারা লাশটি উদ্ধার করে বিলের পাড়ে আনেন। খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা গিয়ে লাশটি শিশু খোদেজার বলে শনাক্ত করেন।
সরাইল থানার এসআই নুরুল করিম জানান, প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছি বিলের পানিতে ডুবে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। মেয়ের বাবা থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে ভোটের মাঠে নেমেছেন ধানের শীষ প্রতীকের সাবেক দুই সংসদ সদস্যের দুই সন্তান। তাঁরা হলেন বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের অন্যতম শীর্ষ নেতা প্রয়াত মুফতি ফজলুল হক আমিনীর ছেলে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা মো. আবুল হাসানাত আমিনী ও বিএনপির দলছুট সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার ছেলে তৃণমূল বিএনপির মাইনুল হাসান।
মাইনুল হাসান গত বৃহস্পতিবার সরাইলে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তরে মনোনয়নপত্র জমা দেন। এ সময় সহস্রাধিক অনুসারী-সমর্থক মোটর শোভাযাত্রাসহ উপজেলা সদরে প্রবেশ করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সরাইল সদর ইউপির চেয়ারম্যান ও উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল জব্বার, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক রিফাত বিন জিয়া। আবুল হাসানাতের পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন উপজেলা সদরের দুই বাসিন্দা; যারা আবুল হাসানাতে প্রার্থিতার প্রস্তাবকারী ও সমর্থনকারী হয়েছেন। ধানের শীষের সাবেক দুই সংসদ সদস্যের দুই পুত্র বর্তমানে নিজ দলীয় প্রতীকেই নির্বাচন করতে চান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন শাহজাহান আলম। এখানে জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন দলের ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে মোট ১৫ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
আবুল হাসানাত আমিনী ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের আমিনপুরের বাসিন্দা। পরিবার নিয়ে থাকেন ঢাকার লালবাগে। তিনি আগে ভোটার ছিলেন আমিনপুরের। তবে ২০১৫ সালে জাতীয় পরিচয়পত্রের ঠিকানা পরিবর্তন করে সরাইল উপজেলা সদরের হালুয়াপাড়ার বাসিন্দা হয়েছেন। তবে এখানে তাঁকে দেখা যায় না বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা।
সদ্য প্রয়াত উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া সরাইল উপজেলার প্রত্যন্ত হাওরবেষ্টিত পাকশিমুল ইউনিয়নের পরমানন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি দলত্যাগের আগপর্যন্ত বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ছিলেন। ছয়বারের মধ্যে চারবার ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটি চারদলীয় জোটের অন্যতম শীর্ষ নেতা মুফতি ফজলুল হক আমিনীকে ছেড়ে দেন আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। পরে সাত্তার টেকনোক্র্যাট প্রতিমন্ত্রী হন।
অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুফতি ফজলুল হক আমিনী ৪৩ হাজার ২৬১ ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হালিমকে পরাজিত করে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এর আগে তিনি একাধিকবার এ আসন থেকে বটগাছ এবং ঘড়ি প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছেন। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে তিনি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক জাপার জিয়াউল হক মৃধার লাঙ্গল প্রতীকের কাছে ৪৯ হাজার ৩৯৯ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন।
সর্বশেষ ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া বিএনপির দলীয় প্রতীক নিয়ে জয়ী হন। গত ১১ ডিসেম্বর আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া বিএনপির দলীয় সিদ্ধান্তে জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর গত ১ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রত্যক্ষ সমর্থন নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হন। গত ৩০ সেপ্টেম্বর তাঁর মৃত্যুর পর ৫ নভেম্বর আবারও উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শাহজাহান আলম সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধাকে ২৪ হাজার ৪৬৪ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) উপজেলায় ইসলামী ঐক্যজোটের অবস্থান এখন খুব বেশি শক্তিশালী নয়। এলাকার কওমি মাদ্রাসাপন্থী লোকজন একসময় মুফতি ফজলুল হক আমিনীর অনুসারী ছিলেন। তাঁরাও এখন দুটি ধারায় বিভক্ত। বড় অংশটি বর্তমান নির্বাচন বিরোধী। এ কারণে এখানে ভোটার টানতে হাসানাত আমিনীকে বেগ পেতে হবে।
ইসলামী ঐক্যজোটের সরাইল উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবদুর রাকিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ছাড় না দিলে এখানে আমাদের পক্ষে জয়ী হওয়া সম্ভব নয়। তাঁরা আমাদের তুলে নেবেন (জয়ী করবে) বলেছেন।’ তিনি বলেন, সরাইল উপজেলায় ছোট-বড় সাড়ে তিন শতাধিক কওমি মাদ্রাসা আছে। তিনি দাবি করেন, অধিকাংশ মাদ্রাসার লোকজন তাঁদের পক্ষে আছেন।
তবে ইসলামী ঐক্যজোটের পুরোনো কমিটির একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এখানে কওমি মাদ্রাসাপন্থীদের ৯০ শতাংশ এ নির্বাচনের বিরোধী। তাই এ নির্বাচনে ইসলামী কোনো দলই ভোট টানতে পারবে না।
বিএনপি নেতা-কর্মী ও সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসন একসময় ধানের শীষের অন্যতম ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল। যার কারণে ছয়বার সংসদ সদস্য হন বিএনপি নেতা উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। তাঁর দল ত্যাগের পর ধানের শীষের সমর্থকেরা সাত্তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। তবে উপজেলার প্রত্যন্ত পাকশিমুল ও অরুয়াইল ইউনিয়নে এখনো সাত্তার ভক্তের সংখ্যা কম নয়। তাঁরা এখন মাইনুলের অনুসারী। এ কারণে এ দুটি ইউনিয়নে শক্ত ঘাঁটি হতে পারে মাইনুল হাসানের। আবার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের উপজেলা পর্যায়ের সাবেক দু-একজন নেতা-কর্মীকে মাইনুলের পক্ষে দেখা যায়।
মাইনুল হাসান বলেন, ‘আমি তৃণমূল বিএনপির প্রাথমিক সদস্য। আমাদের দলের জেলা বা উপজেলা কমিটি নেই। তবে আমার আব্বু এখানে ছয়বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন। তাঁর অনুসারীরা আমার পক্ষে কাজ করছেন। এ ছাড়া আমার এলাকার দু-তিনটি ইউনিয়ন আছে, যেখানে আমি একচেটিয়া ভোট পাব।’ তিনি দাবি করেন, বিএনপির অনেক নেতা-কর্মী প্রকাশ্যে তাঁর পক্ষে কাজ করছেন। বিএনপির প্রকৃত কর্মীরা বলছেন, তাঁরা উকিল সাত্তারের পরিবারে পাশে থাকবেন। তিনি আশা করছেন, এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে।
সরাইল উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লস্কর বলেন, ‘আমাদের কোনো নেতা-কর্মী এ নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যে নেই। এমনকি আমাদের কোনো ভোটারও ভোট দিতে যাবে না। যাঁরা এখন তৃণমূলে যাচ্ছেন, তাঁরা বহিষ্কৃত।’