চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পূর্ব বিরোধের জেরে দুই পক্ষের মধ্যে আবারও সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় ককটেলের বিস্ফোরণ ও বেশ কয়েকটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
আজ ৩০ মার্চ শনিবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বিরাসার গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে আটক করা হয়েছে।
জানা যায়, সম্প্রতি জুয়া খেলার টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে বিরাসার গ্রামের বাবুল মিয়ার পক্ষের আলামিন, একই গ্রামের মিজান আনসারির সাহেব বাড়ি পক্ষের মহিদ মিয়া ও তার ছেলেকে মারধর করেন। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এরই জেরে শনিবার সকাল থেকে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষে দেশীয় অস্ত্রের পাশাপাশি ককটেলের বিস্ফোরণসহ উভয় পক্ষের ১০ থেকে ১২টি বাড়ি ঘরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
ফায়ার সার্ভিসের জেলা প্রধান নিউটন দাস জানান, ভোরে অগ্নিসংযোগের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসি। এসব বাড়িতে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গ্রামের একাধিক পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে আটক করেছে। সংঘর্ষ এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ক্রমেই চাঙ্গা হয়ে উঠেছে আবাসন ব্যবসা। অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা বৃদ্ধি ও পরিবারের নিরাপত্তার কথা ভেবে মানুষ এখন ফ্ল্যাটমুখী। গত ৫ বছরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে আবাসন ব্যবসা।
তবে রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে রড, সিমেন্টসহ নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়েছে ফ্ল্যাটের দাম। প্রতিবছর ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে বিক্রি হচ্ছে কমপক্ষে তিনশত ফ্ল্যাট। যার বাজার মূল্য প্রায় একশত পঁচিশ কোটি টাকা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কয়েক বছরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে জায়গার দাম বেড়েছে কয়েক গুন। নিম্ন আয়ের লোকেরা তাদের চাহিদামতো শহরে জায়গা কিনে বাড়ি করতে পারছেন না, তাই তারা ফ্ল্যাটের দিকেই ঝুঁকছেন। আবার অনেক প্রবাসীরাও তাদের সন্তানের লেখাপড়ার সুবিধার্থে শহরে ফ্ল্যাট কিনছেন।
এছাড়াও জায়গা কিনে বাড়ি নির্মান করা বিরাট ঝামেলার কাজ ও বাড়ি নির্মানে পৌরসভার অনুমোদন পাওয়া আগের চেয়ে কঠিন হওয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মানুষ এখন ফ্ল্যাটমুখী হচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রায় ১০ বছর আগেই আবাসন ব্যবসা শুরু হয়। তবে মানুষ বর্তমানে ফ্ল্যাটমুখী হওয়ায় গত ৫ বছর ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আবাসন ব্যবসা চাঙ্গা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ফ্ল্যাটের মালিক বলেন, শহরে জায়গার দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ার কারণে জায়গা কিনে বাড়ি করতে পারবোনা বুঝে ফ্ল্যাট কিনেছি। তাছাড়া ফ্ল্যাটে রয়েছে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা।
কয়েক ফ্ল্যাট মালিক বলেন, বর্তমানে শহরে বাড়ি নির্মাণের জন্য জায়গা-জমি কেনা, নির্মাণ সামগ্রী রাখার জায়গার অভাব এবং ভবন নির্মাণে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে অনুমোদন নেওয়াসহ নানা জটিলতার কারনে আমরা ফ্ল্যাট কিনেছি।
আবার অনেক বাড়ির মালিক নিজেরা একটু আরাম-আয়েশে ও বিলাসী জীবনযাপনের জন্য তাদের বাড়ি আবাসন ব্যবসায়ীদেরকে (ডেভলাপার) দিয়ে দিচ্ছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এলাকা ও জায়গার অবস্থান ভেদে আবাসন ব্যবসায়ীদের (ডেভলাপারদের) ৬০ ভাগ, জায়গার মালিকের ৪০ ভাগ, ডেভলাপারদের ৫৫ ভাগ, জায়গার মালিকের ৪৫ ভাগ, ডেভলাপারদের ৫০ ভাগ, জায়গার মালিকের ৫০ ভাগ হারে জায়গার মালিকরা তাদের জায়গা আবাসন ব্যবসায়ীদেরকে দিয়ে দিচ্ছেন।
আবাসন ব্যবসায়ীরা ওই জায়গা নিয়ে দুই ইউনিট, তিন ইউনিট ও চার ইউনিটের ৬তলা, ৮তলা, ১০তলা, ১২তলা ভবন নির্মান করছেন। তবে গত কয়েক বছর ধরে পৌরসভা থেকে ৬ তলার উঁচু ভবনের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছেনা।
জেলা শহরের মৌলভীপাড়া, হালদারপাড়া, বাগানবাড়ি, পাইকপাড়া, কাজীপাড়া, কাউতলী ও মুন্সেফপাড়া এলাকায় ফ্ল্যাটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি।বর্তমানে এলাকা ও জায়গার অবস্থান ভেদে ফ্ল্যাটের প্রতি স্কয়ার ফুটের মূল্য ৪ হাজার থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকা। যা আগে ছিল ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত।
শহরের হালদারপাড়ার বাসিন্দা বকুল মিয়া বলেন, শহরে জায়গার দাম খুবই বেশী। তাই তিনি সাড়ে চার হাজার টাকা স্কয়ারফুট দামে ১হাজার ২শত স্কয়ারফুটের একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন। দুই ইউনিটের ৮তলা বিশিষ্ট ভবনটিতে লিফট, জেনারেটর, পানিসহ সকল সুবিধা রয়েছে। তবে গ্যাস নেই। তিনি সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করেন।
শহরের পাইকপাড়া এলাকার বাসিন্দা মোঃ আল-আমিন বলেন, শহরে জায়গার দাম বেশী। তিনি পরিবার পরিজন নিয়ে শহরে ভাড়া বাসায় থাকতেন। শহরে জায়গা কিনে তার পক্ষে বাড়ি করা সম্ভব নয় বিধায় তিনি গ্রামে কিছু জায়গা-জমি বিক্রি করে ৩৫ লাখ টাকা দিয়ে একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন। তিনি জানান, তার বাসায়ও গ্যাস নেই। তিনিও সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারি স্কুলের একজন শিক্ষক জানান, তিনি আশুগঞ্জের একটি সরকারি স্কুলে চাকুরি করেন। ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার কথা চিন্তা করে গত ১০/১২ বছর ধরে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে ভাড়া বাসায় থাকতেন। তিনি ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে শহরের মুন্সেফপাড়ায় ১হাজার ২শত স্কয়ারফুটের একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন।
সেলিম মিয়া নামে একজন প্রবাসী জানান, তার বাড়ি নবীনগর উপজেলায়। ছেলেমেয়েদর লেখাপড়ার কথা চিন্তা করে তিনি শহরের বাগানবাড়ি এলাকায় সাড়ে চার হাজার টাকা স্কয়ারফুট দামে ১০৫০ স্কয়ারফুটের একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন।
শহরের কাজীপাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলমগীর জানান, শহরের প্রতিটি মহল্লাতেই এখন চড়া দামে জায়গা বিক্রি হচ্ছে। ফলে জায়গা কিনে বাড়ি নির্মাণ করা মধ্যবিত্তদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই মানুষ এখন ফ্ল্যাটের দিকে ঝুঁকছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কলেজ শিক্ষক জানান, শহরে জায়গার দাম বেড়ে যাওয়ায় তারা তিন বন্ধু মিলে বছর পাচেক আগে হালদারপাড়া এলাকায় এক বাড়ির মালিকের কাছ থেকে অর্ধেক অর্ধেক হারে ৪ শতক জায়গা নিয়ে তাতে দুই ইউনিটের ৬তলা ভবন নির্মান করেছেন। তারা তিন বন্ধু পেয়েছেন ৬টি ফ্ল্যাট ও মালিক পেয়েছেন ৬টি ফ্ল্যাট। এতে তারা লাভবান হয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহরে কমপক্ষে ১৫ থেকে প্রতিষ্ঠান আবাসন ব্যবসার সাথে জড়িত। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ঠিকাদারও আছেন। আবার ৭/৮জন যুবক মিলেও আবাসন ব্যবসা করছেন। এলাকা ভেদে ও জায়গার অবস্থান বুঝে জায়গার মালিকদের সাথে চুক্তি করেন আবাসন ব্যবসায়ীরা। আবাসন ব্যবসায়ীদের (ডেভলাপারদের) ৬০ ভাগ, জায়গার মালিকের ৪০ ভাগ, ডেভলাপারদের ৫৫ ভাগ, জায়গার মালিকের ৪৫ ভাগ, ডেভলাপারদের ৫০ ভাগ, জায়গার মালিকের ৫০ ভাগ হারে জায়গার মালিকরা তাদের জায়গা আবাসন ব্যবসায়ীদেরকে দিয়ে দিচ্ছেন। ভবন নির্মানের সকল খরচ বহন করেন আবাসান ব্যবসায়ীরা। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে আবাসন রেডি হওয়া পর্যন্ত জায়গার মালিক অন্য যে বাসায় ভাড়া থাকেন সেই ভাড়াও পরিশোধ করেন আবাসন ব্যবসায়ীরা।
কয়েকজন আবাসন ব্যবসায়ী জানান, ভবন নির্মাণের জন্য পৌরসভা থেকে নকশা অনুমোদন নিতে হয়। যে স্থানে ভবন নির্মাণ করা হবে- তার পাশে ১৪ থেকে ১৬ ফুট পর্যন্ত রাস্তা থাকলেই ছয়তলা বিশিষ্ট ভবনের অনুমোদন দেয়া হয়। তারা জানান, পৌর শহরের অধিকাংশ এলাকাতেই এই আকারের রাস্তা নেই। এজন্য ভবন নির্মাণ সংক্রান্ত বিদ্যমান বিধি শিথিল করার দাবি জানান তারা।
আবাসন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রফিক কনস্ট্রাকশনের মালিক রফিকুল ইসলাম বলেন, “ মানুষ বাড়ি নির্মাণের ঝামেলা এড়াতে ফ্ল্যাটের দিকে ঝুঁকছেন। সবাই চান ঝামেলামুক্ত আবাসন। আমরা মানুষকে সকল সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ফ্ল্যাট দিচ্ছি। এছাড়া মধ্যবিত্তরা কিস্তির মাধ্যমেও ফ্ল্যাট কিনতে পারছেন।
আবাসন ব্যবসায়ী মোঃ কাদেরউজ্জামান বলেন, “ রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধের কারনে রড, সিমেন্টসহ নির্র্মান সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন ফ্ল্যাট তৈরিতে খরচ পড়ছে বেশি। প্রতি স্কয়ারফুটে এখন খরচ পড়ছে আড়াই হাজার টাকার মতো। তাছাড়া ছয়তলার বেশি উচ্চতার ভবনের অনুমোদন দিচ্ছেনা পৌরসভা। এসব কারণে ফ্ল্যাটের দাম কিছুটা বেশি’।
আবাসন ব্যবসায়ী এম.কে. বিল্ডার্সের মালিক কামরুল ইসলাম বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে বছরে আড়াইশ থেকে তিনশ ফ্ল্যাট বিক্রি হচ্ছে। প্রতিনিয়ত বাড়ছে এই চাহিদা। কিন্তু জায়গা স্বল্পতা এবং ছয়তলার বেশি উচ্চতার ভবন তৈরির অনুমোদন না থাকায় আমরা ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী ফ্ল্যাট দিতে পারছি না। তিনি বলেন, শহরের অধিকাংশ এলাকায় ১৬ ফুটের রাস্তা নেই।
তিনি বলেন, ভবন নির্মাণের জন্য বিদ্যমান বিধি যদি কিছুটা শিথিল করে ছয়তলার অধিক উচ্চতার ভবন নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয়, তাহলে ফ্ল্যাট বিক্রি বর্তমানের চেয়ে দ্বিগুণ হবে। পাশাপাশি ক্রেতারা তুলনামূলক কম দামে ফ্ল্যাট কিনতে পারবেন।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র মিসেস নায়ার কবির বলেন, সর্বনিম্ন ১৪ ফুটের রাস্তা থাকলেই ছয়তলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণ করা যাবে। তবে এটি পৌরসভার কোনো বিধি নয়। সরকার থেকেই এটি নির্ধানর করা হয়েছে। মূলত মানুষের হাঁটাচলা এবং যানবাহন যেন স্বাভাবিকভাবে চলতে পারে- সেজন্যই এই বিধান করা হয়েছে। এক্ষেত্রে পৌরসভার কিছু করার নেই।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বেশী দামে ফল বিক্রি করায় ৩ দোকানিকে ৮ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
আজ ১৯ মার্চ মঙ্গলবার দুপুরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সহকারি পরিচালক মোঃ মেহেদী হাসান শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এই জরিমানা করেন।
এর মধ্যে ইমন এন্টারপ্রাইজকে ৩ হাজার, আউয়াল ফল ভান্ডারকে ৩ হাজার ও মায়ের দোয়া ফল ভান্ডারকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এ ব্যাপারে অভিযান পরিচালনাকারী ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সহকারি পরিচালক মোঃ মেহেদী হাসান বলেন, রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল ও ভেজাল পণ্যের বিরুদ্ধে বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানের অংশ হিসেবে জেলা শহরের কোর্ট রোড, মসজিদ রোড, টি.এ. রোডের মনুমেন্টের গোড়াসহ বিভিন্ন জায়গায় বেশী দামে তরমুজসহ বিভিন্ন ফল বেশি দামে বিক্রি করা, দোকানে মূল্য তালিকা না থাকা ও ক্রয় মূল্যের সাথে বিক্রয় মূল্যের ফারাক থাকায় ৩ ফলের দোকানিকে ৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
জরিমানার পাশাপাশি তাদের সর্তকও করা হয়। ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
১ হাজার ২২ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ মাহমুদুল হাসান নামে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। গ্রেফতারকৃত মাহমুদুল হাসান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয়ের সহকারী প্রসিকিউটরের দায়িত্বে ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, আদালতে বিচারাধীন মাদকের মামলা নিষ্পত্তি পর আলামত হিসেবে জব্দ করা বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য গত বুধবার বিকেলে চীফ জুডিসিয়াল আদালত চত্বরে ধ্বংস করা হয়।
এ সময় অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জালাল উদ্দিনসহ কয়েকজন জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট উপস্থিত ছিলেন।
আদালতের মালখানায় থাকা বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য ধ্বংস করার জন্য আদালত প্রাঙ্গনে আনার সময় মাহমুদুল হাসান এক প্যাকেট ইয়াবা প্যান্টের পকেটে ঢুকিয়ে ফেলেন। এতে তার প্যান্টের পকেট উঁচু হয়ে যাওয়ায় উপস্থিত ম্যাজিষ্ট্রেটদের সন্দেহ হয়। এ সময় উপস্থিত একজন ম্যাজিষ্ট্রেট পুলিশ সদস্যদের ডেকে মাহমুদুল হাসানের শরীর তল্লাশী করতে বলেন। পরে পুলিশ সদস্যরা তল্লাশী করে তার প্যান্টের পকেট থেকে ১ হাজার ২২ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় মালখানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জোবায়েদুল হাসান ভূইয়া বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলা দায়ের করেন। বিকেলে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলা হাজতে প্রেরণ করা হয়।
এ ব্যাপারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সহকারি পরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, তিনি চিকিৎসার জন্য ভারতের চেন্নাই অবস্থান করছেন। ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। এমনটা হয়ে থাকলে বিষয়টি দুঃখজনক ও লজ্জাজনক।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম খোকন জানান, বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট নিজ চোখে বিষয় দেখে ফেলেন। দেখার পরই তাকে প্রথমে তাকে আটক ও পরে পুলিশের মাধ্যমে তার শরীর তল্লাশী করে তার পকেটে ইয়াবা ট্যাবলেট পাওয়া যায়। পরে তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন তিনি। আমি তার যথাযথ শাস্তি দাবি করি।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের পুলিশের পরিদর্শক কাজী দিদারুল আলম বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে মাহমুদুল হাসান আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
কেন্দ্রীয় বিএনপির অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল বলেছেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি আধুনিক চক্ষু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হবে।
হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা করতে আমার ব্যত্তিগত পক্ষ থেকে যা যা উদ্যোগ গ্রহণ ও সহযোগিতা দরকার তার সবটুকুই আমি করবো ইনশাল্লাহ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফাইভ স্টার ক্লাব ও অন্ধ কল্যাণ সমিতির উদ্যোগে আজ ৬ ডিসেম্বর শুক্রবার সকালে চক্ষু চিকিৎসা শিবিরের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন।
জেলা শহরের সাবেরা সোবহান সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এই চক্ষু শিবির অনুষ্ঠিত হয়। ফাইভ স্টার ক্লাবের সদ্য বিদায়ী সভাপতি, বর্তমানে প্রধান উপদেষ্টা ও প্রধান পৃষ্ঠপোষক বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মিন্টু ভৌমিকের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. বদিউজ্জামান ভূইয়া, বিএনপি নেতা আলী আজম, জসিম উদ্দিন রিপন, মনির হোসেন, মিজানুর রহমান, মাইনুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা বাহার চৌধুরী, আজিজুল ইসলাম, আতিকুল হক জালাল, রেদওয়ানুল হক, কামাল উদ্দিন, ওমর ফারুক, নূরে আলম, জাকারিয়া বাবু, মো. আব্দুল্লাহ প্রমুখ।
সংগঠনের ক্রীড়া সম্পাদক খালেদ হাসান আজাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফাইভ স্টার ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি ওমর ফারুক।
অনুষ্ঠান শেষে ফাইভ স্টার ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কাজী কামাল উদ্দিন জানান, ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত ফাইভ স্টার ক্লাবের পক্ষ থেকে প্রতি মাসের প্রথম শুক্রবার নিয়মিতভাবে এই চক্ষু শিবিরের আয়োজন করা হয়। আজকের আয়োজনটি ছিলো ৪২১তম চক্ষু চিকিৎসা শিবির।
চলারপথে রিপোর্ট :
ইজতেমা ময়দানে নিরীহ মুসল্লিদের ওপর সাদ পন্থীদের হামলা ও হত্যার প্রতিবাদে এবং দেশব্যাপী সাদ পন্থীদের কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া উলামা মাশায়েখ ও তৌহিদি জনতা।
আজ ২০ ডিসেম্বর শুক্রবার জুম্মা নামাজের পর বিভিন্ন মসজিদ ও মাদরাসার তৌহিদী জনতা শহরের টেংকের পাড় মাঠে এসে সমাবেত হয়। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে কুমারশীল মোড়, হাসপাতাল রোড, কোর্টরোড ও মাদরাসা মোড়সহ বিভিন্ন প্রধান সড়ক প্রদিক্ষিন করে কাউতলী মোড় এলাকায় গিয়ে শেষ হয়।
এ সময় বক্তব্য রাখেন হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান, হেফাজত ইসলামের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সভাপতি মুফতি মুবারকুল্লাহ্, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আলী আজম, দফতর সম্পাদক মাওলানা বেলাল হোসাইন প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, ইজতেমা ময়দানে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সাদপন্থীদের দ্রুত বিচার ও ফাঁসির দাবি জানান। পাশাপাশি দেশ ব্যাপী সাদ পন্থীদের কার্যক্রম নিষিদ্ধেরও দাবি তুলেন।