অনলাইন ডেস্ক :
ভারতীয় পণ্য বর্জনের ঘোষণা বিএনপি নেতাদের হিপোক্রেসি বলে মন্তব্য করেছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
আজ ৩১ মার্চ রবিবার রাজধানীর পূর্ত ভবনে গণপূর্ত অধিদপ্তরের আয়োজনে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মোকতাদির চৌধুরী বলেন, ‘ভারতীয় পণ্য বর্জনের ঘোষণা দিয়ে বিএনপির একজন নেতা গায়ের চাদর খুলে ফেলেছেন, কিন্তু উনি ভারতীয় কিসমিস, জিরা, এলাচ, দারুচিনি, পেঁয়াজসহ অন্যান্য পণ্য ঠিকই ব্যবহার করছেন এবং করবেন। তাহলে জনসমক্ষে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ঘোষণা হিপোক্রেসি ছাড়া আর কি হতে পারে।’
মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক একটি বিশেষ বইয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান কখনো সম্মুখ সমরে যাননি, তিনি মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনায়ও বিশ্বাস করতেন না। শোষণহীন, বৈষম্যহীন, ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার যে প্রত্যয় নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল জিয়াউর রহমান তার কোনোটিতেই বিশ্বাস স্থাপন করেননি। তিনি তার মন্ত্রিসভায় এমন লোকদের স্থান দিয়েছিলেন যারা ভারতে গিয়েছিল মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করার জন্য, যারা জাতিসংঘে বাংলাদেশের বিপক্ষে ওকালতি করতে গিয়েছিলেন এমন লোকদেরকে।’
তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান এবং হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ দুজনেই স্বৈরশাসক ছিলেন।
অনেকেই জিয়াউর রহমান ও এরশাদকে এক পাল্লায় মাপতে চান না। এটা একটা ভ্রান্ত ধারণা। জিয়াউর রহমান জীবনে একটা ভালো কাজও করেননি। অনেকে বলে থাকেন জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক।
কিন্তু এটাও সঠিক না। জিয়াউর রহমান নিছক একজন স্বৈরশাসক ছিলেন। পক্ষান্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসাম্প্রদায?িক চেতনায় বিশ্বাস করতেন বলে একটি মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন।’
স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে যে বিতর্কের অবতারণা অনেকে করতে চান তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ বলেন, ‘১৯৭০ সালের নির্বাচনে নির্ধারিত হয়েছে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার অধিকার কার। বঙ্গবন্ধু যে স্বাধীনতার ঘোষক এ নিয়ে বিতর্কের কোনো অবকাশ নেই।’
বর্তমান বাজার ব্যবস্থা এবং দ্রব্যমূলের ঊর্ধ্বগতি প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘যারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, যাদের মধ্যে দেশপ্রেম নেই, যারা একাত্তরের শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করতে চায়, এমনকি সম্ভ্রমহারা মা-বোনদের নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করে, তারাই নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বাড়িয়ে অধিক মুনাফা অর্জন করে এবং সে মুনাফার টাকা খরচ করে আবার হজ করতেও যায়। মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি করে অসৎ উপায়ে অর্জিত অর্থে কোন ধর্মীয় কাজই সিদ্ধ হবে না।’
হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ। হিন্দু ধর্মেও রয়েছে যে, স্বর্গের দেবীর চেয়েও দেশ মহিমামণ্ডিত।’ তাই দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে মানুষের কল্যাণে সঠিকভাবে নিজের কাজ করার জন্য সবার উদ্দেশ্যে তিনি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট লেখক, শিক্ষাবিদ ও ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসির মামুন। গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আক্তারের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ নবীরুল ইসলাম ও স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রধান স্থপতি মীর মনজুরুর রহমান। অনুষ্ঠানে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং গণপূর্ত অধিদপ্তরের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনলাইন ডেস্ক :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে নিজেদের মনোনীত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ।
আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি বুধবার বিকেলে চূড়ান্ত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়।
এর আগে, এদিন দুপুর ১২টায় আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা হয়। সভায় তালিকা চূড়ান্ত করে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীরা হলেন- পঞ্চগড়ের রেজিয়া ইসলাম, ঠাকুরগাঁওয়ের দ্রৌপদি বেবি আগরওয়াল, নীলফামারীর আসিকা সুলতানা, জয়পুরহাটের ডা. রোকেয়া সুলতানা, নাটোরের কোহেলি কুদ্দুস, চাঁপাইনবাবগঞ্জের জারা জেবিন মাহমুদ, খুলনার রুনু রেজা, ঝালকাঠির ফরিদা আক্তার বানু, বরগুনার ফারজানা, ভোলার খালেদা বানু, পটুয়াখালীর নাজনীন নাহার ফরিদা, ময়মনসিংহের উম্মে ফারজানা, নেত্রকোনার নাদিয়া বিনতে আমিন, জয়পুরহাটের মলি, ঝিনাইদহের কল্পনা।
কুমিল্লার আরমা দত্ত, সাতক্ষীরার লায়লা, খুলনার মুন্নুজান সুফিয়ান, গোপালগঞ্জের বোয়া আহমেদ, ঢাকার শবনম জাহান, ঢাকার পারুল আক্তার, বরিশালের শাম্মী আহমেদ, ঢাকার নাহিদ, মুন্সিগঞ্জের ফজিলাতুন নেসা, লক্ষ্মীপুরের অনিমা, শেখ আনারকলি, নরসিংদীর মাসুদা সিদ্দিক, গাজীপুরের মেহের আফরোজ, ঢাকার হাসিনা বারি, লক্ষ্মীপুরের ফরিদুন্নাহার লাইলী, নোয়াখালীর কানন আরা বেগম, নোয়াখালীর ফারিয়া খানম, চট্টগ্রামের দিলারা, চট্টগ্রামের ওয়াশিকা সিদ্দিক আয়েশা, ঢাকার সানজিদা খানম ও রংপুরের নাসিমা জামান ববি।
জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন ৫০টি। একেকটি রাজনৈতিক দল ছয়টি আসনের বিপরীতে একটি করে সংরক্ষিত নারী আসন পায়। এ হিসাবে নিজেদের এবং স্বতন্ত্রদের সমর্থন নিয়ে এবার ৪৮ আসন পাচ্ছে আওয়ামী লীগ।
চলারপথে রিপোর্ট :
আজকের সূর্যাস্ত যে রাত নিয়ে আসবে তা অসামান্য মহাপূণ্যে ঘেরা। এটি মহিমান্বিত লাইলাতুল মেরাজ। প্রিয়নবি হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নবুওয়াত লাভের একাদশ বর্ষে এ রাতে (২৭ রজব) মহান আল্লাহর বিশেষ মেহমান হিসাবে আরশে আজিমে আরোহণ করেন। তখন তিনি আল্লাহর দিদার লাভ করেন। অবলোকন করেন সৃষ্টিজগতের সবকিছুর অপার রহস্য। উম্মতের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে উপহার হিসাবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের হুকুম নিয়ে আসেন, যে নামাজ মুমিনের মেরাজস্বরূপ। রাসূল (সা.)-এর জীবনের সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা মেরাজ (ঊর্ধ্বলোকে পরিভ্রমণ)।
মুুসলিম জাহানের কাছে এ রাতের তাৎপর্য অপরিসীম। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত, রোজা রাখা ও নফল নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা শবেমেরাজ পালন করেন।
৬২০ খ্রিষ্টাব্দের পবিত্র এ রাতে মহানবি হজরত মুহাম্মদ (সা.) মহান আল্লাহ তায়ালার খাস রহমতে প্রথমে মক্কা মুকাররমার কাবা শরিফ থেকে জেরুজালেমে অবস্থিত বায়তুল মোকাদ্দাস বা মসজিদুল আকসায় যান। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআন শরিফের সুরা বনি ইসরাইলের শুরুতেই বলা হয়েছে, ‘পরম পবিত্র ও মহিমাময় সত্ত্বা তিনি, যিনি স্বীয় বান্দাকে রাতের বেলায় মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত ভ্রমণ করালেন, যার চতুর্দিকে আমার রহমত ঘিরে রেখেছেন-যেন আমি কুদরতের কিছু নিদর্শন দেখিয়ে দেই।’ মেরাজের ঘটনায় বলা হয়েছে, মসজিদুল আকসায় রাসূল (সা.) জামাতে ইমামতি করে ঊর্ধ্বলোকে গমন করেন। আসমানে হজরত আদম (আ.) ও বিশিষ্ট নবিদের সঙ্গে বিশ্বনবীর (সা.) সালাম ও কুশলাদি বিনিময় হয়। তারপর তিনি সিদরাতুল মুনতাহায় উপনীত হন। এ পর্যন্ত হজরত জিবরাইল (আ.) তার সফরসঙ্গী ছিলেন। সেখান থেকে তিনি একা রফরফ নামক বিশেষ বাহনে সত্তর হাজার নূরের পর্দা পেরিয়ে আরশে আজিমে মহান আল্লাহ তায়ালার দিদার লাভ করেন। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের হুকুম নিয়ে দুনিয়াতে প্রত্যাবর্তন করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
চট্টগ্রামে মাঝারি বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে । আজ ৯ জুন শুক্রবার নগরের বিভিন্ন এলাকায় হাঁটু পানি জমে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, খাল-নালাগুলো বর্জ্যে ঠাসা। খালের পাড়ে রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণের কারণে পানি চলাচলের পথগুলোও বন্ধ হয়ে গেছে। দখল হয়ে আছে অধিকাংশ খাল-নালা। এসব কারণে পানি নামতে পারছে না। ফলে অল্প বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
বৃষ্টিতে নগরের পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকা, ওয়াসা মোড়, কাতালগঞ্জ, ষোলশহর, চকবাজার, বাকলিয়া, শুলকবহর, কাপাসগোলা ও পাঠানটুলিসহ নগরের বিভিন্ন এলাকায় হাঁটু পানি জমে যায়।
জরুরি কাজে বের হয়ে বিড়ম্বনায় পড়েন জসীম উদ্দিন। তিনি বলেন, জরুরি কাজে নগরের চকবাজার যাওয়ার জন্য বের হই। সিএনজিচালিত অটোরিকশায় কাতালগঞ্জ ওয়াসা মোড়ে গিয়ে দেখি সড়কে পানি জমে আছে। পড়ে বিকল্প পথ দিয়ে গাড়ি চকবাজার যায়।
আবদুল হামিদ বলেন, ‘মাঝারি বৃষ্টিতে যদি এমন পরিস্থিতি হয়, তাহলে ভারি বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম নগর ভেসে যাবে।’ নগরের খাল-নালাগুলো নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে মেয়রকে অনুরোধ করেন তিনি।
তবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোবারক আলী বলেন, ‘নালা পরিষ্কার থাকায় পানি জমলেও দ্রুত নেমে গেছে। নালা-নর্দমা ও খালগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম আবহাওয়া দপ্তর থেকে জানানো হয়, শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ২২ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে র্যাবের অভিযানে আজ ২৭ আগস্ট রবিবার ১১ জন দালাল ও আউটসোর্সিং কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। হাসপাতালের অভ্যন্তরের বিভিন্ন ওয়ার্ড জরুরি বিভাগ ও বহিঃবিভাগ থেকে তাদের আটক করে হাসপাতাল প্রাঙ্গণে জড়ো করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, বেসরকারি সন্ধানী ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দুই কর্মচারি অনুমতি ছাড়াই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ঢুকে রোগীর রক্ত সংগ্রহ করেছেন। তাদেরকে ডায়াগনস্টিক রিপোর্টের জন্য হাসপাতাল থেকেই ফোন করেছিলেন কমিশনপ্রাপ্ত ওয়ার্ড বয়। এর বাইরে বেশ কয়েকজন আউটসোর্সিং কর্মচারি রয়েছেন যাদের চাকরির মেয়াদ শেষ হলেও কোম্পানী থেকে প্রাপ্ত পরিচয়পত্র গলায় ঝুলিয়ে কমিশনের বিনিময়ে হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করছেন।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহি ম্যাজিষ্ট্রেট আরিফুল ইসলাম দালাল চক্রের দুই জনকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও এক হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও পাঁচ দিনের কারাদণ্ড এবং বাকি নয় জনকে এক হাজার টাকা করে জরিমানা করেন।
১৫ দিনের জেলা ও এক হাজার টাকা জারিমানার দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- জ্যোতির্ময় শীল (২৮) ও লিটন মন্ডল (৩২)। জরিমানা দন্ডপ্রাপ্ত নয়জন হচ্ছেন- শিফাজুর রহমান, মোঃ রিয়াজুল ইসলাম, ফিরোজা খাতুন, ফারুক হোসেন, ওসমান শেখ, রিয়া বেগম, আরাফাত আকুঞ্জি, আব্দুল্লাহ আল মামুন ও গোলম রাব্বারনী।
র্যাব-৬’র কোম্পানি কমান্ডার মো. বদরুদ্দোজা বলেন, সাধারণ রোগীদের কথা মাথায় রেখে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ সকল সরকারি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলো দালাল মুক্ত করতে চাই। এর জন্য আগামীতেও আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
চলারপথে ডেস্ক :
তিন স্ত্রী তাকে পরিত্যাগ করে চলে যাওয়াই নারীদের প্রতি আসক্ততা থেকেই রাতের আধারে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার সাফখোলা গ্রামের ঘুমন্ত নারীদের নগ্ন ভিডিও ধারণ করতেন তিনি। যার লক্ষ্য ছিল অন্য নারীদের সাথে ব্লাক মেইল করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন ও অর্থ আত্মসাৎ।
আজ ৫ মে শুক্রবার দুপুরে এই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের পর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এমন তথ্য জানান পুলিশ সুপার আশিকুর রহমান।
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার সাফখোলা গ্রামে প্রায় দুই বছর ধরে রাতের আধারে নারীদের নগ্ন ভিডিও ধারন ও ছবি তোলার বিষয়টি জানাজানির পর স্থানীয় গ্রামবাসীরা শৈলকুপা থানায় চলতি মাসের ৪ তারিখ রাতে পর্নোগ্রাফী আইনে অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা করেন। সেই মামলার আসামি জুলকার খাঁ ও জান্নাতী খাতুনকে শুক্রবার ভোর রাতে নিজ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনবেস্টিগেশন সেল।
গ্রেফতারকৃতরা হল- উপজেলার সাফখোলা গ্রামের আদিল উদ্দিন খাঁর ছেলে জুলকার খাঁ (৩৫) এবং ওই গ্রামেরই শামসুল বিশ্বাসের কন্যা জান্নাতী খাতুন (২০)।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আশিকুর রহমান জানান, বেশ কিছুদিন ধরেই শৈলকুপা উপজেলার সাফখোলা গ্রামে রাতের আধারে কিছু মানুষ নারীদের নগ্ন ও আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করার ঘটনা সামনে আসে। বিষয়টি তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল। পরে থানায় মামলার পর মোবাইলে পাওয়া সিম কার্ড থেকে সুত্র ধরে মালিক সনাক্ত করা হয়। এরপর কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ঘটনায় জড়িত জুলকার খাঁ ও জান্নাতী খাতুনকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরো জানান, গ্রেফতারকৃতদের মোবাইলে প্রায় ৫০টির মত ভিডিও পাওয়া গেছে, রয়েছে নগ্ন ছবি। তবে অন্য মোবাইলে আরো ভিডিও আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই গ্রেফতারকৃত জুলকার খাঁ ওই গ্রামের এক নারীকে ব্লাক মেইল করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে। তবে অন্য নারীদের বিষয়ে জানা যায়নি এবং ব্লাক মেইল করে অর্থ আত্মসাতের পরিকল্পনা তাদের ছিল যেটা জ্ঞিাসাবাদে আসামিরা বলেছে।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, ইতোপুর্বে জুলকার খাঁর তিন স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যায়। পরে ওই গ্রামের জান্নাতীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর জান্নাতী তার বাবার নামে রেজিস্ট্রেশন করা সিম কার্ড তাকে দেয় ব্যবহারের জন্য।
উল্লেখ্য, সাফখোলা গ্রামে একটি বাড়িতে এপ্রিল মাসের ২৩ তারিখ রাতে জানালা দিয়ে নারীদের ভিডিও ধারনের সময় বাড়ির লোকজন ব্যক্তিটিকে হাতে আঘাত করে। সেসময় ওই ব্যক্তি মোবাইল ফোনিটি ফেলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনার পর থেকেই বিষয়টি জানাজানি হয়।