চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার ২ শতাধিক পরিবারের মাঝে বিনামূল্যে ঈদের বাজার বিতরণ করা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের সূর্য কুমার উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এই ঈদের বাজার বিতরণ করা হয়। লালপুর মানব কল্যাণ যুব সংঘের ৬ষ্ঠ বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে আয়োজিত ঈদের বাজারে প্রধান অতিথি ছিলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মো. মঈন উদ্দিন মঈন।
ঈদের বাজার হিসেবে নতুন কাপড়, সেমাই, চিনি, দুধ, কিসমিস, মুরগি সহ নানান ধরনের পণ্যে ভরা একটি করে ব্যাগ অসহায়, হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল ২’শ পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে লালপুর মানব কল্যাণ যুব সংঘের সভাপতি মো. ফারুক হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উদ্বোধক ছিলেন, লালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মোর্শেদ মাষ্টার, বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য মো. মঈন উদ্দিন মঈনের সহধর্মিনী কামরুন নাহার, আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমান কবির, লালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. খলিলুর রহমান, আশুগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো. মোজাম্মেল হক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, লালপুর এস কে দাস চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. মইনুল ইসলাম, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য বাকের আহমেদ খান প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
নির্বাচন কমিশন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার আগেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। এরইমধ্যে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নিজের প্রার্থীতার জানান দিলেন আশুগঞ্জ সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. সালাহ উদ্দিন।
আজ ৪ ফেব্রুয়ারি রবিবার সকালে আশুগঞ্জ প্রেস ক্লাবের নাসির আহমেদ সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি তার প্রার্থীতা ঘোষণা করেন।
এসময় তিনি বলেন, আমি সাধারণ পরিবারের সন্তান। হাই প্রোফাইল আমার নাই। আমি চেয়ারম্যান ছিলাম তাই মানুষের দুঃখ কষ্টের কথা জানি। সে অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এখন বৃহৎ পরিসরে কাজ করতে চাই। আমি সার্বজনীন জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চাই। কারো হক মেরে খাওয়ার চিন্তা আমার নাই।
এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, সারাদেশে যখন উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে ঠিক তখন যোগ্য নেতৃত্ব না থাকায় এই উপজেলা উন্নয়ন বঞ্চিত হয়েছে। আমি এই এলাকার সাধারণ মানুষদের মাঝ থেকে যোগ্য নেতৃত্ব তৈরি করে এলাকার উন্নয়ন করতে চাই। এ সময় তিনি স্থানীয় রাস্তাঘাটের উন্নয়নসহ, এলাকার শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি মাদকমুক্ত সমাজ গঠনের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
এসময় আশুগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো মোজাম্মেল হক ও সাধারণ সম্পাদক সাদেকুল ইসলাম সাচ্চুসহ স্থানীয় বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
মেয়াদ শেষে নতুন প্রকল্প অনুমোদন না হওয়ায় প্রায় তিন বছর বন্ধ সেচ কার্যক্রম। এতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ ও নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ৫০ সহস্রাধিক কৃষক বাড়তি সেচ খরচ মেটাতে ক্ষতির মুখে পড়েছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে আশুগঞ্জ-পলাশ এগ্রো ইরিগেশন প্রকল্পের আওতায় ১৫ হাজার হেক্টর জমির বোরো আবাদ। প্রতি মৌসুমে প্রায় ৭০ হাজার টন ধান উৎপাদন কম হচ্ছে। স্থানীয়রা প্রকল্প প্রস্তাবনা চূড়ান্ত ও বাস্তবায়ন দ্রুত না হলে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) বলছে, কিছু সংশোধন, সরেজমিন যাচাইসহ সেচ ব্যবস্থাপনায় আধুনিক ও টেকসই প্রকল্প প্রস্তাবনা চূড়ান্তের কাজ শেষ পর্যায়ে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলেই বাস্তবায়ন শুরু হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আশুগঞ্জ বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিভিন্ন ইউনিটের টারবাইন ঠান্ডা রাখতে মেঘনা নদীর বিপুল পরিমাণ পানি লাগে। পরে এই বর্জ্য পানি একটি আউটার চ্যানেল দিয়ে পুনরায় নদীতে ফেলা হয়। ১৯৭৫ সালে স্থানীয়দের উদ্যোগে বিদ্যুৎকেন্দ্রে একটি হেড রেগুলেটর নির্মিত হলে পানির গতিপথ আংশিক পরিবর্তন করে তা পার্শ্ববর্তী জমির সেচ হিসেবে ব্যবহার শুরু হয়। এটিই ১৯৭৮-৭৯ অর্থবছরে বিএডিসির অধীনে ‘আশুগঞ্জ সবুজ প্রকল্প’ নামে সেচ কার্যক্রম শুরু করে। একই সময় নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় এ ধরনের প্রকল্প গড়ে ওঠে। পরে ১৯৯০-৯৫ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় দুটিকে একীভূত করে যাত্রা শুরু হয় ‘আশুগঞ্জ-পলাশ এগ্রো ইরিগেশন প্রকল্প’, যার মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২০ সালের ৩০ জুন।
কৃষকরা জানায়, গভীর কিংবা অগভীর নলকূপ থেকে ভূগর্ভস্থ পানি সেচকাজে ব্যবহার করলে একরপ্রতি তাদের জ্বালানি খরচসহ লাগে ৮-১০ হাজার টাকা। বিপরীতে প্রকল্পের পানিতে একরে সেচ খরচ ২ হাজার টাকার মতো। কৃষি বিভাগের হিসাবে প্রকল্পের অধীনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ, সরাইল, সদর ও নবীনগর উপজেলার প্রায় ৩৪ হাজার এবং পলাশের ১৬ হাজার কৃষক এর সুবিধাভোগী। তারা নামমাত্র খরচে নিরবচ্ছিন্ন সেচ সুবিধা পেয়ে আসছিল। ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপ যেমন কমত, তেমনি গড়ে ৭০ শতাংশ জ্বালানি সাশ্রয় হতো। কৃষকরা প্রতি বোরো মৌসুমে আশুগঞ্জ অংশে প্রায় ৭০ হাজার টন ধান উৎপাদন করে আসছিল, যা এখন একেবারে বন্ধের পথে।
জানা গেছে, ২০১৯ সালে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) পুকুর আংশিক ভরাট ও পরে ২০২০ সালে আশুগঞ্জ নৌবন্দর-আখাউড়া স্থলবন্দর মহাসড়ক চার লেন প্রকল্প বাস্তবায়নে সেচ প্রকল্পের প্রায় ১১ কিলোমিটার ড্রেন ও খাল ধ্বংস হয়ে যায়। এর পরই সেচ ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়ে। এক পর্যায়ে ‘আশুগঞ্জ সবুজ প্রকল্প রক্ষা কমিটি’র ব্যানারে স্থানীয় কৃষকরা আন্দোলনে নামলে বিএডিসির পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস) প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের দায়িত্ব পায়। ২০১৯ সালের আগস্টে বিএডিসি, সওজ ও সিইজিআইএস যৌথ জরিপ শেষে সেচ সুবিধা অব্যাহত রাখতে মন্ত্রণালয় ও বিএডিসির কাছে তিনটি বিকল্প প্রস্তাব দেয়। ২০২০ সালের ১৭ জুন আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে প্রকল্পটি সচলে যেসব সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়, তার একটিও বাস্তবায়ন হয়নি। পাশাপাশি বিএডিসি সেচ ব্যবস্থা সচল রাখতে প্রায় ৪৭০ কোটি টাকার নতুন প্রকল্প প্রস্তাবনা দেয়। কিন্তু সেটি সাড়ে তিন বছরেও অনুমোদন পায়নি।
সেচ সুবিধাভোগী কৃষক রশিদ আহম্মদ, সেলিম মিয়া, দুলাল মিয়া ও স্কিম ম্যানেজার মো. বাছির জানান, সেচ বন্ধ থাকায় তিন বছর ধরে তাদের শত শত একর জমি অনাবাদী। অনেকে গভীর-অগভীর নলকূপের মাধ্যমে আবাদ করলেও খরচ পড়ছে কয়েক গুণ। প্রকল্পটি দ্রুত চালু না হলে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবেন বলে জানান তারা।
আশুগঞ্জ সবুজ প্রকল্প রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক শাহীন সিকদার বলেন, ‘এটি ব্যতিক্রমী সেচ প্রকল্প। দেশের কোথাও এতো কম খরচে সেচ সুবিধা নেই। প্রকল্প চালু থাকলে প্রতি মৌসুমে অন্তত ২৫ কোটি টাকার জ্বালানি সাশ্রয় হবে। প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারে এ প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছি।’
বিএডিসির উপপ্রধান প্রকৌশলী ও আশুগঞ্জ-পলাশ এগ্রো ইরিগেশন সেচ প্রকল্পের ফোকাল পারসন মোহাম্মদ ওবায়েদ হোসেন বলেন, ‘পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় প্রস্তাবিত প্রকল্পের কিছু বিষয় যাচাই-বাছাই করছে। শীঘ্রই প্রকল্প প্রস্তাবনা জমা দেওয়া সম্ভব হবে। মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলে কাজ শুরু করব।’
চলারপথে রিপোর্ট :
নৌযান শ্রমিকদের মারধরের প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নদীবন্দরে অনির্দিষ্টকালের জন্য নৌযান ধর্মঘট পালন করছে শ্রমিকরা।
এদিকে, আজ ১১ জুন রবিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে শ্রমিকরা কর্মবিরতি শুরু করায় আশুগঞ্জ নদীবন্দরে আটকা পড়েছে বিভিন্ন পণ্য নিয়ে আসা অর্ধশতাধিক কার্গো জাহাজ। বন্ধ রয়েছে কার্গো জাহাজ থেকে পণ্য খালাসও। এতে করে স্থবির হয়ে পড়েছে এই বন্দরের ব্যবসা-বাণিজ্য।
এ বিষয়ে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ বাহার মাস্টার বলেন, ১০ জুন শনিবার কার্গো জাহাজ মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের নেতৃবৃন্দ আশুগঞ্জ ও ভৈরব নৌবন্দরে আসেন। এ সময় মালিকপক্ষের লোকজন কোনো কারণ ছাড়াই তীরে নোঙরে থাকা এমভি শাহানায়া শেখসহ মোট ১৮টি জাহাজের শ্রমিকদের মারধর করেন। শ্রমিকদের মারধরের প্রতিবাদে আজ রোববার থেকে আমরা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালন করছি। এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হলে আমরা কাজে যোগ দেব না। আমাদের কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।
তবে বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের কো-কনভেনার নাজমুল হোসাইন হামদু বলেন, নৌযানের পণ্য পরিবহনের নিয়ম না মেনে, এমনকি চট্টগ্রাম থেকে সিরিয়াল না নিয়ে বিভিন্ন পণ্য নিয়ে জাহাজগুলো আশুগঞ্জ বন্দরে আসে। এ কারণে বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের পক্ষ থেকে আশুগঞ্জ ও ভৈরব নদীবন্দরে জাহাজে তদারকি করা হচ্ছিল। এ সময় জাহাজে থাকা শ্রমিকদের কাগজপত্র দেখাতে বলা হয়। তখন তারা কাগজপত্র দেখাননি। সিরিয়ালের কাগজপত্র না দেখানো নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। তাদের কাউকে মারধর করা হয়নি। তাদেরকে মারধরের অভিযোগ সত্য নয়।
উল্লেখ্য, আশুগঞ্জ নদীবন্দরে নৌপথে সার, রড, সিমেন্ট, ধান, চাল, পাথর, কয়লাসহ কোটি কোটি টাকার বিভিন্ন পণ্য নিয়ে প্রতিদিন অর্ধশত জাহাজ নোঙর করে। এসব পণ্য আশুগঞ্জ থেকে সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, কিশোরগঞ্জের চাহিদা মিটিয়ে থাকে। এই বন্দরে প্রতিদিন অন্তত পাঁচ হাজার শ্রমিক কাজ করে।
চলারপথে রিপোর্ট:
আশুগঞ্জে সাড়ে ১২ কেজি গাঁজা ও একটি পিকআপসহ ১ জন মাদক বহনকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীর নাম মো. শফিকুল ইসলাম (৩৭)। শফিকুল ইসলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের গোকর্ণঘাট এর মৃত আ. রউফ মাষ্টারের ছেলে।
২৪ নভেম্বর রবিবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
জানা যায়, রবিবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ থানার এসআই গাজী রবিউল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্সসহ মাদক উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে চরচারতলা সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর আশুগঞ্জ টোল প্লাজার অনুমান ৩০ গজ পূর্বপাশে পাকা রাস্তার উপর হতে ১২.৫ কেজি গাঁজা এবং একটি নীল রংয়ের টাটা এক্স-২ মিনি পিকআপসহ ১ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে আশুগঞ্জ থানায় উল্লেখিত বিষয়ে মামলা রুজু প্রক্রিয়াধীন।