চলারপথে রিপোর্ট :
বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতি চালুর দাবিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ২ এপ্রিল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সামনে কলেজ শাখা ছাত্রলীগ এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।
কলেজের সামনে সড়কে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল। কলেজ শাখার সভাপতি জুবায়ের মাহমুদ খান শ্রাবনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন – জেলা ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি আরাফাত হাসান, জেলা ছাত্রলীগ নেতা উৎস, কলেজ ছাত্রলীগ নেতা, রাব্বি রায়হান, ইয়াদুল হাসান, কাজী মেহেদী, জুয়েল রানা, তাজিম , শাহিদুল প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি চালুর দাবি জানান এবং এই ইসুতে কেন্দ্রীয় যে কোন নির্দেশনায় মাঠে থাকার ঘোষণা দেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেলওয়ের জলাশয় বালু ফেলে ভরাটের দায়ে একটি ভেকুসহ জলাশয়ে ফেলা বালু জব্দ করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। আজ ৮ মে সোমবার দুপুর দেড়টায় সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ মোশারফ হোসেন এই ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের বড়হরন লেবেল ক্রসিং এলাকায় রেলওয়ের জলাশয় গত কয়েকদিন ধরে বালু ফেলে ভরাট করে আসছে একটি প্রভাবশালী মহল। স্থানীয়রা বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করলে সোমবার দুপুরে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোশারফ হোসেন সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
এ সময় রেলের জলাশয় ভরাটের কাজে ব্যবহৃত একটি ভেকু জব্দ ও জলাশয়ে ফেলা বালু জব্দ করে আগামী চার কার্যদিবসের মধ্যে উম্মুক্ত নিলাম ডেকে বিক্রির জন্য নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ আলমকে নির্দেশ দেন।
এর আগে রেলওয়ের জলাশয় অবৈধভাবে ভরাটের প্রতিবাদে গত রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বড় হরণ লেবেল ক্রসিং এলাকায় মানববন্ধন করে এলাকাবাসী। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বড় হরণ ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি আশিকুল ইসলাম ও অভিভাবক সদস্য উম্মেদসহ প্রভাবশালীরা মার্কেট নির্মাণ করতে জলাশয়টি বালু ফেলে ভরাট করেছেন।
এ ব্যাপারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো. মোশারফ হোসেন বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ এর আলোকে সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের বড়হরণ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। সেখানে রেলগেট সংলগ্ন স্থানে বাংলাদেশ রেলওয়ের মালিকানাধীন একটি জলাশয় রাতের বেলা ভরাট করে ফেলেছে একটি চক্র।
অভিযান পরিচালনার সময় কাউকে পাওয়া যায়নি। সে সময় জলাশয় ভরাটের কাজে ব্যবহৃত একটি ভেকু মেশিন ও ভরাট করা বালু জব্দ করা হয়। এসব স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলমের জিম্মায় রাখা হয়। আগামী চার কার্যদিবসের মধ্যে উক্ত বালু প্রকাশ্যে নিলামে বিক্রি করে জলাশয়টিকে পূর্বের অবস্থায় ফেরত নেওয়ার জন্য ইউপি চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
তিনি বলেন, একই স্থানে বালু ফেলে জলাশয় ভরাটের অভিযোগে গত ১৯ ফেব্রূয়ারি অভিযান চালিয়ে খননযন্ত্র জব্দসহ এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। তিনি বলেন, পরিবেশ আইনে চিহ্নিত জলাশয় কোনোভাবেই ভরাট করার সুযোগ নেই।
চলারপথে রিপোর্ট :
বিএনপির ডাকা মহাসড়ক অবরোধ ঘোষণার প্রেক্ষিতে কুমিল্লা-সিলেট ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে চলাচলরত যানবাহনের নিরাপত্তা এবং চালকদের মনোবল বৃদ্ধির জন্য আজ ১ নভেম্বর বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কুমিল্লা-সিলেট ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে বিশেষ টহল দিয়েছে আইন-শৃংখলা বাহিনী।
জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ শাহগীর আলমের নেতৃত্বে বুধবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর পৌনে দুইটা পর্যন্ত এই দুই মহাসড়কে টহল দেয়া হয়।
সকালে জেলা প্রশাসন, র্যাব, পুলিশ, বিজিবি, আনসার, গোয়েন্দা পুলিশ, পুলিশের বিশেষ শাখাসহ আইন-শৃংখলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার সদস্যদের সমন্বয়ে একটি গাড়ি বহর ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ গোলচত্বর ও কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের বিজয়নগর উপজেলার সাতবর্গ পর্যন্ত মহাসড়কে বিশেষ টহল দেয়। এ সময় দেখা যায় মহাসড়কে ট্রাক,মাইক্রোবাস, আন্তঃজেলা লোকাল বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকসাসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করছে। এছাড়াও দূরপাল্লার বাস এনা পরিবহনের কয়েকটি বাসও মহাসড়কে চলাচল করতে দেখা গেছে।
বিশেষ টহল দেয়ার সময় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, বিজিবির ২৫ ব্যাটালিয়নের ( সরাইল ব্যাটালিয়ন) লেঃ কর্ণেল সৈয়দ আরমান আরিফ, সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ একরাম উল্লাহ, র্যাব-৯-এর ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয়ের নাশিদ হাসান, জেলা আনসার ও ভিডিপির অ্যাডজুটেন্ট, সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সরোয়ার উদ্দিনসহ আইন-শৃংখলা বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
টহল শেষে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, অবরোধ থাকলেও সড়ক-মহাসড়কে যানবাহন চলাচল করছে। আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা মাঠে কাজ করছেন। তিনি বলেন, মহাসড়কে দূরপাল্লার বাস চলাচল একটু কম হলেও সময়ের সাথে সাথে তা বৃদ্ধি পাবে। তিনি বলেন, কেউ কোন ধরনের বিশৃংখলার চেষ্টা করলে তাকে ছাড় দেয়া হবেনা।
এ ব্যাপারে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম বলেন, অবরোধের শুরু থেকেই আমরা মহাসড়কের নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করছি। তথাকথিত অবরোধ থাকলেও মহাসড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল করছে। সব কিছু স্বাভাবিক আছে। তবে দূরপাল্লার বাসের সংখ্যা একটু কম। এর প্রধান কারণ হচ্ছে যাত্রী স্বল্পতা। তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এ পর্যন্ত কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান
চলারপথে রিপোর্ট :
বিচারাধীন মামলা সম্পর্কে অনলাইনের মাধ্যমে বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে তথ্য জানতে পারছেন বিচারপ্রার্থীরা। অনলাইনে আদালতের কার্যতালিকা থেকে মামলার পরবর্তী তারিখ, আদেশ, পূর্ববর্তী আদেশ এবং মামলার চলমান অবস্থা সম্পর্কে জানা যাচ্ছে। বিচার বিভাগের চালু হওয়া অনলাইন কজলিস্ট ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এ সুফল পাচ্ছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিচারপ্রার্থীরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালত সূত্রে জানা যায়, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে অনলাইন কার্যক্রম জোরদার করেছে বিচার বিভাগ। এরই অংশ হিসেবে গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে স্মার্ট বিচার বিভাগ বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে ‘সব মামলার তথ্য এক ঠিকানা’ স্লোগানে জেলা পর্যায়ে আদালতের বিচারাধীন মামলার তথ্য অনলাইনে প্রকাশের উদ্যোগ নেয় সরকার।
অনলাইনে এই ঠিকানায় causelist.judiciary.gov.bd নিয়মিত আদালতে বিচারাধীন মামলার তথ্য পাচ্ছেন বিচারপ্রার্থীরা। পাশাপাশি মোবাইলফোনে গুগল প্লেস্টোরে ‘আমার আদালত’ নামে অ্যাপ ডাউনলোড করে একই সেবা মিলছে। বিচারপ্রার্থীরা অনলাইনে ঘরে বসেই বিনা খরচে তাদের মামলার পূর্ববর্তী আদেশ, বর্তমান অবস্থা, পরবর্তী তারিখ ও আদেশ সম্পর্কে জানতে পারছেন।
এরজন্য প্রথমে এই ঠিকানায় causelist.judiciary.gov.bd বা ‘আমার আদালত’ অ্যাপে ঢুকতে হয়। সেখানে ‘মামলার কার্যতালিকা’ অপশনে ক্লিক করতে হয়। এরপর বিভাগ, জেলা, আদালত ও তারিখ নির্বাচন করতে হবে। এছাড়া শুধু নম্বর ও তারিখ দিয়ে কাঙ্ক্ষিত মামলা সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য জানা যায়।
আদালতে আসা মোজাম্মেল হোসেন নামে এক যুবক বলেন, আমি প্রবাসে থাকি। এক বছরের বেশি সময় ধরে আমার ভাইয়ের সঙ্গে পারিবারিক বিষয় নিয়ে মামলা চলছে। আমি সম্প্রতি দেশে ফিরেছি। প্রবাসে থাকাকালে আমাকে একজন জানিয়েছিলেন, অনলাইনে মামলার তারিখ কবে তা দেখা যায়। দেশে ফেরার আগে অনলাইনে আমার মামলার শুনানির তারিখ জেনে এসেছি। এ বিষয়টি জানতে পারলে সবাই উপকৃত হবে।
এমদাদ হোসেন রানা নামে আরেক বিচারপ্রার্থী বলেন, আদালতে এসে জানতে পেরেছি ঘরে বসেই মামলার অবস্থা এবং আইনি সেবা পেতে পারি। পরবর্তী তারিখ আমার কবে তাও জানতে পারব। অনেক সময় কেবল মামলার শুনানি কবে, তা জানতে আদালতে আসতে হতো। এই ধরনের সেবা চালু হওয়াতে সরকার ও জেলা জজকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম খোকন বলেন, অনলাইন পদ্ধতি চালু হওয়ায় আইনি সেবা সাধারণ মানুষ ঘরে বসেই পাবেন। বিষয়টি সম্পর্কে বেশি বেশি প্রচার করলে বিচারপ্রার্থীরা জেনে আরও সুবিধা পাবেন।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নাজির সানাউল্লাহ তালুকদার বলেন, অনলাইনে কজলিস্ট চালু হওয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিচারপ্রার্থীরা ঘরে বসেই তাদের মোকদ্দমার তথ্য, পরবর্তী ও পূর্ববর্তী তারিখ এবং অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারছেন। এতে তাদের সুবিধা হচ্ছে।