অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিএল)-এর টেলিভিশন রেটিং পয়েন্ট (টিআরপি) সেবার বাণিজ্যিক কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
৩ এপ্রিল বুধবার বিকালে রাজধানীর কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউতে বিএসসিএল-এর প্রধান কার্যালয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে সঙ্গে নিয়ে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব সামসুল আরেফিন, বিএসসিএল’র চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. শাহজাহান মাহমুদ, একাত্তর মিডিয়া লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু এবং বিএসসিসিএল-এর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এসময় তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিএল)-এর টেলিভিশন রেটিং পয়েন্ট (টিআরপি) সেবার বাণিজ্যিক কার্যক্রম উদ্বোধনের মাধ্যমে অত্যন্ত চমৎকার একটি কাজের সূচনা হয়েছে। সরকারের একটি প্রতিষ্ঠান একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথ উদ্যোগে এ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। এ বিষয়টি অত্যন্ত গর্বের। প্রযুক্তিটি আরও উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে। এ প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে, সরকার বেসরকারি খাত বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথভাবে প্রযুক্তিপণ্য তৈরি করতে পারে যেটি বাণিজ্যিকভাবে লাভবান করা সম্ভব। এটিই আমাদের জন্য ব্যাপক অর্জন।
এ কার্যক্রমের জন্য সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, আপনাদের উদ্যোগ ও সহযোগিতা ছাড়া বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের সহযোগিতা ছাড়া এ প্রযুক্তি উদ্ভাবন সম্ভব হতো না।
সামনের দিনগুলোতে নিজেদের প্রচেষ্টায় নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশে আরও বড় উদ্যোগ গ্রহণ করা সম্ভব হবে বলেও এ সময় জানান তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী।
এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, সরকারের উদ্যোগে ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সহযোগিতায় টিআরপি সিস্টেমের মতো দেশে এ ধরনের আরও বড় কাজ হবে, যেগুলো বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হবে এবং যার উপযোগিতা থাকবে।
পরে প্রতিমন্ত্রী বিএসসিএলের প্রধান কার্যালয়ে টিআরপি সিস্টেমের কার্যক্রম ঘুরে দেখেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবাইকে দেশ ও জনগণের কল্যাণে একত্রে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
আজ ৪ মে বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনের ‘ক্রেডেনশিয়াল হলে ‘শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা ২০২৩’ উপলক্ষে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এ আহ্বান জানান।
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘মানুষকে আলোর পথ দেখাবেন। দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করবেন।’
তিনি বলেন, পৃথিবীর সব ধর্মই মানুষের কল্যাণের কথা বলে। প্রতিটি ধর্মেই অনেক ভালো বিষয় আছে। রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন সব সময় যা উৎকৃষ্ট তা গ্রহণ এবং যা নিকৃষ্ট তা বর্জন করারও উপদেশ দেন। ‘মানুষের কল্যাণের জন্যই ধর্ম, অকল্যাণের জন্য নয়’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মানুষের জন্যই ধর্ম, ধর্মের জন্য মানুষ নয়।’
শুধু নিজে বা পরিবারকে নিয়ে ভালো থাকার চিন্তা না করে সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চিন্তা করারও তাগিদ দেন রাষ্ট্রপতি।
মহামতি বুদ্ধকে মানবতা ও মুক্তির পথিক হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় সম্প্রদায়ের অংশ। এই অঞ্চল তথা বিশ্বে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকদের দায়িত্ব ও কর্তব্য অনেক বেশি বলেও মনে করেন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন।
তিনি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতাদেরকে মহামতি বুদ্ধের শিক্ষাকে নিজের জীবনে প্রতিফলিত করতে এবং অন্যদেরকেও উৎসাহিত করার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশসহ বিশ্বের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের সঙ্গে মিশে আছে প্রাচীন বৌদ্ধবিহারসহ হাজার বছরের বৌদ্ধ ঐতিহ্য।’
মো. সাহাবুদ্দিন একটি সুখী-সমৃদ্ধ ও শান্তিময় বাংলাদেশ গড়তে গৌতম বুদ্ধের সুমহান শিক্ষা ও আদর্শকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি সবাইকে সৎ ও সুন্দর জীবন-যাপনে উদ্বুদ্ধ হওয়া, ভালো কাজে অন্যকে অনুপ্রাণিত করা এবং নিজেদেরকে দেশের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিও গুরুত্বারোপ করেন।
বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সাথে রাষ্ট্রপতি এবং তার সহধর্মিণী ড. রেবেকা সুলতানা আজ বিকাল চারটা থেকে করে প্রায় ঘণ্টাখানেক শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সাউন্ড সিস্টেমের মাধ্যমে বৌদ্ধ ধর্মীয় গান ও মিউজিকের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতারা রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
অনুষ্ঠানে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের উপসংঘরাজ শ্রীমৎ ধর্মপ্রিয় মহাথের, ধর্ম সচিব কাজী এনামুল হাসান, চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. প্রভাত চন্দ্র বড়ুয়া, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) প্রধান বার্তা সম্পাদক সমীর কান্তি বড়ুয়া, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান সুপ্ত ভূষণ বড়ুয়া এবং ট্রাস্ট সচিব জয়দত্ত বড়ুয়া উপস্থিত ছিলেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতা, রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার, বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি মিশনের প্রধান এবং আট শতাধিক আমন্ত্রিত অতিথিসহ প্রায় সহস্রাধিক লোক অংশ নেন।
অনলাইন ডেস্ক :
আধুনিক-প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন শিক্ষিত-দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রমের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কেউই অশিক্ষার অন্ধকারে থাকবে না।
আজ ২০ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে একুশে পদক প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা আমাদের দেশের মানুষকে শিক্ষিত, দক্ষ, আধুনিক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।
তিনি বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি। সামনে আমাদের লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা। কাজেই কেউই অশিক্ষার অন্ধকারে থাকবে না। সবাই যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যেন শিক্ষিত হয়ে বা তাদের দক্ষতা, কর্মশক্তিটা বিকশিত করতে পারে সেদিকে আমরা বিশেষভাবে দৃষ্টি দিচ্ছি।
টানা চার বারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী দিনের পথ চলায় ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলবো সে ঘোষণা আমরা দিয়েছি। সেই প্রেক্ষিতে পরিকল্পনা তৈরি করেছি, পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় সেগুলো আমরা সংযুক্ত করে বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছি। সেভাবেই আমরা এগিয়ে যাবো।
একুশের চেতনার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা শুধু আমাদের স্বাধীনতাই দিয়ে যাননি। সেই সঙ্গে একটা মর্যাদাবোধ দিয়ে গেছেন। আমরা বিজয়ী জাতি হিসেবে সারা বিশ্বে আমি মাথা উঁচু করে চলতে চাই। এই কথাটা সকলকে মনে রাখতে হবে।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের পরে বিজয়ী জাতি হিসেবে মর্যাদাটা বাংলাদেশ হারিয়ে ফেলেছিল। আজকে অন্তত এইটুকু দাবি করতে পারি আবার বাঙালি বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে চলতে পারে। সেই মর্যাদা আমরা ফিরিয়ে এনেছি। এই মর্যাদা সমুন্নত রেখেই আগামী দিনে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। কারো কাছে হাত পেতে নয়, ভিক্ষা করে নয়। আত্ম মর্যাদা নিয়ে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলবো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একুশ আমাদের শিখিয়েছে মাথা নত না করতে। আমরা মাথা নত করে আর চলবো না, মাথা উঁচু করেই চলবো।
গুণীজনদের সম্মাননার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, যারা জনগণের সেবা করে তাদের সেবা করতে পারাটা এটা নিজেকে ধন্য মনে করি। এভাবে বিভিন্ন জায়গায় আমাদের মুক্তিযুদ্ধে যারা অবদান রেখেছেন বা বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে যারা অবদান রেখেছেন, ক্রিড়া-সংস্কৃতি বিভিন্ন ক্ষেত্রে যারা অবদান রেখেছেন তাদের সম্মাননা দিলে আমাদের নতুন প্রজন্ম (অনুপ্রেরণা পাবে)।
তিনি বলেন, সমাজের বিভিন্ন জায়গায় যারা অবদান রাখছেন অবশ্যই তাদের খুঁজে বের করে সম্মাননা দেওয়া হবে।
এ বছর একুশে পদক পেয়েছেন ২১ জন। যাদের একজন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সীমান্তঘেঁষা ভোলাহাট উপজেলার মুসরিভূজা গ্রামের বাসিন্দা জিয়াউল হক (৯১)। দই বিক্রির টাকায় তিনি গড়ে তুলেছেন লাইব্রেরি। এছাড়া স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই দেওয়াসহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত অনুদান দেন সাদা মনের মানুষ হিসেবে পরিচিত জিয়াউল হক।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে জিয়াউল হকের সমাজ সেবামূলক কাজের প্রশংসা করেন এবং পাঠাগারের জন্য একটি ভবন নির্মাণ করে দেওয়ার ঘোষণা দেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যের আগে ২১ বিশিষ্টজনের হাতে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার একুশে পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এবার ভাষা আন্দোলন ক্যাটাগরিতে মরণোত্তর একুশে পদক পেয়েছেন দুজন। তারা হলেন- আশরাফুদ্দীন আহমদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা হাতেম আলী মিয়া (মরণোত্তর)।
শিল্পকলার বিভিন্ন শ্রেণিতে ১১ জন পেয়েছেন এই পদক। সংগীতে পেয়েছেন জালাল উদ্দীন খাঁ (মরণোত্তর), বীর মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণী ঘোষ, বিদিত লাল দাস (মরণোত্তর), এন্ড্রু কিশোর (মরণোত্তর) ও শুভ্র দেব। অভিনয়ে ডলি জহুর ও এমএ আলমগীর, আবৃত্তিতে খান মো. মুস্তাফা ওয়ালীদ (শিমুল মুস্তাফা) ও রূপা চক্রবর্তী, নৃত্যকলায় শিবলী মোহাম্মদ এবং চিত্রকলায় শাহজাহান আহমেদ বিকাশ।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ ও আর্কাইভিংয়ে কাওসার চৌধুরী, সমাজসেবায় মো. জিয়াউল হক ও আলহাজ রফিক আহামদ।
ভাষা ও সাহিত্যে এবার একুশে পদক পেয়েছেন চার জন। তারা হলেন—মুহাম্মদ সামাদ, লুৎফর রহমান রিটন, মিনার মনসুর ও রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ (মরণোত্তর)। এছাড়া শিক্ষায় প্রফেসর ড. জিনবোধি ভিক্ষু রয়েছেন এ তালিকায়।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে ‘একুশে পদক’ প্রদান করা হয়। পুরস্কার হিসেবে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় স্বর্ণপদক, সম্মাননা সনদ ও নগদ অর্থ দেয়।
পদক প্রদান কার্যক্রম পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতি বিষয়ক সচিব খলিল আহমদ।
অনলাইন ডেস্ক :
নতুন প্রজন্মকে ধর্মকে ধর্মের জায়গায়, রাষ্ট্রকে রাষ্ট্রের জায়গায় রাখার অনুরোধ জানিয়ে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক রুমিন ফারহানা বলেন, ‘রাষ্ট্রের সঙ্গে ধর্ম, ধর্মের সঙ্গে রাষ্ট্র একাকার হতে পারে না। তাহলে ধর্মও রক্ষা হয় না, রাষ্ট্রও চলে না। রাষ্ট্র ধর্মকে তার নিজের প্রয়োজনে তার সব অপকর্মের সাফাই হিসেবে ব্যবহার করে। বর্তমান সংবিধান বৈপরীত্যে ভরা।
আজ ৮ অক্টোবর মঙ্গলবার বিকেলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সংবিধান : ক্ষমতার না জনতার’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, ‘যখন যে সরকার ছিল সে তার দলের স্বার্থে, দলকে ক্ষমতার রাখার স্বার্থে, ক্ষমতাকে দীর্ঘায়ু করতে সংবিধান সংশোধন করেছে। চতুর্থ সংশোধনী রাষ্ট্রের পুরো কাঠামো ভেঙে দিয়েছে। এই সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার এসেছে। বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতা পুরাপুরি নির্বাহী বিভাগের হাতে দিয়ে সেপারেশন অব পাওয়ারকে মুছে ফেলা হয়েছে।
বিচার বিভাগ যদি স্বাধীন না হয় তখন সেই রাষ্ট্রটা আর রাষ্ট্র থাকে না।
রুমিন ফারহানা বলেন, ২২ অনুচ্ছেদে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা বলছি আবার একি সঙ্গে ১১৬ অনুচ্ছেদ রাখছি যেটা দিয়ে নিম্ন আদালতের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় রাষ্ট্রপতির কাছে। এখন প্রশ্ন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা কতটুকু। ৪৮-এর (৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতিকে সবকিছু করতে হবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শক্রমে।
বাংলাদেশে কারা রাষ্ট্রপতি হন? তাদের কি এতটুকু ক্ষমতা আছে প্রধানমন্ত্রীর বাহিরে গিয়ে একটা হাঁচি দেওয়ার। এ জন্য আগে আওয়াজ তুলেন বাংলাদেশে আর কোনো দলীয় রাষ্ট্রপতি চান কিনা।’
তিনি বলেন, ‘সংবিধানের ৮(ক)-তে বলা হচ্ছে সমাজতন্ত্রের কথা। সমাজতন্ত্র তো দূরে থাক আমরা কি ন্যূনতম একটা কল্যাণরাষ্ট্র তৈরি করতে পেরেছি। যদি আমাদের রাষ্ট্র কল্যাণরাষ্ট্র হতো তাহলে তো স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সামাজিক সুরক্ষা এসব খাতে আমরা জিডিপির ২০ শতাংশ বরাদ্দ দিতাম, কিন্তু না আমরা দিচ্ছি কত? প্রতি বছর বাজেট আলোচনায় আমরা দেখি জিডিপির মাত্র এক বা দুই শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে।
যেখানে আমরা একটা কল্যাণরাষ্ট্র তৈরি করতে পারিনি সেখানে কি করে আমরা সমাজতন্ত্রের কথা বলি। সুতরাং এই গঠনতন্ত্র আপনারা রাখবেন কি না, তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। সংবিধানের ষষ্ঠ অনুচ্ছেদে বলা হচ্ছে আমরা জাতি হিসেবে বাঙালি, বাংলাদেশে কি চাকমা, মারমাসহ নানা জাতি নেই, তাদের আলাদা ভাষা, সংস্কৃতি নেই? আছে কিন্তু আমাদের এই সংবিধানটি সেটাকে ধারণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা ১৯৭১ সালে যে সুযোগটা তৈরি করেছিলাম তা ১৯৭৩ সালে এসেই শেষ করে ফেলেছি। জাতীয় নির্বাচনে কারচুপি করে। আমরা ১৯৯০ সালেও একটা সুযোগ তৈরি করেছিলাম তাও ধরে রাখতে পারিনি, আমরা ২০২৪ সালে এসে আরেকটা সুযোগ পেয়েছি, এই সুযোগটা আমরা কাজে লাগাব না বেহাত করব তা নির্ভর করছে এই প্রজন্মের ওপর।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইজার মুহাম্মদ শাওলীনের সঞ্চালনায় আরো আলোচনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শরমীন্দ নিলোর্মী এবং রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী হাসনাত কাইয়ুম।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রাজনীতি করে নিজের ভাগ্য গড়তে আসিনি, মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছি। আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল পদ্মা সেতু নির্মাণ। তারা অপবাদ দিয়েছিল তার প্রতিবাদ করে নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু করতে পেরেছি। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কথা। সেই শক্তিটা কিন্তু আপনারাই যুগিয়েছেন।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আজ ১ জুলাই শনিবার দুপুরে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ে তিনি এসব কথা বলেন। কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্র নাথ বিশ্বাস অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোটালীপাড়াবাসী আপনারা আমার সব দায়িত্ব নিয়েছেন। আমার নির্বাচন, আমার সবকিছুই আপনারাই দেখেন। টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়ার মানুষই হলো আমার সবচেয়ে বড় শক্তি।
দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে কোটালীপাড়ায় নৌকায় ভোট চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন- শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা আমাদের লক্ষ্য।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আজকে আমরা আমাদের দেশের ভাবমূর্তি সারা বিশ্বে উজ্জ্বল করতে পেরেছি। জাতিসংঘের প্রতিনিধি আন্ডার সেক্রেটারি দেশে আসছেন। অন্যান্য দেশের প্রতিনিধিরাও আসছেন। আমরা আমাদের দেশের ভাবমূর্তি সারা বিশ্বে উজ্জ্বল করতে পেরেছি। কিন্তু আমাদের কিছু লোক তো আছেই, যারা বাংলাদেশের কোনো ভালোই চোখে দেখে না। চোখ থাকতে যারা অন্ধ, তাদের বিরুদ্ধে কিছুই বলার নেই। ঈদের শুভেচ্ছা জানাতে এসেছি। কাজেই এসব কিছু এখন আর বলার নেই। কিন্তু এটাই বলব, তারা দেখে না, কিন্তু ভোগ করে।
তিনি বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ পেয়েছি। আজকে সবার হাতে মোবাইল ফোন। অনলাইনে সবাই সারাদিন কথা বলে। এতগুলো টেলিভিশন দিয়ে দিয়েছি। তারপরও তারা বলে তাদের কথা বলার অধিকার নেই!
প্রধানমন্ত্রী কৃষির প্রতি গুরুত্বারোপ করে বলেন, আমাদের ফসল আমাদের ফলাতে হবে। আমাদের খাদ্যের চাহিদা আমরা পূরণ করব। যা উদ্বৃত্ত থাকবে তা অন্যকে দিতে পারব। আমরা খাদ্য সংরক্ষণের ও ব্যবস্থা করছি। এলাকায় এলাকায় সে ব্যবস্থা নেব। শুধু এটুকুই বলব, কোথাও যেন কোনো অনাবাদী জমি না থাকে। আষাঢ় মাসে বৃষ্টির মধ্যে আমরা বৃক্ষরোপণ শুরু করেছি। এটা আওয়ামী লীগের কর্মসূচি। সবাইকে আহ্বান করেছি, অন্তত ৩টি করে গাছ লাগান। এরমধ্যে একটি ফলদ, একটি বনজ ও একটি ভেষজ গাছ লাগাতে হবে। এগুলো করেই আমরা লাভবান হব। এক্ষেত্রে আমরা সহযোগিতা দেব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার বাবা দেশটা স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। তারই স্বপ্ন পূরণ করে ক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়া আমাদের লক্ষ্য। দেশে হতদরিদ্র মাত্র ৫%। সেটাও যেন না থাকে সে ব্যবস্থা নিচ্ছি। একটাও হৃতদরিদ্র থাকবে না। প্রত্যেকের একটি ঘর, একটু জমি ও জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা ইনশাআল্লাহ করতে পারব। আর আমরা সেটাই চাই।
তিনি বলেন, বিশেষ করে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে ওষুধ দিচ্ছি, শিক্ষার ব্যবস্থা করছি, স্কুলগুলোকে নতুনভাবে তৈরি করে দিচ্ছি, পড়াশোনার সুযোগ করে দিচ্ছি ও বৃত্তি দিচ্ছি। আড়াই কোটি শিক্ষার্থীদের আমরা বৃত্তি দেই। এভাবে আমরা প্রতিটি শ্রেণি-পেশার মানুষকে এমনকি বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, দুস্থ মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তামূলক কাজের মধ্য দিয়ে আমরা সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি। আল্লাহর কাছে এটাই শুধু দোয়া করবেন। হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সবাই যার যার ধর্মীয় রীতিতে সৃষ্টিকর্তার কাছে কামনা করবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, লাখো শহিদের রক্তের বিনিময়ে এ বাংলাদেশ সারা বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলবে। বাংলাদেশের মানুষ মর্যাদা নিয়ে চলবে। সেটাই আমরা চাই। জাতির পিতার স্বপ্ন ক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে পারব, সেটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহম্মদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেনসহ কোটালীপাড়ার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এরআগে প্রধানমন্ত্রী কোটালীপাড়া ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার আওয়ামী লীগ ও অঙ্গনসংগঠনের নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যানদের বক্তব্য মনযোগ দিয়ে শোনেন। প্রধানমন্ত্রী কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন ও ভবনের সামনে তিনটি গাছের চারা রোপণ করেন।
পরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে নেতাকর্মীদের সঙ্গে মধ্যাহ্ন ভোজে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় সড়কপথে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে কোটালীপাড়ায় পৌঁছান তিনি।
কোটালীপাড়ায় পৌঁছানোর পর নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান ও বিভিন্ন শ্লোগান দেন। প্রধানমন্ত্রী এ সময় হাত নেড়ে নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা জানান। দুপুর সোয়া ১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে রওনা দেন।
টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছে তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন ও তার রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া এবং বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন।
অনলাইন ডেস্ক :
রমজান মাসে সারাদেশের প্রাথমিক, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ খোলা থাকলেও বন্ধ থাকবে মাদরাসা। রোজার জন্য ৭ মার্চ থেকেই দেশের সব মাদরাসা বন্ধ হয়ে যাবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের ২০২৪ সালের ছুটির তালিকা ও শিক্ষাপঞ্জির প্রজ্ঞাপন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ১১ ফেব্রুয়ারি রবিবার এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
ছুটির তালিক ও শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী—২০২৪ সালে দেশের তিনটি সরকারি আলিয়া মাদরাসা এবং বেসরকারি সব মাদরাসায় ৭১ দিন ছুটি থাকবে। ৭ মার্চ থেকে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত পবিত্র রমজান, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন, স্বাধীনতা দিবস, ঈদুল ফিতরসহ কয়েকটি সরকারি ছুটি মিলিয়ে টানা ৩০ দিন (সাপ্তাহিক বন্ধ বাদে) ছুটি থাকবে।
ছুটির তালিকা ও শিক্ষাপঞ্জিতে রমজান মাসজুড়ে মাদরাসা বন্ধ রাখা হলেও তাতে সংশোধনী আসছে কি না, এ বিষয়ে জানতে চাইলে কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন খান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এ নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানতে পারিনি। মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি স্পষ্ট করা হবে।’
এর আগে প্রাথমিক, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজে বছরের শুরুতে রমজানে ৩০ দিন ছুটি রেখে বাৎসরিক ছুটির তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল। গত ৮ ফেব্রুয়ারি ছুটির তালিকায় সংশোধনী এনে মাধ্যমিক বিদ্যালয় রমজানেও ১৫ দিন খোলা রাখার সিদ্ধান্ত জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় জানায়, নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন ও শিখন ঘাটতি পূরণে পবিত্র রমজান মাসের ১৫ দিন স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এরপর একই পথে হাঁটে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ও। তবে প্রাথমিক বিদ্যালয় রোজার প্রথম ১০ দিন খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অন্যদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে কলেজগুলোও ১০-২৪ মার্চ পর্যন্ত খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়।