চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ উদযাপন করা হয়েছে।
১৪ এপ্রিল রবিবার সকালে বৈশাখী শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে বাঙালির নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার আনুষ্ঠানিকতা শুর হয়। নাসিরনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হওয়া শোভাযাত্রায় উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ এবং জনপ্রতিনিধি গণ অংশ নেন।
শোভাযাত্রা শেষে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীদের পরিবেশনায় পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইমরানুল হক ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া ১ (নাসিরনগর) সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং সরকারি হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান সুখন।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠান শেষে অতিথিরা বর্ষবরণ উপলক্ষে ঐকতান সংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্র আয়োজিত ভর্তা উৎসবে অংশ নেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
বিশেষ প্রতিনিধি ॥ নাসিরনগর উপজেলা সদরে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ফিল্ড অফিসার হিসেবে চাকরি করেন। জেলা শহরের মধ্যপাড়ায় বসবাস করেন পরিবার নিয়ে। গত ৫ বছর ধরে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে নিজের মোটর সাইকেল দিয়ে কর্মস্থলে আসা-যাওয়া করেন। কিন্তু এখনো নিজের ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে পারেননি তিনি। গত তিন বছর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) অফিসে কাগজপত্রসহ ফি জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু অফিস থেকে নানা জটিলতা দেখিয়ে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে মোটর সাইকেল নিয়ে চলার পথে অসংখ্যবার জরিমানা দিতে হয়েছে তাকে।
সরেজমিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিআরটিএ অফিসে গিয়ে শরিফ উদ্দিনের মতো আরো বেশ কয়েকজনকে নানা সমস্যা নিয়ে আশপাশে পায়চারি করতে দেখা যায়। কথা হয় তৌফিক আহমেদ নামের এক ভুক্তভোগীর।
তিনি বলেন, আমি একটি বেসরকারি সংস্থায় (আশা) লোন অফিসার হিসেবে নবীনগর উপজেলায় কর্মরত। ২০২০ সালে মোটর সাইকেলের ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করি। সব প্রক্রিয়া শেষ করার পর ভাইভাতে আমার কাছে জানতে চাওয়া হয়, আমি কার লোক বা কারও মাধ্যমে লাইসেন্স করতে এসেছি কি না? আমি না সূচক উত্তর দেওয়ায় আমাকে বের করে দেওয়া হয়। পরে সরকারি লাইসেন্স ফি আড়াই হাজার টাকার স্থলে বিআরটিএ’র স্টাফ আবু বক্করের সঙ্গে নয় হাজার টাকায় চুক্তি করি। তারপরও গত তিন বছর ধরে ঘুরতে হচ্ছে। আজ আমাকে আবার নতুন করে আবেদন করতে বলা হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সার্কেল অফিস দালালদের জন্য উন্মুক্ত। এখানে চিহ্নিত কয়েকজন দালালের আধিপত্য রয়েছে। এর মধ্যে আজাদ, শাহ আলম, মোস্তাকিম, আবুল, মেড্ডার খোকন, শরীফ, কসবার শাহ আলম, সামীর ও আহসানের নাম উল্লেখযোগ্য। তারা অফিসের ফটকের সামনেই বেঞ্চ পেতে বসে থাকেন। অফিসের মূল স্টাফদের সঙ্গে তাদের সখ্যতা রয়েছে। সরকারি বিভিন্ন কর্মসূচিতেও কর্মকর্তাদের সঙ্গে তারা উপস্থিত থাকেন। এছাড়া মফিজ ও আবু বক্কর নামে দুজন নিজেদের স্টাফ পরিচয় দিয়ে কাজ করেন। অথচ তাদের কোনো নিয়োগপত্র নেই। তারা দালালদের সহায়কের ভূমিকায় কাজ করেন।
কাছে আবু বক্কর নিজেকে এই অফিসের সিল মেকানিক হিসেবে দাবি করেন। এছাড়া কোনো দালালের সঙ্গেও তার কোনো সম্পর্ক নেই বলেও জানান।
জানা যায়, নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করার পর প্রাথমিক অবস্থায় লার্নার লাইসেন্স প্রদান করা হয়। পরে ধাপে ধাপে প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা, ভাইভা ও ফিঙ্গার প্রিন্ট নেওয়া হয়। কিন্তু দালাল ছাড়া এই প্রক্রিয়া করা প্রায় অসম্ভব। পদে পদে বিভিন্ন অজুহাতে অফিস থেকে লাইসেন্স আবেদনকারীকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পরে বাধ্য হয়ে দালালের দারস্থ হতে হয় আবেদনকারীদের। তারা লাইসেন্সপ্রতি ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা নিয়ে থাকেন। এর মধ্যে ডোপ টেস্ট থেকে শুরু করে ভাইভা, ফিঙ্গার প্রিন্ট সবকিছু দালালরাই ম্যানেজ করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিআরটিএ’র তথ্য অনুযায়ী, জেলায় ১৫ হাজার থেকে ১৮ হাজার সিএনজিচালিত অটোরিক্সা চলাচল করছে। এর মধ্যে মাত্র পাঁচ হাজার ২৫০টি সিএনজিচালিত অটোরিক্সার লাইসেন্স আছে।
বিজয়নগর উপজেলার কালাছড়া গ্রামের সিএনজি চালিত অটোরিক্সা চালক রোমান মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ২০১৮ সালে ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে এক দালালকে ১২ হাজার টাকা দেন। কয়েক দিন ঘোরানোর পর তাকে আর পাওয়া যায়নি। পরে কসবার কামালপুরের দালাল শাহ আলমের সঙ্গে ১৮ হাজার টাকায় চুক্তি করি। এরপরও প্রায় তিন বছর কেটে গেল। লাইসেন্স পাওয়া হলো না।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিআরটিএ অফিসের সহকারী পরিচালক আশরাফ উদ্দিন সিদ্দিক বলেন, আমি এই কার্যালয়ে সম্প্রতি যোগ দিয়েছি। অভিযোগের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হবে। প্রয়োজনে দালালদের ধরে পুলিশে সোপর্দ করা হবে।
নিজেকে সিল মেকানিক হিসেবে দাবি করা আবু বক্করের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার তো সরকারি কোনো নিয়োগ নেই। দীর্ঘদিন ধরে তিনি এভাবে এখানে কাজ করছেন বলে জানতে পেরেছি।
নাসিরনগর প্রতিনিধি :
নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের বিশেষ কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ২৮ জানুয়ারি শনিবার সকালে স্থানীয় ডাকবাংলো মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত কর্মী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সংসদ সদস্য বি.এম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম।
উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মো. রায়হান আলী ভূইয়ার সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক ভানু চন্দ্র দেবের পরিচালনায় কর্মী সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান ডা. রাফিউদ্দিন আহমেদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অসিম কুমার পাল, সাধারণ সম্পাদক লতিফ হোসেন, জেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট শাহানুর ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি জিতু মিয়া, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ লিয়াকত আব্বাস টিপু। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা যুবলীগ নেতা আল কাউছার।
কর্মী সভায় উপজেলা যুবলীগের সম্মেলন করার লক্ষ্যে উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন যুবলীগের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। কর্মী সভায় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগরে চিতনা থেকে রসুলপুর পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কে আটটি বৈদ্যুতিক খুঁটি রেখেই চলছে উন্নয়ন কাজ। এতে ওই সড়ক দিয়ে যান চলাচলের সময় ঘটছে দুর্ঘটনা।
এ অবস্থায় বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো দ্রুত সরিয়ে ফেলার দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কাজটি তদারক করছে উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ।
নাসিরনগর উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, প্রায় সাড়ে আট কোটি টাকা ব্যয়ে দুই মাস আগে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকে রাস্তার নির্মাণ কাজ শুরু হয়। গুনিয়াউক ইউনিয়নের চিতনা গ্রাম থেকে ফান্দাউক ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রাম পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। কাজটি পায় হাসান এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এর আগে রাস্তা ছোট ছিল। তখন রাস্তার এক পাশে ছিল বৈদ্যুতিক খুঁটি। এখন যেহেতু রাস্তা প্রশস্ত করা হয়েছে তাই কিছু খুঁটি ভেতরে পড়েছে। নির্মাণ সম্পন্ন করার আগে খুঁটি সরানো হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রকৌশলী।
গত মঙ্গলবার ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, চিতনা থেকে রসুলপুর পর্যন্ত রাস্তার মাটি ভরাটের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এই রাস্তার কাজ শুরু হয়েছে চিতনা ও চাপরতলা গ্রামের সংযোগকারী একটি সেতুর গোড়া থেকে। সেতু থেকে নামতেই রাস্তার মাঝ অংশে দাঁড়িয়ে রয়েছে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটি। কিছু দূর যেতেই রাস্তার মাঝ অংশে আরো কয়েকটি খুঁটি দেখা যায়। বৈদ্যুতিক খুঁটি থাকায় রাস্তার ওই অংশ দিয়ে পথচারী ও যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। স্থানীয় বাসিন্দারা খুঁটিগুলো সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানালেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
চিতনা গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা খায়রুল ইসলাম বলেন, রাস্তার মধ্যে ৭-৮টা খুঁটি রেখেই নির্মাণকাজ চলছে। গত দুই-তিন দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। রাস্তায় মাটির কাজ চলায় কাদা হয়ে গেছে। এই কর্দমাক্ত রাস্তায় বিদ্যুতের খুঁটি থাকায় খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। বারবার বলার পরও খুঁটিগুলো সরানো হচ্ছে না।
অপর বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘রাস্তার মইধ্যে বিদ্যুতের খুডি (খুঁটি) রাইখা কীভাবে রাস্তার কাজ করে আমার বুঝে আসে না।’
গুনিয়াউক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জিতু মিয়া জানান, রাস্তার মাঝ অংশে বেশকিছু পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি রেখে নির্মাণকাজ চলছে। এটা বিদ্যুৎ অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন এবং দ্রুত খুঁটি সরিয়ে জনদুর্ভোগ কমাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করব।
এ বিষয়ে নাসিরনগর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জোনাল ম্যানেজার তৌহিদ উল্লাহ খান বলেন, চিতনা থেকে রসুলপুর পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ হচ্ছে এমন কোনো তথ্য তাঁদের জানা নেই। রাস্তা নির্মাণকারী কোনো সংস্থা তাঁদের এ বিষয়ে কিছু জানায়নি। পল্লী বিদ্যুতের প্রধান কার্যালয়ে কোনো পক্ষ যোগাযোগ করেছে কিনা তাঁর জানা নেই। তবে রাস্তা নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানকে নিজ খরচে বিদ্যুতের খুঁটি সরাতে হবে।
নাসিরনগর উপজেলা প্রকৌশলী রবিউল হোসাইন বলেন, রাস্তার মাটির কাজ শেষ হয়েছে। পুরো কাজ শেষ হতে আরও সময় লাগবে। কাজ শেষ হওয়ার আগেই রাস্তায় যে সব বৈদ্যুতিক খুঁটি পড়বে তা সরিয়ে কার্পেটিংয়ের কাজ করা হবে।
নাসিরনগর প্রতিনিধি :
দেশ ও স্বাধীনতা বিরোধী একটি চক্র বারবার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত বলে মন্তব্য করেছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান।
তিনি বলেন, দেশ বিরোধীরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের ষড়যন্ত্র করলেও তারা সফল হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে দেশ পরিচালনা করছেন, তাতে তাদের সফল হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমার তো মনে হয়, দেশ থেকে সংখ্যালঘু শব্দটাই তুলে দেওয়া উচিত।’
আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে নাসিরনগর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ‘ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প’ এর সহযোগিতায় মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী এসব মন্তব্য করেন।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার সব ধর্মের বিকাশে বদ্ধপরিকর। এ জন্য ইসলামের পাশাপাশি অন্য ধর্মের কল্যাণেও কাজ করছে ধর্ম মন্ত্রণালয় ও সরকার। ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষা, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূলে সামাজিক সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদিচ্ছায় ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আওতায় বিশেষ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।’
মতবিনিময় সভায় উপজেলা জৈষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা শুভ্র সরকারের সঞ্চালনায় এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফকরুল ইসলামের সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য বদরুদ্দোজা মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রাফি উদ্দিন আহমেদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক আশেকুর রহমান, জেলা সদর ও সরাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হক রেজা, নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুল্লাহ সরকার প্রমুখ।
এর আগে, নাসিরনগর উপজেলা মডেল মসজিদের নির্মাণকাজ পরিদর্শন করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী। কাজের ধীরগতি কারণে তিনি ঠিকাদারকে সর্তক করেন। এ সময় ঠিকাদারকে তিন মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশ দেন তিনি। তা না হলে বরাদ্দ আটকে দেওয়া হবে বলে জানান ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগরে উপজেলার প্রথম স্মার্ট বিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু করলো ফান্দাউক পন্ডিতরাম উচ্চ বিদ্যালয়। এর ফলে বিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম ডিজিটাল পদ্ধতিতে করা হচ্ছে। ২০ সেপ্টেম্বর বুধবার সকালে উপজেলার ফান্দাউক ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী ও শতবর্ষী এ বিদ্যালয়ে ডিজিটাল কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফখরুল ইসলাম।
এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম ভূঁইয়া, ফান্দাউক পন্ডিতরাম উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি সৈয়দ সাইফ উদ্দীন আহম্মদ শিবলী, প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান শেখসহ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ফান্দাউক ইউনিয়নে এ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯১৯ সালে। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ৯৬৬জন ছাত্রছাত্রী এবং ২১জন শিক্ষক কর্মচারী রয়েছে। স্মার্ট কার্যক্রম শুরু হওয়ায় এখন থেকে এ বিদ্যালয়ে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরা, অনলাইনে বেতন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে ক্লাস শুরু করেছে ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। ফলে আইডি কার্ড পাঞ্চ করে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়টিতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে কার্যক্রম শুরু হওয়ায় বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক ও কর্মচারীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস ও প্রাণবন্ত পরিবেশ লক্ষ্য করা গেছে। বেড়েছে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার। এ কার্যক্রম চালু হওয়ায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় আগ্রহ ও সচেতনতা বাড়বে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও স্থানীয় লোকজন।
বিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, পরীক্ষার আগে পরীক্ষা ফি গ্রহণ করলেই মোবাইল মেসেজের মাধ্যমে অভিভাবকরা নিশ্চিত হতে পারবে। জানতে পারবে তাদের সন্তানেরা স্কুলে কখন যাচ্ছে, কখন স্কুল থেকে বের হচ্ছে। একই সঙ্গে শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের সময় মতো উপস্থিতির মূল্যায়ন রিপোর্ট, পরীক্ষার সিট প্ল্যান, পরীক্ষার ফলাফল, বেতন ফি জমা দেওয়ার ভোগান্তি কাটিয়ে প্রযুক্তির মাধ্যমে এখন সব কিছুই সহজে করা যাবে। অন্যদিকে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ক্লাবসহ স্মার্ট বিদ্যালয়ের সব সুবিধাই এখন থেকে এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পাবে।
অভিভাবক জয়ন্ত দেব বলেন, বিদ্যালয়ে ডিজিটাল কার্যক্রম চালু হওয়ায় আমরা খুবই খুশি। বিদ্যালয়ের সবকিছুই এখন ঘরে বসে সহজেই জানতে পারবো।
সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী শায়ন্তী রায় জানান, আমরা খুবই খুশি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশকে ডিজিটাল করার যে স্বপ্ন দেখছে। আমরাই হবো স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরির অন্যতম হাতিয়ার।
ফান্দাউক পন্ডিতরাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান শেখ বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মাননীয় সাংসদ বি.এম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম এমপি মহোদয়ের সার্বিক পরামর্শে এ বিদ্যালয়টিকে স্মার্ট বিদ্যালয়ে রুপান্তর করা সম্ভব হয়েছে। আশা করি এর ফলে বিদ্যালয়ের উপস্থিতির হার অনেকাংশেই বাড়বে।
বিদ্যালয়ের সভাপতি সৈয়দ সাইফ উদ্দীন আহম্মদ শিবলী বলেন, আমি দায়িত্ব গ্রহণের পরই থেকেই প্রতিষ্ঠানটিতে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছি। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি স্মার্ট বিদ্যালয়ে রুপান্তরিত হয়েছে। আশা করি শীঘ্রই বিদ্যালয়টি উপজেলায় একটি মডেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। এজন্য মাননীয় সংসদ সদস্য বদরুদ্দোজা মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম এমপি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ফান্দাউক পন্ডিতরাম উচ্চ বিদ্যালয়কে আমরা স্মার্ট বিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণা করেছি। আশা করছি পর্যায়ক্রমে উপজেলার সবগুলো প্রতিষ্ঠানকে স্মার্ট বিদ্যালয়ে পরিণত করতে পারবো।