চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত হয়েছে।
আজ ২০ এপ্রিল শনিবার দুপুরে উপজেলার ধরন্তী ও পাকশিমুল ইউনিয়নে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলার আতাউর রহমানের ছেলে সুলতান (২৩) ও সরাইলের পাকশিমুল ইউনিয়নের লোপাড়া গ্রামের আক্তার মিয়ার ছেলে মো. মিস্টার মিয়া (১৪)।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, দুপুরে নাসিরনগর থেকে পাঁচজন যাত্রী নিয়ে একটি সিএনজি অটোরিকশা বিশ্বরোড যাচ্ছিল। পথিমধ্যে নাসিরনগর-সরাইল আঞ্চলিক সড়কের ধরন্তী এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা ট্রাক্টরের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই অটোরিকশার যাত্রী সুলতান নিহত হন এবং অপর যাত্রীরা আহত হয়। তারা সবাই জেলার আশুগঞ্জে একটি হোটেলে কাজে যোগ দেওয়ার জন্য যাচ্ছিলেন।
এদিকে পাকশিমুল ইউনিয়নের ভূইশ্বর চান্দের হাটি এলাকায় ট্রাক্টর চাপায় পিষ্ট হয়ে মিস্টার মিয়ার নামে এক কিশোর নিহত হয়। তবে কিভাবে এ ঘটনা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমরানুল ইসলাম জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ট্রাক্টরগুলো আটক করা হয়েছে। তবে চালক পালিয়ে গেছে। এসব ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে দাঙ্গা-ফ্যাসাদরোধে বিভিন্ন ধরনের ৯৯টি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ।১৫ জুন বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে তল্লাশী চালিয়ে বিপুল পরিমান এই দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারকৃত দেশীয় অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ১২টি পল, ৮টি চল, ৪টি বর্শা, ৩৪টি বাঁশের কঞ্চি (মাথা সুচালো) ও ৪১টি লাঠি।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসলাম হোসেন বলেন, উপজেলায় মাঝে মধ্যে ছোট-খাটো ঝগড়া হয়। অনেক সময় সামান্য মারামারির ঘটনা দাঙ্গায় রূপ নেয়।
দাঙ্গা-ফ্যাসাদে কোন মানুষ যাতে হতাহত না হয়, উপজেলার আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি যাতে ভালো থাকে সেজন্য পুলিশ সুপার মোঃ শাখাওয়াত হোসেনের নির্দেশে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন ধরনের ৯৯ টি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। জনস্বার্থে পুলিশের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
গত ৫ নভেম্বর রবিবার অনুষ্ঠিত হওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচনের ফলাফল গেজেট স্থগিত করে নির্বাচনের অনিয়ম খতিয়ে দেখতে জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের গঠন করা দুটি তদন্ত কমিটির উপর অনাস্থা দিয়েছেন নির্বাচনে কলার ছড়ি প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা স্বতন্ত্র প্রার্থী ও এই আসনের দুইবারের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাড: জিয়াউল হক মৃধা।
গতকাল বুধবার তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর লিখিতভাবে অভিযোগ দিয়ে তদন্ত কমিটির উপর অনাস্থা জ্ঞাপন করেন। অ্যাড: জিয়াউল হক মৃধা নির্বাচন নিয়ে অনিয়মের বিচার বিভাগীয় কিংবা নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের বাদ দিয়ে তদন্ত করার দাবি জানান।
এদিকে কয়েকটি ভোট কেন্দ্রের বিষয়ে অনিয়ম নিয়ে উঠা অভিযোগের তদন্ত দ্বিতীয় দিনের মতো আজ ৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবারও অব্যাহত ছিলো।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। গত দুইদিনে তদন্ত কমিটি কমপক্ষে সংশ্লিষ্ট দুইশত জনের সাথে কথা বলেছেন।
জেলা প্রশাসনের তদন্তকারি কর্মকর্তা হলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ রুহুল আমিন আর জেলা পুলিশের কর্মকর্তা হলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) মোঃ জয়নাল আবেদীন। গতকাল বুধবার তদন্ত কমিটি আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদে সংশ্লিষ্টদেরকে ডেকে কথা বলেন।
আজ বৃহস্পতিবার তদন্ত কমিটি অভিযোগ উঠা কয়েকটি কেন্দ্রে গিয়ে ভোটারসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলেন। তদন্ত কমিটির লোকজন ওইসব জায়গায় যাওয়ার আগেই ওইসব কেন্দ্রের সামনে আওয়ামীলীগের স্থানীয় নেতারা উপস্থিত হন। এ সময় কাউকেই অনিয়মের কথা বলতে শুনা যায়নি।
এদিকে, আশুগঞ্জের একটি ভোট কেন্দ্রের অনিয়ম নিয়ে দুই মিনিট ২৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায় একাধিক সহকারি প্রিসাইডিং অফিসার (নারী) ব্যালট পেপারে স্বাক্ষর করে তুলে দিচ্ছেন তাদের সামনে জটলা বেঁধে থাকা যুবকদের হাতে। যুবকরাও ওই কর্মকর্তার সামনেই সিল মারছেন।
এদিকে জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুহুল আমিন তদন্ত কার্যক্রম বিষয়ে বুধবার বিকেলে একজন সাংবাদিকের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, পত্রিকায় প্রকাশিত ভেতরের ক্লোজ ছবিতে কারা রয়েছেন তা স্পষ্ট না হওয়ায় এবং অন্য তিনটি কেন্দ্রের অনিয়মের কোনো ছবি না থাকায় পত্রিকার বক্তব্য পড়ে নির্বাচনের অনিয়মের পূর্ণাঙ্গ চিত্র সম্পর্কে ধারণা করা যাচ্ছেনা। চিঠিতে তিনি আশুগঞ্জ উপজেলার যাত্রাপুর হাফেজিয়া নূরানীয়া মাদ্রাসা ভোট কেন্দ্রের সম্পূর্ণ চিত্র ও অন্য তিনটি কেন্দ্রের কোনো ডকুমেন্টরি ভিডিওচিত্র অথবা স্থিরচিত্র থাকলে তা সঙ্গে নিয়ে বৃহস্পতিবার আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানান। চিঠির প্রেক্ষিতে ওই গণমাধ্যমকর্মী মোবাইল ফোনের মাধ্যমে একাধিক ভিডিও ও স্থিরচিত্র সরবরাহ করেন।
গত ৫ নভেম্বর উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শাহজাহান আলম ৬৬ হাজার ৩১৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি স্বতন্ত্র প্রার্থী জাতীয় পার্টির সাবেক এম.পি জিয়াউল হক মৃধা কলারছড়ি প্রতীকে পান ৩৭ হাজার ৫৫৭ ভোট। তবে আশুগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে অনিয়মের অভিযোগ উঠে। এরই প্রেক্ষিতে নির্বাচনের ফলাফলের গেজেট স্থগিত করে অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেয় নির্বাচন কমিশন।
তবে, কমিশনের তদন্তে নিজের আস্থা নেই বলে জানিয়েছেন জিয়াউল হক মৃধা।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর দেওয়া অভিযোগ ও সাংবাদিকদের কাছে তিনি উল্লেখ করেন, বেশ কিছু কেন্দ্রে ভোট ছাপা হয়েছে। আশুগঞ্জের শরীফপুর কেন্দ্রের ভোট ছাপার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তাৎক্ষণিক ভাবে নানা অনিয়ম বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে অভিযোগ করলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি। তাই যারা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে ব্যর্থ হয়েছে তাদেরকে দিয়ে তদন্ত করলে কোনো লাভ হবেনা। শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করা হলে প্রয়োজনে তিনি উচ্চ আদালতের শরনাপন্ন হবেন বলে সংবাদিকদেরকে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে তদন্তকারি কর্মকর্তা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ রুহুল আমিন মুখ খুলতে রাজি নন। তবে তিনি জানান, তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ি তদন্ত কার্যক্রম শেষ করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই রিপোর্ট জমা দিবেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে মোঃ সাঈম (২০) নামে এক মাদকসেবী ও স্বপন আলী (৩৫) নামে এক মাদক পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপজেলা সদরের সরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সরাইলের সাফকো সিএনজি পাম্পের সামনে থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত মোঃ সাঈম সরাইল উপজেলার চানমনিপাড়ার কবির হোসেনের ছেলে এবং গ্রেফতারকৃত স্বপন আলী শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ি উপজেলার বাঁশকান্দি গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসলাম হোসেন জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে সরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে বসে মাদক সেবনকালে মোঃ সাঈমকে গ্রেফতার করা হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মুহাম্মদ সারোয়ার উদ্দিন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তাকে ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন।
অপর দিকে খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকুল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের উপজেলার সাফকো সিএনজি পাম্পের সামনে থেকে স্বপন আলীকে গ্রেফতার করা হয়।
সে সেখানে ঢাকা যাওয়ার জন্য বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলো। পরে স্বপনকে তল্লাশী করে তার পেটের মধ্যে স্কচটেপ দিয়ে কৌশলে রাখা ২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনে মামলা দায়ের করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ এবং লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের উপনির্বাচন উপলক্ষে ভোটগ্রহণের দিন এবং তার আগে ও পরে নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান জানিয়েছেন, এরই মধ্যে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ৫ নভেম্বর জাতীয় সংসদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ এবং ২৭৬ লক্ষ্মীপুর-৩ শূন্য আসনে নির্বাচন হবে। এ ধরনের নির্বাচনে ভোটগ্রহণের দিন এবং তার আগে ও পরে বিশেষ কয়েকটি নৌযান যথা- লঞ্চ, স্পিড বোট, ইঞ্জিনচালিত যে কোনো ধরনের নৌযান চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। একইভাবে ৪ নভেম্বর রাত ১২টা থেকে ৫ নভেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত এসব নৌযান চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তবে ইঞ্জিনচালিত ক্ষুদ্র নৌযান এবং ভোটারদের চলাচলের জন্য ব্যবহৃত ক্ষুদ্র নৌযান এ নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে। এছাড়া রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি সাপেক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, তাদের নির্বাচনী এজেন্ট, দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের (পরিচয়পত্র থাকতে হবে) ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা শিথিলযোগ্য।
সেই সঙ্গে নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত দেশি-বিদেশি সাংবাদিক (পরিচয়পত্র থাকতে হবে), নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, নির্বাচনের বৈধ পরিদর্শক এবং কতিপয় জরুরি কাজ যেমন- অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ডাক, টেলিযোগাযোগ ইত্যাদি কার্যক্রমে ব্যবহারের জন্য নৌযান চলাচলের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না।
এছাড়া প্রধান প্রধান নৌপথে বন্দর ও জরুরি পণ্য সরবরাহসহ অন্যান্য জরুরি প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিষেধাজ্ঞা শিথিলের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন। সেই সঙ্গে ভোটার ও জনসাধারণের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম হিসেবে সব নৌযান চলাচলের ক্ষেত্রে ও দূর পাল্লার নৌযান চলাচলের ক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না।
এ অবস্থায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার লক্ষ্যে জেলা প্রশাসক, সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্তৃপক্ষকে ক্ষমতা প্রদানের জন্য নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।