চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবায় ১২ বছরের শিশু সুমাইয়াকে হত্যার ঘটনায় তার সৎ মা শারমীন আক্তারকে (৩৬) যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাসের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়।
গতকাল বুধবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার এই দন্ডাদেশ প্রদান করেন। দন্ডপ্রাপ্ত শারমীন আক্তার উপজেলার মেহারী ইউনিয়নের মেহারী গ্রামের শামীম মিয়ার স্ত্রী। রায়ের সময় শারমীন আক্তার আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালতে মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মেহারি গ্রামের শামীম মিয়ার প্রথম স্ত্রী দুই ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান ফেলে রেখে বিদেশে চলে যান। তিন সন্তানের কথা চিন্তা করে শামীম মিয়া আরেকটি বিয়ে করেন। বড় দুই ছেলেকে ঢাকায় নিয়ে যান শামীম মিয়া। অন্যদিকে সুমাইয়া তার সৎ মায়ের সাথেই থাকতো।
গত বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে নিজ ঘরে শিশু সুমাইয়ার লাশ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে শামীম মিয়ার দুই ছেলেকে নিয়ে ঢাকা থেকে বাড়িতে আসেন। তারা সুমাইয়ার গলায় কালো চিহ্ন দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। এই ঘটনায় সৎ মা শারমীন আক্তারকে প্রধান আসামী করে অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন শামীম মিয়ার ছেলে আরমিন ভূইয়া।
এই মামলায় শারমীন আক্তারকে গ্রেপ্তার করে আদালতে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। আদালতের আদেশে দুই দিনের রিমান্ডে আনা হলে শারমীন হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেন। পরে শ্বাসরোধে হত্যার কথা উল্লেখ করে আদালতে তিনি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
জবানবন্দিতে জানায়, সুমাইয়াকে পড়তে এবং রাতে খাবার খেতে বলায় এ নিয়ে তর্কবিতর্ক হয়। এরই জেরে ক্ষোভে দুই হাত দিয়ে চেপে সুমাইয়াকে হত্যা করে শারমীন। এই মামলায় শারমীনকে অভিযুক্ত করে তদন্তকারি কর্মকর্তা কসবা থানার উপ-পরিদর্শক লিয়াকত আলী আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহবুবুল আলম খোকন জানান, রায় প্রদানকালে কারাদন্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাকে আদালতের আদেশে জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
আসামী গ্রেফতারের পর হাজতবাসকালীন সময়টুকু কারাদন্ডের সময় থেকে বাদ দেয়া হবে বলে আদালত আদেশ দিয়েছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ভোটারদের কাছে ক্ষমা চেয়ে কাঁদলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। আজ ২৯ নভেম্বর বুধবার দুপুরে নিজ নির্বাচনী এলাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের নয়নপুর গ্রামে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় আবেগে কেঁদে ফেলেন তিনি।
এ সময় আইনমন্ত্রী বলেন, বয়সে ছোটদের অভিভাবক হিসেবে কাজ করেছি। আমি অনেক ভুলত্রুটি করতে পারি। কিন্তু সন্তানকে আপনারা যেভাবে মাফ করে দেন আমাকেও আপনারা মাফ করে দিয়েন। আপনাদের জন্য যদি কিছু করে থাকি আল্লাহর কাছে আমার জন্য দোয়া চাইবেন। আর বেশি কিছু বলবো না। আমি ফিরে আসবো ১৮ তারিখ, যখন নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হবে। তখন আপনাদের সাথে কথা বলব।
এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান রাশেদুল কায়সার ভূঁইয়া জীবন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও মেয়র এম.জে হাক্কানী, জেলা পরিষদের সদস্য ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এম.এ. আজিজ, বায়েক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. বিল্লাল হোসেনসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। আগামীকাল ৩০ নভেম্বর বৃহস্পতিবার এই নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। ফলে মনোনয়পত্র জমা দিতে বুধবার আইনমন্ত্রী ঢাকা থেকে নিজ নির্বাচনী এলাকায় আসেন। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর এই প্রথম আইনমন্ত্রী নিজ এলাকায় এলেন।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর। বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ও শুনানি ৬-১৫ ডিসেম্বর। ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনী প্রচারণা চলবে ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি।
চলারপথে রিপোর্ট :
সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৮ বাংলাদেশির একজন কসবার মো. রুক্কু মিয়া। ৭ লাখ টাকা ধার দেনা করে ২৭ মার্চ সোমবার সকালে সৌদি আরব গিয়েছিলেন তিনি। আর বিকেলে ওমরাহ করতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি।
নিহত রুক্কু মিয়া ওরফে মো. রূপ মিয়া কসবা উপজেলার কাইয়ুমপুর ইউপির ওমরপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার মৃত্যুর খবরে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন স্বজনরা। পরিবারের একটাই দাবি, প্রিয়জনের লাশ যেন দেশের মাটিতে ফিরিয়ে আনা হয়।
পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জীবিকার তাগিদে ধার-দেনা করে সোমবার সকালে সৌদি আরবের উদ্দেশে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন। সেখানে পৌঁছে বিকেলে ওমরাহ করার উদ্দেশে মক্কা যাওয়ার পথে আসির প্রদেশের আভা জেলায় স্থানীয় সময় বিকেল ৪টার দিকে তাকে বহনকারী বাসটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এতে রুক্কু মিয়াসহ ১৮ বাংলাদেশি প্রাণ হারান। মঙ্গলবার ভোরে সেখানকার এক স্বজনের মাধ্যমে তার মৃত্যুর খবর পায় পরিবার। এরপর থেকে কান্না থামছে না কারোর।
নিহতের স্ত্রী মাসুমা আক্তার জানায়, ৭ লাখ টাকা ধার-দেনা করে পরিবারের স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য সৌদি আরব গিয়েছিলেন। যাওয়ার আগে তিনি বলেছিলেন, কাজে যোগ দেওয়ার আগেই ওমরাহ করবেন। কিন্তু যাওয়ার পরের দিনই তার মৃত্যুর সংবাদ পাই।
স্বজনদের একটাই দাবি প্রিয়জনের লাশটি যেন দেশের মাটিতে ফিরিয়ে আনা হয়। এ ব্যাপারে পরিবারের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাহায্য সহযোগিতা চেয়েছেন।
নিহত রুক্কু মিয়ার স্ত্রীসহ দুই ছেলে এক মেয়ে রয়েছে। বড় ছেলে সাইফুল ইসলাম (১৭) এলাকায় অটোরিক্সা চালায়। দ্বিতীয় ছেলে হৃদয় ৮ম শ্রেণিতে পড়ে। মেয়ে শিউলী আক্তার বিবাহিত।
চলারপথে রিপোর্ট :
কসবায় ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে জশনে জুলুসে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে সোমবার কয়েক ঘণ্টাব্যাপী হওয়া দু’দল মুসল্লির সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা পৌর এলাকার কদমতলী মোড়সহ আশেপাশের এলকায় এ সংঘর্ষ হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সকালে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে একটি জশনে জুলুস পৌর এলাকায় প্রবেশ করে। এ সময় মুসল্লিদের আরেকটি পক্ষ এতে এতে বাধা দেয়। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়ায়। কয়েক ঘন্টা যাবত তাদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।
পুলিশ সুপার জাবেদুর রহমান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরবর্তী বিশৃঙ্খলা এড়াতে সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবায় বেশি দামে মাছ ও ফল বিক্রি করার অপরাধে ৪ দোকানিকে ১১ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
আজ ২১মার্চ বৃহস্পতিবার দুপুরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সহকারি পরিচালক মোঃ মেহেদী হাসান কসবা পুরাতন বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন।
এ ব্যাপারে অভিযান পরিচালনাকারী, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সহকারি পরিচালক মোঃ মেহেদী হাসান জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে কসবা পুরাতন বাজারে অভিযান চালিয়ে বেশী দামে ফল ও মাংস বিক্রির দায়ে এক তরমুজের আড়তদারকে ৩ হাজার, দোকানে সঠিক মূল্য তালিকা না থাকায় দুই ফল ব্যবসায়ীকে ৩ হাজার টাকা করে ৬ হাজার টাকা এবং এক মাংস ব্যবসায়ীকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানার পাশাপাশি তাদের সর্তকও করা হয়।
তিনি বলেন, ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সতর্কতামূলক ব্যবস্থার অংশ হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া ও কসবা উপজেলায় আজ ২০ মে সোমবার বিকেলে মোটরসাইকেল আটকে অভিযান চালায় পুলিশ।
এ সময় শতাধিক মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
আচরণবিধি অনুসারে, ১৯ মে রাত ১২টা থেকে ২২ মে রাত ১২টা নাগাদ ভোটের এলাকায় মোটর সাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
পুলিশ জানায়, সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কসবা পৌর এলাকার তেতৈয়া মোড়ে চেকপোস্ট বসানো হয়।
এরপর আখাউড়া পৌর এলাকার মায়াবী সিনেমা হল মোড় ও বাইপাস এলাকায় চেকপোস্ট বসানো হয়।
এ সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. বিল্লাল হোসেনসহ পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অভিযান সম্পর্কে পুলিশ সুপার জানান, অবৈধ মোটরসাইকেল এবং নির্বাচন কমিশনের স্টিকার ছাড়া মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া আছে। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যাদের বৈধ কাগজপত্র আছে তারা নির্বাচনের পর মোটরসাইকেল নিয়ে যেতে পারবেন।