চলারপথে রিপোর্ট :
দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকে অব্যাহত তীব্র তাপদাহে প্রাণী ও পরিবেশ ক্রমশ: উত্যপ্ত হয়ে উঠছে। যেখানে একটু ছায়ার জন্য হন্যে হয়ে ছুটছে মানুষ, সেখানে শুধু মাত্র পেটের দায়ে এক শ্রেণীর শ্রমজীবী মানুষ তীব্র রোদে পুড়ে শ্রম বিক্রি করছে।
জানা যায়, জেলার নাসিরনগর, সরাইলসহ বিভিন্ন এলাকায় চলতি মৌসুমের পাকা ধান কাটা শুরু হয়েছে। এসব ধান কেটে বাড়ি নিয়ে আসার জন্য বিপুল পরিমান শ্রমিকের প্রয়োজন। মাথা পিছু দাম দর যাই থাকুক না কেন পাকা ধান ঘরে আনতে হবে তাই শ্রমিক প্রয়োজন। এদিকে বাধ্য হয়ে প্রচন্ড গরম উপেক্ষা করে মাঠ থেকে ধান কেটে বাড়িয়ে নিয়ে আসছেন শ্রমিকরা বিনিময়ে পাচ্ছেন কিছু টাকা। কিন্তু এই গরমে তাদেরও রয়েছে প্রাণনাশের ঝুঁকি।
অপরদিকে জেলা শহরের আশেপাশের বিভিন্ন জায়গায় ভবন নির্মাণ অব্যাহত রয়েছে। এ সমস্ত নির্মাণ শিল্পে কাজ করছেন বিপুল সংখ্যক নারী পুরুষ। চলমান তাপদাহের প্রচন্ড গরম তাদের কাছে যেন কিছুই না। অথচ জীবিকার প্রয়োজনে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে তারাও কাজ করছেন এই গরমে।
চলারপথে রিপোর্ট :
সম্প্রতি দুজন ডেপুটি গভর্ণর নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ডেপুটি গভর্ণর হিসেবে নিয়োগ পাওয়া ড. মো. হাবিবুর রহমান ও মো. খুরশীদ আলম- দুজনেরই বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায়। তাদের ৩ বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরইমধ্যে কর্মক্ষেত্রে যোগদান করেছেন তারা।
২৯ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের কমিউনকেশন্স অ্যান্ড পাবলিকেশন্স বিভাগের পরিচালক ও সহকারী মুখপাত্র সাঈদা খানম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তাদের যোগদানের ব্যাপারটি নিশ্চিত করা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার কৃতি সন্তান খুরশীদ আলম বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক-১ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের স্নাতকোত্তর এবং পরে এমবিএ করেন। ১৯৮৮ সালে সহকারী পরিচালক পদে বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগদান করেন তিনি। ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ, ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ, কৃষিঋণ বিভাগ, পেমেন্ট সিস্টেমস ডিপার্টমেন্ট, ডিপার্টমেন্ট অব কারেন্সি ম্যানেজমেন্ট, ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন, এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস ডিপার্টমেন্ট, সচিব বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন খুরশীদ আলম। ব্যক্তিগত জীবনে দুই ছেলে-মেয়ের বাবা তিনি।
এছাড়া ডেপুটি গভর্ণর হিসেবে নিয়োগ পাওয়া ড. মো. হাবিবুর রহমানও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সন্তান। জেলার বিজয়নগর উপজেলায় অবস্থিত খিরাতলায় তার গ্রামের বাড়ি। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) থেকে অর্থনীতিতে প্রথম শ্রেণিতে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন ড. হাবিবুর রহমান।
হাবিবুর রহমান বাংলাদেশ ব্যাংকের গবেষণা বিভাগ, মনিটারি ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনিক্যাল ইউনিটে (বর্তমানে মনিটারি পলিসি বিভাগ) কাজ করেছেন। পরে তিনি বিশ্বব্যাংকের ক্যাপাসিটি বিল্ডিং প্রজেক্টের আওতায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পলিসি অ্যানালাইসিস ইউনিটে সিনিয়র রিসার্চ ইকোনমিস্ট হিসেবে নিয়োজিত হন। তিনি বাংলাদেশ ব্যাংক ট্রেনিং অ্যাকাডেমিতে উপমহাব্যবস্থাপক এবং সবশেষ গভর্ণর সচিবালয়ের পলিসি সাপোর্ট উইংয়ে মহাব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালন করেন।
ড. হাবিবুর রহমানের সহধর্মিণী ড. সায়েরা ইউনুস বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। হাবিবুর রহমান ব্যক্তিগত জীবনে এক মেয়ে এবং দুই ছেলের জনক।
বিশেষ প্রতিনিধি :
“স্মার্ট গ্রন্থাগার, স্মার্ট বাংলাদেশ” এই প্রতিপাদ্য নিয়ে সারাদেশে উদ্যাপিত হয়েছে জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস ২০২৩। এ উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন ও জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার এর যৌথ আয়োজনে এক আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ৫ ফেব্রুয়ারি রবিবার বিকেলে জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারের হলরুমে অনুষ্ঠিত এই সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ সাইফুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথিা বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ জয়নাল আবেদিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, বিশিষ্ট কবি ও গীতিকার মো. আ. কুদদূস, সাহিত্য একাডেমির সভাপতি, কবি ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষক জয়দুল হোসেন। বাচিকশিল্পী ও সাংবাদিক মোঃ মনির হোসেন এর সঞ্চালনায় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারের সহকারি পরিচালক সাইফুল ইসলাম লিমন। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, বেসরকারি গণগ্রন্থাগার জেলা কমিটির সভাপতি, কথাসাহিত্যিক আমির হোসেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ১৯৭১ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধারা তাদের জীবনের বিনিময়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছেন। এই বাংলাদেশকে আগামীতে নেতৃত্ব দিবে যে তরুণ প্রজন্ম তাদের সত্যিকারের দেশ্রপ্রেমিক ও আর্দশ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তার জন্য বই পড়া ছাড়া অন্য কোন বিকল্প নেই। তিনি বলেন, শুধুমাত্র চাকরির জন্য নয়, বই পড়তে হবে আলোকিত মানুষ হতে। এইজন্য শুধু পাঠ্যবই পড়লেই হবে না। পাঠ্য বইয়ের বাহিরে অন্যান্য বইও পড়তে হবে। বাংলাদেশকে এবং পৃথিবীকে জানতে হবে। বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য একটি চ্যালেঞ্জ নিয়েছে। সেই চ্যালেঞ্জ আমাদের জিততে হবে। আর এই চ্যালেঞ্জ জিততে হলে একটি সক্ষম জনগোষ্ঠি তথা স্মার্ট সিটিজেন গড়ে তুলতে হবে। তারজন্য শুধু ভালো রেজাল্ট করা ছাত্র-ছাত্রী নয়, আমাদের ভালো মানুষও লাগবে। এই ভালো মানুষ গড়ে তুলতে পারে কেবলমাত্র বই।
প্রধান অতিথি নিজের শিক্ষা জীবনের নানান স্মৃতিচারণ করে বলেন, আমাদের সময়ে পাঠ্যবইয়ের পাশাপশি আমরা প্রচুর আউট বই পড়েছি। জ্ঞান যতটুকু অর্জন করেছি তা এই আউট বই পড়ে। নিজের রুমকে লাইব্রেরি বানিয়ে। তিনি রাষ্টের পাশাপাশি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক উদ্যোগে গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা করে শিশু-কিশোর ও তরুণদের মাঝে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার উপর গুরুত্তারোপ করেন। তিনি পাঠাগার পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাসহ পাঠউপযোগী পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান। এসময় তিনি পাঠাগার এবং বই সংশ্লিষ্ট যে কোন কার্যক্রম পরিচালনায় সব ধরনের সহযোগীতার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সভা শেষে জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার ও জেলা শিশু একাডেমি কর্তৃক বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত কবিতা আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাহিত্য-সংস্কৃতিকর্মী মনিরুল ইসলাম শ্রাবণ। সহযোগিতায় ছিলেন জুনিয়র লাইব্রেরিয়ান মোঃ আনিছুর রহমান। অনুষ্ঠানে লেখক-সাংবাদিক-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ, বিভিন্ন গ্রন্থাগার প্রতিনিধি, বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকগণ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও এর আশপাশের এলাকার জন্য সদকাতুল ফিতর নির্ধারণকল্পে আজ ৩০ মার্চ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শীর্ষ উলামায়ে কেরাম ও মুফতিয়ানে কেরামদের এক পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয় ৷ সভায় জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া’র প্রিন্সিপাল আল্লামা মুফতি মুবারকুল্লাহ, শায়খুল হাদীস আল্লামা শায়খ সাজিদুর রহমান, মুফতি শামছুল হক মুফতি মুহসিনুল করিম সহ শীর্ষ উলামায়ে কেরামগণ উপস্থিত ছিলেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও তৎপার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য ১৪৪৪ হিজরি ২০২৩ ইং সনের ফিতরা জনপ্রতি (১০০ টাকা) নির্ধারন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুফতী মোহাম্মদ এনামুল হাসান।
স্টাফ রিপোর্টার :
আইনমন্ত্রীর সাথে বৈঠকের পর কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে আদালতে ফিরেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আন্দোলনরত আইনজীবীরা। আজ ১৫ জানুয়ারি রবিবার সকাল থেকে আইনজীবীরা তাদের কাজে যোগ দিয়েছেন। এতে করে বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের পদচারনায় প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে আদালতপাড়ায়।
তবে, আইনজীবীদের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী তারা জেলা ও দায়রা জজ শারমীন নিগার এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের আদালত বর্জন অব্যাহত রেখেছেন।
আদালত সংশ্লিষ্টরা জানান, গত বছরের ২ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আদালত ১ মাসের জন্য (অবকাশকালীন ছুটি) বন্ধ হয়ে যায়। এর মধ্যে ১ ডিসেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের আদালতে তিন আইনজীবী তিনটি মামলা দাখিল করতে যান। কিন্তু বিচারক মোহাম্মদ ফারুক নির্ধারিত সময়ের পরে যাওয়ায় মামলা তিনটি গ্রহণে আপত্তি জানান। এনিয়ে বিচারকের সাথে আইনজীবীদের বাদানুবাদের ঘটনা ঘটে।
এ নিয়ে গত ৬ ডিসেম্বর আইনজীবীরা সভা করে ১ জানুয়ারি থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের আদালত বর্জনের ঘোষণা দেন। ১ জানুয়ারি আদালত খোলার পর এজলাসে বসে যথারীতি কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুক। বিষয়টি জানতে পেরে ২ জানুয়ারি আইনজীবীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের আদালতে গিয়ে তাকে এজলাস থেকে নেমে যেতে বলেন। এ নিয়ে বিচারকের সাথে আইনজীবীদের বাদানুবাদের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
এদিকে বিচারকের সাথে অশোভন আচরণের অভিযোগে গত ৪ জানুয়ারি আদালতের কক্ষে ও প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে কর্মবিরতি ও মানববন্ধন পালন করে আদালতের কর্মচারিরা।
এ ঘটনার পর গত ৫ জানুয়ারি থেকে পুরো আদালত বর্জনের কর্মসূচি পালন শুরু করে আইনজীবীরা। তারা জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের অপসারণ ও জজ আদালতের নাজির মমিনুল ইসলামের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
বিচারকের সাথে অশোভন আচরনের অভিযোগে সভাপতিসহ তিন আইনজীবীকে আগামী ১৭ জানুয়ারি উচ্চ আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।
এছাড়াও আন্দোলন চলাকালে জেলা ও দায়রা জজের বিরুদ্ধে অশালীন শ্লোগান দেয়ার অভিযোগে গত ১১ জানুয়ারি ২১ আইনজীবীকে হাইকোর্টে তলব করা হয়।
এমন পরিস্থিতিতে গত ১২ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকায় আইনমন্ত্রীর বাসভবনে বৈঠকে বসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ। বৈঠকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মমতাজ উদ্দিন ফকির এবং সাধারণ সম্পাদক আবদুন নূর দুলালও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে নিজেদের দাবির কথা পুনরায় তুলে ধরেন আইনজীবীরা।
বৈঠকে আইনমন্ত্রী আইনজীবীদের তিনটি দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেয়ায় আদালতে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন আইনজীবীরা।
এ অবস্থায় গত শনিবার বিকেলে জেলা আইনজীবী সমিতির বিশেষ সাধারন সভা করে দুই বিচারককে আগামী ২৪ জানুয়ারির মধ্যে বদলির আল্টিমেটাম দিয়ে রবিবার থেকে আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তারা। তবে জেলা ও দায়রা জজ শারমীন নিগার এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের আদালত বর্জন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন তারা।
আগামী ২৪ জানুয়ারির মধ্যে দুই বিচারককে বদলি না করা হলে তারা আবার সাধারণ সভা করে লাগাতার কর্মসূচি পালন করবেন বলে আল্টিমেটাম দেন।
সভা শেষে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মফিজুর রহমান বাবুল বলেন, দুই বিচারককে বদলির দাবি বহাল রয়েছে। আইনমন্ত্রীর সাথে দেখা করার পর তিনি এ বিষয়ে আমাদেরকে আশ্বাস দিয়েছেন। মন্ত্রীর আশ্বাসের কারণে আমরা ওই দুই বিচারক বাদে বাকি সব আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এদিকে দীর্ঘদিন পর আদালতের কার্যক্রম শুরু হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন বিচার প্রার্থীরা।
বাঞ্ছারামপুর থেকে আসা বিচার প্রার্থী মোশারফ সরকার জানান, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় বিচার কার্যক্রম বন্ধ ছিলো। আমরা চাই আর যেন আইনজীবীরা আদালত বর্জন না করেন।
সদর উপজেলার সুলতানপুর থেকে আসা বিচার প্রার্থী আনোয়ার বলেন, আইনজীবীরা তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছে খবর পেয়ে আদালতে এসেছি। আর যেন ঝামেলা না হয় এমনটাই প্রত্যাশা করি।
নবীনগর থেকে আসা বিচার প্রার্থী শাহানা বেগম বলেন, কয়েকদিন আদালতে এসে ফিরে গেছি। রবিবার আদালত বসেছে। আমরা চাই আমাদের মামলা গুলো সঠিকভাবে পরিচালিত হউক।
উল্লেখ্য, জেলা জজ আদালত এবং চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত সহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মোট ২৩ টি বিচারিক আদালত রয়েছে। দু’টি বাদে ২১টি আদালতের কার্যক্রম রবিবার শুরু হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
খ্রীষ্টিয় মাস এপ্রিল এবং বাংলা বৈশাখের চলমান প্রায় অসহনীয় তাপপ্রবাহে দিবা রাত যখন সারা দেশেই মানুষ ও অবোধ প্রাণী কূলে হাঁসফাঁস অবস্থা চলছে, তখন আজ ২৯ এপ্রিল সোমবার দিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আবহাওয়ার তাপপ্রবাহ বেড়ে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ছুঁইছুঁই অবস্থা বিরাজ করে।
শহর গ্রামে রাস্তায় চলাচলকারী পথচারী ও ক্ষুদ্র যানবাহন চালকদের মধ্যে প্রায় দিশেহারা অবস্থা দেখা যায়। সবাই যেন একটু ছায়া পেলেই বাঁচে। রোবহার হতেই আবহাওয়ায় বেশি তাপপ্রবাহ অনুভব হয় গত ৩ সপ্তাহের অধিক সময় হতে। মাথা ও শরীরে অত্যাধিক গরমের ছোঁয়া লাগা মাত্রই যেন জ্বলে পুড়ে যাচ্ছিল শরীর। সকাল হতেই বেশি দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতকারী শিশু হতে সকল বয়সী ছাত্র ছাত্রী অভিভাবক এবং ৮০ বছর পর্যন্ত বয়সী বৃদ্ধ বৃদ্ধাদেরকে। সূর্যের দিকে তাকানোর মতো পরিবেশ নেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষ এবং দাপ্তরিক কক্ষগুলোর পাশাপাশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আর বাসা বাড়িতে তীব্র গরমে টেকা দায়। রাতেও আর্দ্রতা বেশি থাকায় ঘুমানো কষ্টকর। এর মধ্যে ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুতের লোডশেডিং কষ্টকে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। এর কারণে, বিভিন্ন অসুস্থতায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসায় এবং ভর্তি রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ক্রেতা কমে গেছে। দিনের বেলায় রাস্তায় জনচলাচল কমে গেছে। মানুষ ও অবোধ প্রাণীকূল একটু ঠান্ডা পানি ও ঠান্ডা পরিবেশ খুঁজছে সর্বত্র।
এই অবস্থায় মানবিক ব্যক্তিদের উদ্যোগে শুরু হয়েছে তৃষ্ণার্ত পথচারী এবং ক্ষুদ্র যানবাহন চালকদের শরবত পান করানোর মহতী উদ্যোগ। সোমবার দুপুর হতে বিকেল পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরের তোফায়েল আজম (টি.এ) রোডস্থ ইউনাইটেড সাইকেল সেনিটারী এন্ড মেশিনারীজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী হাজী মোঃ কামাল উদ্দিনের ব্যবস্থাপনায় ফ্রুটিকা স্যালাইন, লেবু, বরফ, চিনি মেশানো তাৎক্ষনিক তৈরী করা ড্রাম ভর্তি ঠান্ডা স্যালাইন শরবত পানে আপ্যায়ন করানো হয় বিপুল সংখ্যক পথচারী, যানবাহন চালক ও যাত্রীদের। আরেকজন সকালে কালীবাড়ি মোড়ে একই ধরণের শরবত আপ্যায়ন করান। এতে সেবা সহযোগিতা করেন উদ্যোক্তার স্বজনরা। মানব সেবায় এই উদ্যোগ সকলের প্রশংসা অর্জন করেছে। অপর দিকে, ভ্যানগাড়ীতে দিবা রাত লেবু ও ইস্পি পাউডার, বরফ যুক্ত ঠান্ডা পানি বিক্রি জমে উঠেছে।