চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিতাস নদীর তীরে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী ভাদুঘরের বান্নি (বারুণী) মেলা।
আজ ২৭ এপ্রিল) শনিবার সকালে তিতাস নদীতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের গঙ্গা স্নানের মধ্য নিয়ে এই বান্নি শুরু হয়। প্রতি বছর বৈশাখ মাসের ১৪ তারিখ এ বান্নি অনুষ্টিত হয়। ঠিক কত বছর আগে এই বান্নির যাত্রা শুরু হয়েছে, তার সঠিক তথ্য কেউ জানাতে পারেননি। মূলত গঙ্গাস্নান কে কেন্দ্র করে তিতাস পাড়ে বসে এ বান্নি মেলা। মেলায় অংশ নেয়া ভক্ত ভক্তপূর্ণার্থীদের পাশাপাশি দোকানিরা পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। বেঁচাকেনা ভাল হওয়ায় বেশ খুশি তারা।
শনিবার সকালে ভাদুঘর তিতাস পাড়ে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই নদীর তীরে এসে জড়ো হয়েছেন হাজারো ভক্তপুন্যার্থী। তারা তিথি অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গঙ্গা স্নানে অংশ গ্রহন করেন। নদীর পবিত্র জলে গঙ্গা স্নানের মধ্য দিয়ে ভক্তরা নিজেদের পরিবারের পাশাপাশি দেশ জাতীর কল্যাণ কামনায় তারা বিশেষ প্রার্থনা করেছেন।
সুস্মিতা রানী দাস নামে এক ভক্ত জানান, নদীতে গঙ্গাস্নান করেছি নিজের জড়ো দেহের জানা অজানা পাপ মোচনের জন্য। গঙ্গাস্নান শেষে গঙ্গা মায়ের কাছে পরমকরুনাময় ভগবানের কাছে নিজের পরিবার ও দেশের মানুষের মঙ্গলকামনায় প্রার্থনা করেছি।
মিষ্টিদেব নামে অপর ভক্ত জানায়, গঙ্গার পবিত্র জলে স্নান করার পর রোগশোগ মোচন হয়। এই বিশ্বাস থেকে গঙ্গাস্নানে অংশ নিয়েছি। ভগবান যেন সবার মঙ্গল করেন।
মেলায় আসা বিজয় দাস বলেন, গঙ্গাস্নান করেছি।মেলা থেকে নারু, মন্ডা মিঠাই,তিল্লাই, খই,চিড়া কিনেছি। বাচ্চাদের জন্য খেলনা সামগ্রী ক্রয় করেছি, বেশ ভাল লেগেছে।
এ দিকে ঐতিহ্যবাহী এ গঙ্গাস্নান কে কেন্দ্র করে তিতাস নদীর তীর ঘেষো বসেছে লৌকজ মেলা (বান্নি)। মেলায় নাগরদৌলা, হরেক রকম বাহারী খাবার মুড়ি-চিড়া, মাঠা, তিল্লাই, বাতাসাসহ মাঠির তৈরী বাহারী খেলনা দোকানের পসরা সাজিয়ে বসেছে দোকানীরা। ভক্ত সমাগম বৃদ্ধির পাশাপাশি বেঁচাকেনা ভাল হওয়ায় খুশি বিক্রেতারা।
খাবারের দোকানের পসরা নিয়ে আসা রথিন্দ্র নাথ রায় জানান, ক্রেতাদের উপস্থিতি বেশ ভাল। বেঁচা-কেনাও হচ্ছে বেশ। তাই তিনি বেশ খুশি।
মাটির খেলনা সামগ্রী নিয়ে আসা পবিত্র পাল বলেন, প্রতিবছর ভাদুঘরের বান্নিতে আসি। এবারো এসেছি। ক্রেতাদের উপস্থিতি বেশ ভাল।
মেলায় ঘুরতে আসা রাফি বলেন, বৈশাখ মাসে জেলার বিভিন্ন স্থানে মেলা হয়ে থাকে। তবে ভাদুঘরের এই মেলা ঐতিহ্য রয়েছে। এই মেলাকে আমরা বান্নি বলে থাকি। আগে বাবা দাদাদের সাথে আসতাম। আজ নিজের ছেলে মেয়ে কে নিয়ে এসেছি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আসলাম হোসেন জানান, মেলায় যে কোনো ধরনের অপতৎপড়া রোধ করার জন্যে পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
দিনব্যাপী এই মেলায় অন্তত ৫’শতাধিক দোকানি বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছে। এর থেকে কোটি টাকারও বেশি বাণিজ্যের আশাবাদ স্থানীয়দের।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাড়ির গেট-দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে পরিবারের লোকদের হাত-পা বেঁধে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। আজ ৮ আগস্ট মঙ্গলবার ভোরে সদর উপজেলার রামরাইল গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
এ সময় ডাকাতরা ১৫ ভরি স্বর্ণালংকার ও তিন লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এছাড়া হামলায় নারীসহ চারজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
আহতরা হলেন- বাড়ির কর্তা সাইদুল ইসলাম (৭০), তার স্ত্রী জুৎস্না চৌধুরী (৬০), ছেলে মাইনুদ্দিন ইসলাম (২৬) ও মেয়ে আয়েশা আক্তার মুক্তা (২৮)। এর মধ্যে আয়েশা আক্তার মুক্তার দুই হাতের আঙুল ভেঙে যাওয়ায় ও মাথায় গুরুতর আঘাত পাওয়ায় তাকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভর্তি করা হয়েছে।
সাইদুল ইসলামের আরেক মেয়ে সাদেকা ইসলাম রত্না বলেন, আমার দুই ভাই ও এক বোন দেশের বাইরে থাকে। বোন সম্প্রতি সুইডেন থেকে বেড়াতে দেশে আসে। সোমবার সন্ধ্যায় সে আবার প্রবাসের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে চলে গেছেন। মঙ্গলবার ভোরে আমার বোন আয়েশা আক্তার মুক্তা ঘরের বাইরে টয়লেটে যায়। এই ফাঁকে ২৫/৩০ জনের একটি ডাকাত দল আমাদের বাড়ি ঘিরে ফেলে। এর মধ্যে ১০/১২ জন আমাদের বাড়ির বাউন্ডারির দেয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশ করে। বাউন্ডারির ভেতরে ঢুকে ভবনের কলাপসিবল গেট ও দরজা ভেঙে সাতজন ঘরে প্রবেশ করে। ঘরে ঢুকে তারা দেশীয় অস্ত্রের মুখে আমার বাবা, মা ও ভাইকে মারধর করে রশি দিয়ে বেঁধে ফেলে। এরই মাঝে আমার বোন টয়লেট থেকে ঘরে ঢুকলে তার মাথায়ও আঘাত করে মেঝেতে ফেলে দিয়ে মারধর করে। এতে তার দুই হাতের আঙুল ভেঙে যায়। ডাকাত দল আমাদের ঘরে থাকা প্রায় তিন লাখ টাকা ও ১৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় আমার মায়ের কান ছিড়ে স্বর্ণের দুল দিয়ে যায়।
আহত আয়েশা আক্তার মুক্তা বলেন, আমি টয়লেট থেকে এসে দেখি সাতজন লোক আমার ভাইকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে। তারা আমার দুই শিশুর গলায় ছুরি ধরে রেখেছিল। তাদের সবার মুখে মাস্ক পরা ছিল। তারা আমার মাথায় আঘাত করে। এরপর আমি লুটিয়ে পড়ি। দুই হাতে কখন আঘাত পেলাম বলতে পারিনি। জ্ঞান ফেরার পর দেখেছি দুই হাতে ব্যান্ডেজ।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসাইন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। এই ঘটনায় ১৫ ভরি স্বর্ণালংকার ও প্রায় তিন লাখ টাকা ডাকাতরা নিয়ে গেছে। আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আমরা ডাকাতদের আটক করতে অভিযান অব্যাহত রেখেছি। তবে, এ ঘটনায় এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ঢাবিয়ানদের মিলনমেলা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ২৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উদ্যোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজ প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠান হয়।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর, বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাধির চৌধুরী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আহ্বায়ক মো. মাহমুদুন নবী মিলনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় সম্মানিত অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ডক্টর সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রফেসর শওকত আরা হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম, পুলিশ সুপার মো. শাখাওয়াত হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. শাহ্ আলম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর এ.এস.এম. শফিকুল্লাহ।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভূমিকম্প ও অগ্নিকান্ড বিষয়ক মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ১০ মার্চ রবিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে প্রধান অতিথি হিসেবে মহড়ার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান।
মহড়ায় উপস্থিত ছিলেন পৌর সভার মেয়র নায়ার কবীর, ৬০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মুহাম্মদ আশিক হাসান উল্লাহ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর এ.এস. এম শফিকুল্লাহ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ ইকবাল হোসেন প্রমুখ।
মহড়ায় দুর্যোগকালীন সময়ে করনীয় বিষয় নিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা হয়। মহড়া চলাকালীন সময়ে সংশ্লিষ্টরা জানান, এই মহড়া বাস্তবিক ক্ষেত্রে অনেকটাই কাজে আসবে। মহড়ায় আইন-শৃংখলা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
২০১৬ সালে এবং ২০২১ সালে হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনের সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন থানায় দায়েরকৃত ৬৩টি মামলা প্রত্যাহারের জন্য অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি করেছেন “মাজলুম ওলামায়ে কেরাম” নামে একটি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
আজ ১১ আগস্ট রোববার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ এই দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতে ইসলাম, নবীনগর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবদুল কাইয়ুম ফারুকীর সভাপতিত্বে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া উম্মুল কোরআন মাদরাসার মোহতামিম মুফতি উবায়দুল মাদানী। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পতন হওয়া স্বৈরাচারি সরকার গত ১৬ বছর এদেশে অসংখ্য গণহত্যা চালিয়েছেন।
২০১৬ সালে এবং ২০২১ সালে হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনের সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন থানায় দায়েরকৃত ৬৩টি মামলায় জেলার ৬৪জন আলেম দীর্ঘদিন কারাভোগ করেছেন। এ সময় আইন-শৃংখলাবাহিনীর গুলিতে ১৬জন আলেম ও মাদরাসার ছাত্র শাহাদাৎ বরণ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আলেম-ওলামাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ৬৩টি মামলার মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় ৫৬টি, আশুগঞ্জ থানায় ৪টি, সরাইল থানায় ২টি ও আখাউড়া থানায় একটি মামলা রয়েছে। নেতৃবৃন্দ এসব মামলা সরকারের নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। এ সময় ২০২১ সালে নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করার দাবি এবং ২০২১ সালে চাকরিচ্যুত আলেম-ওলামাদেরকে স্বপদে বহাল রাখার দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গণহত্যার সাথে জড়িতরা যেন দেশ ত্যাগ করতে না পারে সেজন্য বর্তমান সরকারের কাছে দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা আবদুল হক, মাওলানা যাকারিয়া, মাওলানা নিয়ামুল করিম, মাওলানা মোজাম্মেল হক, মাওলানা আমানুল হক, মাওলানা খন্দকার ইসলাম প্রমুখ।