চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া পৌরশহরের সড়কবাজার থেকে অজ্ঞাতনামা এক বৃদ্ধা (৭৫) নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আজ ২৯ এপ্রিল সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে রেলস্টেশন সংলগ্ন শহরের সড়কবাজার এলাকার মুক্তিযুদ্ধা মোঃ সিরাজুল হক পৌর মুক্তমঞ্চ থেকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। পুলিশের ধারনা বৃদ্ধা ওই নারী অসুস্থ হয়ে মারা যান।
মরদেহ উদ্ধারকারি পুলিশ কর্মকর্তা ও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোবারক হোসেন জানান, নিহত বৃদ্ধা নারী মানসিক ভারসাম্যহীন ও ভবঘুরে প্রকৃতির ছিলেন। কথা বলতে পারতেন না। সারাদিন স্টেশনে ঘুরে ঘুরে ভিক্ষা করতেন। রাতে মুক্তমঞ্চে এসে ঘুমাতেন বলে শুনেছি। সকালে ফুটপাতের ব্যবসায়িরা মুক্তমঞ্চে লাশ পড়ে থাকতে দেখে থানায় খবর দেয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
আখাউড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক ও অফিসার ইনচার্জ মো. নুরে আলম বলেন, ভবঘুরে ও মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারীকে স্টেশন এলাকায় অনেকেই ভিক্ষা করতে দেখেছেন। তার নাম ও পরিচয় শনাক্ত করতে পুলিশ চেষ্টা করছে।
আখাউড়া প্রতিনিধি :
প্রথম দেখায় জায়গাটিকে সড়ক বলে বোঝাই দায়। নোংরা পানি-কাদায় একাকার হয়ে আছে শতাধিক পরিবারের চলার পথটি। কয়েক মাস ধরে এমন ভোগান্তিতে আছেন আখাউড়া উপজেলার ধাতুরপহেলা গ্রামের কয়েকশ মানুষ। চলার পথের এ অবস্থার কারণে তাঁদের পরিবারের ছেলে-মেয়েদের বিয়েও ভেঙে যায় বলে জানিয়েছেন কয়েকজন ভুক্তভোগী।
গ্রামবাসীর ভাষ্য, প্রভাবশালী কয়েকটি পরিবারের বাড়ির নোংরা পানি সরাসরি পড়ছে সড়কটিতে। ফলে দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে সেখানে। ইট ফেলে হাঁটার ব্যবস্থা করেছেন ভুক্তভোগীরা। এভাবে চলাচল করতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।
এক ভুক্তভোগী বলেন, মোগড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি হাবিবুর রহমানের গোয়াল থেকে প্রতিদিন গরুর বর্জ্য মেশানো পানি সরাসরি এখানে পড়ে। এ ছাড়া ভুট্টো মিয়া, আমির হোসেন, সেলিম মেম্বার, নাজির মিয়া, হামদু মিয়া, বিল্লাল, আনার, হেলাল, শামিম ও মোতালিব মিয়ার বাড়ির শৌচাগারের নোংরা পানি ও কলতলার পানিও উপচে আসে এ পথে। তবে তাঁরা প্রভাবশালী হওয়ায় প্রতিবাদ করতে পারছেন না।
আনু মিয়া নামের এক ভুক্তভোগী বলেন, ‘আমার মেয়ের বিয়ের জন্য পাত্রপক্ষের লোকজন এ পথের জন্য আসতে পারে না। লজ্জায় পড়তে হয়।’ শুধু তাই নয়, কিছুদিন আগে তাঁর এক সন্তানও নোংরা পানির কারণে অসুস্থ হয়েছিল। পরে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে হয়।
হাবিবুর রহমান বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘শুধু আমার বাড়ির গোয়ালের পানিই নয়, আরো কয়েকটি পরিবারের পানি রাস্তায় পড়ে।’ তবে মানুষ চলাচলের জন্য রাস্তাটি উপযোগী করতে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আলমগীর হোসেন বলেন, কয়েকটি পরিবারের ময়লা পানির কারণে শতাধিক পরিবার ওই পথ দিয়ে চলাচল করতে পারছে না। বিষয়টি চেয়ারম্যানও জানেন। তিনি দ্রুতই উভয়পক্ষকে ডাকবেন।
ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মতিন বলেন, রাস্তায় কেউ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারবে না। এটা সম্পূর্ণ বেআইনি। সবার সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত বিষয়টি সমাধানের আশা করছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অভিযোগে আটক করা দুই বাংলাদেশি তরুণ-তরুণী কারাভোগ শেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ফিরেছেন। ৯ অক্টোবর বুধবার সন্ধ্যায় আখাউড়া স্থলবন্দরের শূন্যরেখায় তাদেরকে হস্তান্তর করা হয়।
দেশে ফেরা তরুণ তরুণীরা হলেন, চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার সুব্রত ভট্টাচার্য্য (২১) ও নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা জান্নাত আক্তার (১৯)।
ভারতের ত্রিপুরার বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সহযোগিতায় আখাউড়া-আগরতলা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট সীমান্ত দিয়ে তারা দেশে ফেরেন।
এদিকে আখাউড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সজিব মিয়া, ইমিগ্রেশন ইনচার্জ মো. খাইরুল আলম, বিজিবির আইসিপি পোস্ট কমান্ডার মো. রুহুল আমিনের কাছে তাদেরকে হস্তান্তর করেন ত্রিপুরায় নিযুক্ত বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের কর্মকর্তা মো. ওমর শরীফ।
এসময় গণমসাধ্যমকে সুব্রত ভট্টাচার্য্যের মা বলেন, ‘আমি পোশাক কারখানায় কাজ করি। আমাদের আর্থিক অবস্থা খারাপ বিধায় ছেলেকে একটা আশ্রমে পড়াশোনা করার জন্য দেওয়া হয়। একদিন রাতে ফোন আসে আমার ছেলে ভারতে। ফোন পেয়ে আমি দিশাহারা হয়ে যাই। সে ওখানে থাকার প্রায় দশ মাস আমি পাগলপ্রায় ছিলাম। আমার স্বামীও অসুস্থ। কোথায় যাবো, কী করবো বুঝে উঠতে পারছিলাম না। এতোদিন পর ছেলেকে পেয়ে আমি আনন্দিত।’
দেশে ফেরা সুব্রত ভট্টাচার্য্য জানান, তিনি দশ মাস আগে রামগড় সীমান্তপথে পুরোহিত বিদ্যার্জনে ভারত যান। সেখানে তিনি বিএসএফের হাতে আটক হন।
এদিকে জান্নাত আক্তার জানান, পরিচ্ছন্নতা কাজের জন্য দালালের মাধ্যমে তিনি ভারতে যান। সিলেটের খোয়াই সীমান্তপথে তিনি গিয়েছিলেন। দেশে ফিরতে পেরে তিনি খুব খুশি।
চলারপথে রিপোর্ট :
প্রায় ৫০ ফুট উঁচু সিঁড়ি। মাঝখাতে দুটি ধাপ। পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের আখাউড়া রেলওয়ে জংশন ষ্টেশনে অত্যাধিক উঁচু সিঁড়িতে লাগানো হচ্ছে টাইলস্। জনবহুল এ ষ্টেশনের সিঁড়িতে উঠা-নামার সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন ট্রেন যাত্রীরা। তাছাড়া, পানি জমে বা কলার খোসা পরে সিঁড়ি পিচ্ছিল হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তবে, রেলওয়ে সংশ্লিষ্টদের দাবি, টাইলস্-এ কোন সমস্যা হবে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে আখাউড়া-লাকসাম রুটে ডাবল ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণের কাজ চলছে। প্রতিটি রেলওয়ে স্টেশন আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। আধুনিকায়ন আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীদের পারাপারের জন্য বিশাল একটি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। এই ওভার ব্রিজের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৯০ ফুট এবং উচ্চতা ৩০ ফুট। ওই ওভার ব্রিজে উঠা-নামার জন্য দুই পাশে ৩টি করে ৬টি সিঁড়ি করা হয়েছে। তবে কোনো র্যাম্প বা সমতল সিঁড়ি রাখা হয়নি। এসব সিঁড়ি প্রায় ৫০ ফুট লম্বা। অত্যাধিক উঁচু এসব সিঁড়িতে টাইলস্ ফিটিং করা হচ্ছে। ব্যস্ততম জংশন ষ্টেশনে এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন ট্রেন যাত্রীরা।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সিঁড়িতে অফ হোয়াইট কালারের টাইল্স ফিটিং করা হচ্ছে। টাইলসের সামনের দিকে কয়েকটি খাঁজ কাটা রয়েছে।
কাউছার আহমেদ ভূঁইয়া নামে এক যাত্রী বলেন, টাইলস দিয়ে এমনিতে সতর্কভাবে হাঁটতে হয়। তাছাড়া পানি পড়ে টাইল্স পিচ্ছিল হয়ে যেতে পারে। কলার খোসা পড়ে থাকতে পারে। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে।
এ ব্যাপারে প্রকৌশলী কাজী মাহমুদুল হাসান খাদেম বলেন, এরকম জায়গায় এই ধরনের টাইল্স ব্যবহার বিপজ্জনক। পাবলিক ওভার পাসে সাধারণত রাবার ফ্লোরিং করা হয়। এটা শিশু, প্রতিবন্ধি এবং বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ সুরক্ষা প্রদান করে। শীতের পরিস্থিতিতে ঠান্ডা হয়ে ভিজে যায় না।
জানতে চাইলে, আখাউড়া-লাকসাম ডাবল রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (ওয়ার্কস) মোঃ আব্দুল্লাহ বলেন, আখাউড়া-লাকসাম সেকশনে কুমিল্লাসহ ১০টি ষ্টেশনে ওভারব্রীজে টাইলস্ ফিটিং করা হয়েছে। প্রায় ২ বছর হয়েছে এখনও কোন দুর্ঘটনা ঘটে। আখাউড়া ষ্টেশনেও সমস্যা হবে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।
উল্লেখ্য, আখাউড়া-লাকসাম পর্যন্ত ৭২ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালে। কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে চলতি বছর জুলাইয়ে কাজটি শেষ হবার কথা ছিল। কিন্তু ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সময় লাগবে বলে জানা গেছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের নির্বাচনী অফিস উদ্বোধন উপলক্ষে দোয়া ও মিলাদ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় পৌরশহরের খড়মপুরে কেন্দ্র কমিটির অফিসে দোয়া ও মিলাদ পড়ানো হয়। অনুষ্ঠানে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেকাকর্মীরা উপস্থিত ছিল।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিল পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. আব্দুল্লাহ ভূইয়া বাদল, সাধারণ সম্পাদক কাজী লিটন খাদেম, কেন্দ্র কমিটির আহবায়ক আবুল হাসেম খান খাদেম, সদস্য সচিব মাজার কমিটির সেক্রেটারি মোঃ রফিকুল ইসলাম খাদেম, আওয়ামীলীগ নেতা মোবাশ্বের খাদেম শিরু, নওশের খাদেম, ছগির আহমেদ প্রমুখ।
দোয়া পাঠ করেন খড়মপুর মাজার জামে মসজিদের খতীয় হাফেজ মাওঃ লুৎফুর রহমান খাদেম। এসময় আনিসুল হকের সুস্থতা কামনা এবং তাঁর বিজয়ের জন্য দোয়া করা হয়।
উল্লেখ্য, কসবা-আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪) আসনে তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থী আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, এনপিপি’র শাহীন খান ও তরিকত ফেডারেশনের ছৈয়দ জাফরুল কুদ্দুছ।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ার ২৪টি দুর্গাপূজা মন্দিরে পাহারায় থাকবে বিএনপি। আজ ৭ অক্টোবর সোমবার সকালে পুজা উদযাপন পরিষদ ও পূজা পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে দলটির মতবিনিময় সভায় এ কথা জানানো হয়।
শ্রী শ্রী রাধামাধব আখড়ায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. জয়নাল আবেদীন আব্দু সভাপতিত্বে এবং পৌর বিএনপির সদস্য সচিব মো. আক্তার হোসেনের সঞ্চালনায় এতে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব খোরশেদ আলম ভূইয়া, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক সেলিম ভূইয়া, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি চন্দন কুমার ঘোষ, উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক দীপক কুমার ঘোষ।
বিএনপির পক্ষে বক্তব্য রাখেন মো. বাহার মিয়া, জালাল উদ্দিন, হারুণুর রশিদ, জালাল উদ্দিন জালু, জাবেদ আহমেদ, মোবারক হোসেন জীবন।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন রাধামাধব আখড়া কমিটির সাধারণ সম্পাদক অলক কুমার চক্রবর্তী, সাহাপাড়া পুজা মন্দির কমিটির সভাপতি রসিক লাল সাহা, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব বিশ্বজিৎ পাল বাবু।
অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবুল হাসিম।
মতবিনিময় সভায় বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রতিটি মণ্ডপ পাহারায় দলের পক্ষ থেকে আলাদা আলাদা কমিটি গঠন করা হয়েছে।
দলের স্বেচ্ছাসেবক টিম প্রতিটি মন্দিরে দিন-রাত পাহারা দেবে। পূজা যেন নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয় বিএনপির পক্ষ থেকে সব ধরণের সহযোগিতা করা হবে। পূজা পরবর্তী সময়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির লক্ষ্যে কমিটি গঠন করে দেওয়া হবে।