অনলাইন ডেস্ক :
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছেন, তথ্যের সঙ্গে অনেক সময় অপতথ্যের মিশ্রণ ঘটে। তাই সেখানে সুরক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা আমরা করব। গণমাধ্যমকর্মী আইন নিয়ে নতুন করে কাজ চলছে। সরকার গণমাধ্যমের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা নিশ্চিতে কাজ করছে।
আজ ৪ মে শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, প্রতিটি সংগঠন থেকে দুইজন প্রতিনিধির সঙ্গে বসে দ্রুততম সময়ে আইনটি সংসদে উত্থাপন করে পাস করার চেষ্টা করব।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, পরিবেশ রক্ষায় যারা কাজ করবে, তারা আমাদের বন্ধু। পরিবেশ সাংবাদিকতায় প্রণোদনার ব্যবস্থা করা হবে। কেন্দ্রীয়ভাবে আমাদের মূল উদ্দেশ্য হলো পরিবেশ রক্ষা করা।
তিনি বলেন, শুধু পরিবেশ সুরক্ষা নয়, মুক্ত গণমাধ্যেমের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা নিশ্চিতেও সরকার কাজ করছে। পরিবেশ-প্রতিবেশকে সুরক্ষা দিয়ে উন্নয়ন করতে হবে ব্যালেন্স করে। যেমন পদ্মা সেতু শুধু পারাপার হতে নয়, দারিদ্র্য বিমোচনেও কাজ করছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সারা দেশে গণমাধ্যমের মধ্যে শৃঙ্খলা আনা দরকার। আপনারাও (সাংবাদিক) বলেন- সাংবাদিকদের ন্যূনতম যোগ্যতার প্রয়োজন রয়েছে। সাংবাদিকসহ সব স্তরে সবার দাবি যেহেতু একই রকম, আমরা সরকারের পক্ষ থেকে এ দাবিগুলোর সঙ্গে একমত পোষণ করে সে জায়গায় কাজ করব।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে গণমাধ্যম মুক্ত নয়, উন্মুক্ত হয়ে আছে। তাই বর্ডার লাইন টানা দরকার। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে কথা হয়েছে। গণমাধ্যমকর্মীরা আমাদের বন্ধু। তারা অ্যাড্রেস করে দেন। আমরা কাজ করতে পারি। সব সমালোচনাকে স্বাগত জানাই। উদ্দেশ্যমূলকভাবে ক্যাম্পেইনের বিরুদ্ধে নিন্দা জানাই। আমরা মনে করি না সরকার যারা পরিচালনা করছে, তারা সবাই ফেরেশতা। গণমাধ্যম ধরিয়ে দিলে আমরা শুধরে নিতে পারি। তবে অনেক ক্ষেত্রেই মোটিভেটেড সাংবাদিকতা হয়। ক্ষতি হয় পেশাদার সাংবাদিকতার।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে (ডিএসএ) মামলা করলেই জেলে নেওয়া হতো। এখন সেটি নেই। সিএসএতে অপসাংবাদিকতায় কেউ যদি ভুক্তভোগী হয়, তারও সহায়তা চাওয়ার অধিকার আছে। পেশাদার সাংবাদিকতার সুরক্ষা দেওয়ার জন্য আইন করা হয়েছে। অপব্যবহার হলে তার বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান থাকবে।
এ সময় নোয়াবের সভাপতি এ. কে. আজাদ বলেন, বিভিন্ন মহলের চাপের কারণে দেশে সাংবাদিকতা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে। সব নিউজ আমরা ছাপাতে পারি না।
নোয়াব সভাপতি এ. কে. আজাদ বলেন, দেশে দুর্নীতি বাড়ছে। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোয় দুর্নীতি বাড়ছে। এক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আরেক মন্ত্রণালয়ের সমন্বয় থাকছে না। তাই জবাবদিহিও মিলছে না। এসব নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করতে গিয়ে সাংবাদিকেরা হয়রানির শিকার হন। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকে বিনা অনুমতিতে সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নোয়াব ও সম্পাদক পরিষদ থেকে এর বিরুদ্ধে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। ব্যাংক খাতের বর্তমান পরিস্থিতিতে এ ধরনের পদক্ষেপ ব্যাংক লোপাটকারীদেরই উৎসাহিত করবে।
রহিত হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হওয়া মামলার প্রসঙ্গে টেনে এ. কে. আজাদ বলেন ‘আমাদের প্রশ্ন হলো সাংবাদিকতা কি অপরাধ?’ তিনি বলেন, সাংবাদিকেরা সেলফ সেন্সরশিপে চলে গিয়ে আত্মরক্ষা করতে চান। জনস্বার্থে তথ্য অনুসন্ধান এবং তা প্রকাশ করতে গিয়ে কেন তারা ‘অপরাধী’ হিসেবে চিহ্নিত হবেন?
বক্তারা বলেন, দেশে যে সংকটগুলো চলছে, তার মধ্য বড় সংকট পরিবেশ বিপর্যয়। যারা জমি দখল করছে, তাদের অনেকের মিডিয়া আছে। সেখানে বড় চ্যালেঞ্জ সাংবাদিকতা। তবে পরিবেশকে গুরুত্ব দিয়ে সাংবাদিকতার ওপর তাগিদ দেন তারা।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম। সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন ভোরের কাগজের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ঢাকা ট্রিবিউনের সম্পাদক জাফর সোবহান ও দেশ রূপান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোস্তাফা মামুন।
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের সাংবাদিকেরা।
অনলাইন ডেস্ক :
যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়াকে অর্থপাচারের মামলায় চার বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।আজ ২৫ মে রবিবার এ রায় ঘোষণা করেন ঢাকার ৮ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মঞ্জুরুল হোসেন।
পাপিয়ার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী, পাপিয়ার সহযোগী সাব্বির খন্দকার, শেখ তায়িবা নূর ও জুবায়ের আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তারা খালাস পেয়েছেন।
পাপিয়ার আইনজীবী শাখাওয়াত উল্লাহ ভূঁইয়া জানান, চার বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি পাপিয়াকে ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর পাপিয়া ও তার স্বামী সুমনকে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়। পরে উচ্চ আদালত থেকে পাপিয়া জামিনে কারামুক্ত হন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী শাখাওয়াত উল্লাহ ভূঁইয়া।
অসুস্থতার কারণে আজ পাপিয়া আদালতে হাজির হতে পারেননি। তার পক্ষে আইনজীবী সময় চেয়ে আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করেন বিচারক। অপর চার আসামির মধ্যে জুবায়ের শুরু থেকে পলাতক রয়েছেন। জামিনে থাকা অন্য তিনজন আদালতে হাজির হন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী ফজলুর রহমান বলেন, আদালত পাপিয়ার জামিন বাতিল করেছে। তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমানকে ২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে পাপিয়াকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়। সেসময় তাদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, দুই লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ টাকার জাল নোট, ১১ হাজার ৪৮১ ডলার, শ্রীলঙ্কা ও ভারতের কিছু মুদ্রা এবং দুটি ডেবিট কার্ড জব্দ করা হয়।
পরে পাপিয়ার ফার্মগেইটের ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, ২০টি গুলি, পাঁচ বোতল বিদেশি মদ, ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা এবং বিভিন্ন ব্যাংকের ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড উদ্ধারের কথা জানায় র্যাব। অভিযান চালানো হয় পাপিয়ার নরসিংদীর বাড়িতেও ।
র্যাবের পক্ষ থেকে সে সময় উল্লেখ করা হয়, পাপিয়া গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেল ভাড়া নিয়ে ‘অসামাজিক কার্যকলাপ’ চালিয়ে যে আয় করতেন, তা দিয়ে হোটেলে বিল দিতেন কোটির টাকার উপরে। গ্রেফতারের পর পাপিয়া ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে দুটি মামলা করে র্যাব। বিমানবন্দর থানায়ও তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইন-১৯৭৪ এর অধীনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। আর গুলশান থানায় মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ আইনে সিআইডি আরেকটি মামলা করে। পরে দুদক পাপিয়ার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে।
গুলশান থানার অর্থপাচার মামলায় পাপিয়াসহ পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে ২০২১ সালের ২৭ ডিসেম্বর অভিযোগপত্র দাখিল করেন সিআইডির পরিদর্শক ইব্রাহীম হোসেন।
এরপর ২০২২ সালের ২১ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করে আদালত। মামলার বিচার চলাকালে ২৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। আসামিদের আত্মপক্ষ শুনানি, যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রোববার রায় ঘোষণা করলেন বিচারক।
অনলাইন ডেস্ক :
দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম পদত্যাগ করেছেন। তিনি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠনের ডিটিও বরাবর ই-মেইলের মাধ্যমে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন বলে জানা গেছে।
আজ ১১ সেপ্টেম্বর বুধবার সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ কি হবে তা আজই জানানো হবে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়েরর একটি সূত্র জানিয়েছে।
মাহবুবুল আলম বর্তমানে সিঙ্গাপুরে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সেখান থেকেই তিনি পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন বলে জানা গেছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন করতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমকে ডিও লেটার (আধাসরকারি পত্র) দিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। গত ৩ আগস্ট এ পত্রটি দেওয়া হয়। এর মধ্য দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপনের পথ সুগম হলো বলে মনে করা হচ্ছে। শীঘ্রই এর অনুমোদন মিলবে বলেও আশা করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরেই মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সুধী সমাজ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। এ নিয়ে স্মারকলিপি, মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে।
অর্থ উপদেষ্টা তার দেওয়া পত্রে উল্লেখ করা হয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রাচীন জনপদ। এ জেলায় রয়েছে নয়টি উপজেলা এবং জনসংখ্যা ২৮ লাখ ৪০ হাজার ৪৯৮ জন। অতি প্রাচীন কাল থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শিক্ষা, সংস্কৃতি, কারুশিল্প, কুটিরশিল্প, খেলাধুলাসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশে সুপরিচিত। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় কোন সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল নেই। ফলে জেলার দরিদ্র ও অসহায় জনসাধারণ বিনামূল্যে ও স্বল্পমূল্যে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত। জেলা সদরে স্থাপিত সদর হাসপাতালে ডাক্তার স্বল্পতাসহ আধুনিক চিকিৎসার তেমন কোন সুযোগ-সুবিধা নেই। এলাকার জনসাধারণকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানী ঢাকা শহরে আসতে হয়। কিন্তু দরিদ্র জনসাধারণ বেসরকারি হাসপাতালে উচ্চমূল্যে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে সক্ষম নয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরে একটি সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপিত হলে দরিদ্র জনসাধারণ বিনামূল্যে/স্বল্পমূল্যে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের চিকিৎসা সেবা পাওয়ার সুযোগ পাবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপিত হলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাড়াও কুমিল্লা, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও নরসিংদী জেলার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নিকটবর্তী উপজেলা সমূহের জনসাধারণ নিরবচ্ছিন্ন স্বাস্থ্য সেবা পাবে।
অর্থ উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অবস্থান ঢাকা শহর থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে। জেলার ভৌগোলিক অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে পরিচিত। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের এবং কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের উভয়প্রান্তে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহর অবস্থিত। সড়ক দুর্ঘটনাসহ অন্যান্য গুরুতর রোগীদের সুচিকিৎসার জন্য ঢাকা শহর ছাড়া নিকটবর্তী কোন সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল নেই। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের দূরত্ব প্রায় ১৫০ কিলোমিটার। দরিদ্র জনসাধারণের পক্ষে যাতায়াত খরচসহ ঢাকা শহরে অবস্থান করে সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করা দুরূহ।
তিনি আরো লিখেন, জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, বিদেশে চাকরির ক্ষেত্রে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা দ্বিতীয়। এ জেলা থেকে লাখ লাখ দক্ষ, অদক্ষ এবং অন্যান্য পেশাজীবী মানুষ মধ্যপ্রাচ্যসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে চাকরি করছে। তাদের প্রেরিত মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রায় বাংলাদেশ সরকারের আমদানি ব্যয় অনেকাংশে মিটানো হয়। বাংলাদেশের বৃহত্তম তিতাস গ্যাসফিল্ড ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরের উপকণ্ঠে অবস্থিত। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন এবং আমদানি বিকল্প দেশীয় গ্যাস উৎপাদনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জাতীয় অর্থনীতিতে এক বিরাট অবদান রেখেছে। বর্ণিত অবস্থায়, উপযুক্ত তথ্যাদির গুরুত্ব এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কৌশলগত অবস্থান, ঘন জনবসতি, ঐতিহ্য এবং জাতীয় অর্থনীতিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অবদান ইত্যাদি বিষয়াদি সক্রিয় ভাবে বিবেচনা পূর্বক ব্রাহ্মণবাড়িয় জেলা সদরে একটি সরকারি মেডিকেল কলেজ ও ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট একটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল স্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্বাস্থ্য উপদেষ্টাকে সর্নিবন্ধ অনুরোধ জানানো হয়। এ সংক্রান্ত পত্রটি শুক্রবার বিকেলে এ প্রতিবেদকের হাতে আসে।
সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুন নূর বলেন, আমাদের জেলায় মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা সময়ের দাবি, প্রাণের দাবি। স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কাছে অর্থ উপদেষ্টার দেওয়া পত্রের বিষয়টি জেনে ভালো লাগলো। অতি দ্রুত এর বাস্তবায়ন আমরা দেখতে পাবো।
ঢাকাস্থ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় বিএনপির অর্থনেতিক বিষয়ক সম্পাদক এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল বলেন, জেলায় মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপনে আমরা কাজ করছি। অর্থ উপদেষ্টার চিঠির বিষয়টি অবশ্যই আশাব্যঞ্জক। দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো।
অনলাইন ডেস্ক :
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন কেন্দ্রিক রাজধানীর পৃথক থানার মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাড. আনিসুল হক, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী অ্যাড. কামরুল ইসলাম, সাবেক এমপি সোলাইমান সেলিমের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ ২৭ নভেম্বর বুধবার তাদেরকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা তাদের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেলাল হোসেনের আদালত তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
এর মধ্যে যাত্রাবাড়ী থানার হত্যা মামলায় আনিসুল হককে ৩ দিন, লালবাগ থানার মামলায় কামরুল ইসলামকে ৩ দিন, চকবাজার ও লালবাগ থানার দুই মামলায় সোলাইমান সেলিমকে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। এছাড়া যাত্রাবাড়ী থানার মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজের ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
বিভিন্ন থানার মামলায়, সাবেক মন্ত্রী দীপু মনি, আনিসুল হক, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বাণিজ্য উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমান, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, আমির হোসেন আমু, হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, সোলাইমান সেলিম, সাদেক খান, এবিএম ফজলে করিম, মনিরুল ইসলাম, আ স ম ফিরোজ, মশিউর রহমান এবং শাহরিয়ার কবিরকে নতুন করে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৫ জন প্রবীণতম নেতাকে আজীবন সম্মাননা প্রদান করেছে জেলা আওয়ামী লীগ।
আজ ২৩ জুন রবিবার বিকালে শহরের বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে জমকালো ও বর্ণাঢ্য এ সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি।
জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, সম্মাননাপ্রাপ্ত সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম ভূঞা ও কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সভাপতি অ্যাড. মকবুল হোসেন তালুকদার।
সম্মাননাপ্রাপ্ত নেতারা হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সফিউল্লাহ, মুসলিম মিয়া, আবুল কালাম ভূঞা, অ্যাড. হামিদুর রহমান, গোলাম ইসহাক, হেবজুল বারী, নিয়াজ মুহাম্মদ খান, আলী আকবর, আবদুল মতিন দারু, কাজী হারিছুর রহমান, শেখ বোরহান উদ্দিন, আবদুল হাই মাস্টার, কার্তিক চন্দ্র দাস, ফুল মিয়া ভূঞা, মিসেস মিনারা আলম, মিসেস মমতাজ বাশার, মিসেস রেহেনা বেগম রানী, অ্যাড. মকবুল হোসেন তালুকদার, ডা. রাফি উদ্দিন আহমেদ, অ্যাড. আজিজুর রহমান, অসীম কুমার পাল, নজির শাহ, মফিজ উদ্দিন, মো. আবদুর রহিম খান, হাজি মুজিবুর রহমান। অনুষ্ঠানে সত্তরোর্ধ নেতাদের ফুলের তোড়া, মেডেল, ক্রেস্ট ও শাল উপহার প্রদান করা হয়।
সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সভাপতি হাজি মুজিবুর রহমান বলেন, ৭৫ এর পর আমার বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিলো। আজ আজীবন সম্মাননা পেয়ে মনে হচ্ছে তখনকার বাড়ি পোড়ানো আজ সম্মান আর মর্যাদা এনে দিয়েছে।
নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি ডা. রাফি উদ্দিন বলেন, জীবনভর আওয়ামী লীগ করে বয়সের শেষ সময়ে এসে যে সম্মান জেলা আওয়ামী লীগ দেখালো তা আমৃত্যু প্রেরণা যোগাবে।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেছেন, জেলা আওয়ামী লীগ ২৫ জন নেতাকে আজীবন সম্মাননা প্রদান করে তরুণ প্রজন্মের কাছে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। তারা বুঝতে পারবে দলের প্রতি সবসময় অনুগত থাকলে, অবিচল আস্থা রেখে দলের কাজ করলে একসময় না একসময় সম্মান আসে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড়ো অর্জন স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা। আওয়ামী লীগের আন্দোলন ও সংগ্রামের মধ্য দিয়েই আমরা বাংলাদেশ পেয়েছি। আওয়ামী লীগের ইতিহাস লড়াই-সংগ্রাম আর এগিয়ে চলার ইতিহাস। আওয়ামী লীগকে বারবার ধ্বংস করার চেষ্টা হলেও আওয়ামী লীগ পুনরায় স্ফীংসের মতো আকাশে ডানা মেলে উড়ে দেখিয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ পেয়েছি। স্মার্ট বাংলাদেশও প্রতিষ্ঠা করবে আওয়ামী লীগ। তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ অগ্রসর চিন্তার আরেক নাম। তাই যতোদিন বৈষম্যহীন সমাজ, ধর্মনিরপেক্ষ অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত না হবে ততোদিন আওয়ামী লীগের সংগ্রামশীলতা চলবে। তিনি আরো বলেন, প্রিয়নেত্রী শেখ হাসিনার বিকল্প কোনো রাজনৈতিক নেতৃত্ব নেই তেমনি আওয়ামী লীগের বিকল্প কোনো রাজনৈতিক শক্তি নেই।
জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে আজীবন সম্মাননা প্রদানের অনুষ্ঠান শুরু হয়। এর আগে সকাল ৬ টায় শহরের হালদারপাড়াস্থ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকাল সাড়ে ১০ টায় বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপির নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।