চলারপথে রিপোর্ট :
পাবলিক লাইব্রেরিতে এসে বই পড়ায় পুরস্কৃত করা হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলায় ১২ শিক্ষার্থীকে। এপ্রিল মাসে লাইব্রেরিতে সর্বাধিক উপস্থিত হয়ে বই পড়ায় পুরস্কৃত করা হয় তাদের।
আজ ১৫ মে বুধবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ ইমরানুল হক ভূঁইয়া শিক্ষার্থীদের হাতে এ পুরষ্কার তুলে দেন। পুরস্কার পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে বালিকা ক্যাটাগরিতে যৌথভাবে প্রথম হয়েছেন ছাত্রী সাদিয়া বুশরা, হাফসা বেগম, সুমাইয়া আফরিন, ২য় হয়েছেন ইসরাত জাহান ও সৃষ্টি রায় এবং ৩য় হয়েছে সানিয়া আক্তার ও মহিমা রায়। বালক ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়েছেন পৃথিবী দাস সূর্য্য, ২য় স্নেহাল গোপ পান্না, সৌমক রায়, গগনদীপ কুন্ডু, ৩য় হয়েছেন শয়ন গোপ। জানা যায়, আগে উপজেলার লাইব্রেরিতে আগে তেমন পাঠক ছিলো না। জরাজীর্ণ ভবনে নানান রকমের বই থাকলেও গড়ে এক বা দুইজন শিক্ষার্থী এখানে আসতেন। পাঠক ফেরাতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত সপ্তাহব্যাপী বই মেলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘোষণা দিয়েছিলেন লাইব্রেরিতে সর্বাধিক উপস্থিত ব্যক্তি পাবেন পুরস্কার। সেই ঘোষণায় বেড়েছে নাসিরনগর পাবলিক লাইব্রেরিতে পাঠক উপস্থিতি।
এ উপলক্ষে পুরষ্কার প্রদান অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চাতলপাড় ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক মানিরুল হোসাইন, নাসিরনগর আশুতোষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিম, নাসিরনগর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অজিত কুমার দাস, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি শুভ সিদ্দীক, গণমাধ্যমকর্মী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, সুজিত কুমার চক্রবর্তী প্রমুখ।
এ সময় মুহাম্মদ ইমরানুল হক ভূঁইয়া বলেন, বাংলাদেশের অনেক উপজেলায় পাবলিক লাইব্রেরি নেই। এটি নাসিরনগরের সৌভাগ্য যে উপজেলায় একটি পাবলিক লাইব্রেরি আছে। আমি উপজেলায় যোগদানের পর লাইব্রেরি ভিজিট করতে গিয়ে দেখতে পাই প্রতিদিন পাঠক সংখ্যা খুবই কম। পরে ফেব্রুয়ারি মাসে আয়োজিত অমর একুশে বইমেলায় আমি ঘোষণা দিয়েছিলাম পাবলিক লাইব্রেরিতে যারা সর্বাধিক দিন উপস্থিত থেকে সর্বোচ্চ বই পড়বেন, তারা আমার পক্ষ থেকে পুরস্কার পাবেন। পাশাপাশি লাইব্রেরিটি সংস্কার করা হচ্ছে। ঘোষণা অনুযায়ী এপ্রিল মাসে সর্বাধিক দিন উপস্থিত থেকে সর্বোচ্চ বইয়ের পাঠকদেরকে আমরা পুরস্কৃত করেছি।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগর উপজেলা সমিতি-ঢাকার দ্বি-বার্ষিক সাধারণ সভা ও নির্বাচন ২৬ অক্টোবর জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাজ কল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মোহাম্মদ হাফিজ উদ্দিন ভূঁইয়া সভাপতি ও বিশিষ্ট ব্যাংকার সৈয়দ মো. সফিন (সাফিন) সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।
নির্বাচিত অন্যদের মধ্যে রয়েছেন সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. শাহনেয়াজ চৌধুরী, সহ-সভাপতি মো. কাওছার মিয়া, প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাফাত মোর্শেদ শুভ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শামসুল করিম (গরিবুল্লাহ সেলিম), আবু কাওছার ভূঁইয়া, অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম মুনির, অ্যাডভোকেট লিয়াকত আলী, অ্যাডভোকেট মহিদ উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম পারভেজ ও আলী আশফাক রবিন, দপ্তর সম্পাদক আবুল হাসান চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম রিয়াদ, প্রচার সম্পাদক নাসির উদ্দিন (নাসির), শিক্ষা সম্পাদক জিয়াউল করিম (সুহেল) প্রমুখ।
নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পূর্বের এড-হক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কার্যকরী কমিটির বাকী পদগুলো কয়েকদিনের মধ্যেই ঘোষণা করা হবে।
নির্বাচন পরিচালনা করেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদের নেতৃত্বে ৪ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন পরিচালনা কমিটি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার কুন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নাসির উদ্দিনের নাম নাসিরনগর থেকে মুছে ফেলার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে সদ্য সমাপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১-(নাসিরনগর) আসনে আওয়ামীলীগ মনোনীত পরাজিত প্রার্থী ও এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বদরুদ্দোজা মোঃ ফরহাদ হোসেন সংগ্রামের বিরুদ্ধে নাসিরনগর থানায় মামলা হয়েছে।
গত রোববার নাসিরনগর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ৭৩ এবং সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী নাসিরনগর থানায় এই এজাহার দায়ের করেন। যা নাসিরনগর থানার মামলা হিসেবে রজু করা হয়। এজাহারে বলা হয়, গত ২২শে ডিসেম্বর নাসিরনগর উপজেলার কুন্ডা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত এক নির্বাচনী জনসভায় তৎকালীন সংসদ সদস্য বদরুদ্দোজা মোঃ ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম কুন্ডা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিনের নাম নাসিরনগর থেকে মুছে ফেলার হুমকি প্রদান করেন। এতে ওই ব্যক্তি (ফরহাদ হোসেন) গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ এর বিধান এবং সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা-২০০৮ এর ১১ বিধির বিধান লঙ্ঘন করেছেন মর্মে সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি নির্বাচন কমিশনে প্রতিবেদন দিয়েছেন। বর্নিত অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ৭৩ এবং সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা-২০০৮ এর বিধি ১৮ এর অধীন এজাহার দায়ের করার জন্যে নিম্ন স্বাক্ষরকারী (নাসিরনগর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম)কে নির্দেশনা প্রদান করেন।
এর আগে গত ১১ই জানুয়ারি নির্বাচন কমিশনের আদেশক্রমে উপ-সচিব (আইন) মোঃ আব্দুছ সালাম এক চিঠিতে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে অনতিবিলম্বে এজাহার দায়ের করার নির্দেশ দেন। ওই চিঠিতে বদরুদ্দোজা মোঃ ফরহাদ হোসেন সংগ্রামের বিরুদ্ধে নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন প্রেরণের উল্লেখ করে বলা হয় অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় এজাহার দায়ের করার জন্য কমিশন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
এর আগে নাসিরনগর উপজেলার কুন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নাসির উদ্দিনের নাম নাসিরনগর থেকে মুছে ফেলার হুমকি দেওয়ায় অভিযোগে সংসদ সদস্য ও আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী বদরুদ্দোজা মোঃ ফরাহদ হোসেনকে ‘তলব’ করেন নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি।
গত ২৩ ডিসেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকের অনলাইন সংস্করণে ‘চেয়ারম্যানের নাম শুছে দিতে চান এম.পি, হাত ভাঙার হুমকি আওয়ামী লীগ নেতার’ শিরোনামে খবর প্রকাশ হলে সেটির সূত্র ধরে তাকে তলব করেন নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। পরে খবরটি স্থানীয় দৈনিকসহ একাধিক জাতীয় পত্রিকায় ছাপা হয়।
নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি তলব করার পর তৎকালীন সংসদ সদস্য বদরুদ্দোজা মোঃ ফরাহদ হোসেন নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যানও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র সহকারি জজ ও নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রেজাউল হকের কাছে স্বশরীরে হাজির হয়ে লিখিত জবাব দেন।
এ ব্যাপারে নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ সোহাগ রানা বলেন, রবিবার উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার দেয়া অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়। তিনি বলেন, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, এর আগে নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রেজাউল হকের কাছে স্বশরীরে হাজির হয়ে ফরহাদ হোসেন তার লিখিত বক্তব্যে হুমকি দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, তাঁর প্রদত্ত বক্তব্যের খন্ডিত অংশের বিকৃত করে মিডিয়া কুচক্রের মাধ্যমে বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশ করা হয়েছে। লিখিত জবাবে তিনি নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা মানার অঙ্গীকার করেন।
লিখিত জবাবে তিনি উল্লেখ করেন, তার বক্তব্যের মাধ্যমে চেয়ারম্যানের কর্মকান্ডের কারণে তার নাম জনগণের হৃদয় থেকে মুছে যাবে বুঝিয়েছেন। তিনি কাউকে কোনো প্রকার হুমকি প্রদান করেননি। পত্রিকার রিপোর্টের ভিত্তিতে নেয়া নির্বাচনী তদন্ত কমিটির পদক্ষেপ প্রশংসার দাবিদার। পত্রিকার রিপোর্ট মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বিধায় কারণ দর্শানোর দায় থেকে অব্যাহতি চান তিনি।
উল্লেখ্য, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী বদরুদ্দোজা মোঃ ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম ৪৩ হাজারের বেশি ভোটে পরাজিত হন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিএনপির চেয়ারপার্সনের বহিষ্কৃত উপদেষ্টা (কলার ছড়ি প্রতীক) আলহাজ্ব সৈয়দ এ.কে একরামুজ্জামানের কাছে।
এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের বহিষ্কৃত উপদেষ্টা, বিশিষ্ট শিল্পপতি সৈয়দ এ.কে একরামুজ্জামান (কলার ছড়ি প্রতীক) ৮৯ হাজার ৪২৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী ও বি.এম. ফরহাদ হোসেন-(নৌকা প্রতীক) পেয়েছেন ৪৬ হাজার ১৮৯ ভোট।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে আজ ৭ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার হানাদার মুক্ত দিবস পালিত হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে সকালে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান রাফিউদ্দিন আহমেদ।
বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ ফজলে ইয়াজ আল হোসাইন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ সোহাগ রানা, সদর ইউপি চেয়ারম্যান পুতুল রানী দাস।
স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নূরুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা কার্ত্তিক চন্দ্র দাস, প্রেসক্লাব সভাপতি সুজিত কুমার চক্রবর্তী।
এসময় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অভিজিৎ রায়, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল-মামুন, উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ মাহবুব হোসেন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম প্রকৌশলী মোঃ আমজাদ হোসেন, এজিএম মোঃ সোহানুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষক আবদুর রহিমসহ বীর মুক্তিযোদ্ধা, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা,জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ১৯৭১-এর এই দিনে মুক্তিপাগল জনতা ও দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধারা নাসিরনগর থেকে পাক-হানাদারদের বিতাড়িত করেন। হানাদার মুক্ত করে এই দিনে নাসিরনগরের আকাশে উড়েছিল লাল সবুজের পতাকা। নাসিরনগরের ইতিহাসে এ দিনটি বিশেষ স্মরণীয় দিন।
১৯৭১ সালের ১৫ নভেম্বর পাকহানাদার বাহিনী ও এ দেশীয় দোসর রাজাকার,আল-বদরের সহায়তায় উপজেলার বেশ কিছু গ্রামে অগ্নিসংযোগ, লুটপাটসহ নারকীয় তান্ডব চালায়। পাকবাহিনীর অমানবিক নির্যাতনে বহু লোক আহত ও নিহত হয়।
মুক্তিযোদ্ধা ও সংগ্রামী জনতা পাক-বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াই করে অবশেষে ৭ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা “জয়বাংলা-জয়বাংলা”শ্লোগানে মুখরিত করতে করতে এলাকায় ঢুকতে থাকে, ক্রমেই শ্লোগানের আওয়াজ স্পষ্ট হয়, কেটে যায় শংকা। মুক্তিযোদ্ধাদের কন্ঠে কন্ঠ মিলিয়ে মুক্তির উল্লাসে মেতে উঠে স্বরস্তরের মানুষ। মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীরা এগিয়ে যায় সামনের দিকে, পিছু হটে হানাদার বাহিনী।
নাসিরনগর থানা অভ্যন্তরে (পুলিশ ষ্টেশন) স্বাধীন বাংলার আকাশে লাল সবুজের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে এই দিনে পাক-হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয় নাসিরনগর।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালিত হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে আজ ১০ জানুয়ারি বুধবার সকালে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় প্রাঙ্গনে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অসিম কুমার পালের সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য বদরুদ্দোজা মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম বলেন, আওয়ামীলীগ সরকার দেশের উন্নয়নের পাশাপাশি জনগনের জন্য কাজ করে। আশা করি আগামীতেও দেশের এ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি বক্তব্যে তিনি টানা চতুর্থ বারের মত বিজয়ী হওয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান।
এছাড়াও তিনি বক্তব্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য সৈয়দ এ. কে. একরামুজ্জামান সুখনকে অভিনন্দন জানিয়ে তার পাশে থেকে বর্তমান সরকারের উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ লিয়াকত আব্বাস টিপুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি মোহাম্মদ জিতু মিয়া, সাধারণ সম্পাদক লতিফ হোসেন, উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের আহ্বায়ক রায়হান আলী ভূঁইয়া, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্মল চন্দ্র চৌধুরী, ভলাকুট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কার্তিক চন্দ্র দাস প্রমুখ। এছাড়াও সভায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, উপজেলা আওয়ামীলীগ ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভা শেষে দলীয় নেতাকর্মীরা এক শোভাযাত্রার মাধ্যমে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন ।
চলারপথে রিপোর্ট :
তীব্র গরম আর লোডশেডিং এর কারণে ক্লাসে যখন বসাই যায় না তখন শিক্ষার্থীদের নিয়মিত গাছতলায় ক্লাস নিচ্ছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ডিগ্রি কলেজের একজন প্রভাষক। পৌরনীতি ও সুশাসন বিষয়ের ওই শিক্ষকের নাম মো. মানিরুল হোসাইন। একাডেমিক ভবনের সামনে গাছতলায় সোমবার বেলা ১টায় দেখা যায় ক্লাস নিচ্ছেন তিনি।
জানা যায়, উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৫ কি.মি. দূরে অবস্থিত চাতলপাড় ডিগ্রি কলেজ হাওরের উচ্চ শিক্ষার একমাত্র প্রতিষ্ঠান। বর্তমান সময়ে লোডশেডিং আর তীব্র গরমে শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে যেতে চায় না। উপজেলা সদরের তুলনায় আশেপাশের ইউনিয়ন গুলোতে লোডশেডিং এর মাত্রাও ব্যাপক। এই পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত গাছতলায় ক্লাস নিবেন ওই শিক্ষক।
২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থী মান্নান মিয়া জানান, সকালে কিছুটা তাপমাত্রা কম থাকলেও বেলা ১১টার পর আর ক্লাসে বসা যায় না। কারেন্ট তো থাকেই না। দুপুর বেলায় তো ক্লাস করার কথা ভাবাই যায় না। স্যার গাছ তলায় ক্লাস নেওয়ায় আমাদের গরম কম লাগে আর ক্লাসও মিস হয় না।
আরেক শিক্ষার্থী জোনাকী বেগম জানান, আমরা গরমের কারণে ক্লাসে বসতে পারি না। বিদ্যুৎ তো থাকেই না। অনেকে গরম সহ্য করতে না পেরে কলেজে আসে না আবার আসলেও চলে যায়। গাছ তলায় ক্লাস করলে এতটা গরম লাগে না।
শিক্ষক মো. মানিরুল হোসাইন বলেন, গরমের কারণে ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাসে বসতে পারে না। অনেকে আবার কলেজে আসতেও চায় না। সামনে এইচএসসি পরীক্ষা হাতে সময় তেমন নেই। তাই গাছতলাই পড়াই, তবু পড়ুক।
চাতলপাড় ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. ওমর আলী বলেন, তীব্র গরমে আমার ওই শিক্ষক গাছ তলায় ক্লাস নেয়। আমি তার এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।