অনলাইন ডেস্ক :
ইসরায়েলি সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ৬০টির বেশি রকেট ছুড়েছে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। ১৫ মে বুধবার রাতে চালানো ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে ১৬ মে বৃহস্পতিবার এই হামলা চালায় ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীটি।
এক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, তারা ইসরায়েলি সামরিক অবস্থান লক্ষ্য করে ৬০টির বেশি কাতিউশা রকেট ছুড়েছে।
বুধবার দিবাগত রাতে লেবাননের বেক্কা এলাকায় চালানো ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে গোষ্ঠীটি।
তবে, ইসরায়েলি হামলায় কেউ নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। তবে এএফপি হিজবুল্লাহর একটি সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, ইসরায়েলি বোমা গোষ্ঠীটির একটি সামরিক ক্যাম্পে আঘাত হেনেছে।
এদিকে হিজবুল্লাহর হামলায় কী ধরনের ক্ষতি হয়েছে সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেয়নি ইসরায়েল।
চলারপথে রিপোর্ট :
রেলপাত বসানোর কাজ পুরোপুরি শেষ। আনুষঙ্গিক অন্যান্য ফিটিংস লাগানোর কাজও শেষ হয়েছে। চলছে শেষ মুহূর্তের ঘষামাজা। সক্ষমতা যাচাইয়ের কাজও একই সঙ্গে চলমান।
সংশ্লিষ্টরা নিয়মিত আসছেন এর দেখভাল করতে। বলা চলে, পুরোপুরি প্রস্তুত আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ। অপেক্ষা ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে নতুন দিগন্ত উন্মোচনের। আশা করা হচ্ছে, এ রেলপথ চালু হলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়বে। যাত্রী চলাচলে আরো ব্যাপকতা পাবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী উল্লিখিত পথে মঙ্গলবার পরীক্ষামূলকভাবে এ পথে ট্রেন চালানোর কথা। তবে শোকের মাসের কারণে সেটি পিছিয়ে দেওয়া হয়। বুধবার এ বিষয়ে ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য সভায় পরীক্ষামূলক চলাচলের দিনক্ষণ ঠিক হতে পারে।
সেপ্টেম্বরে পরীক্ষামূলক চলাচলের পর ওই মাসেই দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী রেলপথটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করতে পারেন বলে আভাস পাওয়া গেছে।
এদিকে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মঙ্গলবার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি দেখতে আসেন। প্রায় ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তারা। প্রকল্প কর্মকর্তারা পরিদর্শনের সময় গত কয়েক দিনের মতো ‘গ্যাং কার’ নামে পরিচিত ‘ট্র্যাক কার’ পরিচালনা করা হয়। রেলওয়ের বিশেষ ওই কারটি আখাউড়ার গঙ্গাসাগর থেকে সীমান্তবর্তী শিবনগর পর্যন্ত ৬.৭৮ কিলোমিটার অংশ পর্যন্ত চলাচল করে।
গত ১৬ আগস্ট ‘গ্যাং কার’ বা ‘ট্র্যাক কার’ চালানো হয়ে। ‘গ্যাং কার’ নামে পরিচিত ‘ট্র্যাক কার’ বিশেষ আকৃতিতে নির্মিত রেলের ‘ইঞ্জিন’। এর সঙ্গে দুটি বগি সংযুক্ত করে উল্লিখিত পথে চালানো হয়।
দুই দেশের এ রেলপথের দৈর্ঘ্য ১২.২৪ কিলোমিটার। এর মধ্যে বাংলাদেশ অংশে ৬.৭৮ কিলোমিটার। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ৪৭৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়ন ৫৭ কোটি পাঁচ লাখ টাকা এবং ভারতীয় ঋণ ৪২০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।
২০১৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্প নির্মাণকাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। প্রথমে প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় ১৮ মাস। এরপর করোনার প্রভাবসহ নানা কারণে পাঁচ দফা মেয়াদ বাড়ানো হয়। সর্বশেষ নির্মাণকাজের মেয়াদ বাড়িয়ে আগামী বছরের জুন নাগাদ করা হয়েছে।
প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভারতের নয়াদিল্লির টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের বাংলাদেশ প্রধান শরৎ শর্মা মঙ্গলবার পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের বলেন, ‘গ্যাং কারে উঠে বাংলাদেশ অংশের পুরো রেললাইন পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। আরো কী কী কাজ করা দরকার সেটি পর্যবেক্ষণ করা হয়। কয়েক দিনের মধ্যেই রেলপথটি পুরোপুরি চলাচলের উপযোগী করে তোলা হবে।’
বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী ও আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মো. আবু জাফর মিয়া বলেন, ‘সীমান্ত পর্যন্ত রেললাইন বসানো হয়ে গেছে। ফিটিংস লাগানোও শেষ হয়েছে। লেভেল ঠিক রাখার কাজ চলছে। ইমিগ্রেশন ভবনের কাজ যেটুকু বাকি আছে, সেটি দ্রুত শেষ করা হবে।’ প্রকল্পের ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
একাধিক সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে রেলওয়ের এ সংযোগ প্রকল্পটি চালু হলে মূলত ভারতীয়রাই বেশি লাভবান হবেন। বিশেষ করে ভারতীয়রা আগরতলা থেকে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে কলকাতা গেলে বর্তমানের চেয়ে তিন ভাগের এক ভাগ সময় কম লাগবে। সূত্র : কালেরকণ্ঠ
অনলাইন ডেস্ক :
ব্যাংকক সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা তাভিসিনের আন্তরিকতাপূর্ণ একান্ত বৈঠক, দ্বিপক্ষীয় আলোচনা এবং দু’দেশের মধ্যে একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক ও একটি লেটার অভ ইন্টেন্ট স্বাক্ষরিত হয়েছে।
গতকাল ২৬ এপ্রিল শুক্রবার দুপুরে থাইল্যান্ডের রাজধানীর গভর্নমেন্ট হাউজে বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এ তথ্য জানান।
দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে এ সময় অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি সংক্রান্ত চুক্তি, জ্বালানি, পর্যটন ও শুল্ক সংক্রান্ত পারস্পরিক সহযোগিতা বিষয়ক তিনটি সমঝোতা স্মারক এবং মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা শুরুর জন্য একটি লেটার অভ ইন্টেন্ট স্বাক্ষরিত হয়।
দেশের অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ব্যাংককে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবদুল হাই এবং থাইল্যান্ডের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. প্রাণপ্রী বাহিদ্ধা নুকারা প্রমুখ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
ড. হাছান জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা তাভিসিনের অত্যন্ত আন্তরিকতাপূর্ণ পরিবেশে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথমে তারা একান্তে কথা বলেন, এরপর দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা সমস্যাসহ সবিস্তারে অনেকগুলো বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
থাইল্যান্ডের সঙ্গে বাংলাদেশের যে ভ্রাতৃপ্রতিম ও বন্ধুপ্রতিম সম্পর্ক, সেটা আরও জোরদার, বহুমাত্রিক ও বিস্তৃত করার ব্যাপারে দুই প্রধানমন্ত্রী গভীর আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন, বলেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি বর্ণনা করার পাশাপাশি বাংলাদেশের ১০০টি ইকোনমিক জোন ও আইটি ভিলেজে থাই বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীরা চাইলে প্রয়োজনে বাংলাদেশে তাদের জন্য বিশেষ ইকোনমিক জোন করার কথাও বলেছেন।
মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত হয়ে আসা প্রায় ১.৩ মিলিয়ন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়েছেন। তাদের জন্য বাংলাদেশে যেসব সমস্যা উদ্ভূত হচ্ছে বৈঠকে সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান ড. হাছান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, থাইল্যান্ডেও অনেক রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন, এখনো অনেকে আসছেন। থাইল্যান্ডও এই পালিয়ে আসা মানুষের ভারে জর্জরিত। এই সমস্যা সমাধানে উভয় প্রধানমন্ত্রী দুই দেশের একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন।
এ দিন গভর্ণমেন্ট হাউজে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রদত্ত রাষ্ট্রীয় গার্ড অব অনারে থাই প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে ছিলেন। শেখ হাসিনা তার সৌজন্যে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী আয়োজিত রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজে যোগ দিয়ে বক্তব্য রাখেন।
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার ব্যাংককে পৌঁছান। বৃহস্পতিবার ব্যাংককে জাতিসংঘ সম্মেলন কেন্দ্রে জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসকাপ) ৮০তম অধিবেশনে যোগ দেন শেখ হাসিনা। সেখানে দেওয়া ভাষণে সব ধরনের আগ্রাসন ও নৃশংসতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে এবং যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। সফর শেষে ২৯ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা।
অনলাইন ডেস্ক :
বৃষ্টিতে যেমন ছাতা লাগে, তেমনই খুব রোদেও ছাতা লাগে।পৃথিবীর গায়ে বেশি রোদ লাগছে।যার থেকে বাড়ছে গরম।যাতে রোদ না লাগে সেজন্য এবার মহাকাশে বিজ্ঞানীরা ছাতা লাগাচ্ছেন।এভাবে পৃথিবীর গায়ে রোদ পড়া বাড়তে থাকলে গোটা বিশ্বটা তেতে উঠতে বেশি দেরি হবেনা। তাই পৃথিবীর গায়ে এভাবে রোদ পড়া আটকাতে হবে এই অভিনব পথে হাটছেন বিজ্ঞানীরা।
রোদ তো সূর্যের আলো। তাই সূর্যের আলোকেই ঢাকতে হবে। যাতে পৃথিবীতে উত্তাপ কম এসে পড়ে। সেজন্য সূর্য আর পৃথিবীর মাঝে ছাতা লাগাতে চলেছেন বিজ্ঞানীরা।
উষ্ণায়নের ধাক্কা সামাল দিতে বিজ্ঞানীরা সাধারণ মানুষের ছাতা দিয়ে মাথা ঢাকার পথে হাঁটলেন। সূর্যের রশ্মিকে যদি ছাতার মধ্যে দিয়ে পৃথিবীর গায়ে এসে পড়তে হয় তাহলে তার উত্তাপ ও তেজ অনেকটাই নিঃস্পৃহ হয়ে যাবে। তাতে পৃথিবী রক্ষা পাবে।
হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অফ অ্যাস্ট্রোনমি-র এক মহাকাশ বিজ্ঞানী ইসভান জাপুদি এই অভিনব উপায়ের প্রস্তাব দিয়েছেন। যা বিশ্বের তাবড় বিজ্ঞানীদের মনে ধরেছে। তাই এই পথেই এগোতে চাইছেন তাঁরা। এজন্য অবশ্য যে বিশাল আয়োজন প্রয়োজন তা পৃথিবী থেকে ওভাবে পাঠানো সম্ভব নয়। কারণ তার ওজন অনেক হবে। আধুনিক প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে অনেক হাল্কা উপাদানের ঢাকা মহাকাশে পাঠানো হবে। যা দড়ির মত বাঁধা থাকবে। আর তার কাউন্টার ওয়েটের কাজটা করে দেবে অন্য গ্রহাণু।
পুরো ডিজাইন নিয়ে এখন কাটাছেঁড়া শুরু হয়েছে। তবে যে অভিনব ভাবনা জাপুদি উপহার দিলেন তা যদি বাস্তবায়িত করা সম্ভব হয় তাহলে উষ্ণায়নের চিন্তা অনেকটা কমবে। এখানে বলা প্রয়োজন যে আগেও এমন ছাতা নিয়ে ভাবা হয়েছিল। কিন্তু তা এতটাই ভারী হচ্ছিল যে তা মহাকাশে পাঠানোর উপায় ছিলনা। জাপুদি তাই অনেক হাল্কা ও নবতম প্রযুক্তি ব্যবহারের হদিশ দিয়েছেন।
অনলাইন ডেস্ক :
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত ইরানি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি আজ চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন। দুপুরে জন্মস্থান মাশহাদে জানাজা শেষে সমাহিত করা হবে এই মহান নেতা। এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে খোরাসানে প্রিয় প্রেসিডেন্টকে শেষ বিদায় জানাবেন সর্বস্তরের মানুষ।
২২ মে বুধবার তেহরানে ৫০ দেশের ৬৮ জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা মরদেহের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এতে অংশ নেন কাতার, ইরাক, পাকিস্তান ও সিরিয়া, তুর্কমেনিস্তানের জাতীয় নেতাসহ বিশিষ্টজনেরা।
ওই দিন সকালে তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ে রাইসির তৃতীয় জানাযা পড়ান ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। পরে নিহতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন তিনি।
গত রবিবার ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হন।
সেদিন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি একটি বাঁধ উদ্বোধন করতে আজারবাইজান সীমান্তবর্তী এলাকায় গিয়েছিলেন। সেখানে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভও ছিলেন। সেখান থেকে তিনটি হেলিকপ্টারের বহর নিয়ে ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে ফিরছিলেন ইব্রাহিম রাইসি ও তার সঙ্গে থাকা অন্য কর্মকর্তারা। পথে পূর্ব আজারবাইজানের জোলফা এলাকার কাছে পাহাড়ি এলাকায় প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। তবে অন্য দুটি হেলিকপ্টার নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে।
ঘন কুয়াশার কারণে দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টার টানা অভিযান শেষে গত সোমবার হেলিকপ্টারটির খোঁজ পায় উদ্ধারকারী দল। হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্টসহ নয়জন নিহত হন।
সূত্র: আলজাজিরা।
অনলাইন ডেস্ক :
সৌদি আরবের আল নাজাদ অঞ্চলের আপিপ শহরে কাজে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনায় তিন জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন।
১৩ জুন বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা ও সৌদি সময় সকাল ৯টার দিকে আপিপ থেকে নির্মাণ কাজে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার সময় তিন শ্রমিকের মধ্যে সবুজ গাড়ির চালক ছিলেন। নিহতরা হলেন সবুজ চৌকিদার (৩৮), মো. সাব্বির (২১) ও মো. রিফাত (২০)।
নিহত শ্রমিকদের মধ্যে সবুজ ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরদুখিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের পশ্চিম বিশকাটালি গ্রামের জামাল চৌকিদারের ছেলে। অপর নিহত সাব্বির পার্শ্ববর্তী হাইমচর উপজেলার আলগী দক্ষিণ ইউনিয়নের চরভাঙা গ্রামের ছৈয়াল বাড়ির ইসমাইল ছৈয়ালের ছেলে এবং রিফাত আলগী উত্তর ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে।
আজ ১৪ জুন শুক্রবার সকালে নিহত তিন শ্রমিকের বাড়িতে গিয়ে শোকের মাতম দেখা গেছে। আসন্ন ঈদুল আজহার সময় দুর্ঘটনাটি প্রতিটি পরিবারে হৃদয় বিদারক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। রিফাত তিন বছর আগে সৌদি আরবে যায়। সে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতো।
রিফাতের বাবা বলেন, কয়েকদিন আগেও ছেলের সাথে কথা হয়েছে। বাবার আবেদন ছিল ছেলে যেন বাড়িতে এসে ঈদ করে। কিন্তু তা আর হলো না। রিফাত খুব কম বয়সী। এমন দুর্ঘটনায় সবাই মর্মাহত। ছেলেটি তাদের সংসারে উপার্জনের হাল ধরেছিল।
নিহত সাব্বিরের বাবা ইসমাইল ছৈয়াল ও মা ফাতেমা বেগমের একটাই দাবি তাদের সন্তানকে দেশে আনার জন্য যেন সরকারিভাবে সহযোগিতা করা হয়। মা ফাতেমা বেগম ছেলের শোকে অনেকটা বাকরুদ্ধ। প্রতিবেশীরা সান্ত্বনা দিয়েও মাকে বুঝাতে পারছেন না। কিছু সময় পর পর ছেলের নাম নিয়ে কেঁদে উঠেন।
সাব্বিরের বোন স্নেহা বলেন, ভাই আমাকে ফোনে অনেক স্বপ্নের কথা বলতেন। দেশে আসলে কি কি করবেন। গত কয়েকদিন আগে কথা হলে আমি দেশে আসার জন্য বলি। কিন্তু ভাইয়ের আর আসা হলো না। দুই ভাইয়ের মধ্যে আমি ছোট। বড় ভাইও সৌদিতে থাকেন। সাব্বির ও রিফাতকে সৌদিতে কাজের জন্য নিয়ে যায় সবুজ চৌকিদার। তিনি তাদেরকে আপিপ শহর ও আশপাশের এলাকায় ভবন নির্মাণের কাজ করাতেন। নিজেদের গাড়িতে করে তারা কাজে আসা-যাওয়া করতেন। গাড়িটির চালক ছিলেন সবুজ।
জামাল চৌকিদার বলেন, তার ছেলে সবুজ প্রায় ১৮ বছর সৌদিতে থাকেন। বেশ কয়েকবার দেশে এসেছেন। তার স্ত্রী ও দুই কন্যা সন্তান রয়েছে। তাদেরকেও ভ্রমণ ভিসায় কয়েকবার সৌদিতে নিয়েছেন। সর্বশেষ দুই সপ্তাহ পূর্বে দেশ থেকে স্ত্রী ও সন্তানদের সৌদিতে নিয়েছেন। তারা এখন সৌদি আরবে আছেন।
তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশি সময় ৪টায় সবুজসহ তিন জনের দুর্ঘটনার খবর পান। রাত ১০টায় সেখানে অবস্থানরত স্বজনদের মাধ্যমে জানতে পারেন দুর্ঘটনার পর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
সবুজের মৃত্যুতে তার মা ও স্বজনরা শোকাহত। তার মৃত্যুতে ছেলের বউ ও নাতনিরা কেমন আছেন। তাদের কথা মনে করে কেঁদে উঠেন। আমি আমার ছেলেকে নিজ চোখে এবং একটু ছুঁয়ে দেখতে চাই।
নিহত তিনটি পরিবারের দাবি, তাদের সন্তানের মরদেহ আনার বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো যাতে সহযোগিতা করে।
হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা নাজনীন তৃষা জানান, সৌদি আরবে দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে আমাদের এখন পর্যন্ত জানানো হয়নি। তবে আমাদের জানালে তাদের জন্য যেসব করণীয় আছে, তাদের সবধরনের সহযোগিতা করা হবে।