চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার সাতমোড়া বিদ্যালয়ের একটি বহুতল ভবনের ছাদের কয়েকটি অংশ ধ্বসে দুইজন শিক্ষক আহত হয়েছেন। গত রবিবার এ ঘটনা ঘটে। আহত দুই শিক্ষক হলেন বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক রফিকুল ইসলাম (৩৩), শরীরচর্চা শিক্ষক মোঃ আল আমিন (৩৫)। আহত দুজন শিক্ষকের একজনের মাথায় এবং অপর একজনের হাতে গুরুতর জখম হয়।
তাদেরকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, বিদ্যালয়ের দক্ষিণ-পশ্চিম পাশের বহুতল ভবন জরাজ্বীর্ণ। যেকোনো মুহূর্তে ছাদ ধ্বসে বড়ধরনের দুঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ অলিউল্লাহ জানান, ১৯৯৫ সালে ভবটি নির্মিত হলেও তো জরাজ্বীর্ণ হয়ে পড়েছে। অনেকদিন আগে ওইভবনের ছাদের ফাটল ধরেছে। আজকের ছাদের কয়েকটি অংশ ধসে দুইজন শিক্ষক আহত হয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে ছাদ ধসে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা হয়েছে। আমি বিষয়টি ইতিমধ্যে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল মান্নান ভবনটি দ্রুত সংস্কার বা ভবনটি দ্রুত অপসারণ করে নতুন ভবন করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।
এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ জুলফিকার হোসেন জানান বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিষয়টি আমাকে অবগত করেছেন। ভবনটি ব্যবহার না করতে নির্দেশ দিয়েছি এবং আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জানিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর উপজেলায় কথা কাটাকাটির জেরে লতিফা বেগম (৪২) নামে এক নারীকে পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দেবরের বিরুদ্ধে। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ ২২ মার্চ বুধবার তিনি মারা যান।
গত রবিবার উপজেলার রসুলুল্লাহবাদ ইউনিয়নের উত্তর দাররা গ্রামে ভাবির শরীরে পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে দেন বলে জানা গেছে।
লতিফা বেগম ওই এলাকার মো. জাকারিয়ার স্ত্রী।
মো. জাকারিয়া জানান, কয়েক দিন আগে আমার ছোট ভাই জালাল মিয়ার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়েছিল। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিল জালাল। দুপুরে আমি বাড়িতে ছিলাম না। লতিফা পিঠা তৈরি করছিল। এ সুযোগে জালাল পেছন থেকে লতিফার গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে আগুনে তার সারা শরীর ঝলসে যায়।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, এ বিষয়ে থানায় একটি মামলা হয়েছে। তাকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। খুব শীঘ্রই তাকে গ্রেফতার করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর উপজেলায় তিতাস নদীতে ব্রিজের পিলারের সঙ্গে ধাক্কায় নৌকা ডুবিতে সংঘর্ষে নবম শ্রেণির ছাত্রীসহ ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আজ ০১ মার্চ বুধবার বিকালে শ্রীতারামপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
তাৎক্ষণিকভাবে রাত্রি চৌধুরী (১৫) নামে একজনের পরিচয় জানা গেছে। সে নবীনগর উপজেলার বড়াইল গ্রামের প্রহল্লাহের মেয়ে। সে বড়াইল উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। মৃত্যুর সংবাদে নিহত ছাত্রীর বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। তার মরদেহ দেখার জন্য আত্মীয়স্বজন ও সহপাঠীরা ভিড় করছেন।
পুলিশ ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বুধবার দুপুরে ২০-২৫ জন যাত্রী নিয়ে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা পার্শ্ববর্তী নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার রায়পুরা ইউনিয়নের বাঁশগাড়ি যাচ্ছিল। পথিমধ্যে শ্রীতারামপুর-গোপীনাথপুর গ্রামের মাঝে তিতাস নদীতে নির্মিত ব্রিজের পিলারের সঙ্গে ধাক্কায় নৌকাটি তলিয়ে যায়। এতে দুইজন মারা যায়।
নিহত রাত্রির মা সন্ধ্যা রানী বলেন, রাত্রি স্কুল ছুটি নিয়ে দাদার বাড়ি বাঁশগাড়ি যাচ্ছিল। নৌকায় ২০-২৫ জন লোক ছিল।
নবীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, নৌকাডুবির ঘটনায় দুইজন মারা গেছে। একজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। ব্রিজের সঙ্গে ধাক্কায় নৌকাটি ডুবে যায়।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের যৌথ আয়োজনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত হয়েছে।
এছাড়াও ব্যানার-পোস্টার-ফেস্টুন সংবলিত একটি বর্ণাঢ্য র্যালি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর পৌর শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। ৮ মার্চ শনিবার বেলা ১১টায় উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন নারী ও কন্যার উন্নয়ন এই প্রতিপাদ্যে নবীনগর উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিব চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের কিশোর-কিশোরী ক্লাব প্রকল্পের আবৃত্তি শিক্ষক শুভেন্দু চক্রবর্তী শুভ এর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য প্রদান করেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সুমন ভূঁইয়া, নবীনগর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শ্যামা প্রসাদ চক্রবর্তী শ্যামল, উপজেলা আনসার-ভিডিপি কর্মকর্তা মো. তৌহিদ মিয়া, পৌরসভার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. জামাল উদ্দীন, নারী উদ্যোক্তা ইসরাত জাহান সাবা, শারমিন আক্তার প্রিয়া, জান্নাতুল ফেরদৌস প্রমুখ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নবীনগর উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের নারী প্রশিক্ষণার্থী ও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের নারী উদ্যোক্তারা।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর উপজেলার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম ছিল নদীপথ। তখন তিতাস ও বুড়ি নদী পানিতে ছিলো টইটম্বুর। বর্ষা মৌসুমে দু’কূল উপচে পানি খালবিল, মাঠঘাট, হাওড় বিলে গিয়ে পড়ত। বারো মাসই এলাকার মানুষের যোগাযোগের একমাত্র ভরসা ছিল নৌযান। কিন্তু এখন ভরা বর্ষা মৌসুমেও সেই নদীতে পানি থাকে না বললেই চলে। পলি জমে কোথাও কোথাও ভরাট হয়ে গেছে। কোথাও আবার ধান চাষ হচ্ছে। হাট-বাজার ও বাসা-বাড়ির ময়লা-আবর্জনা নদীতে ফেলা হচ্ছে। ফলে এক সময়ের প্রমত্তা তিতাস ও বুড়ি নদী এখন মরা খাল আর ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। একসময় দিনরাত তিতাস ও বুড়ি নদীতে উত্তাল ঢেউ আর জাহাজের সাইরেন শোনা গেলেও এখন এর অস্তিত্বই হারিয়ে যেতে বসেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সহ নবীনগর উপজেলায় উন্নয়নের নামে ফসলি জমি ও খাল-বিল দখল করে সড়ক, স্থাপনা, বসতবাড়ি, হোটেল ও ফল ব্যবসায়ীরা বর্জ্য ফেলার কারনে তিতাস ও বুড়ি নদী এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজীব চৌধুরী নবীনগর উপজেলায় যোগদান করার পর নবীনগর উপজেলা সহ নবীনগর পৌর প্রশাসকের দ্বায়িত্ব নেয়ার পর তিতাস ও বুড়ি নদী রক্ষায় নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। যোগদানের মাত্র কয়েক মাসেই সামাজিক নানা ইস্যুতে কাজ করছেন তিনি। নবীনগর সদরের তিতাস ও বুড়ি নদীকে আগের রূপে ফিরিয়ে আনতে তিনি এলাকার স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে, আবার কখনো একাই তিতাস ও বুড়ি নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে দাঁড়িয়ে যান। নবীনগর সদর বাজারের ঘুরে ঘুরে নদী রক্ষায় জনসচেতনতা মূলক লিফলেট বিতরন করে বেহাল দশার চিত্র তুলে ধরছেন জাতীয় গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে।
সম্প্রতি ইউএনও রাজীব চৌধুরী কে দেখা যায়, নবীনগর পৌর সভার উদ্যোগে তিতাস ও বুড়ি নদীর পৌর সদরের শহর রক্ষা বাধে ফেলা ময়লা পরিস্কার করছেন। এবং নদীর পাড়ে জনসচেতনতামূলক ব্যনার টানিয়ে পৌর ডাস্টবিনে নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলার জন্য বিনীতভাবে আহ্বান জানাচ্ছেন।
স্থানীয় সূধি সমাজের নেতৃবৃন্দরা জানান, তিতাস ও বুড়ি নদীর নাব্যতা সংকটে যখন হারিয়ে যেতে বসেছে তখন ইউএনও রাজীব চৌধুরী সদরের শহর রক্ষা বাধের ময়লা আবর্জনা স্তূপ পরিস্কার করে বিভিন্ন পয়েন্টে ভ্রাম্যমাণ ডাস্টবিন স্থাপন করে সচেতনা মূলক লিফলেট বিতরণ করছেন। তিনি একাই দায়িত্ব নিয়ে নদী রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছেন। আমাদের উচিত ইউএনও রাজীব চৌধুরীর পাশে দাঁড়ানো।
এ বিষয়ে নবীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক রাজীব চৌধুরী বলেন,‘নদী বাঁচলে নবীনগর বাঁচবে’ প্রতিপাদ্যকে উপজীব্য করে নবীনগর পৌরসভার উদ্যোগে তিতাস নদীকে দূষণমুক্ত করতে আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। তিতাস পাড়ের ময়লা প্রতিদিন পৌরসভার ডাম্পিং স্পটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। নদী পাড়ে সরবরাহ করা হয়েছে পর্যাপ্ত ডাস্টবিন। সচেতনতামূলক কার্যক্রম হিসেবে ব্যবসায়ীদের মাঝে লিফলেট বিতরণ করেছি। বিভিন্ন জায়গায় তিতাসকে দূষণমুক্ত রাখতে সচেতনতামূলক ব্যানার টাঙানো হয়েছে। তিতাস ও বুড়ি নদী রক্ষার কার্যক্রমকে টেকসই করতে নদীর পাড়ে স্থাপন করা হচ্ছে ১৬ টি সিসি ক্যামেরা। তিতাস ও বুড়ি নদী রক্ষায় নবীনগর উপজেলা ও পৌরবাসীর সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।