অনলাইন ডেস্ক :
কক্সবাজারের নবগঠিত ঈদগাঁও উপজেলায় একজন খুন ও দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ। মঙ্গলবার (২১ মে) সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এরপর ভোট গণনা শেষে সন্ধ্যার পর থেকে ফলাফল আসতে শুরু করে। এবার ১৫৬ উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
দ্বিতীয় ধাপে বিজয়ী যারা:
ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ছাইদুর রহমান স্বপন ও আখাউড়ায় মনির হোসেন চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন। আর আখাউড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মো. মনির হোসেন ঘোড়া প্রতীকে ২৮ হাজার ৩০৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
ছাইদুর রহমান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এমপির ফুফাতো ভাই ও কুটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক এবং মনির হোসেন আখাউড়া উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক। ছাইদুর রহমান স্বপন কাপ-পিরিচ প্রতীকে ৮৬ হাজার ৬৯৮ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল কাওসার ভূঁইয়া জীবন আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৩৯ হাজার ৯৫৯ ভোট।
আখাউড়া উপজেলায় মো. মনির হোসেন ঘোড়া প্রতীকে ২৮ হাজার ৩০৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ১৪ হাজার ৫৬৩ ভোট।
ঝালকাঠি: ঝালকাঠি সদরে চেয়ারম্যান পদে আনারস প্রতীক নিয়ে খান আরিফুর রহমান এবং নলছিটি উপজেলায় সালাহউদ্দিন খান সেলিম বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। ঝালকাঠি সদরে খান আরিফুর রহমান আনারস প্রতীকে ৩৩ হাজার ৯৪৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সুলতান হোসেন খান দোয়াত-কলম প্রতীকে পেয়েছেন ২৫ হাজার ৯৭১ ভোট। নলছিটি উপজেলায় সালাহউদ্দিন খান সেলিম ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন অ্যাডভোকেট জিকে মোস্তাফিজুর রহমান।
ঝালকাঠির রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আব্দুস ছালেক মঙ্গলবার রাতে বেসরকারিভাবে দুই উপজেলার প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করেন।
জয়পুরহাট: জয়পুরহাট সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মো. হাসানুজ্জামান মিঠু মোটরসাইকেল প্রতীকে ৪৪ হাজার ৪৭৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এইএম মাসুদ রেজা আনারস প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৩৬ হাজার ৯৭৯টি।
অপরদিকে, পাঁচবিবি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন সাবেকুন নাহার। তিনি ঘোড়া প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৩৮ হাজার ৩৯টি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভিপতি আবু বকর সিদ্দিক আনারস প্রতীক পেয়েছেন ১১ হাজার ৬৪৭ ভোট।
কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উপজেলার চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল মুকুল। ভাইস চেয়ারম্যান পদে মোট ২৫ হাজার ২৬১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন (পালকি প্রতীক) বুলবুল হাসান পিপুল। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. রাজীবুল হাসান রাজু ১১ হাজার ৯৯২ ভোট পেয়েছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে (তীর ধুনুক প্রতীক) মোছা. নার্গিছ আক্তার মোট ৩৬ হাজার ৬০০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী (হাঁস প্রতীক) মোছা. ইন্দোনেশিয়া পেয়েছেন ১৩ হাজার ৯৬১ ভোট।
চৌগাছা (যশোর): যশোরের চৌগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএম হাবিবুর রহমান। আনারস প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৩৩ হাজার ৫৬৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ড. মোস্তানিছুর রহমান পেয়ছেন ২৮ হাজার ৯৮০ ভোট।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৬ হাজার ৬০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিমা খাতুন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আকলিমা খাতুন লাকি পেয়েছেন ১৫ হাজার ৩৯০ ভোট। আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক মো. শামিম রেজা নির্বাচিত হয়ে যাওয়ায় মঙ্গলবার দুটি পদে ভোট গ্রহণ করা হয়।
কুমিল্লা: জেলার সদর দক্ষিণ ও বরুড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দুই প্রার্থী প্রথমবারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন। মঙ্গলবার রাতে ভোট গণনা শেষে রিটার্নিং কর্মকর্তা পঙ্কজ বড়ুয়া বেসরকারিভাবে তাদের নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
ঘোষিত ফলাফল থেকে জানা যায়, কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাবলু, তিনি হেলিকপ্টার প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২০ হাজার ৮৬৩টি ভোট। তার নিকটতম প্রার্থী আখতারুজ্জামান রিপন আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ১৪ হাজার ৭৯০ ভোট। বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাপ পিরিচ প্রতীকের প্রার্থী গোলাম সরোয়ার পেয়েছেন ১৪ হাজার ৩১৪ ভোট।
অন্যদিকে, বরুড়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রথমবারের মতো আনারস প্রতীক নিয়ে হামিদ লতিফ ভূঁইয়া ৮৯ হাজার ৬৯২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর শ্যালক। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান হেলিকপ্টার প্রতীকের প্রার্থী এ এন এম মইনুল ইসলাম পেয়েছেন ৪২ হাজার ৫৪ ভোট।
বগুড়া: বগুড়ার আদমদিঘী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে সিরাজুল ইসলাম খান রাজু আনারস প্রতীকে নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচিত রাজু বগুড়া-৩ (আদমদিঘী দুপচাঁচিয়া উপজেলা) আসনের এমপি সাইফুল্লাহ আল মেহেদী বাধনের বাবা। এমপি বাধনের মা জেলা পরিষদের বগুড়া ৩নং সংরক্ষিত মহিলা সদস্য শামীমা আখতার মুক্তা।
চেয়ারম্যান পদে রাজু নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টায় নিশ্চিত করেছেন বগুড়া রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মেসবাউল করিম। রাজুর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন মোটরসাইকেল প্রতীকের রাশেদুল ইসলাম রাজা।
জেলার দুপচাঁচিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে আহম্মেদ বিপ্লব, কাহালুতে হাবিবুল হাসান কবিরাজ সরুজ এগিয়ে আছেন। দ্বিতীয় ধাপে মঙ্গলবার বগুড়া জেলার তিন উপজেলার নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে তিনটি উপজেলার ২৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৯ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১২ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
নির্বাচনে কাহালু উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৩, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন, দুপচাঁচিয়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পেদে ৩ জন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, আদমদীঘি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
উল্লেখ্য, ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। মঙ্গলবার দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। আগামী ২৯ মে তৃতীয় ও ৫ জুন হবে চতুর্থ ধাপের উপজেলা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ।
অনলাইন ডেস্ক :
আজ পহেলা বৈশাখ। পাহাড় থেকে সমতল। মেঠোপথ থেকে রাজপথ। নববর্ষের আনন্দে ভাসছে সারা দেশ। আজকের দিনটি শুধুই বাঙালির। এই দিনে সে তার অস্তিত্বের জানান দেয় প্রাণে প্রাণে, উৎসবে। বিশ্বকে বলে দেয়-আমি বাংলাদেশি, আমি বাঙালি; আমার আছে গর্বের ইতিহাস। সংকল্প জানায় এক নতুন আগামীর; অতীত বেদনাকে ভুলে প্রতিনিয়ত এগিয়ে যাওয়ার। এ জাতির সবচেয়ে বড় অসাম্প্রদায়িক উৎসব পহেলা বৈশাখ। বিগত বছরের জরাকে দূরে ঠেলে আজ বাংলাভাষীদের স্বপ্ন দেখার দিন, নতুন আলোয় অবগাহনের দিন, আনন্দে মেতে উঠারও দিন। হাজার বছরের ঐতিহ্যের বহমানতায় বাংলাদেশের ঘরে ঘরে আজ উৎসবের আমেজ। এ দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদের জাঁতাকলে পিষ্ট হয়েছে প্রায় ১৬ বছর। এ সময়ে আনন্দ, উচ্ছ্বাস আর ভাবের প্রকাশ করতে হয়েছে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রিত এক পরিবেশে। ফ্যাসিবাদী সরকারের মর্জিমতো। বাঁধভাঙা উল্লাসে সবাই তখন ভাসতে পারেনি। সেই ফ্যাসিবাদের নাগপাশ কাটিয়ে এ বছর এক মুক্ত আবহে, মুক্ত বাতাসে বাঙালির জীবনে এসেছে পহেলা বৈশাখ।
আর তাই বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপন করতে আজ লাখো মানুষ ঘরের বাইরে ছুটবে। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে মানুষ পহেলা বৈশাখ উদযাপন করবে। বঙ্গাব্দ ১৪৩১-এর আনন্দ-বেদনা, হাসি-কান্নার হিসাব চুকিয়ে নতুন পথচলা শুরু হবে। জাতিধর্ম নির্বিশেষে সর্বজনীন উৎসবে নববর্ষ উদযাপনে একসঙ্গে গাইবে ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো।’ বাংলার গ্রাম, শহর-বন্দর, পথঘাট সব জায়গায় দোলা দেবে পহেলা বৈশাখ।
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
সম্প্রতি সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী জানিয়েছিলেন, এবার পহেলা বৈশাখের আয়োজন হবে সর্বজনীন। আর তাই এবার পহেলা বৈশাখের আয়োজনও দুই দিন, যার শুরুটা হয় গতকাল চৈত্রসংক্রান্তিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কনসার্টসহ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে। বারোটি জেলায় চৈত্রসংক্রান্তি ও বৈশাখী সাধুমেলার আয়োজন শুরু হয়েছে শনিবার থেকে।
এবারের পহেলা বৈশাখের অন্যতম আকর্ষণ ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’। শোভাযাত্রাটির আয়োজক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা। এবার শোভাযাত্রা হবে অনেক অন্তর্ভুক্তিমূলক। ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’য় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় প্রথমবারের মতো ২৮টি জাতিগোষ্ঠীর ৪৯৪ জন শিল্পী বর্ণিল সাজে সজ্জিত হয়ে অংশগ্রহণ করবেন। অংশগ্রহণকারী জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছে-বাঙালি, চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, লুসাই, পাংখোয়া, বম, ম্রো, রাখাইন, খিয়াং, বানাই, সাঁওতাল, ওঁরাও, তুরী, মাহালি, মালপাহাড়িয়া, কোল, মাহাতো, মণিপুরী, খাসিয়া, চা-জনগোষ্ঠী, গারো, হাজং, কোচ ও মালো।
এছাড়াও শোভাযাত্রায় দুই শতাধিক ব্যান্ড শিল্পী অংশগ্রহণ করবেন এবং পৃথিবীর শান্তি কামনায় ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে সম্মিলিতভাবে গাইবেন গান ‘ফ্রম দ্য রিভার টু সি, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’ গানটি।
রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক ঐক্যের বার্তা দেওয়া হবে শোভাযাত্রা থেকে।
আনন্দ শোভাযাত্রার আয়োজনে থাকবে বড় মোটিফ, মাঝারি মোটিফ, ছোট মোটিফ। এর মধ্যে বড় মোটিফ থাকবে ৬টি। সবার সামনে থাকবে ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’। শোভাযাত্রায় বড় মোটিফের মধ্যে থাকবে কাঠের বাঘ, ইলিশ, ৩৬ জুলাই (টাইপোগ্রাফি), পালকি, জুলাই আন্দোলনে নিহত মুগ্ধের পানির বোতল।
এছাড়া অন্যান্য মোটিফের মধ্যে থাকবে ১০টি সুলতানি ও মোগল আমলের মুখোশ, ৮০টি ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি, ২০টি রঙিন চরকি, ২০০টি বাঘের মাথা, ৮টি তালপাতার সেপাই, পলো ১০টি, ৫টি তুহিন পাখি, ৬টি মাছের চাঁই, ৪টি পাখা, ২০টি মাথাল, ২০টি ঘোড়া, ৫টি লাঙল, ৫টি মাছের ডোলা এবং ১০০ ফুট লোকজ চিত্রাবলীর ক্যানভাস ১০০ ফুট থাকবে।
চারুকলা অনুষদ থেকে সকাল ৯টায় বের হবে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’। এ সময় শাহবাগ এবং টিএসসির মেট্রোরেল স্টেশনে ট্রেন থামবে না, তবে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক থাকবে। শোভাযাত্রাটি চারুকলা অনুষদ থেকে শাহবাগ হয়ে টিএসসি, শহিদ মিনার, দোয়েল চত্বর হয়ে চারুকলা অনুষদ পর্যন্ত প্রদক্ষিণ করবে। এবারের শোভাযাত্রায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা সামনে না থেকে দুই পাশে হাঁটবেন। নিরাপত্তা নিয়ে কোনো রকম শঙ্কাও নেই বলে জানানো হয়েছে ইতোমধ্যে। তবে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিকাল ৫টার পর প্রবেশ করা যাবে না। নগরীর অন্যান্য স্থানে বর্ষবরণের আয়োজন সন্ধ্যার পরও থাকবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিকাল ৫টার মধ্যেই আয়োজন শেষ করা হবে।
বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে রাজধানীতে আয়োজন করা হয়েছে ব্যতিক্রমধর্মী ড্রোন শো ও কনসার্ট। সোমবার বিকাল ৫টায় ড্রোন শো দেখানো হবে। এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। শুক্রবার সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ড্রোন শো উপভোগের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ঢাকাবাসীকে। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক পোস্টে এই আমন্ত্রণ জানান তিনি। ফারুকী লিখেছেন, ড্রোন শোয়ের আগে দর্শকদের জন্য থাকছে মনোমুগ্ধকর এক কনসার্ট। রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে ১৪ এপ্রিল, বাংলা নববর্ষের দিন বেলা ৩টায় পুরো আয়োজনটি অনুষ্ঠিত হবে। সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা লিখেছেন, এ আয়োজনটি ঢাকায় অবস্থিত চীনা দূতাবাসের সহযোগিতায় বাস্তবায়ন হচ্ছে। এ সহযোগিতার জন্য চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের প্রতি কৃতজ্ঞতা।
সবশেষে তিনি লিখেছেন, বন্ধু-পরিবারসহ সবাইকে আমন্ত্রণ, চলে আসুন, একসঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিই।
বরাবরের মতো বর্ষবরণ আয়োজন করবে ছায়ানট। এবারের আয়োজনটি ২ ঘণ্টার। এই ২ ঘণ্টায় মূলত মুক্তির গান গাইবে তারা। ভোরবেলা বৈরভীতে রাগালাপ দিয়ে হবে ছায়ানটের ১৪৩২ বঙ্গাব্দ বরণের সূচনা। এবারের অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছে নতুন আলো, প্রকৃতি এবং মানুষকে ভালোবাসবার গান, দেশপ্রেম-মানবপ্রেম আর আত্মবোধন-জাগরণের সুরবাণী দিয়ে। ছায়ানট এবার ৫৮তমবার বর্ষবরণের এ আয়োজন করছে।
এবারও অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চ্যানেল আই-সুরের ধারা হাজারও কণ্ঠে বর্ষবরণ। তবে বিগত বছরগুলোর মতো নয়, এবার একটু ভিন্ন আঙ্গিকে। বাংলা নববর্ষ ১৪৩২-কে বরণ করে নিতে ১৪ এপ্রিল সকাল ৬টা থেকে ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে অনুষ্ঠিত হবে এবারের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করবেন সুরের ধারার শিল্পীদের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর শিল্পীরা। অনুষ্ঠানস্থলে থাকবে বিভিন্ন লোকজ মেলার স্টল। মেলায় বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজনসহ থাকবে দেশীয় নানা ক্ষুদ্র ও কুঠির শিল্পের দোকান।
পহেলা বৈশাখ সরকারি ছুটির দিন। বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সরকার। দেশের সব জেলা ও উপজেলায় বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। জাতীয় দৈনিক পত্রিকাগুলো বাংলা নববর্ষের ওপর বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। দেশের সব সরকারি-বেসরকারি টিভি, বাংলাদেশ বেতার, এফএম ও কমিউনিটি রেডিও বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করবে।
অনলাইন ডেস্ক :
ভোক্তা পর্যায়ে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম বেড়েছে। ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ২৩ টাকা বাড়িয়ে এখন ১ হাজার ৪০৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ ৩ ডিসেম্বর রবিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এই দাম ঘোষণা করে বিইআরসি। ঘোষিত এই দাম রবিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, বেসরকারি এলপিজির রিটেইলার পয়েন্টে ভোক্তাপর্যায়ে মূসকসহ মূল্য প্রতি কেজিতে ১১৭ টাকা ২ পয়সা সমন্বয় করা হয়েছে। এ ছাড়া রেটিকুলেটেড পদ্ধতিতে তরল অবস্থায় সরবরাহকৃত বেসরকারি এলপিজির ভোক্তাপর্যায়ে মূসকসহ মূল্য প্রতি কেজিতে ১১৩ টাকা ২০ পয়সা সমন্বয় করা হয়েছে। আর ভোক্তাপর্যায়ে অটোগ্যাসের দাম মূসকসহ প্রতি লিটারে ৬৪ টাকা ৪৩ পয়সা সমন্বয় করা হয়েছে।
এতে আরো উল্লেখ করা হয়, কোনো পর্যায়ে (এলপিজি মজুতকরণ ও বোতলজাতকরণ, ডিস্ট্রিবিউটর এবং ভোক্তাপর্যায়ে রিটেইলার পয়েন্টে) কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অধিক মূল্যে এলপিজি (বোতলজাতকৃত এবং রেটিকুলেটেড সিস্টেমের মাধ্যমে সরবরাহকৃত)/অটোগ্যাস বিক্রয় করা যাবে না।
এর আগে অক্টোবর মাসে ভোক্তা পর্যায়ে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৭৯ টাকা বাড়িয়ে ১৩৬৩ টাকা নির্ধারণ করে বিইআরসি। যা সেপ্টেম্বর মাসে ১২৮৪ টাকায় বিক্রি হয়ে আসছিল।
চলারপথে ডেস্ক :
আসন্ন রমজানে প্রায় এক কোটি মানুষকে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ ২৩ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার গাজীপুরে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের ৫০ বছরপূর্তি উদযাপন ও ‘বঙ্গবন্ধু-পিয়েরে ট্রুডো কৃষি প্রযুক্তিকেন্দ্র’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘রমজানের সময় আমরা প্রায় এক কোটি মানুষকে খাদ্য সহায়তা দেবো, সেই সিদ্ধান্ত আমরা নিয়েছি। যাতে দেশের মানুষের কখনো খাদ্যে কষ্ট না পায় সেটাই আমাদের লক্ষ্য। ’
দরিদ্র মানুষের জন্য সরকারের বিভিন্ন সহায়তা কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আপনারা জানেন আমাদের দেশে যারা হতদরিদ্র তাদেরকে আমরা প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে চাল দিচ্ছি। এই চালের সঙ্গে আমরা পুষ্টি চালও মিশিয়ে দিচ্ছি যাতে তাদের পুষ্টিহীনতা না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখে। ’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের সময়ে আমরা নগদ অর্থ সহায়তা দিয়েছি। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ, স্যাংশন, পাল্টা স্যাংশনের ফলে বিশ্বব্যাপী যখন মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে আমরা আমাদের দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রায় এক কোটি মানুষকে ৩০ টাকা কেজিতে চাল দিতে টিসিবি কার্ড বিতরণ করেছি। তার থেকেও যারা নিম্নবিত্ত, তারা ১৫ টাকায করে কেজিতে চাল নিতে পারবে আমরা সেই ব্যবস্থা প্রায় ৫০ লাখ মানুষের জন্য করেছি। ’
নিজে ফসল ফলানো গর্বের
স্কুল জীবন থেকে শিক্ষার্থীদের কৃষি কাজে সম্পৃক্ত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষিতে আমাদের যুব সমাজকে আরও বেশি সম্পৃক্ত করা দরকার। আমার মনে হয় স্কুলজীবন থেকেই সম্পৃক্ত করা দরকার। মাঠে কাজ করা, ফসল ফলানো এটা অত্যন্ত গৌরবের বিষয়, লজ্জার বিষয় না। কাজেই সেভাবেই আমাদের দেশের মানুষকে গড়ে তুলতে হবে। ’
কৃষি নিয়ে শিক্ষিত যুবকদের মানসিকতা বদলেছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে আমি সত্যি খুব আনন্দিত। অনেক ছেলেমেয়ে লেখাপড়া শিখে মাঠে যেতে চায় না, এমনও ছিল যে, বাবা কৃষক সেটা বলতেও লজ্জা পেতো। আজকে কিন্তু সেই লজ্জাটা আর নাই, সেই লজ্জাটা আমরা ভেঙে দিয়েছি। ’
তিনি বলেন, ‘যেটা খেয়ে আমাদের জীবন বাঁচে, সেই কাজ করাটা লজ্জার না। সেই কাজ করাটা গর্বের। কাজেই মানসিকতার পরিবর্তন করা একান্ত প্রয়োজন। সেটাও আজকে অনেকটা পরিবর্তন হয়েছে বলে আমি বিশ্বাস করি। ’
(প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও তার সরকারি বাসভবন গণভবনে বিভিন্ন প্রজাতির ধান, সরিষা, মধু, প্রায় সব ধরনের শাক-সবজি, ফলমূল, হাঁস-মুরগি, কবুতর, গরু, মাছ চাষ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। )
আরও গবেষণা বাড়াতে হবে
কৃষিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সব সময় মনে করি গবেষণা ছাড়া কখনো উৎকর্ষ সাধন করা যায় না। আর যেহেতু কৃষিনির্ভর দেশ, আমরা গবেষণার ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। পাশাপাশি আমরা স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বিজ্ঞান সেগুলো গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। ’
তিনি বলেন, ‘একটা কথা মনে রাখতে হবে ভৌগলিক অবস্থানের কারণে সব সময় জলবায়ু পরিবর্তনজনিত আঘাত আমাদের ওপর আসে। সেজন্য গবেষণা সবসময় অব্যাহত রাখতে হবে এবং এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের ফসল উৎপাদন করতে হবে। শুধু ধান উৎপাদন নয়, ধানের সঙ্গে আমাদের তরকারি, ফলমূল সবকিছু উৎপাদনে বাংলাদেশ একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ’
কৃষি যান্ত্রিকীকরণে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষি যান্ত্রিকীকরণের কথা স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সব সময় বলে গেছেন এবং ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। আজকে আমরা সে ব্যাপারে যথেষ্ট এগিয়ে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে আমরা যান্ত্রিকীকরণের জন্য বিশেষ বরাদ্দ দিচ্ছি, ভর্তুকি দিচ্ছি, উপকূল অঞ্চলে প্রায় ৭০ শতাংশ আমরা ভর্তুকি দিই এবং অন্যান্য অঞ্চলে ৫০ শতাংশ ভর্তুকি। ’
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছি। সেজন্য দক্ষ মানবশক্তি তৈরি করতে আমরা ইতোমধ্যেই পদক্ষেপ নিয়েছি। বিশ্বে নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন হচ্ছে, আমাদেরও সেসঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে। ’
এর আগে গাজীপুরের বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে ‘বঙ্গবন্ধু-পিয়েরে ট্রুডো কৃষিপ্রযুক্তি কেন্দ্র’র উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উদ্বোধনের পর তিনি বঙ্গবন্ধু-পিয়েরে ট্রুডো কৃষিপ্রযুক্তি কেন্দ্রের বিভিন্ন উদ্ভাবন ঘুরে ঘুরে দেখেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার, ইন্টারন্যাশনাল রাইস রিসার্স ইনস্টিটিউটের (আইআরআরআই) মহাপরিচালক জেইন বালিই, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, কানাডার গ্লোবাল ইনস্টিটিউট অব ফুড সিকিউরিটির (সিইইউ) নির্বাহী পরিচালক ড. স্টেভিন ওয়েব, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাহজাহান কবির।
উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল।
অনলাইন ডেস্ক :
রাজধানীর সদরঘাটে লঞ্চে উঠতে গিয়ে নারী-শিশুসহ ৫ যাত্রী বুড়িগঙ্গা নদীতে পড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন সবাই। আজ ৫ জুন বৃহস্পতিবার দুপুরে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, এ ঘটনার সাথে সাথে স্থানীয়রা দ্রুত তাদের উদ্ধারে নেমে পড়েন। পরে লঞ্চের রশি বেয়ে সবাইকে একে একে উপরে টেনে তোলা হয়। তবে তাৎক্ষণিকভাবে ওই যাত্রীদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঈদযাত্রায় অতিরিক্ত চাপের কারণে সদরঘাটে লঞ্চে ওঠার সময় ধাক্কাধাক্কিতে ওই পাঁচজন যাত্রী বুড়িগঙ্গায় পড়ে যান। পরে ঘটনার পরপরই দ্রুত স্থানীয় কয়েকজন পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং তলিয়ে যাওয়ার আগেই সবাইকে উদ্ধার করে নিরাপদে উপরে তোলেন। একপর্যায়ে লঞ্চের রশি ও ঘাটের সিঁড়ি ব্যবহার করে সবাইকে উদ্ধার করা হয়। তারা প্রত্যেকে সুস্থ রয়েছেন।
এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে বিআইডব্লিউটিএ বা নৌ-পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি ও হয়রানির অভিযোগে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখা।
আজ ২৬ জুন বুধবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে জেলা রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি শাহ আলমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফখরুল হাসান, নিউ মার্কেট কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, জেলার রেস্তোরাঁ ও মিষ্টান্ন ভাণ্ডার প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়মিত ভ্যাট দেয়। কিন্তু ভ্যাট কর্মকর্তা আবু হানিফ মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বিভিন্ন সময় এমনকি মধ্য রাতেও ব্যবসায়ীদের প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করেন। তাকে টাকা না দিলে ব্যবসায়ীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়। ব্যবসায়ীরা দ্রুত এ কর্মকর্তার অপসারণের দাবি জানান। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। তবে ব্যবসায়ীদের করা বিভিন্ন অভিযোগ অস্বীকার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগের কর্মকর্তা আবু হানিফ মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, বিধি মোতাবেক অভিযান পরিচালনা করা হয়ে থাকে।
উল্লেখ্য, গতকাল এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ এনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত মামলা দায়ের করেন মো. রাশেদুল হক নামে এক ব্যবসায়ী। আদালত মামলাটি তদন্তে পিবিআইকে আদেশ দেয়।